স্ট্রিম প্রতিবেদক
‘আমিও এ দেশের নাগরিক, অন্য সবার মতো স্বাভাবিক জীবনে বাঁচতে চাই। কেন আমি বিচার পাব না?’, বলতে বলতে চোখ মুছছিলেন পরী। প্রায় দুবছর ধরে অনিরাপদ ও বিপন্নভাবে বাঁচতে হচ্ছে তাঁকে।
আত্মসম্মান নিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে ঢাকায় পাড়ি জমিয়েছিলেন পরী। তারপর থেকে ভাগ্যের সঙ্গে লড়তে হচ্ছে তাঁকে। একটি ফুডকার্টের ব্যবসায় চলে তাঁর জীবন জীবিকা ও পড়াশোনা। কিন্তু দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা তাঁর জীবনে নতুন দুঃস্বপ্ন ডেকে আনে। ৫ আগস্টের ঘটনার পর থেকে স্থানীয় নতুন নেতাকর্মীরা বারবার চাপ দিতে থাকে ফুডকার্ট সরিয়ে নেওয়ার জন্য। একসময় হুমকি বাস্তব রূপ নেয়। পাঁচ মাস আগে একবার তাঁর ফুডকার্ট ভেঙে ফেলা হয়। সেনাবাহিনীর মধ্যস্থতায় তখনকার মতো সমাধান হলেও অনিশ্চয়তা মধ্যেই ছিলেন।
পরী স্ট্রিমকে বলেন, গত পরশুদিন বাসায় ফেরার পর তিনি খবর পান, ফুডকার্ট আবারও ভেঙে দেওয়া হয়েছে। পরদিন থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে পুলিশ তা আমলে নেয়নি।
তিনি পুলিশকে ফোন করে বলেন, ‘আমাদের ওপর হামলা হচ্ছে। প্লিজ ফোর্স পাঠান। আমাদের ওপর হামলা করা থামান।’ এ সময় ফোনে খবর আসে, তাঁর ফুডকার্ট পুরোপুরি গুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। দেড় লাখ টাকা দামের ফুডকার্ট, আর প্রায় ৫০ হাজার টাকার খাবার মুহূর্তেই ধ্বংস হয়ে গেছে।
দিশেহারা অবস্থায় নিকটবর্তী থানায় ছুটে যান পরী। সে সময় উত্তরা পশ্চিম থানায় কর্মরত ছিলেন আব্দুর রহিম মোল্লা। তিনি ভুক্তভোগীকে ধমকের সুরে বলেন, ‘কথা কম বলেন। আপনাদের সঙ্গে ফোর্স পাঠাতে হবে কেন?’
পরী আরও বলেন, ‘অভিযোগ করার প্রায় দুই-তিন ঘণ্টা পরে পুলিশ সেখানে আসে। পুলিশ সেখানে এসে কথা বলে অপরপক্ষের সঙ্গে। আমাদের সঙ্গে কথা বলেন পাঁচ মিনিটের মতো। তাদের সামনেই মার্কেট কমিটির লোকেরা স্লোগান দিতে দিতে এসে আমাদের ওপর হামলা করে।’
এ বিষয়ে জানতে উত্তরা পশ্চিম থানার ওসি আব্দুর রহিম মোল্লার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
পরীর অভিযোগ উত্তরা ৭ নম্বর সেক্টরের রাজউক মার্কেটের গলিতে তার ফুটকার্টটি ছিল। সেই মার্কেট কমিটির লোকজনই তার দোকান ভেঙে দিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে মার্কেট কমিটির মতি নামে একজনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথমে বলেন, কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ করা হয়েছে।
তবে অভিযোগকারী পরীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছনার অভিযোগের কথা জানালে তিনি বলেন, ‘আপনি মার্কেটে এসে কথা বলেন।’
কুষ্টিয়া সদরে জন্ম শাওন ইসলাম পরীর। পুরুষের শরীরে বড় হতে হতে ২০২০ সালে মেডিক্যাল চেকআপের মাধ্যমে তিনি জানতে পারেন—তিনি ইন্টারসেক্স। পরিবার তাঁকে আগলে নিলেও সমাজ কখনো মেনে নেয়নি। সেই মুহূর্ত থেকে চারপাশের দৃষ্টি আরও ভারী হয়ে ওঠে। শেষমেশ ২০২১ সালে সবকিছু ছেড়ে তিনি চলে আসেন ঢাকার উত্তরায়।
সেখানে আশ্রয় মেলে তৃতীয় লিঙ্গ সম্প্রদায়ের পরিচালিত এক পার্লারে। সেখান থেকেই নতুন জীবনের প্রথম আলো দেখতে পান। পুলিশের ডিআইজি হাবিবুর রহমানের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়, আর সেই পরিচয় হয়ে ওঠে আশীর্বাদস্বরূপ। পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছার কথা জানালে পুলিশ কর্মকর্তা তাঁকে ভর্তি করে দেন শান্তা মরিয়ম ইউনিভার্সিটিতে। উত্তরার বাসস্ট্যান্ডের পাশে এই ফুডকার্ট ব্যবসা দাঁড় করাতেও সহায়তা করেন।
সেই ফুডকার্টই ছিল তাঁর স্বপ্নের প্রতীক। সারা দিন পরিশ্রম করে সেখানে খাবার বিক্রি করতেন, আর সেই আয়ে চালাতেন পড়াশোনা, বই কেনা, টিউশন ফি ও হাতখরচ। ছোট্ট এক গাড়ির ভেতর তিনি সাজিয়েছিলেন নিজের জীবনের লড়াই, নিজের স্বপ্ন, নিজের সম্মান।
আজ তিনি দিশেহারা। যে ব্যবসা তাঁকে বাঁচিয়ে রেখেছিল, তা এক নিমিষে নিশ্চিহ্ন। আগের সম্প্রদায়ের কারো সঙ্গে এখন আর যোগাযোগ নেই। পুলিশও পাশে দাঁড়াচ্ছে না।
‘আমিও এ দেশের নাগরিক, অন্য সবার মতো স্বাভাবিক জীবনে বাঁচতে চাই। কেন আমি বিচার পাব না?’, বলতে বলতে চোখ মুছছিলেন পরী। প্রায় দুবছর ধরে অনিরাপদ ও বিপন্নভাবে বাঁচতে হচ্ছে তাঁকে।
আত্মসম্মান নিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে ঢাকায় পাড়ি জমিয়েছিলেন পরী। তারপর থেকে ভাগ্যের সঙ্গে লড়তে হচ্ছে তাঁকে। একটি ফুডকার্টের ব্যবসায় চলে তাঁর জীবন জীবিকা ও পড়াশোনা। কিন্তু দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা তাঁর জীবনে নতুন দুঃস্বপ্ন ডেকে আনে। ৫ আগস্টের ঘটনার পর থেকে স্থানীয় নতুন নেতাকর্মীরা বারবার চাপ দিতে থাকে ফুডকার্ট সরিয়ে নেওয়ার জন্য। একসময় হুমকি বাস্তব রূপ নেয়। পাঁচ মাস আগে একবার তাঁর ফুডকার্ট ভেঙে ফেলা হয়। সেনাবাহিনীর মধ্যস্থতায় তখনকার মতো সমাধান হলেও অনিশ্চয়তা মধ্যেই ছিলেন।
পরী স্ট্রিমকে বলেন, গত পরশুদিন বাসায় ফেরার পর তিনি খবর পান, ফুডকার্ট আবারও ভেঙে দেওয়া হয়েছে। পরদিন থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে পুলিশ তা আমলে নেয়নি।
তিনি পুলিশকে ফোন করে বলেন, ‘আমাদের ওপর হামলা হচ্ছে। প্লিজ ফোর্স পাঠান। আমাদের ওপর হামলা করা থামান।’ এ সময় ফোনে খবর আসে, তাঁর ফুডকার্ট পুরোপুরি গুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। দেড় লাখ টাকা দামের ফুডকার্ট, আর প্রায় ৫০ হাজার টাকার খাবার মুহূর্তেই ধ্বংস হয়ে গেছে।
দিশেহারা অবস্থায় নিকটবর্তী থানায় ছুটে যান পরী। সে সময় উত্তরা পশ্চিম থানায় কর্মরত ছিলেন আব্দুর রহিম মোল্লা। তিনি ভুক্তভোগীকে ধমকের সুরে বলেন, ‘কথা কম বলেন। আপনাদের সঙ্গে ফোর্স পাঠাতে হবে কেন?’
পরী আরও বলেন, ‘অভিযোগ করার প্রায় দুই-তিন ঘণ্টা পরে পুলিশ সেখানে আসে। পুলিশ সেখানে এসে কথা বলে অপরপক্ষের সঙ্গে। আমাদের সঙ্গে কথা বলেন পাঁচ মিনিটের মতো। তাদের সামনেই মার্কেট কমিটির লোকেরা স্লোগান দিতে দিতে এসে আমাদের ওপর হামলা করে।’
এ বিষয়ে জানতে উত্তরা পশ্চিম থানার ওসি আব্দুর রহিম মোল্লার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
পরীর অভিযোগ উত্তরা ৭ নম্বর সেক্টরের রাজউক মার্কেটের গলিতে তার ফুটকার্টটি ছিল। সেই মার্কেট কমিটির লোকজনই তার দোকান ভেঙে দিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে মার্কেট কমিটির মতি নামে একজনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথমে বলেন, কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ করা হয়েছে।
তবে অভিযোগকারী পরীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছনার অভিযোগের কথা জানালে তিনি বলেন, ‘আপনি মার্কেটে এসে কথা বলেন।’
কুষ্টিয়া সদরে জন্ম শাওন ইসলাম পরীর। পুরুষের শরীরে বড় হতে হতে ২০২০ সালে মেডিক্যাল চেকআপের মাধ্যমে তিনি জানতে পারেন—তিনি ইন্টারসেক্স। পরিবার তাঁকে আগলে নিলেও সমাজ কখনো মেনে নেয়নি। সেই মুহূর্ত থেকে চারপাশের দৃষ্টি আরও ভারী হয়ে ওঠে। শেষমেশ ২০২১ সালে সবকিছু ছেড়ে তিনি চলে আসেন ঢাকার উত্তরায়।
সেখানে আশ্রয় মেলে তৃতীয় লিঙ্গ সম্প্রদায়ের পরিচালিত এক পার্লারে। সেখান থেকেই নতুন জীবনের প্রথম আলো দেখতে পান। পুলিশের ডিআইজি হাবিবুর রহমানের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়, আর সেই পরিচয় হয়ে ওঠে আশীর্বাদস্বরূপ। পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছার কথা জানালে পুলিশ কর্মকর্তা তাঁকে ভর্তি করে দেন শান্তা মরিয়ম ইউনিভার্সিটিতে। উত্তরার বাসস্ট্যান্ডের পাশে এই ফুডকার্ট ব্যবসা দাঁড় করাতেও সহায়তা করেন।
সেই ফুডকার্টই ছিল তাঁর স্বপ্নের প্রতীক। সারা দিন পরিশ্রম করে সেখানে খাবার বিক্রি করতেন, আর সেই আয়ে চালাতেন পড়াশোনা, বই কেনা, টিউশন ফি ও হাতখরচ। ছোট্ট এক গাড়ির ভেতর তিনি সাজিয়েছিলেন নিজের জীবনের লড়াই, নিজের স্বপ্ন, নিজের সম্মান।
আজ তিনি দিশেহারা। যে ব্যবসা তাঁকে বাঁচিয়ে রেখেছিল, তা এক নিমিষে নিশ্চিহ্ন। আগের সম্প্রদায়ের কারো সঙ্গে এখন আর যোগাযোগ নেই। পুলিশও পাশে দাঁড়াচ্ছে না।
ফারুক ই আজম বলেছেন, ‘এতকাল ধরে আমাদের মধ্যে যে বৈষম্য ছিল, আগ্রাসন ছিল, জনগণের অধিকার বঞ্চনার যে বিষয় ছিল সেগুলো থেকে জাতির সেফ এক্সিট হলে আমরা খুশি।’
১ ঘণ্টা আগেক্রসফায়ারের নির্মমতা বর্ণনা করতে গিয়ে তাজুল ইসলাম বলেন, মিরপুরে একজনকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করা হয়, তার মাথায় ঝাঁকড়া চুল ছিল। চুলে আগুন লেগে যায়। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হা-হা করে হাসছিল। আমরা তদন্তের সময় এ বিষয়ে একজনকে প্রশ্ন করেছিলাম, মাথায় কেন গুলি করা হয়?
১ ঘণ্টা আগেরাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ছাত্রলীগকর্মী ফারুক হোসেন হত্যা মামলার সব আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। আজ রবিবার (১২ অক্টোবর) দুপুর ২টার দিকে রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক জুলফিকার উল্লাহ চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।
২ ঘণ্টা আগেসমাবর্তনের ফি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেসবুক পেজ ও বিভিন্ন শিক্ষার্থী গ্রুপে ক্ষোভ জানাচ্ছেন অনেকে। তাঁদের অভিযোগ, অন্যান্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় আশা ইউনিভার্সিটির নিবন্ধন ফি অনেক বেশি। অনেকে তাই সমাবর্তনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্তও জানিয়েছেন।
২ ঘণ্টা আগে