leadT1ad

গাজা ‘শান্তিবাহিনী’তে সেনা পাঠাচ্ছে পাকিস্তান, আঞ্চলিক প্রভাব বাড়ার ইঙ্গিত

পাকিস্তানের অংশগ্রহণ যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে দেশটির সম্পর্ক জোরদার করতে পারে। ইসলামাবাদের এই উদ্যোগ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক উন্নয়ন ও আঞ্চলিক প্রভাব বাড়ার ইঙ্গিত দেয়।

স্ট্রিম ডেস্ক
স্ট্রিম ডেস্ক
ঢাকা

প্রকাশ : ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ১৮: ৪৫
২৫ অক্টোবর গাজা সিটিতে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতির সময় ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহারের পর ড্রোন থেকে তোলা একটি আবাসিক এলাকায় ধ্বংসযজ্ঞের দৃশ্য। ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় গঠিত গাজা শান্তি চুক্তি-র অংশ হিসেবে পাকিস্তান আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনীতে (আইএসএফ) সেনা পাঠানোর বিষয়ে সিদ্ধান্তের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। দেশটির সরকার ও সামরিক কর্তৃপক্ষের মধ্যে আলোচনায় অগ্রগতি হয়েছে এবং শিগগিরই আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে পারে।

পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ জানিয়েছেন, সিদ্ধান্তটি ‘চলমান প্রক্রিয়ায়’ রয়েছে এবং শিগগিরই চূড়ান্ত হবে। সংসদীয় ব্রিফিং ও প্রাতিষ্ঠানিক পরামর্শ শেষে ঘোষণা দেওয়া হবে। সেনা পাঠানোর সংখ্যা এখনো নির্ধারিত হয়নি।

দেশটির কর্মকর্তারা একে ‘নৈতিক ও কূটনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। বিশ্বব্যাপী পাকিস্তানের ২ লাখের বেশি সেনা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে মোতায়েন আছে।

এ সিদ্ধান্ত পাকিস্তানের জাতিসংঘ শান্তিরক্ষায় ঐতিহাসিক ভূমিকা ও ফিলিস্তিনি ইস্যুতে দীর্ঘদিনের অবস্থানকে প্রতিফলিত করে। তবে দেশটি অভ্যন্তরীণ সংবেদনশীলতা ও আঞ্চলিক ভারসাম্যের বিষয়টি সতর্কভাবে বিবেচনা করছে।

এই বাহিনী মূলত মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর সমন্বয়ে গঠিত হবে। তাদের দায়িত্ব থাকবে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা রক্ষা, হামাসকে নিরস্ত্র করা, সীমান্ত সুরক্ষা, মানবিক সহায়তা ও পুনর্গঠন তদারকি। এসব কাজ একটি অন্তর্বর্তী ফিলিস্তিনি প্রশাসনের অধীনে পরিচালিত হবে।

পাকিস্তান চায়, বাহিনীর কার্যক্রম জাতিসংঘের আনুষ্ঠানিক অনুমোদনের মাধ্যমে বৈধতা পাক।

বিবিসির সাথে সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বক্তব্য রাখছেন।
বিবিসির সাথে সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বক্তব্য রাখছেন।

আসিফ বলেছেন, মুসলিম দেশগুলো অংশ নিলে ফিলিস্তিনিদের সুরক্ষায় অংশ নেওয়া পাকিস্তানের জন্য ‘গৌরবের মুহূর্ত’ হবে। উপদেষ্টা রানা সানাউল্লাহও এতে সমর্থন জানিয়ে, একে গাজাকে ‘রক্ষার সুযোগ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরও সম্প্রতি মিসর ও জর্ডান সফর করেছেন, যেখানে পাকিস্তানের আঞ্চলিক শান্তি উদ্যোগে সক্রিয় ভূমিকা তুলে ধরা হয়।

আইএসএফ গঠনের ধারণাটি আসে ২০২৪ সালের শেষ দিকে আট দেশের প্রস্তাব থেকে। গত ১৩ অক্টোবর মিসরের শার্ম আল-শেখ সম্মেলনে চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়।

যুক্তরাষ্ট্র অংশগ্রহণের জন্য ইন্দোনেশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিসর, কাতার, তুরস্ক ও আজারবাইজানের মতো দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা করছে। তবে ইসরায়েল তুরস্কের অংশগ্রহণে আপত্তি জানিয়েছে।

পাকিস্তানের অংশগ্রহণ যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে দেশটির সম্পর্ক জোরদার করতে পারে। ইসলামাবাদের এই উদ্যোগ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক উন্নয়ন ও আঞ্চলিক প্রভাব বাড়ার ইঙ্গিত দেয়।

তবে দেশের অভ্যন্তরে ফিলিস্তিনপন্থী জনমত থাকায়, যুক্তরাষ্ট্র বা ইসরায়েলের স্বার্থের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার ধারণা জনঅসন্তোষ সৃষ্টি করতে পারে—বিশেষ করে অস্থিতিশীল গাজার প্রেক্ষাপটে।

চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত পাকিস্তানকে গাজা স্থিতিশীলতায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় আনতে পারে। তবে সফলতা নির্ভর করবে জাতিসংঘের অনুমোদন পাওয়া এবং অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক ভারসাম্য রক্ষার ওপর।

সূত্র: দ্য ডন

Ad 300x250

সম্পর্কিত