ফাবিহা বিনতে হক

বিকেলবেলার এক পশলা বৃষ্টি, হাতে ধোঁয়া ওঠা চায়ের কাপ। জানালার গ্রিল ধরে বাইরে তাকাতেই ইউটিউবের প্লে-লিস্টে বেজে উঠল নব্বই দশকের জনপ্রিয় কোনো গান। ঠিক সেই মুহূর্তে আপনার বুকের ভেতর কেমন যেন একটা মোচড় দিয়ে ওঠে। কারো চোখে জমা হয় অশ্রুবিন্দু, কিন্তু ঠোঁটের কোণে লেগে থাকে মৃদু হাসি।
অদ্ভুত এক ভালোলাগা আর মৃদু বিষাদের মিশ্র অনুভূতি ছড়িয়ে পড়ে আমাদের মনে ও মগজে। মনে পড়ে যায় স্কুল পালানো দুপুর, পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা, কিংবা হারিয়ে যাওয়া কোনো প্রিয় মানুষের মুখ, ভোলা দিনের কাঁদন-হাসি। এ ধরনের অনুভূতিকেই বলা হয় ‘নস্টালজিয়া’।
‘নস্টালজিয়া’ শব্দটি এসেছে দুটি গ্রিক শব্দ থেকে—‘নস্তোস’ যার অর্থ বাড়ি ফেরা আর ‘আলগোস’-এর অর্থ বেদনা। সপ্তদশ শতকে সুইস চিকিৎসক জোহানেস হোফার প্রথম এই শব্দটি ব্যবহার করেন সামরিক চিকিৎসাবিদ্যায়। সে সময় দীর্ঘদিন ঘরছাড়া সৈন্যদের নানা শারীরিক ও মানসিক সমস্যাকে ‘নস্টালজিয়া’ বলা হতো। বাড়ি ফেরার তীব্র আকাঙ্ক্ষা, উদ্বেগ আর অবসাদের মতো লক্ষণগুলোকে তখন একধরনের রোগ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল।
তবে আধুনিক মনোবিজ্ঞান এই ধারণাকে আমূল পাল্টে দিয়েছে। এখন নস্টালজিয়াকে ইতিবাচক আবেগ হিসেবে গণ্য করা হয়, যা মূলত অতীতের গুরুত্বপূর্ণ সব স্মৃতি নিয়ে তৈরি।
আমাদের মতো সাধারণ মানুষের কাছে নস্টালজিয়া হলো ‘স্মৃতির সুঘ্রাণ’। বর্তমান সময় যতই চাকচিক্যময় বা সুখকর হোক না কেন, আমরা প্রায়ই অতীতে ডুব দিতে ভালোবাসি। এজন্যই লোকেরা বলে, ওল্ড ইজ গোল্ড।
কিন্তু কেন?
মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, মানব মস্তিষ্ক দারুণ চতুর প্রকৃতির। সে অতীতকে মনে রাখার সময় একটা বিশেষ ফিল্টার ব্যবহার করে। একে বলা হয় ‘রোজি রেট্রোস্পেকশন’ বা অতীতকে রঙিন করে দেখা।
খেয়াল করে দেখবেন, ছোটবেলায় লোডশেডিংয়ের গরমে হয়তো আমাদের খুব কষ্ট হতো। কিন্তু আজ যখন আমরা সেই লোডশেডিংয়ের কথা ভাবি, তখন গরমের কষ্টের চেয়ে মোমবাতির আলোয় ভাই-বোনদের সঙ্গে গল্প করার আনন্দের স্মৃতিটাই মনের কোণে জ্বলজ্বল করে উঠে।
পরীক্ষার আগের রাতের টেনশন আমরা ভুলে যাই, মনে রাখি শুধু বন্ধুদের সঙ্গে টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে খাওয়া ফুচকার স্বাদ। আমাদের মস্তিষ্ক নেতিবাচক স্মৃতিগুলোকে ঝাপসা করে দেয় আর ফেলে আসা দিনের সুখময় স্মৃতিগুলোতেই বেশি গুরুত্ব দেয়।
আর তাই অতীত আমাদের কাছে হয়ে ওঠে এক নিরাপদ ও সুখের আশ্রয়স্থল—যেখানে বিপদ আসার আশংকা নেই, নতুন করে আঘাত পাওয়ার সম্ভাবনা নেই কিংবা কাছের কাউকে হারিয়ে ফেলার ভয় নেই।
এই বাছাই করা স্মৃতির কারণেই নস্টালজিয়া এত উপভোগ্য।

তাছাড়া, বর্তমান যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন অনেকেই। স্মার্টফোনের নোটিফিকেশন, কাজের ডেডলাইন, আর সোশ্যাল মিডিয়ার ‘সো কল্ড’ সফল হওয়ার” ইঁদুর দৌড়ে আমরা সবাই ক্লান্ত। এই প্রতিনিয়ত ছুটে চলার ভেতর নস্টালজিয়া আমাদের মাঝখানে ‘পজ বাটন’ হিসেবে কাজ করে।
আমরা যখন স্মৃতিকাতর হই, তখন আমরা আসলে ফিরে যাই সেই সময়ে, যখন জীবন ছিল ধীরস্থির, ঝামেলাবিহীন।
আশির দশকের সেই ল্যান্ডফোন যুগের অপেক্ষা, চিঠির ভাঁজে লুকিয়ে থাকা আবেগ, কিংবা ক্যাসেট প্লেয়ারে গান শোনার আকুতি—এসব কিছুই যেন আমাদের জীবনকে আরও ভালবাসতে শেখায়।
নস্টালজিয়া আমাদের মস্তিষ্কে এই বার্তা দেয় যে, জীবনটা সবসময় এত জটিল ছিল না।
এই ভাবনা আমাদের বর্তমান সময়ের স্ট্রেস বা মানসিক চাপ কমাতে ওষুধের মতো কাজ করে। একঘেঁয়ে বা কঠিন সময়ে অতীত স্মৃতি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, আমরা একসময় খুব সুখী ছিলাম আর ভবিষ্যতেও সুখী হতে পারব।
সময়ের বিবর্তনে নিজের ভেতরেও অনেক পরিবর্তন আসে। অতীতের ‘'আমি'র সঙ্গে বর্তমানের ‘আমি’র অনেক পার্থক্য থাকে, যা আমরা কেবল স্মৃতির গভীরে ডুব দিয়ে বুঝতে পারি।
কখনো কি ভেবে দেখেছেন, কেন আমরা পুরোনো ছবি দেখতে এত পছন্দ করি? নস্টালজিয়ার ভেতর আমরা আমাদের পুরনো আমিটাকে খুঁজে পাই। ‘আমি কে’—এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে আমরা বারবার অতীতে ফিরি।
কারণ শৈশবের দুরন্তপনা, কৈশোরের প্রথম প্রেম, কিংবা ভার্সিটি জীবনের রঙিন দিনগুলো; এই সবকিছু মিলে তৈরি হয়েছে আজকের ‘আমি’। নস্টালজিয়া আমাদের সেই পুরোনো ‘আমি’র সঙ্গে বর্তমানের ‘আমি’র সংযোগ ঘটিয়ে দেয়। এই অনুভূতি আমাদের মনে করিয়ে দেয় জীবনের অনেকটা পথ আমরা সফলভাবে পাড়ি দিয়ে এসেছি, যা আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেয় বহুগুণে।
যখন আমরা একাকিত্বে ভুগি, তখন এই পুরোনো স্মৃতিগুলোই আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে আমরা একা নই, আমাদের জীবনেও ভালোবাসায় পরিপূর্ণ আনন্দের মুহূর্ত রয়েছে।
এছাড়া, নস্টালজিয়া উপভোগ করার পেছনে আমাদের ইন্দ্রিয়গুলোর একটি বড় ভূমিকা আছে। বিশেষ করে ঘ্রাণ ও শব্দ। বৃষ্টির পর মাটির সোঁদা গন্ধ আপনাকে মুহূর্তেই নিয়ে যেতে পারে গ্রামের বাড়ির উঠোনটিতে। আলমারি থেকে বের করা পুরোনো শাড়ির ন্যাপথলিন বা সুগন্ধি সাবানের গন্ধ মনে করিয়ে দিতে পারে মায়ের কথা, মায়ের আঁচলে জড়িয়ে থাকা মিষ্টি ঘ্রাণের কথা। এমনকি কোনো বিশেষ খাবারের স্বাদও আপনাকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পারে দাদির হাতের রান্নার জাদুতে।
একে বলা হয় ‘প্রুস্তিয়ান মেমোরি ইফেক্ট’। এই আকস্মিক স্মৃতির হানা আমাদের বিষাদগ্রস্ত করে না, বরং এক ধরনের উষ্ণতা দেয়। মনে হয়, সময়টা যেন ওখানেই থমকে আছে। দিনশেষে, নস্টালজিয়া অতীতের জাবর কাটা নয় বরং অতীতের ভেতর দিয়ে বর্তমানকে আরও সুন্দর, আরও আনন্দময় করে তোলা।
কারণ, যখন বর্তমান সময়টা খুব অসহনীয় হয়ে ওঠে, ভবিষ্যৎ খুব ঝাপসা মনে হয়, তখন এই অতীতই আমাদের কাঁধে হাত রেখে বলে, ‘সব ঠিক হয়ে যাবে। আগেও কঠিন সময় ছিল, তুমি পার করে এসেছ।’

বিকেলবেলার এক পশলা বৃষ্টি, হাতে ধোঁয়া ওঠা চায়ের কাপ। জানালার গ্রিল ধরে বাইরে তাকাতেই ইউটিউবের প্লে-লিস্টে বেজে উঠল নব্বই দশকের জনপ্রিয় কোনো গান। ঠিক সেই মুহূর্তে আপনার বুকের ভেতর কেমন যেন একটা মোচড় দিয়ে ওঠে। কারো চোখে জমা হয় অশ্রুবিন্দু, কিন্তু ঠোঁটের কোণে লেগে থাকে মৃদু হাসি।
অদ্ভুত এক ভালোলাগা আর মৃদু বিষাদের মিশ্র অনুভূতি ছড়িয়ে পড়ে আমাদের মনে ও মগজে। মনে পড়ে যায় স্কুল পালানো দুপুর, পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা, কিংবা হারিয়ে যাওয়া কোনো প্রিয় মানুষের মুখ, ভোলা দিনের কাঁদন-হাসি। এ ধরনের অনুভূতিকেই বলা হয় ‘নস্টালজিয়া’।
‘নস্টালজিয়া’ শব্দটি এসেছে দুটি গ্রিক শব্দ থেকে—‘নস্তোস’ যার অর্থ বাড়ি ফেরা আর ‘আলগোস’-এর অর্থ বেদনা। সপ্তদশ শতকে সুইস চিকিৎসক জোহানেস হোফার প্রথম এই শব্দটি ব্যবহার করেন সামরিক চিকিৎসাবিদ্যায়। সে সময় দীর্ঘদিন ঘরছাড়া সৈন্যদের নানা শারীরিক ও মানসিক সমস্যাকে ‘নস্টালজিয়া’ বলা হতো। বাড়ি ফেরার তীব্র আকাঙ্ক্ষা, উদ্বেগ আর অবসাদের মতো লক্ষণগুলোকে তখন একধরনের রোগ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল।
তবে আধুনিক মনোবিজ্ঞান এই ধারণাকে আমূল পাল্টে দিয়েছে। এখন নস্টালজিয়াকে ইতিবাচক আবেগ হিসেবে গণ্য করা হয়, যা মূলত অতীতের গুরুত্বপূর্ণ সব স্মৃতি নিয়ে তৈরি।
আমাদের মতো সাধারণ মানুষের কাছে নস্টালজিয়া হলো ‘স্মৃতির সুঘ্রাণ’। বর্তমান সময় যতই চাকচিক্যময় বা সুখকর হোক না কেন, আমরা প্রায়ই অতীতে ডুব দিতে ভালোবাসি। এজন্যই লোকেরা বলে, ওল্ড ইজ গোল্ড।
কিন্তু কেন?
মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, মানব মস্তিষ্ক দারুণ চতুর প্রকৃতির। সে অতীতকে মনে রাখার সময় একটা বিশেষ ফিল্টার ব্যবহার করে। একে বলা হয় ‘রোজি রেট্রোস্পেকশন’ বা অতীতকে রঙিন করে দেখা।
খেয়াল করে দেখবেন, ছোটবেলায় লোডশেডিংয়ের গরমে হয়তো আমাদের খুব কষ্ট হতো। কিন্তু আজ যখন আমরা সেই লোডশেডিংয়ের কথা ভাবি, তখন গরমের কষ্টের চেয়ে মোমবাতির আলোয় ভাই-বোনদের সঙ্গে গল্প করার আনন্দের স্মৃতিটাই মনের কোণে জ্বলজ্বল করে উঠে।
পরীক্ষার আগের রাতের টেনশন আমরা ভুলে যাই, মনে রাখি শুধু বন্ধুদের সঙ্গে টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে খাওয়া ফুচকার স্বাদ। আমাদের মস্তিষ্ক নেতিবাচক স্মৃতিগুলোকে ঝাপসা করে দেয় আর ফেলে আসা দিনের সুখময় স্মৃতিগুলোতেই বেশি গুরুত্ব দেয়।
আর তাই অতীত আমাদের কাছে হয়ে ওঠে এক নিরাপদ ও সুখের আশ্রয়স্থল—যেখানে বিপদ আসার আশংকা নেই, নতুন করে আঘাত পাওয়ার সম্ভাবনা নেই কিংবা কাছের কাউকে হারিয়ে ফেলার ভয় নেই।
এই বাছাই করা স্মৃতির কারণেই নস্টালজিয়া এত উপভোগ্য।

তাছাড়া, বর্তমান যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন অনেকেই। স্মার্টফোনের নোটিফিকেশন, কাজের ডেডলাইন, আর সোশ্যাল মিডিয়ার ‘সো কল্ড’ সফল হওয়ার” ইঁদুর দৌড়ে আমরা সবাই ক্লান্ত। এই প্রতিনিয়ত ছুটে চলার ভেতর নস্টালজিয়া আমাদের মাঝখানে ‘পজ বাটন’ হিসেবে কাজ করে।
আমরা যখন স্মৃতিকাতর হই, তখন আমরা আসলে ফিরে যাই সেই সময়ে, যখন জীবন ছিল ধীরস্থির, ঝামেলাবিহীন।
আশির দশকের সেই ল্যান্ডফোন যুগের অপেক্ষা, চিঠির ভাঁজে লুকিয়ে থাকা আবেগ, কিংবা ক্যাসেট প্লেয়ারে গান শোনার আকুতি—এসব কিছুই যেন আমাদের জীবনকে আরও ভালবাসতে শেখায়।
নস্টালজিয়া আমাদের মস্তিষ্কে এই বার্তা দেয় যে, জীবনটা সবসময় এত জটিল ছিল না।
এই ভাবনা আমাদের বর্তমান সময়ের স্ট্রেস বা মানসিক চাপ কমাতে ওষুধের মতো কাজ করে। একঘেঁয়ে বা কঠিন সময়ে অতীত স্মৃতি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, আমরা একসময় খুব সুখী ছিলাম আর ভবিষ্যতেও সুখী হতে পারব।
সময়ের বিবর্তনে নিজের ভেতরেও অনেক পরিবর্তন আসে। অতীতের ‘'আমি'র সঙ্গে বর্তমানের ‘আমি’র অনেক পার্থক্য থাকে, যা আমরা কেবল স্মৃতির গভীরে ডুব দিয়ে বুঝতে পারি।
কখনো কি ভেবে দেখেছেন, কেন আমরা পুরোনো ছবি দেখতে এত পছন্দ করি? নস্টালজিয়ার ভেতর আমরা আমাদের পুরনো আমিটাকে খুঁজে পাই। ‘আমি কে’—এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে আমরা বারবার অতীতে ফিরি।
কারণ শৈশবের দুরন্তপনা, কৈশোরের প্রথম প্রেম, কিংবা ভার্সিটি জীবনের রঙিন দিনগুলো; এই সবকিছু মিলে তৈরি হয়েছে আজকের ‘আমি’। নস্টালজিয়া আমাদের সেই পুরোনো ‘আমি’র সঙ্গে বর্তমানের ‘আমি’র সংযোগ ঘটিয়ে দেয়। এই অনুভূতি আমাদের মনে করিয়ে দেয় জীবনের অনেকটা পথ আমরা সফলভাবে পাড়ি দিয়ে এসেছি, যা আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেয় বহুগুণে।
যখন আমরা একাকিত্বে ভুগি, তখন এই পুরোনো স্মৃতিগুলোই আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে আমরা একা নই, আমাদের জীবনেও ভালোবাসায় পরিপূর্ণ আনন্দের মুহূর্ত রয়েছে।
এছাড়া, নস্টালজিয়া উপভোগ করার পেছনে আমাদের ইন্দ্রিয়গুলোর একটি বড় ভূমিকা আছে। বিশেষ করে ঘ্রাণ ও শব্দ। বৃষ্টির পর মাটির সোঁদা গন্ধ আপনাকে মুহূর্তেই নিয়ে যেতে পারে গ্রামের বাড়ির উঠোনটিতে। আলমারি থেকে বের করা পুরোনো শাড়ির ন্যাপথলিন বা সুগন্ধি সাবানের গন্ধ মনে করিয়ে দিতে পারে মায়ের কথা, মায়ের আঁচলে জড়িয়ে থাকা মিষ্টি ঘ্রাণের কথা। এমনকি কোনো বিশেষ খাবারের স্বাদও আপনাকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পারে দাদির হাতের রান্নার জাদুতে।
একে বলা হয় ‘প্রুস্তিয়ান মেমোরি ইফেক্ট’। এই আকস্মিক স্মৃতির হানা আমাদের বিষাদগ্রস্ত করে না, বরং এক ধরনের উষ্ণতা দেয়। মনে হয়, সময়টা যেন ওখানেই থমকে আছে। দিনশেষে, নস্টালজিয়া অতীতের জাবর কাটা নয় বরং অতীতের ভেতর দিয়ে বর্তমানকে আরও সুন্দর, আরও আনন্দময় করে তোলা।
কারণ, যখন বর্তমান সময়টা খুব অসহনীয় হয়ে ওঠে, ভবিষ্যৎ খুব ঝাপসা মনে হয়, তখন এই অতীতই আমাদের কাঁধে হাত রেখে বলে, ‘সব ঠিক হয়ে যাবে। আগেও কঠিন সময় ছিল, তুমি পার করে এসেছ।’

সাধারণত পথশিশুরা মানুষের কাছে হাত পাতে, সাহায্য চায়। কিন্তু সেদিন তাঁরা ছিল দাতা। সারা দিন তাঁরা যাত্রীদের জুতা পলিশ করল, হাঁকডাক করে লোক জড়ো করল, সবাইকে বাংলাদেশের মানুষের দুঃখের কথা বলল। দিনশেষে তাঁদের ছোট ছোট হাতে জমেছিল উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ।
১১ ঘণ্টা আগে
১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর একাধিক পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল মুক্তিযোদ্ধাদের ধরিয়ে দেওয়ার বিজ্ঞপ্তি। মুক্তিযোদ্ধাদের গ্রেপ্তার করা অথবা তাঁদের যাতে নিশ্চিতভাবে ধরা যায় এ ব্যাপারে পুলিশের কাছে তথ্য দিলে ১৪ মণ আমন চালের সমপরিমাণ টাকা পাওয়া যেত।
১ দিন আগে
আজ ৩ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস। প্রতিবছর বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের প্রতি সচেতনতার প্রসার, মর্যাদা সমুন্নতকরণ, অধিকার সুরক্ষা এবং উন্নয়ন নিশ্চিত করার অঙ্গীকারে দিবসটি পালিত হয়।
১ দিন আগে
‘ফাদার, আপনি চলে যান। ওরা আপনাকে মেরে ফেলবে।’ শেলাবুনিয়ার গ্রামবাসী অনুরোধ করেন তাঁকে। শান্ত চোখে তাকালেন তিনি। ভাঙা ভাঙা বাংলায় বললেন, ‘আমার সন্তানেরা বিপদে, আর আমি বাবা হয়ে পালিয়ে যাব? আমি কোথাও যাব না। তোমাদের সঙ্গেই থাকব, তোমাদের সঙ্গেই মরব।’
১ দিন আগে