ভ্রাম্যমাণ আদালত এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় গিয়ে বিচারের নামে যা করত, তা ছিল ক্যাঙ্গারুর লাফালাফির মতোই অস্থির। এখান থেকেই ‘ক্যাঙ্গারু কোর্ট’ কথাটির রূপক ব্যবহার শুরু হয়।
স্ট্রিম ডেস্ক

ক্যাঙ্গারু কোর্ট—নামটা শুনলেই মনে কৌতূহল জাগে। আদালত আর ক্যাঙ্গারুর সম্পর্ক কী? আসলে কোনো সম্পর্ক নেই। ক্যাঙ্গারু কোর্ট কথাটি একধরনের রূপক। এর মানে দাঁড়ায় প্রহসনের আদালত। যেখানে নিয়ম-নীতি, প্রমাণ বা ন্যায়বিচারের কোনো জায়গা নেই। যা নামেই আদালত, যেখানে রায় আগে থেকেই ঠিক করা থাকে। বিচারের নামে যেখানে হয় শুধু লোক দেখানো নাটক।
এই রূপকের উৎপত্তি নিয়ে নানা গল্প আছে। এক দল ইতিহাসবিদ বলেন, উনিশ শতকের শুরুতে আমেরিকার সোনার হিড়িক বা গোল্ড রাশ-এর সময় এই রূপক চালু হয়। ওই সময় বহু ‘ট্রাভেলিং জাজ’ বা ভ্রাম্যমাণ বিচারব্যবস্থা গড়ে উঠেছিল। তারা কোনোরকমে আদালত বসিয়ে ক্ষণিকের মধ্যে ‘বিচার’ করত। অভিযোগ আছে, এসব আদালত প্রায়ই সোনার খনির মালিকানা নিয়ে জাল মামলা সাজিয়ে কাউকে দোষী বানিয়ে সম্পত্তি দখল করত।
ভ্রাম্যমাণ ওই আদালত এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় গিয়ে বিচারের নামে যা করত, তা ছিল ক্যাঙ্গারুর লাফালাফির মতোই অস্থির। এখান থেকেই ‘ক্যাঙ্গারু কোর্ট’ কথাটির রূপক ব্যবহার শুরু।
আরেক মত বলে, ক্যাঙ্গারুর পেটে যে পকেট বা থলে থাকে, তার সঙ্গে ঘুষের মিল টানা হয়। অর্থাৎ এই আদালতে টাকা পকেটে ঢুকিয়ে রায় কেনা যেত। যেভাবেই হোক, মূল কথা একটাই। নামমাত্র বিচার হতো, মানা হতো না নিয়ম।
দেশের গ্রামে-গঞ্জে এখনো শালিসের নামে এমন ক্যাঙ্গারু কোর্টের দেখা মেলে। যেখানে প্রভাবশালী কিছু মাতব্বর বিচার করে থাকেন। সেখানে বাদী বা বিবাদীর কোনো আইনজীবী থাকেন না। প্রমাণ যাচাই করা হয় না। সেখানে অনেক সময়ই নিরপরাধ লোককেও শাস্তি পেতে হয় প্রহসনের বিচারে।
নাৎসি জার্মানিতেও ক্যাঙ্গারু কোর্টের ভয়াবহ রূপ ইতিহাসে দেখা গেছে। হিটলারের শাসনে ভল্কসগেরিখটশফ নামে এক বিশেষ আদালত চালু হয়েছিল। বিরোধী নেতাদের জন্য এই আদালত বসানো হতো। শুনানি চলত লোক দেখানোর জন্য। রায় হতো মৃত্যুদণ্ড। এখানে প্রমাণ বা সাক্ষীর কোনো গুরুত্ব ছিল না।
ভারতবর্ষের ব্রিটিশ শাসনেও এমন নজির আছে। ১৯৩১ সালে বাংলায় অনিল রায় নামে এক যুবককে অস্ত্র মামলায় ফাঁসানো হয়। স্থানীয় এক গণশালিসে বিচারের নাটক চলে। সেখানে কোনো আইনজীবী ছিল না, কোনো সত্যিকারের শুনানি হয়নি। পরে উচ্চ আদালতে সেই রায় বাতিল হয়।
ক্যাঙ্গারু কোর্টের চরিত্র সব সময় এক। নিয়মের তোয়াক্কা নেই। বিচার প্রক্রিয়া অস্বচ্ছ। ক্ষমতা আর প্রভাব খাটিয়ে মানুষকে শাস্তি দেওয়া হয়। উদ্দেশ্য হয় অন্যায়ভাবে ভয় দেখানো বা সম্পদ হাতিয়ে নেওয়া।
আমাদের সমাজেও এর ছায়া রয়ে গেছে। পাড়ায় মহল্লায় গণপিটুনি হয়। স্কুলে কোনো শিক্ষক যদি ছাত্রের কথা না শোনেন, তবে শাস্তি পান। অফিসে পক্ষপাতদুষ্ট অভ্যন্তরীণ তদন্ত হয়। এর সবই একধরনের ক্যাঙ্গারু কোর্ট।
আদালত মানুষের শেষ ভরসা। যদি সেই আদালত প্রহসনে পরিণত হয়, তাহলে সাধারণ মানুষ যাবে কোথায়। এ জন্য চাই সঠিক তদন্ত, প্রমাণের গুরুত্ব এবং পক্ষপাতহীন শুনানি।
ক্যাঙ্গারু লাফিয়ে চলে। বিচার যদি লাফিয়ে চলে, তাহলে সমাজে ন্যায়বিচার থাকবে না। নিয়ম আর মানবিকতাই পারে সত্যিকারের আদালতকে ভুয়া বিচার থেকে আলাদা করতে।

ক্যাঙ্গারু কোর্ট—নামটা শুনলেই মনে কৌতূহল জাগে। আদালত আর ক্যাঙ্গারুর সম্পর্ক কী? আসলে কোনো সম্পর্ক নেই। ক্যাঙ্গারু কোর্ট কথাটি একধরনের রূপক। এর মানে দাঁড়ায় প্রহসনের আদালত। যেখানে নিয়ম-নীতি, প্রমাণ বা ন্যায়বিচারের কোনো জায়গা নেই। যা নামেই আদালত, যেখানে রায় আগে থেকেই ঠিক করা থাকে। বিচারের নামে যেখানে হয় শুধু লোক দেখানো নাটক।
এই রূপকের উৎপত্তি নিয়ে নানা গল্প আছে। এক দল ইতিহাসবিদ বলেন, উনিশ শতকের শুরুতে আমেরিকার সোনার হিড়িক বা গোল্ড রাশ-এর সময় এই রূপক চালু হয়। ওই সময় বহু ‘ট্রাভেলিং জাজ’ বা ভ্রাম্যমাণ বিচারব্যবস্থা গড়ে উঠেছিল। তারা কোনোরকমে আদালত বসিয়ে ক্ষণিকের মধ্যে ‘বিচার’ করত। অভিযোগ আছে, এসব আদালত প্রায়ই সোনার খনির মালিকানা নিয়ে জাল মামলা সাজিয়ে কাউকে দোষী বানিয়ে সম্পত্তি দখল করত।
ভ্রাম্যমাণ ওই আদালত এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় গিয়ে বিচারের নামে যা করত, তা ছিল ক্যাঙ্গারুর লাফালাফির মতোই অস্থির। এখান থেকেই ‘ক্যাঙ্গারু কোর্ট’ কথাটির রূপক ব্যবহার শুরু।
আরেক মত বলে, ক্যাঙ্গারুর পেটে যে পকেট বা থলে থাকে, তার সঙ্গে ঘুষের মিল টানা হয়। অর্থাৎ এই আদালতে টাকা পকেটে ঢুকিয়ে রায় কেনা যেত। যেভাবেই হোক, মূল কথা একটাই। নামমাত্র বিচার হতো, মানা হতো না নিয়ম।
দেশের গ্রামে-গঞ্জে এখনো শালিসের নামে এমন ক্যাঙ্গারু কোর্টের দেখা মেলে। যেখানে প্রভাবশালী কিছু মাতব্বর বিচার করে থাকেন। সেখানে বাদী বা বিবাদীর কোনো আইনজীবী থাকেন না। প্রমাণ যাচাই করা হয় না। সেখানে অনেক সময়ই নিরপরাধ লোককেও শাস্তি পেতে হয় প্রহসনের বিচারে।
নাৎসি জার্মানিতেও ক্যাঙ্গারু কোর্টের ভয়াবহ রূপ ইতিহাসে দেখা গেছে। হিটলারের শাসনে ভল্কসগেরিখটশফ নামে এক বিশেষ আদালত চালু হয়েছিল। বিরোধী নেতাদের জন্য এই আদালত বসানো হতো। শুনানি চলত লোক দেখানোর জন্য। রায় হতো মৃত্যুদণ্ড। এখানে প্রমাণ বা সাক্ষীর কোনো গুরুত্ব ছিল না।
ভারতবর্ষের ব্রিটিশ শাসনেও এমন নজির আছে। ১৯৩১ সালে বাংলায় অনিল রায় নামে এক যুবককে অস্ত্র মামলায় ফাঁসানো হয়। স্থানীয় এক গণশালিসে বিচারের নাটক চলে। সেখানে কোনো আইনজীবী ছিল না, কোনো সত্যিকারের শুনানি হয়নি। পরে উচ্চ আদালতে সেই রায় বাতিল হয়।
ক্যাঙ্গারু কোর্টের চরিত্র সব সময় এক। নিয়মের তোয়াক্কা নেই। বিচার প্রক্রিয়া অস্বচ্ছ। ক্ষমতা আর প্রভাব খাটিয়ে মানুষকে শাস্তি দেওয়া হয়। উদ্দেশ্য হয় অন্যায়ভাবে ভয় দেখানো বা সম্পদ হাতিয়ে নেওয়া।
আমাদের সমাজেও এর ছায়া রয়ে গেছে। পাড়ায় মহল্লায় গণপিটুনি হয়। স্কুলে কোনো শিক্ষক যদি ছাত্রের কথা না শোনেন, তবে শাস্তি পান। অফিসে পক্ষপাতদুষ্ট অভ্যন্তরীণ তদন্ত হয়। এর সবই একধরনের ক্যাঙ্গারু কোর্ট।
আদালত মানুষের শেষ ভরসা। যদি সেই আদালত প্রহসনে পরিণত হয়, তাহলে সাধারণ মানুষ যাবে কোথায়। এ জন্য চাই সঠিক তদন্ত, প্রমাণের গুরুত্ব এবং পক্ষপাতহীন শুনানি।
ক্যাঙ্গারু লাফিয়ে চলে। বিচার যদি লাফিয়ে চলে, তাহলে সমাজে ন্যায়বিচার থাকবে না। নিয়ম আর মানবিকতাই পারে সত্যিকারের আদালতকে ভুয়া বিচার থেকে আলাদা করতে।

গত আট দশকে বিশ্বের কোনো বড় শক্তির মধ্যে সরাসরি যুদ্ধ হয়নি। রোমান সাম্রাজ্যের পতনের পর এই কালপর্বকে মানব ইতিহাসের সবচেয়ে দীর্ঘ শান্তির সময় হিসেবে গণ্য হয়। এই শান্তি একদিনে আসেনি—দুটি ভয়াবহ বিশ্বযুদ্ধের রক্তক্ষয়ী অভিজ্ঞতার পর বিশ্ব নেতারা বাধ্য হয়েছিলেন শান্তির প্রয়োজনীয়তা বুঝতে।
১৭ ঘণ্টা আগে
ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য সম্প্রতি দ্বিতীয়বারের মতো ভারতকে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) গত বছর জুলাই-আগস্টের দমন-পীড়নের ঘটনায় হাসিনার অনুপস্থিতিতেই দোষী সাব্যস্ত করে তাঁকে...
১ দিন আগে
সেন্ট মার্টিন্স দ্বীপ, যা নারিকেল জিঞ্জিরা নামেও পরিচিত, বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ। এটি বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত। বহু বছর ধরে এটি অনিয়ন্ত্রিত পর্যটন, জনসংখ্যা বৃদ্ধি, দূষণ এবং প্রাণবৈচিত্র্য হারানোর কারণে পরিবেশগত ঝুঁকির মুখে রয়েছে।
২ দিন আগে
আজ মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) বিকেল ৫টা ২২ মিনিটের দিকে রাজধানীর মহাখালী এলাকার কড়াইল বস্তিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। রাজধানীর কেন্দ্রস্থলে কড়াইল কেবল একটি বস্তি নয়, বরং ঢাকার রাজনৈতিক অর্থনীতির এক পরীক্ষাগার। সরকারি জমিতে জন্মানো এই জনপদ তিন দশকে একটি শক্তিশালী অনানুষ্ঠানিক আবাসনে পরিণত হয়েছে।
২ দিন আগে