গাজায় প্রায় দুই বছর ধরে যুদ্ধ চলছে। এতে প্রায় ৬৫ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে এবং গাজা পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তুপে। তথাপি ইসরায়েল মনে করে, নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে হামাসকে পুরোপুরি নির্মূল করতে হবে। জাতিসংঘের প্রস্তাবে হামাসের নিরস্ত্রীকরণের কথা থাকলেও বাস্তবায়নের কোনো কাঠামো নেই।
স্ট্রিম ডেস্ক
গত ১২ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিন নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব গৃহীত হয়। যদিও সেটি মানা সদস্য রাষ্ট্রগুলোর জন্য বাধ্যতামূলক নয়। এই প্রস্তাবের নাম ‘নিউইয়র্ক ঘোষণা’। এর লক্ষ্য ছিল দীর্ঘদিন ধরে স্থগিত হয়ে থাকা ইসরায়েল-ফিলিস্তিন দুই রাষ্ট্র সমাধানকে পুনরুজ্জীবিত করা।
ভোটে প্রস্তাবের পক্ষে ১৪২টি দেশ সমর্থন দেয়। ১০টি দেশ বিরোধিতা করে। ১২টি দেশ ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকে। প্রস্তাবে বলা হয়, হামাসমুক্ত একটি স্বাধীন ও কার্যকর ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন করতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে হামাসের নিরস্ত্রীকরণ, ক্ষমতা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের হাতে হস্তান্তর এবং ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার সময় অপহরণ করে নেওয়া সব ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্ত করা।
এছাড়া প্রস্তাবে হামাসের হামলারও নিন্দা জানানো হয়। গাজায় তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো হয়। গাজার পুনর্গঠন ও সরকার পরিবর্তনে আন্তর্জাতিক সম্পৃক্ততার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। ফ্রান্সের উদ্যোগে আনা এই প্রস্তাবে আরব দেশগুলোও সমর্থন দেয়। যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় শান্তির পথ খোঁজাই এর মূল উদ্দেশ্য।
তবে ইসরায়েলের কাছে এই প্রস্তাব কেবল একটি প্রতীকী উদ্যোগ। তারা মনে করে, এতে তাদের মৌলিক নিরাপত্তা উদ্বেগের সমাধান নেই। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকার প্রস্তাবটিকে কিছু না ভেবেই প্রত্যাখ্যান করে দেয়। তাঁদের ভাষায়, এটি ‘সন্ত্রাসীদের পুরস্কার’ এবং সংঘাতকে দীর্ঘায়িত করবে। একইসঙ্গে এই প্রস্তাব ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকারকেও দুর্বল করবে। প্রস্তাবের কিছু দিন আগে নেতানিয়াহু বলেছিলেন— ‘কোনো ফিলিস্তিন রাষ্ট্র হবে না, এই ভূমি আমাদের।’
যুক্তরাষ্ট্রও ইসরায়েলকে সমর্থন করে। তারা প্রস্তাবটিকে ‘ভুল ও সময়োপযোগী নয়’ বলে অভিহিত করে। তাদের মতে, এটি ‘চরমপন্থী’দের সাহস জোগাতে পারে এবং যুদ্ধকে আরও দীর্ঘায়িত করবে।
তবে যেহেতু প্রস্তাবটির কোনো আইনগত বাধ্যবাধকতা নেই, তাই ইসরায়েলের প্রত্যাখ্যান এর অবস্থানে কোনো পরিবর্তন আনবে না। কিন্তু এ অবস্থায় শান্তি প্রক্রিয়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন প্রশ্ন উঠছে। ইসরায়েল আসলে কী চায়, তা বুঝতে হলে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামলার পর তাদের জাতীয় নিরাপত্তা কৌশলের বড় পরিবর্তনটি বুঝতে হবে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নেতৃত্বে চালানো হামলায় ইসরায়েলে প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হয়েছিল। এছাড়া ২৫০ জনেরও বেশি মানুষকে অপহরণ করে জিম্মি বানায় হামাস। ইসরায়েল মনে করে, এই ঘটনায় তাদের পুরোনো নিরাপত্তা কৌশলের বড় ধরনের দুর্বলতা প্রকাশ পায়।
এর আগে ইসরায়েল হামাস বা হিজবুল্লাহর মতো প্রতিপক্ষকে দুর্বল করলেও সম্পূর্ণ পরাজিত করত না। এ নীতি ছিল ‘ঘাস ছাটা’র মতো কৌশল। লক্ষ্য ছিল সীমান্তে সাময়িক শান্তি ফিরিয়ে আনা। ৭ অক্টোবরের ঘটনার পর ইসরায়েল এই নীতি বাতিল করে। নতুন কৌশল হলো সক্রিয় ও শক্তি প্রয়োগভিত্তিক।
ইসরায়েলি নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ মেইর বেন-শাব্বাত ও আসের ফ্রেডম্যান সাম্প্রতিক এক বিশ্লেষণে বলেছেন, এখন ইসরায়েলের লক্ষ্য হলো স্পষ্ট বিজয় নিশ্চিত করা। এর মাধ্যমে তারা আঞ্চলিক ভারসাম্য পুনর্গঠন করতে চায়, নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করতে চায় এবং অস্তিত্বের হুমকি প্রতিরোধ করতে চায়।
তাদের মতে, এটি আঞ্চলিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা নয়। অর্থনৈতিক শক্তি বা সফট পাওয়ারের দিক থেকে ইসরায়েলের সে সক্ষমতা নেই। বরং লক্ষ্য হলো নিরাপত্তা পরিস্থিতির ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা। এজন্য তারা উচ্চাভিলাষী সামরিক লক্ষ্য স্থির করছে। প্রয়োজনে বহু ফ্রন্টে যুদ্ধ এবং আন্তর্জাতিক সমালোচনার ঝুঁকিও নিচ্ছে।
জাতিসংঘের নিউইয়র্ক ঘোষণা, যেখানে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের কথা বলা হয়েছে কিন্তু ইসরায়েলের জন্য দৃঢ় নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেওয়া হয়নি, সরাসরি এই নতুন দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
গাজায় প্রায় দুই বছর ধরে যুদ্ধ চলছে। এতে প্রায় ৬৫ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে এবং গাজা পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তুপে। তথাপি ইসরায়েল মনে করে, নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে হামাসকে পুরোপুরি নির্মূল করতে হবে। জাতিসংঘের প্রস্তাবে হামাসের নিরস্ত্রীকরণের কথা থাকলেও বাস্তবায়নের কোনো কাঠামো নেই। ইসরায়েলের মতে, হামাস টিকে থাকলে— এমনকি যদি দুর্বল অবস্থায়ও থাকে— তাও হিজবুল্লাহ বা ইরানের কাছে বিজয় হিসেবে গণ্য হবে এবং আরও হামলার ঝুঁকি বাড়বে।
তাই ইসরায়েলের কথা হলো, হামাসকে নির্মূল করতে হবে। তাদের কমান্ডার ও যোদ্ধাদের হত্যা, গ্রেপ্তার বা নির্বাসনে পাঠাতে হবে। টানেল নেটওয়ার্ক, অস্ত্রের ভান্ডার ও কারখানা ধ্বংস করতে হবে। উত্তর গাজা ও সীমান্ত এলাকায় ইসরায়েল অনির্দিষ্টকালের জন্য নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখার পরিকল্পনা করেছে, যাতে হামাসের পুনর্গঠন বা নতুন হামলার সুযোগ না থাকে।
আর প্রশাসনিক দায়িত্ব যদি ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ বা আন্তর্জাতিক সংস্থার হাতেও যায়, তবুও নিরাপত্তা বিষয়ে ইসরায়েলের ভেটো ক্ষমতা থাকতে হবে। অবশিষ্ট হুমকি মোকাবিলায় সামরিক অভিযান চালানোর অধিকারও তারা রাখতে চায়।
গাজার মানুষ স্বেচ্ছায় বিদেশে অভিবাসন করতে চাইলেও ইসরায়েল তা সমর্থন করবে। ইসরায়েল বলছে, জরিপে দেখা গেছে, ৩০–৫০ শতাংশ গাজাবাসী সুযোগ পেলে অন্যত্র চলে যেতে রাজি। পরে, হামাস নির্মূল হলে, ইসরায়েলের নিরাপত্তা তত্ত্বাবধানে তারা ফিরতে পারবে।
গাজার জনগণের অর্ধেকের বয়স ১৮ বছরের নিচে। দীর্ঘদিন হামাসের নিয়ন্ত্রিত শিক্ষা ও গণমাধ্যমে বেড়ে উঠেছে তারা। তাই ইসরায়েল দীর্ঘমেয়াদি দর্শনগত সংস্কারের দাবিও করছে। এর মধ্যে থাকবে নতুন পাঠ্যক্রম, সহিংসতা উসকে দেওয়া নেতাদের নিষিদ্ধকরণ এবং সহাবস্থানকে উৎসাহিত করা।
ইসরায়েলের আপত্তি রয়েছে পশ্চিম তীরকে ঘিরেও। তাদের মতে, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ (পিএ) দুর্নীতিগ্রস্ত এবং সন্ত্রাসীদের আর্থিক পুরস্কার দিয়ে থাকে। একসময়কার অসলো চুক্তি, যা দুই রাষ্ট্র সমাধানের নকশা ছিল, এখন ইসরায়েলের চোখে ব্যর্থ। বরং এটি ফিলিস্তিনি প্রত্যাখ্যানবাদকে উৎসাহ দিয়েছে। ২০২৫ সালের মে মাসের এক জরিপে দেখা গেছে, পশ্চিম তীরের প্রায় অর্ধেক ফিলিস্তিনি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য সশস্ত্র সংগ্রামের পক্ষে।
ইসরায়েলের দাবি হলো অভিযান জোরদার করে ‘সন্ত্রাসী’ অবকাঠামো ভাঙতে হবে। এজন্য আরও গভীর সামরিক অভিযান চালানো হবে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় দীর্ঘমেয়াদি উপস্থিতিও বজায় রাখা হবে।
আশেপাশের গুরুত্বপূর্ণ ভূখণ্ডেও নিজের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে চায় ইসরায়েল। এজন্য তারা জর্ডান ভ্যালিতে তাদের আইন প্রয়োগ করতে চায়। এটি ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরের প্রায় ৩০ শতাংশ এলাকা। ইসরায়েল মনে করে, এই অঞ্চল পূর্ব দিক থেকে আসা হুমকির বিরুদ্ধে কৌশলগত ঢাল।
ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের স্বীকৃতি প্রত্যাখ্যান করে ইসরায়েল বলে, দুই রাষ্ট্র সমাধান সম্ভব নয়, যদি না ফিলিস্তিনিরা স্পষ্টভাবে ইসরায়েলকে ইহুদি রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। পাশাপাশি সন্ত্রাসকে ভাষায় ও কাজে প্রত্যাখ্যান করে। নিউইয়র্ক ঘোষণা এসব শর্ত ছাড়াই ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। তাই ইসরায়েল একে চরমপন্থাকে পুরস্কৃত করা হিসেবে দেখছে।
ইসরায়েলের কৌশল কেবল ফিলিস্তিনি অঞ্চলের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এটি আরও বিস্তৃত হুমকি মোকাবিলার ওপর কেন্দ্র করে গঠিত। বিশেষত ইরানকে টার্গেট করা হয়েছে। ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি এবং ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থাকে ইসরায়েল নিজের জন্য অস্তিত্বগত ঝুঁকি হিসেবে দেখে। ২০২৫ সালের জুনে ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা ধ্বংস করার জন্য হামলা চালায়।
ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ, পারমাণবিক অস্ত্রায়ন ও ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদনে স্থায়ী সীমাবদ্ধতা আনতে চায় ইসরায়েল। প্রয়োজন হলে পুনরায় হামলার প্রস্তুতিও রাখে। এ ছাড়া তেহরানের ধর্মীয় শাসন ব্যবস্থাকে বিচ্ছিন্ন করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলোর উপর চাপ সৃষ্টি করতে চায়।
কৌশলগত জোট গড়তে ইসরায়েল আব্রাহাম চুক্তির দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করছে। এতে সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও অন্যান্য দেশের সঙ্গে ইরানবিরোধী সহযোগিতা এবং অর্থনৈতিক সংযোগ যেমন ভারত-মধ্যপ্রাচ্য-ইউরোপ করিডোরকে এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পর্কিত সিরিয়ার রাষ্ট্রপ্রধান আহমেদ আল-শারার সঙ্গেও সম্পর্ক খুব সতর্কতার সঙ্গে গড়ে তুলছে।
অনেক বিশ্লেষক বলেন, ইসরায়েলের লক্ষ্য ‘গ্রেটার ইসরায়েল’ প্রতিষ্ঠা করা। বৃহত্তর ইসরায়েলের ধারণাটি বহুদিন ধরেই অতি ডান বা জায়নবাদী ইসরায়েলিদের মধ্যে আলোচনায় রয়েছে। ইসরায়েলের ভূখণ্ড বাড়িয়ে ফিলিস্তিন, লেবানন ও জর্ডানের পাশাপাশি সিরিয়া, ইরাক, মিসর ও সৌদি আরবের বড় একটি অংশকে অন্তর্ভুক্ত করাই বৃহত্তর ইসরায়েল ধারণাটির মূল লক্ষ্য।
ধারণাটি প্রথম উত্থাপন করেন রাজনৈতিক জায়নবাদের জনক থিওডর হার্তজেল। তিনি তাঁর ডায়েরিতে লিখেছিলেন, ইহুদি রাষ্ট্রের ভূখণ্ড ‘মিসরের সিনাই উপদ্বীপে অবস্থিত ওয়াদি (শুষ্ক নদীর তলদেশ) থেকে ইউফ্রেটিস পর্যন্ত’ বিস্তৃত হওয়া উচিত।
ইসরায়েল নিউইয়র্ক ঘোষণাকে প্রত্যাখ্যান করছে, কারণ তাদের মতে, ছাড় বা সাম্যতা দুর্বলতার সংকেত দেয়। যা আরও সহিংসতা ডেকে আনে। কিন্তু শক্তি দেখালে নতুন মিত্রও আসে। যেমন ৭ অক্টোবরের পর আরব দেশগুলোর সঙ্গে স্থায়ী অংশীদারত্ব গড়ে উঠা সেটাই প্রমাণ করে।
জাতিসংঘের প্রস্তাবে নিরাপত্তা নিশ্চয়তার বদলে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। ইসরায়েলের দৃষ্টিতে এটি সন্ত্রাসের চক্রকে দীর্ঘায়িত করবে। সমালোচকেরা বলেন, এই কৌশল সংঘাত ও মানবিক বিপর্যয়ের ঝুঁকি বাড়ায়। কিন্তু ইসরায়েলের নেতারা নিজ দেশের অস্তিত্ব রক্ষাকে সর্বাগ্রে রাখে।
মূলত, ইসরায়েল চায় এমন একটি মধ্যপ্রাচ্য, যেখানে তার দেশের সীমান্ত নিরাপদ থাকবে, হামাস ও অন্যান্য প্রতিপক্ষ পরাজিত হবে, কোনো শত্রু তাদের অস্তিত্বকে হুমকির মুখে ফেলতে পারবে না। ইসরায়েলের মতে, ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গড়ে উঠতে পারে, কিন্তু শর্ত তাদের হাতে থাকবে। এটি হবে নিরস্ত্রীকৃত, চরমপন্থামুক্ত এবং তাদের স্থায়ী নিরাপত্তা তত্ত্বাবধানে।
সূত্র: আল-জাজিরা, দ্য গার্ডিয়ান, ইউরো নিউজ, ডয়চে ভেলে
গত ১২ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিন নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব গৃহীত হয়। যদিও সেটি মানা সদস্য রাষ্ট্রগুলোর জন্য বাধ্যতামূলক নয়। এই প্রস্তাবের নাম ‘নিউইয়র্ক ঘোষণা’। এর লক্ষ্য ছিল দীর্ঘদিন ধরে স্থগিত হয়ে থাকা ইসরায়েল-ফিলিস্তিন দুই রাষ্ট্র সমাধানকে পুনরুজ্জীবিত করা।
ভোটে প্রস্তাবের পক্ষে ১৪২টি দেশ সমর্থন দেয়। ১০টি দেশ বিরোধিতা করে। ১২টি দেশ ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকে। প্রস্তাবে বলা হয়, হামাসমুক্ত একটি স্বাধীন ও কার্যকর ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন করতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে হামাসের নিরস্ত্রীকরণ, ক্ষমতা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের হাতে হস্তান্তর এবং ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার সময় অপহরণ করে নেওয়া সব ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্ত করা।
এছাড়া প্রস্তাবে হামাসের হামলারও নিন্দা জানানো হয়। গাজায় তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো হয়। গাজার পুনর্গঠন ও সরকার পরিবর্তনে আন্তর্জাতিক সম্পৃক্ততার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। ফ্রান্সের উদ্যোগে আনা এই প্রস্তাবে আরব দেশগুলোও সমর্থন দেয়। যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় শান্তির পথ খোঁজাই এর মূল উদ্দেশ্য।
তবে ইসরায়েলের কাছে এই প্রস্তাব কেবল একটি প্রতীকী উদ্যোগ। তারা মনে করে, এতে তাদের মৌলিক নিরাপত্তা উদ্বেগের সমাধান নেই। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকার প্রস্তাবটিকে কিছু না ভেবেই প্রত্যাখ্যান করে দেয়। তাঁদের ভাষায়, এটি ‘সন্ত্রাসীদের পুরস্কার’ এবং সংঘাতকে দীর্ঘায়িত করবে। একইসঙ্গে এই প্রস্তাব ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকারকেও দুর্বল করবে। প্রস্তাবের কিছু দিন আগে নেতানিয়াহু বলেছিলেন— ‘কোনো ফিলিস্তিন রাষ্ট্র হবে না, এই ভূমি আমাদের।’
যুক্তরাষ্ট্রও ইসরায়েলকে সমর্থন করে। তারা প্রস্তাবটিকে ‘ভুল ও সময়োপযোগী নয়’ বলে অভিহিত করে। তাদের মতে, এটি ‘চরমপন্থী’দের সাহস জোগাতে পারে এবং যুদ্ধকে আরও দীর্ঘায়িত করবে।
তবে যেহেতু প্রস্তাবটির কোনো আইনগত বাধ্যবাধকতা নেই, তাই ইসরায়েলের প্রত্যাখ্যান এর অবস্থানে কোনো পরিবর্তন আনবে না। কিন্তু এ অবস্থায় শান্তি প্রক্রিয়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন প্রশ্ন উঠছে। ইসরায়েল আসলে কী চায়, তা বুঝতে হলে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামলার পর তাদের জাতীয় নিরাপত্তা কৌশলের বড় পরিবর্তনটি বুঝতে হবে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নেতৃত্বে চালানো হামলায় ইসরায়েলে প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হয়েছিল। এছাড়া ২৫০ জনেরও বেশি মানুষকে অপহরণ করে জিম্মি বানায় হামাস। ইসরায়েল মনে করে, এই ঘটনায় তাদের পুরোনো নিরাপত্তা কৌশলের বড় ধরনের দুর্বলতা প্রকাশ পায়।
এর আগে ইসরায়েল হামাস বা হিজবুল্লাহর মতো প্রতিপক্ষকে দুর্বল করলেও সম্পূর্ণ পরাজিত করত না। এ নীতি ছিল ‘ঘাস ছাটা’র মতো কৌশল। লক্ষ্য ছিল সীমান্তে সাময়িক শান্তি ফিরিয়ে আনা। ৭ অক্টোবরের ঘটনার পর ইসরায়েল এই নীতি বাতিল করে। নতুন কৌশল হলো সক্রিয় ও শক্তি প্রয়োগভিত্তিক।
ইসরায়েলি নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ মেইর বেন-শাব্বাত ও আসের ফ্রেডম্যান সাম্প্রতিক এক বিশ্লেষণে বলেছেন, এখন ইসরায়েলের লক্ষ্য হলো স্পষ্ট বিজয় নিশ্চিত করা। এর মাধ্যমে তারা আঞ্চলিক ভারসাম্য পুনর্গঠন করতে চায়, নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করতে চায় এবং অস্তিত্বের হুমকি প্রতিরোধ করতে চায়।
তাদের মতে, এটি আঞ্চলিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা নয়। অর্থনৈতিক শক্তি বা সফট পাওয়ারের দিক থেকে ইসরায়েলের সে সক্ষমতা নেই। বরং লক্ষ্য হলো নিরাপত্তা পরিস্থিতির ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা। এজন্য তারা উচ্চাভিলাষী সামরিক লক্ষ্য স্থির করছে। প্রয়োজনে বহু ফ্রন্টে যুদ্ধ এবং আন্তর্জাতিক সমালোচনার ঝুঁকিও নিচ্ছে।
জাতিসংঘের নিউইয়র্ক ঘোষণা, যেখানে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের কথা বলা হয়েছে কিন্তু ইসরায়েলের জন্য দৃঢ় নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেওয়া হয়নি, সরাসরি এই নতুন দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
গাজায় প্রায় দুই বছর ধরে যুদ্ধ চলছে। এতে প্রায় ৬৫ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে এবং গাজা পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তুপে। তথাপি ইসরায়েল মনে করে, নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে হামাসকে পুরোপুরি নির্মূল করতে হবে। জাতিসংঘের প্রস্তাবে হামাসের নিরস্ত্রীকরণের কথা থাকলেও বাস্তবায়নের কোনো কাঠামো নেই। ইসরায়েলের মতে, হামাস টিকে থাকলে— এমনকি যদি দুর্বল অবস্থায়ও থাকে— তাও হিজবুল্লাহ বা ইরানের কাছে বিজয় হিসেবে গণ্য হবে এবং আরও হামলার ঝুঁকি বাড়বে।
তাই ইসরায়েলের কথা হলো, হামাসকে নির্মূল করতে হবে। তাদের কমান্ডার ও যোদ্ধাদের হত্যা, গ্রেপ্তার বা নির্বাসনে পাঠাতে হবে। টানেল নেটওয়ার্ক, অস্ত্রের ভান্ডার ও কারখানা ধ্বংস করতে হবে। উত্তর গাজা ও সীমান্ত এলাকায় ইসরায়েল অনির্দিষ্টকালের জন্য নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখার পরিকল্পনা করেছে, যাতে হামাসের পুনর্গঠন বা নতুন হামলার সুযোগ না থাকে।
আর প্রশাসনিক দায়িত্ব যদি ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ বা আন্তর্জাতিক সংস্থার হাতেও যায়, তবুও নিরাপত্তা বিষয়ে ইসরায়েলের ভেটো ক্ষমতা থাকতে হবে। অবশিষ্ট হুমকি মোকাবিলায় সামরিক অভিযান চালানোর অধিকারও তারা রাখতে চায়।
গাজার মানুষ স্বেচ্ছায় বিদেশে অভিবাসন করতে চাইলেও ইসরায়েল তা সমর্থন করবে। ইসরায়েল বলছে, জরিপে দেখা গেছে, ৩০–৫০ শতাংশ গাজাবাসী সুযোগ পেলে অন্যত্র চলে যেতে রাজি। পরে, হামাস নির্মূল হলে, ইসরায়েলের নিরাপত্তা তত্ত্বাবধানে তারা ফিরতে পারবে।
গাজার জনগণের অর্ধেকের বয়স ১৮ বছরের নিচে। দীর্ঘদিন হামাসের নিয়ন্ত্রিত শিক্ষা ও গণমাধ্যমে বেড়ে উঠেছে তারা। তাই ইসরায়েল দীর্ঘমেয়াদি দর্শনগত সংস্কারের দাবিও করছে। এর মধ্যে থাকবে নতুন পাঠ্যক্রম, সহিংসতা উসকে দেওয়া নেতাদের নিষিদ্ধকরণ এবং সহাবস্থানকে উৎসাহিত করা।
ইসরায়েলের আপত্তি রয়েছে পশ্চিম তীরকে ঘিরেও। তাদের মতে, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ (পিএ) দুর্নীতিগ্রস্ত এবং সন্ত্রাসীদের আর্থিক পুরস্কার দিয়ে থাকে। একসময়কার অসলো চুক্তি, যা দুই রাষ্ট্র সমাধানের নকশা ছিল, এখন ইসরায়েলের চোখে ব্যর্থ। বরং এটি ফিলিস্তিনি প্রত্যাখ্যানবাদকে উৎসাহ দিয়েছে। ২০২৫ সালের মে মাসের এক জরিপে দেখা গেছে, পশ্চিম তীরের প্রায় অর্ধেক ফিলিস্তিনি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য সশস্ত্র সংগ্রামের পক্ষে।
ইসরায়েলের দাবি হলো অভিযান জোরদার করে ‘সন্ত্রাসী’ অবকাঠামো ভাঙতে হবে। এজন্য আরও গভীর সামরিক অভিযান চালানো হবে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় দীর্ঘমেয়াদি উপস্থিতিও বজায় রাখা হবে।
আশেপাশের গুরুত্বপূর্ণ ভূখণ্ডেও নিজের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে চায় ইসরায়েল। এজন্য তারা জর্ডান ভ্যালিতে তাদের আইন প্রয়োগ করতে চায়। এটি ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরের প্রায় ৩০ শতাংশ এলাকা। ইসরায়েল মনে করে, এই অঞ্চল পূর্ব দিক থেকে আসা হুমকির বিরুদ্ধে কৌশলগত ঢাল।
ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের স্বীকৃতি প্রত্যাখ্যান করে ইসরায়েল বলে, দুই রাষ্ট্র সমাধান সম্ভব নয়, যদি না ফিলিস্তিনিরা স্পষ্টভাবে ইসরায়েলকে ইহুদি রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। পাশাপাশি সন্ত্রাসকে ভাষায় ও কাজে প্রত্যাখ্যান করে। নিউইয়র্ক ঘোষণা এসব শর্ত ছাড়াই ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। তাই ইসরায়েল একে চরমপন্থাকে পুরস্কৃত করা হিসেবে দেখছে।
ইসরায়েলের কৌশল কেবল ফিলিস্তিনি অঞ্চলের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এটি আরও বিস্তৃত হুমকি মোকাবিলার ওপর কেন্দ্র করে গঠিত। বিশেষত ইরানকে টার্গেট করা হয়েছে। ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি এবং ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থাকে ইসরায়েল নিজের জন্য অস্তিত্বগত ঝুঁকি হিসেবে দেখে। ২০২৫ সালের জুনে ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা ধ্বংস করার জন্য হামলা চালায়।
ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ, পারমাণবিক অস্ত্রায়ন ও ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদনে স্থায়ী সীমাবদ্ধতা আনতে চায় ইসরায়েল। প্রয়োজন হলে পুনরায় হামলার প্রস্তুতিও রাখে। এ ছাড়া তেহরানের ধর্মীয় শাসন ব্যবস্থাকে বিচ্ছিন্ন করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলোর উপর চাপ সৃষ্টি করতে চায়।
কৌশলগত জোট গড়তে ইসরায়েল আব্রাহাম চুক্তির দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করছে। এতে সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও অন্যান্য দেশের সঙ্গে ইরানবিরোধী সহযোগিতা এবং অর্থনৈতিক সংযোগ যেমন ভারত-মধ্যপ্রাচ্য-ইউরোপ করিডোরকে এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পর্কিত সিরিয়ার রাষ্ট্রপ্রধান আহমেদ আল-শারার সঙ্গেও সম্পর্ক খুব সতর্কতার সঙ্গে গড়ে তুলছে।
অনেক বিশ্লেষক বলেন, ইসরায়েলের লক্ষ্য ‘গ্রেটার ইসরায়েল’ প্রতিষ্ঠা করা। বৃহত্তর ইসরায়েলের ধারণাটি বহুদিন ধরেই অতি ডান বা জায়নবাদী ইসরায়েলিদের মধ্যে আলোচনায় রয়েছে। ইসরায়েলের ভূখণ্ড বাড়িয়ে ফিলিস্তিন, লেবানন ও জর্ডানের পাশাপাশি সিরিয়া, ইরাক, মিসর ও সৌদি আরবের বড় একটি অংশকে অন্তর্ভুক্ত করাই বৃহত্তর ইসরায়েল ধারণাটির মূল লক্ষ্য।
ধারণাটি প্রথম উত্থাপন করেন রাজনৈতিক জায়নবাদের জনক থিওডর হার্তজেল। তিনি তাঁর ডায়েরিতে লিখেছিলেন, ইহুদি রাষ্ট্রের ভূখণ্ড ‘মিসরের সিনাই উপদ্বীপে অবস্থিত ওয়াদি (শুষ্ক নদীর তলদেশ) থেকে ইউফ্রেটিস পর্যন্ত’ বিস্তৃত হওয়া উচিত।
ইসরায়েল নিউইয়র্ক ঘোষণাকে প্রত্যাখ্যান করছে, কারণ তাদের মতে, ছাড় বা সাম্যতা দুর্বলতার সংকেত দেয়। যা আরও সহিংসতা ডেকে আনে। কিন্তু শক্তি দেখালে নতুন মিত্রও আসে। যেমন ৭ অক্টোবরের পর আরব দেশগুলোর সঙ্গে স্থায়ী অংশীদারত্ব গড়ে উঠা সেটাই প্রমাণ করে।
জাতিসংঘের প্রস্তাবে নিরাপত্তা নিশ্চয়তার বদলে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। ইসরায়েলের দৃষ্টিতে এটি সন্ত্রাসের চক্রকে দীর্ঘায়িত করবে। সমালোচকেরা বলেন, এই কৌশল সংঘাত ও মানবিক বিপর্যয়ের ঝুঁকি বাড়ায়। কিন্তু ইসরায়েলের নেতারা নিজ দেশের অস্তিত্ব রক্ষাকে সর্বাগ্রে রাখে।
মূলত, ইসরায়েল চায় এমন একটি মধ্যপ্রাচ্য, যেখানে তার দেশের সীমান্ত নিরাপদ থাকবে, হামাস ও অন্যান্য প্রতিপক্ষ পরাজিত হবে, কোনো শত্রু তাদের অস্তিত্বকে হুমকির মুখে ফেলতে পারবে না। ইসরায়েলের মতে, ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গড়ে উঠতে পারে, কিন্তু শর্ত তাদের হাতে থাকবে। এটি হবে নিরস্ত্রীকৃত, চরমপন্থামুক্ত এবং তাদের স্থায়ী নিরাপত্তা তত্ত্বাবধানে।
সূত্র: আল-জাজিরা, দ্য গার্ডিয়ান, ইউরো নিউজ, ডয়চে ভেলে
প্রতিদিনই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিক্ষোভের ডাক ছড়িয়ে পড়ছে। শিক্ষার্থীরা শুরু থেকেই জনসাধারণের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য ব্যবহার করছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিভিন্ন গ্রুপ। সেখান থেকেই মানুষকে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন তাঁরা। বাংলাদেশের আন্দোলনেও আমরা দেখেছি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ভূমিকা।
১৫ ঘণ্টা আগেদক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের বলকান উপদ্বীপের উত্তর-পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত একটি রাষ্ট্র আলবেনিয়ার। দেশটির প্রধানমন্ত্রী এদি রামা সম্প্রতি তাঁর মন্ত্রিসভায় মন্ত্রী হিসেবে যুক্ত করেছেন ‘ডায়েলা’ নামে একজনকে। স্বাভাবিকভাবে এই নাম ঘোষণা খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার কথা নয়। তবে বিষয়টি খুব সহজভাবে নেওয়ারও উপায় নেই,
১ দিন আগেনেপালের চলমান পরিস্থিতি চীন, ভারত ও পাকিস্তান ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। এর কারণ, নেপালের ভৌগোলিক অবস্থান এবং ইতিহাসে বিভিন্ন শক্তির সঙ্গে ভারসাম্য রক্ষা করার সক্ষমতা।
২ দিন আগেবিশ্বের ক্ষমতার ভারসাম্যে বড় পরিবর্তন ঘটছে। একমেরুকেন্দ্রিক যুগ শেষের পথে। উদীয়মান এক বহুমেরুকেন্দ্রিক বিশ্বব্যবস্থা সামনে আসছে। এখানে একটি বা দুটি শক্তি নয়, বরং কয়েকটি শক্তির কেন্দ্র বৈশ্বিক বিষয়গুলোতে প্রভাব বিস্তার করছে।
৩ দিন আগে