leadT1ad

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়ি ভাড়া বাড়ল ৫০০ টাকা, প্রত্যাখ্যান করে ফের কর্মসূচি

স্ট্রিম প্রতিবেদক
স্ট্রিম প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৬ অক্টোবর ২০২৫, ২৩: ০৮
এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচির পুরোনো ছবি

আন্দোলন ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সুপারিশের পর বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়ি ভাড়া ভাতা ৫০০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। এর ফলে শিক্ষকরা এখন থেকে ১০০০ হাজারের পরিবর্তে দেড় হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া ভাতা পাবেন। তবে সরকারের এ সিদ্ধান্তে প্রত্যাখ্যান করে আবারও আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন শিক্ষকরা।

এদিকে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ও মূল বেতনের শতাংশ হারে বাড়ি ভাড়া ভাতার বিষয়টি বিবেচনার অনুরোধ জানিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পত্র দিয়েছে।

রোববার (৫ অক্টোবর) অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে ভাড়া বৃদ্ধির পরিপত্র প্রকাশ করা হয়েছে। গত ৩০ সেপ্টেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রবিধি শাখার পরিপত্রে এ সংক্রান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।

অন্যদিকে, অর্থ বিভাগের এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে বাড়ি ভাড়া এবং চিকিৎসা ভাতা ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১ হাজার ৫০০ টাকা করার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষকরা। এসব দাবিতে আগামী ১২ অক্টোবর থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালনের ডাক দিয়েছেন তাঁরা।

এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী রোববার এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, ‘আমরা ৫০০ টাকা বাড়ি ভাড়া বাড়ানোর আদেশ প্রত্যাখ্যান করছি। এই অসম্মানজনক আদেশ জারি করার প্রতিবাদে এবং ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া, ১৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা ও কর্মচারীদের ৭৫ শতাংশ উৎসব ভাতা দেওয়ার দাবিতে আগামী ১২ অক্টোবর থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সরকার দ্রুত এই দাবি মেনে না নিলে সারা দেশে কর্মবিরতির ডাক দেওয়ার পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে।’

এদিকে, গতকাল পরিপত্র জারির দিনই একটি পত্র শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ বিভাগে পাঠানো হয়েছে। অর্থ বিভাগের সচিব বরাবর পাঠানো ওই পত্রে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা বাড়ি ভাড়া ভাতা মূল বেতনের অন্তত ২০ শতাংশ হারে দেওয়ার যে দাবি করেছেন সেটি তুলে ধরা হয়েছে। পাশাপাশি তাঁদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মূল বেতনের শতাংশ হারে বাড়ি ভাড়া ভাতা প্রদানের ক্ষেত্রে সম্ভাব্য আর্থিক ব্যয়ের প্রাক্কলনও দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

এতে ৫, ১০, ১৫ ও ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়ার সম্ভাব্য ব্যয়ের হিসাব দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, বর্তমানে দেশে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীর সংখ্যা প্রায় ৩ লাখ ৯৮ হাজার ৬৮ জন। তাঁদের মূল বেতনের ২০ শতাংশ (ন্যূনতম ৩০০০ টাকা) হারে বাড়ি ভাড়া দিলে বছরে মোট ৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকা ব্যয় হবে। এ ভাড়া ১৫ শতাংশ (ন্যূনতম ২০০০ টাকা) হারে মোট ২ হাজার ৪৩৯ কোটি, ১০ শতাংশ (ন্যূনতম ২০০০ টাকা) হারে মোট ১ হাজার ৭৬৯ কোটি এবং ৫ শতাংশ (ন্যূনতম ২০০০) হারে মোট ১ হাজার ৩৭১ কোটি টাকায় দাঁড়ায়।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব সাইয়েদ এ জেড মোরশেদ আলীর সই করা ওই পত্রে মূল বেতনের শতাংশ হিসেবে যথোপযুক্ত হারে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়ি ভাড়া প্রদানের আবেদন বিবেচনার জন্য অনুরোধ করা হয়।

পাশাপাশি শিক্ষা উপদেষ্টার দেওয়া আধাসরকারি পত্রে (ডিও) উল্লেখিত এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের উৎসব ভাতা ৫০ থেকে ৭৫ শতাংশে উন্নীত করা এবং শিক্ষক-কর্মচারীদের চিকিৎসা ভাতা ৫০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকায় উন্নীত করার প্রস্তাব বিবেচনার জন্যও অনুরোধ করা হয়।

গত ৭ আগস্ট শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের কাছে আধাসরকারি পত্র দিয়েছিলেন। এতে বলা হয়েছিল, এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়ি ভাড়া মাসিক ২০০০ টাকা হলে ৪৫৬ কোটি ৮৯ লাখ টাকা, চিকিৎসা ভাতা মাসিক ১০০০ টাকা হলে ২২৮ কোটি ৪৫ লাখ টাকা এবং কর্মচারীদের উৎসব ভাতার হার ৭৫ শতাংশ করা হলে ৮৪ কোটিসহ সবমিলিয়ে ৭৬৯ কোটি ৩৩ লাখ টাকা অতিরিক্ত প্রয়োজন হবে।

এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের সার্বিক কল্যাণ এবং দীর্ঘদিনের সমস্যা নিরসনের অংশ হিসেবে উল্লিখিত খাতসমূহে আর্থিক সুবিধা বৃদ্ধির ফলে শিক্ষক-কর্মচারীদের জীবনমান উন্নয়নসহ শিক্ষার সার্বিক মানোন্নয়নে সহায়তা করবে বলেও জানান তিনি।

গত ১৩ আগস্ট জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়ার প্রজ্ঞাপন ও সর্বজনীন বদলির দাবি জানিয়েছিলেন এমপিওভুক্ত শিক্ষকেরা। তখন বলা হয়েছিল, দাবি না মানলে ১২ অক্টোবর থেকে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে।

এ বিষয়ে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব দেলাওয়ার হোসেন আজিজী বলেন, সরকার যেহেতু দাবি মানেনি, তাই ১২ অক্টোবর থেকে পূর্বঘোষিত কর্মসূচিই পালন করা হবে।

Ad 300x250

সম্পর্কিত