ডাকসু নির্বাচন
স্ট্রিম প্রতিবেদক
ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’-এর কয়েকজন প্রার্থীর বিরুদ্ধে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত থাকার (৫ আগস্টের আগে) অভিযোগ উঠেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের প্রচারণা চলাকালে বিভিন্ন পক্ষ থেকে এ অভিযোগ তোলা হয়।
গত ২৫ আগস্ট ফেসবুক পোস্টে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সালেহীন ইবনে কবির অভিযোগ করেন, ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট থেকে সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী রায়হান উদ্দীন আগে ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
ওই পোস্টে তিনি লেখেন, ‘এই বাটপার (রায়হান) ছিল এফ রহমান হলের সবচেয়ে বড় মুজিবসেনা। ২০২৪ সালেও সে ক্রমাগত ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার (আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক) সাথে ছবি আপলোড দিত, যা তাঁর সাথে অ্যাড থাকা সবাই জানে। আর তাঁর পুরানো আওয়ামী প্রেমের স্ক্রিনশট তো অ্যাটাচ করাই আছে।’
সালেহীন আরও বলেন, ‘আমি এসব অভিযোগ আগেও সামনে এনেছি। তাহলে আজকে কেন রিপিট করলাম? কারণ শিবির এই বাটপারকে কেন্দ্রীয় ডাকসুতে সদস্য পদে মনোনয়ন দিয়েছে। আবার প্রতিদিন পাশে বসিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে। তাই চাইলাম সবাই আবারও জানুক যে শিবির টিকে আছে এসব মুনাফেকদের নিয়ে। এদের প্রমোট করার এটাই অর্থ যে এসব গুটিবাজি শিবিরেরই সাংগঠনিক রাজনীতির অংশ।’
রায়হান উদ্দীন (Raihan Uddin) নামে একটি ফেসবুক আইডির পুরনো বিভিন্ন ছবি প্রমাণ হিসেবে সামনে আনেন সালেহীন। যেখানে ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা রায়হানকে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ সংক্রান্ত বিভিন্ন পোস্ট দিতে দেখা যায়।
সালেহীন আরও অভিযোগ করেন, রায়হান তাঁকে অবৈধভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটির রুমে তালা মারতে নির্দেশ দেন।
রায়হান উদ্দীনের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ আনেন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) আহ্বায়ক ও ডাকসুতে ভিপিপ্রার্থী আব্দুল কাদেরও। ৩ আগস্ট ফেসবুকে এক পোস্টে তিনি দাবি করেন, রায়হান উদ্দীন ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। তিনি আরও বলেন, ‘মেধাবী হওয়ার দরুন হল ক্যান্ডিডেটের বক্তব্যগুলা তিনি নিজে লিখে দিতেন, সারাক্ষণ ক্যান্ডিডেটের আগেপিছে থাকতেন, কাউকে ভিড়তে দিতেন না। এফ রহমান হলের কুখ্যাত ছাত্রলীগ সভাপতি রিয়াজের একনিষ্ঠ অনুসারী এই রায়হান ৫ তারিখের পরে শিবিরের বড় নেতা হিসেবে হাজির হয়েছেন। আগের ফেসবুক আইডি বাদ দিয়ে এখন নতুন আইডি চালান। তবে আগের আইডি এবং তার কৃতকর্ম মুছে ফেলতে পারেন নাই। এখনো আছে।’
কাদেরের অভিযোগের জবাবে রায়হান ফেসবুকে লেখেন, ‘২০২০ সালের আগস্ট পর্যন্ত আমি ফেসবুকে ছাত্রলীগের পোস্ট করেছি। আমার আগের একটা আইডি ছিল, যেটা এখনো আছে। সেখানে আমি পোস্ট করতাম—করতে হতো। নিয়মিত প্রোগ্রাম, মিছিল, গেস্টরুম করতে হয়েছে। করোনা পরবর্তী সময়ে হলে ওঠার পর আমি ছাত্রলীগের প্রোগ্রাম ও গেস্টরুমে যাওয়া থেকে বিরত থাকি। ফলে বেশ কবার সিঙ্গেল গেস্টরুম ও হল থেকে বের করে দেয়।’
শুধু রায়হান নন, ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ এসেছে প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ও ঢাবি ছাত্রশিবিরের সভাপতি এস এম ফরহাদের বিরুদ্ধেও।
ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের সঙ্গে ফরহাদের কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ ভাইরাল হয়। এর মধ্যে একটিতে তাঁকে ফুল হাতে সৈকতের সঙ্গে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
এ ছাড়া, ফরহাদ সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। ২০২২ সালের নভেম্বরে প্রকাশিত কমিটির প্যাডে তাঁর নাম দেখা যায়।
শুরুতে এ অভিযোগ সামনে আসার পর গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে ফরহাদ জানান, সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট শাখা ছাত্রলীগের কোনো কর্মসূচি ও কার্যক্রমের সঙ্গে তাঁর সম্পৃক্ততা নেই। ছাত্রলীগের কোনো পদ-পদবির জন্য কোনো সিভি (জীবনবৃত্তান্ত) জমা দেননি। বিভাগ-ইনস্টিটিউটের কমিটিতে কাকে রাখা হবে, সেটা সংশ্লিষ্ট ছাত্রসংগঠনের সিদ্ধান্ত। তিনি ছাত্রলীগের সঙ্গে কোনোভাবেই সম্পৃক্ত নন।
ডাকসু নির্বাচন সামনে রেখে ফের এ বিতর্ক উঠেছে। ছাত্রলীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে বিএম ফাহমিদা নামের এক শিক্ষার্থী তাঁর প্রার্থিতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন। ফাহমিদা দাবি করেন, ফরহাদ এখনো ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগ করেননি। তাঁর বিরুদ্ধে রিট করার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান ফরহাদ।
সেই রিটের শুনানিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে আইনজীবী শিশির মনির বলেন, ‘ফারসি বিভাগের এক ছাত্রলীগ কর্মী এস এম ফরহাদের সঙ্গে ডাকসুর জিএস প্রার্থী সমাজকল্যাণ ইনস্টিটিউটের এস এম ফরহাদকে গুলিয়ে ফেলা হচ্ছে। এই ফরহাদ এবং সেই ফরহাদ একই ব্যক্তি নন। জিএস প্রার্থী ফরহাদকে ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে না যাওয়ার কারণে হল থেকে ২০১৮ সালে বের করে দেওয়া হয়েছিল। রিটকারী তাঁর অভিযোগ নিয়ে ডাকসু আপিল বোর্ডের কাছে যাননি। এই রিট চলতে পারে না।’
পরে আদালত জানান, ফরহাদের ডাকসু নির্বাচন করতে বাধা নেই।
এ বিষয়ে রিটকারীর আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া স্ট্রিমকে বলেন, ‘ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রশিবিরের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে—এই দাবি নিয়েই তো আমরা উচ্চ আদালতে গিয়েছিলাম। এ বিষয়ে রিট পিটিশনারেরও আপত্তি আছে। শিবিরের এই প্রার্থীদের একসময় ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে দেখা গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তা দেখেছে। এখন এসে তাঁরা শিবিরের পরিচয় দিচ্ছে, এই প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগের কারণে তাঁদের ওপরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আস্থা আসবে না, একটা সন্দেহ-সংশয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে থেকে যাবে।’
ছাত্রলীগ করার অভিযোগ এসেছে শিবির সমর্থিত প্যানেলের সহসভাপতি প্রার্থী সাদিক কায়েমের বিরুদ্ধেও। তাঁকে নিয়ে একটি ভিডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়। ‘নৌকা, নৌকা…শেখ হাসিনা’ স্লোগান দেওয়া হচ্ছে, এমন একটি অনুষ্ঠানে তাঁকে অংশ নিতে দেখা যায় সেই ক্লিপে।
রাসেল হিমাদ্রির নামে একজন ফেসবুকে অভিযোগে করেন, ঢাবির একাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের শিক্ষার্থী হাফিজুর রহমান চৌধুরী সোহান ১৫ জুলাই ছাত্রলীগের হামলার সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং বর্তমানে তিনি ছাত্রশিবিরের পক্ষে ডাকসুতে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
ওই পোস্টে রাসেল লেখেন, ‘১৫ জুলাই এই ছেলে ছাত্রলীগের হয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করসে, পিটাইসে। এ কারণে তাঁকে ডিপার্টমেন্ট থেকে বয়কট করা হইসিল। গত কয়েকদিন যাবত সাদিক কায়েমের সাথে ডাকসুর প্রচারণা করতেসে। দিনের আলোর মতো পরিষ্কার, হামলা করসে। ছবিও আছে। ক্লাসমেটরা বয়কট করসে, সেটার প্রমাণও আছে। সমস্যা হলো, এরা নির্যাতিত হিসেবে পোর্ট্রে করে (দেখায়) নিজেদেরকে। কিন্তু ছিল নিপীড়ক।’
সার্বিকভাবে, ডাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’-এর কয়েকজন প্রার্থীর অতীত রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা একটি বড় বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবি, পোস্ট ও ভিডিওর মাধ্যমে এসব অভিযোগ উত্থাপিত হওয়ার পর অভিযুক্ত প্রার্থীরা তা অস্বীকার করেছেন বা প্রেক্ষাপট তুলে ধরে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন।
একজন প্রার্থীর যোগ্যতা নিয়ে বিষয়টি উচ্চ আদালত পর্যন্ত গড়ালেও শেষ পর্যন্ত তার নির্বাচনে অংশ নিতে কোনো বাধা নেই বলে জানানো হয়। এই অভিযোগ ও পাল্টা ব্যাখ্যা ভোটারদের মধ্যে প্রার্থীদের রাজনৈতিক আদর্শ ও বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে সংশয় তৈরি করেছে, যা নির্বাচনী প্রচারণায় একটি অন্যতম আলোচিত বিষয়ে পরিণত হয়েছে।
ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’-এর কয়েকজন প্রার্থীর বিরুদ্ধে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত থাকার (৫ আগস্টের আগে) অভিযোগ উঠেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের প্রচারণা চলাকালে বিভিন্ন পক্ষ থেকে এ অভিযোগ তোলা হয়।
গত ২৫ আগস্ট ফেসবুক পোস্টে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সালেহীন ইবনে কবির অভিযোগ করেন, ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট থেকে সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী রায়হান উদ্দীন আগে ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
ওই পোস্টে তিনি লেখেন, ‘এই বাটপার (রায়হান) ছিল এফ রহমান হলের সবচেয়ে বড় মুজিবসেনা। ২০২৪ সালেও সে ক্রমাগত ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার (আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক) সাথে ছবি আপলোড দিত, যা তাঁর সাথে অ্যাড থাকা সবাই জানে। আর তাঁর পুরানো আওয়ামী প্রেমের স্ক্রিনশট তো অ্যাটাচ করাই আছে।’
সালেহীন আরও বলেন, ‘আমি এসব অভিযোগ আগেও সামনে এনেছি। তাহলে আজকে কেন রিপিট করলাম? কারণ শিবির এই বাটপারকে কেন্দ্রীয় ডাকসুতে সদস্য পদে মনোনয়ন দিয়েছে। আবার প্রতিদিন পাশে বসিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে। তাই চাইলাম সবাই আবারও জানুক যে শিবির টিকে আছে এসব মুনাফেকদের নিয়ে। এদের প্রমোট করার এটাই অর্থ যে এসব গুটিবাজি শিবিরেরই সাংগঠনিক রাজনীতির অংশ।’
রায়হান উদ্দীন (Raihan Uddin) নামে একটি ফেসবুক আইডির পুরনো বিভিন্ন ছবি প্রমাণ হিসেবে সামনে আনেন সালেহীন। যেখানে ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা রায়হানকে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ সংক্রান্ত বিভিন্ন পোস্ট দিতে দেখা যায়।
সালেহীন আরও অভিযোগ করেন, রায়হান তাঁকে অবৈধভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটির রুমে তালা মারতে নির্দেশ দেন।
রায়হান উদ্দীনের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ আনেন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) আহ্বায়ক ও ডাকসুতে ভিপিপ্রার্থী আব্দুল কাদেরও। ৩ আগস্ট ফেসবুকে এক পোস্টে তিনি দাবি করেন, রায়হান উদ্দীন ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। তিনি আরও বলেন, ‘মেধাবী হওয়ার দরুন হল ক্যান্ডিডেটের বক্তব্যগুলা তিনি নিজে লিখে দিতেন, সারাক্ষণ ক্যান্ডিডেটের আগেপিছে থাকতেন, কাউকে ভিড়তে দিতেন না। এফ রহমান হলের কুখ্যাত ছাত্রলীগ সভাপতি রিয়াজের একনিষ্ঠ অনুসারী এই রায়হান ৫ তারিখের পরে শিবিরের বড় নেতা হিসেবে হাজির হয়েছেন। আগের ফেসবুক আইডি বাদ দিয়ে এখন নতুন আইডি চালান। তবে আগের আইডি এবং তার কৃতকর্ম মুছে ফেলতে পারেন নাই। এখনো আছে।’
কাদেরের অভিযোগের জবাবে রায়হান ফেসবুকে লেখেন, ‘২০২০ সালের আগস্ট পর্যন্ত আমি ফেসবুকে ছাত্রলীগের পোস্ট করেছি। আমার আগের একটা আইডি ছিল, যেটা এখনো আছে। সেখানে আমি পোস্ট করতাম—করতে হতো। নিয়মিত প্রোগ্রাম, মিছিল, গেস্টরুম করতে হয়েছে। করোনা পরবর্তী সময়ে হলে ওঠার পর আমি ছাত্রলীগের প্রোগ্রাম ও গেস্টরুমে যাওয়া থেকে বিরত থাকি। ফলে বেশ কবার সিঙ্গেল গেস্টরুম ও হল থেকে বের করে দেয়।’
শুধু রায়হান নন, ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ এসেছে প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ও ঢাবি ছাত্রশিবিরের সভাপতি এস এম ফরহাদের বিরুদ্ধেও।
ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের সঙ্গে ফরহাদের কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ ভাইরাল হয়। এর মধ্যে একটিতে তাঁকে ফুল হাতে সৈকতের সঙ্গে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
এ ছাড়া, ফরহাদ সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। ২০২২ সালের নভেম্বরে প্রকাশিত কমিটির প্যাডে তাঁর নাম দেখা যায়।
শুরুতে এ অভিযোগ সামনে আসার পর গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে ফরহাদ জানান, সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট শাখা ছাত্রলীগের কোনো কর্মসূচি ও কার্যক্রমের সঙ্গে তাঁর সম্পৃক্ততা নেই। ছাত্রলীগের কোনো পদ-পদবির জন্য কোনো সিভি (জীবনবৃত্তান্ত) জমা দেননি। বিভাগ-ইনস্টিটিউটের কমিটিতে কাকে রাখা হবে, সেটা সংশ্লিষ্ট ছাত্রসংগঠনের সিদ্ধান্ত। তিনি ছাত্রলীগের সঙ্গে কোনোভাবেই সম্পৃক্ত নন।
ডাকসু নির্বাচন সামনে রেখে ফের এ বিতর্ক উঠেছে। ছাত্রলীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে বিএম ফাহমিদা নামের এক শিক্ষার্থী তাঁর প্রার্থিতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন। ফাহমিদা দাবি করেন, ফরহাদ এখনো ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগ করেননি। তাঁর বিরুদ্ধে রিট করার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান ফরহাদ।
সেই রিটের শুনানিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে আইনজীবী শিশির মনির বলেন, ‘ফারসি বিভাগের এক ছাত্রলীগ কর্মী এস এম ফরহাদের সঙ্গে ডাকসুর জিএস প্রার্থী সমাজকল্যাণ ইনস্টিটিউটের এস এম ফরহাদকে গুলিয়ে ফেলা হচ্ছে। এই ফরহাদ এবং সেই ফরহাদ একই ব্যক্তি নন। জিএস প্রার্থী ফরহাদকে ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে না যাওয়ার কারণে হল থেকে ২০১৮ সালে বের করে দেওয়া হয়েছিল। রিটকারী তাঁর অভিযোগ নিয়ে ডাকসু আপিল বোর্ডের কাছে যাননি। এই রিট চলতে পারে না।’
পরে আদালত জানান, ফরহাদের ডাকসু নির্বাচন করতে বাধা নেই।
এ বিষয়ে রিটকারীর আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া স্ট্রিমকে বলেন, ‘ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রশিবিরের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে—এই দাবি নিয়েই তো আমরা উচ্চ আদালতে গিয়েছিলাম। এ বিষয়ে রিট পিটিশনারেরও আপত্তি আছে। শিবিরের এই প্রার্থীদের একসময় ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে দেখা গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তা দেখেছে। এখন এসে তাঁরা শিবিরের পরিচয় দিচ্ছে, এই প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগের কারণে তাঁদের ওপরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আস্থা আসবে না, একটা সন্দেহ-সংশয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে থেকে যাবে।’
ছাত্রলীগ করার অভিযোগ এসেছে শিবির সমর্থিত প্যানেলের সহসভাপতি প্রার্থী সাদিক কায়েমের বিরুদ্ধেও। তাঁকে নিয়ে একটি ভিডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়। ‘নৌকা, নৌকা…শেখ হাসিনা’ স্লোগান দেওয়া হচ্ছে, এমন একটি অনুষ্ঠানে তাঁকে অংশ নিতে দেখা যায় সেই ক্লিপে।
রাসেল হিমাদ্রির নামে একজন ফেসবুকে অভিযোগে করেন, ঢাবির একাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের শিক্ষার্থী হাফিজুর রহমান চৌধুরী সোহান ১৫ জুলাই ছাত্রলীগের হামলার সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং বর্তমানে তিনি ছাত্রশিবিরের পক্ষে ডাকসুতে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
ওই পোস্টে রাসেল লেখেন, ‘১৫ জুলাই এই ছেলে ছাত্রলীগের হয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করসে, পিটাইসে। এ কারণে তাঁকে ডিপার্টমেন্ট থেকে বয়কট করা হইসিল। গত কয়েকদিন যাবত সাদিক কায়েমের সাথে ডাকসুর প্রচারণা করতেসে। দিনের আলোর মতো পরিষ্কার, হামলা করসে। ছবিও আছে। ক্লাসমেটরা বয়কট করসে, সেটার প্রমাণও আছে। সমস্যা হলো, এরা নির্যাতিত হিসেবে পোর্ট্রে করে (দেখায়) নিজেদেরকে। কিন্তু ছিল নিপীড়ক।’
সার্বিকভাবে, ডাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’-এর কয়েকজন প্রার্থীর অতীত রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা একটি বড় বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবি, পোস্ট ও ভিডিওর মাধ্যমে এসব অভিযোগ উত্থাপিত হওয়ার পর অভিযুক্ত প্রার্থীরা তা অস্বীকার করেছেন বা প্রেক্ষাপট তুলে ধরে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন।
একজন প্রার্থীর যোগ্যতা নিয়ে বিষয়টি উচ্চ আদালত পর্যন্ত গড়ালেও শেষ পর্যন্ত তার নির্বাচনে অংশ নিতে কোনো বাধা নেই বলে জানানো হয়। এই অভিযোগ ও পাল্টা ব্যাখ্যা ভোটারদের মধ্যে প্রার্থীদের রাজনৈতিক আদর্শ ও বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে সংশয় তৈরি করেছে, যা নির্বাচনী প্রচারণায় একটি অন্যতম আলোচিত বিষয়ে পরিণত হয়েছে।
ডাকসু নির্বাচনে প্যানেলগুলোর মধ্যে অন্যতম ‘প্রতিরোধ পর্ষদ’ প্যানেল। বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মী ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে এই প্যানেল গঠিত হয়েছে। তাঁরা মুক্তিযুদ্ধ ও প্রগতিশীলতার আদর্শ ধারণ করে সমতাভিত্তিক ও দখলদারিত্বমুক্ত ক্যাম্পাস গড়ার কথা বলছেন।
৭ ঘণ্টা আগেবিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ইসলামী ছাত্রশিবির প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৭৭ সালে। আর স্বাধীনতার পর প্রথম ডাকসু নির্বাচন হয় ১৯৭২ সালে। ফলে ওই নির্বাচন এবং ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত ডাকসু নির্বাচনে অংশ নিতে পারেনি ছাত্রশিবির। এর বাইরে পাঁচটি নির্বাচনে অংশ নিয়েছে সংগঠনটি।
১০ ঘণ্টা আগেপ্রথমে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের সহ-সভাপতি (ভিপি) প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খানের ফেসবুক আইডি ডিজেবল হওয়ার খবর আসে। তাঁর ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টটি একবার পুনরুদ্ধার করা গেলেও, দুপুরে সেটি আবারও নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়।
১০ ঘণ্টা আগেআগামীকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) নির্বাচন। এ নির্বাচনের উত্তাপ ছড়িয়েছে সারাদেশে। এবারের ভোটযুদ্ধকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন প্যানেলের নির্বাচনী ইশতেহার নিয়ে স্ট্রিম-এর বিশেষ আয়োজন। প্রতিনিধিত্বশীল প্যানেলগুলোর ইশতেহার পর্যালোচনা করে এখানে থাকছে কী আছে কোন প্যানেলের ইশতেহারে।
১৪ ঘণ্টা আগে