কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েল গণহত্যা চালিয়েছে বলে বিশ্বাস করার যথেষ্ট ভিত্তি আছে। গাজায় ১৯৪৮ সালের গণহত্যা-বিরোধী জাতিসংঘ কনভেনশন লঙ্ঘিত হয়েছে। কনভেনশনে যে পাঁচটি নির্দিষ্ট কাজকে গণহত্যা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, কমিশন গাজায় তার চারটি লঙ্ঘনের প্রমাণ পেয়েছে।
মাহবুবুল আলম তারেক
ফিলিস্তিন ভূখণ্ড বিষয়ক জাতিসংঘের স্বাধীন আন্তর্জাতিক তদন্ত কমিশন একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গাজায় গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। ২০২১ সালে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদ কমিশনটি গঠন করে। এর দায়িত্ব ছিল আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও মানবিক আইনের সম্ভাব্য লঙ্ঘন তদন্ত করা।
কমিশনের নেতৃত্ব দিয়েছেন সাবেক জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকমিশনার নাভি পিল্লাই। সদস্য ছিলেন ক্রিস সিডোটি ও মিলুন কোঠারি। তারা ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় চলমান ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধকালীন ঘটনাগুলো পর্যালোচনা করেন। ৭২ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনটি আজ প্রকাশিত হয়। এটিকে এ পর্যন্ত জাতিসংঘের সবচেয়ে শক্তিশালী ও প্রভাবশালী তদন্ত বলা হচ্ছে। তবে এটি জাতিসংঘের আনুষ্ঠানিক অবস্থান নয়।
মঙ্গলবার আল-জাজিরাকে এক সাক্ষাৎকারে নাভি পিল্লাই বলেন, ‘আমরা ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বিভিন্ন বক্তব্য ও দেওয়া নির্দেশনার ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই তিনজন ইসরায়েল রাষ্ট্রের প্রতিনিধি ছিলেন। আইন অনুযায়ী রাষ্ট্রই দায়ী। তাই আমরা বলছি, ইসরায়েল রাষ্ট্র গণহত্যা করেছে।’
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ও অন্যান্য ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী ইসরায়েলে হামলা চালায়। এতে প্রায় ১ হাজার ২০০ মানুষ নিহত হয় এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। এর জবাবে ইসরায়েল গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে। বোমা হামলা, স্থল অভিযান এবং অবরোধ চালিয়ে যায় তারা। লক্ষ্য ছিল হামাসকে দমন করা এবং জিম্মিদের মুক্ত করা।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী ইসরায়েলি হামলায় ইতিমধ্যে অন্তত ৬৫ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। জনসংখ্যার ৯০ শতাংশেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ঘরবাড়ি ও অবকাঠামোর প্রায় ৮০ শতাংশ ধ্বংস হয়েছে। স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে, ফলে গাজার কিছু অংশে দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে।
কমিশনের তদন্ত ২০২৩ সালের অক্টোবরের পর ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডকে কেন্দ্র করে চালানো হয়। এতে বলা হয়েছে, ইসরায়েল রাষ্ট্র গাজায় গণহত্যা প্রতিরোধে ব্যর্থ হয়েছে এবং নিজেই অপরাধ সংঘটিত করেছে। এর আগে কমিশন জানিয়েছিল, হামাস ৭ অক্টোবর যুদ্ধাপরাধ করেছে এবং ইসরায়েলও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে।
২০২৫ সালের জুলাইয়ে কমিশনের সদস্যরা ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেন। তবে এখন প্রকাশিত তাদের প্রতিবেদনই চূড়ান্ত মূল্যায়ন হিসেবে বিবেচিত হবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েল গণহত্যা চালিয়েছে বলে বিশ্বাস করার যথেষ্ট ভিত্তি আছে। গাজায় ১৯৪৮ সালের গণহত্যা-বিরোধী জাতিসংঘ কনভেনশন লঙ্ঘিত হয়েছে।
১৯৪৮ সালের জাতিসংঘের ‘গণহত্যা প্রতিরোধ ও শাস্তি বিষয়ক কনভেনশন’ গণহত্যাকে সংজ্ঞায়িত করেছে এমন সব কর্মকাণ্ড হিসেবে, যা সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে কোনো জাতীয়, জাতিগত, নৃতাত্ত্বিক বা ধর্মীয় গোষ্ঠীকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে সংঘটিত হয়।
কনভেনশনের অনুচ্ছেদ-২ এ পাঁচটি নির্দিষ্ট কাজকে গণহত্যা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, যদি সেগুলো এই উদ্দেশ্যে সংঘটিত হয়— ১. নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর সদস্যদের টার্গেট করে হত্যা, ২. গোষ্ঠীর সদস্যদের ওপর গুরুতর শারীরিক বা মানসিক ক্ষতি সাধন, ৩. এমন জীবনযাপনের শর্ত আরোপ, যা ওই গোষ্ঠীর সম্পূর্ণ বা আংশিক শারীরিক ধ্বংস ডেকে আনে, ৪. গোষ্ঠীর ভেতরে জন্ম প্রতিরোধের ব্যবস্থা গ্রহণ। ৫. গোষ্ঠীর শিশুদের জোরপূর্বক অন্য গোষ্ঠীতে স্থানান্তর।
কমিশন গাজায় এই পাঁচটি মানদণ্ডের মধ্যে চারটি লঙ্ঘনের প্রমাণ পেয়েছে:
নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর সদস্যদের হত্যা: ইসরায়েল গাজার বেসামরিক মানুষ ও সুরক্ষিত স্থানে হামলা এবং ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় ভারী অস্ত্রের ব্যবহার করেছে।
গুরুতর শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি: বোমা হামলা, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক স্থানে আক্রমণ। এতে ব্যাপক মানসিক ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে।
জীবনধারণের অনুকূল পরিবেশ নষ্ট করা: খাদ্য, পানি, ওষুধ ও জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করা। এতে গাজায় দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয়েছে। ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন (আইপিসি) এটিকে ‘মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ’ বলেছে। গাজার ২৩ লাখ মানুষের ৯০ শতাংশের বেশি বাস্তুচ্যুত হয়েছে। হাসপাতাল ও স্যানিটেশন ব্যবস্থার মতো গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে।
জনসংখ্যা কমাতে শিশু জন্মরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ: ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ইসরায়েলি হামলায় গাজার সবচেয়ে বড় ফার্টিলিটি ক্লিনিক ধ্বংস হয়। এতে প্রায় ৪ হাজার ভ্রূণ, ১ হাজার শুক্রাণু নমুনা ও অনিষিক্ত ডিম্বানু নষ্ট হয়।
প্রতিবেদন বলছে, ইসরায়েলি বাহিনী ধারাবাহিকভাবে বেসামরিকদের লক্ষ্যবস্তু করেছে। ধ্বংসযজ্ঞের এই ধরন গণহত্যার উদ্দেশ্যকে প্রমাণ করে। রাষ্ট্র হিসেবে ইসরায়েলের ওপরই এর দায় বর্তায়।
কমিশন ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগও তুলেছে। যেমন সুরক্ষিত স্থাপনায় আক্রমণ, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি এবং অমানবিক জীবনযাত্রার শর্ত চাপিয়ে দেওয়া।
তদন্তে ইসরায়েলি নেতাদের বক্তব্য, সামরিক কর্মকাণ্ডের ধরণ এবং মানবিক প্রভাবকে প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।
গণহত্যার ইচ্ছার ইঙ্গিত দেওয়া বক্তব্য: প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ‘প্রচণ্ড প্রতিশোধ’ নেওয়ার ঘোষণা এবং আমালেকের প্রসঙ্গ টানা (যা সম্পূর্ণ ধ্বংসের ইঙ্গিত দেয়)। সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট ফিলিস্তিনিদের ‘মানব জন্তু’ বলে অভিহিত করেন এবং ‘সম্পূর্ণ অবরোধ’ চাপিয়ে দেন। প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগ গাজার ‘সম্পূর্ণ জাতি’কে দায়ী করেন।
সামরিক অভিযান: ভারী বোমা হামলায় গাজার বড় অংশ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। আইডিএফ ঘোষিত ‘টেরর টাওয়ার’ ভেঙে ফেলা হয়। বেসামরিক অবকাঠামো, যেমন ফার্টিলিটি ক্লিনিক, আক্রমণের শিকার হয়। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে গাজা সিটির ১০ লাখেরও বেশি মানুষকে দক্ষিণে চলে যেতে বাধ্য করা হয়।
মানবিক বিপর্যয়: অবরোধের ফলে খাদ্য, পানি ও ওষুধের তীব্র সংকট দেখা দেয়। স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে। উত্তর গাজায় দুর্ভিক্ষ শুরু হয়।
প্রতিবেদন তৈরি করতে কামিশন প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষীদের বক্তব্য, স্যাটেলাইট ছবি এবং প্রকাশ্য নথি থেকে তথ্য নিয়েছে। তবে ইসরায়েল জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদকে পক্ষপাতদুষ্ট বলে অভিযোগ করে এবং প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে।
গণহত্যা প্রমাণ করা কঠিন। কারণ এর জন্য ‘জেনোসাইড কনভেনশন’-এর অধীনে ইচ্ছাকৃত উদ্দেশ্য প্রমাণ করতে হয়। ১৫৩টি দেশ, যার মধ্যে ইসরায়েলও আছে, এই কনভেনশন অনুমোদন করেছে। আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) বর্তমানে দক্ষিণ আফ্রিকার দায়ের করা একটি মামলার শুনানি করছে। সেখানে ইসরায়েলকে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে। রায় পেতে কয়েক বছর লাগতে পারে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী গ্যালান্টের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের পরোয়ানা জারি করেছে।
ঐতিহাসিকভাবে, এই কনভেনশন তৈরি হয়েছিল দ্বিতীয় বিশ্বযেদ্ধের সময় ইহুদিদের ওপর গণহত্যা তথা হলোকাস্টের পর। তখন ৬০ লাখ ইহুদি হত্যার ঘটনায় বিশ্ব স্তম্ভিত হয়েছিল। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল ভবিষ্যতে এ ধরনের নৃশংসতা ঠেকানো। গাজার যুদ্ধ ইসরায়েল-ফিলিস্তিন শতবর্ষী বিরোধের অংশ। ইসরায়েল এটিকে হামাসের বিরুদ্ধে আত্মরক্ষার যুদ্ধ মনে করে। অন্যদিকে ফিলিস্তিনিরা এটিকে দখলদারির ধারাবাহিকতা হিসেবে দেখে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, জাতিসংঘের স্বাধীন বিশেষজ্ঞ এবং কিছু গবেষকও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ তুলেছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মতো মিত্ররা এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।
ইসরায়েলের অবস্থান: ইসরায়েল এই প্রতিবেদনের ফলাফলকে সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করেছে। তারা একে ‘বিকৃত, মিথ্যা ও ইহুদিবিদ্বেষী প্রচারণা’ এবং হামাস প্রভাবিত বলছে। ইসরায়েল দাবি করছে, ৭ অক্টোবর হামাসই গণহত্যার চেষ্টা করেছিল। এক আইডিএফ কর্মকর্তা একে ভিত্তিহীন বলেছেন এবং দাবি করেছেন, ইসরায়েল বেসামরিক ক্ষতি এড়াতে নজিরবিহীন পদক্ষেপ নিয়েছে। দেশটি ওই কমিশনের বিলুপ্তিও দাবি করেছে।
ফিলিস্তিনি ও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া: ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা এটিকে তাদের দীর্ঘদিনের দাবির স্বীকৃতি হিসেবে দেখছেন। পশ্চিমা দেশগুলোর (যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা) অনেকেই ইসরায়েলের প্রতি নিন্দা জানাচ্ছে। আরব রাষ্ট্রগুলোও একই অবস্থান নিয়েছে। আসন্ন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ অধিবেশনে কয়েকটি দেশ ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। নেতানিয়াহু একে সন্ত্রাসবাদকে পুরস্কৃত করার সমান বলে নিন্দা জানিয়েছেন।
জাতিসংঘ ও বৃহত্তর প্রভাব: প্রতিবেদনে সতর্ক করা হয়েছে, গণহত্যা প্রতিরোধ বা শাস্তি দিতে ব্যর্থ হলে অন্যান্য রাষ্ট্রও দায়ী হতে পারে। এটি আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের মামলায় প্রভাব ফেলতে পারে। ইসরায়েলের প্রতি মিত্র দেশগুলোর অস্ত্র সরবরাহ নীতি বা রাজনৈতিক সিদ্ধান্তেও প্রভাব পড়তে পারে।
এই প্রতিবেদন ইসরায়েলের গাজা অভিযানকে নিয়ে আন্তর্জাতিক নজরদারি আরও তীব্র করবে। এর ফলে দেশটি কূটনৈতিকভাবেও বিচ্ছিন্ন হতে পারে। আইনি প্রক্রিয়াও শুরু হতে পারে। এমনকি নীতি পরিবর্তন বা যুদ্ধবিরতির চাপও আসতে পারে। এখনো প্রায় ২০ জন ইসরায়েলি জিম্মি হামাসের হাতে আছে। যুদ্ধ শেষ হওয়ার লক্ষণও দেখা যাচ্ছে না। এই প্রতিবেদন গাজার ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়কে সামনে এনেছে। একই সঙ্গে এটি ইচ্ছা ও দায়বদ্ধতা নিয়ে গভীর বিভাজনও তুলে ধরেছে। যদিও প্রতিবেদনটি আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক নয়, তবুও এটি চলমান বৈশ্বিক আলোচনায় একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে যুক্ত হলো।
ফিলিস্তিন ভূখণ্ড বিষয়ক জাতিসংঘের স্বাধীন আন্তর্জাতিক তদন্ত কমিশন একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গাজায় গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। ২০২১ সালে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদ কমিশনটি গঠন করে। এর দায়িত্ব ছিল আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও মানবিক আইনের সম্ভাব্য লঙ্ঘন তদন্ত করা।
কমিশনের নেতৃত্ব দিয়েছেন সাবেক জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকমিশনার নাভি পিল্লাই। সদস্য ছিলেন ক্রিস সিডোটি ও মিলুন কোঠারি। তারা ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় চলমান ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধকালীন ঘটনাগুলো পর্যালোচনা করেন। ৭২ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনটি আজ প্রকাশিত হয়। এটিকে এ পর্যন্ত জাতিসংঘের সবচেয়ে শক্তিশালী ও প্রভাবশালী তদন্ত বলা হচ্ছে। তবে এটি জাতিসংঘের আনুষ্ঠানিক অবস্থান নয়।
মঙ্গলবার আল-জাজিরাকে এক সাক্ষাৎকারে নাভি পিল্লাই বলেন, ‘আমরা ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বিভিন্ন বক্তব্য ও দেওয়া নির্দেশনার ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই তিনজন ইসরায়েল রাষ্ট্রের প্রতিনিধি ছিলেন। আইন অনুযায়ী রাষ্ট্রই দায়ী। তাই আমরা বলছি, ইসরায়েল রাষ্ট্র গণহত্যা করেছে।’
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ও অন্যান্য ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী ইসরায়েলে হামলা চালায়। এতে প্রায় ১ হাজার ২০০ মানুষ নিহত হয় এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। এর জবাবে ইসরায়েল গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে। বোমা হামলা, স্থল অভিযান এবং অবরোধ চালিয়ে যায় তারা। লক্ষ্য ছিল হামাসকে দমন করা এবং জিম্মিদের মুক্ত করা।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী ইসরায়েলি হামলায় ইতিমধ্যে অন্তত ৬৫ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। জনসংখ্যার ৯০ শতাংশেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ঘরবাড়ি ও অবকাঠামোর প্রায় ৮০ শতাংশ ধ্বংস হয়েছে। স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে, ফলে গাজার কিছু অংশে দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে।
কমিশনের তদন্ত ২০২৩ সালের অক্টোবরের পর ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডকে কেন্দ্র করে চালানো হয়। এতে বলা হয়েছে, ইসরায়েল রাষ্ট্র গাজায় গণহত্যা প্রতিরোধে ব্যর্থ হয়েছে এবং নিজেই অপরাধ সংঘটিত করেছে। এর আগে কমিশন জানিয়েছিল, হামাস ৭ অক্টোবর যুদ্ধাপরাধ করেছে এবং ইসরায়েলও যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে।
২০২৫ সালের জুলাইয়ে কমিশনের সদস্যরা ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেন। তবে এখন প্রকাশিত তাদের প্রতিবেদনই চূড়ান্ত মূল্যায়ন হিসেবে বিবেচিত হবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েল গণহত্যা চালিয়েছে বলে বিশ্বাস করার যথেষ্ট ভিত্তি আছে। গাজায় ১৯৪৮ সালের গণহত্যা-বিরোধী জাতিসংঘ কনভেনশন লঙ্ঘিত হয়েছে।
১৯৪৮ সালের জাতিসংঘের ‘গণহত্যা প্রতিরোধ ও শাস্তি বিষয়ক কনভেনশন’ গণহত্যাকে সংজ্ঞায়িত করেছে এমন সব কর্মকাণ্ড হিসেবে, যা সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে কোনো জাতীয়, জাতিগত, নৃতাত্ত্বিক বা ধর্মীয় গোষ্ঠীকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে সংঘটিত হয়।
কনভেনশনের অনুচ্ছেদ-২ এ পাঁচটি নির্দিষ্ট কাজকে গণহত্যা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, যদি সেগুলো এই উদ্দেশ্যে সংঘটিত হয়— ১. নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর সদস্যদের টার্গেট করে হত্যা, ২. গোষ্ঠীর সদস্যদের ওপর গুরুতর শারীরিক বা মানসিক ক্ষতি সাধন, ৩. এমন জীবনযাপনের শর্ত আরোপ, যা ওই গোষ্ঠীর সম্পূর্ণ বা আংশিক শারীরিক ধ্বংস ডেকে আনে, ৪. গোষ্ঠীর ভেতরে জন্ম প্রতিরোধের ব্যবস্থা গ্রহণ। ৫. গোষ্ঠীর শিশুদের জোরপূর্বক অন্য গোষ্ঠীতে স্থানান্তর।
কমিশন গাজায় এই পাঁচটি মানদণ্ডের মধ্যে চারটি লঙ্ঘনের প্রমাণ পেয়েছে:
নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর সদস্যদের হত্যা: ইসরায়েল গাজার বেসামরিক মানুষ ও সুরক্ষিত স্থানে হামলা এবং ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় ভারী অস্ত্রের ব্যবহার করেছে।
গুরুতর শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি: বোমা হামলা, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক স্থানে আক্রমণ। এতে ব্যাপক মানসিক ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে।
জীবনধারণের অনুকূল পরিবেশ নষ্ট করা: খাদ্য, পানি, ওষুধ ও জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করা। এতে গাজায় দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয়েছে। ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন (আইপিসি) এটিকে ‘মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ’ বলেছে। গাজার ২৩ লাখ মানুষের ৯০ শতাংশের বেশি বাস্তুচ্যুত হয়েছে। হাসপাতাল ও স্যানিটেশন ব্যবস্থার মতো গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে।
জনসংখ্যা কমাতে শিশু জন্মরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ: ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ইসরায়েলি হামলায় গাজার সবচেয়ে বড় ফার্টিলিটি ক্লিনিক ধ্বংস হয়। এতে প্রায় ৪ হাজার ভ্রূণ, ১ হাজার শুক্রাণু নমুনা ও অনিষিক্ত ডিম্বানু নষ্ট হয়।
প্রতিবেদন বলছে, ইসরায়েলি বাহিনী ধারাবাহিকভাবে বেসামরিকদের লক্ষ্যবস্তু করেছে। ধ্বংসযজ্ঞের এই ধরন গণহত্যার উদ্দেশ্যকে প্রমাণ করে। রাষ্ট্র হিসেবে ইসরায়েলের ওপরই এর দায় বর্তায়।
কমিশন ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগও তুলেছে। যেমন সুরক্ষিত স্থাপনায় আক্রমণ, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি এবং অমানবিক জীবনযাত্রার শর্ত চাপিয়ে দেওয়া।
তদন্তে ইসরায়েলি নেতাদের বক্তব্য, সামরিক কর্মকাণ্ডের ধরণ এবং মানবিক প্রভাবকে প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।
গণহত্যার ইচ্ছার ইঙ্গিত দেওয়া বক্তব্য: প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ‘প্রচণ্ড প্রতিশোধ’ নেওয়ার ঘোষণা এবং আমালেকের প্রসঙ্গ টানা (যা সম্পূর্ণ ধ্বংসের ইঙ্গিত দেয়)। সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট ফিলিস্তিনিদের ‘মানব জন্তু’ বলে অভিহিত করেন এবং ‘সম্পূর্ণ অবরোধ’ চাপিয়ে দেন। প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগ গাজার ‘সম্পূর্ণ জাতি’কে দায়ী করেন।
সামরিক অভিযান: ভারী বোমা হামলায় গাজার বড় অংশ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। আইডিএফ ঘোষিত ‘টেরর টাওয়ার’ ভেঙে ফেলা হয়। বেসামরিক অবকাঠামো, যেমন ফার্টিলিটি ক্লিনিক, আক্রমণের শিকার হয়। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে গাজা সিটির ১০ লাখেরও বেশি মানুষকে দক্ষিণে চলে যেতে বাধ্য করা হয়।
মানবিক বিপর্যয়: অবরোধের ফলে খাদ্য, পানি ও ওষুধের তীব্র সংকট দেখা দেয়। স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে। উত্তর গাজায় দুর্ভিক্ষ শুরু হয়।
প্রতিবেদন তৈরি করতে কামিশন প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষীদের বক্তব্য, স্যাটেলাইট ছবি এবং প্রকাশ্য নথি থেকে তথ্য নিয়েছে। তবে ইসরায়েল জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদকে পক্ষপাতদুষ্ট বলে অভিযোগ করে এবং প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে।
গণহত্যা প্রমাণ করা কঠিন। কারণ এর জন্য ‘জেনোসাইড কনভেনশন’-এর অধীনে ইচ্ছাকৃত উদ্দেশ্য প্রমাণ করতে হয়। ১৫৩টি দেশ, যার মধ্যে ইসরায়েলও আছে, এই কনভেনশন অনুমোদন করেছে। আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) বর্তমানে দক্ষিণ আফ্রিকার দায়ের করা একটি মামলার শুনানি করছে। সেখানে ইসরায়েলকে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে। রায় পেতে কয়েক বছর লাগতে পারে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী গ্যালান্টের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের পরোয়ানা জারি করেছে।
ঐতিহাসিকভাবে, এই কনভেনশন তৈরি হয়েছিল দ্বিতীয় বিশ্বযেদ্ধের সময় ইহুদিদের ওপর গণহত্যা তথা হলোকাস্টের পর। তখন ৬০ লাখ ইহুদি হত্যার ঘটনায় বিশ্ব স্তম্ভিত হয়েছিল। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল ভবিষ্যতে এ ধরনের নৃশংসতা ঠেকানো। গাজার যুদ্ধ ইসরায়েল-ফিলিস্তিন শতবর্ষী বিরোধের অংশ। ইসরায়েল এটিকে হামাসের বিরুদ্ধে আত্মরক্ষার যুদ্ধ মনে করে। অন্যদিকে ফিলিস্তিনিরা এটিকে দখলদারির ধারাবাহিকতা হিসেবে দেখে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, জাতিসংঘের স্বাধীন বিশেষজ্ঞ এবং কিছু গবেষকও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ তুলেছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মতো মিত্ররা এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।
ইসরায়েলের অবস্থান: ইসরায়েল এই প্রতিবেদনের ফলাফলকে সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করেছে। তারা একে ‘বিকৃত, মিথ্যা ও ইহুদিবিদ্বেষী প্রচারণা’ এবং হামাস প্রভাবিত বলছে। ইসরায়েল দাবি করছে, ৭ অক্টোবর হামাসই গণহত্যার চেষ্টা করেছিল। এক আইডিএফ কর্মকর্তা একে ভিত্তিহীন বলেছেন এবং দাবি করেছেন, ইসরায়েল বেসামরিক ক্ষতি এড়াতে নজিরবিহীন পদক্ষেপ নিয়েছে। দেশটি ওই কমিশনের বিলুপ্তিও দাবি করেছে।
ফিলিস্তিনি ও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া: ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা এটিকে তাদের দীর্ঘদিনের দাবির স্বীকৃতি হিসেবে দেখছেন। পশ্চিমা দেশগুলোর (যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা) অনেকেই ইসরায়েলের প্রতি নিন্দা জানাচ্ছে। আরব রাষ্ট্রগুলোও একই অবস্থান নিয়েছে। আসন্ন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ অধিবেশনে কয়েকটি দেশ ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। নেতানিয়াহু একে সন্ত্রাসবাদকে পুরস্কৃত করার সমান বলে নিন্দা জানিয়েছেন।
জাতিসংঘ ও বৃহত্তর প্রভাব: প্রতিবেদনে সতর্ক করা হয়েছে, গণহত্যা প্রতিরোধ বা শাস্তি দিতে ব্যর্থ হলে অন্যান্য রাষ্ট্রও দায়ী হতে পারে। এটি আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের মামলায় প্রভাব ফেলতে পারে। ইসরায়েলের প্রতি মিত্র দেশগুলোর অস্ত্র সরবরাহ নীতি বা রাজনৈতিক সিদ্ধান্তেও প্রভাব পড়তে পারে।
এই প্রতিবেদন ইসরায়েলের গাজা অভিযানকে নিয়ে আন্তর্জাতিক নজরদারি আরও তীব্র করবে। এর ফলে দেশটি কূটনৈতিকভাবেও বিচ্ছিন্ন হতে পারে। আইনি প্রক্রিয়াও শুরু হতে পারে। এমনকি নীতি পরিবর্তন বা যুদ্ধবিরতির চাপও আসতে পারে। এখনো প্রায় ২০ জন ইসরায়েলি জিম্মি হামাসের হাতে আছে। যুদ্ধ শেষ হওয়ার লক্ষণও দেখা যাচ্ছে না। এই প্রতিবেদন গাজার ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়কে সামনে এনেছে। একই সঙ্গে এটি ইচ্ছা ও দায়বদ্ধতা নিয়ে গভীর বিভাজনও তুলে ধরেছে। যদিও প্রতিবেদনটি আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক নয়, তবুও এটি চলমান বৈশ্বিক আলোচনায় একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে যুক্ত হলো।
মার্কিন গণমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসের বিরুদ্ধে ১৫ বিলিয়ন ডলারের ‘মানহানি’ ও ‘অপবাদমূলক’ মামলা করবেন যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশালে এক পোস্টে ট্রাম্প নিজেই একথা জানিয়েছেন।
২১ ঘণ্টা আগে২০২৫ সালে কাতার ছিল সপ্তম দেশ যেখানে ইসরায়েল হামলা চালাল। ফলে পরিস্থিতি এক নতুন মাত্রায় পৌঁছায়। এর জবাবে আরব লীগ ও ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) যৌথভাবে উদ্যোগ নেয়।
১ দিন আগেবাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে শুরু হওয়া তর্কের জেরে সহপাঠীদের ওপর হামলার অভিযোগে আসামের শিলচরে অবস্থিত ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এনআইটি) থেকে পাঁচ বাংলাদেশি শিক্ষার্থীকে বরখাস্ত করেছে কর্তৃপক্ষ।
১ দিন আগেজেন-জি প্রজন্মের পছন্দ হিসেবেই সুশীলা কার্কি নেপালের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। গত শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) তিনি শপথ নেন। কিন্তু মাত্র তিন দিনের মাথায় তার পদত্যাগের দাবিতে উত্তেজনা ছড়িয়েছে দেশটিতে।
১ দিন আগে