সৈকত আমীন
গতকাল বিকেলবেলা, এক পশলা বৃষ্টি কেবল শেষ হয়েছে। ফুরফুরে মেজাজ নিয়ে নিউজরুমে বসলাম ট্রেন্ডি কোনো ইস্যু নিয়ে স্যাটায়ার লিখব বলে। কিন্তু ট্রেন্ডে এমন কিছু পেলাম না, যা সম্পর্কে আমার জানাশোনা আছে। পেলাম হানিয়া আমিরকে। আমি তাঁকে চিনি না।
এই মহাপৃথিবীর ৮০০ কোটি মানুষের ভেতর বেশির ভাগকেই আমি চিনি না। চেনে না কেউই। ফলে এ নিয়ে তেমন দুঃখবোধ নেই। কিন্তু যখন একজন মানুষকে আমার দেশের লাখ লাখ মানুষ চেনে এবং চর্চা করে, তখন তাঁকে না চেনা তো কিছুটা বিব্রতকর। সেই বিব্রতবোধ থেকে বাঁচতে চেনার চেষ্টা করলাম হানিয়া আমিরকে।
ভদ্রমহিলা পাকিস্তানের জনপ্রিয় ছোটপর্দার অভিনেত্রী। রূপ-লাবণ্য নিয়ে যথেষ্ট খ্যাতি আছে তাঁর। সম্প্রতি শ্যাম্পু প্রস্তুতকারী এক বহুজাতিক প্রতিস্থান তাঁকে বাংলাদেশে নিয়ে এসেছে। হানিয়ার ঘন কালো ঝলঝলে চুলের রহস্যে ওই প্রতিষ্ঠানের অবদান দেশবাসীকে জানাতে। দেশবাসী অবশ্য সেই শ্যাম্পুর অবদান নিয়ে খুব বেশি চর্চা করছে না। যতটা করছে হানিয়া আমিরকে নিয়ে।
গত এক বছরে বাংলাদেশে পাকিস্তানি শিল্পীদের আনাগোনা বেড়েছে। যেমনটি আগে শুধু ভারতীয় শিল্পীরা আসতেন। এই পরিবর্তন ২০২৪ সালের আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকে লক্ষণীয়। এরপর পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক দ্রুত উন্নত হয়েছে। বেড়েছে দেশটির সঙ্গে সাংস্কৃতিক বিনিময়।
২০২৪ সালের ডিসেম্বরে বিখ্যাত পাকিস্তানি গায়ক রাহাত ফতেহ আলি খান বাংলাদেশে এসে কনসার্ট করে গেছেন। গানের ফাঁকে বলেছেন, ‘পাকিস্তানিরা সবসময় বাংলাদেশের সঙ্গে আছে।’
সম্প্রতি অভিনেত্রী হানিয়া আমিরের ঢাকা সফর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঝড় তুলেছে, ভক্তরা তাঁর বাংলা উচ্চারণ ও ঢাকা শহরে তাঁর মুহূর্তগুলো শেয়ার করছেন। হানিয়া আমিরের আগে আগেই এসে গেছেন এক ঝাঁক পাকিস্তানি কনটেন্ট ক্রিয়েটর।
২০২৪ সালের আগে ভারতীয় তারকারা এই ধরনের সফরে প্রাধান্য পেতেন। বলিউড তারকা শাহরুখ খান ঢাকায় একাধিকবার কনসার্ট করেছেন। সালমান খান, অরিজিৎ সিংয়ের মতো অন্যান্য তারকাও প্রায়ই এসেছেন। কিন্তু ২০২৪ সালের পর হাসিনার পতন ও অন্যায্য কূটনৈতিক সম্পর্কের জের ধরে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কে টানাপোড়েন বেড়েছে।
এই তারকা আমদানির দোলাচলকে সমাজবিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে আমরা ব্যাখ্যা করা যেতে পারে উত্তর-ঔপনিবেশিক তাত্ত্বিক হোমি কে ভাবার ‘সাংস্কৃতিক হাইব্রিডিটি’ ধারণার মাধ্যমে। ভাবার তত্ত্ব অনুযায়ী, বাংলাদেশের মতো উত্তর-ঔপনিবেশিক সমাজগুলো ঔপনিবেশিক উত্তরাধিকার ও আধুনিক জাতীয়তাবাদের মিশ্রণে নিজের পরিচয় গড়ে তোলে। কিন্তু বাস্তবে এই হাইব্রিডিড দ্বিমুখী বিরোধিতায় বিঘ্নিত হয়। তাই ভারত-পাকিস্তান বিভাজনের ইতিহাসের ছায়া ছেড়ে যায় না আমাদের।
হাসিনার শাসনকালে বাংলাদেশের সরকার ভারতকে ‘বড় ভাই’ হিসেবে দেখত এবং দেশে বলিউডের প্রভাব ছিল কৌশলগত। ভারতীয় তারকারা অগ্রগতি, অর্থনৈতিক সম্পর্ক ও পাকিস্তানবিরোধী ভাবনার প্রতিনিধিত্ব করত আমাদের এখানে এসে।
২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশে ভারতবিরোধী ভাবনা বেড়েছে, যা ‘প্যারাডাইম শিফট’ ঘটিয়েছে পাকিস্তানের দিকে। পাকিস্তানি শিল্পীরা এখন এই শূন্যতা পূরণ করছে, মুসলিম সংহতি বা ভারতবিরোধী সংহতির প্রতীক হিসেবে। যার দেখা মিলছে কূটনৈতিক উদ্যোগ এবং সাংস্কৃতিক প্রচেষ্টার ভেতরে। এই দ্বিমুখিতা স্বাভাবিক নয়, এটি রাজনৈতিকভাবে নির্মিত।
ভাবার তত্ত্ব অনুসারে, সত্যিকারের হাইব্রিডিটি বহুসাংস্কৃতিক প্রবাহকে অনুমোদন করে। কাউকে বাদ দিতে চায় না। তবে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে এটি শাসক-পরিবর্তনের ওপর নির্ভরশীল।
সমাজবিজ্ঞানী এডওয়ার্ড সাইদের ‘ওরিয়েন্টালিজম’-এর ধারণাও এখানে প্রাসঙ্গিক। যেখানে বাহ্যিক শক্তি (ভারত বা পাকিস্তান) সাংস্কৃতির মোড়কে বাংলাদেশকে পরিণত করে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতার যুদ্ধক্ষেত্রে। এর ফল কী?
ফল হলো এমন একটি সমাজ তৈরি হয়, যেখানে হানিয়া আমিরের চুলের রহস্য স্থানীয় শিল্পীদের ছাপিয়ে যায়। পাশাপাশি বিদেশি ঔজ্জ্বল্যের ওপর নির্ভরশীলতাও বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু এই সাংস্কৃতিক দ্বিমুখী অবস্থান আসলে গভীরভাবে ক্ষতিকর। প্রথমত, এটি বৈচিত্র্যকে দমিয়ে দেয়। এক প্রতিবেশীকে অগ্রাধিকার দিয়ে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশীয় সাংস্কৃতিক বলয়ের বড় অংশ থেকে দূরে সরে যায়। আবার অর্থনৈতিকভাবে, এটি ভারসাম্যপূর্ণ বাণিজ্যকেও বিঘ্নিত করে।
২০২৪ সালের আগে ভারতীয় ভারতের সঙ্গে সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানকে কেন্দ্র করে যেসব কর্মসংস্থান বা বাজার গড়ে উঠেছিল,পরে তা ভারতের বড় বাজার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পাকিস্তানের ছোট অর্থনীতির ওপর অতিনির্ভরশীল করে তুলতে পারে।
যদিও বাংলাদেশে পাকিস্তানি শিল্পীদের আগমন বৃদ্ধি পেয়েছে, কিন্তু উল্টোদিকে পাকিস্তানে বাংলাদেশী শিল্পীদের আমন্ত্রণের স্পষ্ট উদাহরণ খুবই কম।
গত দুবছরে কোনো উল্লেখযোগ্য বাংলাদেশি গায়ক বা অভিনয়শিল্পীর পাকিস্তান সফরের খবর পাওয়া যায়নি। যদিও কূটনৈতিক স্তরে পারস্পরিক বিনিময়ের উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। এই অসম পরিস্থিতি দেখায় যে এই সাংস্কৃতিক সম্পর্কের উন্নয়ন মূলত একতরফা। ফলে বাংলাদেশের স্থানীয় শিল্পীরা বিদেশি প্রভাবের ছায়ায় পড়ে যান, যা সত্যিকারের পারস্পরিক সম্মানের অভাবের ইঙ্গিতবাহী এবং এটি দীর্ঘমেয়াদে সাংস্কৃতিক স্বাধীনতাকেও প্রভাবিত করে।
হানিয়া আমিরের সফর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাময়িক উত্তেজনার কারণ হলেও এর ভেতরেই লুকিয়ে থাকতে পারে দীর্ঘমেয়াদি সাংস্কৃতিক অসুস্থতার ইঙ্গিত। যেহেতু এটি বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের ভারত ও পাকিস্তানমুখীনতার বাস্তবতাকেই তুলে ধরছে।
তাই এই দুই দেশের বৃত্তের থেকে বেরিয়ে অন্যান্য সংস্কৃতির শিল্পীদেরও আমন্ত্রণ জানাতে হবে। এর মাধ্যমে গড়ে তুলতে হবে একটি প্রাণবন্ত, অন্তর্ভুক্তিমূলক সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল। তাহলেই আমরা দুই দেশের সাংস্কৃতিক প্রভাবের বাইরে এসে বরং বিকাশ ঘটাতে পারব স্থানীয় প্রতিভার।
লেখক: সাংবাদিক
গতকাল বিকেলবেলা, এক পশলা বৃষ্টি কেবল শেষ হয়েছে। ফুরফুরে মেজাজ নিয়ে নিউজরুমে বসলাম ট্রেন্ডি কোনো ইস্যু নিয়ে স্যাটায়ার লিখব বলে। কিন্তু ট্রেন্ডে এমন কিছু পেলাম না, যা সম্পর্কে আমার জানাশোনা আছে। পেলাম হানিয়া আমিরকে। আমি তাঁকে চিনি না।
এই মহাপৃথিবীর ৮০০ কোটি মানুষের ভেতর বেশির ভাগকেই আমি চিনি না। চেনে না কেউই। ফলে এ নিয়ে তেমন দুঃখবোধ নেই। কিন্তু যখন একজন মানুষকে আমার দেশের লাখ লাখ মানুষ চেনে এবং চর্চা করে, তখন তাঁকে না চেনা তো কিছুটা বিব্রতকর। সেই বিব্রতবোধ থেকে বাঁচতে চেনার চেষ্টা করলাম হানিয়া আমিরকে।
ভদ্রমহিলা পাকিস্তানের জনপ্রিয় ছোটপর্দার অভিনেত্রী। রূপ-লাবণ্য নিয়ে যথেষ্ট খ্যাতি আছে তাঁর। সম্প্রতি শ্যাম্পু প্রস্তুতকারী এক বহুজাতিক প্রতিস্থান তাঁকে বাংলাদেশে নিয়ে এসেছে। হানিয়ার ঘন কালো ঝলঝলে চুলের রহস্যে ওই প্রতিষ্ঠানের অবদান দেশবাসীকে জানাতে। দেশবাসী অবশ্য সেই শ্যাম্পুর অবদান নিয়ে খুব বেশি চর্চা করছে না। যতটা করছে হানিয়া আমিরকে নিয়ে।
গত এক বছরে বাংলাদেশে পাকিস্তানি শিল্পীদের আনাগোনা বেড়েছে। যেমনটি আগে শুধু ভারতীয় শিল্পীরা আসতেন। এই পরিবর্তন ২০২৪ সালের আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকে লক্ষণীয়। এরপর পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক দ্রুত উন্নত হয়েছে। বেড়েছে দেশটির সঙ্গে সাংস্কৃতিক বিনিময়।
২০২৪ সালের ডিসেম্বরে বিখ্যাত পাকিস্তানি গায়ক রাহাত ফতেহ আলি খান বাংলাদেশে এসে কনসার্ট করে গেছেন। গানের ফাঁকে বলেছেন, ‘পাকিস্তানিরা সবসময় বাংলাদেশের সঙ্গে আছে।’
সম্প্রতি অভিনেত্রী হানিয়া আমিরের ঢাকা সফর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঝড় তুলেছে, ভক্তরা তাঁর বাংলা উচ্চারণ ও ঢাকা শহরে তাঁর মুহূর্তগুলো শেয়ার করছেন। হানিয়া আমিরের আগে আগেই এসে গেছেন এক ঝাঁক পাকিস্তানি কনটেন্ট ক্রিয়েটর।
২০২৪ সালের আগে ভারতীয় তারকারা এই ধরনের সফরে প্রাধান্য পেতেন। বলিউড তারকা শাহরুখ খান ঢাকায় একাধিকবার কনসার্ট করেছেন। সালমান খান, অরিজিৎ সিংয়ের মতো অন্যান্য তারকাও প্রায়ই এসেছেন। কিন্তু ২০২৪ সালের পর হাসিনার পতন ও অন্যায্য কূটনৈতিক সম্পর্কের জের ধরে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কে টানাপোড়েন বেড়েছে।
এই তারকা আমদানির দোলাচলকে সমাজবিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে আমরা ব্যাখ্যা করা যেতে পারে উত্তর-ঔপনিবেশিক তাত্ত্বিক হোমি কে ভাবার ‘সাংস্কৃতিক হাইব্রিডিটি’ ধারণার মাধ্যমে। ভাবার তত্ত্ব অনুযায়ী, বাংলাদেশের মতো উত্তর-ঔপনিবেশিক সমাজগুলো ঔপনিবেশিক উত্তরাধিকার ও আধুনিক জাতীয়তাবাদের মিশ্রণে নিজের পরিচয় গড়ে তোলে। কিন্তু বাস্তবে এই হাইব্রিডিড দ্বিমুখী বিরোধিতায় বিঘ্নিত হয়। তাই ভারত-পাকিস্তান বিভাজনের ইতিহাসের ছায়া ছেড়ে যায় না আমাদের।
হাসিনার শাসনকালে বাংলাদেশের সরকার ভারতকে ‘বড় ভাই’ হিসেবে দেখত এবং দেশে বলিউডের প্রভাব ছিল কৌশলগত। ভারতীয় তারকারা অগ্রগতি, অর্থনৈতিক সম্পর্ক ও পাকিস্তানবিরোধী ভাবনার প্রতিনিধিত্ব করত আমাদের এখানে এসে।
২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশে ভারতবিরোধী ভাবনা বেড়েছে, যা ‘প্যারাডাইম শিফট’ ঘটিয়েছে পাকিস্তানের দিকে। পাকিস্তানি শিল্পীরা এখন এই শূন্যতা পূরণ করছে, মুসলিম সংহতি বা ভারতবিরোধী সংহতির প্রতীক হিসেবে। যার দেখা মিলছে কূটনৈতিক উদ্যোগ এবং সাংস্কৃতিক প্রচেষ্টার ভেতরে। এই দ্বিমুখিতা স্বাভাবিক নয়, এটি রাজনৈতিকভাবে নির্মিত।
ভাবার তত্ত্ব অনুসারে, সত্যিকারের হাইব্রিডিটি বহুসাংস্কৃতিক প্রবাহকে অনুমোদন করে। কাউকে বাদ দিতে চায় না। তবে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে এটি শাসক-পরিবর্তনের ওপর নির্ভরশীল।
সমাজবিজ্ঞানী এডওয়ার্ড সাইদের ‘ওরিয়েন্টালিজম’-এর ধারণাও এখানে প্রাসঙ্গিক। যেখানে বাহ্যিক শক্তি (ভারত বা পাকিস্তান) সাংস্কৃতির মোড়কে বাংলাদেশকে পরিণত করে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতার যুদ্ধক্ষেত্রে। এর ফল কী?
ফল হলো এমন একটি সমাজ তৈরি হয়, যেখানে হানিয়া আমিরের চুলের রহস্য স্থানীয় শিল্পীদের ছাপিয়ে যায়। পাশাপাশি বিদেশি ঔজ্জ্বল্যের ওপর নির্ভরশীলতাও বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু এই সাংস্কৃতিক দ্বিমুখী অবস্থান আসলে গভীরভাবে ক্ষতিকর। প্রথমত, এটি বৈচিত্র্যকে দমিয়ে দেয়। এক প্রতিবেশীকে অগ্রাধিকার দিয়ে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশীয় সাংস্কৃতিক বলয়ের বড় অংশ থেকে দূরে সরে যায়। আবার অর্থনৈতিকভাবে, এটি ভারসাম্যপূর্ণ বাণিজ্যকেও বিঘ্নিত করে।
২০২৪ সালের আগে ভারতীয় ভারতের সঙ্গে সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানকে কেন্দ্র করে যেসব কর্মসংস্থান বা বাজার গড়ে উঠেছিল,পরে তা ভারতের বড় বাজার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পাকিস্তানের ছোট অর্থনীতির ওপর অতিনির্ভরশীল করে তুলতে পারে।
যদিও বাংলাদেশে পাকিস্তানি শিল্পীদের আগমন বৃদ্ধি পেয়েছে, কিন্তু উল্টোদিকে পাকিস্তানে বাংলাদেশী শিল্পীদের আমন্ত্রণের স্পষ্ট উদাহরণ খুবই কম।
গত দুবছরে কোনো উল্লেখযোগ্য বাংলাদেশি গায়ক বা অভিনয়শিল্পীর পাকিস্তান সফরের খবর পাওয়া যায়নি। যদিও কূটনৈতিক স্তরে পারস্পরিক বিনিময়ের উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। এই অসম পরিস্থিতি দেখায় যে এই সাংস্কৃতিক সম্পর্কের উন্নয়ন মূলত একতরফা। ফলে বাংলাদেশের স্থানীয় শিল্পীরা বিদেশি প্রভাবের ছায়ায় পড়ে যান, যা সত্যিকারের পারস্পরিক সম্মানের অভাবের ইঙ্গিতবাহী এবং এটি দীর্ঘমেয়াদে সাংস্কৃতিক স্বাধীনতাকেও প্রভাবিত করে।
হানিয়া আমিরের সফর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাময়িক উত্তেজনার কারণ হলেও এর ভেতরেই লুকিয়ে থাকতে পারে দীর্ঘমেয়াদি সাংস্কৃতিক অসুস্থতার ইঙ্গিত। যেহেতু এটি বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের ভারত ও পাকিস্তানমুখীনতার বাস্তবতাকেই তুলে ধরছে।
তাই এই দুই দেশের বৃত্তের থেকে বেরিয়ে অন্যান্য সংস্কৃতির শিল্পীদেরও আমন্ত্রণ জানাতে হবে। এর মাধ্যমে গড়ে তুলতে হবে একটি প্রাণবন্ত, অন্তর্ভুক্তিমূলক সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল। তাহলেই আমরা দুই দেশের সাংস্কৃতিক প্রভাবের বাইরে এসে বরং বিকাশ ঘটাতে পারব স্থানীয় প্রতিভার।
লেখক: সাংবাদিক
জাতিসংঘ ঘোষিত বিশ্ব শান্তি দিবস (২১ সেপ্টেম্বর) কথা শুনলে মানুষের মনে এমন ক্ষোভ ও ব্যঙ্গ জাগতেই পারে যে, এসব দিবস দিয়ে আর কী আসে যায়, যেখানে যোগাযোগ মাধ্যম খুললেই দেশবিদেশ নির্বিশেষে কেবল নিরন্তর যুদ্ধ, সন্ত্রাস ও সংঘর্ষের খবর। সঙ্গে সঙ্গে এমন হতাশাও তৈরি হয় যে বাংলাদেশেও শান্তি বলে কিছু নেই!
৮ ঘণ্টা আগেরাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনা আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে, প্রশাসনিক দুর্বলতা ও রাজনৈতিক প্রভাব শিক্ষাঙ্গনকে কীভাবে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। যদি এখনই যুক্তিনিষ্ঠ ও সাহসী পদক্ষেপ নেওয়া না হয়, তবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শুধু জ্ঞানের আলোকবর্তিকা নয়, অরাজকতার দুর্গে পরিণত হবে।
১১ ঘণ্টা আগেভবিষ্যতের দিকে তাকালে বৈশ্বিক গতিপথ দ্বিমুখী অথচ আন্তঃনির্ভরশীল ব্যবস্থার ইঙ্গিত দিচ্ছে। প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন ও সামরিক ক্ষমতায় যুক্তরাষ্ট্র কেন্দ্রীয় অবস্থানে থাকবে, কিন্তু তাদের প্রাধান্যকে চ্যালেঞ্জ জানাবে একাধিক উন্নয়নশীল দেশের ঐক্য। বিশ্বের বৃহত্তম জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করার কারণে এই বৈধতা অর্জন
১৪ ঘণ্টা আগেরাহুলের অভিযোগ, ভিন্ন রাজ্যে বসে কেন্দ্রীয়ভাবে সংগঠিত উপায়ে কংগ্রেসপন্থী, দলিত-আদিবাসী ও সংখ্যালঘু ভোটারদের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। কর্ণাটকের আলন্দ কেন্দ্রে ছয় হাজারেরও বেশি নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জমা পড়েছিল বলে অভিযোগ। রাহুল গান্ধীর মতে, ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়া আসলে নিতান্তই এ
২ দিন আগে