leadT1ad

শীতকালেই কেন এত পিঠা খাওয়ার ধুম

শীতের পিঠা। ছবি: সংগৃহীত

আমাদের দেশে বছরজুড়েই নানা উপলক্ষে পিঠা বানানো হয়। তবে শীতকালে পিঠার বৈচিত্র্য চোখে পড়ে সবচেয়ে বেশি। কারণটা লুকিয়ে আছে ঐতিহ্যের ভেতর। শীতের ঠিক আগে আগেই শুরু হয় হেমন্তের নবান্ন উৎসব। কৃষকের গোলাঘর ভরে ওঠে সোনালী ধানে। সেই আমন ধান থেকে আসে নতুন চাল।

তারপর নতুন চাল দিয়ে ঘরে ঘরে শুরু হয় পিঠা বানানোর উৎসব। ভাপা, চিতই, পাটিসাপটা, পুলি, দুধ চিতই, মালপোয়া, নকশিপিঠা—কী নেই তালিকায়! উপরন্তু শীতেই মেলে খেজুরের রস, আর সেই রস ও গুড় দিয়ে তৈরি পিঠার স্বাদই আলাদা।

গ্রামে এই দৃশ্য যতটা স্বাভাবিক, শহরে তা দেখা যায় তুলনামূলক কম। তাই শীত এলেই শহরের পথে-ঘাটে দেখা যায় ছোট ছোট পিঠার দোকান। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও আয়োজন করে পিঠামেলা, যেখানে পাওয়া যায় নানা ধরনের পিঠা। আবার ব্যস্ততার মধ্যেই কেউ কেউ ঘরে তৈরি করেন পিঠা, ছুটির দিনে পরিবার নিয়ে উপভোগ করেন সেই উষ্ণ সময়।

শীত এলেই কেন এত পিঠার আয়োজন

সারা বছর ধরে ডিসেম্বরের জন্য এক অদ্ভূত অপেক্ষায় থাকি আমরা। কারণ ডিসেম্বরেই শোনা যায় শীতের পদধ্বণি, আর তার পায়ে পায়ে চলে আসে শীতের পিঠা খাওয়ার মৌসুম।

শিশু-কিশোরেরা এই সময়ে অপেক্ষায় থাকে, কবে আসবে শীত, কবে শেষ হবে বার্ষিক পরীক্ষা, আর কবে বন্ধ হবে স্কুল, শুরু হবে ছুটির আমেজ। কারণ স্কুল হলেই একটু ফুসরত মিলবে ঘুরতে যাওয়ার, সুযোগ হবে আত্মীয়স্বজনের বাড়ি যাওয়ার। তাই শীত হয়ে উঠেছে উৎসবেরই আরেক নাম।

পল্লীসাহিত্য নিয়ে কাজ করেন কলেজ শিক্ষক ও গবেষক মাসুদ রানা বাদশাহ। তিনি স্ট্রিমকে বলেন, ‘এই সময়টায় সবার হাতেই থাকে কিছুটা অবসর। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ছুটি, কোচিং বন্ধ, বড়রাও কাজের ব্যস্ততা কাটিয়ে কয়েক দিনের জন্য বেরিয়ে পড়েন পরিবারের সঙ্গ নিয়ে। ব্যাগ গুছিয়ে অনেকেই চলে যান গ্রামে, নানাবাড়ি বা দাদাবাড়িতে। সেখানে সব ভাইবোন একসঙ্গে মিলিত হলে আনন্দের শেষ থাকে না। এটাই তো পিঠা খাওয়ার সবচেয়ে উপযুক্ত সময়।’

সকালে লেপ কম্বলের উষ্ণতা ত্যাগ করে মোটা শীতের জামা পরে নাস্তায় গরম গরম পিঠা! এর চেয়ে আনন্দের দৃশ্য আর হয় না। খেজুরের রসের হাঁড়ির পাশে বসে রস খাওয়া, প্রতিবেশীর বাড়ি থেকে পিঠা এলে আবার নিজেরাও বানিয়ে পাঠানো।

সব মিলিয়ে শীতকালের মূল আনন্দ আসলে হরেক রকমের পিঠা খাওয়া।

Ad 300x250

সম্পর্কিত