leadT1ad

এনসিপি-গণ অধিকার পরিষদ এক হওয়ার আলোচনা, নেতৃত্ব দেবেন কে

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে প্রথম সারিতে থাকা ছাত্রনেতাদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের রাজনৈতিক দল গণঅধিকার পরিষদের একীভূত নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই চলছে আলোচনা।

স্ট্রিম প্রতিবেদক
স্ট্রিম গ্রাফিক

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে প্রথম সারিতে থাকা ছাত্রনেতাদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের রাজনৈতিক দল গণঅধিকার পরিষদের একীভূত নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই চলছে আলোচনা। এ বিষয়ে দুই দলই প্রাথমিক আলোচনা সেরেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। এর মধ্যে নতুন করে উত্তাপ ছড়াচ্ছে একটি প্রশ্ন, দল দুটি এক হলে নেতৃত্বে যাবেন কে।

এ বিষয়ে তরুণদের দল দুটির কেন্দ্রীয় একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলেছে স্ট্রিম। তাঁরা সবাই নিজ নিজ দলের নেতাকেই শীর্ষ নেতৃত্বে দেখতে চান।

নুরুল হক নুরকেই নেতৃত্বে চান জানিয়ে গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়কারী আবু হানিফ স্ট্রিমকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত নেতৃত্ব নিয়ে চূড়ান্ত আলোচনা হয়নি। তবে এনসিপির যাঁরা নেতৃত্বে আছেন, যেমন আহ্বায়ক নাহিদ ও সদস্যসচিব আকতার, তাঁরা দুজনেই একসময় আমাদের ছাত্র অধিকার পরিষদের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। নাহিদ তো আমাদের প্যানেল থেকেই ডাকসু নির্বাচন করেছিলেন, যে প্যানেল থেকে নুরুল হক নূর ভিপি নির্বাচিত হন। যেহেতু নুরুল হক নূর আগে থেকেই একটি প্রতিষ্ঠিত নেতৃত্ব, আমাদের চাওয়া থাকবে তাঁকে কেন্দ্র করেই যেন মূল নেতৃত্ব গঠিত হয়। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আলোচনার মাধ্যমেই হবে।’

একই বিষয়ে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান এর আগে বলেছিলেন, এনসিপির অনেক শীর্ষ নেতাই গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে ছিলেন। তাঁদের সঙ্গে গণঅধিকার পরিষদের রাজনৈতিক বোঝাপড়া ভালো। এ ছাড়া জুলাই অভ্যুত্থানের পর দেশে যে রাজনৈতিক শূন্যতা তৈরি হয়েছে তা মোকাবিলায় সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা হলো তরুণেরা একসঙ্গে কাজ করুক। তিনি আরও বলেছিলেন, ‘এনসিপির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে আমাদের আলাপ হয়েছে। এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। একে অপরকে মূল্যায়নের জায়গা নিশ্চিত করেই আমাদের এক হতে হবে। আমরা চাই তরুণরা বিভাজিত না থেকে এক সঙ্গে পথ চলুক।’

আবার বিষয়টি নিয়ে এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহবায়ক সামান্তা শারমিন স্ট্রিমকে বলেন, ‘আমরা ব্যাপারটি নিয়ে আলোচনা করছি। চূড়ান্ত কিছু ভাবিনি। তবে একধরনের ন্যারেটিভ ছাড়ানো হচ্ছে নুরের নেতৃত্ব নিয়ে। নিশ্চয়ই নুর আওয়ামী লীগের আমলে অনেক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তাঁর অনেক লড়াই আছে। তবে এক হওয়ার প্রসঙ্গে এনসিপির জায়গা থেকে নুরের নেতৃত্বে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না।’

দলটির যুগ্ম সদস্যসচিব ও মিডিয়া সেলের সম্পাদক মুশফিক উস সালেহীন বলেন, ‘গণঅধিকারের সঙ্গে আমরা যুক্ত হতে চাচ্ছি না। তারাই আমাদের সঙ্গে যোগ দিতে চাচ্ছেন। যখন এনসিপি গঠন হয়, তখনো এ রকম আলাপ ছিল, তারা আমাদের সঙ্গে যুক্ত হবে কি না। এখন আবার সেই আলোচনা চলছে। নুরের নেতৃত্ব তারা চাইতেই পারে। তবে এনসিপি একজনের নেতৃত্বে চলে না। আমরা কালেক্টিভ লিডারশিপের আইডিয়া নিয়ে এগোচ্ছি, সেখানে তিনি একটা অংশ হতে পারেন।’

একীভূতের আলোচনার শুরু যেভাবে

এনসিপির ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে আলোচনার শুরু গত ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন (ডাকসু) এবং ১১ সেপ্টেম্বর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জকসু) নির্বাচনের পর। ওই দুই নির্বাচনে এনসিপির সমর্থন ছিল গণঅভ্যুত্থানে থাকা শিক্ষার্থী নেতৃত্ব নিয়ে গড়া ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) ওপর। তবে দুই ছাত্র সংসদ নির্বাচনেই বাগছাসের প্যানেলের ‘ভরাডুবি’ হয়েছে বলে অনেকে মনে করছেন।

নির্বাচনে এনসিপির অনেক নেতাকর্মী শিবির সমর্থিত প্যানেলের হয়ে কাজ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। পাশাপাশি দলের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে মতবিরোধ, এমনকি আদর্শিক দ্বন্দ্বের বিষয়টিও সামনে চলে এসেছে। সব মিলিয়ে এই দুই দলের এক হওয়ার আলোচনা শুরু হয়।

Ad 300x250

সম্পর্কিত