স্ট্রিম সংবাদদাতা
৩৫ বছরের দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচন আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচারণা আজ ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়েছে। ৩৫ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই নির্বাচনে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত প্রচারণা চালাতে পারবেন প্রার্থীরা।
রাকসু নির্বাচনে মোট ভোটার ২৮ হাজার ৯০৫ জন। এর মধ্যে ছেলের ১১টি আবাসিক হলে ১৭ হাজার ৬০০ জন ও মেয়েদের ছয়টি আবাসিক হলে ১১ হাজার ৩০৫ ভোটার রয়েছে। আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর রাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং গণনা শেষে সেদিনই ফল প্রকাশ করা হবে।
এদিকে দীর্ঘ বিরতির পর আয়োজিত এ নির্বাচনকে ঘিরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে তৈরি হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। অনেক শিক্ষার্থীর মতে, রাকসু দীর্ঘদিন নিষ্ক্রিয় থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যাগুলো তুলে ধরার কোনো কার্যকর প্ল্যাটফর্ম তাঁদের হাতে ছিল না। এবারের নির্বাচন সেই ঘাটতি পূরণের সুযোগ এনে দিয়েছে। আবার কারও কারও কাছে এটি গণতান্ত্রিক চর্চার নতুন সম্ভাবনা, আবার কারও মনে শঙ্কা—রাজনীতির নামে দখলদারত্ব ও সহিংসতা ফিরে আসতে পারে।
গতকাল রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক সেতাউর রহমান চূড়ান্ত প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করেন। তার দেওয়া তথ্যানুযায়ী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধি ও হল সংসদ নির্বাচনে মোট ৯০৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রার্থীদের মধ্যে কেন্দ্রীয় সংসদে (রাকসু) ২৪৮ জন, সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনে ৫৮ জন ও ১৭টি আবাসিক হলে ৫৯৭ জন রয়েছেন।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, কেন্দ্রীয় সংসদে সহ-সভাপতি ভিপি পদে ১৮ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ১৩ জন, সহকারী সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে ১৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এছাড়া ১৭টি আবাসিক হলে ভিপি পদে ৬১, জিএস পদে ৫৮ জন ও এজিএস পদে ৫৭ জন রয়েছেন। এদের মধ্যে মেয়েদের ছয়টি আবাসিক হলে ভিপি পদে ১৬ জন, জিএস পদেও ১৬ জন ও এজিএস পদে ১৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এদিকে রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) লটারির মাধ্যমে প্রার্থীদের ব্যালট নম্বর প্রদান করা হয়েছে। এর আগে একই প্যানেলের সবাইকে একই ব্যালট নম্বর দেওয়ার নীতিমালা করার সিদ্ধান্ত হলেও শনিবার স্বতন্ত্র প্রার্থীদের দাবির মুখে সব প্রার্থীর জন্য লটারির নীতিমালা গ্রহণ করা হয়।
হল সংসদ নির্বাচনে ৪২ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এর মধ্যে মেয়েদের ছয়টি হলে ৩৯ জন এবং ছেলেদের একটি হলে (বিজয়-২৪) তিনজন নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া মেয়েদের চারটি হলে চারটি পদের বিপরীতে কোনো প্রার্থীই নির্বাচন করছেন না।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, মেয়েদের হলগুলোর মধ্যে বেগম খালেদা জিয়া হলে সর্বোচ্চ ১০ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
এ ছাড়া বেগম রোকেয়া ও রহমতুন্নেসা হলে ৯ জন করে, জুলাই-৩৬ হলে সাত জন, তাপসী রাবেয়া হলে তিন জন ও মন্নুজান হলে মাত্র একজন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। তবে শীর্ষ তিন পদে কোনো হলেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কেউ বিজয়ী হচ্ছে না।
এদিকে বেগম খালেদা জিয়া হলে সহকারী বিতর্ক ও সাহিত্য সম্পাদক পদসহ মেয়েদের চারটি হলে চারপদ ফাঁকা রয়েছে। বেগম রোকেয়া, জুলাই-৩৬ ও রহমতুন্নেসা হলে নির্বাহী সদস্য পদে একটি করে তিনটি পদ ফাঁকা রয়েছে।
পদ ফাঁকা থাকার বিষয়ে রাকসু’র প্রধান রিটার্নিং অফিসার প্রফেসর ড. মো. সেতাউর রহমান বলেন, যে পদগুলো ফাঁকা থাকবে সেগুলো ছাড়াই হল সংসদ চলবে। অন্য কোনোভাবে সেগুলো পূরণ করার উপায় নেই।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থীই বলছেন, রাকসু দীর্ঘদিন নিষ্ক্রিয় থাকায় সমস্যাগুলো তুলে ধরার কোনো কার্যকর প্ল্যাটফর্ম তাঁদের হাতে ছিল না। এবারের নির্বাচন সেই ঘাটতি পূরণের সুযোগ এনে দিয়েছে। রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল বারিক বলেন, ‘রাকসু আমাদের সম্মিলিত কণ্ঠস্বর। এটি নিষ্ক্রিয় থাকার কারণে আবাসন সংকট, লাইব্রেরির স্বল্পতা, ক্যাম্পাসের বেহাল রাস্তা, নিরাপত্তা সমস্যা কিংবা খাদ্যদ্রব্যের মান—এসব বিষয়ে আমাদের বক্তব্য গুরুত্ব পেত না। সক্রিয় রাকসু থাকলে এসব সমস্যা ছাত্র প্রতিনিধিদের মাধ্যমে প্রশাসনের কাছে পৌঁছাবে। আমরা চাই, রাকসু রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থেকে শিক্ষার্থীদের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাবে।’
অন্যদিকে কেউ কেউ আশঙ্কা করছেন, নির্বাচন হলে রাজনীতির নামে আবারও দখলবাজি ও সংঘাতের পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে, যা শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করবে।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী হাসিবুল ইসলাম বলেন, ‘রাকসু সব শিক্ষার্থীর প্রতিনিধিত্ব করে। আমাদের জীবনে এটাই প্রথম রাকসু নির্বাচন। আমরা চাই, নির্বাচিতরা দলীয় প্রভাব নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের স্বার্থকে প্রাধান্য দিক। রাকসু যেন লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতির বাহন না হয়ে প্রকৃত অর্থে ছাত্রদের প্রতিনিধিত্ব করে।’
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সোহেলি মুত্তাকি বলেন, ‘ছাত্রদের নেতৃত্ব থাকা দরকার, কিন্তু যদি সেটা দলীয় নেতাদের হাতে চলে যায়,আমরা বিগত বছর গুলোতে যেমন দেখেছি ছাত্রলীগ কিভাবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে। আমরা ওই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি আর চাই না।যদি হয় তাহলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কোনো লাভই হবে না। আমরা সংঘাত চাই না, শুধু প্রকৃত প্রতিনিধিত্ব চাই।’
কেন্দ্রীয় সহ নারী বিষয়ক সম্পাদক পদপ্রার্থী নদিয়া হক বলেন, আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রভাব সম্পর্কে আমরা সবাই জানি। দীর্ঘ ৩৫ বছর পর পর রাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। রাকসু নির্বাচনেও দলগুলো প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করছে। কারণ তারা জানে রাকসু সাধারণ শিক্ষার্থীদের হাতে চলে গেলে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তাদের আধিপত্য কমে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। যদি একটানা অন্তত ৩/৪ টি নির্বাচন আমরা নির্ধারিত সময়ে করতে পারি তবে আমার মনে হয় আমাদের ক্যাম্পাসের রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্যাটার্নে বিশাল একটা পরিবর্তন আসবে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি প্রতিহত করতে পারবে এবং দলীয় আধিপত্য নাকোচ করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষার্থী বান্ধব একটি ক্যাম্পাস তৈরি হবে।
৬৩ বছরের ইতিহাসের প্রথম নারী ভিপি প্রার্থী তাসীন খান বলেন, রাকসু কোনো রাজনৈতিক প্লাটফর্ম না। ইতিহাসে রাকসুকে রাজনৈতিকরণের উদাহরণ দেখা যায়। ফলে দেখা যায়, সাধারণ শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ অনেক কম এবং রাকসু হয়ে ওঠে ক্ষমতা চর্চার হাতিয়ার। রাকসু কী বা এর গঠনতন্ত্র কী, এটা যদি কেউ বুঝতে পারে তাহলে সে তার মতাদর্শ প্রমোট করবে না। যদি করে তবে তার স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্য আছে। আমাদের সবার সম্মিলিত চেষ্টা হওয়া উচিত ছাত্র সংসদ নির্বাচনকে রাজনৈতিক হতে ঠেকানো যদি তা না হয়, তাহলে আবার বিগত বছরগুলোর সেই পেশিশক্তির রাজনীতি, দখলদারত্বের রাজনীতি ফিরে আসবে।
শাখা ছাত্র ইউনিয়নের কোষাধ্যক্ষ কায়সার আহমেদ জানান, রাকসু নির্বাচনের মূল লক্ষ্যই হলো সকল প্রকার দখলদারত্ব থেকে ক্যাম্পাসকে মুক্ত করে বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করা। রাকসু নির্বাচন সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন হলে দলীয় লেজুরবৃত্তি ছাত্র রাজনীতির সমাপ্তি ঘটবে। আমরা যদি নির্বাচনে জয় লাভ করি তাহলে আমাদের প্রথম কাজ হবে রাকসুকে একাডেমিক ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত করা।
পরিসংখ্যান বিভাগের মেহেদী হাসান বলেন, রাকসু নির্বাচন নিয়ে আমাদের ভেতরে অনেক আশা থাকলেও কিছু শঙ্কা কাজ করছে। সবচেয়ে বড় ভয় হলো সহিংসতা—নির্বাচনের সময় যদি সংঘর্ষ বা দখলদারত্ব শুরু হয়, তাহলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা নিরাপদে ভোট দিতে পারবে না। আবার আমরা নিশ্চিত নই, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আসলেই নিরপেক্ষ থাকবে কি না। অনেক সময় দেখা যায়, সিদ্ধান্তগুলোতে বাইরের রাজনৈতিক প্রভাব এসে পড়ে। আমাদের ভয় হচ্ছে, জাতীয় দলের স্বার্থ যেন এখানে চাপিয়ে দেওয়া না হয়। আরেকটা বিষয় হলো, সবাই সমানভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে কি না। বিশেষ করে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা, যারা এখনও তেমনভাবে ক্যাম্পাস রাজনীতির সঙ্গে পরিচিত নয়—তারা কি কোনো প্রভাব ছাড়াই নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবে?
শিক্ষার্থীদের এমন মিশ্র প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে রাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক এফ নজরুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীদের ভয়ের কোনো কারণ নেই। আমরা নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। ভোটার এবং প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যা যা করণীয় আমরা সব করবো।
৩৫ বছরের দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচন আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচারণা আজ ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়েছে। ৩৫ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই নির্বাচনে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত প্রচারণা চালাতে পারবেন প্রার্থীরা।
রাকসু নির্বাচনে মোট ভোটার ২৮ হাজার ৯০৫ জন। এর মধ্যে ছেলের ১১টি আবাসিক হলে ১৭ হাজার ৬০০ জন ও মেয়েদের ছয়টি আবাসিক হলে ১১ হাজার ৩০৫ ভোটার রয়েছে। আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর রাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং গণনা শেষে সেদিনই ফল প্রকাশ করা হবে।
এদিকে দীর্ঘ বিরতির পর আয়োজিত এ নির্বাচনকে ঘিরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে তৈরি হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। অনেক শিক্ষার্থীর মতে, রাকসু দীর্ঘদিন নিষ্ক্রিয় থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যাগুলো তুলে ধরার কোনো কার্যকর প্ল্যাটফর্ম তাঁদের হাতে ছিল না। এবারের নির্বাচন সেই ঘাটতি পূরণের সুযোগ এনে দিয়েছে। আবার কারও কারও কাছে এটি গণতান্ত্রিক চর্চার নতুন সম্ভাবনা, আবার কারও মনে শঙ্কা—রাজনীতির নামে দখলদারত্ব ও সহিংসতা ফিরে আসতে পারে।
গতকাল রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক সেতাউর রহমান চূড়ান্ত প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করেন। তার দেওয়া তথ্যানুযায়ী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধি ও হল সংসদ নির্বাচনে মোট ৯০৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রার্থীদের মধ্যে কেন্দ্রীয় সংসদে (রাকসু) ২৪৮ জন, সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনে ৫৮ জন ও ১৭টি আবাসিক হলে ৫৯৭ জন রয়েছেন।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, কেন্দ্রীয় সংসদে সহ-সভাপতি ভিপি পদে ১৮ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ১৩ জন, সহকারী সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে ১৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এছাড়া ১৭টি আবাসিক হলে ভিপি পদে ৬১, জিএস পদে ৫৮ জন ও এজিএস পদে ৫৭ জন রয়েছেন। এদের মধ্যে মেয়েদের ছয়টি আবাসিক হলে ভিপি পদে ১৬ জন, জিএস পদেও ১৬ জন ও এজিএস পদে ১৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এদিকে রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) লটারির মাধ্যমে প্রার্থীদের ব্যালট নম্বর প্রদান করা হয়েছে। এর আগে একই প্যানেলের সবাইকে একই ব্যালট নম্বর দেওয়ার নীতিমালা করার সিদ্ধান্ত হলেও শনিবার স্বতন্ত্র প্রার্থীদের দাবির মুখে সব প্রার্থীর জন্য লটারির নীতিমালা গ্রহণ করা হয়।
হল সংসদ নির্বাচনে ৪২ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এর মধ্যে মেয়েদের ছয়টি হলে ৩৯ জন এবং ছেলেদের একটি হলে (বিজয়-২৪) তিনজন নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া মেয়েদের চারটি হলে চারটি পদের বিপরীতে কোনো প্রার্থীই নির্বাচন করছেন না।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, মেয়েদের হলগুলোর মধ্যে বেগম খালেদা জিয়া হলে সর্বোচ্চ ১০ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
এ ছাড়া বেগম রোকেয়া ও রহমতুন্নেসা হলে ৯ জন করে, জুলাই-৩৬ হলে সাত জন, তাপসী রাবেয়া হলে তিন জন ও মন্নুজান হলে মাত্র একজন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। তবে শীর্ষ তিন পদে কোনো হলেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কেউ বিজয়ী হচ্ছে না।
এদিকে বেগম খালেদা জিয়া হলে সহকারী বিতর্ক ও সাহিত্য সম্পাদক পদসহ মেয়েদের চারটি হলে চারপদ ফাঁকা রয়েছে। বেগম রোকেয়া, জুলাই-৩৬ ও রহমতুন্নেসা হলে নির্বাহী সদস্য পদে একটি করে তিনটি পদ ফাঁকা রয়েছে।
পদ ফাঁকা থাকার বিষয়ে রাকসু’র প্রধান রিটার্নিং অফিসার প্রফেসর ড. মো. সেতাউর রহমান বলেন, যে পদগুলো ফাঁকা থাকবে সেগুলো ছাড়াই হল সংসদ চলবে। অন্য কোনোভাবে সেগুলো পূরণ করার উপায় নেই।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থীই বলছেন, রাকসু দীর্ঘদিন নিষ্ক্রিয় থাকায় সমস্যাগুলো তুলে ধরার কোনো কার্যকর প্ল্যাটফর্ম তাঁদের হাতে ছিল না। এবারের নির্বাচন সেই ঘাটতি পূরণের সুযোগ এনে দিয়েছে। রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল বারিক বলেন, ‘রাকসু আমাদের সম্মিলিত কণ্ঠস্বর। এটি নিষ্ক্রিয় থাকার কারণে আবাসন সংকট, লাইব্রেরির স্বল্পতা, ক্যাম্পাসের বেহাল রাস্তা, নিরাপত্তা সমস্যা কিংবা খাদ্যদ্রব্যের মান—এসব বিষয়ে আমাদের বক্তব্য গুরুত্ব পেত না। সক্রিয় রাকসু থাকলে এসব সমস্যা ছাত্র প্রতিনিধিদের মাধ্যমে প্রশাসনের কাছে পৌঁছাবে। আমরা চাই, রাকসু রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থেকে শিক্ষার্থীদের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাবে।’
অন্যদিকে কেউ কেউ আশঙ্কা করছেন, নির্বাচন হলে রাজনীতির নামে আবারও দখলবাজি ও সংঘাতের পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে, যা শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করবে।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী হাসিবুল ইসলাম বলেন, ‘রাকসু সব শিক্ষার্থীর প্রতিনিধিত্ব করে। আমাদের জীবনে এটাই প্রথম রাকসু নির্বাচন। আমরা চাই, নির্বাচিতরা দলীয় প্রভাব নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের স্বার্থকে প্রাধান্য দিক। রাকসু যেন লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতির বাহন না হয়ে প্রকৃত অর্থে ছাত্রদের প্রতিনিধিত্ব করে।’
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সোহেলি মুত্তাকি বলেন, ‘ছাত্রদের নেতৃত্ব থাকা দরকার, কিন্তু যদি সেটা দলীয় নেতাদের হাতে চলে যায়,আমরা বিগত বছর গুলোতে যেমন দেখেছি ছাত্রলীগ কিভাবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে। আমরা ওই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি আর চাই না।যদি হয় তাহলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কোনো লাভই হবে না। আমরা সংঘাত চাই না, শুধু প্রকৃত প্রতিনিধিত্ব চাই।’
কেন্দ্রীয় সহ নারী বিষয়ক সম্পাদক পদপ্রার্থী নদিয়া হক বলেন, আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রভাব সম্পর্কে আমরা সবাই জানি। দীর্ঘ ৩৫ বছর পর পর রাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। রাকসু নির্বাচনেও দলগুলো প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করছে। কারণ তারা জানে রাকসু সাধারণ শিক্ষার্থীদের হাতে চলে গেলে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তাদের আধিপত্য কমে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। যদি একটানা অন্তত ৩/৪ টি নির্বাচন আমরা নির্ধারিত সময়ে করতে পারি তবে আমার মনে হয় আমাদের ক্যাম্পাসের রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্যাটার্নে বিশাল একটা পরিবর্তন আসবে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি প্রতিহত করতে পারবে এবং দলীয় আধিপত্য নাকোচ করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষার্থী বান্ধব একটি ক্যাম্পাস তৈরি হবে।
৬৩ বছরের ইতিহাসের প্রথম নারী ভিপি প্রার্থী তাসীন খান বলেন, রাকসু কোনো রাজনৈতিক প্লাটফর্ম না। ইতিহাসে রাকসুকে রাজনৈতিকরণের উদাহরণ দেখা যায়। ফলে দেখা যায়, সাধারণ শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ অনেক কম এবং রাকসু হয়ে ওঠে ক্ষমতা চর্চার হাতিয়ার। রাকসু কী বা এর গঠনতন্ত্র কী, এটা যদি কেউ বুঝতে পারে তাহলে সে তার মতাদর্শ প্রমোট করবে না। যদি করে তবে তার স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্য আছে। আমাদের সবার সম্মিলিত চেষ্টা হওয়া উচিত ছাত্র সংসদ নির্বাচনকে রাজনৈতিক হতে ঠেকানো যদি তা না হয়, তাহলে আবার বিগত বছরগুলোর সেই পেশিশক্তির রাজনীতি, দখলদারত্বের রাজনীতি ফিরে আসবে।
শাখা ছাত্র ইউনিয়নের কোষাধ্যক্ষ কায়সার আহমেদ জানান, রাকসু নির্বাচনের মূল লক্ষ্যই হলো সকল প্রকার দখলদারত্ব থেকে ক্যাম্পাসকে মুক্ত করে বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করা। রাকসু নির্বাচন সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন হলে দলীয় লেজুরবৃত্তি ছাত্র রাজনীতির সমাপ্তি ঘটবে। আমরা যদি নির্বাচনে জয় লাভ করি তাহলে আমাদের প্রথম কাজ হবে রাকসুকে একাডেমিক ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত করা।
পরিসংখ্যান বিভাগের মেহেদী হাসান বলেন, রাকসু নির্বাচন নিয়ে আমাদের ভেতরে অনেক আশা থাকলেও কিছু শঙ্কা কাজ করছে। সবচেয়ে বড় ভয় হলো সহিংসতা—নির্বাচনের সময় যদি সংঘর্ষ বা দখলদারত্ব শুরু হয়, তাহলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা নিরাপদে ভোট দিতে পারবে না। আবার আমরা নিশ্চিত নই, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আসলেই নিরপেক্ষ থাকবে কি না। অনেক সময় দেখা যায়, সিদ্ধান্তগুলোতে বাইরের রাজনৈতিক প্রভাব এসে পড়ে। আমাদের ভয় হচ্ছে, জাতীয় দলের স্বার্থ যেন এখানে চাপিয়ে দেওয়া না হয়। আরেকটা বিষয় হলো, সবাই সমানভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে কি না। বিশেষ করে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা, যারা এখনও তেমনভাবে ক্যাম্পাস রাজনীতির সঙ্গে পরিচিত নয়—তারা কি কোনো প্রভাব ছাড়াই নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবে?
শিক্ষার্থীদের এমন মিশ্র প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে রাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক এফ নজরুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীদের ভয়ের কোনো কারণ নেই। আমরা নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। ভোটার এবং প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যা যা করণীয় আমরা সব করবো।
কুষ্টিয়ার মিরপুরে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা করতে চাইছে না মন্দির কমিটি ও দুর্গাপূজা উদযাপন কমিটির কেউ। মিরপুর থানার ওসি বলছেন, অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করা যায় জানানোর পরও তারা রাজি হচ্ছে না।
২০ মিনিট আগেভাঙ্গা উপজেলার হামিরদী বাসস্ট্যান্ডসহ কয়েকটি স্থানে সকাল থেকে আন্দোলনকারীদের মহাসড়কের পাশে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল করতে দেখা যায়। তবে বেলা ১১টার দিকে টায়ার জ্বেলে, বিদ্যুতের খুঁটি ফেলে সড়কে বিক্ষোভ শুরু করেন তাঁরা।
২ ঘণ্টা আগেফরিদপুরের ভাঙ্গায় আসন পুনর্বিন্যাসকে কেন্দ্র করে ভাঙ্গা উপজেলা, থানায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটিয়েছে বিক্ষোভকারী জনতা। এ সময় উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন সরকারি অফিস ও থানা পুলিশের বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে বিক্ষুব্ধরা। এদিকে, ফরিদপুর-বরিশাল ও ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। পুরো এলাকায়
২ ঘণ্টা আগেজাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক। পাশাপাশি এই নির্বাচনে ওঠা নানা অভিযোগের নিরপেক্ষ তদন্তও চেয়েছে সংগঠনটি। আজ সোমবার এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক।
৩ ঘণ্টা আগে