বাস্তুচ্যুত তিন হাজার পাঁচ শ পরিবার
স্ট্রিম প্রতিবেদক

হাজারো মুসলমান পরিবারকে ‘অবৈধ অনুপ্রবেশকারী’ হিসেবে চিহ্নিত করে উচ্ছেদের অভিযোগ উঠছে ভারতের আসাম রাজ্যে। বিজেপি শাসিত এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা ঘৃণা ও মেরুকরণের রাজনীতির মাধ্যমে একটি গোষ্ঠীকে বিপদের মুখে ফেলছেন, এমন মনে করছেন রাজ্যটির নাগরিক সমাজের বড় অংশ। আর রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ বলছেন, বিজেপি বরাবর যে ঘৃণার রাজনীতি করে এসেছে, এটা তারই ধারাবাহিকতা। তাঁদের অভিমত হলো, এর পেছনে আর কিছু নয়, কাজ করছে ভোটের রাজনীতি।

এদিকে মুসলমানদের ঘাড়ধাক্কা দেওয়ার পাশাপাশি হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেছেন, ২০৪১ সালের মধ্যে এখানে হিন্দু-মুসলিম জনসংখ্যার অনুপাত সমান সমান হয়ে যাবে। অর্থাৎ ৫০ শতাংশ হিন্দু ও ৫০ শতাংশ মুসলিম। তাঁর এই বক্তব্য শোরগোল ফেলেছে দেশজুড়ে। বিষয়টি নিয়ে সংবাদমাধ্যমেও শুরু হয়েছে জলঘোলা কাণ্ড। বাস্তবতা যখন এমন, তখন সচেতন রাজনৈতিক ভাষ্যকারেরা বলছেন, এসবের মধ্য দিয়ে আসলে ‘অবৈধ অনুপ্রবেশ’ ও মুসলমান সমাজের ‘দ্রুত গতিতে বংশবিস্তার’ তত্ত্বে ধুয়ো দিতে চাইছেন হিমন্ত বিশ্বশর্মা। এখানেই শেষ নয়, বিজেপিশাসিত অন্য রাজ্যগুলোর মতো আসামেও তিনি চাইছেন ‘পুশব্যাক’ রাজনীতির খেলা চালিয়ে যেতে।
আসামের স্থানীয়দের অভিযোগ এমন, চলতি বছরের ২৭ মে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী আসামের বরপেটা জেলার জানিয়া গ্রামের বাসিন্দা করিম আলীকে আসামের দক্ষিণ সালমারা-মানকাচর জেলার সীমান্তবর্তী বাংলাদেশের সর্ব উত্তরে অবস্থিত কুড়িগ্রামের রৌমারিতে ঘাড়ধাক্কা দিয়ে পাঠায়। এরপর ৭০ বছর বয়সী এই বাংলাভাষী বয়োবৃদ্ধ দুই মাস বাংলাদেশে ছিলেন এবং কুড়িগাম জেলার একটি বাড়িতে তিনি আশ্রয় পেয়েছিলেন। পরে আশ্রয়দাতারাই তাঁকে নিজের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে সাহায্য করেন। পরে অনেক কষ্টে ভারতে ফিরে যান তিনি।
এর পরের ঘটনা আরও ভয়াবহ। স্থানীয় সূত্র বলছে, কয়েক সপ্তাহে আসাম থেকে তিন শরও বেশি বাংলাভাষী মুসলমানকে বাংলাদেশে ‘পুশব্যাক’ করা হয়েছে। আসামে তাদের ‘অবৈধ অভিবাসী’ বলে দাবি করা হয়েছিল।

বাংলাদেশের হিসেবে, এ বছরের ৭ মে ভারতে অপরেশন সিঁদুর শুরু হওয়ার পর ১ হাজার ৮ শ ৮০ জনকে ভারত থেকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে ১১০ জনকে বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষীরা ভারতীয় হিসেবে চিহ্নিত করে। মূলত এঁদেরই বাংলাদেশে পুশব্যাক করা হয়েছিল, যাঁদের অনেকেই আসলে আসামের বাসিন্দা।
সম্প্রতি আসামের গোলপাড়া জেলার পাইকান সংরক্ষিত বন এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। ১২ জুলাই থেকে চালানো এ অভিযানে পুলিশের গুলিতে নিহত হন কুতুব উদ্দিন শেখ নামের এক মুসলমান ব্যক্তি। অভিযানে গুরুতর আহত হয়েছেন আরও একজন। আহত ব্যক্তিকে গৌহাটির হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। জানা গেছে, আসাম পুলিশ ও বন বিভাগ যৌথভাবে এ এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছিল। ওয়াকিবহাল মহলের অভিযোগ, ‘অবৈধ বাসিন্দাদের’ সরিয়ে দিতেই নেওয়া হয়েছে এ পদক্ষেপ। বলার কথা হলো, পাইকান এলাকা থেকে যাঁদের উচ্ছেদ করা হচ্ছে, তাঁদের বেশির ভাগই বাংলাভাষী মুসলিম। বহু বছর ধরেই ওই অঞ্চলের বাসিন্দা তাঁরা।
উচ্ছেদ চলতে থাকবে। অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়াও চলবে।হিমন্ত বিশ্ব শর্মা, আসামের মুখ্যমন্ত্রী
ব্রহ্মপুত্র নদীর ভাঙনে গোলপাড়ার ৪৭২টি গ্রাম বিলীন হওয়ায় অনেক পরিবার ঠাঁই নিয়েছিল পাইকান বনে।
সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ওই সংরক্ষিত বনভূমির ১৪০ হেক্টর জমি খালি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আর এ ঘটনায় গৃহহীন হয়ে পড়েছে অন্তত ১ হাজার ৮০টি পরিবার।
তবে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এ উচ্ছেদের ঘটনায় মোটেই বিচলিত নন। নিজের এক্স অ্যাকাউন্টে তিনি লিখেছেন, ‘উচ্ছেদ চলতে থাকবে। আমাদের বনভূমি ও ভূমির ওপর স্থানীয় অধিকার রক্ষার কাজ চলবে। অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়াও চলবে।’

এখন বাস্তুচ্যুত অনেক পরিবারই রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ শুরু করেছে। গত এক মাসে আসামের চারটি জেলায় পাঁচটি বড় বড় উচ্ছেদের ঘটনা ঘটেছে। এর ফলে ৩ হাজার ৫০০ পরিবার হয়েছে ঘরছাড়া। মল্লিকার্জুন খড়গে ও রাহুল গান্ধীর মতো কংগ্রেস নেতারাও বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন। পাশাপাশি প্রশ্ন উঠছে হিমন্ত বিশ্ব শর্মার ৫০-৫০ তত্ত্ব নিয়েও।
২০১১ সালের আসামের আদমশুমারি অনুযায়ী, মুসলিম জনসংখ্যা ছিল ৩৪ শতাংশ। এর মধ্যে ৩১ শতাংশই ‘বহিরাগত’—এমন তথ্য সামনে রেখে আগামী পনেরো বছরের ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। কিন্তু তাঁর এ কথা কতটা যৌক্তিক, তা নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন। বলা ভালো, ২০১১ সালের জনশুমারিতে নাগরিক সমীক্ষা হয়নি। ফলে মুখ্যমন্ত্রীর দাবিমতে, ৩১ শতাংশ বহিরাগতই যে মুসলিম তার কোনো তথ্য-প্রমাণ নেই। এ পরিপ্রেক্ষিতে আসামের সচেতন মানুষেরা বলছেন, মুখ্যমন্ত্রী তাহলে এই ৩১ শতাংশের কথা জোর দিয়ে বলছেন কীভাবে? ইতিহাসের আলোকে তাঁদের ভাষ্য হলো, ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর থেকে বাংলাদেশ থেকে আসামে মানুষজন এসেছেন ঠিকই, তবে তাঁদের কত শতাংশ মুসলিম, সে বিষয়ে কোনো তথ্য এখনও নেই।
তাঁরা আরও বলছেন, ১৯৪৭ সালের আগেও এখানে মুসলমানেরা ছিলেন সংখ্যাগরিষ্ঠ। রাজ্যটি তখন মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বলেই পরিচিত ছিল। কিন্তু দেশভাগের আগে কত শতাংশ মুসলমান এ দেশে ছিলেন আর পরবর্তীকালে কারা এসেছেন, এসবের যেহেতু কোনো নথি নেই, তাহলে রাজ্যটির কত শতাংশ বহিরাগত, আর কারা আগে থেকেই এখানে ছিলেন, তা স্পষ্ট করে জানার আগেই কেন এত বড় দাবি করে বসলেন মুখ্যমন্ত্রী?

হিমন্ত বিশ্ব শর্মার এমন দাবির পেছনে অবশ্য রয়েছে ভোটের রাজনীতির হিসাব-নিকাশ। এ প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গৌহাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের এক অধ্যাপক বলেছেন, ২০২৬ সালের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ অসমিয়া ভোটারদের সমর্থন পেতে বাঙালি মুসলিমদের টার্গেট করা হচ্ছে। আবার আসামের বুদ্ধিজীবী হীরেন গোহাঁইয়ের কথা হলো, হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বাংলাভাষী মুসলমানদের ওপর আক্রমণ বাড়িয়ে অসমীয়া গণমাধ্যমের সাহায্যে অসমীয়া হিন্দু ও আদিবাসীদের মধ্যে বাঙালি মুসলমানদের রাষ্ট্রের শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করছেন। যাতে তাঁর প্রতি বৃহত্তর সমর্থন তৈরি হয়। এটা বিজেপির পুরোনো কৌশল। তবে হীরেন গোহাঁইসহ আসামের অনেক বুদ্ধিজীবীই মনে করেন, এ পরিস্থিতি আগামী নির্বাচনে এ রাজ্যে বিজেপিকে সাহায্য করলেও করতে পারে।
মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার বিরুদ্ধে আগে থেকেই মুসলমানদের প্রতি বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগ রয়েছে। কারণ, বারবারই তিনি দাবি করে এসেছেন, বাঙালি মুসলমানেরা ‘বাংলাদেশ থেকে আসা অনুপ্রবেশকারী’। ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে তিনি বলেন, ‘আমি পক্ষ নেব। এটাই আমার আদর্শ।’ এমনকি মূল্যবৃদ্ধি এবং রাজ্যে বন্যার জন্যও মুসলমানদের দায়ী করেছিলেন বিজেপির এই মুখ্যমন্ত্রী।

হাজারো মুসলমান পরিবারকে ‘অবৈধ অনুপ্রবেশকারী’ হিসেবে চিহ্নিত করে উচ্ছেদের অভিযোগ উঠছে ভারতের আসাম রাজ্যে। বিজেপি শাসিত এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা ঘৃণা ও মেরুকরণের রাজনীতির মাধ্যমে একটি গোষ্ঠীকে বিপদের মুখে ফেলছেন, এমন মনে করছেন রাজ্যটির নাগরিক সমাজের বড় অংশ। আর রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ বলছেন, বিজেপি বরাবর যে ঘৃণার রাজনীতি করে এসেছে, এটা তারই ধারাবাহিকতা। তাঁদের অভিমত হলো, এর পেছনে আর কিছু নয়, কাজ করছে ভোটের রাজনীতি।

এদিকে মুসলমানদের ঘাড়ধাক্কা দেওয়ার পাশাপাশি হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেছেন, ২০৪১ সালের মধ্যে এখানে হিন্দু-মুসলিম জনসংখ্যার অনুপাত সমান সমান হয়ে যাবে। অর্থাৎ ৫০ শতাংশ হিন্দু ও ৫০ শতাংশ মুসলিম। তাঁর এই বক্তব্য শোরগোল ফেলেছে দেশজুড়ে। বিষয়টি নিয়ে সংবাদমাধ্যমেও শুরু হয়েছে জলঘোলা কাণ্ড। বাস্তবতা যখন এমন, তখন সচেতন রাজনৈতিক ভাষ্যকারেরা বলছেন, এসবের মধ্য দিয়ে আসলে ‘অবৈধ অনুপ্রবেশ’ ও মুসলমান সমাজের ‘দ্রুত গতিতে বংশবিস্তার’ তত্ত্বে ধুয়ো দিতে চাইছেন হিমন্ত বিশ্বশর্মা। এখানেই শেষ নয়, বিজেপিশাসিত অন্য রাজ্যগুলোর মতো আসামেও তিনি চাইছেন ‘পুশব্যাক’ রাজনীতির খেলা চালিয়ে যেতে।
আসামের স্থানীয়দের অভিযোগ এমন, চলতি বছরের ২৭ মে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী আসামের বরপেটা জেলার জানিয়া গ্রামের বাসিন্দা করিম আলীকে আসামের দক্ষিণ সালমারা-মানকাচর জেলার সীমান্তবর্তী বাংলাদেশের সর্ব উত্তরে অবস্থিত কুড়িগ্রামের রৌমারিতে ঘাড়ধাক্কা দিয়ে পাঠায়। এরপর ৭০ বছর বয়সী এই বাংলাভাষী বয়োবৃদ্ধ দুই মাস বাংলাদেশে ছিলেন এবং কুড়িগাম জেলার একটি বাড়িতে তিনি আশ্রয় পেয়েছিলেন। পরে আশ্রয়দাতারাই তাঁকে নিজের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে সাহায্য করেন। পরে অনেক কষ্টে ভারতে ফিরে যান তিনি।
এর পরের ঘটনা আরও ভয়াবহ। স্থানীয় সূত্র বলছে, কয়েক সপ্তাহে আসাম থেকে তিন শরও বেশি বাংলাভাষী মুসলমানকে বাংলাদেশে ‘পুশব্যাক’ করা হয়েছে। আসামে তাদের ‘অবৈধ অভিবাসী’ বলে দাবি করা হয়েছিল।

বাংলাদেশের হিসেবে, এ বছরের ৭ মে ভারতে অপরেশন সিঁদুর শুরু হওয়ার পর ১ হাজার ৮ শ ৮০ জনকে ভারত থেকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে ১১০ জনকে বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষীরা ভারতীয় হিসেবে চিহ্নিত করে। মূলত এঁদেরই বাংলাদেশে পুশব্যাক করা হয়েছিল, যাঁদের অনেকেই আসলে আসামের বাসিন্দা।
সম্প্রতি আসামের গোলপাড়া জেলার পাইকান সংরক্ষিত বন এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। ১২ জুলাই থেকে চালানো এ অভিযানে পুলিশের গুলিতে নিহত হন কুতুব উদ্দিন শেখ নামের এক মুসলমান ব্যক্তি। অভিযানে গুরুতর আহত হয়েছেন আরও একজন। আহত ব্যক্তিকে গৌহাটির হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। জানা গেছে, আসাম পুলিশ ও বন বিভাগ যৌথভাবে এ এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছিল। ওয়াকিবহাল মহলের অভিযোগ, ‘অবৈধ বাসিন্দাদের’ সরিয়ে দিতেই নেওয়া হয়েছে এ পদক্ষেপ। বলার কথা হলো, পাইকান এলাকা থেকে যাঁদের উচ্ছেদ করা হচ্ছে, তাঁদের বেশির ভাগই বাংলাভাষী মুসলিম। বহু বছর ধরেই ওই অঞ্চলের বাসিন্দা তাঁরা।
উচ্ছেদ চলতে থাকবে। অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়াও চলবে।হিমন্ত বিশ্ব শর্মা, আসামের মুখ্যমন্ত্রী
ব্রহ্মপুত্র নদীর ভাঙনে গোলপাড়ার ৪৭২টি গ্রাম বিলীন হওয়ায় অনেক পরিবার ঠাঁই নিয়েছিল পাইকান বনে।
সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ওই সংরক্ষিত বনভূমির ১৪০ হেক্টর জমি খালি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আর এ ঘটনায় গৃহহীন হয়ে পড়েছে অন্তত ১ হাজার ৮০টি পরিবার।
তবে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এ উচ্ছেদের ঘটনায় মোটেই বিচলিত নন। নিজের এক্স অ্যাকাউন্টে তিনি লিখেছেন, ‘উচ্ছেদ চলতে থাকবে। আমাদের বনভূমি ও ভূমির ওপর স্থানীয় অধিকার রক্ষার কাজ চলবে। অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়াও চলবে।’

এখন বাস্তুচ্যুত অনেক পরিবারই রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ শুরু করেছে। গত এক মাসে আসামের চারটি জেলায় পাঁচটি বড় বড় উচ্ছেদের ঘটনা ঘটেছে। এর ফলে ৩ হাজার ৫০০ পরিবার হয়েছে ঘরছাড়া। মল্লিকার্জুন খড়গে ও রাহুল গান্ধীর মতো কংগ্রেস নেতারাও বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন। পাশাপাশি প্রশ্ন উঠছে হিমন্ত বিশ্ব শর্মার ৫০-৫০ তত্ত্ব নিয়েও।
২০১১ সালের আসামের আদমশুমারি অনুযায়ী, মুসলিম জনসংখ্যা ছিল ৩৪ শতাংশ। এর মধ্যে ৩১ শতাংশই ‘বহিরাগত’—এমন তথ্য সামনে রেখে আগামী পনেরো বছরের ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। কিন্তু তাঁর এ কথা কতটা যৌক্তিক, তা নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন। বলা ভালো, ২০১১ সালের জনশুমারিতে নাগরিক সমীক্ষা হয়নি। ফলে মুখ্যমন্ত্রীর দাবিমতে, ৩১ শতাংশ বহিরাগতই যে মুসলিম তার কোনো তথ্য-প্রমাণ নেই। এ পরিপ্রেক্ষিতে আসামের সচেতন মানুষেরা বলছেন, মুখ্যমন্ত্রী তাহলে এই ৩১ শতাংশের কথা জোর দিয়ে বলছেন কীভাবে? ইতিহাসের আলোকে তাঁদের ভাষ্য হলো, ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর থেকে বাংলাদেশ থেকে আসামে মানুষজন এসেছেন ঠিকই, তবে তাঁদের কত শতাংশ মুসলিম, সে বিষয়ে কোনো তথ্য এখনও নেই।
তাঁরা আরও বলছেন, ১৯৪৭ সালের আগেও এখানে মুসলমানেরা ছিলেন সংখ্যাগরিষ্ঠ। রাজ্যটি তখন মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বলেই পরিচিত ছিল। কিন্তু দেশভাগের আগে কত শতাংশ মুসলমান এ দেশে ছিলেন আর পরবর্তীকালে কারা এসেছেন, এসবের যেহেতু কোনো নথি নেই, তাহলে রাজ্যটির কত শতাংশ বহিরাগত, আর কারা আগে থেকেই এখানে ছিলেন, তা স্পষ্ট করে জানার আগেই কেন এত বড় দাবি করে বসলেন মুখ্যমন্ত্রী?

হিমন্ত বিশ্ব শর্মার এমন দাবির পেছনে অবশ্য রয়েছে ভোটের রাজনীতির হিসাব-নিকাশ। এ প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গৌহাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের এক অধ্যাপক বলেছেন, ২০২৬ সালের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ অসমিয়া ভোটারদের সমর্থন পেতে বাঙালি মুসলিমদের টার্গেট করা হচ্ছে। আবার আসামের বুদ্ধিজীবী হীরেন গোহাঁইয়ের কথা হলো, হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বাংলাভাষী মুসলমানদের ওপর আক্রমণ বাড়িয়ে অসমীয়া গণমাধ্যমের সাহায্যে অসমীয়া হিন্দু ও আদিবাসীদের মধ্যে বাঙালি মুসলমানদের রাষ্ট্রের শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করছেন। যাতে তাঁর প্রতি বৃহত্তর সমর্থন তৈরি হয়। এটা বিজেপির পুরোনো কৌশল। তবে হীরেন গোহাঁইসহ আসামের অনেক বুদ্ধিজীবীই মনে করেন, এ পরিস্থিতি আগামী নির্বাচনে এ রাজ্যে বিজেপিকে সাহায্য করলেও করতে পারে।
মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার বিরুদ্ধে আগে থেকেই মুসলমানদের প্রতি বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগ রয়েছে। কারণ, বারবারই তিনি দাবি করে এসেছেন, বাঙালি মুসলমানেরা ‘বাংলাদেশ থেকে আসা অনুপ্রবেশকারী’। ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে তিনি বলেন, ‘আমি পক্ষ নেব। এটাই আমার আদর্শ।’ এমনকি মূল্যবৃদ্ধি এবং রাজ্যে বন্যার জন্যও মুসলমানদের দায়ী করেছিলেন বিজেপির এই মুখ্যমন্ত্রী।

এক হতে যাচ্ছে কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক প্রভাবশালী রাজনৈতিক দল জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ। বিভক্ত দুই অংশ বিরোধ মিটিয়ে দ্রুতই মিলে যেতে পারে বলে স্ট্রিমকে জানিয়েছেন দলটির শীর্ষ নেতারা।
৮ দিন আগে
চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানাধীন শুলকবহর এলাকায় অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী তফাজ্জল আলী ওয়াকফ এস্টেট ঘিরে দুটি পরিবারের বিরোধ তীব্র আকার ধারণ করেছে। ১৯১৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এই ওয়াকফ সম্পত্তিকে কেন্দ্র করে একপক্ষ দাবি করছে, তাঁরা যথাযথ অনুমোদন ও ওয়াকফ প্রশাসনের সুপারিশ অনুযায়ী এস্টেটের দায়িত্বে গ্রহণ করতে চান।
১৭ দিন আগে
পরিবার একটি, তবে তাঁদের মালিকানায় আছে দেশের দুটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সমর্থনপুষ্ট পরিবারটির কয়েক সদস্য গত বছরের ৫ আগস্টের পর দেশ ছেড়েছেন। যাঁদের মধ্যে আছেন এই দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যানও।
২১ দিন আগে
প্রভাব খাটিয়ে গত এক যুগে আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠরা ৬১টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বাগিয়ে নিয়েছেন। এর মধ্যে ৪৫টিই রাজধানীর বাইরে, ২৬ জেলায়। এক জেলায় একাধিক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ও অনুমোদন দিয়েছে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার।
২৩ দিন আগে