.png)

জাভেদ হুসেন

বহু বছর ধরে সারা বিশ্বের কাছে আমেরিকা মানেই পুঁজিবাদের চূড়ান্ত প্রতীক। এই দুনিয়া চলে ওয়াল স্ট্রিট, সিলিকন ভ্যালির ইশারাতে। ব্যক্তির ইচ্ছাই এখানে শেষ কথা। এখানে ‘সমাজতন্ত্রী’ শব্দটি আজও রাজনৈতিক আক্রমণ বা গালাগাল হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
কিন্তু একটা কথা এখন ইতিহাসের আড়ালে পড়ে গেছে। প্রথম বসতি স্থাপনের সময় থেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সাম্যবাদী ও সমাজতান্ত্রিক আদর্শের এক গভীর, দীর্ঘস্থায়ী ও বিস্ময়কর ঐতিহ্য লুকিয়ে আছে। বাংলাদেশের মতো জায়গা থেকে যারা মার্কিন রাজনীতি পর্যবেক্ষণ করেন, তাদের কাছে এই চাপা পড়া ইতিহাস এক শক্তিশালী বার্তা দেয়। এমনকি মুক্তবাজারের জন্য সবচেয়ে বিখ্যাত দেশটির মধ্যেও সবার কল্যাণ আর সমাজের সম্পদ ভাগ করে নেওয়ার আকাঙ্ক্ষা মানুষের মনের গভীরে থেকে যায়। এই আকাঙ্ক্ষা কোন সমাজই এড়িয়ে যেতে পারে না।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সমাজতান্ত্রিক চেতনার শিকড় মার্ক্সবাদের থেকেও অনেক পুরোনো। তখনও শিল্প শ্রমিকরা সংগঠিত হওয়ার কথা ভাবেনি। কারণ তখন শিল্প শ্রমের জায়গাই সেই অর্থে গড়ে অঠেনি। তারও আগে ধর্মীয় ও দার্শনিক আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে মানুষ যুক্তরাষ্ট্রে সাম্যবাদের বীজ বুনেছিলেন।
১৮ ও ১৯ শতকে শেকার্স এবং আমানা কলোনির মতো ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলো তাদের বিশ্বাসের ভিত্তিতে সম্পত্তি, শ্রম এবং উৎপাদনের উপর সমাজের সবার সমান মালিকানা প্রতিষ্ঠা করেছিল। তারা মনে করত, সম্পদ ভাগ করে নেওয়া কোনো রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বিষয় নয়, বরং নৈতিক কর্তব্য।
পাশাপাশি ছিলেন দার্শনিক স্বপ্নদ্রষ্টারা। রবার্ট ওয়েন-এর মতো চিন্তাবিদরা ইন্ডিয়ানার নিউ হারমনি-র মতো ইউটোপিয়ান সম্প্রদায় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তাদের লক্ষ্য ছিল—শিল্প পুঁজিবাদের লোভ আর শোষণ থেকে মুক্ত হয়ে একটি সম্পূর্ণ সমবায়মূলক সমাজ তৈরি করা। যুক্তরাষ্ট্রের এই শুরুর দিকের প্রচেষ্টাগুলো একটা জিনিসের প্রমাণ দেয়। আজকের বার্নি সেন্ডার্স আর জোহরান মামদানি যে আমেরিকা চাইছেন, তা নতুন কিছু নয়। এই চাওয়া আমেরিকার শুরুর দিন থেকেই তাদের হৃদয়ের গভীরে আছে। আমেরিকার মাটিতে ব্যক্তিগত সম্পত্তি নিয়ে প্রশ্ন তোলা এবং সবাই মিলে ভালো থাকার ধারণা বাইরে থেকে আসা কিছু নয়। এই চাওয়া আমেরিকার ইতিহাসেরই অংশ।
শিল্প বিপ্লব এই ধারণাকে আরও শক্তিশালী রাজনৈতিক শক্তিতে পরিণত করে। ১৯০১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় সোশ্যালিস্ট পার্টি অফ আমেরিকার নেতৃত্ব দেন বাগ্মী শ্রমিক নেতা ইউজিন ভি ডেবস।
এই দলটি অভাবনীয় সাফল্য পেয়েছিল। ডেবস পাঁচবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দাঁড়িয়েছিলেন। একবার তো জেল থেকেই প্রচারণা চালিয়ে প্রায় ১০ লাখ ভোট পেয়েছিলেন। স্থানীয় পর্যায়ে সমাজতন্ত্রীরা শত শত নির্বাচনে জয়ী হন।
মিলওয়াকির মতো শহরে তারা ‘স্যুয়ার সোশ্যালিজম’ নামে পরিচিত এক কার্যকর মডেল তৈরি করেছিলেন। অর্থাৎ, তারা শহরের বর্জ্য নিষ্কাশন, জনস্বাস্থ্য, পার্ক তৈরি এবং পৌরসভার সম্পত্তিগুলো জনস্বার্থে উন্নত করার মতো বাস্তববাদী বিষয়গুলোতে নজর দিয়েছিলেন। তারা প্রমাণ করেছিলেন, সমাজতন্ত্র পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, কার্যকর এবং জনমুখী স্থানীয় প্রশাসন পর্যন্ত রাজনীতির বিষয় হয়ে উঠতে পারে।
তবে এই সাফল্য বেশিদিন ধরে রাখা যায়নি। এর মধ্যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ হোল। উত্থান ঘটল সোভিয়েত ইউনিয়নের। সমাজতন্ত্র তখন যুক্তরাষ্ট্র বিরোধিতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে সেই দেশের শাসকগষ্ঠী। শুরু হয় সমাজতন্ত্রীদের বিরুদ্ধে কঠোর দমন-পীড়ন। ১৯৫০-এর দশকে ম্যাকার্থিবাদের মতো ‘রেড স্কেয়ার’, মানে সাম্যবাদী ভীতির প্রচারণা। সমাজতন্ত্রকে একরকম গলা টিপে মারা হয়। এর ফলে শব্দটি আমেরিকার মূলধারার রাজনীতি থেকে বহু দূরে চলে যায়।
তবে এই আদর্শ মার্কিন দেশে একেবারে মরে যায়নি। তা আড়ালে থেকে মূলধারার নীতিতে মিশে যায়।
মার্কিন ইতিহাসের সবচেয়ে বড় পরিহাস হলো—আমেরিকানরা এখন যে সামাজিক সুরক্ষাগুলো স্বাভাবিক বলে ধরে নেয়, তার বেশিরভাগই ছিল সমাজতন্ত্রীদের পুরোনো দাবি। মহামন্দার কারণে পুঁজিবাদী ব্যবস্থা ধসে পড়ছিল। ওয়ালস্ট্রীট তখন টালমাটাল। দলে দলে মানুষ আত্মহত্যা করছে। তখন প্রেসিডেন্ট ফ্র্যাঙ্কলিন ডি. রুজভেল্টের ‘নিউ ডিল’ কর্মসূচিতে সেই সমাজতন্ত্রীদের বহু বছরের পুরোনো ধারণাগুলোই গ্রহণ করেন।
সোশ্যাল সিকিউরিটি, বেকার ভাতা, ন্যূনতম মজুরি আর ব্যাপক সরকারি কর্মসংস্থান কর্মসূচি—এগুলো সবই সমাজতন্ত্রীরা বহু আগে চেয়েছিল। রুজভেল্ট পুঁজিবাদের শত্রুদের ধারণাগুলো গ্রহণ করে কার্যকরভাবে আমেরিকান পুঁজিবাদকে রক্ষা করেছিলেন।
একুশ শতকে মার্কিন পুঁজিবাদী অর্থনীতির মডেল একের পর এক সংকটে পড়তে থাকে। ২০০৮ সালের অর্থনৈতিক মন্দা, আকাশছোঁয়া শিক্ষা ঋণ আর চরম অর্থনৈতিক বৈষম্য—এই সব মিলে সমাজতান্ত্রিক ভাবনার পুনরুজ্জীবনের জন্য উর্বর ক্ষেত্র তৈরি করেছে।
এই সময়েই সামনে এলেন সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। নিজেকে গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্রী হিসেবে পরিচয় দিয়ে তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়েন। এর ফলে ‘মেডিকেয়ার ফর অল’, মানে সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা এবং বিনামূল্যে উচ্চশিক্ষার মতো একসময়কার নিষিদ্ধ প্রস্তাবগুলো সাধারণ মানুষের মধ্যে আলোচনার বিষয় হয়ে ওঠে। তিনি সমাজতন্ত্রকে সোভিয়েত মডেলের বদলে সুইডেন-ডেনমার্কের মতো কল্যাণ রাষ্ট্রের মডেল হিসেবে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরেন।
এই আন্দোলন এখন স্থানীয় পর্যায়েও জয় পাচ্ছে। নিউ ইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলিতে জোহরান মামদানির মতো নেতাদের উত্থানের প্রমাণ। তিনি বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণ, ভাড়াটিয়াদের সুরক্ষা এবং সরকারি বাসস্থানের মতো কর্মসূচিতে জোর দিয়ে জয়ী হয়েছেন। এগুলোর সবই এক শ বছর আগের ‘স্যুয়ার সোশ্যালিজম’-এর বাস্তববাদী নীতিরই প্রতিধ্বনি।
আমেরিকা একটি নিছক পুঁজিবাদী রাষ্ট্র—এই ধারণাটি তার নিজেরই এক ভুলে যাওয়া অতীত থেকে তৈরি হওয়া মিথ্যা। আসল সত্য হলো, সবার কল্যাণের জন্য লড়াই আমেরিকান জীবনের এক অবিচ্ছিন্ন এবং গভীর স্রোত। সেই লড়াই কখনো এসেছে ধর্মীয় সম্প্রদায়ের আধ্যাত্মিক আদর্শ থেকে কখনো আজকের রাজনীতিবিদদের কাছ থেকে। মামদানির বিজয় মনে করিয়ে দিচ্ছে, এই সংগ্রাম যতটা না অতীত তার চেয়ে বেশি আমেরিকার ভবিষ্যৎ।
জাভেদ হুসেন: লেখক ও অনুবাদক

বহু বছর ধরে সারা বিশ্বের কাছে আমেরিকা মানেই পুঁজিবাদের চূড়ান্ত প্রতীক। এই দুনিয়া চলে ওয়াল স্ট্রিট, সিলিকন ভ্যালির ইশারাতে। ব্যক্তির ইচ্ছাই এখানে শেষ কথা। এখানে ‘সমাজতন্ত্রী’ শব্দটি আজও রাজনৈতিক আক্রমণ বা গালাগাল হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
কিন্তু একটা কথা এখন ইতিহাসের আড়ালে পড়ে গেছে। প্রথম বসতি স্থাপনের সময় থেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সাম্যবাদী ও সমাজতান্ত্রিক আদর্শের এক গভীর, দীর্ঘস্থায়ী ও বিস্ময়কর ঐতিহ্য লুকিয়ে আছে। বাংলাদেশের মতো জায়গা থেকে যারা মার্কিন রাজনীতি পর্যবেক্ষণ করেন, তাদের কাছে এই চাপা পড়া ইতিহাস এক শক্তিশালী বার্তা দেয়। এমনকি মুক্তবাজারের জন্য সবচেয়ে বিখ্যাত দেশটির মধ্যেও সবার কল্যাণ আর সমাজের সম্পদ ভাগ করে নেওয়ার আকাঙ্ক্ষা মানুষের মনের গভীরে থেকে যায়। এই আকাঙ্ক্ষা কোন সমাজই এড়িয়ে যেতে পারে না।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সমাজতান্ত্রিক চেতনার শিকড় মার্ক্সবাদের থেকেও অনেক পুরোনো। তখনও শিল্প শ্রমিকরা সংগঠিত হওয়ার কথা ভাবেনি। কারণ তখন শিল্প শ্রমের জায়গাই সেই অর্থে গড়ে অঠেনি। তারও আগে ধর্মীয় ও দার্শনিক আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে মানুষ যুক্তরাষ্ট্রে সাম্যবাদের বীজ বুনেছিলেন।
১৮ ও ১৯ শতকে শেকার্স এবং আমানা কলোনির মতো ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলো তাদের বিশ্বাসের ভিত্তিতে সম্পত্তি, শ্রম এবং উৎপাদনের উপর সমাজের সবার সমান মালিকানা প্রতিষ্ঠা করেছিল। তারা মনে করত, সম্পদ ভাগ করে নেওয়া কোনো রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বিষয় নয়, বরং নৈতিক কর্তব্য।
পাশাপাশি ছিলেন দার্শনিক স্বপ্নদ্রষ্টারা। রবার্ট ওয়েন-এর মতো চিন্তাবিদরা ইন্ডিয়ানার নিউ হারমনি-র মতো ইউটোপিয়ান সম্প্রদায় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তাদের লক্ষ্য ছিল—শিল্প পুঁজিবাদের লোভ আর শোষণ থেকে মুক্ত হয়ে একটি সম্পূর্ণ সমবায়মূলক সমাজ তৈরি করা। যুক্তরাষ্ট্রের এই শুরুর দিকের প্রচেষ্টাগুলো একটা জিনিসের প্রমাণ দেয়। আজকের বার্নি সেন্ডার্স আর জোহরান মামদানি যে আমেরিকা চাইছেন, তা নতুন কিছু নয়। এই চাওয়া আমেরিকার শুরুর দিন থেকেই তাদের হৃদয়ের গভীরে আছে। আমেরিকার মাটিতে ব্যক্তিগত সম্পত্তি নিয়ে প্রশ্ন তোলা এবং সবাই মিলে ভালো থাকার ধারণা বাইরে থেকে আসা কিছু নয়। এই চাওয়া আমেরিকার ইতিহাসেরই অংশ।
শিল্প বিপ্লব এই ধারণাকে আরও শক্তিশালী রাজনৈতিক শক্তিতে পরিণত করে। ১৯০১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় সোশ্যালিস্ট পার্টি অফ আমেরিকার নেতৃত্ব দেন বাগ্মী শ্রমিক নেতা ইউজিন ভি ডেবস।
এই দলটি অভাবনীয় সাফল্য পেয়েছিল। ডেবস পাঁচবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দাঁড়িয়েছিলেন। একবার তো জেল থেকেই প্রচারণা চালিয়ে প্রায় ১০ লাখ ভোট পেয়েছিলেন। স্থানীয় পর্যায়ে সমাজতন্ত্রীরা শত শত নির্বাচনে জয়ী হন।
মিলওয়াকির মতো শহরে তারা ‘স্যুয়ার সোশ্যালিজম’ নামে পরিচিত এক কার্যকর মডেল তৈরি করেছিলেন। অর্থাৎ, তারা শহরের বর্জ্য নিষ্কাশন, জনস্বাস্থ্য, পার্ক তৈরি এবং পৌরসভার সম্পত্তিগুলো জনস্বার্থে উন্নত করার মতো বাস্তববাদী বিষয়গুলোতে নজর দিয়েছিলেন। তারা প্রমাণ করেছিলেন, সমাজতন্ত্র পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, কার্যকর এবং জনমুখী স্থানীয় প্রশাসন পর্যন্ত রাজনীতির বিষয় হয়ে উঠতে পারে।
তবে এই সাফল্য বেশিদিন ধরে রাখা যায়নি। এর মধ্যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ হোল। উত্থান ঘটল সোভিয়েত ইউনিয়নের। সমাজতন্ত্র তখন যুক্তরাষ্ট্র বিরোধিতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে সেই দেশের শাসকগষ্ঠী। শুরু হয় সমাজতন্ত্রীদের বিরুদ্ধে কঠোর দমন-পীড়ন। ১৯৫০-এর দশকে ম্যাকার্থিবাদের মতো ‘রেড স্কেয়ার’, মানে সাম্যবাদী ভীতির প্রচারণা। সমাজতন্ত্রকে একরকম গলা টিপে মারা হয়। এর ফলে শব্দটি আমেরিকার মূলধারার রাজনীতি থেকে বহু দূরে চলে যায়।
তবে এই আদর্শ মার্কিন দেশে একেবারে মরে যায়নি। তা আড়ালে থেকে মূলধারার নীতিতে মিশে যায়।
মার্কিন ইতিহাসের সবচেয়ে বড় পরিহাস হলো—আমেরিকানরা এখন যে সামাজিক সুরক্ষাগুলো স্বাভাবিক বলে ধরে নেয়, তার বেশিরভাগই ছিল সমাজতন্ত্রীদের পুরোনো দাবি। মহামন্দার কারণে পুঁজিবাদী ব্যবস্থা ধসে পড়ছিল। ওয়ালস্ট্রীট তখন টালমাটাল। দলে দলে মানুষ আত্মহত্যা করছে। তখন প্রেসিডেন্ট ফ্র্যাঙ্কলিন ডি. রুজভেল্টের ‘নিউ ডিল’ কর্মসূচিতে সেই সমাজতন্ত্রীদের বহু বছরের পুরোনো ধারণাগুলোই গ্রহণ করেন।
সোশ্যাল সিকিউরিটি, বেকার ভাতা, ন্যূনতম মজুরি আর ব্যাপক সরকারি কর্মসংস্থান কর্মসূচি—এগুলো সবই সমাজতন্ত্রীরা বহু আগে চেয়েছিল। রুজভেল্ট পুঁজিবাদের শত্রুদের ধারণাগুলো গ্রহণ করে কার্যকরভাবে আমেরিকান পুঁজিবাদকে রক্ষা করেছিলেন।
একুশ শতকে মার্কিন পুঁজিবাদী অর্থনীতির মডেল একের পর এক সংকটে পড়তে থাকে। ২০০৮ সালের অর্থনৈতিক মন্দা, আকাশছোঁয়া শিক্ষা ঋণ আর চরম অর্থনৈতিক বৈষম্য—এই সব মিলে সমাজতান্ত্রিক ভাবনার পুনরুজ্জীবনের জন্য উর্বর ক্ষেত্র তৈরি করেছে।
এই সময়েই সামনে এলেন সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। নিজেকে গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্রী হিসেবে পরিচয় দিয়ে তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়েন। এর ফলে ‘মেডিকেয়ার ফর অল’, মানে সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা এবং বিনামূল্যে উচ্চশিক্ষার মতো একসময়কার নিষিদ্ধ প্রস্তাবগুলো সাধারণ মানুষের মধ্যে আলোচনার বিষয় হয়ে ওঠে। তিনি সমাজতন্ত্রকে সোভিয়েত মডেলের বদলে সুইডেন-ডেনমার্কের মতো কল্যাণ রাষ্ট্রের মডেল হিসেবে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরেন।
এই আন্দোলন এখন স্থানীয় পর্যায়েও জয় পাচ্ছে। নিউ ইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলিতে জোহরান মামদানির মতো নেতাদের উত্থানের প্রমাণ। তিনি বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণ, ভাড়াটিয়াদের সুরক্ষা এবং সরকারি বাসস্থানের মতো কর্মসূচিতে জোর দিয়ে জয়ী হয়েছেন। এগুলোর সবই এক শ বছর আগের ‘স্যুয়ার সোশ্যালিজম’-এর বাস্তববাদী নীতিরই প্রতিধ্বনি।
আমেরিকা একটি নিছক পুঁজিবাদী রাষ্ট্র—এই ধারণাটি তার নিজেরই এক ভুলে যাওয়া অতীত থেকে তৈরি হওয়া মিথ্যা। আসল সত্য হলো, সবার কল্যাণের জন্য লড়াই আমেরিকান জীবনের এক অবিচ্ছিন্ন এবং গভীর স্রোত। সেই লড়াই কখনো এসেছে ধর্মীয় সম্প্রদায়ের আধ্যাত্মিক আদর্শ থেকে কখনো আজকের রাজনীতিবিদদের কাছ থেকে। মামদানির বিজয় মনে করিয়ে দিচ্ছে, এই সংগ্রাম যতটা না অতীত তার চেয়ে বেশি আমেরিকার ভবিষ্যৎ।
জাভেদ হুসেন: লেখক ও অনুবাদক
.png)

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হলে বিএনপি কীভাবে যোগ্যতা ও দক্ষতার ভিত্তিতে একটি 'জাতীয় ঐক্যের সরকার' গঠন করতে চায়, কীভাবে এক কোটি কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং কৌশলগত স্বকীয়তা বজায় রেখে বৈদেশিক নীতি পরিচালনা করতে চায় ইত্যাদি বিষয় নিয়ে ঢাকা
৫ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক সংকট, সংস্কার, গণভোটের দাবি এবং আগামী নির্বাচনসহ জামায়াতে ইসলামীর সার্বিক মূল্যায়ন ও রাজনৈতিক লক্ষ্য নিয়ে ঢাকা স্ট্রিমের সঙ্গে খোলামেলা কথা বলেছেন দলটির সিনিয়র নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ঢাকা স্ট্রিমের সম্পাদক ইফতেখার মাহমুদ।
১ দিন আগে
সম্প্রতি ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল বলেন, গত সাড়ে তিন বছরে বাংলাদেশ, নেপাল ও শ্রীলঙ্কায় সরকার পরিবর্তন বা পতনের মূল কারণ ছিল ‘অদক্ষ ও দুর্বল শাসনব্যবস্থা’। গত শুক্রবার ভারতে পালিত ‘জাতীয় একতা দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত সরদার প্যাটেল স্মারক বক্তৃতায় দোভাল এ কথা বলেন।
১ দিন আগে
বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক সংকট, সংস্কার, গণভোটের দাবি এবং আগামী নির্বাচনসহ জামায়াতে ইসলামীর সার্বিক মূল্যায়ন ও রাজনৈতিক লক্ষ্য নিয়ে ঢাকা স্ট্রিমের সঙ্গে খোলামেলা কথা বলেছেন দলটির সিনিয়র নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান।
২ দিন আগে