কৌরিত্র পোদ্দার তীর্থ
‘প্রথমে আমার প্রতিবেশীদের ঘর পোড়ানো হলো, এরপর আমার। পশ্চিম দিকে দৌড় দিলাম। কারণ, আর কোনো দিকে যাওয়ার উপায় ছিল না। যে দেশে জন্মালাম, সেটি ছাড়তে হলো। পাহাড় টপকে, কাদামাটি মাড়িয়ে, পানিতে সাঁতরে এখানে এলাম। আমার নাম ইয়াকুব এবং আমি একজন রোহিঙ্গা।’
জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) কাছে এভাবেই নিজের গল্প তুলে ধরেন মোহাম্মদ ইয়াকুব। তিনি ২০১৭ সালে মিয়ানমার থেকে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন।
আজ ২০ জুন, বিশ্ব শরণার্থী দিবস। জাতিসংঘ ঘোষিত এই দিনটি বিশ্বজুড়ে শরণার্থীদের সম্মান জানাতে উদযাপন করা হয়। জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) মতে, যে মানুষেরা বাধ্য হয়ে ভিটেমাটি ছেড়েছেন, তাদের স্বপ্ন ও অধিকারের কথা বলতে এই দিনটি পালন করা হয়। ১৯৫১ সালের শরণার্থী কনভেনশনের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ২০০১ সাল থেকে দিনটি পালিত হয়ে আসছে।
এই দিবসকে সামনে রেখে গত ১২ জুন ইউএনএইচসিআর তাদের বার্ষিক প্রতিবেদন ‘গ্লোবাল ট্রেন্ডস রিপোর্ট’ প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়, ২০২৪ সালের শেষ নাগাদ বিশ্বজুড়ে প্রায় ১২ কোটি ৩২ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। ২০২৩ সালের চেয়ে যা ৭০ লাখ বেশি। যুদ্ধাবস্থা, মানবাধিকার লঙ্ঘনসহ নানা কারণে মানুষ ঘরছাড়া হয়েছেন। প্রতিবেদনটির তথ্য মতে, বিশ্বের প্রতি ৬৭ জন মানুষের মধ্যে একজন শরণার্থী।
বিশ্বজুড়ে গত এক দশকে বাস্তুচ্যুতির হার প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে। তবে চলতি বছর এপ্রিলের শেষে এ হার ১ শতাংশের মতো কমেছে। ইউএনএইচসিআরের হিসাবে এ সময় বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা দাঁড়ায় ১২ কোটি ২১ লাখে। গত এক দশকেরও বেশি সময়ে এটিই প্রথম, যেখানে শরণার্থী সংখ্যা কমেছে।
এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য হলো ‘শরণার্থীদের সঙ্গে সংহতি’। ইউএনএইচসিআর বলছে, এ সংহতি মানে শুধু কথা নয়, কাজের মাধ্যমে শরণার্থীদের পাশে দাঁড়ানো। অর্থাৎ, তাঁদের কথা মন দিয়ে শোনা ও তাঁদের গল্পগুলো তুলে আনা। সেইসাথে, শরণার্থীদের নিরাপত্তার অধিকার রক্ষা করা ও এই সংকটের সমাধান খোঁজা–যাতে একদিন তাঁরা নিরাপদে নিজ ঘরে ফিরতে পারেন।
বাংলাদেশ ও রোহিঙ্গা সংকট
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু, বুচিথং ও রাসেথং জেলার রোহিঙ্গাদের ওপর হামলা শুরু করে দেশটির সেনাবাহিনী। সে সময় ওই অঞ্চলগুলোর অনেকেই পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। পরেও এ ধারা চলতে থাকে।
বর্তমানে বাংলাদেশে ১২ লাখের ওপরে রোহিঙ্গা রয়েছে। তাদের জন্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সহযোগিতায় বাংলাদেশ সরকার খাদ্য, চিকিৎসা ও শিক্ষাসেবা চালু রেখেছে। তবে দিন দিন রোহিঙ্গাদের সংখ্যা বাড়লেও অর্থ সহায়তা তেমন বাড়েনি।
বিশ্বজুড়েই শরণার্থী তহবিলের অবস্থা এমন। ইউএনএইচসিআরের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত এক দশকে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা দ্বিগুণ হলেও তহবিল এখনো ২০১৫ সালের সমান। ফলে উন্নয়নশীল বা নিম্ন আয়ের দেশগুলো শরণার্থী সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে।
আজ শরণার্থী দিবসের বার্তায় এ বিষয়টি উল্লেখ করেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। তিনি বলেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই উন্নয়নশীল দেশগুলোকে শরণার্থীদের দায়িত্ব নিতে হয়। কিন্তু বিষয়টি উচিত নয়, আর টেকসইও নয়।
চলতি বছরের ৫ মার্চ বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির তরফ থেকে জানানো হয়, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য মাসিক খাবারের বরাদ্দ জনপ্রতি ১২ ডলার থেকে নামিয়ে ৬ ডলারে আনা হবে। তবে আন্তোনিও গুতেরেসের রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনের পর এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে সংস্থাটি।
রোহিঙ্গাদের জন্মহার ও স্বাস্থ্যবিষয়ক বিভিন্ন ইস্যুতেও প্রতিকূলতার মুখোমুখি হতে হয়েছে বাংলাদেশকে। ২০২৩ সালে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, রোহিঙ্গা শিবিরে প্রতিদিন প্রায় ৯৫ জন শিশুর জন্ম হয়। রোহিঙ্গাদের জন্মহার নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশও করা হয় সে প্রতিবেদনে।
ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, রোহিঙ্গা শিবির এইচআইভি/এইডস, হেপাটাইসিস সি, ডিপথেরিয়ার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের আগস্ট পর্যন্ত জেলাটিতে ৭১০ জন মানুষ এইচআইভি পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ৬১২ জন রোহিঙ্গা। গণমাধ্যমের তথ্য অনুসারে, ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬১ জন রোহিঙ্গা এইচআইভিতে মৃত্যুবরণ করেছেন।
চলতি বছরের ২৭ এপ্রিল রাখাইনে মানবিক করিডর দেওয়ার ব্যাপারে নীতিগত সম্মতির কথা জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। সে সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এর প্রতিবাদ জানায়। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান মানবিক করিডরকে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের সঙ্গে জড়িত স্পর্শকাতর বিষয় বলে আখ্যায়িত করেন।
পরে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান বলেন, মানবিক করিডর নয়, বরং একটি ত্রাণ চ্যানেলের কথা বলা হয়েছে।
রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনে এসে আশ্রিত রোহিঙ্গারা নিজ দেশে ফিরে যেতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন আন্তোনিও গুতেরেস। তবে এ জন্য মিয়ানমারে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা দরকার বলেও তিনি জানান।
বাড়ছে বাংলাদেশি শরণার্থীর সংখ্যা
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশিদের শরণার্থী হওয়ার সংখ্যা বাড়ছে। গত পাঁচ বছরে এ হার ঊর্ধ্বমুখী। ২০২৪ সালে ২৮ হাজার ৪৭৩ এবং ২০২৩ সালে ২৪ হাজার ১২৬ জন বাংলাদেশি জাতিসংঘে শরণার্থী হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছেন। এ ছাড়া ২০২২ সালে ২৩ হাজার ৯৩৫ জন, ২০২১ সালে ২২ হাজার ৬৭২ জন এবং ২০২০ সালে ১৮ হাজার ৯৪৮ জন বাংলাদেশি জাতিসংঘের কাছে আবেদন করেছেন নিজেদের শরণার্থী দাবি করে। ইউএনএইচসিআরের পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য পাওয়া যায়।
ইনফোমাইগ্রেন্টসের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের প্রথম তিন মাসে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়া তৃতীয় সর্বোচ্চ শরণার্থী ছিল বাংলাদেশি। প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানে ছিল যথাক্রমে মালি ও সেনেগালের অধিবাসীরা।
শুধু শরণার্থী নয়, রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী হিসেবেও এ সময় বিপুলসংখ্যক মানুষ দেশ ছেড়েছেন। ইউএনএইচসিআর বলছে, গত বছর ১ লাখ ৮ হাজার ১৩১ বাংলাদেশি বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেছেন। ২০২৩ সালে এ সংখ্যা ছিল ৭৫ হাজার ৮৬৭ জন। ২০২২ সালে ৬১ হাজার ২৯৮ জন, ২০২১ সালে ৬৫ হাজার ৪৯৫ জন এবং ২০২০ সালে ৬৪ হাজার ৬৩৬ জন বাংলাদেশি বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেন।
ইউরোপের যুক্তরাজ্য, পর্তুগাল, ইতালি, ফ্রান্স, জার্মানির মতো দেশে নিবন্ধনের জন্য বেশি আবেদন করছেন বাংলাদেশিরা। তা ছাড়া, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও মালয়েশিয়াতেও অনেকে আশ্রয় খুঁজেছেন। এমনকি ২০২৪ সালে সোমালিয়াতেও ছয় বাংলাদেশি শরণার্থী হিসেবে নিবন্ধিত হন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, অর্থনৈতিক কারণে অধিকাংশ ব্যক্তি দেশ ছাড়ছেন। আর এর সুযোগ নিচ্ছেন মানবপাচারকারীরা। পাচারের শিকার অনেকেই যুদ্ধে পর্যন্ত জড়াচ্ছেন।
‘প্রথমে আমার প্রতিবেশীদের ঘর পোড়ানো হলো, এরপর আমার। পশ্চিম দিকে দৌড় দিলাম। কারণ, আর কোনো দিকে যাওয়ার উপায় ছিল না। যে দেশে জন্মালাম, সেটি ছাড়তে হলো। পাহাড় টপকে, কাদামাটি মাড়িয়ে, পানিতে সাঁতরে এখানে এলাম। আমার নাম ইয়াকুব এবং আমি একজন রোহিঙ্গা।’
জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) কাছে এভাবেই নিজের গল্প তুলে ধরেন মোহাম্মদ ইয়াকুব। তিনি ২০১৭ সালে মিয়ানমার থেকে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন।
আজ ২০ জুন, বিশ্ব শরণার্থী দিবস। জাতিসংঘ ঘোষিত এই দিনটি বিশ্বজুড়ে শরণার্থীদের সম্মান জানাতে উদযাপন করা হয়। জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) মতে, যে মানুষেরা বাধ্য হয়ে ভিটেমাটি ছেড়েছেন, তাদের স্বপ্ন ও অধিকারের কথা বলতে এই দিনটি পালন করা হয়। ১৯৫১ সালের শরণার্থী কনভেনশনের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ২০০১ সাল থেকে দিনটি পালিত হয়ে আসছে।
এই দিবসকে সামনে রেখে গত ১২ জুন ইউএনএইচসিআর তাদের বার্ষিক প্রতিবেদন ‘গ্লোবাল ট্রেন্ডস রিপোর্ট’ প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়, ২০২৪ সালের শেষ নাগাদ বিশ্বজুড়ে প্রায় ১২ কোটি ৩২ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। ২০২৩ সালের চেয়ে যা ৭০ লাখ বেশি। যুদ্ধাবস্থা, মানবাধিকার লঙ্ঘনসহ নানা কারণে মানুষ ঘরছাড়া হয়েছেন। প্রতিবেদনটির তথ্য মতে, বিশ্বের প্রতি ৬৭ জন মানুষের মধ্যে একজন শরণার্থী।
বিশ্বজুড়ে গত এক দশকে বাস্তুচ্যুতির হার প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে। তবে চলতি বছর এপ্রিলের শেষে এ হার ১ শতাংশের মতো কমেছে। ইউএনএইচসিআরের হিসাবে এ সময় বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা দাঁড়ায় ১২ কোটি ২১ লাখে। গত এক দশকেরও বেশি সময়ে এটিই প্রথম, যেখানে শরণার্থী সংখ্যা কমেছে।
এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য হলো ‘শরণার্থীদের সঙ্গে সংহতি’। ইউএনএইচসিআর বলছে, এ সংহতি মানে শুধু কথা নয়, কাজের মাধ্যমে শরণার্থীদের পাশে দাঁড়ানো। অর্থাৎ, তাঁদের কথা মন দিয়ে শোনা ও তাঁদের গল্পগুলো তুলে আনা। সেইসাথে, শরণার্থীদের নিরাপত্তার অধিকার রক্ষা করা ও এই সংকটের সমাধান খোঁজা–যাতে একদিন তাঁরা নিরাপদে নিজ ঘরে ফিরতে পারেন।
বাংলাদেশ ও রোহিঙ্গা সংকট
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু, বুচিথং ও রাসেথং জেলার রোহিঙ্গাদের ওপর হামলা শুরু করে দেশটির সেনাবাহিনী। সে সময় ওই অঞ্চলগুলোর অনেকেই পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। পরেও এ ধারা চলতে থাকে।
বর্তমানে বাংলাদেশে ১২ লাখের ওপরে রোহিঙ্গা রয়েছে। তাদের জন্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সহযোগিতায় বাংলাদেশ সরকার খাদ্য, চিকিৎসা ও শিক্ষাসেবা চালু রেখেছে। তবে দিন দিন রোহিঙ্গাদের সংখ্যা বাড়লেও অর্থ সহায়তা তেমন বাড়েনি।
বিশ্বজুড়েই শরণার্থী তহবিলের অবস্থা এমন। ইউএনএইচসিআরের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত এক দশকে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা দ্বিগুণ হলেও তহবিল এখনো ২০১৫ সালের সমান। ফলে উন্নয়নশীল বা নিম্ন আয়ের দেশগুলো শরণার্থী সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে।
আজ শরণার্থী দিবসের বার্তায় এ বিষয়টি উল্লেখ করেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। তিনি বলেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই উন্নয়নশীল দেশগুলোকে শরণার্থীদের দায়িত্ব নিতে হয়। কিন্তু বিষয়টি উচিত নয়, আর টেকসইও নয়।
চলতি বছরের ৫ মার্চ বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির তরফ থেকে জানানো হয়, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য মাসিক খাবারের বরাদ্দ জনপ্রতি ১২ ডলার থেকে নামিয়ে ৬ ডলারে আনা হবে। তবে আন্তোনিও গুতেরেসের রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনের পর এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে সংস্থাটি।
রোহিঙ্গাদের জন্মহার ও স্বাস্থ্যবিষয়ক বিভিন্ন ইস্যুতেও প্রতিকূলতার মুখোমুখি হতে হয়েছে বাংলাদেশকে। ২০২৩ সালে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, রোহিঙ্গা শিবিরে প্রতিদিন প্রায় ৯৫ জন শিশুর জন্ম হয়। রোহিঙ্গাদের জন্মহার নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশও করা হয় সে প্রতিবেদনে।
ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, রোহিঙ্গা শিবির এইচআইভি/এইডস, হেপাটাইসিস সি, ডিপথেরিয়ার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের আগস্ট পর্যন্ত জেলাটিতে ৭১০ জন মানুষ এইচআইভি পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ৬১২ জন রোহিঙ্গা। গণমাধ্যমের তথ্য অনুসারে, ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬১ জন রোহিঙ্গা এইচআইভিতে মৃত্যুবরণ করেছেন।
চলতি বছরের ২৭ এপ্রিল রাখাইনে মানবিক করিডর দেওয়ার ব্যাপারে নীতিগত সম্মতির কথা জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। সে সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এর প্রতিবাদ জানায়। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান মানবিক করিডরকে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের সঙ্গে জড়িত স্পর্শকাতর বিষয় বলে আখ্যায়িত করেন।
পরে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান বলেন, মানবিক করিডর নয়, বরং একটি ত্রাণ চ্যানেলের কথা বলা হয়েছে।
রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনে এসে আশ্রিত রোহিঙ্গারা নিজ দেশে ফিরে যেতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন আন্তোনিও গুতেরেস। তবে এ জন্য মিয়ানমারে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা দরকার বলেও তিনি জানান।
বাড়ছে বাংলাদেশি শরণার্থীর সংখ্যা
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশিদের শরণার্থী হওয়ার সংখ্যা বাড়ছে। গত পাঁচ বছরে এ হার ঊর্ধ্বমুখী। ২০২৪ সালে ২৮ হাজার ৪৭৩ এবং ২০২৩ সালে ২৪ হাজার ১২৬ জন বাংলাদেশি জাতিসংঘে শরণার্থী হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছেন। এ ছাড়া ২০২২ সালে ২৩ হাজার ৯৩৫ জন, ২০২১ সালে ২২ হাজার ৬৭২ জন এবং ২০২০ সালে ১৮ হাজার ৯৪৮ জন বাংলাদেশি জাতিসংঘের কাছে আবেদন করেছেন নিজেদের শরণার্থী দাবি করে। ইউএনএইচসিআরের পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য পাওয়া যায়।
ইনফোমাইগ্রেন্টসের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের প্রথম তিন মাসে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়া তৃতীয় সর্বোচ্চ শরণার্থী ছিল বাংলাদেশি। প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানে ছিল যথাক্রমে মালি ও সেনেগালের অধিবাসীরা।
শুধু শরণার্থী নয়, রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী হিসেবেও এ সময় বিপুলসংখ্যক মানুষ দেশ ছেড়েছেন। ইউএনএইচসিআর বলছে, গত বছর ১ লাখ ৮ হাজার ১৩১ বাংলাদেশি বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেছেন। ২০২৩ সালে এ সংখ্যা ছিল ৭৫ হাজার ৮৬৭ জন। ২০২২ সালে ৬১ হাজার ২৯৮ জন, ২০২১ সালে ৬৫ হাজার ৪৯৫ জন এবং ২০২০ সালে ৬৪ হাজার ৬৩৬ জন বাংলাদেশি বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেন।
ইউরোপের যুক্তরাজ্য, পর্তুগাল, ইতালি, ফ্রান্স, জার্মানির মতো দেশে নিবন্ধনের জন্য বেশি আবেদন করছেন বাংলাদেশিরা। তা ছাড়া, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও মালয়েশিয়াতেও অনেকে আশ্রয় খুঁজেছেন। এমনকি ২০২৪ সালে সোমালিয়াতেও ছয় বাংলাদেশি শরণার্থী হিসেবে নিবন্ধিত হন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, অর্থনৈতিক কারণে অধিকাংশ ব্যক্তি দেশ ছাড়ছেন। আর এর সুযোগ নিচ্ছেন মানবপাচারকারীরা। পাচারের শিকার অনেকেই যুদ্ধে পর্যন্ত জড়াচ্ছেন।
নাট্যকার ও প্রাবন্ধিক শাহমান মৈশান ‘শিল্পী সুলতানের উত্তরাধিকার: কল্পনা সৌন্দর্য ও সহজ মানুষের রাজনীতি’ শিরোনামে প্রবন্ধে তিনি সুলতানের জীবন-দর্শন ও চিত্রকর্ম নিয়ে বিশদ আলোচনা করেন।
৫ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশের শ্রম আইন অনুযায়ী দৈনিক সর্বোচ্চ ৮ ঘণ্টা কাজের নিয়ম। অতিরিক্ত কাজের জন্য বাড়তি মজুরি এবং সপ্তাহে এক দিন বাধ্যতামূলক ছুটি দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু ডেলিভারিম্যানরা ‘ফ্রিল্যান্সার’ হওয়ায় নেই নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টা। নেই ন্যূনতম আয়ের গ্যারান্টিও। ফলে দৈনিক ১১-১২ ঘণ্টাও কাজ করেন অনেক রাইডার।
৬ ঘণ্টা আগেনিয়ন্ত্রিত বনভূমির পরিমাণ দেশের মোট আয়তনের ২০ শতাংশে উন্নীত করতে বাংলাদেশে সরকার সুপরিকল্পিত কর্মসূচি গ্রহণ করবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
৭ ঘণ্টা আগেসিইসি বলেন, ‘গত বছরের জুলাই আন্দোলনের পর থেকে যে অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে, আপনারা দেখেছেন। সেদিক থেকে অবশ্যই চ্যালেঞ্জ আছে। তারপরও আমি বলব, জুলাই আন্দোলনের পরে সবাই শান্তিতে ঘুমাইতে পারছেন।’
১০ ঘণ্টা আগে