leadT1ad

রাষ্ট্রীয় শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো কার্যক্রমে লজ্জার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে: বাণিজ্য উপদেষ্টা

স্ট্রিম প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৩: ২৫
সংগৃহীত ছবি

রাষ্ট্রীয় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বর্তমান কার্যক্রম দেখে লজ্জা লাগে বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।

আজ রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) তেজগাঁও শিল্প এলাকার এডিসন প্রাইম ভবনে অনুষ্ঠিত ‘রোড টু মেড ইন বাংলাদেশ অ্যান্ড অ্যাগ্রো মেশিনারি ফেয়ার ২০২৫’ সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

বাণিজ্য উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, ‘যন্ত্রাংশ তৈরি ও সমন্বয়ের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করেছিল রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি লিমিটেড, কিন্তু বর্তমানে তারা হ্যান্ড স্যানিটাইজার উৎপাদনে সীমাবদ্ধ। আরেকটি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ডিজেল প্ল্যান্ট লিমিটেড, যাদের মূল লক্ষ্য গাড়ি উৎপাদন হওয়া উচিত ছিল, এখন শুধু গাড়ির ফিল্টার উৎপাদনের চুক্তি করছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ড দেখে সত্যিই লজ্জার অনুভূতি হয়।’

শেখ বশিরউদ্দীন আরও বলেন, ‘স্বাধীনতার আগে আমাদের দেশে পণ্য উৎপাদনের বৈচিত্র্য ছিল, যা এখন হারিয়ে গেছে। এখন আমরা এক ধরনের “অ্যান্টি-ম্যানুফ্যাকচারিং বায়াস”-এর মধ্যে পতিত। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ড্রোন ও রোবট ব্যবহার করে কৃষি কাজ করা হচ্ছে, অথচ আমরা এখনো পাওয়ার টিলার ও কম্বাইন হারভেস্টারে আটকে রয়েছি।’

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, শিল্পের সক্ষমতা বাড়াতে হলে একটি পরিষ্কার পরিকল্পনা থাকা প্রয়োজন। ব্যয়ের উদ্বৃত্ত তৈরি করে সাময়িক ত্যাগ স্বীকার করে দেশের শিল্পকে এগিয়ে নিতে হবে। ‘পরিষ্কার টার্গেট নেওয়া না হলে আমরা এগোতে পারব না। বর্তমানে আমাদের মধ্যে নতুন উদ্যোগ নেওয়ার আগ্রহ নেই। সম্পদ ও সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও অনেকেই ভোগের প্রতি বেশি আকৃষ্ট। নতুন উদ্যোগ নেবার অজুহাত ১০১টি খুঁজে পাওয়া যায়।’

সমাপনী অনুষ্ঠানে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও পিপিআরসি নির্বাহী চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, ‘গত ৩০ বছরে আমরা মূলত রেমিট্যান্স ও পোশাক খাতের ওপর নির্ভর করেছি। তবে এগুলো আর অর্থনীতির মূল চালক হবে না। নতুনভাবে কৃষি, এসএমই এবং প্রযুক্তিনির্ভর খাতের ওপর জোর দিতে হবে। দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য প্রয়োজন একটি জাতীয় দৃষ্টিকোণ ও ঐকমত্য।’

বাণিজ্য উপদেষ্টা আরও বলেন, 'আমাদের ধীর গতিতে এগোচ্ছে, এটা যথেষ্ট নয়। এখন দৌড়ানোর সময়। দেশের অর্থনৈতিক পরিকল্পনা সব সময় খণ্ডিত, কর্মসংস্থান ও এসএমইবান্ধব নয় এবং পরিষ্কার দিকনির্দেশনা নেই।'

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী, কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান, বাংলাদেশ অটোমোবাইলস অ্যাসেম্বলার্স অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন ও এগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি হাফিজুর রহমান খান, এবং হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে আজাদসহ অন্যান্য উদ্যোক্তা ও বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন।

প্রদর্শনীটি দুই দিনব্যাপী বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের উদ্যোগে এবং সংশ্লিষ্ট শিল্প সংস্থাগুলোর সহযোগিতায় আয়োজন করা হয়, যেখানে দেশি-বিদেশি উদ্যোক্তা, নীতিনির্ধারক ও বিশেষজ্ঞরা অংশগ্রহণ করেন।

Ad 300x250

সম্পর্কিত