সৈকত আমীন
২০২৪ সালের শেষের দিকে কলকাতার শিয়ালদহ রেল স্টেশনের কাছে ছোট একটি খাবারের দোকান দক্ষিণ এশিয়ার লাখ লাখ মানুষের নজর কাড়ে। এর মালিক রাজু দাস, তবে তিনি রাজুদা নামেই বেশি পরিচিত। তিনি ‘পকেট পরোটা’ নামে পরিচিত পরোটা এত কম দামে বিক্রি করছিলেন যে ক্রমবর্ধমান খাদ্য মূল্যস্ফীতির যুগে প্রায় অসম্ভব মনে হয়েছিল।
ক্রেতারা ২০ টাকায় তিনটি পরোটার সঙ্গে যতখুশি ভাজি, সেদ্ধ ডিম, পেঁয়াজ ও মরিচ খেতে পারতেন। হ্যাশট্যাগ রাজুদাপকেটপরোটা (#RajudaPocketPorota) সমেত তার দোকানের সামনে লম্বা লাইনের ভিডিও ইউটিউব ও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে এবং লাখ লাখ মানুষ তা দেখে।
কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই রাজুর দোকানের গল্পটি সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশেও ছড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশের ফুড ভ্লগার এবং সাধারণ নাগরিকরা তাঁর উদারতা দেখে অবাক হন। তাঁরা দেখেন তিনি প্রায়ই তাঁর ক্রেতাদের বলছেন, আগে খাওয়া, পরে টাকা।
অনেক বাংলাদেশির কাছে রাজুর ওই দোকনটি কঠিন সময়ে বেঁচে থাকার এবং সংহতির প্রতীক হয়ে উঠে। এমনকি লোকজন সরাসরি রাজুদার পরোটা খেয়ে দেখার জন্য ঢাকা থেকে কলকাতায় যান।
রাজুদা কেবল একজন খাদ্য বিক্রেতাই নয়, তিনি একজন কালচারাল আইনকন হয়ে উঠেন। যার জীবনযুদ্ধ এবং সরলতা মুদ্রাস্ফীতি ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে নিজস্ব লড়াইয়ে দর্শকদের সঙ্গে গভীরভাবে অনুরণিত হয়েছিল।
এক বছরেরও কম সময় পরে দৃশ্যত বাংলাদেশি সোশ্যাল মিডিয়ায় রাজুদার আধিপত্যকে আরেকজন ছাড়িয়ে গেছেন বলে মনে হয়। তিনি হলেন মিজানুর রহমান। মিজান ভাই নামে অধিক পরিচিত তিনি।
মিজানুর যেটিকে ‘গরিবের বুফে’ বা বুফে বলেন তা গরীব মানুষের জন্য ঢাকার আাগারগাও এলাকায় চালু করেছিলেন। এটির ধরন আলাদা, কিন্তু উদারতায় একই চেতনা ধারণ করে। রাস্তার পাশে মিজানের এই বুফেতে ক্রেতারা যত ইচ্ছা খেতে পারেন। আর খাওয়া শেষে একটি বক্সে নিজের ইচ্ছা মতো টাকা পরিশোধ করতে পারেন।
মিজানের বুফেতে গরু ও মুরগীর মাংসের জন্য মূল্য ১০০টাকা এবং সবজির ৬০ টাকা। তবে কোনো নির্দিষ্ট বিল নেই। অনেক পরিবার পুরো এক প্লেট খাবার জোগাড় করতে যেখানে হিমশিম খায়, সেই পরিবেশে মিজানের এই বিশ্বাস-ভিত্তিক ব্যবস্থা তাৎক্ষণিকভাবে তাদের নজর কাড়ে।
রাজুদার জন্য এই যাত্রাটি দীর্ঘ ছিল। কারণ ভাইরাল হওয়ার আগে তিনি শিয়ালদহে ১৪ বছরের বেশি সময় ধরে খাবার বিক্রি করেছেন। তার পকেট পরোটা ২০২৪ সালের আবিষ্কার ছিল না। বরং এক দশকের বেশি সময় ধরে ক্ষুধা নিবারণে এক বিনয়ী সমাধান ছিল।
যদিও সোশ্যাল মিডিয়া তার ছোট দোকানকে আন্তর্জাতিক আলোচনার কেন্দ্রে নিয়ে এসেছিল। ২০২৪ সালের শেষের দিকে বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় ইউটিউব চ্যানেলে রাজুদার দোকানের ভিডিও আপলোড হয়েছিল।
দর্শকরা ভিডিওতে দেখেন খাবার খেতে ক্রেতারা লাইন ধরে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছেন। অনেক দর্শক ওই ভিডিওর মন্তব্যের ঘরে এই অঞ্চলে খাবারের ক্রমবর্ধমান মূল্যের তুলনায় রাজুদার দোকানের সাশ্রয়ী মূল্যের বিষয় নিয়ে মন্তব্য করেন।
এদিকে, বাংলাদেশি কিছু দর্শক পোস্ট শেয়ার করে জানাচ্ছিলেন, কী করে শুধু রাজুদার দোকানের পরোটার স্বাদ নিতে কলকাতায় গেছেন। এই ভ্রমণকে তাঁরা এক ধরনের তীর্থযাত্রা হিসেবে দেখছিলেন।
ভারতীয় মূল ধারার টেলিভিশন দ্রুতই এই গল্প লুফে নেয় এবং বিনোদনমূল শোগুলোতে রাজুদাকে আমন্ত্রণ জানানো শুরু করে। ২০২৫ সালের জানুয়ারির মধ্যে তিনি পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের অনেক জায়গায় পরিচিত নাম হয়ে উঠেন। তবে খ্যাতির সঙ্গে সঙ্গে চাপও এসেছিল। তাঁর ছোট দোকান হঠাৎ ওই ভিড় সামলাতে পারছিল না।
ক্যামেরা নিয়ে ফুড ভ্লগাররা তার কাছে ভিড় করেন। অনলাইন পেমেন্ট ব্যবস্থা পরিচালনা করা দূরূহ হয়ে পড়েছিল। যে উদারতা তাঁকে বিখ্যাত করেছিল তা এখন লজিস্টিক্যাল মাথা ব্যথায় পরিণত হয়েছে। কিন্তু তারপরও বাংলাদেশে রাজুদা রাজত্ব করছিলেন। তবে তাঁর সেই রাজত্ব ভেঙে পড়তে চলেছে।
হঠাৎ খ্যাতির ভার সামলাতে রাজুদা যখন হিমশিম খাচ্ছিলেন, তখন ঢাকায় নতুন একজন নিজের ছাপ রাখার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
২০২৫ সালের আগস্টে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে মিজানুর রহমান তাঁর ‘গরিবের বুফে’ চালু করেন। রাজুদার নির্দিষ্ট দামের মডেলের বিপরীতে মিজান গ্রাহকদের ইচ্ছামতো খাওয়ার সুযোগ দেন এবং মূল্য নিতেন বেছে নেওয়া আইটেম অনুযায়ী। আর কাউন্টারে ক্যাশিয়ারের বদলে রাখা হয় একটি বাক্স।
দোকানে মেনু ছিল খুবই সাধারণ। গরু বা মুরগি দিয়ে ভাতের মূল্য ছিল ১০০ টাকা, আর সবজি ৬০ টাকা। ভাত যত ইচ্ছা নেওয়া যেত। সঙ্গে ভাজিও পাওয়া যেত। মিজান বিনামূল্যে মুগ ডালও দিতেন।
অনেকের জন্য এটি শুধু সস্তা খাবারই ছিল না, বরং পরিবারের সঙ্গে মর্যাদাপূর্ণভাবে খাওয়ার সুযোগ ছিল। মোটরবাইক চালক, রিকশাচালক, সিএনজি চালক থেকে শুরু করে ধীরে ধীরে সব শ্রেণির মানুষ মিজানের বুফেতে খেতে আসতে শুরু করেন। শিশুসহ পরিবারগুলোর কাছেও এই দোকান জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। কারণ পরিমাণের কোনো সীমাবদ্ধতা না থাকায় তাঁরা একসঙ্গে নির্ভয়ে খেতে পারতেন।
এক সাক্ষাৎকারে মিজান নিজেই ব্যাখ্যা করেছিলেন, তিনি আসলে লোকসানে বুফেটি চালাচ্ছেন না। ব্যস্ততম দিনে ২৫০ থেকে ৩০০ জন তার বুফেতে খেতে আসেন। এতে প্রতিদিন এক লাখ টাকার বেশি বিক্রি হয়। ভিড় সামলাতে তিনি টোকেন ব্যবস্থা চালু করেন এবং খুব সচেতনতার সঙ্গে প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাণ খাবার রান্না করেন।
সোশ্যাল মিডিয়ার এক ইনফ্লুয়েন্সার মিজানের বুফের একটি ভিডিও আপলোড করলে পরিস্থিতি বদলে যায়। কয়েক দিনের মধ্যেই মিজান হয়ে ওঠেন নতুন ভাইরাল সেনসেশন।
হাজার হাজার শেয়ার ও মন্তব্য আসতে থাকে। এসব মন্তব্যে অর্থনৈতিক সঙ্কটকালে নিম্নআয়ের মানুষদের প্রকৃত সহায়তার জন্য মিজানের প্রশংসা করা হয়। দ্রুতই ইউটিউব ও ফেসবুক ভরে যায় মিজানের বুফের ভিডিওতে। ট্রেন্ডে চলে আসতে শুরু করে হ্যাশট্যাগ গরিবেরবুফে। কিছু ভ্লগার তাঁকে সরাসরি রাজুদার সঙ্গে তুলনা করে বুফেটিকে সস্তা ও উদার খাবার সংস্কৃতির ‘নেক্সট লেভেল’ সংস্করণ বলতে থাকেন।
এর চেয়ে ভালো সময় আর হতে পারে না। কারণ ২০২৫ সালের মাঝামাঝি এসে রাজুদার গল্প আর নতুন ছিল না। আর দর্শকদের মনোযোগ ধরে রাখতে নতুন কনটেন্ট দরকার ছিল। সেই সময়ে মিজানের বুফে হয়ে উঠে আঞ্চলিক ট্রেন্ডের সঙ্গে মিলে যাওয়া স্থানীয় উত্তর।
বাংলাদেশের ডিজিটাল দুনিয়ায় রাজুদার পকেট পরোটার জায়গায় মিজানের বুফে উঠে আসার কয়েকটি কারণ আছে।
প্রথমত, সময়টা গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
রাজুদা ২০২৪ সালে জনপ্রিয়তার শীর্ষে উঠেন। কিন্তু নতুন ভিডিও না আসায় গল্পটি ধীরে ধীরে আড়ালে চলে যেতে থাকে। দর্শকরা যখন নতুন কিছু খুঁজছিলেন, ঠিক সেই মুহূর্তে মিজানের বুফের যাত্রা।
দ্বিতীয়ত, স্থানীয় প্রাসঙ্গিকতা বড় ভূমিকা পালন করেছে। রাজুদার গল্প অনুপ্রেরণাদায়ক হলেও সেটি কলকাতাভিত্তিক ছিল। বাংলাদেশি দর্শকের কাছে মিজানের বুফে ছিল তাঁদের বাস্তবতার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত। বিশ্বাসভিত্তিক অর্থ পরিশোধের এই পদ্ধতি দেশের শ্রমজীবী মানুষের সংগ্রামের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ ঘটায়। যা কনটেন্টকে আরও বেশি প্রাসঙ্গিক করে তোলে।
তৃতীয়ত, ব্যবসার সম্প্রসারণক্ষমতাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। রাজুদার দোকান কখনোই বড় ভিড় সামলানোর জন্য তৈরি ছিল না। তিনি নিয়মিতই ভিড়জনিত সমস্যায় পড়তেন। কিন্তু মিজান দ্রুত টোকেন ব্যবস্থা চালু করেন, প্রতিদিনের বিক্রি বাড়ান এবং তার দোকানটিকে পরিবার ও ব্যক্তি—উভয়ের জন্যই উপযোগী করে তোলেন।
বুফেটি জনপ্রিয়তা পাওয়ার পর যে ভিড় হয় তা মিজানের কল্পনার বাইরে চলে যায়। ছোট উদ্যোগ হিসেবে শুরু হলেও একসময় প্রতিদিনের খাবারের জন্য বিশাল লাইন পড়ে যায়।
অনেকে খেয়ে টাকা না দিয়েই চলে যেত। ফলে বুফেতে বিশ্বাসভিত্তিক যে ব্যবস্থা চালু করেছিলেন মিজান, তাতে পরিবর্তন আনতে হয়।
মিজান বলেন, ‘শুরুতে আমি সবাইকে আগে খেতে দিতাম, তারপর বলতাম টাকা বাক্সে দিতে। কিন্তু ভিড় আর অনেকের টাকা না দিয়ে চলে যাওয়ার কারণে টোকেন সিস্টেম চালু ছাড়া আমার আর কোনো উপায় ছিল না। এতে খাবার নষ্ট হয় না। আর আমি জানি ঠিক কতজনের জন্য রান্না করতে হবে।
প্রচুর চাহিদার কারণে বিভিন্ন রকম তরকারি সামলানোও কঠিন হয়ে উঠে। তাই বুফে সচল রাখতে মিজান মেনুতে পরিবর্তন আনেন। তিনি বলেন, আগে আমি ডাল, সবজি, মুরগি, অনেক কিছু দিতাম। কিন্তু ভিড় সামলানো অসম্ভব হয়ে যায়। এখন শুধু গরুর মাংস দিই। প্রতিটি টুকরো ৫০ গ্রাম মেপে দেওয়া হয়, যাতে সবাই সমানভাবে পায়।
এই সীমাবদ্ধতাগুলো দোকানটির পরিচালনাকে বাস্তবসম্মত করে তোলে। যদিও মিজানের একার ওপর এ বোঝা চাপেনি। অপ্রত্যাশিতভাবে বিভিন্ন জায়গায় থেকে সহায়তা আসতে শুরু হয়। বিদেশে থাকা বাংলাদেশি প্রবাসী থেকে শুরু করে স্থানীয় ইউটিউবার ও কনটেন্ট ক্রিয়েটররা হাঁড়ি-পাতিল, প্লেট, এমনকি নগদ অর্থও অনুদান দিতে থাকেন।
সেই অনুদানের কথা স্মরণ করে কৃতজ্ঞতা ভরে মিজান বলেন, হাঁড়ি-পাতিল ও টাকা দিয়ে অনেক প্রবাসী ভাই এবং স্থানীয় ইউটিউবার ও কনটেন্ট নির্মাতারা সাহায্য করেছেন।
তিনি বলেন, কেউ কেউ অগ্রিম টাকা দিয়ে বলেন—গরিবদের খাওয়ান। তাদের সহায়তায় আমি দোকানটি চালিয়ে যাই। একা হলে হয়তো বন্ধ করে দিতে হতো।
সন্ধ্যায় দোকানের ভিড়ভাট্টা সামলাতে সামলাতে মিজানুর রহমান ব্যাখ্যা করেন, ভাবনাটা সহজ। আমি এমন একটি জায়গা বানাতে চেয়েছি যেখানে টাকার কারণে কেউ না খেয়ে থাকবে না। মানুষ ইচ্ছামতো খাবে, তারপর যা পারে বাক্সে দিয়ে যাবে। কেউ পুরো টাকা দেয়, কেউ কম দেয়, কেউ আবার বেশিও দেয়। আমার কোনো লস হয় না। দিন শেষে হিসাব মিলে যায়। আসল বিষয় হলো—সবাই সম্মান নিয়ে খেতে পারে।
গ্রাহকদের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়াও ছিল আবেগঘন। ৪৫ বছর বয়সী রিকশাচালক আবদুল করিম বললেন, আগে কোনো খাবারের দোকানে তিনি এত সম্মান পাননি।
তিনি বলেন, সারাদিন হাড়ভাঙ্গা খাটুনির পর এখানে বসে খেতে ভালো লাগে। কত চামচ ভাত নিলাম গুনতে হয় না। ১০০ টাকায় গরুর মাংস দিয়ে পেট ভরে খেতে পারি। আগে একই টাকা খরচ করে খেলেও ক্ষুধা থেকে যেত।
মোটরবাইক চালক শহীন আলমের জন্য এই বুফে এখন নিয়মিত বিরতির জায়গা। তিনি বলেন, রাস্তায় থাকা অবস্থায় দ্রুত আর সাশ্রয়ী খাবার দরকার হয়। এখানে ভালো খেতে পারি এবং আমি জানি মালিক আমাকে বিশ্বাস করেন। কখনো কখনো একটু আধটু বেশি দিই, কখনো কম দিই। কেউ বিচার করে না। এই স্বাধীনতাটাই বিশেষ কিছু।
শেরেবাংলা নগরে একটি অফিসে চাকরি করেন তরুণী ফারজানা আক্তার। তিনি প্রায়ই সহকর্মীদের নিয়ে এখানে আসেন। তিনি বলেন, এটি রেস্তোরাৎর চেয়ে আলাদা কিছু মনে হয়, তাই বন্ধুদের সঙ্গে এখানে আসি। কোনো ওয়েটার তাড়া দেয় না, কেউ বিল চেক করে না। খাও, যতটুকু পারো দাও, তারপর চলে যাও। এটা সহজ, কিন্তু সম্মানজনক। ঢাকায় এমন জায়গা বিরল।
বাংলাদেশে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ট্রেন্ড কীভাবে কাজ করে মিজানের উত্থান সে সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা দেয়। স্থানীয় প্রাসঙ্গিকতা ছাড়া ভাইরাল কনটেন্ট টিকে থাকতে পারে না।
তবে মিজানের দ্রুত এ বৃদ্ধি ঝুঁকিও নিয়ে এসেছে। বর্তমানে তাঁকে নিয়ে মিম তৈরি চলছে পুরোদমে। সেগুলোতে সাংস্কৃতিক নায়ক থেকে তাঁকে ইউটিউবার ও খেয়ে টাকা না দেওয়া লোকদের পিছু ছুটে চলা এক চরিত্র হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে।
এসব পরিস্থিতি কীভাবে সামলানো হবে সেটিই গল্পের বাকি অংশ বলে দেবে।
২০২৪ সালের শেষের দিকে কলকাতার শিয়ালদহ রেল স্টেশনের কাছে ছোট একটি খাবারের দোকান দক্ষিণ এশিয়ার লাখ লাখ মানুষের নজর কাড়ে। এর মালিক রাজু দাস, তবে তিনি রাজুদা নামেই বেশি পরিচিত। তিনি ‘পকেট পরোটা’ নামে পরিচিত পরোটা এত কম দামে বিক্রি করছিলেন যে ক্রমবর্ধমান খাদ্য মূল্যস্ফীতির যুগে প্রায় অসম্ভব মনে হয়েছিল।
ক্রেতারা ২০ টাকায় তিনটি পরোটার সঙ্গে যতখুশি ভাজি, সেদ্ধ ডিম, পেঁয়াজ ও মরিচ খেতে পারতেন। হ্যাশট্যাগ রাজুদাপকেটপরোটা (#RajudaPocketPorota) সমেত তার দোকানের সামনে লম্বা লাইনের ভিডিও ইউটিউব ও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে এবং লাখ লাখ মানুষ তা দেখে।
কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই রাজুর দোকানের গল্পটি সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশেও ছড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশের ফুড ভ্লগার এবং সাধারণ নাগরিকরা তাঁর উদারতা দেখে অবাক হন। তাঁরা দেখেন তিনি প্রায়ই তাঁর ক্রেতাদের বলছেন, আগে খাওয়া, পরে টাকা।
অনেক বাংলাদেশির কাছে রাজুর ওই দোকনটি কঠিন সময়ে বেঁচে থাকার এবং সংহতির প্রতীক হয়ে উঠে। এমনকি লোকজন সরাসরি রাজুদার পরোটা খেয়ে দেখার জন্য ঢাকা থেকে কলকাতায় যান।
রাজুদা কেবল একজন খাদ্য বিক্রেতাই নয়, তিনি একজন কালচারাল আইনকন হয়ে উঠেন। যার জীবনযুদ্ধ এবং সরলতা মুদ্রাস্ফীতি ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে নিজস্ব লড়াইয়ে দর্শকদের সঙ্গে গভীরভাবে অনুরণিত হয়েছিল।
এক বছরেরও কম সময় পরে দৃশ্যত বাংলাদেশি সোশ্যাল মিডিয়ায় রাজুদার আধিপত্যকে আরেকজন ছাড়িয়ে গেছেন বলে মনে হয়। তিনি হলেন মিজানুর রহমান। মিজান ভাই নামে অধিক পরিচিত তিনি।
মিজানুর যেটিকে ‘গরিবের বুফে’ বা বুফে বলেন তা গরীব মানুষের জন্য ঢাকার আাগারগাও এলাকায় চালু করেছিলেন। এটির ধরন আলাদা, কিন্তু উদারতায় একই চেতনা ধারণ করে। রাস্তার পাশে মিজানের এই বুফেতে ক্রেতারা যত ইচ্ছা খেতে পারেন। আর খাওয়া শেষে একটি বক্সে নিজের ইচ্ছা মতো টাকা পরিশোধ করতে পারেন।
মিজানের বুফেতে গরু ও মুরগীর মাংসের জন্য মূল্য ১০০টাকা এবং সবজির ৬০ টাকা। তবে কোনো নির্দিষ্ট বিল নেই। অনেক পরিবার পুরো এক প্লেট খাবার জোগাড় করতে যেখানে হিমশিম খায়, সেই পরিবেশে মিজানের এই বিশ্বাস-ভিত্তিক ব্যবস্থা তাৎক্ষণিকভাবে তাদের নজর কাড়ে।
রাজুদার জন্য এই যাত্রাটি দীর্ঘ ছিল। কারণ ভাইরাল হওয়ার আগে তিনি শিয়ালদহে ১৪ বছরের বেশি সময় ধরে খাবার বিক্রি করেছেন। তার পকেট পরোটা ২০২৪ সালের আবিষ্কার ছিল না। বরং এক দশকের বেশি সময় ধরে ক্ষুধা নিবারণে এক বিনয়ী সমাধান ছিল।
যদিও সোশ্যাল মিডিয়া তার ছোট দোকানকে আন্তর্জাতিক আলোচনার কেন্দ্রে নিয়ে এসেছিল। ২০২৪ সালের শেষের দিকে বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় ইউটিউব চ্যানেলে রাজুদার দোকানের ভিডিও আপলোড হয়েছিল।
দর্শকরা ভিডিওতে দেখেন খাবার খেতে ক্রেতারা লাইন ধরে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছেন। অনেক দর্শক ওই ভিডিওর মন্তব্যের ঘরে এই অঞ্চলে খাবারের ক্রমবর্ধমান মূল্যের তুলনায় রাজুদার দোকানের সাশ্রয়ী মূল্যের বিষয় নিয়ে মন্তব্য করেন।
এদিকে, বাংলাদেশি কিছু দর্শক পোস্ট শেয়ার করে জানাচ্ছিলেন, কী করে শুধু রাজুদার দোকানের পরোটার স্বাদ নিতে কলকাতায় গেছেন। এই ভ্রমণকে তাঁরা এক ধরনের তীর্থযাত্রা হিসেবে দেখছিলেন।
ভারতীয় মূল ধারার টেলিভিশন দ্রুতই এই গল্প লুফে নেয় এবং বিনোদনমূল শোগুলোতে রাজুদাকে আমন্ত্রণ জানানো শুরু করে। ২০২৫ সালের জানুয়ারির মধ্যে তিনি পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের অনেক জায়গায় পরিচিত নাম হয়ে উঠেন। তবে খ্যাতির সঙ্গে সঙ্গে চাপও এসেছিল। তাঁর ছোট দোকান হঠাৎ ওই ভিড় সামলাতে পারছিল না।
ক্যামেরা নিয়ে ফুড ভ্লগাররা তার কাছে ভিড় করেন। অনলাইন পেমেন্ট ব্যবস্থা পরিচালনা করা দূরূহ হয়ে পড়েছিল। যে উদারতা তাঁকে বিখ্যাত করেছিল তা এখন লজিস্টিক্যাল মাথা ব্যথায় পরিণত হয়েছে। কিন্তু তারপরও বাংলাদেশে রাজুদা রাজত্ব করছিলেন। তবে তাঁর সেই রাজত্ব ভেঙে পড়তে চলেছে।
হঠাৎ খ্যাতির ভার সামলাতে রাজুদা যখন হিমশিম খাচ্ছিলেন, তখন ঢাকায় নতুন একজন নিজের ছাপ রাখার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
২০২৫ সালের আগস্টে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে মিজানুর রহমান তাঁর ‘গরিবের বুফে’ চালু করেন। রাজুদার নির্দিষ্ট দামের মডেলের বিপরীতে মিজান গ্রাহকদের ইচ্ছামতো খাওয়ার সুযোগ দেন এবং মূল্য নিতেন বেছে নেওয়া আইটেম অনুযায়ী। আর কাউন্টারে ক্যাশিয়ারের বদলে রাখা হয় একটি বাক্স।
দোকানে মেনু ছিল খুবই সাধারণ। গরু বা মুরগি দিয়ে ভাতের মূল্য ছিল ১০০ টাকা, আর সবজি ৬০ টাকা। ভাত যত ইচ্ছা নেওয়া যেত। সঙ্গে ভাজিও পাওয়া যেত। মিজান বিনামূল্যে মুগ ডালও দিতেন।
অনেকের জন্য এটি শুধু সস্তা খাবারই ছিল না, বরং পরিবারের সঙ্গে মর্যাদাপূর্ণভাবে খাওয়ার সুযোগ ছিল। মোটরবাইক চালক, রিকশাচালক, সিএনজি চালক থেকে শুরু করে ধীরে ধীরে সব শ্রেণির মানুষ মিজানের বুফেতে খেতে আসতে শুরু করেন। শিশুসহ পরিবারগুলোর কাছেও এই দোকান জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। কারণ পরিমাণের কোনো সীমাবদ্ধতা না থাকায় তাঁরা একসঙ্গে নির্ভয়ে খেতে পারতেন।
এক সাক্ষাৎকারে মিজান নিজেই ব্যাখ্যা করেছিলেন, তিনি আসলে লোকসানে বুফেটি চালাচ্ছেন না। ব্যস্ততম দিনে ২৫০ থেকে ৩০০ জন তার বুফেতে খেতে আসেন। এতে প্রতিদিন এক লাখ টাকার বেশি বিক্রি হয়। ভিড় সামলাতে তিনি টোকেন ব্যবস্থা চালু করেন এবং খুব সচেতনতার সঙ্গে প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাণ খাবার রান্না করেন।
সোশ্যাল মিডিয়ার এক ইনফ্লুয়েন্সার মিজানের বুফের একটি ভিডিও আপলোড করলে পরিস্থিতি বদলে যায়। কয়েক দিনের মধ্যেই মিজান হয়ে ওঠেন নতুন ভাইরাল সেনসেশন।
হাজার হাজার শেয়ার ও মন্তব্য আসতে থাকে। এসব মন্তব্যে অর্থনৈতিক সঙ্কটকালে নিম্নআয়ের মানুষদের প্রকৃত সহায়তার জন্য মিজানের প্রশংসা করা হয়। দ্রুতই ইউটিউব ও ফেসবুক ভরে যায় মিজানের বুফের ভিডিওতে। ট্রেন্ডে চলে আসতে শুরু করে হ্যাশট্যাগ গরিবেরবুফে। কিছু ভ্লগার তাঁকে সরাসরি রাজুদার সঙ্গে তুলনা করে বুফেটিকে সস্তা ও উদার খাবার সংস্কৃতির ‘নেক্সট লেভেল’ সংস্করণ বলতে থাকেন।
এর চেয়ে ভালো সময় আর হতে পারে না। কারণ ২০২৫ সালের মাঝামাঝি এসে রাজুদার গল্প আর নতুন ছিল না। আর দর্শকদের মনোযোগ ধরে রাখতে নতুন কনটেন্ট দরকার ছিল। সেই সময়ে মিজানের বুফে হয়ে উঠে আঞ্চলিক ট্রেন্ডের সঙ্গে মিলে যাওয়া স্থানীয় উত্তর।
বাংলাদেশের ডিজিটাল দুনিয়ায় রাজুদার পকেট পরোটার জায়গায় মিজানের বুফে উঠে আসার কয়েকটি কারণ আছে।
প্রথমত, সময়টা গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
রাজুদা ২০২৪ সালে জনপ্রিয়তার শীর্ষে উঠেন। কিন্তু নতুন ভিডিও না আসায় গল্পটি ধীরে ধীরে আড়ালে চলে যেতে থাকে। দর্শকরা যখন নতুন কিছু খুঁজছিলেন, ঠিক সেই মুহূর্তে মিজানের বুফের যাত্রা।
দ্বিতীয়ত, স্থানীয় প্রাসঙ্গিকতা বড় ভূমিকা পালন করেছে। রাজুদার গল্প অনুপ্রেরণাদায়ক হলেও সেটি কলকাতাভিত্তিক ছিল। বাংলাদেশি দর্শকের কাছে মিজানের বুফে ছিল তাঁদের বাস্তবতার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত। বিশ্বাসভিত্তিক অর্থ পরিশোধের এই পদ্ধতি দেশের শ্রমজীবী মানুষের সংগ্রামের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ ঘটায়। যা কনটেন্টকে আরও বেশি প্রাসঙ্গিক করে তোলে।
তৃতীয়ত, ব্যবসার সম্প্রসারণক্ষমতাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। রাজুদার দোকান কখনোই বড় ভিড় সামলানোর জন্য তৈরি ছিল না। তিনি নিয়মিতই ভিড়জনিত সমস্যায় পড়তেন। কিন্তু মিজান দ্রুত টোকেন ব্যবস্থা চালু করেন, প্রতিদিনের বিক্রি বাড়ান এবং তার দোকানটিকে পরিবার ও ব্যক্তি—উভয়ের জন্যই উপযোগী করে তোলেন।
বুফেটি জনপ্রিয়তা পাওয়ার পর যে ভিড় হয় তা মিজানের কল্পনার বাইরে চলে যায়। ছোট উদ্যোগ হিসেবে শুরু হলেও একসময় প্রতিদিনের খাবারের জন্য বিশাল লাইন পড়ে যায়।
অনেকে খেয়ে টাকা না দিয়েই চলে যেত। ফলে বুফেতে বিশ্বাসভিত্তিক যে ব্যবস্থা চালু করেছিলেন মিজান, তাতে পরিবর্তন আনতে হয়।
মিজান বলেন, ‘শুরুতে আমি সবাইকে আগে খেতে দিতাম, তারপর বলতাম টাকা বাক্সে দিতে। কিন্তু ভিড় আর অনেকের টাকা না দিয়ে চলে যাওয়ার কারণে টোকেন সিস্টেম চালু ছাড়া আমার আর কোনো উপায় ছিল না। এতে খাবার নষ্ট হয় না। আর আমি জানি ঠিক কতজনের জন্য রান্না করতে হবে।
প্রচুর চাহিদার কারণে বিভিন্ন রকম তরকারি সামলানোও কঠিন হয়ে উঠে। তাই বুফে সচল রাখতে মিজান মেনুতে পরিবর্তন আনেন। তিনি বলেন, আগে আমি ডাল, সবজি, মুরগি, অনেক কিছু দিতাম। কিন্তু ভিড় সামলানো অসম্ভব হয়ে যায়। এখন শুধু গরুর মাংস দিই। প্রতিটি টুকরো ৫০ গ্রাম মেপে দেওয়া হয়, যাতে সবাই সমানভাবে পায়।
এই সীমাবদ্ধতাগুলো দোকানটির পরিচালনাকে বাস্তবসম্মত করে তোলে। যদিও মিজানের একার ওপর এ বোঝা চাপেনি। অপ্রত্যাশিতভাবে বিভিন্ন জায়গায় থেকে সহায়তা আসতে শুরু হয়। বিদেশে থাকা বাংলাদেশি প্রবাসী থেকে শুরু করে স্থানীয় ইউটিউবার ও কনটেন্ট ক্রিয়েটররা হাঁড়ি-পাতিল, প্লেট, এমনকি নগদ অর্থও অনুদান দিতে থাকেন।
সেই অনুদানের কথা স্মরণ করে কৃতজ্ঞতা ভরে মিজান বলেন, হাঁড়ি-পাতিল ও টাকা দিয়ে অনেক প্রবাসী ভাই এবং স্থানীয় ইউটিউবার ও কনটেন্ট নির্মাতারা সাহায্য করেছেন।
তিনি বলেন, কেউ কেউ অগ্রিম টাকা দিয়ে বলেন—গরিবদের খাওয়ান। তাদের সহায়তায় আমি দোকানটি চালিয়ে যাই। একা হলে হয়তো বন্ধ করে দিতে হতো।
সন্ধ্যায় দোকানের ভিড়ভাট্টা সামলাতে সামলাতে মিজানুর রহমান ব্যাখ্যা করেন, ভাবনাটা সহজ। আমি এমন একটি জায়গা বানাতে চেয়েছি যেখানে টাকার কারণে কেউ না খেয়ে থাকবে না। মানুষ ইচ্ছামতো খাবে, তারপর যা পারে বাক্সে দিয়ে যাবে। কেউ পুরো টাকা দেয়, কেউ কম দেয়, কেউ আবার বেশিও দেয়। আমার কোনো লস হয় না। দিন শেষে হিসাব মিলে যায়। আসল বিষয় হলো—সবাই সম্মান নিয়ে খেতে পারে।
গ্রাহকদের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়াও ছিল আবেগঘন। ৪৫ বছর বয়সী রিকশাচালক আবদুল করিম বললেন, আগে কোনো খাবারের দোকানে তিনি এত সম্মান পাননি।
তিনি বলেন, সারাদিন হাড়ভাঙ্গা খাটুনির পর এখানে বসে খেতে ভালো লাগে। কত চামচ ভাত নিলাম গুনতে হয় না। ১০০ টাকায় গরুর মাংস দিয়ে পেট ভরে খেতে পারি। আগে একই টাকা খরচ করে খেলেও ক্ষুধা থেকে যেত।
মোটরবাইক চালক শহীন আলমের জন্য এই বুফে এখন নিয়মিত বিরতির জায়গা। তিনি বলেন, রাস্তায় থাকা অবস্থায় দ্রুত আর সাশ্রয়ী খাবার দরকার হয়। এখানে ভালো খেতে পারি এবং আমি জানি মালিক আমাকে বিশ্বাস করেন। কখনো কখনো একটু আধটু বেশি দিই, কখনো কম দিই। কেউ বিচার করে না। এই স্বাধীনতাটাই বিশেষ কিছু।
শেরেবাংলা নগরে একটি অফিসে চাকরি করেন তরুণী ফারজানা আক্তার। তিনি প্রায়ই সহকর্মীদের নিয়ে এখানে আসেন। তিনি বলেন, এটি রেস্তোরাৎর চেয়ে আলাদা কিছু মনে হয়, তাই বন্ধুদের সঙ্গে এখানে আসি। কোনো ওয়েটার তাড়া দেয় না, কেউ বিল চেক করে না। খাও, যতটুকু পারো দাও, তারপর চলে যাও। এটা সহজ, কিন্তু সম্মানজনক। ঢাকায় এমন জায়গা বিরল।
বাংলাদেশে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ট্রেন্ড কীভাবে কাজ করে মিজানের উত্থান সে সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা দেয়। স্থানীয় প্রাসঙ্গিকতা ছাড়া ভাইরাল কনটেন্ট টিকে থাকতে পারে না।
তবে মিজানের দ্রুত এ বৃদ্ধি ঝুঁকিও নিয়ে এসেছে। বর্তমানে তাঁকে নিয়ে মিম তৈরি চলছে পুরোদমে। সেগুলোতে সাংস্কৃতিক নায়ক থেকে তাঁকে ইউটিউবার ও খেয়ে টাকা না দেওয়া লোকদের পিছু ছুটে চলা এক চরিত্র হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে।
এসব পরিস্থিতি কীভাবে সামলানো হবে সেটিই গল্পের বাকি অংশ বলে দেবে।
গতকাল রাত সোয়া ১০টায় আমরা হারালাম বরেণ্য লালনসংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীনকে। এ লেখায় তাকানো হয়েছে করা হয়েছে তাঁর কিছু কম পরিচিত দিকের ওপর। এতে তুলে ধরা হয়েছে তাঁর চঞ্চল শৈশবের গল্প, উত্তম-সুচিত্রার সিনেমা ও মায়ের কোলে সংগীতের প্রথম ছোঁয়া, নজরুলগীতি থেকে লালনের গান পর্যন্ত শিল্পীজীবনের অজানা অধ্যায় এবং স
৩ দিন আগেচলতি মাসের ১২ তারিখ থেকে শুরু হয়েছে আইফোনের সর্বশেষ মডেল, আইফোন ১৭ লাইনআপ-এর চারটি ভার্সনের ফোনের প্রি-অর্ডার। বিশ্বের অনেক দেশের মতো বাংলাদেশেও নতুন মডেলের আইফোন বাজারে এলে অনেকেই হুমড়ি খেয়ে সেটা কিনতে চান। মডেলভেদে আইফোন ১৭-এর দাম দেশের বাজারে দাঁড়াতে পারে প্রায় তিনলাখ টাকা পর্যন্ত।
৩ দিন আগেসভ্যতার অগ্রগতিতে বিস্ময়কর এক বুদ্ধিবৃত্তি ও চিন্তার ব্যবহারিক বিবর্তনের ধারা সক্রিয় আছে। দর্শনের বিমূর্ত চিন্তা থেকে শুরু করে রাজনীতির বাস্তব সিদ্ধান্ত পর্যন্ত এই ধারার বিস্তার। এই বিবর্তন সরল বা একরৈখিক নয়।
৩ দিন আগেফরিদা পারভীন এমন একজন শিল্পী, যিনি নাগরিক ও গ্রামীণ—দুই ধরনের গায়নশৈলীর সুমিশ্র কণ্ঠরূপকার। এই ধরনের গায়কী গুণ উপমহাদেশের খুব কমই পাওয়া যায়। যেমনটি দেখেছি নুসরাত ফতেহ আলী খান বা আবিদা পারভীনের কাওয়ালির মধ্যে।
৪ দিন আগে