leadT1ad

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

রাকসু নির্বাচনেও ডাকসু-জাকসুর মডেল শিবিরের

'ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রশিবির সর্বমিত্র চাকমাকে প্যানেলে নিয়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি পার্বত্য অঞ্চলের সহিংসতা নিয়ে ডাকসুর ইতিবাচক কোন অবস্থান দেখতে পাইনি। ক্যাম্পাসে মোরাল পুলিশিংও আমরা দেখছি। অর্থাৎ, যাঁদের নিয়ে নিজেদের ইনক্লুসিভ দাবি করা হচ্ছে, এক মাস পর তাঁদের জন্য কোন কার্যক্রম দেখা যাচ্ছে না। এই রাজনৈতিক চর্চা ভালো নয়।'

স্ট্রিম প্রতিবেদক
স্ট্রিম প্রতিবেদক
ঢাকা
ডাকসু ও জাকসু নির্বাচনে শিবিরের মডেল অনুসরণ করেই রাকসুতেও এগিয়েছে শিবির। স্ট্রিম গ্রাফিক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচনে সংগঠনের বাইরের প্রার্থীদেরও প্যানেলভুক্ত করেছিল ইসলামী ছাত্রশিবির। নারী প্রার্থীদের পাশাপাশি ভিন্ন ধর্মাবলম্বীর শিক্ষার্থীরাও ছাত্রশিবিরের প্যানেল থেকে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। প্যানেলের আলাদা নামও দিয়েছিল ছাত্রশিবির।

এ দুই নির্বাচনে সাফল্যও দেখিয়েছে সংগঠনটি। অধিকাংশ পদেই জয় পেয়েছেন ছাত্রশিবিরের প্রার্থীরা। অন্যদিকে, আগামী ১৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিতব্য রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনেও ছাত্রশিবির আলাদা প্যানেল ঘোষণা করেছে। এ প্যানেলেও সংগঠনের বাইরের প্রার্থীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ক্যাম্পাসগুলোতে শিক্ষার্থীদের প্রায় অর্ধেক নারী। এছাড়া উল্লেখযোগ্যসংখ্যক ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী ও ভিন্ন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থী রয়েছেন। তাঁদের ভোট টানতেই মূলত ছাত্রশিবির ওইসব অংশের শিক্ষার্থীদের প্যানেলভুক্ত করে অন্তর্ভুক্তিমূলক হিসেবে উপস্থাপন করেছে। রাকসু নির্বাচনেও একই মডেল অনুসরণ করছে সংগঠনটি।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক রেজওয়ানা করিম স্নিগ্ধা স্ট্রিমকে বলেন, নির্বাচনের সময় যে কোন পলিটিক্যাল পার্টি কৌশল নেবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় সর্বোচ্চ জ্ঞান ও সততা-স্বচ্ছতার জায়গা, এখানকার নির্বাচনও একটি সীমানায় আবদ্ধ। সুতরাং, এখানে ধূর্ততা দুঃখজনক। তবে প্রকৃত অর্থে প্যানেল ইনক্লুসিভ হলে সেটি হতে পারতো আশাব্যঞ্জক। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা রাজনৈতিক কৌশল নিলে সেটি ধূর্ততা এবং এই ধূর্ততা দুঃখজনক।

তিনি বলেন, ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রশিবির সর্বমিত্র চাকমাকে প্যানেলে নিয়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি পার্বত্য অঞ্চলের সহিংসতা নিয়ে ডাকসুর ইতিবাচক কোন অবস্থান দেখতে পাইনি। ক্যাম্পাসে মোরাল পুলিশিংও আমরা দেখছি। অর্থাৎ, যাঁদের নিয়ে নিজেদের ইনক্লুসিভ দাবি করা হচ্ছে, এক মাস পর তাঁদের জন্য কোন কার্যক্রম দেখা যাচ্ছে না। এই রাজনৈতিক চর্চা ভালো নয়।

নির্বাচনের সময় যে কোন পলিটিক্যাল পার্টি কৌশল নেবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় সর্বোচ্চ জ্ঞান ও সততা-স্বচ্ছতার জায়গা, এখানকার নির্বাচনও একটি সীমানায় আবদ্ধ। সুতরাং, এখানে ধূর্ততা দুঃখজনক। তবে প্রকৃত অর্থে প্যানেল ইনক্লুসিভ হলে সেটি হতে পারতো আশাব্যঞ্জক। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা রাজনৈতিক কৌশল নিলে সেটি ধূর্ততা এবং এই ধূর্ততা দুঃখজনক। অধ্যাপক রেজওয়ানা করিম স্নিগ্ধা, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনের জন্য ছাত্রশিবির নিজেদের নেতা-কর্মীর পাশাপাশি সাবেক একজন সমন্বয়ককেও শীর্ষ দুই পদের একটিতে প্রার্থী করেছে। ছাত্রশিবির ঘোষিত ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলে আছেন তিনজন নারী ও একজন সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীও।

রাকসু নির্বাচন সামনে রেখে গত ৭ সেপ্টেম্বর প্যানেল ঘোষণা করে ছাত্রশিবির। প্যানেলে সহসভাপতি (ভিপি) প্রার্থী হলেন সংগঠনটির বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মোস্তাকুর রহমান। সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে লড়ছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সমন্বয়ক ফাহিম রেজা। আর সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে প্রার্থী ‘সোচ্চার স্টুডেন্ট নেটওয়ার্ক’ নামের একটি সংগঠনের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সালমান সাব্বির।

এ প্যানেলের হয়ে নারীদের জন্য নির্ধারিত দুই নারী পদ ছাড়াও সহসমাজসেবা সম্পাদক পদে লড়ছেন একজন নারী। নারী বিষয়ক সম্পাদক সাইয়েদা হাফসা, সহকারী নারী বিষয়ক সম্পাদক সামিয়া জান্নাত এবং সহসমাজসেবা সম্পাদক পদে লড়ছেন মাসুমা ইসলাম মোমো।

নির্বাহী সদস্য পদে সনাতন ধর্মাবলম্বী সুজন চন্দ্র লড়ছেন শিবিরের প্যানেলের হয়ে। জুলাই আন্দোলনে এক চোখ হারানো দ্বীপ মাহবুবও প্রার্থী হয়েছেন ছাত্রশিবিরের প্যানেল থেকে।

ছাত্রশিবির বলছে, সংগঠনের বাইরের দক্ষ ও যোগ্য শিক্ষার্থীদের প্রার্থী করেছে তারা। এ বৈচিত্র্যই তাদের প্যানেলকে ইনক্লুসিভ (অন্তর্ভুক্তিমূলক) করেছে। এটাই তাদের শক্তির জায়গা।

প্যানেল ঘোষণার সময় রাবি ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি আব্দুল মোহাইমিন বলেন, ‘রাকসু নির্বাচনে ছাত্রশিবির ক্যাম্পাসের সব অংশীজনকে নিয়ে একটি ইনক্লুসিভ প্যানেল সাজিয়েছে। আমরা প্যানেলে বিগত জুলাই অভ্যুত্থানে আহত, জুলাইয়ের সামনের সারির যোদ্ধা এবং বিভিন্ন মত ও বিশ্বাসের শিক্ষার্থীদের মিলন ঘটিয়েছি।’

ডাকসু এবং জাকসু নির্বাচনের ক্ষেত্রেও একইভাবে প্যানেল ঘোষণা করেছিল ছাত্রশিবির। ডাকসু নির্বাচনে চারজন নারী শিক্ষার্থীকে প্যানেলভুক্ত করেছিল শিবির। পাশাপাশি ছিলেন ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর একজন প্রার্থীও।

অন্যদিকে, জাকসু নির্বাচনেও সংগঠনের বাইরের নারী শিক্ষার্থীদের প্রার্থী করেছিল শিবির। নারীদের জন্য নির্ধারিত ছয়টি পদে নারীদের প্রার্থী করা হয়। পাশাপাশি একজন অন্ধ শিক্ষার্থীও শিবিরের প্যানেল থেকে প্রার্থী হন।

রাকসু নির্বাচনে ছাত্রশিবির ক্যাম্পাসের সব অংশীজনকে নিয়ে একটি ইনক্লুসিভ প্যানেল সাজিয়েছে। আমরা প্যানেলে বিগত জুলাই অভ্যুত্থানে আহত, জুলাইয়ের সামনের সারির যোদ্ধা এবং বিভিন্ন মত ও বিশ্বাসের শিক্ষার্থীদের মিলন ঘটিয়েছি। আব্দুল মোহাইমিন, সাবেক সভাপতি, রাবি ছাত্রশিবির
Ad 300x250

সম্পর্কিত