বিশ্ব আলোকচিত্র দিবস
আজ বিশ্ব আলোকচিত্র দিবস। আলোকচিত্রে চেনা কিছুকেও নতুন রূপে চেনা যায়। তরুণ ফটোগ্রাফার জীবন মালাকার গড়াই নদীকে ফ্রেমে ধরেছেন ভিন্ন দৃষ্টিতে। কুষ্টিয়া শহরের পাশ দিয়ে বয়ে চলা এই নদী কীভাবে তাঁর ফ্রেমে উঠে এল, তা লেখা থেকে জানা যাবে। সঙ্গে থাকছে তাঁর তোলা গড়াই নদীর ১০টি ছবি।
জীবন মালাকার
বাংলাদেশের নদীগুলোর নামের ভেতরেই আছে এক ধরনের মায়া। শুধু নাম উচ্চারণ করলেই যেন ভেসে আসে শান্তির আবহ। নদী মানেই কেমন একেকটা কবিতা, যেটা চোখ বন্ধ করলেই ভিজুয়ালাইজ করা যায়।
‘ফটোগ্রাফি’ আমার নেশা। এর সঙ্গে প্রথম পরিচয় হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন। আমি তখন কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। শহরে থাকতাম, আর শহরের পাশ দিয়ে বয়ে চলা গড়াই নদী হয়ে উঠেছিল আমার ফটোগ্রাফির প্রথম মেন্টর। শুনতে অদ্ভুত লাগতে পারে, মেন্টর সাধারণত ‘মানুষ’ হয়। প্রকৃতিও যে কত বড় শিক্ষক, সেটা গড়াই নদী আমাকে শিখিয়েছে।
গড়াইয়ের সঙ্গে আমার স্মৃতি মাত্র ছয় বছরের। অথচ সেই ছয় বছরেই কত শত ফ্রেমে তাকে ধরেছি! ভোরের আলো, দুপুরের ছায়া, বিকেলের পড়ন্ত রোদ—সবই যেন আমাকে শিখিয়েছে আলোর পাঠ, রঙের ভাষা।
গড়াই ছিল আমার আলোকচিত্রী জীবনের প্রথম দিকের ছবি তোলার ‘সাবজেক্ট’। আর একই সঙ্গে আমার অনুভূতির সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয়। মন খারাপ হলে নদীর পাড়ে বসে থাকতাম, মন ভালো থাকলে কোনো নৌকায় বসে গল্প জমাতাম।
এই নদী শুধু ছবি তোলার বিষয়ই দেয়নি, আমাকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে নদীপাড়ের ও শহরের এক অদেখা জীবনের সঙ্গে।
ছবি তুলতে গিয়ে নতুনভাবে আবার পরিচিত হয়েছিলাম নদীপাড়ের দোকানে সকালবেলার খিচুড়ি, ছয় রাস্তার মোড়ের লুচি, আমলাপাড়ার ফুচকা, মজমপুরের ধুলোমাখা রাস্তা, মোহিনী মিলের পুরোনো দেয়াল, ছেঁউড়িয়ার বাউল গান, রেলস্টেশনের চা, হরিপুর ব্রিজের রেলিং, ঘোড়াঘাটের নৌকা আর সুলতানপুরের ড্রেজিংয়ের মতো নানা দৃশ্যের সঙ্গে।
কুষ্টিয়া ছেড়েছি আজ তিন বছর হলো। কিন্তু এখনো যখন কারো মুখে ‘কুষ্টিয়া’ শব্দটা শুনি, চোখের সামনে ভেসে ওঠে গড়াইয়ের পাড়, ঘোড়াঘাটের নৌকা, হরিপুর ব্রিজের ছবি। এতটাই গভীর ছাপ রেখে গেছে নদীটা।
সেই দিনগুলি ছিল ফটোগ্রাফির অদ্ভুত নেশায় ভরা। হাতে ছিল টিউশনের টাকা জমিয়ে কেনা ‘নাইকন ডি ৭১০০’ মডেলের ক্যামেরা, ক্রপ সেন্সর বডি। সে সময় যদিও এটাই ছিল অনেক। ছবি তো আর ডিভাইসে হয়না, ছবি তৈরি হয় মাথায়। তখন কন্ট্রাস্ট কালার, প্যানিং, মোশন, ডিসাইসিভ মোমেন্টস, জাক্সটাপজিশন ইত্যাদি নিয়েই পড়ে থাকতাম।
গড়াইয়ে আমার ছবিতোলার মূল ‘এরিয়া’ ছিল ঘোড়াঘাট, থানাপাড়া বাঁধ, সুলতানপুর পদ্মা-গড়াইয়ের মোহনা এলাকা। যেদিন ছবি তুলতে যেতাম, সেদিন উঠতাম খুব ভোরে ছয় রাস্তার মোড়ের দোকানে লুচি খেয়ে একসঙ্গে আমি আর আমার ফটোগ্রাফি পার্টনার প্রান্ত বের হতে যেতাম ক্যামেরার ব্যাগ কাঁধে নিয়ে।
আমাদের টার্গেট থাকত প্রতিদিন অন্তত একটা ভালো ছবি বের করে আনার। তবে আমরা সারাদিনই ঘুরতাম ক্যামেরা নিয়ে। কখনো কখনো দুপুরের খাবারও খাওয়া হতো না। ফ্রেমের নেশা এক অদ্ভুত নেশা।
স্পষ্ট মনে পরে, প্রথম দিকের এক ‘ফটোওয়াক’-এ নতুন ধরনের ফটো পার্সপেক্টিভ পেয়েছিলাম। একটা গরুর মাথা ঠিক ক্যামেরার সামনে, আর তার একটু পেছনে দাঁড়িয়ে গরুর মালিক, একজন মহিলা। এটা যে একটা ভালো ছবি হতে পারে, সেটা বুঝতে আমার প্রায় দেড় বছর সময় লেগেছিল। বুঝতে পেরে ছবিটা স্যোশাল মিডিয়াতে প্রকাশ করেছিলাম। ছবিটা সবাই পছন্দ করেছিল।
গড়াই পাড়ের থানাপাড়া বাঁধ ছিল আমাদের সবচেয়ে পরিচিত জায়গা। সেখানে ছবি তুলতে তুলতে স্থানীয়দের অনেকের সঙ্গেই আমাদের সখ্য গড়ে উঠেছিল। প্রায়ই তাঁদের সঙ্গে বসে গল্প করতাম, টং দোকানে আড্ডা দিতাম।
ফলে থানাপাড়া বাঁধে ছবি তোলার ‘অ্যাক্সেস’ নিয়ে আমাদের কোনো ঝামেলা পোহাতে হয়নি। বরং তাদের কেউ কেউ আবার আমাদের ছবির সাবজেক্ট দেখিয়ে দিত। বলত, ‘মামা এইটার ছবি তোলেন।’
একবার নদীর চড়ে বাঁধা ছাগলের ছবি তুলছিলাম। ছাগলের মালিক এক বৃদ্ধা এসে আমাকে বললেন, ‘আমাকেও তুলেন, এটা আমার বাচ্চা।’ এটা বলেই ছাগলটাকে বুকে টেনে নিয়ে একটা চুমু দিলেন। মুহূর্তটা আজও চোখে ভাসে।
এক বৃদ্ধ জেলের ছবি আমরা প্রায়ই তুলতাম। তিনি মূলত মাদ্রাসার শিক্ষক, শখের বশে জাল দিয়ে মাছ ধরতেন। ছবি তুলতে তুলতে তাঁর সঙ্গে এমন সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল যে, তিনি নিজে থেকেই আমাদের বলতেন ‘এখানে ছবি ভালো হচ্ছেনা, চলো সামনে যাই। ওখানে বেশি জায়গা পাবে ছবি তোলার জন্য।’ আবার পরদিন কখন তিনি মাছ ধরতে আসবেন, সেটাও জানিয়ে দিতেন।
গড়াইয়ের ধারের নিম্নবিত্তদের পাড়ার শিশুদের কোলাহলও হয়ে উঠেছিল আমাদের ছবির অংশ। ড্রেজিংয়ের সময় ওদের খেলা, হৈচৈ—সবই ছিল এক ধরনের চলমান দৃশ্য। কখনো শিশুরা ঘুড়ি উড়াত, কখনো টায়ার গড়িয়ে দৌড়াত, কখনো লাটিম বা মার্বেলের খেলায় ডুবে থাকত। সেই ছেলেবেলা-গন্ধমাখা দৃশ্যগুলোও আমার ফ্রেমের ভেতর জায়গা করে নিয়েছিল।
তবে নদীপাড়ের মানুষগুলো বেঁচে থাকে সংগ্রাম করেই। শহরের বুক চিড়ে বয়ে চলা নদী অনেক মানুষের জীবিকার উৎস। গড়াই তাঁদের নিত্যদিনের গৃহস্থালি কাজের পানির যোগান দেয়। তবে খরার সময় বেড়ে যায় দুর্ভোগ। মার্চ-এপ্রিলে যখন চর পড়ে, তখন বালি খুঁড়ে তারা খাবার পানি তোলে। তারপর ফুঁটিয়ে সেটা খাওয়ার উপযোগী করে।
আর গড়াই নদীর চর একেবারেই বৈচিত্র্যময়। দু-একদিন পরপরই দৃশ্য বদলে যেতে দেখেছি। হরিপুর ব্রিজ থেকে তাকালে মনে হতো, প্রকৃতি যেন প্রতিদিন নতুন জামা গায়ে দিয়ে হাজির হচ্ছে।
আগেই বলেছি ছবি তোলা আমার নেশা। আমার ক্ষেত্রে, ছবি তোলার যে সত্যিকারের তাগিদ, কোথাও গিয়ে মনে হয় সেটা বোধহয় গড়াই নদীর পাড়েই খানিকটা ফেলে এসেছি। ঢাকায় এসে ফটোগ্রাফিতে ডিপ্লোমা করেছি, আরো ভালো ক্যামেরা কিনেছি, নানা জায়গায় গিয়েছি ছবি তুলতে। তবু গড়াইয়ের সেই ভোরবেলায় আলো ধরার অস্থিরতা আর অনূভুতি আর ফিরে পাই না।
বাংলাদেশের নদীগুলোর নামের ভেতরেই আছে এক ধরনের মায়া। শুধু নাম উচ্চারণ করলেই যেন ভেসে আসে শান্তির আবহ। নদী মানেই কেমন একেকটা কবিতা, যেটা চোখ বন্ধ করলেই ভিজুয়ালাইজ করা যায়।
‘ফটোগ্রাফি’ আমার নেশা। এর সঙ্গে প্রথম পরিচয় হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন। আমি তখন কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। শহরে থাকতাম, আর শহরের পাশ দিয়ে বয়ে চলা গড়াই নদী হয়ে উঠেছিল আমার ফটোগ্রাফির প্রথম মেন্টর। শুনতে অদ্ভুত লাগতে পারে, মেন্টর সাধারণত ‘মানুষ’ হয়। প্রকৃতিও যে কত বড় শিক্ষক, সেটা গড়াই নদী আমাকে শিখিয়েছে।
গড়াইয়ের সঙ্গে আমার স্মৃতি মাত্র ছয় বছরের। অথচ সেই ছয় বছরেই কত শত ফ্রেমে তাকে ধরেছি! ভোরের আলো, দুপুরের ছায়া, বিকেলের পড়ন্ত রোদ—সবই যেন আমাকে শিখিয়েছে আলোর পাঠ, রঙের ভাষা।
গড়াই ছিল আমার আলোকচিত্রী জীবনের প্রথম দিকের ছবি তোলার ‘সাবজেক্ট’। আর একই সঙ্গে আমার অনুভূতির সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয়। মন খারাপ হলে নদীর পাড়ে বসে থাকতাম, মন ভালো থাকলে কোনো নৌকায় বসে গল্প জমাতাম।
এই নদী শুধু ছবি তোলার বিষয়ই দেয়নি, আমাকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে নদীপাড়ের ও শহরের এক অদেখা জীবনের সঙ্গে।
ছবি তুলতে গিয়ে নতুনভাবে আবার পরিচিত হয়েছিলাম নদীপাড়ের দোকানে সকালবেলার খিচুড়ি, ছয় রাস্তার মোড়ের লুচি, আমলাপাড়ার ফুচকা, মজমপুরের ধুলোমাখা রাস্তা, মোহিনী মিলের পুরোনো দেয়াল, ছেঁউড়িয়ার বাউল গান, রেলস্টেশনের চা, হরিপুর ব্রিজের রেলিং, ঘোড়াঘাটের নৌকা আর সুলতানপুরের ড্রেজিংয়ের মতো নানা দৃশ্যের সঙ্গে।
কুষ্টিয়া ছেড়েছি আজ তিন বছর হলো। কিন্তু এখনো যখন কারো মুখে ‘কুষ্টিয়া’ শব্দটা শুনি, চোখের সামনে ভেসে ওঠে গড়াইয়ের পাড়, ঘোড়াঘাটের নৌকা, হরিপুর ব্রিজের ছবি। এতটাই গভীর ছাপ রেখে গেছে নদীটা।
সেই দিনগুলি ছিল ফটোগ্রাফির অদ্ভুত নেশায় ভরা। হাতে ছিল টিউশনের টাকা জমিয়ে কেনা ‘নাইকন ডি ৭১০০’ মডেলের ক্যামেরা, ক্রপ সেন্সর বডি। সে সময় যদিও এটাই ছিল অনেক। ছবি তো আর ডিভাইসে হয়না, ছবি তৈরি হয় মাথায়। তখন কন্ট্রাস্ট কালার, প্যানিং, মোশন, ডিসাইসিভ মোমেন্টস, জাক্সটাপজিশন ইত্যাদি নিয়েই পড়ে থাকতাম।
গড়াইয়ে আমার ছবিতোলার মূল ‘এরিয়া’ ছিল ঘোড়াঘাট, থানাপাড়া বাঁধ, সুলতানপুর পদ্মা-গড়াইয়ের মোহনা এলাকা। যেদিন ছবি তুলতে যেতাম, সেদিন উঠতাম খুব ভোরে ছয় রাস্তার মোড়ের দোকানে লুচি খেয়ে একসঙ্গে আমি আর আমার ফটোগ্রাফি পার্টনার প্রান্ত বের হতে যেতাম ক্যামেরার ব্যাগ কাঁধে নিয়ে।
আমাদের টার্গেট থাকত প্রতিদিন অন্তত একটা ভালো ছবি বের করে আনার। তবে আমরা সারাদিনই ঘুরতাম ক্যামেরা নিয়ে। কখনো কখনো দুপুরের খাবারও খাওয়া হতো না। ফ্রেমের নেশা এক অদ্ভুত নেশা।
স্পষ্ট মনে পরে, প্রথম দিকের এক ‘ফটোওয়াক’-এ নতুন ধরনের ফটো পার্সপেক্টিভ পেয়েছিলাম। একটা গরুর মাথা ঠিক ক্যামেরার সামনে, আর তার একটু পেছনে দাঁড়িয়ে গরুর মালিক, একজন মহিলা। এটা যে একটা ভালো ছবি হতে পারে, সেটা বুঝতে আমার প্রায় দেড় বছর সময় লেগেছিল। বুঝতে পেরে ছবিটা স্যোশাল মিডিয়াতে প্রকাশ করেছিলাম। ছবিটা সবাই পছন্দ করেছিল।
গড়াই পাড়ের থানাপাড়া বাঁধ ছিল আমাদের সবচেয়ে পরিচিত জায়গা। সেখানে ছবি তুলতে তুলতে স্থানীয়দের অনেকের সঙ্গেই আমাদের সখ্য গড়ে উঠেছিল। প্রায়ই তাঁদের সঙ্গে বসে গল্প করতাম, টং দোকানে আড্ডা দিতাম।
ফলে থানাপাড়া বাঁধে ছবি তোলার ‘অ্যাক্সেস’ নিয়ে আমাদের কোনো ঝামেলা পোহাতে হয়নি। বরং তাদের কেউ কেউ আবার আমাদের ছবির সাবজেক্ট দেখিয়ে দিত। বলত, ‘মামা এইটার ছবি তোলেন।’
একবার নদীর চড়ে বাঁধা ছাগলের ছবি তুলছিলাম। ছাগলের মালিক এক বৃদ্ধা এসে আমাকে বললেন, ‘আমাকেও তুলেন, এটা আমার বাচ্চা।’ এটা বলেই ছাগলটাকে বুকে টেনে নিয়ে একটা চুমু দিলেন। মুহূর্তটা আজও চোখে ভাসে।
এক বৃদ্ধ জেলের ছবি আমরা প্রায়ই তুলতাম। তিনি মূলত মাদ্রাসার শিক্ষক, শখের বশে জাল দিয়ে মাছ ধরতেন। ছবি তুলতে তুলতে তাঁর সঙ্গে এমন সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল যে, তিনি নিজে থেকেই আমাদের বলতেন ‘এখানে ছবি ভালো হচ্ছেনা, চলো সামনে যাই। ওখানে বেশি জায়গা পাবে ছবি তোলার জন্য।’ আবার পরদিন কখন তিনি মাছ ধরতে আসবেন, সেটাও জানিয়ে দিতেন।
গড়াইয়ের ধারের নিম্নবিত্তদের পাড়ার শিশুদের কোলাহলও হয়ে উঠেছিল আমাদের ছবির অংশ। ড্রেজিংয়ের সময় ওদের খেলা, হৈচৈ—সবই ছিল এক ধরনের চলমান দৃশ্য। কখনো শিশুরা ঘুড়ি উড়াত, কখনো টায়ার গড়িয়ে দৌড়াত, কখনো লাটিম বা মার্বেলের খেলায় ডুবে থাকত। সেই ছেলেবেলা-গন্ধমাখা দৃশ্যগুলোও আমার ফ্রেমের ভেতর জায়গা করে নিয়েছিল।
তবে নদীপাড়ের মানুষগুলো বেঁচে থাকে সংগ্রাম করেই। শহরের বুক চিড়ে বয়ে চলা নদী অনেক মানুষের জীবিকার উৎস। গড়াই তাঁদের নিত্যদিনের গৃহস্থালি কাজের পানির যোগান দেয়। তবে খরার সময় বেড়ে যায় দুর্ভোগ। মার্চ-এপ্রিলে যখন চর পড়ে, তখন বালি খুঁড়ে তারা খাবার পানি তোলে। তারপর ফুঁটিয়ে সেটা খাওয়ার উপযোগী করে।
আর গড়াই নদীর চর একেবারেই বৈচিত্র্যময়। দু-একদিন পরপরই দৃশ্য বদলে যেতে দেখেছি। হরিপুর ব্রিজ থেকে তাকালে মনে হতো, প্রকৃতি যেন প্রতিদিন নতুন জামা গায়ে দিয়ে হাজির হচ্ছে।
আগেই বলেছি ছবি তোলা আমার নেশা। আমার ক্ষেত্রে, ছবি তোলার যে সত্যিকারের তাগিদ, কোথাও গিয়ে মনে হয় সেটা বোধহয় গড়াই নদীর পাড়েই খানিকটা ফেলে এসেছি। ঢাকায় এসে ফটোগ্রাফিতে ডিপ্লোমা করেছি, আরো ভালো ক্যামেরা কিনেছি, নানা জায়গায় গিয়েছি ছবি তুলতে। তবু গড়াইয়ের সেই ভোরবেলায় আলো ধরার অস্থিরতা আর অনূভুতি আর ফিরে পাই না।
মানুষের জীবন দীর্ঘ করার জন্য দৈনন্দিন জীবনে ছোট ছোট অভ্যাস খুব গুরুত্বপূর্ণ। তবে এই অভ্যাসগুলো মানা বা জীবনধারা বদলানো অনেকের কাছে কঠিন মনে হতে পারে। সবাই ব্যস্ত, সময়ের অভাব, আবার কোথা থেকে শুরু করবেন বা কীভাবে করবেন—এসব প্রশ্ন মাথায় আসে।
১ দিন আগেমুর্তজা বশীর বাংলাদেশের শিল্প আন্দোলনের দ্বিতীয় প্রজন্মের চিত্রশিল্পী। তাঁর জন্ম ১৯৩২ সালে ১৭ আগষ্ট ঢাকার শহরে। বাবা জ্ঞানতাপস ড. মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ, মা মরগুবা খাতুন।
২ দিন আগেভোর থেকেই ঢাকার আকাশে উলুধ্বনি আর শাঁখের আওয়াজে শুরু হয় শুভ জন্মাষ্টমীর উৎসব। রঙিন শোভাযাত্রা, ভক্তদের ঢল ও ঢাকেশ্বরী মন্দিরে পুজা-অর্চনায় মুখর ছিল পুরান ঢাকা। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথি ঘিরে ভক্তি, আনন্দ আর সম্প্রীতির আবহে মিলেমিশে ছিল আবেগ, স্মৃতি ও সামাজিক একতার আহ্বান।
৩ দিন আগেশিল্পী হিসেবে নিজের সৃষ্টির মধ্যে ততদিন একজন আইয়ুব বাচ্চু বেঁচে থাকবেন, যতদিন বাংলা গান বেঁচে থাকবে। পাশাপাশি আমার প্রজন্মের সবার মধ্যে তিনি বেঁচে থাকবেন একজন বড় ভাই হিসেবে, মেন্টর হিসেবে, অভিভাবক হিসেবে। কারণ, একজন আইয়ুব বাচ্চু বাংলা রকযাত্রায় আমাদের ছায়াবৃক্ষ।
৩ দিন আগে