leadT1ad

পাকিস্তান-চীন উদ্যোগে নতুন আঞ্চলিক সংগঠন: সার্কের বিকল্প হতে পারবে

তুফায়েল আহমদ
প্রকাশ : ৩০ জুন ২০২৫, ১৫: ২৪
আপডেট : ৩০ জুন ২০২৫, ১৫: ২৫
সার্কের বিকল্প জোট গড়ছে চীন-পাকিস্তান। ছবি: দ্য ডেইলি সিপিইসি

একটি নতুন আঞ্চলিক সংগঠন গঠনের পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে পাকিস্তান ও চীন। নতুন এই সংগঠন গত ১০ বছর ধরে ‘কার্যত অচল’ থাকা দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থার (সার্ক) বিকল্প হয়ে উঠতে পারে।

এ-সংক্রান্ত কূটনৈতিক সূত্রগুলোর মতে, এই মুহূর্তে ইসলামাবাদ ও বেইজিংয়ের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা অনেক দূর এগিয়ে গেছে। দুই পক্ষই বিশ্বাস করে, আঞ্চলিক সম্পর্ক ও সংহতির জন্য একটি নতুন সংগঠন এখন সময়ের দাবি।

চলতি মাসের ১৯ জুন চীনের কুনমিং শহরে অনুষ্ঠিত পাকিস্তান, চীন ও বাংলাদেশের ত্রিপাক্ষিক বৈঠক এই কূটনৈতিক তৎপরতারই অংশ ছিল। বৈঠকে ভারতের অনুপস্থিতি প্রত্যাশিত হলেও বাংলাদেশের উপস্থিতি এই অঞ্চলে রাজনৈতিক পালাবদলের ইঙ্গিত দেয় বলে মনে করছেন অনেকেই। ২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে ভারতকে খুশি রাখতে ইসলামাবাদের সার্ক শীর্ষ সম্মেলন বর্জন করেছিল বাংলাদেশ। ১০ বছর পর সেই বাংলাদেশই ভারতের অনুপস্থিতিতে যোগ দিল এই নতুন উদ্যোগে। তিন দেশের জ্যেষ্ঠ কূটনীতিকদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত বৈঠক ইতিমধ্যেই ভারতের উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে।

কুনমিং বৈঠকের মূল লক্ষ্য ছিল সার্কের অন্তর্ভুক্ত অন্যান্য দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোকে নতুন এই জোটে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানানো। ভারতকেও এই প্রস্তাবিত ফোরামে আমন্ত্রণ জানানোর পরিকল্পনা আছে। তবে সূত্র বলছে, পাকিস্তান ও চীনের সঙ্গে সম্পর্কের সাম্প্রতিক টানাপোড়েন বিবেচনায় ভারতের ইতিবাচক সাড়া দেওয়ার সম্ভাবনা কম।

তবে শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, আফগানিস্তানের মতো অন্যান্য দেশগুলো নতুন এই জোটের অংশ হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।

নতুন এই সংগঠনের প্রধান লক্ষ্য হলো বাণিজ্য এবং সংযোগ বৃদ্ধি করে আঞ্চলিক সম্পৃক্ততা জোরদার করা।

এই প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে দক্ষিণ এশিয়ার ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) নামে পরিচিত সার্ক পুরোপুরি অকেজো হয়ে যাবে। ভারত-পাকিস্তানের বৈরি সম্পর্কের কারণে সার্ক নিজের লক্ষ্য অর্জনে বারবার ব্যর্থ হয়ে এসেছে।

২০১৬ সালে নভেম্বর মাসে পাকিস্তানের ইসলামাবাদে সার্কের সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের একটি সেনা ঘাঁটিতে হামলার ঘটনা কেন্দ্র করে ইসলামাবাদের বৈঠক বর্জন করে ভারত। তখন বাংলাদেশের শাসনে থাকা আওয়ামী সরকারও নয়াদিল্লির সঙ্গে একাত্ম হয়ে সম্মেলনে অংশ নেয়নি। ফলে সম্মেলনটি স্থগিত হয়ে যায়। এরপর সার্ককে পুনরায় কার্যকর করার কোনো প্রচেষ্টা দেখা যায়নি।

সম্প্রতি, পেহেলগাম হামলার পর ব্যবসায়ীদের জন্য সার্কভিত্তিক বিশেষ ভিসা-সুবিধা বন্ধ করে দেওয়া হয়। সার্কের সমাপ্তিতে এটিই ছিলো কফিনের শেষ পেরেক। এমন পরিস্থিতিতে নতুন একটি আঞ্চলিক সংগঠনের প্রয়োজন অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠেছে বলে মন্তব্য করেন বিভিন্ন ব্যবসায়ী মহল।

এই অঞ্চলের অন্যান্য দেশগুলোকে নিয়ে পারস্পরিক সম্পর্ক জোরদার করে একটি উন্নত ভবিষ্যতের লক্ষ্য নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে নতুন সংগঠন নিয়ে পাকিস্তান ও চীনের এই আলোচনা শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে।

(পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনে প্রকাশিত কামরান ইউসুফের লেখা অবলম্বনে তুফায়েল আহমদ)

Ad 300x250

সম্পর্কিত