স্ট্রিম ডেস্ক
ভারতের তামিলনাড়ুর কারুরে অভিনেতা থেকে রাজনীতিবিদ হওয়া থালাপথি বিজয়ের সমাবেশে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে ২৭ সেপ্টেম্বর। এ সমাবেশের আয়োজন করেছিল বিজয়ের দল তামিলাগা ভেত্রি কাজগাম (টিভিকে)। সমাবেশে হঠাৎ ভিড়ের চাপে পদদলিত হয়ে অন্তত ৪০ জন মারা যান। নিহতদের ১০ জন শিশু ও ১৭ জন নারী। এতে আহত হন আরও প্রায় ৮০ জন।
অনেকে শ্বাসরোধ, চাপা পড়ে আঘাত পাওয়া বা অতিরিক্ত গরমে প্রাণ হারান। হাসপাতালে ভর্তি আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। প্রত্যক্ষদর্শীরা আতঙ্কের বর্ণনা দিয়েছেন। বেঁচে যাওয়া এক ব্যক্তি দ্য হিন্দুকে বলেন, ‘মানুষ সাহাজ্যের জন্য চিৎকার করে পুলিশকে ডাকছিল, শিশুরা পদদলিত হচ্ছিল।’
ভারতের সাম্প্রতিক কোনো রাজনৈতিক সমাবেশে এটি অন্যতম ভয়াবহ দুর্ঘটনা। সমাবেশটি ছিল বিজয়ের ‘ভেলিচাম ভেলিয়েরু’ বা ‘আলো আসুক’ প্রচারণার অংশ। ২০২৬ সালের রাজ্য নির্বাচনকে সামনে রেখে তিনি এই প্রচারণা শুরু করেছেন।
থালাপতির তারকাখ্যাতি সমাবেশে লাখো মানুষকে আকৃষ্ট করে। প্রশ্ন উঠেছে— এই বিপর্যয়ের দায় কতটা তাঁর? নায়কসুলভ ইমেজ কি এবার খলনায়কের মতো আঘাত হানবে? কীভাবে এমন দুর্ঘটনা ঘটল এবং কেন ভারতে এ ধরনের ঘটনা বারবার ফিরে আসে?
কী ঘটেছে: ট্রাজেডির টাইমলাইন
সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয় ভেলুসামিপুরমে, কারুর-ইরোড মহাসড়কের পাশে। এটি ছিল বিজয়ের রাজ্যজুড়ে সফরের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। সকাল থেকেই হাজার হাজার মানুষ সেখানে ভিড় জমায়। প্রচণ্ড গরমে খাবার-পানির পর্যাপ্ত ব্যবস্থা ছিল না। সন্ধ্যায় বিজয়ের আগমনের প্রতিশ্রুতি মানুষকে অপেক্ষায় রাখে।
দুপুরেই জনসমাগম ক্ষমতার সীমা ছাড়িয়ে যায়। আনুমানিক ৩০ হাজার বা আরও বেশি মানুষ উপস্থিত হয়। কিন্তু ধারণা করা হয়েছিল ১০ থেকে ১৫ হাজার মানুষের সমাগম হতে পারে এবং সে অনুযায়ীই স্থান নির্ধারণ করে প্রশাসন। দুর্বল ব্যারিকেড ও অল্প প্রবেশপথ ভিড়কে আরও বিপজ্জনক করে তোলে।
কিন্তু সন্ধ্যা ছয়টা বেজে গেলেও বিজয়ের আসতে দেরি হচ্ছিল। বিজয় প্রায় সাত ঘণ্টা দেরিতে সমাবেশে আসেন। এতে জনতার মধ্যে অস্থিরতা বাড়তে থাকে। তিনি অবশেষে পৌঁছালে ভক্তরা দ্রুতগতিতে সামনে ধাবিত হয়। তখন হোঁচট খেয়ে অনেকেই পড়ে যান এবং পদদলনে নিহত হয়। ভিডিওতে দেখা গেছে, বিজয় মঞ্চে দাঁড়িয়ে পানির বোতল ছুড়ে দিচ্ছেন। চারদিকে সাহায্যের আর্তনাদ শোনা যাচ্ছিল।
ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিজয়ের আগের সমাবেশস্থল নামাক্কাল থেকে অনেক মানুষ তাঁর বাসের পেছনে পেছনে কারুরেও চলে আসে। এতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে অপেক্ষমান ভিড়ে নতুন করে আরও ভিড় যোগ হয়। স্থানীয় কর্মকর্তাদের ধারণা, ১ লাখ ২০ হাজার বর্গফুট জায়গায় সম্ভবত প্রায় ৫০ হাজার মানুষ জমায়েত হয়েছিলেন।
ঘটনার সূত্রপাত ঘটায় কয়েকটি বিষয়। বিজয় তাঁর ভাষণে এক নিখোঁজ মেয়ের খবর দেন, যে মা-সহ সমাবেশে এসেছিল। এ খবরে ভিড়ে অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়ে। একই সঙ্গে গাছের একটি ডাল ভেঙে যায়, যেখানে প্রায় এক ডজন মানুষ বসেছিলেন। এসব কারণে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, চারপাশে হট্টগোল চললেও বিজয় তাঁর বক্তব্য চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
পরে অ্যাম্বুলেন্সে করে আহত ব্যক্তিদের হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু বিশৃঙ্খলায় উদ্ধারকাজ দেরিতে শুরু হয়। বিজয় স্বল্প সময়ের জন্য বক্তব্য দেন এবং ঘটনাস্থল থেকে চলে যান। পরে তাঁকে চেন্নাইয়ের উদ্দেশে বিমানবন্দরে দেখা যায়।
তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্টালিন ২৮ সেপ্টেম্বর কারুরে গিয়ে নিহত ব্যক্তিদের পরিবারপ্রতি ১০ লাখ এবং আহতদের ১ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেন। তিনি এই ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তেরও নির্দেশ দেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিহতদের পরিবারপ্রতি দুই লাখ রুপি করে আর্থিক সহায়তার ঘোষণা দেন এবং সমবেদনা জানান। অথচ গতমাসে মোদী ও বিজেপিকে ফ্যাসিবাদী আখ্যা দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়েই বিজয় আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী রাজনীতিতে নামেন।
বিজয়ের দায়: নৈতিক অপরাধবোধ বনাম আইনি জবাবদিহি
৫১ বছর বয়সী বিজয় ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করে অভিনয় থেকে রাজনীতিতে আসেন। দল গঠনের সময় তিনি বলেছিলেন, তাঁর লক্ষ্য ডিএমকে ও বিজেপির বাইনারি থেকে তামিলনাড়ুর রাজনীতিকে বের করে আনা। তার জনপ্রিয়তা মূলত সিনেমাজীবন থেকেই তৈরি হয়েছে—টানা ৯টি হিট ছবি ও ২০০ কোটি রুপির পারিশ্রমিক তাঁকে তারকা করেছে। তবে তার জনসমাবেশে আগেও নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। দল ঘোষণার সময় এক অনুষ্ঠানে ছয়জন নিহত হয়েছিলেন।
নৈতিক দায়: সমালোচকদের মতে, বিজয় বড় সমাবেশর প্রতি বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন, নিরাপত্তার প্রতি নয়। তাঁর বিলম্বিত আগমন সরাসরি ভিড়ের চাপ বাড়ায়। আয়োজকেরা (টিভিকে কর্মীরা) জনসমাগম সীমিত রাখেননি এবং পানি বা মৌলিক সুবিধা দেননি। ঘটনাটির পর বিজয়ের নীরবতা ক্ষোভ বাড়ায়। রবিবার তিনি বলেন, ‘আমার হৃদয় ভেঙে গেছে।’ কিন্তু ডিএমকে নেতারা অভিযোগ করেন, তিনি লুকাচ্ছেন ও দায় এড়াচ্ছেন। পরে বিজয় প্রতিটি পরিবারকে ২০ লাখ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
আইনি দায়: সমাবেশ আয়োজনের দায়িত্বে থাকা টিভিকের কর্মীদেরও বিরুদ্ধে অবহেলার কারণে মৃত্যু (ধারা ৩০৪এ) এবং প্রাণহানি ঘটানোর ঝুঁকি (ধারা ৩৩৭) অনুযায়ী মামলা হয়। পুলিশ আয়োজকদের ত্রুটি খতিয়ে দেখছে। বিজয়ের বিরুদ্ধে এখনও অভিযোগ দায়ের হয়নি।
তবে সোশ্যাল মিডিয়া এক্স-এ #ArrestVijay ট্রেন্ড করছে। অনেকে মনে করিয়ে দেন, ২০২৪ সালে অভিনেতা আল্লু অর্জুনকে এবং এক অনুষ্ঠানে ভিড় দুর্ঘটনার পর ক্রিকেটার বিরাট কোহলিকে জবাবদিহি করতে হয়েছিল।
অভিনেত্রী ওভাইয়া প্রকাশ্যে বিজয়ের গ্রেপ্তার দাবি করেন। তামিলনাড়ু বিজেপি সভাপতি কে আন্নামালাই সুপ্রিম কোর্টকে হস্তক্ষেপের আহ্বান জানান। আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, আয়োজক হিসেবে বিজয়ের অবহেলা প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধেও মামলা হতে পারে।
অভিযোগ বনাম পাল্টা যুক্তি: বিজয়ের বিরোধী ও সমর্থকদের মধ্যে এ নিয়ে অভিযোগ বনাম পাল্টা যুক্তি চলছে। সমালোচকদের দাবি, বিজয় দেরি করে আসায় এবং দুর্বল নিরাপত্তার (৩০ হাজারের ভিড়ে মাত্র ২০০ পুলিশ) কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এর বিপরীতে বিজয়ের সমর্থকদের পাল্টা যুক্তি—স্থানীয় প্রশাসনই এর অনুমোদন দিয়েছিল। বিজয়কে মঞ্চ থেকে পুলিশের সহায়তা চাইতেও দেখা গেছে।
বিরোধীদের আরও অভিযোগ, আগের সমাবেশে মৃত্যুর ঘটনা উপেক্ষা করা হয়েছে। সমর্থকদের পাল্টা যুক্তি—এবার আনুষ্ঠানিক নিষেধাজ্ঞা ছিল না। আর ভক্তদের উচ্ছ্বাস অনুমান করা কঠিন।
এ ছাড়া ঘটনার পর ভুক্তভোগীদের সঙ্গে বিজয় সাক্ষাৎ না করেই দ্রুত চলে যান বলেও অনেক অভিযোগ করেন। তবে তার সমর্থকদের পাল্টা যুক্তি হলো, বিজয় তো পরে ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন এবং শোকও প্রকাশ করেছেন।
একজন জ্যেষ্ঠ আইএএস কর্মকর্তার নেতৃত্বে তদন্ত শুরু হয়েছে। এতে অনুমতি প্রদানের প্রক্রিয়া ও টিভিকে-র ভূমিকা খতিয়ে দেখা হবে। ভবিষ্যতে সমাবেশে কঠোর নিয়ম আসতে পারে। বিশেষজ্ঞরা এআই-ভিত্তিক ভিড় পর্যবেক্ষণ এবং বাধ্যতামূলক নিরাপত্তা অডিটের দাবি তুলেছেন।
নায়ক থেকে খলনায়ক?
সিনেমায় সাধারণ মানুষের নায়ক হিসেবেই বিজয়ের ভাবমূর্তি তৈরি হয়েছিল। কিন্তু এই দুর্ঘটনা তা ক্ষুণ্ন করেছে। ভক্তরা #WeStandWithVijay হ্যাশট্যাগে সমর্থন জানালেও সমালোচনাই বেশি। অনেকেই তাকে ‘কাপুরুষ’ আখ্যা দিচ্ছেন। মিমে তার নায়কী চরিত্রকে দুর্ঘটনার বিশৃঙ্খলার সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে। ডিএমকের মতো রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীরা তাকে বেপরোয়া আখ্যা দিচ্ছে।
এতে টিভিকে-র তরুণ সমর্থন ভেঙে পড়তে পারে। যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তার নির্বাচনী গতি থেমে যেতে পারে। তবে তামিলনাড়ুর তারকাভিত্তিক রাজনীতিতে সহানুভূতিও আবার সমর্থন জাগাতে পারে। যেমনটা ২০০৪ সালের বিতর্কের পর ডিএমডিকের বিজয়কান্তের ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছিল।
তামিলনাড়ুর ডিজিপি জি ভেঙ্কটরামন বলেন, বিজয়ের সমাবেশে ঘণ্টার পর ঘণ্টা মানুষ দাঁড়িয়ে ছিল। যথেষ্ট খাবার ও পানির ব্যবস্থা ছিল না। এর মূল কারণ ছিল তাঁর দেরিতে আসা।
তিনি জানান, সমাবেশের জন্য বিকেল ৩টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত অনুমতি নেওয়া হয়েছিল। তবে টিভিকে-র টুইটার অ্যাকাউন্টে জানানো হয়, বিজয় দুপুর ১২টায় আসবেন। ফলে সকাল ১১টা থেকেই ভিড় জমতে শুরু করে। কিন্তু বিজয় পৌঁছান সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটে।
ভেঙ্কটরামন স্পষ্ট করেন, তিনি কাউকে দোষারোপ করতে চান না, শুধু ঘটনাপ্রবাহ তুলে ধরছেন।
ভারতে কেন বারবার পদদলনের ঘটনা ঘটে
ভারতে প্রতিবছর গড়ে ১০–২০টি বড় পদদলনের ঘটনা ঘটে। এতে ৩০০–৫০০ মানুষের মৃত্যু হয়। এসব দুর্ঘটনা ঘটে মূলত রাজনৈতিক সমাবেশ, ধর্মীয় উৎসব বা ক্রীড়া ইভেন্টে।
মাত্র তিন মাস আগে, জুন মাসে বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের বাইরে আরসিবির বিজয় মিছিলে পদদলিত হয়ে ১১ জন মারা যান। এর আগে মে মাসে গোয়ার শিরগাঁও মন্দিরে ভিড়ের চাপে ৬ জনের মৃত্যু হয়। একই মাসে নয়াদিল্লি রেলওয়ে স্টেশনে পদদলিতের ঘটনায় প্রাণ হারান ১৮ জন। জানুয়ারিতে মহাকুম্ভ মেলায় পদদলিত হয়ে মারা যান অন্তত ৩৭ জন।
ভারতে পদদলনের ঘটনা সংঘটিত হওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ দেশটির বিশাল জনসংখ্যা। দেশটির প্রায় ১৪৫ কোটি জনসংখ্যা বিপুল ভিড় তৈরি করে। বিজয়ের মতো তারকা রাজনীতিকরা নিয়ন্ত্রণহীনভাবে সমর্থক টানেন।
আরেকটি কারণ দুর্বল অবকাঠামো। অনুষ্ঠানের স্থানে পর্যাপ্ত ব্যারিকেড, প্রশস্ত বের হওয়ার পথ বা সিসিটিভি থাকে না। গ্রামীণ মহাসড়কের মতো জায়গায় ঝুঁকি আরও বাড়ে।
এ ছাড়া ব্যবস্থাপনায় ত্রুটিও পদদলনের ঘটনা ঘটার অন্যতম কারণ। জনসমাগমের অনুমতিপত্র সহজে মেলে, কিন্তু পুলিশ প্রস্তুত থাকে না। দায় এড়ানোর সংস্কৃতি নিরাপত্তার চেয়ে অনুষ্ঠানের অগ্রাধিকার দেয়।
সামাজিক-সাংস্কৃতিক দিক থেকে দেখলে অতিরিক্ত উচ্ছ্বাসও একটি কারণ, যা বিশৃঙ্খলা তৈরি করে। গুজব ছড়িয়ে পড়লে ভিড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়।
সমালোচকদের দাবি বিজয়কে এই প্রতিরোধযোগ্য দুর্ঘটনার নৈতিক দায় বহন করতেই হবে। একই সঙ্গে আইনি জবাবদিহির দাবিও উঠেছে, যা ভারতে সমতার নীতিকে পরীক্ষা করছে। তবে এটি শুধু ‘বিজয়ের সমস্যা’ নয়। এটি গোটা ভারতের ভিড়-নিরাপত্তা সংকটের প্রতিচ্ছবি। ভক্তদের উচ্ছ্বাস যখন সতর্কতাকে ছাড়িয়ে যায়, তখনই বিপর্যয় ঘটে।
ভারতের শহরগুলো ও ধর্মীয় স্থানে সব সময় অতিরিক্ত ভিড় থাকে। ফলে পদদলনের ঘটনা প্রায়ই ঘটতে পারে। কারুরের মর্মান্তিক ঘটনায় সবচেয়ে বড় দুঃখজনক দিক হলো—সবাই জানত যে বিজয় যেখানে যান, সেখানেই ভক্তদের উন্মাদনা তৈরি হয়। তবুও তিনি, তাঁর দল ও প্রশাসন এই বিপর্যয় ঠেকাতে ব্যর্থ হয়।
তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়া টুডে, এনডিটিভি, লাইভ মিন্ট, হিন্দুস্তান টাইমস, টাইমস অব ইন্ডিয়া, ফার্স্টপোস্ট, দ্য হিন্দু, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
ভারতের তামিলনাড়ুর কারুরে অভিনেতা থেকে রাজনীতিবিদ হওয়া থালাপথি বিজয়ের সমাবেশে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে ২৭ সেপ্টেম্বর। এ সমাবেশের আয়োজন করেছিল বিজয়ের দল তামিলাগা ভেত্রি কাজগাম (টিভিকে)। সমাবেশে হঠাৎ ভিড়ের চাপে পদদলিত হয়ে অন্তত ৪০ জন মারা যান। নিহতদের ১০ জন শিশু ও ১৭ জন নারী। এতে আহত হন আরও প্রায় ৮০ জন।
অনেকে শ্বাসরোধ, চাপা পড়ে আঘাত পাওয়া বা অতিরিক্ত গরমে প্রাণ হারান। হাসপাতালে ভর্তি আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। প্রত্যক্ষদর্শীরা আতঙ্কের বর্ণনা দিয়েছেন। বেঁচে যাওয়া এক ব্যক্তি দ্য হিন্দুকে বলেন, ‘মানুষ সাহাজ্যের জন্য চিৎকার করে পুলিশকে ডাকছিল, শিশুরা পদদলিত হচ্ছিল।’
ভারতের সাম্প্রতিক কোনো রাজনৈতিক সমাবেশে এটি অন্যতম ভয়াবহ দুর্ঘটনা। সমাবেশটি ছিল বিজয়ের ‘ভেলিচাম ভেলিয়েরু’ বা ‘আলো আসুক’ প্রচারণার অংশ। ২০২৬ সালের রাজ্য নির্বাচনকে সামনে রেখে তিনি এই প্রচারণা শুরু করেছেন।
থালাপতির তারকাখ্যাতি সমাবেশে লাখো মানুষকে আকৃষ্ট করে। প্রশ্ন উঠেছে— এই বিপর্যয়ের দায় কতটা তাঁর? নায়কসুলভ ইমেজ কি এবার খলনায়কের মতো আঘাত হানবে? কীভাবে এমন দুর্ঘটনা ঘটল এবং কেন ভারতে এ ধরনের ঘটনা বারবার ফিরে আসে?
কী ঘটেছে: ট্রাজেডির টাইমলাইন
সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয় ভেলুসামিপুরমে, কারুর-ইরোড মহাসড়কের পাশে। এটি ছিল বিজয়ের রাজ্যজুড়ে সফরের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। সকাল থেকেই হাজার হাজার মানুষ সেখানে ভিড় জমায়। প্রচণ্ড গরমে খাবার-পানির পর্যাপ্ত ব্যবস্থা ছিল না। সন্ধ্যায় বিজয়ের আগমনের প্রতিশ্রুতি মানুষকে অপেক্ষায় রাখে।
দুপুরেই জনসমাগম ক্ষমতার সীমা ছাড়িয়ে যায়। আনুমানিক ৩০ হাজার বা আরও বেশি মানুষ উপস্থিত হয়। কিন্তু ধারণা করা হয়েছিল ১০ থেকে ১৫ হাজার মানুষের সমাগম হতে পারে এবং সে অনুযায়ীই স্থান নির্ধারণ করে প্রশাসন। দুর্বল ব্যারিকেড ও অল্প প্রবেশপথ ভিড়কে আরও বিপজ্জনক করে তোলে।
কিন্তু সন্ধ্যা ছয়টা বেজে গেলেও বিজয়ের আসতে দেরি হচ্ছিল। বিজয় প্রায় সাত ঘণ্টা দেরিতে সমাবেশে আসেন। এতে জনতার মধ্যে অস্থিরতা বাড়তে থাকে। তিনি অবশেষে পৌঁছালে ভক্তরা দ্রুতগতিতে সামনে ধাবিত হয়। তখন হোঁচট খেয়ে অনেকেই পড়ে যান এবং পদদলনে নিহত হয়। ভিডিওতে দেখা গেছে, বিজয় মঞ্চে দাঁড়িয়ে পানির বোতল ছুড়ে দিচ্ছেন। চারদিকে সাহায্যের আর্তনাদ শোনা যাচ্ছিল।
ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিজয়ের আগের সমাবেশস্থল নামাক্কাল থেকে অনেক মানুষ তাঁর বাসের পেছনে পেছনে কারুরেও চলে আসে। এতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে অপেক্ষমান ভিড়ে নতুন করে আরও ভিড় যোগ হয়। স্থানীয় কর্মকর্তাদের ধারণা, ১ লাখ ২০ হাজার বর্গফুট জায়গায় সম্ভবত প্রায় ৫০ হাজার মানুষ জমায়েত হয়েছিলেন।
ঘটনার সূত্রপাত ঘটায় কয়েকটি বিষয়। বিজয় তাঁর ভাষণে এক নিখোঁজ মেয়ের খবর দেন, যে মা-সহ সমাবেশে এসেছিল। এ খবরে ভিড়ে অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়ে। একই সঙ্গে গাছের একটি ডাল ভেঙে যায়, যেখানে প্রায় এক ডজন মানুষ বসেছিলেন। এসব কারণে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, চারপাশে হট্টগোল চললেও বিজয় তাঁর বক্তব্য চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
পরে অ্যাম্বুলেন্সে করে আহত ব্যক্তিদের হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু বিশৃঙ্খলায় উদ্ধারকাজ দেরিতে শুরু হয়। বিজয় স্বল্প সময়ের জন্য বক্তব্য দেন এবং ঘটনাস্থল থেকে চলে যান। পরে তাঁকে চেন্নাইয়ের উদ্দেশে বিমানবন্দরে দেখা যায়।
তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্টালিন ২৮ সেপ্টেম্বর কারুরে গিয়ে নিহত ব্যক্তিদের পরিবারপ্রতি ১০ লাখ এবং আহতদের ১ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেন। তিনি এই ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তেরও নির্দেশ দেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিহতদের পরিবারপ্রতি দুই লাখ রুপি করে আর্থিক সহায়তার ঘোষণা দেন এবং সমবেদনা জানান। অথচ গতমাসে মোদী ও বিজেপিকে ফ্যাসিবাদী আখ্যা দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়েই বিজয় আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী রাজনীতিতে নামেন।
বিজয়ের দায়: নৈতিক অপরাধবোধ বনাম আইনি জবাবদিহি
৫১ বছর বয়সী বিজয় ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করে অভিনয় থেকে রাজনীতিতে আসেন। দল গঠনের সময় তিনি বলেছিলেন, তাঁর লক্ষ্য ডিএমকে ও বিজেপির বাইনারি থেকে তামিলনাড়ুর রাজনীতিকে বের করে আনা। তার জনপ্রিয়তা মূলত সিনেমাজীবন থেকেই তৈরি হয়েছে—টানা ৯টি হিট ছবি ও ২০০ কোটি রুপির পারিশ্রমিক তাঁকে তারকা করেছে। তবে তার জনসমাবেশে আগেও নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। দল ঘোষণার সময় এক অনুষ্ঠানে ছয়জন নিহত হয়েছিলেন।
নৈতিক দায়: সমালোচকদের মতে, বিজয় বড় সমাবেশর প্রতি বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন, নিরাপত্তার প্রতি নয়। তাঁর বিলম্বিত আগমন সরাসরি ভিড়ের চাপ বাড়ায়। আয়োজকেরা (টিভিকে কর্মীরা) জনসমাগম সীমিত রাখেননি এবং পানি বা মৌলিক সুবিধা দেননি। ঘটনাটির পর বিজয়ের নীরবতা ক্ষোভ বাড়ায়। রবিবার তিনি বলেন, ‘আমার হৃদয় ভেঙে গেছে।’ কিন্তু ডিএমকে নেতারা অভিযোগ করেন, তিনি লুকাচ্ছেন ও দায় এড়াচ্ছেন। পরে বিজয় প্রতিটি পরিবারকে ২০ লাখ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
আইনি দায়: সমাবেশ আয়োজনের দায়িত্বে থাকা টিভিকের কর্মীদেরও বিরুদ্ধে অবহেলার কারণে মৃত্যু (ধারা ৩০৪এ) এবং প্রাণহানি ঘটানোর ঝুঁকি (ধারা ৩৩৭) অনুযায়ী মামলা হয়। পুলিশ আয়োজকদের ত্রুটি খতিয়ে দেখছে। বিজয়ের বিরুদ্ধে এখনও অভিযোগ দায়ের হয়নি।
তবে সোশ্যাল মিডিয়া এক্স-এ #ArrestVijay ট্রেন্ড করছে। অনেকে মনে করিয়ে দেন, ২০২৪ সালে অভিনেতা আল্লু অর্জুনকে এবং এক অনুষ্ঠানে ভিড় দুর্ঘটনার পর ক্রিকেটার বিরাট কোহলিকে জবাবদিহি করতে হয়েছিল।
অভিনেত্রী ওভাইয়া প্রকাশ্যে বিজয়ের গ্রেপ্তার দাবি করেন। তামিলনাড়ু বিজেপি সভাপতি কে আন্নামালাই সুপ্রিম কোর্টকে হস্তক্ষেপের আহ্বান জানান। আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, আয়োজক হিসেবে বিজয়ের অবহেলা প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধেও মামলা হতে পারে।
অভিযোগ বনাম পাল্টা যুক্তি: বিজয়ের বিরোধী ও সমর্থকদের মধ্যে এ নিয়ে অভিযোগ বনাম পাল্টা যুক্তি চলছে। সমালোচকদের দাবি, বিজয় দেরি করে আসায় এবং দুর্বল নিরাপত্তার (৩০ হাজারের ভিড়ে মাত্র ২০০ পুলিশ) কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এর বিপরীতে বিজয়ের সমর্থকদের পাল্টা যুক্তি—স্থানীয় প্রশাসনই এর অনুমোদন দিয়েছিল। বিজয়কে মঞ্চ থেকে পুলিশের সহায়তা চাইতেও দেখা গেছে।
বিরোধীদের আরও অভিযোগ, আগের সমাবেশে মৃত্যুর ঘটনা উপেক্ষা করা হয়েছে। সমর্থকদের পাল্টা যুক্তি—এবার আনুষ্ঠানিক নিষেধাজ্ঞা ছিল না। আর ভক্তদের উচ্ছ্বাস অনুমান করা কঠিন।
এ ছাড়া ঘটনার পর ভুক্তভোগীদের সঙ্গে বিজয় সাক্ষাৎ না করেই দ্রুত চলে যান বলেও অনেক অভিযোগ করেন। তবে তার সমর্থকদের পাল্টা যুক্তি হলো, বিজয় তো পরে ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন এবং শোকও প্রকাশ করেছেন।
একজন জ্যেষ্ঠ আইএএস কর্মকর্তার নেতৃত্বে তদন্ত শুরু হয়েছে। এতে অনুমতি প্রদানের প্রক্রিয়া ও টিভিকে-র ভূমিকা খতিয়ে দেখা হবে। ভবিষ্যতে সমাবেশে কঠোর নিয়ম আসতে পারে। বিশেষজ্ঞরা এআই-ভিত্তিক ভিড় পর্যবেক্ষণ এবং বাধ্যতামূলক নিরাপত্তা অডিটের দাবি তুলেছেন।
নায়ক থেকে খলনায়ক?
সিনেমায় সাধারণ মানুষের নায়ক হিসেবেই বিজয়ের ভাবমূর্তি তৈরি হয়েছিল। কিন্তু এই দুর্ঘটনা তা ক্ষুণ্ন করেছে। ভক্তরা #WeStandWithVijay হ্যাশট্যাগে সমর্থন জানালেও সমালোচনাই বেশি। অনেকেই তাকে ‘কাপুরুষ’ আখ্যা দিচ্ছেন। মিমে তার নায়কী চরিত্রকে দুর্ঘটনার বিশৃঙ্খলার সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে। ডিএমকের মতো রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীরা তাকে বেপরোয়া আখ্যা দিচ্ছে।
এতে টিভিকে-র তরুণ সমর্থন ভেঙে পড়তে পারে। যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তার নির্বাচনী গতি থেমে যেতে পারে। তবে তামিলনাড়ুর তারকাভিত্তিক রাজনীতিতে সহানুভূতিও আবার সমর্থন জাগাতে পারে। যেমনটা ২০০৪ সালের বিতর্কের পর ডিএমডিকের বিজয়কান্তের ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছিল।
তামিলনাড়ুর ডিজিপি জি ভেঙ্কটরামন বলেন, বিজয়ের সমাবেশে ঘণ্টার পর ঘণ্টা মানুষ দাঁড়িয়ে ছিল। যথেষ্ট খাবার ও পানির ব্যবস্থা ছিল না। এর মূল কারণ ছিল তাঁর দেরিতে আসা।
তিনি জানান, সমাবেশের জন্য বিকেল ৩টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত অনুমতি নেওয়া হয়েছিল। তবে টিভিকে-র টুইটার অ্যাকাউন্টে জানানো হয়, বিজয় দুপুর ১২টায় আসবেন। ফলে সকাল ১১টা থেকেই ভিড় জমতে শুরু করে। কিন্তু বিজয় পৌঁছান সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটে।
ভেঙ্কটরামন স্পষ্ট করেন, তিনি কাউকে দোষারোপ করতে চান না, শুধু ঘটনাপ্রবাহ তুলে ধরছেন।
ভারতে কেন বারবার পদদলনের ঘটনা ঘটে
ভারতে প্রতিবছর গড়ে ১০–২০টি বড় পদদলনের ঘটনা ঘটে। এতে ৩০০–৫০০ মানুষের মৃত্যু হয়। এসব দুর্ঘটনা ঘটে মূলত রাজনৈতিক সমাবেশ, ধর্মীয় উৎসব বা ক্রীড়া ইভেন্টে।
মাত্র তিন মাস আগে, জুন মাসে বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের বাইরে আরসিবির বিজয় মিছিলে পদদলিত হয়ে ১১ জন মারা যান। এর আগে মে মাসে গোয়ার শিরগাঁও মন্দিরে ভিড়ের চাপে ৬ জনের মৃত্যু হয়। একই মাসে নয়াদিল্লি রেলওয়ে স্টেশনে পদদলিতের ঘটনায় প্রাণ হারান ১৮ জন। জানুয়ারিতে মহাকুম্ভ মেলায় পদদলিত হয়ে মারা যান অন্তত ৩৭ জন।
ভারতে পদদলনের ঘটনা সংঘটিত হওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ দেশটির বিশাল জনসংখ্যা। দেশটির প্রায় ১৪৫ কোটি জনসংখ্যা বিপুল ভিড় তৈরি করে। বিজয়ের মতো তারকা রাজনীতিকরা নিয়ন্ত্রণহীনভাবে সমর্থক টানেন।
আরেকটি কারণ দুর্বল অবকাঠামো। অনুষ্ঠানের স্থানে পর্যাপ্ত ব্যারিকেড, প্রশস্ত বের হওয়ার পথ বা সিসিটিভি থাকে না। গ্রামীণ মহাসড়কের মতো জায়গায় ঝুঁকি আরও বাড়ে।
এ ছাড়া ব্যবস্থাপনায় ত্রুটিও পদদলনের ঘটনা ঘটার অন্যতম কারণ। জনসমাগমের অনুমতিপত্র সহজে মেলে, কিন্তু পুলিশ প্রস্তুত থাকে না। দায় এড়ানোর সংস্কৃতি নিরাপত্তার চেয়ে অনুষ্ঠানের অগ্রাধিকার দেয়।
সামাজিক-সাংস্কৃতিক দিক থেকে দেখলে অতিরিক্ত উচ্ছ্বাসও একটি কারণ, যা বিশৃঙ্খলা তৈরি করে। গুজব ছড়িয়ে পড়লে ভিড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়।
সমালোচকদের দাবি বিজয়কে এই প্রতিরোধযোগ্য দুর্ঘটনার নৈতিক দায় বহন করতেই হবে। একই সঙ্গে আইনি জবাবদিহির দাবিও উঠেছে, যা ভারতে সমতার নীতিকে পরীক্ষা করছে। তবে এটি শুধু ‘বিজয়ের সমস্যা’ নয়। এটি গোটা ভারতের ভিড়-নিরাপত্তা সংকটের প্রতিচ্ছবি। ভক্তদের উচ্ছ্বাস যখন সতর্কতাকে ছাড়িয়ে যায়, তখনই বিপর্যয় ঘটে।
ভারতের শহরগুলো ও ধর্মীয় স্থানে সব সময় অতিরিক্ত ভিড় থাকে। ফলে পদদলনের ঘটনা প্রায়ই ঘটতে পারে। কারুরের মর্মান্তিক ঘটনায় সবচেয়ে বড় দুঃখজনক দিক হলো—সবাই জানত যে বিজয় যেখানে যান, সেখানেই ভক্তদের উন্মাদনা তৈরি হয়। তবুও তিনি, তাঁর দল ও প্রশাসন এই বিপর্যয় ঠেকাতে ব্যর্থ হয়।
তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়া টুডে, এনডিটিভি, লাইভ মিন্ট, হিন্দুস্তান টাইমস, টাইমস অব ইন্ডিয়া, ফার্স্টপোস্ট, দ্য হিন্দু, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
বাংলাদেশে ‘তথ্য অধিকার আইন’ কার্যকর হওয়ার পনেরো বছর পেরিয়ে গেছে। গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি হিসেবে তথ্যপ্রাপ্তির অধিকারকে সংবিধান স্বীকৃতি দিয়েছে অনেক আগেই। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এই অধিকার কি বাস্তবে নাগরিকের জীবনে কোনো মৌলিক পরিবর্তন আনতে পেরেছে?
৫ ঘণ্টা আগেবিশ্বজুড়ে মেধাবী তরুণদের অন্যতম এক স্বপ্নের নাম আমেরিকার এইচ-ওয়ান-বি ভিসা। এর মাধ্যমে তাঁরা আমেরিকায় গিয়ে বৈধভাবে বসবাস ও পড়াশোনা বা গবেষণার কাজ এগিয়ে নিতে পারেন। যুগে যুগে এই প্রথা মেধাবী তরুণ বা উদ্যোক্তাদের যেমন সাহায্য করছে, তেমনি আমেরিকাও বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হচ্ছে বলে এত দিন ধারণা ছিল। এর জন্য
৬ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশের খ্যাতনামা আলোকচিত্রী শহিদুল আলম ২৭ সেপ্টেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা দেন যে তিনি গাজা মিডিয়া ফ্লোটিলায় যোগ দেবেন। এ লক্ষ্যে তিনি ইতিমধ্যেই ইতালির উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেছেন।
১০ ঘণ্টা আগেটিকটক ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রে শুরু হয়েছে নতুন কোনো রাজনৈতিক খেলা?—অনেকের মনে এই প্রশ্ন। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সই করা সাম্প্রতিক নির্বাহী আদেশে অ্যাপটির মার্কিন কার্যক্রম তাঁর ঘনিষ্ঠ ধনকুবের মিত্রদের হাতে চলে যাওয়ার পথ সুগম হয়েছে। এতে সামনে আসছে রুপার্ট মারডক ও ল্যারি এলিসনের মতো প্রভাবশালীর নাম।
১৩ ঘণ্টা আগে