বাংলা স্ট্রিম
চলতি বছরের কান চলচ্চিত্র উৎসব নতুন এক পোশাকবিধি ঘোষণা করেছে, ‘শালীনতার স্বার্থে লালগালিচা ও উৎসবের অন্য যেকোনো জায়গায় নগ্নতা নিষিদ্ধ।’ এই সিদ্ধান্তে বিশ্ব ফ্যাশন ও চলচ্চিত্র মহলে দেখা দিয়েছে বিস্ময় ও বিতর্ক। দীর্ঘদিন ধরে ‘নেকেড ড্রেস’ বা খোলামেলা পোশাক লালগালিচার বৈশিষ্ট্য হয়ে উঠলেও, এবার উৎসব কর্তৃপক্ষ দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে শালীনতা রক্ষার পক্ষে। কেন এই পোশাকবিধি? বিবিসি অবলম্বনে জানাচ্ছেন শতাব্দীকা ঊর্মি
এই সিদ্ধান্ত এসেছে এমন সময়ে, যখন ফ্যাশনে নগ্নতা একটি ক্ষমতায়নের প্রতীক হিসেবে দেখা হয়। উদাহরণস্বরূপ, সুপারমডেল বেলা হাদিদ থেকে শুরু করে নাওমি ক্যাম্পবেল, ইসাবেল হুপার ও কেন্ডাল জেনার— অনেকেই কানের লালগালিচায় খোলামেলা পোশাক পরেছেন। অথচ এবার সেই চর্চাই হুমকির মুখে।
ফ্যাশন সমালোচক ও ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট ‘বোরিং নট কম’ এই নিষেধাজ্ঞাকে ‘রক্ষণশীলতার নিরব প্রত্যাবর্তন’ হিসেবে দেখছেন। সেখানে বলা হয়েছে, ‘লালগালিচায় শরীর প্রদর্শন নিষিদ্ধ, অথচ ভেতরে পর্দায় সেই শরীরই দেখানো হয় এবং বেশির ভাগ সময়ই তা ঘটে নারীদের সঙ্গেই।’
এই নিষেধাজ্ঞা নতুন নয়, বরং কানের ইতিহাসে পোশাকবিধির প্রভাব দীর্ঘদিন ধরেই আছে। ২০১৫ সালে ফ্ল্যাট জুতো পরায় নারীদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল এবং ২০১৬ সালে বুরকিনি বা মুসলিম নারীর সাঁতারের পোশাককে উগ্রবাদের সম্পৃক্ততা হিসেবে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। স্টাইলিশ ম্যাগাজিনের লেখক শাহেদ এজায়দি যুক্তি দেন, ‘আপনাকে সংযতভাবে পোশাক পরতে হবে, কিন্তু অতিরিক্ত রক্ষণশীল হওয়াও চলবে না’—এই পরিস্থিতিকে তিনি আখ্যায়িত করেছেন ‘লস লস সিচুয়েশন’ হিসেবে।
ফ্রান্সের এই বিখ্যাত উৎসব এবার নিষিদ্ধ করেছে লম্বা ও প্রশস্ত পোশাকও। আয়োজক কর্তৃপক্ষের ভাষ্য অনুযায়ী, এমন পোশাক অতিথিদের চলাচলে বিঘ্ন ঘটায়। এই সিদ্ধান্তে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন স্টাইলিস্ট ও ইনফ্লুয়েন্সাররা, যারা মাসের পর মাস ধরে পোশাক তৈরি করেন। ইনস্টাগ্রামে ফ্যাশন লেখক লুইস পিসানো লিখেছেন, ‘সব স্টাইলিস্টদের জন্য চিন্তা হচ্ছে । তাদের জন্য প্রার্থনা ছাড়া উপায় নেই।’ মার্কিন অভিনেত্রী হলি বেরি, যিনি নিজেও ‘খোলামেলা’ পোশাকের অনুরাগী ছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমাকেও পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছিল। তবে, আমি মনে করি নগ্নতা নিয়ে নিষেধাজ্ঞা সম্ভবত একটি ভালো নিয়ম।’
তবে অনেকেই মনে করছেন, কানের এই সিদ্ধান্ত মূলত ‘ফ্যাশনের প্রদর্শনমুখিতা’ ঠেকাতেই নেওয়া হয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কানের রেড কার্পেট হয়ে উঠেছে অনানুষ্ঠানিক ফ্যাশন সপ্তাহের মঞ্চ। প্রভাবশালী ইনফ্লুয়েন্সাররা অভিনব ও বিশাল পোশাক পরে আসছেন। যা মূল চলচ্চিত্র প্রদর্শনের অভিজ্ঞতাকে পেছনে ফেলে দেয়।
ফ্যাশনের এই ‘সার্কাস’ ঠেকাতে কান অতীতেও পদক্ষেপ নিয়েছে। ২০১৮ সালে ফেস্টিভালের আর্টিস্টিক ডিরেক্টর থিয়েরি ফ্রেমো সেলফি নিষিদ্ধ করেন রেড কার্পেটে। কারণ সেলফির জন্য ভিড় বেড়ে যায় এবং পুরো উৎসবই খাপছাড়া হয়ে যায়।
তবে প্রশ্ন থেকেই যায়, এই নিয়মগুলো কী আসলে সবার জন্য প্রযোজ্য? কান ফেস্টিভালের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ‘যারা নিয়ম মানবেন না, তাদের প্রবেশাধিকার বাতিল করা হবে।’ কিন্তু বাস্তবে এমন কঠোরতা অনেক সময় দেখা যায়নি। ইতিহাস বলে, ১৯৫৩ সালে পাবলো পিকাসো একটি চামড়ার কোট পরার বিশেষ অনুমতি পেয়েছিলেন, যেখানে সাধারণ সাংবাদিকরা সে সুবিধা পাননি। আবার ২০১৬ সালে জুলিয়া রবার্টস খালি পায়ে হাঁটেন, ২০১৮ সালে ক্রিস্টেন স্টুয়ার্ট তার হিল খুলে ফেলেন—এবং দুজনই প্রশংসিত হন।
ফলে প্রশ্ন উঠছে, এই পোশাকবিধি কি আসলেই সমতা নিশ্চিত করছে, নাকি এতে নারীদের শরীর নিয়ন্ত্রণ ও শ্রেণিভেদ আরও প্রকট হয়ে উঠছে? আবারও সেই পুরোনো বিতর্ক। নারীর পোশাক কি তার ব্যক্তিস্বাধীনতার অংশ, নাকি শালীনতার নিরিখে তা বিচার করা উচিত?
কান চলচ্চিত্র উৎসবের এই নিষেধাজ্ঞা একদিকে শৃঙ্খলা আনতে চায়, অন্যদিকে এটি ফ্যাশন ও নারীর স্বাধীনতার বিষয়ে একটি জটিল বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। সময়ই বলে দেবে, এই পদক্ষেপ শেষ পর্যন্ত সিনেমার প্রতি মনোযোগ ফিরিয়ে আনবে, নাকি আরও দ্বিচারিতার অভিযোগকে উসকে দেবে।
চলতি বছরের কান চলচ্চিত্র উৎসব নতুন এক পোশাকবিধি ঘোষণা করেছে, ‘শালীনতার স্বার্থে লালগালিচা ও উৎসবের অন্য যেকোনো জায়গায় নগ্নতা নিষিদ্ধ।’ এই সিদ্ধান্তে বিশ্ব ফ্যাশন ও চলচ্চিত্র মহলে দেখা দিয়েছে বিস্ময় ও বিতর্ক। দীর্ঘদিন ধরে ‘নেকেড ড্রেস’ বা খোলামেলা পোশাক লালগালিচার বৈশিষ্ট্য হয়ে উঠলেও, এবার উৎসব কর্তৃপক্ষ দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে শালীনতা রক্ষার পক্ষে। কেন এই পোশাকবিধি? বিবিসি অবলম্বনে জানাচ্ছেন শতাব্দীকা ঊর্মি
এই সিদ্ধান্ত এসেছে এমন সময়ে, যখন ফ্যাশনে নগ্নতা একটি ক্ষমতায়নের প্রতীক হিসেবে দেখা হয়। উদাহরণস্বরূপ, সুপারমডেল বেলা হাদিদ থেকে শুরু করে নাওমি ক্যাম্পবেল, ইসাবেল হুপার ও কেন্ডাল জেনার— অনেকেই কানের লালগালিচায় খোলামেলা পোশাক পরেছেন। অথচ এবার সেই চর্চাই হুমকির মুখে।
ফ্যাশন সমালোচক ও ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট ‘বোরিং নট কম’ এই নিষেধাজ্ঞাকে ‘রক্ষণশীলতার নিরব প্রত্যাবর্তন’ হিসেবে দেখছেন। সেখানে বলা হয়েছে, ‘লালগালিচায় শরীর প্রদর্শন নিষিদ্ধ, অথচ ভেতরে পর্দায় সেই শরীরই দেখানো হয় এবং বেশির ভাগ সময়ই তা ঘটে নারীদের সঙ্গেই।’
এই নিষেধাজ্ঞা নতুন নয়, বরং কানের ইতিহাসে পোশাকবিধির প্রভাব দীর্ঘদিন ধরেই আছে। ২০১৫ সালে ফ্ল্যাট জুতো পরায় নারীদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল এবং ২০১৬ সালে বুরকিনি বা মুসলিম নারীর সাঁতারের পোশাককে উগ্রবাদের সম্পৃক্ততা হিসেবে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। স্টাইলিশ ম্যাগাজিনের লেখক শাহেদ এজায়দি যুক্তি দেন, ‘আপনাকে সংযতভাবে পোশাক পরতে হবে, কিন্তু অতিরিক্ত রক্ষণশীল হওয়াও চলবে না’—এই পরিস্থিতিকে তিনি আখ্যায়িত করেছেন ‘লস লস সিচুয়েশন’ হিসেবে।
ফ্রান্সের এই বিখ্যাত উৎসব এবার নিষিদ্ধ করেছে লম্বা ও প্রশস্ত পোশাকও। আয়োজক কর্তৃপক্ষের ভাষ্য অনুযায়ী, এমন পোশাক অতিথিদের চলাচলে বিঘ্ন ঘটায়। এই সিদ্ধান্তে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন স্টাইলিস্ট ও ইনফ্লুয়েন্সাররা, যারা মাসের পর মাস ধরে পোশাক তৈরি করেন। ইনস্টাগ্রামে ফ্যাশন লেখক লুইস পিসানো লিখেছেন, ‘সব স্টাইলিস্টদের জন্য চিন্তা হচ্ছে । তাদের জন্য প্রার্থনা ছাড়া উপায় নেই।’ মার্কিন অভিনেত্রী হলি বেরি, যিনি নিজেও ‘খোলামেলা’ পোশাকের অনুরাগী ছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমাকেও পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছিল। তবে, আমি মনে করি নগ্নতা নিয়ে নিষেধাজ্ঞা সম্ভবত একটি ভালো নিয়ম।’
তবে অনেকেই মনে করছেন, কানের এই সিদ্ধান্ত মূলত ‘ফ্যাশনের প্রদর্শনমুখিতা’ ঠেকাতেই নেওয়া হয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কানের রেড কার্পেট হয়ে উঠেছে অনানুষ্ঠানিক ফ্যাশন সপ্তাহের মঞ্চ। প্রভাবশালী ইনফ্লুয়েন্সাররা অভিনব ও বিশাল পোশাক পরে আসছেন। যা মূল চলচ্চিত্র প্রদর্শনের অভিজ্ঞতাকে পেছনে ফেলে দেয়।
ফ্যাশনের এই ‘সার্কাস’ ঠেকাতে কান অতীতেও পদক্ষেপ নিয়েছে। ২০১৮ সালে ফেস্টিভালের আর্টিস্টিক ডিরেক্টর থিয়েরি ফ্রেমো সেলফি নিষিদ্ধ করেন রেড কার্পেটে। কারণ সেলফির জন্য ভিড় বেড়ে যায় এবং পুরো উৎসবই খাপছাড়া হয়ে যায়।
তবে প্রশ্ন থেকেই যায়, এই নিয়মগুলো কী আসলে সবার জন্য প্রযোজ্য? কান ফেস্টিভালের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ‘যারা নিয়ম মানবেন না, তাদের প্রবেশাধিকার বাতিল করা হবে।’ কিন্তু বাস্তবে এমন কঠোরতা অনেক সময় দেখা যায়নি। ইতিহাস বলে, ১৯৫৩ সালে পাবলো পিকাসো একটি চামড়ার কোট পরার বিশেষ অনুমতি পেয়েছিলেন, যেখানে সাধারণ সাংবাদিকরা সে সুবিধা পাননি। আবার ২০১৬ সালে জুলিয়া রবার্টস খালি পায়ে হাঁটেন, ২০১৮ সালে ক্রিস্টেন স্টুয়ার্ট তার হিল খুলে ফেলেন—এবং দুজনই প্রশংসিত হন।
ফলে প্রশ্ন উঠছে, এই পোশাকবিধি কি আসলেই সমতা নিশ্চিত করছে, নাকি এতে নারীদের শরীর নিয়ন্ত্রণ ও শ্রেণিভেদ আরও প্রকট হয়ে উঠছে? আবারও সেই পুরোনো বিতর্ক। নারীর পোশাক কি তার ব্যক্তিস্বাধীনতার অংশ, নাকি শালীনতার নিরিখে তা বিচার করা উচিত?
কান চলচ্চিত্র উৎসবের এই নিষেধাজ্ঞা একদিকে শৃঙ্খলা আনতে চায়, অন্যদিকে এটি ফ্যাশন ও নারীর স্বাধীনতার বিষয়ে একটি জটিল বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। সময়ই বলে দেবে, এই পদক্ষেপ শেষ পর্যন্ত সিনেমার প্রতি মনোযোগ ফিরিয়ে আনবে, নাকি আরও দ্বিচারিতার অভিযোগকে উসকে দেবে।
ড্রোন বা মানববিহীন আকাশযান (ইউএভি) এখন আধুনিক যুদ্ধের অপরিহার্য অস্ত্র। একসময় এগুলো সীমিত পর্যবেক্ষণযন্ত্র ছিল, এখন তা নির্ভুল আঘাত, কম খরচ এবং নিরাপদ পরিচালনার জন্য ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই), ক্ষুদ্রাকৃতির প্রযুক্তি ও সমন্বিত আক্রমণ ক্ষমতার অগ্রগতির ফলে ড্রোন এখন গুপ্তহত্য
৪ ঘণ্টা আগেমার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে ধাপে ধাপে যুদ্ধবিরতি চুক্তির ঘোষণা দিয়েছেন। ইসরায়েলি মন্ত্রিসভা ১০ অক্টোবর প্রথম ধাপের শান্তি পরিকল্পনা অনুমোদন করে। এতে ২৪ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। এই সাফল্য গাজা যুদ্ধের প্রথম বড় ধরনের উত্তেজনা প্রশমনের দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে।
৭ ঘণ্টা আগেজুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে গণভোটের বিষয়ে একমত হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো। শিগগিরই হয়তো ভোটের আয়োজনও করা হবে। গণভোট হলো জনগণের প্রত্যক্ষ ভোট, যা কোনো নির্দিষ্ট প্রস্তাব, আইন বা রাজনৈতিক বিষয়ে নেওয়া হয়।
১৪ ঘণ্টা আগেদ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্বে শান্তি স্থাপনের লক্ষ্যে গঠিত হয় জাতিসংঘ। আজকে তা এক মৌলিক প্রশ্নের মুখোমুখি—যুক্তরাষ্ট্র সরে গেলে সংস্থাটির কী হবে? সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের তীব্র সমালোচনামূলক বক্তব্য এই বিতর্ককে নতুন করে উসকে দিয়েছে।
২ দিন আগে