leadT1ad

নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের নিরাপত্তা চাইল দেশীয় সংস্থাগুলো

স্ট্রিম প্রতিবেদক
স্ট্রিম প্রতিবেদক
ঢাকা

নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে দেশীয় নির্বাচন পর্যপেক্ষণ সংস্থার বৈঠক। সংগৃহীত ছবি

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নিরাপদ ও অনুকূল পর্যবেক্ষণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে নিরাপত্তা ও প্রশাসনিক সহায়তার দাবি জানিয়েছে দেশীয় পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলো। আজ মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ধারাবাহিক সংলাপের অংশ হিসেবে ৭৭টি পর্যবেক্ষক সংস্থার প্রতিনিধি এতে অংশ নেন।

সংস্থাগুলোর প্রধান দাবি, নির্বাচন পর্যবেক্ষণে মাঠপর্যায়েই নিরাপত্তা, ভোটকেন্দ্রে ভোটার তালিকা টাঙানো, নতুন পর্যবেক্ষকদের প্রশিক্ষণের জন্য ইসির বাজেট বরাদ্দ, গোয়েন্দা সংস্থা নয় বরং কমিশনের নিজস্ব কর্মকর্তাদের মাধ্যমে যাচাই, চলাচলের জন্য পরিবহন ভাতা এবং ভোটের কয়েক দিন আগে পর্যবেক্ষক কার্ড সরবরাহ।

পর্যবেক্ষকদের মতে, মাঠপর্যায়েই নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়ায় অনেক সময়ে রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি হয়। স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষণের জন্য স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সক্রিয় সমন্বয়ে রাখতে হবে বলে মনে করেন অংশ নেওয়া প্রতিনিধিরা।

সংলাপে অংশ নেওয়া অধিকাংশ প্রশ্নের উত্তর কমিশনের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে দেওয়া হয়। বাকি বিষয়গুলো পরবর্তীতে জনসংযোগ দপ্তর জানিয়ে দেবে বলে কর্তৃপক্ষ জানায়।

নিরাপত্তাহীনতার অভিযোগ

আব্দুল মোমেন খান মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট রোকসানা খন্দকার বলেন, অতীত নির্বাচনে রাজনৈতিক দলের এজেন্টরা অনেকসময় পর্যবেক্ষকদের প্রতিপক্ষ হিসেবে বিবেচনা করেছে। এতে নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হয়েছে।

রোকসানা খন্দকার নারীদের বুথ আলাদা থাকার কারণে ভোট গণনায় নারী ভোটারের সংখ্যা আলাদা করে রেকর্ড রাখার প্রস্তাবও দেন।

একই উদ্বেগ তুলে ধরে ব্রতীর পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রতিটি অঞ্চলে এক বা একাধিক দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার মোবাইল নম্বর পাওয়া গেলে দ্রুত যোগাযোগ সম্ভব হবে। এতে নিরাপত্তাসহ প্রয়োজনীয় তথ্য কমিশনকে দ্রুত জানানো যাবে।

পাথওয়ের প্রধান সমন্বয়কারী মহিউদ্দিন আমিন বলেন, নিবন্ধিত হওয়া সত্ত্বেও আইডি কার্ড সংগ্রহে বিড়ম্বনা হয়, বিশেষত ঢাকার বাইরে। তিনি সাইবার সিকিউরিটি নিশ্চিতকরণ ও পর্যবেক্ষকদের প্রশিক্ষণ–ফান্ডিং প্রক্রিয়া স্পষ্ট করার অনুরোধ জানান।

উইমেন এন্টারপ্রেনার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের প্রতিনিধি নাসরিন ফাতেমা আওয়াল বলেন, আগেই এলাকা নির্ধারণ করে দিলে তারা প্রশিক্ষণ শুরু করতে পারেন। এতে কাজ গুছিয়ে নেওয়া সহজ হবে।

ইসির সতর্কতা ও নির্দেশনা

মানহীন পর্যবেক্ষক নিয়োগ দেওয়ার চেয়ে না দেওয়াই ভালো উল্লেখ করে নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান—কেউ পর্যবেক্ষক হিসেবে পক্ষপাতমূলক আচরণ করতে পারবে না। তফসিল ঘোষণার ১০ দিনের মধ্যে পর্যবেক্ষকদের চূড়ান্ত তালিকা কমিশনে জমা দিতে হবে।

আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ আরও জানান, পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলো কমিশনের সহযোগী প্রতিষ্ঠান—তাই তাদের ফান্ডিং দেওয়া হবে না। তবে দক্ষতা উন্নয়নে প্রয়োজন হলে কমিশন বিবেচনা করবে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, পর্যবেক্ষকদের রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

সিইসি বলেন, ‘পর্যবেক্ষকদের কাজ হলো শুধু পর্যবেক্ষণ ও রিপোর্ট করা, কোনো দলীয় প্রচারে যাওয়া, ভোটারকে প্রভাবিত করা বা ভোটের নির্দেশ দেওয়া নয়। যদি রিপোর্ট আসে যে কোনো পর্যবেক্ষক দলীয় হয়ে পড়েছেন, তাহলে তা নির্বাচনকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।’

সিইসি আরও বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য একটাই—একটি গ্রহণযোগ্য, সুন্দর ও স্বচ্ছ নির্বাচন জাতিকে উপহার দেওয়া।’

Ad 300x250

সম্পর্কিত