সরকার নির্ধারিত মজুরি
বছরের পর বছর যায়, বেসরকারি খাতে সরকারের পক্ষ থেকে মজুরির হার হালনাগাদ করা হয় না। অন্যদিকে স্বাধীনতার পর সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য আট দফায় নতুন বেতন স্কেল ঘোষণা করা হয়। আরও একটি পে-স্কেল ঘোষণার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
ফারুক হোসাইন
রাজধানীর পশ্চিম শেওড়াপাড়ার সোবাহান ফিলিং অ্যান্ড সার্ভিসিং স্টেশন। ভরদুপুরে সেখানে তিনজন কর্মচারী জ্বালানি তেল বিক্রি করছেন। কাজের ফাঁকে কড়া রোদে দাঁড়িয়ে তাঁরা জানালেন, দিনে টানা আট ঘণ্টা কাজ করতে হয়। এত চাপ থাকে যে বসার ফুরসত পাওয়া যায় না। বড় ধরনের প্রয়োজন ছাড়া ছুটিও মেলে না। কিন্তু তাদের বেতন মোটে ১০ হাজার টাকা।
তিনজনের একজন হুসাইন মুশতাক (১৭)। পাবনার সুজানগর উপজেলার এই কিশোর স্ট্রিমকে বলেন, ‘গত মে মাসে ঢাকায় আইসা এইখানে কাজ শুরু করছি। মাসে যে কয়টাকা বেতন পাই, থাকা–খাওয়াতেই শেষ হয়ে যায়। এত খাটাখাটনি করতে হয়, কিন্তু বেতন অল্প। সরকার কি এইসব দেখে না।’
মুশতাকের কথার সূত্র ধরে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, সরকারের পক্ষ থেকে পেট্রোল পাম্পের শ্রমিকদের মজুরির হার নির্ধারণ করে দেওয়া আছে। তবে তা করা হয়েছে ১৯৮৭ সালে। প্রতি পাঁচ বছর পর পর এই হার হালনাগাদ করার আইন থাকলেও পেট্রোল পাম্পসহ অন্তত ১৬টি খাতে আইন মানেনি নিম্নতম মজুরি বোর্ড।
সরকারের পক্ষ থেকে এই বোর্ডই বেসরকারি খাতের শ্রমিকদের বেতন নির্ধারণের দায়িত্বে নিয়োজিত। বোর্ডের তালিকা অনুযায়ী, পেট্রোল পাম্প কর্মচারীদের সরকার নির্ধারিত মাসিক মজুরি ৫৬০ টাকা। অর্থাৎ তাঁদের দৈনিক আয় হবে ১৮ দশমিক ৬৬ টাকা মাত্র।
‘ব্যক্তিমালিকানাধীন শিল্প প্রতিষ্ঠানে নিযুক্ত সকল শ্রেণির শ্রমিকের জন্য সরকার কর্তৃক ঘোষিত মজুরি হার’ শিরোনামে নিম্নতম মজুরি বোর্ডের তালিকা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, পেট্রোল পাম্পের শ্রমিকদের মূল বেতনের সঙ্গে ১১২ টাকা বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা ভাতা ১০০ টাকা ও ২০ টাকা যাতায়াত ভাড়াসহ পেট্রোল পাম্প শ্রমিকদের বেতন আসে সর্বসাকুল্যে ৭৯২ টাকা।
সরকারের নির্ধারিত যে মজুরি, একজন শ্রমিকের যাতায়াতেই তা লেগে যায়। এখন দিনমজুরকেই ৫০০ টাকা দিতে হয়। ওই টাকায় কে কাজ করবে? আমরা শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন দিই সর্বনিম্ন ১০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত। এরপরেও অনেকে থাকে না। সৈয়দ সাজ্জাদুল করিম কাবুল, যুগ্ম আহ্বায়ক, বাংলাদেশ পেট্রোল পাম্প ও ট্যাংকলরি মালিক ঐক্য পরিষদ
পেট্রোল পাম্প ছাড়া আরও ৪২টি ব্যক্তিমালিকানাধীন বেসরকারি খাতের শ্রমিকদের বেতন নির্ধারণ করেছে এই বোর্ড। কিন্তু নির্ধারিত কোন খাতের মজুরি বর্তমান বাজারের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয় বলে মন্তব্য করেছেন অর্থনীতিবিদ মোস্তাফিজুর রহমান।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর স্ট্রিমকে বলেন, সরকারি তালিকায় নির্ধারিত মজুরিটা বর্তমান বাজারের উপযুক্ত নয়। সময়মতো মজুরি পুননির্ধারণ না করার কারণে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকেরা কম বেতন দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন।
অবশ্য নিম্নতম মজুরি বোর্ড বলছে, তারা বেসরকারি খাতে বেতন-ভাতা পুনর্নির্ধারণের কাজ করছে। বোর্ডের সচিব রাইসা আফরোজ স্ট্রিমকে বলেন, বেসরকারি খাতের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে নির্ধারণ করা বেতন-ভাতার তালিকা ওয়েবসাইটে দেওয়া আছে। এগুলোর মধ্যে অনেকগুলো পুরোনো। সেগুলো নিয়ে কাজ চলছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য বলছে, ২০২৪ সাল পর্যন্ত দেশের মোট শ্রমশক্তি ৬ কোটি ৯১ লাখ ১০ হাজার। এই শ্রমশক্তির ৮৫ শতাংশই বেসরকারি খাতের। ২০০৬ সালের শ্রম আইন অনুযায়ী, খাতভিত্তিক ন্যূনতম মজুরির হার প্রতি ৫ বছর পরপর পুননির্ধারণ করতে হবে।
কিন্তু পেট্রোল পাম্প শ্রমিকদের ৫৬০ টাকা মাসিক হারে মজুরি নির্ধারণ করার সময় অর্থাৎ ১৯৮৭ সালে সরকারি চাকরিজীবীরা বেতন পেতেন তৃতীয় পে স্কেলে। এই স্কেল নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৯৮৫ সালে। তখন সরকারি কর্মচারীদের ন্যূনতম বেতন ছিল ৫০০ টাকা, সর্বসাকুল্যে যা ছিল ৮৬০ টাকা।
সময়ের সাথে মানসম্মত জীবনযাপন এবং পরিবারের মৌলিক অধিকার নিশ্চিতে যে পরিমাণ ন্যূনতম মজুরি প্রয়োজন, সেটি যেন নিশ্চিত করা হয়। ৬ কিংবা ৮ হাজার টাকায় শ্রমিকদের পরিবার নিয়ে জীবনধারণ করা সম্ভব না। সরকারকে আমাদের সুপারিশগুলো বাস্তবায়নে দ্রুত উদ্যোগ নেওয়া উচিত।আরিফুল ইসলাম, সদস্য, শ্রম সংস্কার কমিশন
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য পরে পাঁচদফায় তথা—১৯৯১, ১৯৯৭, ২০০৫, ২০০৯ ও ২০১৫ সালে নতুন নতুন পে-স্কেল ঘোষণা করে সরকার। ২০১৫ সালের পে-স্কেল অনুযায়ী, সরকারি কর্মচারীরা এখন সর্বনিম্ন ১৬ হাজার ৯৫০ টাকা (বিভিন্ন ভাতাসহ) বেতন পান। তাঁদের জন্য আরেকটি পে-স্কেল ঘোষণা করার পরিকল্পনাও নিয়েছে সরকার।
গত ১০ বছরে পুনর্নির্ধারণ করা হয়নি এমন অন্তত আটটি খাত আছে নিম্নতম মজুরি বোর্ডের তালিকায়। ব্যক্তিমালিকানাধীন শিল্প প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত অদক্ষ শ্রমিকদের বেতন সবশেষ ২০১২ সালে পুনর্নির্ধারণ করা হয়। সে অনুযায়ী তাঁদের মূল বেতন ১ হাজার ৫০০ টাকা। বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা ও যাতায়াত ভাতাসহ যা সর্বসাকুল্যে ২ হাজার ৫০০ টাকা।
জাতীয়ভাবে বেসরকারি চাকরিজীবীদের জন্য ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণের প্রয়োজনীয়তার কথা বলছেন অর্থনীতিবিদ ও গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। তিনি স্ট্রিমকে বলেন, ‘বেসরকারি শ্রমিক-কর্মচারীদের জন্য আগে একটা ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করে দিতে হবে। কিন্তু সরকার এটা এখনও করছে না। ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণের পর খাতভিত্তিক মজুরি নির্ধারণ করা যেতে পারে। তবে মজুরি নির্ধারণ করতে হবে মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে।’
পেট্রোল পাম্প কিংবা পাটকলে কর্মরতরা সরকার নির্ধারিত এই মজুরির কথা জানেন না। আবার মালিকেরাও বলছেন, বর্তমান বাজারে ওই মজুরিতে কেউ চাকরি করবেন না।
রাজধানী ঢাকাসহ দেশের কয়েকটি এলাকার পেট্রোল পাম্পের কর্মচারীর সঙ্গে কথা বলেছে স্ট্রিম। তাঁরা কেউ কেউ ৬ হাজার টাকা, কেউ আবার ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন পান। তবে এরপরেও বর্তমান বাজারে তাঁদের জীবন নির্বাহ করতে হিমশিম খেতে হয়। তাঁরা বলছেন, যে পরিমাণ পরিশ্রম করতে হয়, পারিশ্রমিকের হার ততটা নয়।
যশোর জেলা শহরের মফিজ ফিলিং স্টেশনের কর্মচারী মো. আশিকুজ্জামান জানান, কখনও কখনও তাঁকে সকাল সাতটা থেকে বিকেল তিনটা, আবার কখনও বিকেল তিনটা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত কাজ করতে হয়। সাপ্তাহিক ছুটিও পান না। তিনি বলেন, ‘চাকরির এই আয় দিয়ে সংসার চলে না। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে সংসার চালাতে কষ্ট হয়।’
জানতে চাইলে বাংলাদেশ পেট্রোল পাম্প ও ট্যাংকলরি মালিক ঐক্য পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক সৈয়দ সাজ্জাদুল করিম কাবুল স্ট্রিমকে বলেন, সরকারের নির্ধারিত যে মজুরি, একজন শ্রমিকের যাতায়াতেই তা খরচ হয়ে যায়। এখন দিনমজুরকেই ৫০০ টাকা দিতে হয়। ওই টাকায় কে কাজ করবে? আমরা শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন দিই সর্বনিম্ন ১০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত। এরপরেও অনেকে থাকে না।
সর্বশেষ ২০১৫ সালে সরকারি চাকরিজীবীদের বেতনস্কেল বাড়ানো হয়। গত বছর অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর ১৫ লাখ সরকারি চাকরিজীবীর জন্য মহার্ঘ্য ভাতা দেওয়ার বিষয়টি আলোচনায় আসে। চলতি অর্থবছরের বাজেটে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিশেষ সুবিধা দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়।
সে হিসেবে চলতি বছরের ১ জুলাই থেকে বেতন গ্রেড ভেদে গ্রেড-১ ও তদূর্ধ্ব থেকে গ্রেড-৯ পর্যন্ত ১০ শতাংশ এবং গ্রেড-১০ থেকে গ্রেড-২০ পর্যন্ত ১৫ শতাংশ হারে ‘বিশেষ সুবিধা’ পাচ্ছেন সরকারি চাকরিজীবীরা।
পাশাপাশি সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য নতুন বেতনকাঠামো করতে পে কমিশন গঠন করেছে সরকার। গত বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পে-কমিশন গঠন করা হয়। সাবেক অর্থসচিব জাকির আহমেদ খানকে প্রধান করে গঠিত এই পে কমিশনকে ছয় মাসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
বেসরকারি চাকরিজীবীদের জন্য আগে একটা ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করে দিতে হবে। কিন্তু সরকার এটা এখনও করছে না। ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণের পর খাতভিত্তিক মজুরি নির্ধারণ করা যেতে পারে। তবে ন্যূনতম মজুরি অবশ্যই মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দিতে হবে এবং সেটা যেন দারিদ্র্যসীমার ওপরে হয়। অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, অর্থনীতিবিদ ও সদস্য, গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি
শ্রমিকদের নায্যতা নিশ্চিতে শ্রম সংস্কার কমিশন করেছিল অন্তর্বর্তী সরকার। ওই কমিশন গত ২১ এপ্রিল প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে প্রতিবেদন জমা দেয়। কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিম্নতম মজুরি বোর্ড নির্ধারিত বেসরকারি খাতের ৪৩টির মধ্যে ২২টিতে এমন বেতন নির্ধারিত আছে, যা দারিদ্র্যসীমার নিচে।
এমন পরিস্থিতিতে খাত বা কাজের ধরন নির্বিশেষে সকল শ্রমিকের জন্য প্রযোজ্য একটি জাতীয় ন্যূনতম মজুরি প্রবর্তনের সুপারিশ করেছে কমিশন। মূল্যস্ফীতি ও জীবনযাত্রার ব্যয় বিবেচনায় নিয়ে প্রতি তিন বছর অন্তর অন্তর জাতীয় এবং খাতভিত্তিক মজুরি ব্যবস্থা সংশোধন করার সুপারিশও করেছে শ্রম সংস্কার কমিশন।
শ্রম সংস্কার কমিশনের সদস্য আরিফুল ইসলাম স্ট্রিমকে বলেন, সব ধরনের শ্রমিক ও মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সুপারিশ দাঁড় করানো হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক দলগুলোও এসব দাবি জানিয়েছে। সময়ের সাথে মানসম্মত জীবনযাপন এবং পরিবারের মৌলিক অধিকার নিশ্চিতে যে পরিমাণ ন্যূনতম মজুরি প্রয়োজন, সেটি যেন নিশ্চিত করা হয়।
তিনি বলেন, ‘৬ কিংবা ৮ হাজার টাকায় শ্রমিকদের পরিবার নিয়ে জীবনধারণ করা সম্ভব না। সরকারকে আমাদের সুপারিশগুলো বাস্তবায়নে দ্রুত উদ্যোগ নিতে হবে। রাজনৈতিক দল ও অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে এটি বাস্তবায়নের দিকে যেতে হবে।’
আয়রন ফাউন্ড্রি অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপের শ্রমিকেরা মাসে ২ হাজার ৬০০ টাকা ও কর্মচারীরা ৩ হাজার টাকা বেতন পান। ২০১০ সালে নির্ধারিত এ মজুরি অনুযায়ী তাঁদের বেতন সর্বসাকুল্যে আসে যথাক্রমে ৪ হাজার ২৪০ ও ৪ হাজার ৮০০ টাকা।
একই বছর তেল কারখানা ও ভেজিটেবল প্রোডাক্টসে কর্মরতদের বেতন-ভাতাও নির্ধারণ করে দেয় নিম্নতম মজুরি বোর্ড। এসব কারখানার শ্রমিকেরা ৪ হাজার ৮০০ টাকা ও কর্মচারীরা ২ হাজার ৫০০ টাকা হারে বেতন পান। সর্বসাকুল্যে তাঁদের বেতন আসে যথাক্রমে ৭ হাজার ৪২০ টাকা ও ৪ হাজার ২০০ টাকা। ২০১৩ সালে নির্ধারিত দিয়াশলাই কারখানার শ্রমিক-কর্মচারীদের মূল বেতন এখন ২ হাজার ৮০০ টাকা। সবমিলিয়ে এই বেতন ৪ হাজার ৫৬০ টাকা।
লবন প্রস্তুতকারক কারখানার শ্রমিকদের মজুরি সর্বশেষ নির্ধারণ করে দেওয়া হয় ২০১১ সালে। সরকার নির্ধারিত মজুরি অনুযায়ী, শ্রমিকেরা মাসে বেতন পাবেন ১ হাজার ৮৫০ টাকা, সর্বসাকুল্যে তা তিন হাজার টাকা।
২০১৪ সালে পাটজাত পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণে নিয়োজিত শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন নির্ধারণ করে দেয় সরকার। এসব কারখানার শ্রমিক-কর্মচারীরা ২ হাজার ৮০০ টাকা হারে বেতন পান। তাঁদের বেতন সর্বসাকুল্যে ৪ হাজার ৮৫০ টাকা। টাইপ ফাউন্ড্রি সংক্রান্ত কাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের বেতন সর্বশেষ ১৯৮৩ সালে নির্ধারণ করা হয়। তাঁদের মূল বেতন ৩২০ টাকা, সর্বসাকুল্যে যা ৫২১ টাকা।
সরকারি তালিকায় ৪৭টি বেসরকারি খাতের কথা উল্লেখ রয়েছে। এর মধ্যে ৪৩টির বেতন কাঠামো নির্ধারণ করা আছে। সিরামিক, পোল্ট্রি, ব্যাটারি প্রস্তুতকারক এবং রং ও কেমিকেল কারখানার শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা নির্ধারণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
রাজধানীর পশ্চিম শেওড়াপাড়ার সোবাহান ফিলিং অ্যান্ড সার্ভিসিং স্টেশন। ভরদুপুরে সেখানে তিনজন কর্মচারী জ্বালানি তেল বিক্রি করছেন। কাজের ফাঁকে কড়া রোদে দাঁড়িয়ে তাঁরা জানালেন, দিনে টানা আট ঘণ্টা কাজ করতে হয়। এত চাপ থাকে যে বসার ফুরসত পাওয়া যায় না। বড় ধরনের প্রয়োজন ছাড়া ছুটিও মেলে না। কিন্তু তাদের বেতন মোটে ১০ হাজার টাকা।
তিনজনের একজন হুসাইন মুশতাক (১৭)। পাবনার সুজানগর উপজেলার এই কিশোর স্ট্রিমকে বলেন, ‘গত মে মাসে ঢাকায় আইসা এইখানে কাজ শুরু করছি। মাসে যে কয়টাকা বেতন পাই, থাকা–খাওয়াতেই শেষ হয়ে যায়। এত খাটাখাটনি করতে হয়, কিন্তু বেতন অল্প। সরকার কি এইসব দেখে না।’
মুশতাকের কথার সূত্র ধরে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, সরকারের পক্ষ থেকে পেট্রোল পাম্পের শ্রমিকদের মজুরির হার নির্ধারণ করে দেওয়া আছে। তবে তা করা হয়েছে ১৯৮৭ সালে। প্রতি পাঁচ বছর পর পর এই হার হালনাগাদ করার আইন থাকলেও পেট্রোল পাম্পসহ অন্তত ১৬টি খাতে আইন মানেনি নিম্নতম মজুরি বোর্ড।
সরকারের পক্ষ থেকে এই বোর্ডই বেসরকারি খাতের শ্রমিকদের বেতন নির্ধারণের দায়িত্বে নিয়োজিত। বোর্ডের তালিকা অনুযায়ী, পেট্রোল পাম্প কর্মচারীদের সরকার নির্ধারিত মাসিক মজুরি ৫৬০ টাকা। অর্থাৎ তাঁদের দৈনিক আয় হবে ১৮ দশমিক ৬৬ টাকা মাত্র।
‘ব্যক্তিমালিকানাধীন শিল্প প্রতিষ্ঠানে নিযুক্ত সকল শ্রেণির শ্রমিকের জন্য সরকার কর্তৃক ঘোষিত মজুরি হার’ শিরোনামে নিম্নতম মজুরি বোর্ডের তালিকা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, পেট্রোল পাম্পের শ্রমিকদের মূল বেতনের সঙ্গে ১১২ টাকা বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা ভাতা ১০০ টাকা ও ২০ টাকা যাতায়াত ভাড়াসহ পেট্রোল পাম্প শ্রমিকদের বেতন আসে সর্বসাকুল্যে ৭৯২ টাকা।
সরকারের নির্ধারিত যে মজুরি, একজন শ্রমিকের যাতায়াতেই তা লেগে যায়। এখন দিনমজুরকেই ৫০০ টাকা দিতে হয়। ওই টাকায় কে কাজ করবে? আমরা শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন দিই সর্বনিম্ন ১০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত। এরপরেও অনেকে থাকে না। সৈয়দ সাজ্জাদুল করিম কাবুল, যুগ্ম আহ্বায়ক, বাংলাদেশ পেট্রোল পাম্প ও ট্যাংকলরি মালিক ঐক্য পরিষদ
পেট্রোল পাম্প ছাড়া আরও ৪২টি ব্যক্তিমালিকানাধীন বেসরকারি খাতের শ্রমিকদের বেতন নির্ধারণ করেছে এই বোর্ড। কিন্তু নির্ধারিত কোন খাতের মজুরি বর্তমান বাজারের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয় বলে মন্তব্য করেছেন অর্থনীতিবিদ মোস্তাফিজুর রহমান।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর স্ট্রিমকে বলেন, সরকারি তালিকায় নির্ধারিত মজুরিটা বর্তমান বাজারের উপযুক্ত নয়। সময়মতো মজুরি পুননির্ধারণ না করার কারণে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকেরা কম বেতন দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন।
অবশ্য নিম্নতম মজুরি বোর্ড বলছে, তারা বেসরকারি খাতে বেতন-ভাতা পুনর্নির্ধারণের কাজ করছে। বোর্ডের সচিব রাইসা আফরোজ স্ট্রিমকে বলেন, বেসরকারি খাতের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে নির্ধারণ করা বেতন-ভাতার তালিকা ওয়েবসাইটে দেওয়া আছে। এগুলোর মধ্যে অনেকগুলো পুরোনো। সেগুলো নিয়ে কাজ চলছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য বলছে, ২০২৪ সাল পর্যন্ত দেশের মোট শ্রমশক্তি ৬ কোটি ৯১ লাখ ১০ হাজার। এই শ্রমশক্তির ৮৫ শতাংশই বেসরকারি খাতের। ২০০৬ সালের শ্রম আইন অনুযায়ী, খাতভিত্তিক ন্যূনতম মজুরির হার প্রতি ৫ বছর পরপর পুননির্ধারণ করতে হবে।
কিন্তু পেট্রোল পাম্প শ্রমিকদের ৫৬০ টাকা মাসিক হারে মজুরি নির্ধারণ করার সময় অর্থাৎ ১৯৮৭ সালে সরকারি চাকরিজীবীরা বেতন পেতেন তৃতীয় পে স্কেলে। এই স্কেল নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৯৮৫ সালে। তখন সরকারি কর্মচারীদের ন্যূনতম বেতন ছিল ৫০০ টাকা, সর্বসাকুল্যে যা ছিল ৮৬০ টাকা।
সময়ের সাথে মানসম্মত জীবনযাপন এবং পরিবারের মৌলিক অধিকার নিশ্চিতে যে পরিমাণ ন্যূনতম মজুরি প্রয়োজন, সেটি যেন নিশ্চিত করা হয়। ৬ কিংবা ৮ হাজার টাকায় শ্রমিকদের পরিবার নিয়ে জীবনধারণ করা সম্ভব না। সরকারকে আমাদের সুপারিশগুলো বাস্তবায়নে দ্রুত উদ্যোগ নেওয়া উচিত।আরিফুল ইসলাম, সদস্য, শ্রম সংস্কার কমিশন
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য পরে পাঁচদফায় তথা—১৯৯১, ১৯৯৭, ২০০৫, ২০০৯ ও ২০১৫ সালে নতুন নতুন পে-স্কেল ঘোষণা করে সরকার। ২০১৫ সালের পে-স্কেল অনুযায়ী, সরকারি কর্মচারীরা এখন সর্বনিম্ন ১৬ হাজার ৯৫০ টাকা (বিভিন্ন ভাতাসহ) বেতন পান। তাঁদের জন্য আরেকটি পে-স্কেল ঘোষণা করার পরিকল্পনাও নিয়েছে সরকার।
গত ১০ বছরে পুনর্নির্ধারণ করা হয়নি এমন অন্তত আটটি খাত আছে নিম্নতম মজুরি বোর্ডের তালিকায়। ব্যক্তিমালিকানাধীন শিল্প প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত অদক্ষ শ্রমিকদের বেতন সবশেষ ২০১২ সালে পুনর্নির্ধারণ করা হয়। সে অনুযায়ী তাঁদের মূল বেতন ১ হাজার ৫০০ টাকা। বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা ও যাতায়াত ভাতাসহ যা সর্বসাকুল্যে ২ হাজার ৫০০ টাকা।
জাতীয়ভাবে বেসরকারি চাকরিজীবীদের জন্য ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণের প্রয়োজনীয়তার কথা বলছেন অর্থনীতিবিদ ও গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। তিনি স্ট্রিমকে বলেন, ‘বেসরকারি শ্রমিক-কর্মচারীদের জন্য আগে একটা ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করে দিতে হবে। কিন্তু সরকার এটা এখনও করছে না। ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণের পর খাতভিত্তিক মজুরি নির্ধারণ করা যেতে পারে। তবে মজুরি নির্ধারণ করতে হবে মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে।’
পেট্রোল পাম্প কিংবা পাটকলে কর্মরতরা সরকার নির্ধারিত এই মজুরির কথা জানেন না। আবার মালিকেরাও বলছেন, বর্তমান বাজারে ওই মজুরিতে কেউ চাকরি করবেন না।
রাজধানী ঢাকাসহ দেশের কয়েকটি এলাকার পেট্রোল পাম্পের কর্মচারীর সঙ্গে কথা বলেছে স্ট্রিম। তাঁরা কেউ কেউ ৬ হাজার টাকা, কেউ আবার ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন পান। তবে এরপরেও বর্তমান বাজারে তাঁদের জীবন নির্বাহ করতে হিমশিম খেতে হয়। তাঁরা বলছেন, যে পরিমাণ পরিশ্রম করতে হয়, পারিশ্রমিকের হার ততটা নয়।
যশোর জেলা শহরের মফিজ ফিলিং স্টেশনের কর্মচারী মো. আশিকুজ্জামান জানান, কখনও কখনও তাঁকে সকাল সাতটা থেকে বিকেল তিনটা, আবার কখনও বিকেল তিনটা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত কাজ করতে হয়। সাপ্তাহিক ছুটিও পান না। তিনি বলেন, ‘চাকরির এই আয় দিয়ে সংসার চলে না। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে সংসার চালাতে কষ্ট হয়।’
জানতে চাইলে বাংলাদেশ পেট্রোল পাম্প ও ট্যাংকলরি মালিক ঐক্য পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক সৈয়দ সাজ্জাদুল করিম কাবুল স্ট্রিমকে বলেন, সরকারের নির্ধারিত যে মজুরি, একজন শ্রমিকের যাতায়াতেই তা খরচ হয়ে যায়। এখন দিনমজুরকেই ৫০০ টাকা দিতে হয়। ওই টাকায় কে কাজ করবে? আমরা শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন দিই সর্বনিম্ন ১০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত। এরপরেও অনেকে থাকে না।
সর্বশেষ ২০১৫ সালে সরকারি চাকরিজীবীদের বেতনস্কেল বাড়ানো হয়। গত বছর অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর ১৫ লাখ সরকারি চাকরিজীবীর জন্য মহার্ঘ্য ভাতা দেওয়ার বিষয়টি আলোচনায় আসে। চলতি অর্থবছরের বাজেটে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিশেষ সুবিধা দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়।
সে হিসেবে চলতি বছরের ১ জুলাই থেকে বেতন গ্রেড ভেদে গ্রেড-১ ও তদূর্ধ্ব থেকে গ্রেড-৯ পর্যন্ত ১০ শতাংশ এবং গ্রেড-১০ থেকে গ্রেড-২০ পর্যন্ত ১৫ শতাংশ হারে ‘বিশেষ সুবিধা’ পাচ্ছেন সরকারি চাকরিজীবীরা।
পাশাপাশি সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য নতুন বেতনকাঠামো করতে পে কমিশন গঠন করেছে সরকার। গত বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পে-কমিশন গঠন করা হয়। সাবেক অর্থসচিব জাকির আহমেদ খানকে প্রধান করে গঠিত এই পে কমিশনকে ছয় মাসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
বেসরকারি চাকরিজীবীদের জন্য আগে একটা ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করে দিতে হবে। কিন্তু সরকার এটা এখনও করছে না। ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণের পর খাতভিত্তিক মজুরি নির্ধারণ করা যেতে পারে। তবে ন্যূনতম মজুরি অবশ্যই মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দিতে হবে এবং সেটা যেন দারিদ্র্যসীমার ওপরে হয়। অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, অর্থনীতিবিদ ও সদস্য, গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি
শ্রমিকদের নায্যতা নিশ্চিতে শ্রম সংস্কার কমিশন করেছিল অন্তর্বর্তী সরকার। ওই কমিশন গত ২১ এপ্রিল প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে প্রতিবেদন জমা দেয়। কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিম্নতম মজুরি বোর্ড নির্ধারিত বেসরকারি খাতের ৪৩টির মধ্যে ২২টিতে এমন বেতন নির্ধারিত আছে, যা দারিদ্র্যসীমার নিচে।
এমন পরিস্থিতিতে খাত বা কাজের ধরন নির্বিশেষে সকল শ্রমিকের জন্য প্রযোজ্য একটি জাতীয় ন্যূনতম মজুরি প্রবর্তনের সুপারিশ করেছে কমিশন। মূল্যস্ফীতি ও জীবনযাত্রার ব্যয় বিবেচনায় নিয়ে প্রতি তিন বছর অন্তর অন্তর জাতীয় এবং খাতভিত্তিক মজুরি ব্যবস্থা সংশোধন করার সুপারিশও করেছে শ্রম সংস্কার কমিশন।
শ্রম সংস্কার কমিশনের সদস্য আরিফুল ইসলাম স্ট্রিমকে বলেন, সব ধরনের শ্রমিক ও মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সুপারিশ দাঁড় করানো হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক দলগুলোও এসব দাবি জানিয়েছে। সময়ের সাথে মানসম্মত জীবনযাপন এবং পরিবারের মৌলিক অধিকার নিশ্চিতে যে পরিমাণ ন্যূনতম মজুরি প্রয়োজন, সেটি যেন নিশ্চিত করা হয়।
তিনি বলেন, ‘৬ কিংবা ৮ হাজার টাকায় শ্রমিকদের পরিবার নিয়ে জীবনধারণ করা সম্ভব না। সরকারকে আমাদের সুপারিশগুলো বাস্তবায়নে দ্রুত উদ্যোগ নিতে হবে। রাজনৈতিক দল ও অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে এটি বাস্তবায়নের দিকে যেতে হবে।’
আয়রন ফাউন্ড্রি অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপের শ্রমিকেরা মাসে ২ হাজার ৬০০ টাকা ও কর্মচারীরা ৩ হাজার টাকা বেতন পান। ২০১০ সালে নির্ধারিত এ মজুরি অনুযায়ী তাঁদের বেতন সর্বসাকুল্যে আসে যথাক্রমে ৪ হাজার ২৪০ ও ৪ হাজার ৮০০ টাকা।
একই বছর তেল কারখানা ও ভেজিটেবল প্রোডাক্টসে কর্মরতদের বেতন-ভাতাও নির্ধারণ করে দেয় নিম্নতম মজুরি বোর্ড। এসব কারখানার শ্রমিকেরা ৪ হাজার ৮০০ টাকা ও কর্মচারীরা ২ হাজার ৫০০ টাকা হারে বেতন পান। সর্বসাকুল্যে তাঁদের বেতন আসে যথাক্রমে ৭ হাজার ৪২০ টাকা ও ৪ হাজার ২০০ টাকা। ২০১৩ সালে নির্ধারিত দিয়াশলাই কারখানার শ্রমিক-কর্মচারীদের মূল বেতন এখন ২ হাজার ৮০০ টাকা। সবমিলিয়ে এই বেতন ৪ হাজার ৫৬০ টাকা।
লবন প্রস্তুতকারক কারখানার শ্রমিকদের মজুরি সর্বশেষ নির্ধারণ করে দেওয়া হয় ২০১১ সালে। সরকার নির্ধারিত মজুরি অনুযায়ী, শ্রমিকেরা মাসে বেতন পাবেন ১ হাজার ৮৫০ টাকা, সর্বসাকুল্যে তা তিন হাজার টাকা।
২০১৪ সালে পাটজাত পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণে নিয়োজিত শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন নির্ধারণ করে দেয় সরকার। এসব কারখানার শ্রমিক-কর্মচারীরা ২ হাজার ৮০০ টাকা হারে বেতন পান। তাঁদের বেতন সর্বসাকুল্যে ৪ হাজার ৮৫০ টাকা। টাইপ ফাউন্ড্রি সংক্রান্ত কাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের বেতন সর্বশেষ ১৯৮৩ সালে নির্ধারণ করা হয়। তাঁদের মূল বেতন ৩২০ টাকা, সর্বসাকুল্যে যা ৫২১ টাকা।
সরকারি তালিকায় ৪৭টি বেসরকারি খাতের কথা উল্লেখ রয়েছে। এর মধ্যে ৪৩টির বেতন কাঠামো নির্ধারণ করা আছে। সিরামিক, পোল্ট্রি, ব্যাটারি প্রস্তুতকারক এবং রং ও কেমিকেল কারখানার শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা নির্ধারণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
হাজারো মুসলমান পরিবারকে ‘অবৈধ অনুপ্রবেশকারী’ হিসেবে চিহ্নিত করে উচ্ছেদের অভিযোগ উঠছে ভারতের আসাম রাজ্যে। বিজেপি শাসিত এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা ঘৃণা ও মেরুকরণের রাজনীতির মাধ্যমে একটি গোষ্ঠীকে বিপদের মুখে ফেলছেন, এমন মনে করছেন রাজ্যটির নাগরিক সমাজের বড় অংশ।
১ দিন আগেবাংলাভাষীদের ‘বাংলাদেশি’ সন্দেহে আটক ও বাংলাদেশে ‘ঘাড়ধাক্কা’ দেওয়ার ঘটনায় ইতিমধ্যেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি। ঘটনার শুরু দেশটির বিভিন্ন রাজ্যে পশ্চিমবঙ্গের পরিযায়ী শ্রমিকের আক্রান্ত হওয়ার মাধ্যমে।
২ দিন আগেমোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্প। রাজধানীর এই এলাকা যেন মাদকের ‘হটস্পট’। রাস্তায় দাঁড়িয়ে কিশোর বিক্রি করছে গাঁজা। নারী-শিশুদের হাতে ইয়াবা, হেরোইন। এই মাদক কারবারের পেছনে রয়েছে অদৃশ্য রাজনৈতিক ছায়া আর প্রশাসনিক দুর্বলতা। স্ট্রিম অনুসন্ধান করেছে এই মাদক কারবারের ভেতরকার গল্প।
৪ দিন আগেআমাদের ছেলে সূর্য সময় বিশ্বাস। মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ইংরেজি ভার্সনে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। আর একই বিদ্যায়তনের কলেজ শাখায় শিক্ষকতা করি আমি। প্রতিদিন ছেলেকে আমিই স্কুলে নিয়ে আসি। তবে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনার আগের দিন (২০ জুলাই) সূর্য স্কুলে যায়নি।
৭ দিন আগে