দীর্ঘ চার বছর তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়ার পর যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত শফিউর রহমান ফারাবী হাইকোর্ট থেকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পেয়েছেন। যদিও মূল আপিল বিচারাধীন, এই সিদ্ধান্তের আইনগত নানা দিক নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই।
মো. ইসতিয়াক
২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি। বইমেলায় উৎসবমুখর বিকেল শেষে যখন লেখক, পাঠকেরা বাড়ি ফিরছিলেন, ঠিক তখনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাশে ঘটে যায় এক হত্যাকাণ্ড। এদিন মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা, লেখক ও যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী প্রকৌশলী অভিজিৎ রায় হত্যার শিকার হন। তাঁর পাশে থাকা স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যাও গুরুতর আহত হন।
ওই ঘটনার ১০ বছর পর এই হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত শফিউর রহমান ফারাবীকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছেন আদালত। গতকাল বুধবার (৩০ জুলাই) বিচারপতি মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি কে এম রাশেদুজ্জামান রাজার হাইকোর্ট বেঞ্চ তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন।
২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যার দিকে বইমেলা থেকে একসঙ্গে বের হন অভিজিৎ রায় ও তাঁর স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যা। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ফটক পার হতেই তাঁদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে একদল দুর্বৃত্ত। ধারালো চাপাতির কোপে মুহূর্তেই রক্তাক্ত হয়ে পড়েন দুজন।
ঘটনার কিছু দূরে, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ভেতরেই ছিলেন ফটোসাংবাদিক জীবন আহমেদ। আচমকা এক নারীর চিৎকার কানে এলে তিনি ছুটে আসেন গেটের কাছে।
‘চিৎকারটা এমন ছিল, যেন কাউকে হঠাৎ প্রচণ্ড আঘাত করা হয়েছে,’ স্ট্রিমকে বলছিলেন জীবন। ‘আমি দৌঁড়ে বের হয়ে আসি। সামনে গিয়ে দেখি একজন পুরুষ ফুটপাতে রক্তাক্ত হয়ে পড়ে আছেন, আরেকজন নারী মোটরসাইকেলের পাশে অচেতন অবস্থায় পড়ে আছেন। চারপাশে রক্ত ছড়িয়ে আছে। উপস্থিত মানুষজন বলছিল, চাপাতি দিয়ে কোপানো হয়েছে।’
হঠাৎ ঘটে যাওয়া বিভীষিকাময় দৃশ্য দেখে জীবন হতবিহ্বল হয়ে পড়েন। কেউই তখন সাহস করে সামনে এগিয়ে আসেনি।
পরে জানা যায়, সেই নারীই ছিলেন অভিজিৎ রায়ের স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যা।
জীবন জানান, কেউ এগিয়ে না আসায় তিনি নিজেই সিএনজি খুঁজে নিয়ে তাঁদের হাসপাতালে নেওয়ার উদ্যোগ নেন। কিন্তু সিএনজিতে ওঠার পরও বন্যা আতঙ্কে ভেঙে পড়েন।
জীবন আরও জানান, ঢাকা মেডিকেলে পৌঁছানোর কিছুক্ষণ পর অভিজিৎ রায় মারা যান। বন্যা গুরুতর আহত অবস্থায় দীর্ঘ চিকিৎসার পর বেঁচে ফেরেন।
অভিজিৎ রায় হত্যাকাণ্ডের পর তাঁর বাবা অধ্যাপক অজয় রায় পরদিন ২৭ ফেব্রুয়ারি শাহবাগ থানায় হত্যা মামলা করেন। ঘটনার পর মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইও বাংলাদেশে তদন্তে অংশ নেয়। কারণ, অভিজিৎ ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক।
প্রথমে ডিবি পুলিশ তদন্ত করলেও ২০১৭ সালে এই দায়িত্ব পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
চার বছরের তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ১৩ মার্চ তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক মনিরুল ইসলাম ঢাকার আদালতে ছয় জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। তাঁদের মধ্যে দুজন পলাতক, বাকি আসামিরা কারাগারে ছিলেন।
চার্জশিটে বলা হয়, অভিযুক্ত ব্যক্তিরা এলিফ্যান্ট রোডে এক বাসায় জমায়েত হয়ে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরে বইমেলার সময় নজরদারি চালিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অভিজিতের ওপর হামলা চালানো হয়। চারজন সন্ত্রাসী হামলা চালায়। আর তাঁদের পালাতে সহায়তা করার জন্য অন্যেরা ‘বলয়’ তৈরি করেছিলেন।
২০১৯ সালের ১১ এপ্রিল ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল চার্জশিট গ্রহণ করে এবং ১ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হয়। মামলায় মোট ৩৪ জন স্বাক্ষীর মধ্যে ২৮ জন বিভিন্ন সময় সাক্ষ্য দেন। আসামিদের মধ্যে ছিলেন মেজর (চাকরিচ্যুত) সৈয়দ জিয়াউল হক, মোজাম্মেল হুসাইন, আবু সিদ্দিক সোহেল, আরাফাত রহমান, আকরাম হোসেন এবং শফিউর রহমান ফারাবী।
২০২১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি বিচারক মো. মজিবুর রহমান পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড দেন এবং শফিউর রহমান ফারাবীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। রায়ে বলা হয়, ফারাবী সরাসরি হত্যায় জড়িত না হলেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর দেওয়া উসকানিমূলক পোস্ট হত্যাকারীদের সহায়তা করেছিল।
এরপর ফারাবী হাইকোর্টে আপিল করেন, যা ২০২২ সালের ৪ আগস্ট গ্রহণ করা হয়। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়ার পর গতকাল বুধবার হাইকোর্ট বেঞ্চ তাঁর অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিন শুনানিতে ফারাবীর পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান এবং আইনজীবী মুহাম্মদ হুজ্জাতুল ইসলাম খান।
আইনজীবী মুহাম্মদ হুজ্জাতুল ইসলাম খান বলেন, ‘ফারাবী ২০১৫ সালের ৩ মার্চ থেকে কারাগারে রয়েছেন। মামলায় চারজন আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি থাকলেও তাঁদের কেউই ফারাবীর নাম উল্লেখ করেননি। তদন্ত কর্মকর্তা ছাড়া অন্য কোনো সাক্ষীর বক্তব্যেও তাঁর নাম আসেনি। ফারাবী ১৬৪ ধারায় কোনো স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি। এসব কারণ দেখিয়ে আমরা জামিনের আবেদন করেছিলাম।’
শফিউর রহমান ফারাবী এখন মুক্ত। তবে এটি কেবল অন্তর্বর্তীকালীন জামিন। মূল আপিল এখনো হাইকোর্টে বিচারাধীন। চাইলে রাষ্ট্রপক্ষ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে গিয়ে জামিন স্থগিত চেয়ে আবেদন করতে পারবে। তাই মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি এখনো হয়নি।
এই প্রসঙ্গে সহকারী অ্যার্টনি জেনারেল মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন বলেন, ‘যেকোনো জামিন আদালতের আইন ও বিচার বিশ্লেষণের ওপর নির্ভর করে। তবে এই মামলার সামাজিক এবং আন্তর্জাতিক গুরুত্ব থাকায় জামিনের বৈধতা নিয়ে জনমনে বিতর্ক থাকাটাই স্বাভাবিক।’ তিনি আরও বলেন, ‘আদালতের সিদ্ধান্তই মূল সিদ্ধান্ত। এটি নিয়ে মন্তব্য করা মানে আদালতকে অবমাননা করার শামিল।’
ফারাবীর জামিনকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেউ বলছেন, সরাসরি আক্রমণ না করলেও, একজন লেখকের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে ‘মৃত্যুর মঞ্চ প্রস্তুতকারক’ হিসেবে যিনি কাজ করেছেন, তার জামিনে মুক্তি ন্যায়বিচারের ভাবমূর্তিতে আঘাত করে।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশের দণ্ডবিধি (পেনাল কোড) অনুযায়ী শুধু হত্যায় সরাসরি অংশ নেওয়া নয়, হত্যাকাণ্ডে মানসিক প্রস্তুতি, তথ্য সহায়তা বা উৎসাহ জোগানোর ক্ষেত্রেও শাস্তি হতে পারে। ধারা ১০৭ থেকে শুরু করে ১০৯, ১১৪, এমনকি ১২০বি পর্যন্ত ধারাগুলো অপরাধে সহায়তাকারীদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার বিধান রাখে।’
অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘এ ধরনের অপরাধের ক্ষেত্রে আদালত যখন বলে, অপরাধী সরাসরি অংশ নেননি, কিন্তু সহায়তা করেছেন, তখন এটি মোটেই ছোট কোনো অভিযোগ নয়।’
২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি। বইমেলায় উৎসবমুখর বিকেল শেষে যখন লেখক, পাঠকেরা বাড়ি ফিরছিলেন, ঠিক তখনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাশে ঘটে যায় এক হত্যাকাণ্ড। এদিন মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা, লেখক ও যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী প্রকৌশলী অভিজিৎ রায় হত্যার শিকার হন। তাঁর পাশে থাকা স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যাও গুরুতর আহত হন।
ওই ঘটনার ১০ বছর পর এই হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত শফিউর রহমান ফারাবীকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছেন আদালত। গতকাল বুধবার (৩০ জুলাই) বিচারপতি মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি কে এম রাশেদুজ্জামান রাজার হাইকোর্ট বেঞ্চ তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন।
২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যার দিকে বইমেলা থেকে একসঙ্গে বের হন অভিজিৎ রায় ও তাঁর স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যা। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ফটক পার হতেই তাঁদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে একদল দুর্বৃত্ত। ধারালো চাপাতির কোপে মুহূর্তেই রক্তাক্ত হয়ে পড়েন দুজন।
ঘটনার কিছু দূরে, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ভেতরেই ছিলেন ফটোসাংবাদিক জীবন আহমেদ। আচমকা এক নারীর চিৎকার কানে এলে তিনি ছুটে আসেন গেটের কাছে।
‘চিৎকারটা এমন ছিল, যেন কাউকে হঠাৎ প্রচণ্ড আঘাত করা হয়েছে,’ স্ট্রিমকে বলছিলেন জীবন। ‘আমি দৌঁড়ে বের হয়ে আসি। সামনে গিয়ে দেখি একজন পুরুষ ফুটপাতে রক্তাক্ত হয়ে পড়ে আছেন, আরেকজন নারী মোটরসাইকেলের পাশে অচেতন অবস্থায় পড়ে আছেন। চারপাশে রক্ত ছড়িয়ে আছে। উপস্থিত মানুষজন বলছিল, চাপাতি দিয়ে কোপানো হয়েছে।’
হঠাৎ ঘটে যাওয়া বিভীষিকাময় দৃশ্য দেখে জীবন হতবিহ্বল হয়ে পড়েন। কেউই তখন সাহস করে সামনে এগিয়ে আসেনি।
পরে জানা যায়, সেই নারীই ছিলেন অভিজিৎ রায়ের স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যা।
জীবন জানান, কেউ এগিয়ে না আসায় তিনি নিজেই সিএনজি খুঁজে নিয়ে তাঁদের হাসপাতালে নেওয়ার উদ্যোগ নেন। কিন্তু সিএনজিতে ওঠার পরও বন্যা আতঙ্কে ভেঙে পড়েন।
জীবন আরও জানান, ঢাকা মেডিকেলে পৌঁছানোর কিছুক্ষণ পর অভিজিৎ রায় মারা যান। বন্যা গুরুতর আহত অবস্থায় দীর্ঘ চিকিৎসার পর বেঁচে ফেরেন।
অভিজিৎ রায় হত্যাকাণ্ডের পর তাঁর বাবা অধ্যাপক অজয় রায় পরদিন ২৭ ফেব্রুয়ারি শাহবাগ থানায় হত্যা মামলা করেন। ঘটনার পর মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইও বাংলাদেশে তদন্তে অংশ নেয়। কারণ, অভিজিৎ ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক।
প্রথমে ডিবি পুলিশ তদন্ত করলেও ২০১৭ সালে এই দায়িত্ব পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
চার বছরের তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ১৩ মার্চ তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক মনিরুল ইসলাম ঢাকার আদালতে ছয় জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। তাঁদের মধ্যে দুজন পলাতক, বাকি আসামিরা কারাগারে ছিলেন।
চার্জশিটে বলা হয়, অভিযুক্ত ব্যক্তিরা এলিফ্যান্ট রোডে এক বাসায় জমায়েত হয়ে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরে বইমেলার সময় নজরদারি চালিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অভিজিতের ওপর হামলা চালানো হয়। চারজন সন্ত্রাসী হামলা চালায়। আর তাঁদের পালাতে সহায়তা করার জন্য অন্যেরা ‘বলয়’ তৈরি করেছিলেন।
২০১৯ সালের ১১ এপ্রিল ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল চার্জশিট গ্রহণ করে এবং ১ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হয়। মামলায় মোট ৩৪ জন স্বাক্ষীর মধ্যে ২৮ জন বিভিন্ন সময় সাক্ষ্য দেন। আসামিদের মধ্যে ছিলেন মেজর (চাকরিচ্যুত) সৈয়দ জিয়াউল হক, মোজাম্মেল হুসাইন, আবু সিদ্দিক সোহেল, আরাফাত রহমান, আকরাম হোসেন এবং শফিউর রহমান ফারাবী।
২০২১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি বিচারক মো. মজিবুর রহমান পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড দেন এবং শফিউর রহমান ফারাবীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। রায়ে বলা হয়, ফারাবী সরাসরি হত্যায় জড়িত না হলেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর দেওয়া উসকানিমূলক পোস্ট হত্যাকারীদের সহায়তা করেছিল।
এরপর ফারাবী হাইকোর্টে আপিল করেন, যা ২০২২ সালের ৪ আগস্ট গ্রহণ করা হয়। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়ার পর গতকাল বুধবার হাইকোর্ট বেঞ্চ তাঁর অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিন শুনানিতে ফারাবীর পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান এবং আইনজীবী মুহাম্মদ হুজ্জাতুল ইসলাম খান।
আইনজীবী মুহাম্মদ হুজ্জাতুল ইসলাম খান বলেন, ‘ফারাবী ২০১৫ সালের ৩ মার্চ থেকে কারাগারে রয়েছেন। মামলায় চারজন আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি থাকলেও তাঁদের কেউই ফারাবীর নাম উল্লেখ করেননি। তদন্ত কর্মকর্তা ছাড়া অন্য কোনো সাক্ষীর বক্তব্যেও তাঁর নাম আসেনি। ফারাবী ১৬৪ ধারায় কোনো স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি। এসব কারণ দেখিয়ে আমরা জামিনের আবেদন করেছিলাম।’
শফিউর রহমান ফারাবী এখন মুক্ত। তবে এটি কেবল অন্তর্বর্তীকালীন জামিন। মূল আপিল এখনো হাইকোর্টে বিচারাধীন। চাইলে রাষ্ট্রপক্ষ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে গিয়ে জামিন স্থগিত চেয়ে আবেদন করতে পারবে। তাই মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি এখনো হয়নি।
এই প্রসঙ্গে সহকারী অ্যার্টনি জেনারেল মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন বলেন, ‘যেকোনো জামিন আদালতের আইন ও বিচার বিশ্লেষণের ওপর নির্ভর করে। তবে এই মামলার সামাজিক এবং আন্তর্জাতিক গুরুত্ব থাকায় জামিনের বৈধতা নিয়ে জনমনে বিতর্ক থাকাটাই স্বাভাবিক।’ তিনি আরও বলেন, ‘আদালতের সিদ্ধান্তই মূল সিদ্ধান্ত। এটি নিয়ে মন্তব্য করা মানে আদালতকে অবমাননা করার শামিল।’
ফারাবীর জামিনকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেউ বলছেন, সরাসরি আক্রমণ না করলেও, একজন লেখকের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে ‘মৃত্যুর মঞ্চ প্রস্তুতকারক’ হিসেবে যিনি কাজ করেছেন, তার জামিনে মুক্তি ন্যায়বিচারের ভাবমূর্তিতে আঘাত করে।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশের দণ্ডবিধি (পেনাল কোড) অনুযায়ী শুধু হত্যায় সরাসরি অংশ নেওয়া নয়, হত্যাকাণ্ডে মানসিক প্রস্তুতি, তথ্য সহায়তা বা উৎসাহ জোগানোর ক্ষেত্রেও শাস্তি হতে পারে। ধারা ১০৭ থেকে শুরু করে ১০৯, ১১৪, এমনকি ১২০বি পর্যন্ত ধারাগুলো অপরাধে সহায়তাকারীদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার বিধান রাখে।’
অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘এ ধরনের অপরাধের ক্ষেত্রে আদালত যখন বলে, অপরাধী সরাসরি অংশ নেননি, কিন্তু সহায়তা করেছেন, তখন এটি মোটেই ছোট কোনো অভিযোগ নয়।’
নাট্যকার ও প্রাবন্ধিক শাহমান মৈশান ‘শিল্পী সুলতানের উত্তরাধিকার: কল্পনা সৌন্দর্য ও সহজ মানুষের রাজনীতি’ শিরোনামে প্রবন্ধে তিনি সুলতানের জীবন-দর্শন ও চিত্রকর্ম নিয়ে বিশদ আলোচনা করেন।
২ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশের শ্রম আইন অনুযায়ী দৈনিক সর্বোচ্চ ৮ ঘণ্টা কাজের নিয়ম। অতিরিক্ত কাজের জন্য বাড়তি মজুরি এবং সপ্তাহে এক দিন বাধ্যতামূলক ছুটি দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু ডেলিভারিম্যানরা ‘ফ্রিল্যান্সার’ হওয়ায় নেই নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টা। নেই ন্যূনতম আয়ের গ্যারান্টিও। ফলে দৈনিক ১১-১২ ঘণ্টাও কাজ করেন অনেক রাইডার।
২ ঘণ্টা আগেনিয়ন্ত্রিত বনভূমির পরিমাণ দেশের মোট আয়তনের ২০ শতাংশে উন্নীত করতে বাংলাদেশে সরকার সুপরিকল্পিত কর্মসূচি গ্রহণ করবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
৪ ঘণ্টা আগেসিইসি বলেন, ‘গত বছরের জুলাই আন্দোলনের পর থেকে যে অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে, আপনারা দেখেছেন। সেদিক থেকে অবশ্যই চ্যালেঞ্জ আছে। তারপরও আমি বলব, জুলাই আন্দোলনের পরে সবাই শান্তিতে ঘুমাইতে পারছেন।’
৬ ঘণ্টা আগে