leadT1ad

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বাংলাদেশের গণ-অভ্যুত্থানের খবর

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তির খবর উঠে এসেছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও। রয়টার্স, বিবিসি, আল জাজিরা, আনাদোলুসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করেছে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তির খবর।

স্ট্রিম ডেস্ক
প্রকাশ : ০৬ আগস্ট ২০২৫, ১২: ১৩
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে বাংলাদেশের গণ-অভ্যুত্থানের খবর। ছবি

ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের পতনের এক বছর পূর্ণ হলে মঙ্গলবার (৫ আগস্ট)। গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে দেশের সংবাদমাধ্যমগুলোয় ছিল নানা আয়োজন। পাশাপাশি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তির খবর উঠে এসেছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও। রয়টার্স, বিবিসি, আল জাজিরা, আনাদোলুসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করেছে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তির খবর।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সে ‘হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার এক বছর পর বাংলাদেশ রাজনৈতিক লড়াইয়ে আটকে আছে’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকার প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের কথা বললেও তার গতি খুব মন্থর। রাজনৈতিক ঐকমত্য না হওয়ায় বৃহৎ অর্থে সংস্কার কার্যক্রম থমকে আছে।

‘হাসিনার পতনের বর্ষপূর্তিতে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে অঙ্গীকার বাংলাদেশের’ শিরোনামে রয়টার্স আরেকটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, শেখ হাসিনার পতনের এক বছর পূর্তিতে হাজারো উল্লাসিত জনতা রাজধানী ঢাকায় জড়ো হয়। এদিন অন্তর্বর্তী সরকার আগামী বছর নির্বাচন ঘোষণার পাশাপাশি গণতান্ত্রিক সংস্কারের রোডম্যাপ ঘোষণা করে।

মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে উপস্থিত জনতা এদিন মিছিল, কনসার্ট ও আন্দোলনে নিহতদের জন্য দোয়া করেন। জুলাই অভ্যুত্থানের অংশীজনেরা এটিকে দেশের ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতা’ বলে আখ্যায়িত করেন।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি নিউজ ও বিবিসি বাংলা গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এসব প্রতিবেদনে জুলাই অভ্যুত্থানের ঘটনাপ্রবাহ, শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়া, অন্তর্বর্তী সরকার গঠনসহ নানা বিষয় তুলে ধরা হয়। মঙ্গলবারের জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ, নির্বাচনের ঘোষণা, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে ছাত্র-জনতার আগমন ও উল্লাসের বিষয়গুলোও প্রতিবেদনগুলোতে উঠে আসে।

৫ আগস্ট, ২০২৪ তারিখে গণভবনে আন্দোলনকারীরা। ছবি: কে এম আসাদ/এএফপি
৫ আগস্ট, ২০২৪ তারিখে গণভবনে আন্দোলনকারীরা। ছবি: কে এম আসাদ/এএফপি

এ ছাড়া, বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গণ-অভ্যুত্থানে যত প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে, স্বাধীন বাংলাদেশে আর কোনো আন্দোলন ঘিরে এত প্রাণহানি ও রক্তপাতের ঘটনা দেখা যায়নি।

কিন্তু এই গণ-অভ্যুত্থান ঘিরে ঠিক কত মানুষের মৃত্যু হয়েছে, সেটি নিয়েও নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। কেননা, সরকারের পক্ষ থেকে মুক্তিযুদ্ধ-বিষয়ক মন্ত্রণালয় যে গেজেট তৈরি করেছে, তাতে জুলাই অভ্যুত্থানে নিহতের সংখ্যা বলা হচ্ছে ৮৪৪ জন। গেজেটে যাদেরকে ‘শহীদ’ হিসেবে স্বীকৃতিও দিয়েছে সরকার। আবার, এই আন্দোলন ঘিরে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের তৈরি করা প্রতিবেদনে নিহতের সংখ্যা বলা হচ্ছে প্রায় ১৪০০ জন।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা ‘হাসিনার পতনের এক বছর পর আশা ও অচলাবস্থার মধ্যে আটকে আছে বাংলাদেশ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়,আন্দোলনের মাধ্যমে অর্জিত প্রত্যাশিত পরিবর্তন এখনো আসেনি। রাজনৈতিক দলগুলোর ক্ষমতার আকাঙ্ক্ষা, প্রয়োজনীয় সংস্কার না হওয়া, প্রায় প্রতিদিনই রাজধানী ঢাকার রাস্তায় বিভিন্ন মিছিল বিক্ষোভ ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে।

আলজারিরার প্রতিবেদনে বাংলাদেশের অর্থনীতির ইতিবাচক দিক নিয়েও কথা বলা হয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি, রেকর্ড রেমিটেন্স আসা এবং গত বছরের তুলনায় মুদ্রাস্ফীতি কমিয়ে আনার সফলতার বিষয়টিও তুলে ধরা হয়।

তুরস্কের সরকারি সংবাদ সংস্থা আনাদোলুতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, হাসিনার চলে যাওয়ার পর বাংলাদেশ পররাষ্ট্র নীতিতে পুনরায় ভারসাম্য আনা হচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকার পরিবর্তিত আঞ্চলিক রাজনৈতিক দৃশ্যপটে সুযোগের পাশাপাশি সতর্কতার বিষয়টিও মাথায় রাখছে।

এ ছাড়াও ভারতের এনডিটিভি, টাইমস অব ইন্ডিয়া, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, পাকিস্তানের দ্য ডন, দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনসহ একাধিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বাংলাদেশের গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূতির সংবাদ প্রকাশ করেছে।

Ad 300x250

সম্পর্কিত