leadT1ad

গাজায় গণহত্যাকে ‘ভুয়া খবর’ বানাতে পশ্চিমা গণমাধ্যমের ভূমিকা

স্ট্রিম ডেস্ক
প্রকাশ : ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৫: ৪১
আপডেট : ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৫: ৪৪
স্ট্রিম গ্রাফিক

গাজার ফিলিস্তিনিদের ওপর হত্যাযজ্ঞ এবং না খাইয়ে মারার বৈধতা দিতে ইসরায়েল শুরু থেকেই এক অভিনব কৌশল নেয়। হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি শিশুদের শিরশ্ছেদ, গণধর্ষণ কিংবা হাসপাতালগুলোকে ‘কমান্ড সেন্টার’ হিসেবে ব্যবহার করার মতো ভয়াবহ অভিযোগ ছড়ানো হয়। ইসরায়েল এমনকি দাবি করে, জাতিসংঘও আসলে হামাসকে আড়ালে সুবিধা দেয়।

গাজার ভেতরে পশ্চিমা সাংবাদিকদের প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়া হয়। একে একে ফিলিস্তিনি সাংবাদিকদের হত্যা করা হয়। ইতিমধ্যে দুই শতাধিক সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে। পশ্চিমা গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা প্রায় ২২ মাস ধরে গাজায় প্রবেশাধিকার হারিয়েও খুব একটা প্রতিবাদ করেননি। সহকর্মীদের হত্যাও তাদের তেমন নাড়া দেয়নি।

মিথ্যা প্রচারণা সেল

গত মাসের শেষদিকে ইসরায়েল আল জাজিরার পাঁচ জনের একটি টিমকে হত্যার পক্ষে যুক্তি দেখিয়েছে যে, তাদের একজন গোপনে ‘হামাস সন্ত্রাসী’ ছিলেন। তিনি হলেন পুলিৎজার পুরস্কারপ্রাপ্ত সাংবাদিক আনাস আল-শরিফ। এ দাবি ততটাই অযৌক্তিক, যতটা অজুহাত দিয়ে ইসরায়েল গাজার শত শত চিকিৎসককে হত্যা বা কারারুদ্ধ করার ব্যাখ্যা দিয়ে আসছে।

প্রায় দুই বছর ধরে গাজার চিকিৎসকরা প্রতিদিন মৃত ও আহতের চাপ সামলাচ্ছেন। এই পরিস্থিতি বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের মতো। অথচ তাদের ওষুধ ও যন্ত্রপাতি থেকেও বঞ্চিত রাখা হয়েছে। কিন্তু ইসরায়েল দাবি করে, চিকিৎসকরা নাকি এত ব্যস্ততার মধ্যেও হামাস যোদ্ধাদের সঙ্গে আঁতাত করার সময় পেয়েছেন।

আনাস আল-শরিফ সম্পর্কেও বলা হয়, তিনি ২২ মাস ধরে দিনরাত প্রতিবেদন লেখার ব্যস্ততার ফাঁকে ফাঁকে হামাস কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেছেন। ‘ইসরায়েলি বেসামরিকদের ওপর রকেট হামলা’ চালিয়েছেন। যেন তাঁর কোনও অতিমানবীয় শক্তি ছিল যে তিনি টানা দুই বছর ঘুম ছাড়াই কাজ করেছেন এবং একসঙ্গে দুই জায়গায় অবস্থান করেছেন।

গাজায় গণহত্যাকে ‘ভুয়া খবরে’ পরিণত করছে পশ্চিমা গণমাধ্যম। ছবি: মিডল ইস্ট আই থেকে নেওয়া
গাজায় গণহত্যাকে ‘ভুয়া খবরে’ পরিণত করছে পশ্চিমা গণমাধ্যম। ছবি: মিডল ইস্ট আই থেকে নেওয়া

এখন পরিষ্কার হয়েছে এই হাস্যকর গল্পের উৎস কোথায়। এটি এসেছে ইসরায়েলের তথাকথিত ‘লেজিটিমাইজেশন সেল’ থেকে। এই গোয়েন্দা ইউনিটের নামই অনেক কিছু বলে দেয়। তাদের কাজ হলো ইসরায়েলের নৃশংসতাকে বৈধতা দেওয়া। এজন্য ভুক্তভোগীদের বদনাম করে এমন গল্প বানানো হয়, যা ইসরায়েলি ও পশ্চিমা জনমনে গণহত্যাকে গ্রহণযোগ্য করে তুলতে পারে।

আনাস আল-শরিফকে হত্যার কয়েক দিনের মধ্যেই ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম +৯৭২ এই সেলের তথ্য ফাঁস করে। ‘লেজিটিমাইজেশন সেল’-এর মূল লক্ষ্য হলো, পশ্চিমা গণমাধ্যমে এমন গল্প ছড়িয়ে দেওয়া, যাতে গাজার হাসপাতালগুলোকে সন্ত্রাসের ঘাঁটি এবং সাংবাদিকদের ‘গোপন হামাস সদস্য’ হিসেবে উপস্থাপন করা যায়।

ভুয়া প্রমাণ তৈরি

ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থার তিনটি সূত্রের ভিত্তিতে +৯৭২ জানিয়েছে, ‘লেজিটিমাইজেশন সেল’ গঠনের উদ্দেশ্য নিরাপত্তাজনিত ছিল না। এর লক্ষ্য ছিল কেবল প্রচারণা, যাকে ইসরায়েলে বলা হয় ‘হাসবারা’।

সেলটির চেষ্টা ছিল যেকোনোভাবে গাজার কয়েকজন সাংবাদিককে হামাসের সঙ্গে যুক্ত দেখানো। এর মাধ্যমে পশ্চিমা জনমনে সন্দেহ তৈরি করা, সাংবাদিক হত্যাকে বৈধতা দেওয়া এবং ইসরায়েলের নৃশংসতা ফাঁস হওয়া ঠেকানোই ছিল মূল উদ্দেশ্য।

এই সেলটি তৈরি করা হয়েছে যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করার জন্য। এর মাধ্যমে পশ্চিমা জনমতের চাপ ঠেকানো হয়, যাতে পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলো—যারা ইসরায়েলের মূল সমর্থক—যুদ্ধ থামানোর পদক্ষেপ না নেয়।

সূত্রগুলো আরও জানায়, পশ্চিমা বিশ্বে গণহত্যা চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে প্রচারণা পৌঁছে দিতে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা প্রমাণও জালিয়াতি করেছিল।

২০২৪ সালের জুলাইয়ে আল জাজিরার সাংবাদিক ইসমাইল আল-ঘৌল ও তার ক্যামেরাম্যান নিহত হওয়ার পর ইসরায়েল দাবি করে, তারা একটি ‘হামাস কম্পিউটার’ থেকে ২০২১ সালের এক নথি পেয়েছে। সেই নথির ভিত্তিতে ঘৌলকে ‘হামাসের সামরিক শাখার সদস্য’ বলা হয় এবং অভিযোগ তোলা হয় যে তিনি ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর আক্রমণে অংশ নিয়েছিলেন।

আনাস আল-শরিফের ক্ষেত্রেও একই কৌশল দেখা যায়। ২০২৪ সালের অক্টোবরেই ইসরায়েল অভিযোগ তোলে যে তিনি এবং আল জাজিরার আরও পাঁচ সাংবাদিক গোপনে হামাস বা ইসলামিক জিহাদের সামরিক শাখার সদস্য।

গাজায় দেড় বছরের বেশি সময় ধরে বর্বর হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। ছবি: এক্স থেকে নেওয়া
গাজায় দেড় বছরের বেশি সময় ধরে বর্বর হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। ছবি: এক্স থেকে নেওয়া

ইসরায়েল জাতিসংঘের ত্রাণ সংস্থার বিরুদ্ধেও একই কৌশল নিয়েছিল। হামাসকে সহায়তার মিথ্যা অভিযোগ তুলে গাজা থেকে সংস্থাটিকে বিতাড়িত করা হয়।

অবশেষে গত মাসে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র আভিখাই আদরাই স্বীকার করেন ইসরায়েলের আসল উদ্বেগ। তিনি অভিযোগ করেন, গাজা সিটি থেকে শরিফের প্রতিবেদন ইসরায়েলের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে এবং ‘হামাসের ভুয়া দুর্ভিক্ষ প্রচারণা’ ছড়িয়ে দিচ্ছে।

অথচ আনাস যে দুর্ভিক্ষের খবর দিচ্ছিলেন, জাতিসংঘ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও প্রধান মানবাধিকার সংগঠনগুলোও মাসের পর মাস ধরে সে ব্যাপারে সতর্ক করে আসছিল। গত সপ্তাহে খাদ্য নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ সংস্থা আইপিসি জানায়, গাজায় দুর্ভিক্ষ এখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে।

ইসরায়েল যেভাবে ইউএনআরডব্লিউএ-কে তাড়িয়ে গাজায় দুর্ভিক্ষ তৈরি করেছে, ঠিক সেভাবেই ফিলিস্তিনি সাংবাদিকদের হত্যা ও বদনাম করে দুর্ভিক্ষের খবর গোপন করছে। হামাসের সঙ্গে সম্পর্কের মিথ্যা গল্প দুক্ষেত্রে একই উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়। পশ্চিমা জনমনে সন্দেহ তৈরি করা হয় যে ফিলিস্তিনি সাংবাদিকরা হামাসের নির্দেশে কাজ করছে। এতে ইসরায়েলের নৃশংসতার খবরকে সহজেই ‘ভুয়া খবর’ বলে বাতিল করা যায়।

বিভিন্ন পশ্চিমা গণমাধ্যমের ইসরায়েলকে সমর্থন

আনাস আল-শরিফকে হত্যার পর ইসরায়েল দাবি করে, তাদের হাতে প্রমাণ আছে, তিনি ‘সক্রিয় হামাস সন্ত্রাসী’ এবং ‘রকেট ব্রিগেডের সেলের প্রধান’ ছিলেন। কিন্তু ইসরায়েল যে নথিগুলো প্রকাশ করেছে, সেগুলো কোনো স্বাধীন সংস্থা যাচাই করেনি। নথিতেও দেখা যায়, শরিফকে ২০১৩ সালে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল এবং তিনি ২০১৭ সালে দল ছাড়েন।

ধরা যাক, এসব দাবি সত্য। তবুও বোঝা যায়, শরিফকে টার্গেট করার আগে আট বছর ধরে তার হামাসের সঙ্গে কোনো সম্পর্কই ছিল না। অর্থাৎ, ইসরায়েলের তথাকথিত ‘প্রমাণ’ অনুযায়ীও শরিফ তখন বেসামরিক ব্যক্তি ছিলেন।

ইসরায়েলের মিথ্যাচার নতুন কিছু নয়। কিন্তু বিস্ময়কর হলো, পশ্চিমা গণমাধ্যম এখনো সেই মিথ্যাকে সমর্থন করে চলেছে।

জার্মানির সবচেয়ে জনপ্রিয় পত্রিকা বিল্ড প্রথম পাতার খবরে শিরোনাম করেছে, ‘সাংবাদিক সেজে থাকা সন্ত্রাসী গাজায় নিহত।’ কোনো উদ্ধৃতি চিহ্ন নেই।

ব্রিটিশ গণমাধ্যমও খুব একটা ভিন্ন আচরণ করেনি। অধিকাংশ সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম ও প্রতিবেদনে ইসরায়েলের অভিযোগ বাছবিচারহীনভাবে প্রচার করা হয়েছে।

আরও বিস্ময়কর হলো, বিবিসির প্রধান সংবাদ অনুষ্ঠান নিউজ অ্যাট টেন পুরোপুরি ইসরায়েলের বক্তব্য মেনে নেয়। সেখানে প্রশ্নও রাখা হয়, ‘আনুপাতিক সামঞ্জস্য নিয়ে প্রশ্ন আছে। একজনকে টার্গেট করতে গিয়ে পাঁচ সাংবাদিককে হত্যা করা কি ন্যায্য?’

সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ‘উইচ হান্টিং’

পিয়ার্স মরগানের জনপ্রিয় অনলাইন শো আনসেন্সরড বহুদিন ধরে এমন এক মঞ্চ, যেখানে ইসরায়েলের সমর্থক ও সমালোচকরা বিতর্কে মুখোমুখি হন। এই শো দেখায়, কীভাবে সহজেই ইসরায়েল তার পছন্দসই বয়ান চাপিয়ে দিতে পারে।

মরগানের আচরণ প্রমাণ করে, পশ্চিমা সাংবাদিকরা কত স্বেচ্ছায় বর্ণবাদী ধারণা মেনে নেন, বিশেষত অ-পশ্চিমা সাংবাদিকদের ক্ষেত্রে। তারা এমনকি সেই ধারণাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার ভান করলেও, ভেতরে ভেতরে তা আঁকড়ে ধরেন।

শরিফ হত্যার কিছুদিন পর মরগান অতিথি হিসেবে ডাকেন আল জাজিরার ৩৬০ প্রোগ্রামের পরিচালক জামাল এলশাইয়ালকে। তাঁকে মুখোমুখি হতে হয় জটাম কনফিনোর সঙ্গে। কনফিনো আগে ইসরায়েলি টিভি চ্যানেল আই২৪ নিউজ-এ কাজ করেছেন। ওই চ্যানেলই ‘শিশুর মাথা কেটে ফেলার’ ভুয়া খবর ছড়াতে বড় ভূমিকা রেখেছিল। এখন তিনি প্রো-ইসরায়েলি ডানপন্থী সংবাদমাধ্যম যেমন টেলিগ্রাফ ও নিউ ইয়র্ক সান-এ লেখেন।

গাজায় বোমা হামলা চালিয়ে হাজার হাজার ঘরবাড়ি গুঁড়িয়ে দিয়েছে ইসরায়েল। ছবি: এক্স থেকে নেওয়া
গাজায় বোমা হামলা চালিয়ে হাজার হাজার ঘরবাড়ি গুঁড়িয়ে দিয়েছে ইসরায়েল। ছবি: এক্স থেকে নেওয়া

আলোচনায় কনফিনোর ভূমিকা ছিল ইসরায়েলের এই বক্তব্যকে শক্তিশালী করা যে, শরিফ হামাসের সন্ত্রাসী ছিলেন। জবাবে এলশাইয়াল তুলে ধরেন ইসরায়েলের সাংবাদিক হত্যার দীর্ঘ ইতিহাস। এলশাইয়াল বলেন, সাংবাদিকদের নিরাপত্তা বড় বিপদের মুখে পড়ে, যখন তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারণা চালানো হয়।

এই পুরো বিতর্কের ভেতরে লুকিয়ে ছিল এক স্পষ্ট বর্ণবাদী ধারণা—আরব সাংবাদিকদের নিজের বৈধতা প্রমাণ করতে হবে। তাদের রাজনৈতিক আনুগত্য যাচাই করতে হবে। তারপরই তাদের মতামত বা জীবন কোনো গুরুত্ব পাবে।

এলশাইয়াল সেখানে গিয়েছিলেন সাংবাদিকদের স্বাধীনভাবে কাজ করার অধিকার রক্ষার জন্য কথা বলতে। সাংবাদিকরা যেন রাজনৈতিক মত নির্বিশেষে হত্যার ভয় ছাড়াই প্রতিবেদন করতে পারেন। কিন্তু শেষে তাকেই নিজের রাজনৈতিক অবস্থান প্রমাণ করে বিতর্কে অংশগ্রহণের অধিকার নিয়েই লড়তে হলো।

ফলে একটি অনুষ্ঠান, যেখানে স্পষ্টভাবে গাজায় সাংবাদিক হত্যাকে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করা উচিত ছিল, তা পরিণত হলো ইসরায়েল-সমালোচক সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে একধরনের উইচ হান্ট-এ।

যুদ্ধের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সাংবাদিক নিহত

গত দুই বছরে ইসরায়েল গাজায় ২৪০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি সাংবাদিককে হত্যা করেছে। এই সংখ্যা প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, কোরিয়া যুদ্ধ, ভিয়েতনাম যুদ্ধ, সাবেক যুগোস্লাভিয়ার যুদ্ধ এবং আফগানিস্তান যুদ্ধ—সব মিলিয়েও নিহত সাংবাদিকদের সংখ্যার চেয়ে বেশি।

অথচ পশ্চিমা গণমাধ্যম এনিয়ে কোনও প্রতিবেদন নেই। পশ্চিমা সাংবাদিকরা যেন পুরোপুরি অন্ধ। পশ্চিমা গণমাধ্যম ইসরায়েলের প্রকাশ্য মিথ্যাচারকে প্রশ্রয় দিয়ে শুধু সাংবাদিকতার নীতিই লঙ্ঘন করছে না। এতে গাজায় কর্মরত সাংবাদিকদের জীবনও আরও ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে।

গাজায় দুই শতাধিক সাংবাদিককে হত্যা করেছে ইসরায়েল। ছবি: এক্স থেকে নেওয়া
গাজায় দুই শতাধিক সাংবাদিককে হত্যা করেছে ইসরায়েল। ছবি: এক্স থেকে নেওয়া

গভীর বর্ণবাদী মনোভাব

ইসরায়েলের ‘লেজিটিমাইজেশন’ বয়ান কাজ করে শুধু পশ্চিমা সাংবাদিকদের গ্রহণযোগ্যতার কারণে। এছাড়া পশ্চিমা দর্শককেও একই মিথ্যাকে মেনে নেওয়ার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। এটি সম্ভব হয়েছে, কারণ প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে পশ্চিমা রাজনৈতিক ও মিডিয়া প্রতিষ্ঠানগুলো একটি গভীর বর্ণবাদী মনোভাব সৃষ্টি করেছে।

ইসরায়েল তার লেজিটিমাইজেশন সেল গঠন করেছে, কারণ তারা জানে পশ্চিমাদের ভীতি ব্যবহার করা কত সহজ। তারা পশ্চিমা ভাষায় দক্ষ মুখপাত্রদের মাধ্যমে নিজ বক্তব্য তুলে ধরে। এই মুখপাত্ররা ‘বর্বরদের হামলা’ এবং ‘পশ্চিমা সভ্যতার হুমকি’ সম্পর্কিত প্রাচীন উপনিবেশবাদী ভয়কে কাজে লাগান।

পশ্চিমা গণমাধ্যম ইসরায়েলের গণহত্যাকে বৈধ হিসেবে দেখানোর অংশ ছিল। পশ্চিমা সাংবাদিকরা গাজায় সত্য নিরূপণের ক্ষেত্রে পুরোপুরি অবিশ্বাসযোগ্য প্রমাণিত হয়েছেন।

তবে এই গণহত্যা আরও একটি সাধারণ শিক্ষা দেয়—কী খবর গণমাধ্যমে আসে, কে খবর তৈরি করে এবং কেন। গাজার গণহত্যা ঢাকতে এবং পশ্চিমাদের সহযোগিতা লুকাতে যে প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে, তা স্পষ্টভাবেই আমরা যাকে খবর বলে জানি তার মধ্যে বর্ণবাদী ও উপনিবেশবাদী এজেন্ডা দেখিয়ে দিচ্ছে।

(মিডল ইস্ট আইয়ে প্রকাশিত জোনাথন কুকের লেখা থেকে সংক্ষেপিত অনুবাদ করেছেন মাহবুবুল আলম তারেক)

Ad 300x250

ডাকসু নির্বাচনে নারীবিদ্বেষী সাইবার বুলিং: নারীর আত্মবিশ্বাসে আঘাত

বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন হয়রানি বন্ধে কাজ করবে ইউজিসি ও ইউএন উইমেন

হাসিনা-ঘনিষ্ঠদের পাঁচ ব্যাংক একীভূতকরণ: তিনটি রাজি, দুটি সময় চাইছে

স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য: নির্বাচিত হলে শিক্ষার্থীদের ম্যান্ডেট বিক্রি করে ক্ষমতায় থাকব না

কেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দুই বিভাগ এক হলো

সম্পর্কিত