ঝিনাইদহের শৈলকুপায় নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন যুবলীগের সভাপতি শামীম মোল্লাকে মারধরের পর পুলিশে দিয়েছে ছাত্র-জনতা। এ সময় যুবলীগ নেতার ব্যবহৃত প্রাইভেটকারটিও ভাঙচুর করে বিক্ষুব্ধরা।
আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) দুপুরে ঝিনাইদহ শহরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে ওই সময় সঙ্গে থাকা নগদ অর্থের মধ্য থেকে সোয়া ৪ লাখ টাকা খোয়া গেছে বলে দাবি করেছেন শামীম মোল্লা। সদর থানা পুলিশ জানিয়েছে, শামীম মোল্লাকে শৈলকুপা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। আর ঘটনাস্থল থেকে তারা নগদ ৭৪ হাজার টাকা ও ব্যাংক চেক উদ্ধার করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এলজিইডির জেলা কার্যালয়ে আসেন যুবলীগ নেতা শামীম হোসেন মোল্লা। এ সময় ছাত্রদের একটি দলের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়ান তিনি। একপর্যায়ে উপস্থিত ছাত্র-জনতা তাঁকে মারধর করেন। এ সময় যুবলীগ নেতার ব্যবহৃত প্রাইভেটকারে ভাঙচুর চালান তাঁরা। পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও ছাত্রদলের কয়েকজন নেতা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে শামীম মোল্লাকে উদ্ধার করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন।
শামীম মোল্লাকে উদ্ধার করে পুলিশে সোপর্দ করার তথ্য জানিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা সদস্যসচিব সাইদুর রহমান বলেন, ‘শামীম হোসেন মোল্লা বহু অপকর্মের সাথে জড়িত। ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় তিনি কোটি কোটি টাকার টেন্ডার বাণিজ্য ও লুটপাট করেছেন। তিনি আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। গোপনে ফ্যাসিস্ট সরকারকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করছেন। তাই তাঁকে এলজিইডি অফিসে পেয়ে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা গণধোলাই দেয়। খবর পেয়ে আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা ঘটনাস্থলে যাই।’
ঝিনাইদহে শৈলকুপায় নিষিদ্ধ ঘোষিত গঠন যুবলীগের সভাপতি শামীম মোল্লা। সংগৃহীত ছবিএদিকে ছাত্র-জনতার হাতে আটকের পর যুবলীগ নেতা শামীম মোল্লা জানান, জেলা শহরের পূবালী ব্যাংক থেকে ৫ লাখ টাকা তুলে নামাজ পড়তে এলজিইডি অফিসে যান। সেখানে জনতা তাঁকে বেধড়ক মারধর করে রক্তাক্ত অবস্থায় এলজিইডির একটি কক্ষে আটকে রাখে। তাঁর ব্যবহৃত গাড়িটিও তারা ভেঙে ফেলেছে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নগদ ৭৪ হাজার টাকা ও ব্যাংকের চেক উদ্ধার করে। বাদবাকি টাকার কোনো হদিস নেই বলে জানান তিনি।
ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘মারধরের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে যুবলীগ নেতা শামীম মোল্লাকে নিয়ে আসি। তাঁর বিরুদ্ধে সদর থানায় কোনো মামলা বা অভিযোগ নেই। প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য তাঁকে সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
ওসি আল মামুন বলেন, ‘শামীম মোল্লার গাড়ি থেকে আমরা মাত্র ৭৪ হাজার টাকা ও একটি চেক উদ্ধার করেছি। বাকি টাকার ব্যাপারে আমাদের জানা নেই। চিকিৎসা শেষে শৈলকুপা থানা পুলিশের কাছে তাঁকে হস্তান্তর করা হবে।’
হস্তান্তরের তথ্য নিশ্চিত করে শৈলকুপা থানার ওসি মাসুম খান জানান, ‘যুবলীগ নেতা শামীম মোল্লাকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে সদর থানা পুলিশ আমাদের কাছে হস্তান্তর করে। অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ শামীমের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে বলেও জানান তিনি।