leadT1ad

ইন্দো-প্যাসিফিকে বাংলাদেশকে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে দেখছে যুক্তরাষ্ট্র

ওয়াশিংটনের কাছে বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলে দেশের ভূমিকার জন্য একটি মোড় ঘোরানো মুহূর্ত হতে পারে। মার্কিন কর্মকর্তারা স্পষ্ট করেছেন, ঢাকায় একটি স্থিতিশীল সরকার গঠিত হলে দুই দেশ একসাথে আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে পারবে।

স্ট্রিম সংবাদদাতা
নিউইয়র্ক
প্রকাশ : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২: ১৭
বাংলাদেশ একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। ছবি: সংগৃহীত।

যুক্তরাষ্ট্র তার ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলে (আইপিএস) বাংলাদেশকে ক্রমবর্ধমান গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে দেখছে। গত বছরের গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক রূপান্তরও নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে ওয়াশিংটন। মঙ্গলবার নিউইয়র্কে দেওয়া এক ব্রিফিংয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের গুরুত্ব তুলে ধরেন।

এক জ্যেষ্ঠ মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা আগামী বছরের শুরুতে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন দেখতে চাই।’ তিনি উল্লেখ করেন, সম্প্রতি মার্কিন প্রতিনিধিরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সেখানে নির্বাচন প্রস্তুতি ও আঞ্চলিক সহযোগিতাসহ নানা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘নতুন বছরে যখন সরকার গঠিত হবে, তখন আমাদের সম্পর্ক কীভাবে এগিয়ে নেওয়া যায় তা বুঝতে সহজ হবে।’

ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলে বাংলাদেশ

ওয়াশিংটনের মতে, বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা ও গণতান্ত্রিক অগ্রগতি সরাসরি বৃহত্তর আঞ্চলিক নিরাপত্তার সঙ্গে সম্পর্কিত। এর মধ্যে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় সহযোগিতাও অন্তর্ভুক্ত। ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা এ বিষয়ে কীভাবে একসাথে কাজ করব তা নিয়ে আলোচনা করেছি। যুক্তরাষ্ট্র এই সংকটে সবচেয়ে বড় দাতা। আমি মনে করি, আমাদের দুই দেশের একসাথে করার মতো অনেক কিছু আছে।’

এই বক্তব্য থেকে স্পষ্ট যে বাংলাদেশের রাজনৈতিক বন্দোবস্ত ও ভবিষ্যৎ সরকারই নির্ধারণ করবে যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে ঢাকার সঙ্গে আইপিএস-এর আওতায় কাজ করবে। আইপিএস কৌশলের লক্ষ্য হলো আঞ্চলিক নিরাপত্তা জোরদার করা, অর্থনৈতিক সংযোগ বাড়ানো এবং গণতান্ত্রিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা।

তরুণ প্রজন্ম ও ‘জেন জি বিপ্লব’

দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে তরুণদের নেতৃত্বাধীন আন্দোলন নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ওই জ্যেষ্ঠ মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকে সমর্থন করে তবে রাজনৈতিক সহিংসতার বিরোধী। তিনি বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকে সমর্থন করি। আমি দেখেছি, কিছু তরুণ নেপালে গ্রাফিতি পরিষ্কার করছে। আমরা তরুণদের প্রতিবাদে সমর্থন দেই — যতক্ষণ তা শান্তিপূর্ণ থাকে।’

অন্য এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জোর দিয়ে বলেন, তরুণদের সম্পৃক্ততা মার্কিন কূটনীতির একটি ধারাবাহিক অগ্রাধিকার। তিনি বলেন, ‘বিদেশে তরুণদের সঙ্গে যুক্ত হওয়াই আমাদের নীতি। যেখানে আমাদের কূটনৈতিক উপস্থিতি আছে, সেখানে আমরা তরুণদের সঙ্গে কথা বলতে চাই, শিক্ষা সহযোগিতা করতে চাই এবং যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে চাই। আমরা তাদেরকে শক্তিশালী ও বহুমাত্রিক সম্পর্ক গঠনের কেন্দ্রীয় শক্তি হিসেবে দেখি।’

সামনে কী অপেক্ষা করছে

ওয়াশিংটনের কাছে বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলে দেশের ভূমিকার জন্য একটি মোড় ঘোরানো মুহূর্ত হতে পারে। মার্কিন কর্মকর্তারা স্পষ্ট করেছেন, ঢাকায় একটি স্থিতিশীল সরকার গঠিত হলে দুই দেশ একসাথে আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে পারবে। এতে শরণার্থী সংকট থেকে শুরু করে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা পর্যন্ত নানা আঞ্চলিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সহজ হবে।

Ad 300x250

সম্পর্কিত