leadT1ad

ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশের প্রথম খসড়ার বাস্তবায়ন চায় এনসিপি

স্ট্রিম প্রতিবেদক
স্ট্রিম প্রতিবেদক
ঢাকা

প্রকাশ : ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ১৪: ০৬
সংবাদ সম্মেলনে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশের খসড়া দেখেই জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সনদে সইয়ের বিষয়টি বিবেচনা করবে বলে জানিয়েছেন দলের মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। তিনি আরও বলেছেন, ‘দুই ধরনের সংস্কারের জন্য স্বতন্ত্র বাস্তবায়ন রূপরেখা কমিশন পেশ করেছে। সংবিধান সম্পর্কিত নয় এমন সংস্কার সাধনের লক্ষ্যে প্রজ্ঞাপন ও অধ্যাদেশের খসড়া কমিশন সরকারের কাছে সুপারিশ করেছে। আমরা মনে করি, কালবিলম্ব না করে অতি সত্বর এই সংস্কার প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নের উদ্যোগ অন্তর্বর্তী সরকারকে নিতে হবে।’ জাতীয় নাগরিক পার্টি এনসিপি মনে করে, প্রথম খসড়া তথা প্রস্তাব-১ বাস্তবায়নের পথে সরকারকে যেতে হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

বুধবার (২৯ অক্টোবর) এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি নিশ্চিত করার দাবিতে এনসিপি জুলাই সনদে সই করা থেকে বিরত থেকেছে। আমরা বরাবর বলেছি জুলাই সনদ স্রেফ রাজনৈতিক সমঝোতার ফাঁকা বুলি ও দলিল নয়; অবশ্যই এর আইনি ভিত্তি থাকতে হবে। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশের খসড়া দেখেই এনসিপি স্বাক্ষরের বিবেচনা করবে— এই ছিল আমাদের বক্তব্য।’

এনসিপির আপসহীন অবস্থানের ধারাবাহিকতায় গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সরকারের কাছে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের রূপরেখা সুপারিশ করেছে বলেও মন্তব্য করেন দলটির এই নেতা। তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এনসিপির অনড় অবস্থানের ফলেই এটা সম্ভব হয়েছে। পাশাপাশি আমরা ঐকমত্য কমিশনের ঐকান্তিক প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানাই।’

দুই ধরনের সংস্কারের জন্য স্বতন্ত্র বাস্তবায়ন রূপরেখা কমিশন পেশ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সংবিধান সম্পর্কিত নয় এমন সংস্কার সাধনের লক্ষ্যে প্রজ্ঞাপন ও অধ্যাদেশের খসড়া কমিশন সরকারের কাছে সুপারিশ করেছে। আমরা মনে করি, কালবিলম্ব না করে অতি সত্বর এই সংস্কার প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নের উদ্যোগ অন্তর্বর্তী সরকারকে নিতে হবে। তবে অন্তত ৪৮টি সংস্কার প্রস্তাব সংবিধান সম্পর্কিত। এই সংস্কারগুলোর বাস্তবায়ন রূপরেখা নিয়েই এতদিন আলাপ-আলোচনা চলছিল। সংবিধান সম্পর্কিত এ সকল সংস্কার বাস্তবায়নের নিমিত্তে কমিশন দুটি স্বতন্ত্র খসড়া সুপারিশ দিয়েছে।’

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘এনসিপি মনে করে, প্রথম খসড়া তথা প্রস্তাব-১ বাস্তবায়নের পথে সরকারকে যেতে হবে। কারণ এখানে ৮(ঙ) ধারায় বলা হয়েছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সংবিধান সংস্কার পরিষদ কার্য সম্পন্ন করতে না পারলে সংবিধান সংস্কার বিল পরিষদ কর্তৃক গৃহীত হয়েছে বলে ধরে নেওয়া হবে এবং সংবিধান সংস্কার আইনরূপে কার্যকর হবে। সনদের ওপর গণভোটের ম্যান্ডেট বাস্তবায়নে বাধ্যবাধকতা তৈরির লক্ষ্যে এটি একটি অত্যাবশকীয় সুপারিশ যার নজির বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রয়েছে। অন্যদিকে, কমিশন প্রস্তাবিত প্রস্তাব-২ এ ব্যাপারে কোনো স্পষ্ট বক্তব্য নেই, যার দরুন গোটা সংস্কার কার্যক্রমই ভণ্ডুল হয়ে যেতে পারে। অর্থাৎ প্রস্তাব-২ নয়; সরকারকে কমিশন প্রস্তাবিত প্রস্তাব-১ কে বাস্তবায়ন রূপরেখা হিসেবে গ্রহণ করতে হবে।‘

পাশাপাশি প্রস্তাব-১ এর বেশ কিছু জায়গায় ‘ভাষিক অস্পষ্টতা’ বিদ্যমান, যা নিরসন করতে হবে বলে উল্লেখ করেন এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক। উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘যেমন ৮ (ক) ধারায় বর্ণিত আগামী নির্বাচিত সভা সংবিধান সংস্কার বিষয়ে গাঠনিক ক্ষমতা প্রয়োগ করিতে পারিবে নয়, ‘‘করিবে’’—এভাবে উল্লেখ থাকা প্রয়োজন। ৮ (ঘ) ধারায় সংবিধান সংস্কার বিলের বিষয়াদি ‘‘বিবেচনা করিবে’’ এক ধরনের অস্পষ্টতা তৈরি করে যা দূর করা প্রয়োজন।’

দ্বিতীয়ত, গণভোটে প্রদত্ত “সংবিধান সংস্কার বিল” এর খসড়া দ্রুত প্রণয়ন এবং জনগণের নিকট উন্মুক্ত করতে হবে বলেও দাবি জানান নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ঐকমত্য কমিশন কর্তৃক সুপারিশকৃত জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশের প্রথম খসড়াটি (প্রস্তাব-১) গ্রহণ করার মাধ্যমে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি নিশ্চিত করতে হবে; সংবিধান সংস্কার বিল খসড়া প্রণয়ন ও উন্মুক্তকরণের উদ্যোগ নিতে হবে এবং জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আইনি ভিত্তিসম্পন্ন আদেশের খসড়া সরকার গ্রহণ করলে সনদ সইয়ের ব্যাপারে অগ্রগতি তৈরি হবে বলে এনসিপি মনে করে।’

Ad 300x250

সম্পর্কিত