বাঙালি লেখকেরা নাকি খাওয়া-দাওয়ায় কমজোর, এ কথা যে কতটা অসত্য, তা প্রমাণ করে দেবে এই লেখা। এখানে থাকল বাংলা সাহিত্যের কয়েকজন ধ্রুপদি লেখকের খানাখাদ্যের সরস বিবরণ। পহেলা বৈশাখের দিনকয়েক আগে লেখকদের রসনাবিলাসের কথা জানাচ্ছেন বাশিরুল আমিন
স্ট্রিম ডেস্ক

ভোজন রসিক হিসেবে বাঙালি যে তকমা পেয়েছে, তার পেছনে কি লেখকদের কোনোই ভূমিকা নেই? অনেকে বলেন, লেখকেরা শুধু লেখালেখিতেই মশগুল, খানাখাদ্যের ব্যাপারে তাঁদের আগ্রহ কম। তবে আমরা যদি কয়েকজন ধ্রপদি বাঙালি লেখকদের খাদ্যপ্রীতি দেখি, দেখা যাবে খাওয়া-দাওয়ার বিষয়েও কম যান না তাঁরা। লেখালেখি কিংবা জীবন-যাপনে খাবারের প্রতি আলাদা একটা টান লেখকদের বরাবরই ছিল। বিচিত্র আর নতুন নতুন খাবার নিয়ে এ অঞ্চলের লেখকেরা বেশ আগ্রহী, অন্তত বইপত্র আর তথ্য-উপাত্ত তাই বলে । ফলে ‘ভেতো বাঙালি’ কথাটি লেখকদের ক্ষেত্রে একদমই খাটে না।
খাদ্যের প্রতি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অগাধ ভালোবাসা যে কাউকেই অবাক করবে। তিনি অল্প অল্প করে দিনে খাবার খেতেন বেশ কয়েকবার। তবে ভাত খেতেন শুধু দুপুরে। উপাদেয় খাদ্যের প্রতিই তাঁর ছিল মূল আগ্রহ।
ঠাকুরবাড়ি বিশেষজ্ঞ দূর্গাপদ চট্টোপধ্যায় ‘অজানা রবীন্দ্রনাথ’শিরোনামের রচনায় কবিগুরুর দৈনন্দিন খাবারের একটা চিত্র তুলে ধরেন এভাবে : তাঁর দিনের শুরু হতো এক কাপ চা অথবা কফি দিয়ে। একটু বেলা হলে প্রাতঃরাশে ভেজা বাদাম, মধু সহযোগে টোস্ট আর এক কাপ দুধ নিতেন। আবার মাঝেমধ্যে তাঁর ছোটবেলার প্রিয় খাবার সন্দেশ ও কলা দুধ দিয়ে মেখে খেতেন। সকাল দশটা নাগাদ খেতেন লেবুর রস। দুপুরে অতি অল্প ভাত। আর মুড়ি-মুড়কি ছিল বিকেলের নাস্তা। সবশেষে রাতের বেলা কবিগুরু খেতেন বিভিন্ন ধরনের স্যুপ ও তরকারি।
তা ছাড়া মিষ্টান্ন ভালোবাসলেও নিয়ম করে নিমপাতার রস খেতেন রবীন্দ্রনাথ। বিদেশে গেলে বিভিন্ন ধরনের রেসিপি নিয়ে আসা ছিল তাঁর অভ্যাস। ঘরে ফিরে স্ত্রী মৃণালিণী দেবীকে, কখনোবা তাঁর ভাতিজী প্রজ্ঞা সুন্দরী দেবীকে দিয়ে এসব রান্না করাতেন। তাঁরা দুজনেই ছিলেন পাকা রাঁধুনী। আর এসব দিয়ে কবিগুরুর খামখেয়ালি সভার সদস্যদের ভূরিভোজনের ব্যবস্থাও হতো অতি উত্তম।
কী ছিল না সেসব রেসিপিতে! আপেল দিয়ে রান্না করা খাসির মাংস, তুর্কি কাবাব, স্যুপ, ফ্রাই করা চিকেন, সালাদসহ আরও হরেক পদ। সঙ্গে বাঙালি খাবার তো ছিলই। ঝোল দিয়ে কৈ মাছ, চিতলের পেটি কিংবা ফুলকপি দিয়ে মাছ রান্না তাঁর প্রিয় ছিল। আবার ফলমূল ছিল তাঁর নিত্য আহার্য। রবীন্দ্রকন্যা মীরা দেবী তার ‘স্মৃতিকথা’বইয়ে এমনটাই বলেছেন।
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ছিলেন আরও একধাপ এগিয়ে। নিজে তো খেতেনই অন্যদেরও খাওয়াতে পছন্দ করতেন। ভোজনরসিকদের নিয়ে ‘ভোজন সভা’ নামে এক সংঘই গঠন করেছিলেন তিনি। নিজেরা মিলেমিশে খেতেন, আবার অন্যদের বাড়িতে, বিশেষত স্বজনদের ঘরে প্রায়ই দলবেধে হানা দিতেন ভূরিভোজের আশায়।
কবিগুরু কিংবা বিদ্যাসাগর—তাঁদের সাধ ও সাধ্য দুটোই ছিল । কিন্তু বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ব্যাপার ছিল আলাদা। তাঁর সাধ থাকলেও সবসময় সাধ্য ছিল না। তবে তিনি পান-জর্দায় সবকিছু পুষিয়ে নিতেন। সারাদিনই তাঁর মুখে থাকত পান। চা-ও থাকত।
খাবার নিয়ে নজরুলের কোনো বাছবিচার ছিল না, যা পেতেন তাই খেতেন। খাশির মাংসের প্রতি তাঁর একটা আলাদা টান ছিল। নজরুলের পালিতা কন্যা শান্তিলতা দেবীর কাছ থেকে জানা যায়, তিনি ঝিঙে আর শুক্তোর একটা রান্না খুব পছন্দ করতেন। অসুস্থ হওয়ার পর সবজিই ছিল তাঁর মূল খাবার, সবজি কাটা সুন্দর না হলে খেতেন না তিনি। নজরুল গবেষক আসাদুল হক জানান, সবজি কাটার সাইজ একটু এদিক-সেদিক হলে নজরুল তা থালা থেকে ফেলে দিতেন।
কাজী নজরুল ইসলাম খুব ভালো রান্না জানতেন, কথিত আছে, তাঁর রান্না খেয়ে বিখ্যাত রসসাহিত্যিক শিবরাম চক্রবর্তী মোটা হয়ে গয়েছিলেন। স্বদেশি আন্দোলন করার কারণে জেলে গিয়েছিলেন শিবারম । তাকে নেওয়া হয়েছিল বহরমপুর জেলখানায়। সেখানে আগে থেকেই বন্দী ছিলেন নজরুল। তো নতুন বন্দী শিবরামকে দেখে কবি খুব খুশি হলেন, নিজের মতো একজন সঙ্গী পাওয়া গেল বলে। মেতে উঠলেন আনন্দ-আড্ডায়।
‘ঈশ্বর পৃথিবী ভালোবাসা’ বইয়ে শিবরাম চক্রবর্তী জানাচ্ছেন, নজরুল তখন জেলবন্দীদের রান্না করে খাওয়াতেন। শিবরামকে দেখে তাঁর রান্নার জোস বেড়ে গেল। বিপুল-বিক্রমে শুরু হলো রান্নাবান্না। নজরুল যা-ই রাঁধেন, শিবরামের জিহ্বায় তা অমৃত। আদতেও তা-ই ছিল। বলা ভালো, নজরুল তো কৈশোরেই রান্নাটা শিখে নিয়েছিলেন হোটেলে কাজ করার সুবাধে।
নজরুরেলর রান্নার বিবরণ দিতে গিয়ে শিবরাম লিখেছেন, ‘মনে পড়লে এখনো জিভে জল আসে, নিজেকে সজীব বোধ করি, আর জেলখানার সেই খানা! আহা! আমি তো বহরমপুর জেলে যাওয়ার আগ পর্যন্ত টিংটিঙে রোগা ছিলাম। তারপর দুই বেলা কাজীর খানা খেয়ে মোগলাই চেহারা নিয়ে বের হলাম যে আর রোগা হলাম না। জেলখানায় আর জেলের খানায় গড়া চেহারাটি এতটুকু টসকায়নি।’
লেখকদের খাবারবিষয়ক আলাপে যে মানুষটির নাম না আনলেই নয়, তিনি হলেন সিলেটের প্রখ্যাত সাহিত্যিক সৈয়দ মুজতবা আলী। বাঙালি পাঠকদের জিভে যে রকম জল আনতে তিনি পেরেছেন, আর কেউ অতোটা পারেননি। কত রকমের বিদেশি খাবারের নাম আর বর্ণনা পাওয়া যায় তাঁর লেখায়! পান আর আহার—দুটোতেই জবরদস্ত লোক ছিলেন তিনি। পানের গল্প নয়, আজ বরং এই রসসাহিত্যিকের আহার নিয়েই বলা যাক।
দেশ-বিদেশে যেখানেই তিনি গেছেন, আগে সেখানকার খাবারটা চেখে দেখছেন। আরব কি আফগান—সবখানেই খাবার নিয়ে মুজতবার আলাদা আগ্রহ ছিল। জাহাজে ভ্রমণের সময় ইরোপীয় খাবারও খেয়েছেন প্রচুর। তবে বিদেশি খাবার খেতে গিয়ে দেশের খাবারকেও তিনি অনুভব করেছেন দারুণভাবে। আতপ চালের ভাত, উচ্ছে ভাজা বা পটলের জন্য তাঁর নাকি প্রায়ই প্রাণ কাঁদত।
মুজতবা যেমন খাদ্যরসিক, তাঁর আশপাশের লোকজনও ছিল তেমন। আফগানস্থানে তাঁর ভৃত্য আবদুর রহমানের কথা মনে আছে! যে খাবার দিয়ে পুরো ঘর ভরে ফেলেছিল। ‘দেশ-বিদেশে’, ‘পঞ্চতন্ত্র’ কিংবা ‘জলে ডাঙায়’—সর্বত্রই বাহারি খাবারের কথা লিখেছেন তিনি।

ভোজন রসিক হিসেবে বাঙালি যে তকমা পেয়েছে, তার পেছনে কি লেখকদের কোনোই ভূমিকা নেই? অনেকে বলেন, লেখকেরা শুধু লেখালেখিতেই মশগুল, খানাখাদ্যের ব্যাপারে তাঁদের আগ্রহ কম। তবে আমরা যদি কয়েকজন ধ্রপদি বাঙালি লেখকদের খাদ্যপ্রীতি দেখি, দেখা যাবে খাওয়া-দাওয়ার বিষয়েও কম যান না তাঁরা। লেখালেখি কিংবা জীবন-যাপনে খাবারের প্রতি আলাদা একটা টান লেখকদের বরাবরই ছিল। বিচিত্র আর নতুন নতুন খাবার নিয়ে এ অঞ্চলের লেখকেরা বেশ আগ্রহী, অন্তত বইপত্র আর তথ্য-উপাত্ত তাই বলে । ফলে ‘ভেতো বাঙালি’ কথাটি লেখকদের ক্ষেত্রে একদমই খাটে না।
খাদ্যের প্রতি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অগাধ ভালোবাসা যে কাউকেই অবাক করবে। তিনি অল্প অল্প করে দিনে খাবার খেতেন বেশ কয়েকবার। তবে ভাত খেতেন শুধু দুপুরে। উপাদেয় খাদ্যের প্রতিই তাঁর ছিল মূল আগ্রহ।
ঠাকুরবাড়ি বিশেষজ্ঞ দূর্গাপদ চট্টোপধ্যায় ‘অজানা রবীন্দ্রনাথ’শিরোনামের রচনায় কবিগুরুর দৈনন্দিন খাবারের একটা চিত্র তুলে ধরেন এভাবে : তাঁর দিনের শুরু হতো এক কাপ চা অথবা কফি দিয়ে। একটু বেলা হলে প্রাতঃরাশে ভেজা বাদাম, মধু সহযোগে টোস্ট আর এক কাপ দুধ নিতেন। আবার মাঝেমধ্যে তাঁর ছোটবেলার প্রিয় খাবার সন্দেশ ও কলা দুধ দিয়ে মেখে খেতেন। সকাল দশটা নাগাদ খেতেন লেবুর রস। দুপুরে অতি অল্প ভাত। আর মুড়ি-মুড়কি ছিল বিকেলের নাস্তা। সবশেষে রাতের বেলা কবিগুরু খেতেন বিভিন্ন ধরনের স্যুপ ও তরকারি।
তা ছাড়া মিষ্টান্ন ভালোবাসলেও নিয়ম করে নিমপাতার রস খেতেন রবীন্দ্রনাথ। বিদেশে গেলে বিভিন্ন ধরনের রেসিপি নিয়ে আসা ছিল তাঁর অভ্যাস। ঘরে ফিরে স্ত্রী মৃণালিণী দেবীকে, কখনোবা তাঁর ভাতিজী প্রজ্ঞা সুন্দরী দেবীকে দিয়ে এসব রান্না করাতেন। তাঁরা দুজনেই ছিলেন পাকা রাঁধুনী। আর এসব দিয়ে কবিগুরুর খামখেয়ালি সভার সদস্যদের ভূরিভোজনের ব্যবস্থাও হতো অতি উত্তম।
কী ছিল না সেসব রেসিপিতে! আপেল দিয়ে রান্না করা খাসির মাংস, তুর্কি কাবাব, স্যুপ, ফ্রাই করা চিকেন, সালাদসহ আরও হরেক পদ। সঙ্গে বাঙালি খাবার তো ছিলই। ঝোল দিয়ে কৈ মাছ, চিতলের পেটি কিংবা ফুলকপি দিয়ে মাছ রান্না তাঁর প্রিয় ছিল। আবার ফলমূল ছিল তাঁর নিত্য আহার্য। রবীন্দ্রকন্যা মীরা দেবী তার ‘স্মৃতিকথা’বইয়ে এমনটাই বলেছেন।
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ছিলেন আরও একধাপ এগিয়ে। নিজে তো খেতেনই অন্যদেরও খাওয়াতে পছন্দ করতেন। ভোজনরসিকদের নিয়ে ‘ভোজন সভা’ নামে এক সংঘই গঠন করেছিলেন তিনি। নিজেরা মিলেমিশে খেতেন, আবার অন্যদের বাড়িতে, বিশেষত স্বজনদের ঘরে প্রায়ই দলবেধে হানা দিতেন ভূরিভোজের আশায়।
কবিগুরু কিংবা বিদ্যাসাগর—তাঁদের সাধ ও সাধ্য দুটোই ছিল । কিন্তু বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ব্যাপার ছিল আলাদা। তাঁর সাধ থাকলেও সবসময় সাধ্য ছিল না। তবে তিনি পান-জর্দায় সবকিছু পুষিয়ে নিতেন। সারাদিনই তাঁর মুখে থাকত পান। চা-ও থাকত।
খাবার নিয়ে নজরুলের কোনো বাছবিচার ছিল না, যা পেতেন তাই খেতেন। খাশির মাংসের প্রতি তাঁর একটা আলাদা টান ছিল। নজরুলের পালিতা কন্যা শান্তিলতা দেবীর কাছ থেকে জানা যায়, তিনি ঝিঙে আর শুক্তোর একটা রান্না খুব পছন্দ করতেন। অসুস্থ হওয়ার পর সবজিই ছিল তাঁর মূল খাবার, সবজি কাটা সুন্দর না হলে খেতেন না তিনি। নজরুল গবেষক আসাদুল হক জানান, সবজি কাটার সাইজ একটু এদিক-সেদিক হলে নজরুল তা থালা থেকে ফেলে দিতেন।
কাজী নজরুল ইসলাম খুব ভালো রান্না জানতেন, কথিত আছে, তাঁর রান্না খেয়ে বিখ্যাত রসসাহিত্যিক শিবরাম চক্রবর্তী মোটা হয়ে গয়েছিলেন। স্বদেশি আন্দোলন করার কারণে জেলে গিয়েছিলেন শিবারম । তাকে নেওয়া হয়েছিল বহরমপুর জেলখানায়। সেখানে আগে থেকেই বন্দী ছিলেন নজরুল। তো নতুন বন্দী শিবরামকে দেখে কবি খুব খুশি হলেন, নিজের মতো একজন সঙ্গী পাওয়া গেল বলে। মেতে উঠলেন আনন্দ-আড্ডায়।
‘ঈশ্বর পৃথিবী ভালোবাসা’ বইয়ে শিবরাম চক্রবর্তী জানাচ্ছেন, নজরুল তখন জেলবন্দীদের রান্না করে খাওয়াতেন। শিবরামকে দেখে তাঁর রান্নার জোস বেড়ে গেল। বিপুল-বিক্রমে শুরু হলো রান্নাবান্না। নজরুল যা-ই রাঁধেন, শিবরামের জিহ্বায় তা অমৃত। আদতেও তা-ই ছিল। বলা ভালো, নজরুল তো কৈশোরেই রান্নাটা শিখে নিয়েছিলেন হোটেলে কাজ করার সুবাধে।
নজরুরেলর রান্নার বিবরণ দিতে গিয়ে শিবরাম লিখেছেন, ‘মনে পড়লে এখনো জিভে জল আসে, নিজেকে সজীব বোধ করি, আর জেলখানার সেই খানা! আহা! আমি তো বহরমপুর জেলে যাওয়ার আগ পর্যন্ত টিংটিঙে রোগা ছিলাম। তারপর দুই বেলা কাজীর খানা খেয়ে মোগলাই চেহারা নিয়ে বের হলাম যে আর রোগা হলাম না। জেলখানায় আর জেলের খানায় গড়া চেহারাটি এতটুকু টসকায়নি।’
লেখকদের খাবারবিষয়ক আলাপে যে মানুষটির নাম না আনলেই নয়, তিনি হলেন সিলেটের প্রখ্যাত সাহিত্যিক সৈয়দ মুজতবা আলী। বাঙালি পাঠকদের জিভে যে রকম জল আনতে তিনি পেরেছেন, আর কেউ অতোটা পারেননি। কত রকমের বিদেশি খাবারের নাম আর বর্ণনা পাওয়া যায় তাঁর লেখায়! পান আর আহার—দুটোতেই জবরদস্ত লোক ছিলেন তিনি। পানের গল্প নয়, আজ বরং এই রসসাহিত্যিকের আহার নিয়েই বলা যাক।
দেশ-বিদেশে যেখানেই তিনি গেছেন, আগে সেখানকার খাবারটা চেখে দেখছেন। আরব কি আফগান—সবখানেই খাবার নিয়ে মুজতবার আলাদা আগ্রহ ছিল। জাহাজে ভ্রমণের সময় ইরোপীয় খাবারও খেয়েছেন প্রচুর। তবে বিদেশি খাবার খেতে গিয়ে দেশের খাবারকেও তিনি অনুভব করেছেন দারুণভাবে। আতপ চালের ভাত, উচ্ছে ভাজা বা পটলের জন্য তাঁর নাকি প্রায়ই প্রাণ কাঁদত।
মুজতবা যেমন খাদ্যরসিক, তাঁর আশপাশের লোকজনও ছিল তেমন। আফগানস্থানে তাঁর ভৃত্য আবদুর রহমানের কথা মনে আছে! যে খাবার দিয়ে পুরো ঘর ভরে ফেলেছিল। ‘দেশ-বিদেশে’, ‘পঞ্চতন্ত্র’ কিংবা ‘জলে ডাঙায়’—সর্বত্রই বাহারি খাবারের কথা লিখেছেন তিনি।

বাংলা গদ্যরীতির শুরু হয়েছিল তিনটি পৃথক ছাঁচ ধরে; যথাক্রমে জনবুলি অসংস্কৃত ছাঁচে উইলিয়াম কেরির ‘কথোপকথন’, আরবি-ফারসিমিশ্রিত ছাঁচে রাম রাম বসুর ‘প্রতাপাদিত্য চরিত্র’ এবং সংস্কৃত ব্যাকরণে তৎসম শব্দবহুল ছাঁচে মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কারের ‘বত্রিশ সিংহাসনে’র মাধ্যমে।
১৮ ঘণ্টা আগে
অস্কারের দৌড়ে থাকা নতুন সিনেমা ‘হ্যামনেট’। উইলিয়াম ও অ্যাগনেস শেক্সপিয়ারের সংসার জীবনকে কল্পনায় তুলে ধরেছে এই সিনেমা। এতে দেখানো হয়েছে সন্তান হারানোর তীব্র বেদনা।
১ দিন আগে
ভোজনরসিক বাঙালির খাদ্যাভ্যাসে পিঠার প্রচলন বহু পুরোনো। বিভিন্ন মুখরোচক আর বাহারি স্বাদের পিঠার প্রচলন ছিল আদিকাল থেকেই। এর সন্ধান পাওয়া যায় ১০০ বছরের পুরোনো রেসিপি বইতেও। এমন তিনটি বাহারি পিঠার রেসিপি ‘মিষ্টান্ন-পাক’ বই থেকে তুলে ধরা হলো স্ট্রিমের পাঠকদের জন্য।
১ দিন আগে
‘পিঠা’ শব্দটি শোনা মাত্রই চোখে ভেসে ওঠে শীতের সকালের কুয়াশা, আগুন জ্বলা চুলা, গরম–গরম ভাপা পিঠা, গুড় আর খেজুর রসের ঘ্রাণ। কিন্তু ‘পিঠা’ শব্দটি এসেছে কোথা থেকে এবং কীভাবে বাংলা সংস্কৃতির সঙ্গে পিঠা এত গভীরভাবে মিশে গেছে, তা কি জানেন?
২ দিন আগে