তাঁরা দেখিয়েছেন, কোয়ান্টাম জগতের অদ্ভুত আচরণ এখন বাস্তব পরিসরেও ধরা যায়। ক্লার্ক, ডেভোরে ও মার্টিনিস শুধু এক জটিল পদার্থবিজ্ঞানের ধাঁধা সমাধান করেননি; তাঁরা এমন এক প্রযুক্তিগত যুগের দ্বার খুলেছেন, যা একুশ শতকের কম্পিউটিং ও সেন্সর প্রযুক্তিকে নতুন রূপ দেবে। তাদের কাজ আমাদের মনে করিয়ে দেয়—কোয়ান্টাম ও বাস্তব জগতের সীমানা এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি ঘনিষ্ঠ।
স্ট্রিম ডেস্ক
এ বছর পদার্থবিজ্ঞানে যৌথভাবে নোবেল পেয়েছেন তিন আমেরিকান বিজ্ঞানী— জন ক্লার্ক, মিশেল ডেভরে ও জন এম মার্টিনিস। তারা বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার গবেষক। আজ (৭ অক্টোবর, মঙ্গলবার) বিকাল পৌনে ৪টার দিকে সুইডেনের রয়্যাল একাডেমি অব সায়েন্সেস পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কারের ঘোষণা দেয়।
তাঁরা বৃহদাকারে কোয়ান্টাম মেকানিক্যাল টানেলিং ও বৈদ্যুতিক সার্কিটে শক্তির কুয়ান্টাইজেশন বা ধাপভিত্তিক বিন্যাস আবিষ্কারের জন্য এই সম্মান ও পুরস্কার অর্জন করেন। তাদের এই গবেষণা ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কোয়ান্টাম প্রক্রিয়া ও বৃহত্তর বাস্তব জগতের ঘটনার মধ্যে সংযোগ স্থাপন করেছে। এর ফলে কোয়ান্টাম কম্পিউটিং, তথ্য এনক্রিপশন ও সেন্সর প্রযুক্তিতে নতুন অগ্রগতি সম্ভব হয়েছে।
পুরস্কারের অর্থমূল্য ১ কোটি ১০ লাখ সুইডিশ ক্রোনা (প্রায় ১০ লাখ মার্কিন ডলার), যা তিনজন বিজয়ীর মধ্যে সমানভাবে ভাগ করা হবে। আনুষ্ঠানিকভাবে পুরস্কার প্রদান করা হবে ২০২৫ সালের ১০ ডিসেম্বর স্টকহোমে।
কোয়ান্টাম মেকানিক্যাল টানেলিং কী
কোয়ান্টাম টানেলিং একটি আশ্চর্যজনক ঘটনা, যেখানে ইলেকট্রনের মতো কণাগুলো এমন শক্তিবাধা অতিক্রম করতে পারে, যা ক্লাসিক্যাল পদার্থবিজ্ঞানে অসম্ভব। যেন একটি বল দেয়াল ফুঁড়ে বেরিয়ে যায়।
কোয়ান্টাম স্তরে কণাগুলোর তরঙ্গধর্মী আচরণ থাকে, যার ফলে শক্তিবাধা পেরিয়ে যাওয়ার একটি সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়। এই প্রভাব ট্রানজিস্টর বা স্ক্যানিং টানেলিং মাইক্রোস্কোপের মতো আধুনিক প্রযুক্তিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
আগে ধারণা করা হতো, এ ধরনের ঘটনা কেবল পারমাণবিক স্তরে ঘটে, যেখানে কোয়ান্টাম প্রভাব প্রধান। কিন্তু পদার্থবিদদের দীর্ঘদিনের একটি প্রশ্ন ছিল—এগুলো কি বৃহদাকারে ঘটতে পারে?
২০২৫ সালের নোবেলজয়ীরা এই প্রশ্নের উত্তর দেন। তাঁরা প্রমাণ করেন যে শূন্য কেলভিনের কাছাকাছি তাপমাত্রায় ঠান্ডা করা সুপারকন্ডাক্টিং বৈদ্যুতিক সার্কিটেও টানেলিং ও শক্তির ধাপভিত্তিক পরিবর্তন দেখা যায়।
তাঁদের পরীক্ষায় ব্যবহৃত হয় জোসেফসন জাংশন—দুটি সুপারকন্ডাক্টরের মাঝে পাতলা ইনসুলেটর স্তর। এই যন্ত্রের মাধ্যমে তাঁরা বৃহদাকারে কোয়ান্টাম প্রভাব সরাসরি পর্যবেক্ষণ করেন, যা হাতে ধরে দেখার মতো বাস্তব পরিসরে সম্ভব হয়।
এই গবেষণা তাত্ত্বিক পদার্থবিদ অ্যান্থনি লেজেটের (২০০৩ সালের নোবেলজয়ী) কাজ থেকে অনুপ্রাণিত। এটি কোয়ান্টাম পদার্থবিজ্ঞানের এক নতুন অধ্যায় উন্মোচন করেছে।
নোবেল বিজয়ীরা ও তাদের অবদান
এই পুরস্কার ১৯৮০ ও ১৯৯০-র দশকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণার যৌথ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে দেওয়া হয়েছে।
জন ক্লার্ক: তিনি সুপারকন্ডাক্টিং কোয়ান্টাম ইন্টারফেরেন্স ডিভাইস (স্কুইড) নিয়ে পথিকৃৎ গবেষণা করেন। ১৯৮০-র দশকে তাঁর দল বৃহদাকারে বৈদ্যুতিক সার্কিটে শক্তির ধাপভিত্তিক বিন্যাস বা কুয়ান্টাইজেশন প্রমাণ করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা কখনও ভাবিনি যে এই কাজ নোবেল পুরস্কারের এনে দিতে পারে।’
জন ক্লার্ক ১৯৪২ সালে যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৬৮ সালে যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করেন এবং বর্তমানে অধ্যাপনা করছেন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে।
মিশেল এইচ. ডেভোরে: তিনি কোয়ান্টাম সার্কিটকে ‘কৃত্রিম পরমাণু’ হিসেবে উপস্থাপন করেন এবং প্রমাণ করেন যে এসব সার্কিট কোয়ান্টাম অবস্থা পরিবর্তন করতে পারে। তাঁর গবেষণা দেখায়, বৃহদাকারে গঠিত সিস্টেমও ক্ষুদ্র কণার মতো কোয়ান্টাম আচরণ করতে পারে। এতে কোয়ান্টাম অবস্থার নিখুঁত নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হয়।
মিশেল ডেভোরে ১৯৫৩ সালে ফ্রান্সের প্যারিসে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি পিএইচডি করেছেন ১৯৮২ সালে ফ্রান্সের প্যারিস-সুড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। বর্তমানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয় ও ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক।
জন এম. মার্টিনিস: তিনি বৈদ্যুতিক সার্কিটে সুসংহত কোয়ান্টাম টানেলিং পর্যবেক্ষণ করেন, যা পরবর্তীতে বৃহৎ পরিসরের কোয়ান্টাম কম্পিউটার তৈরির ভিত্তি স্থাপন করে। গুগলসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তাঁর যৌথ কাজ আধুনিক কোয়ান্টাম কম্পিউটিংয়ের উন্নয়নে সরাসরি প্রভাব ফেলেছে।
জন এম মার্টিনিসের জন্ম ১৯৫৮ সালে। তিনি ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৭ সালে পিএইচডি সম্পন্ন করেছেন এবং সেখানেই অধ্যাপক হিসেবে রয়েছেন।
তিনজনের সম্মিলিত অবদান বৈদ্যুতিক সার্কিটকে নিয়ন্ত্রিত কোয়ান্টাম সিস্টেমে রূপান্তর করেছে। তাঁরা প্রমাণ করেছেন, কোয়ান্টাম মেকানিক্সের প্রভাব কেবল ক্ষুদ্র জগতে সীমাবদ্ধ নয়—তা বৃহৎ পরিসরেও কার্যকর হতে পারে।
প্রভাব ও গুরুত্ব
এই আবিষ্কার কোয়ান্টাম প্রযুক্তির ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী অগ্রগতি। এর ফলে এখন কোয়ান্টাম প্রভাবকে বৃহদাকারে ও নিয়ন্ত্রিতভাবে ব্যবহার করা সম্ভব হয়েছে।
কোয়ান্টাম কম্পিউটার: এই গবেষণার ভিত্তিতে তৈরি সুপারকন্ডাক্টিং কিউবিট এখন আইবিএম ও গুগল-এর মতো প্রতিষ্ঠানের কোয়ান্টাম গবেষণার মূলভিত্তি।
কোয়ান্টাম ক্রিপ্টোগ্রাফি ও সেন্সর: নিরাপদ তথ্যপ্রেরণ ও অতিসংবেদনশীল চিকিৎসা বা মহাকর্ষীয় তরঙ্গ শনাক্তকারী যন্ত্র তৈরিতে সহায়ক।
ডিজিটাল প্রযুক্তির ভিত্তি: নোবেল কমিটির চেয়ার ওলে এরিকসন বলেন, ‘এটি শুধু গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং অত্যন্ত কার্যকরও, কারণ কোয়ান্টাম মেকানিক্সই সব ডিজিটাল প্রযুক্তির মূলভিত্তি।’
গত বছরের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক পদার্থবিজ্ঞানের নোবেলের ধারাবাহিকতায় এই পুরস্কার দেখায়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিপ্লবের কেন্দ্রে পদার্থবিজ্ঞান এখনও অপরিহার্য। যদিও কোয়ান্টাম সিস্টেমকে স্থিতিশীল রাখা (ডিকোহেরেন্স কমানো) এখনো চ্যালেঞ্জ, তবুও এই তিন বিজ্ঞানীর কাজ ত্রুটিমুক্ত ও কার্যকর কোয়ান্টাম মেশিনের দিকে অগ্রযাত্রা ত্বরান্বিত করেছে।
২০২৫ সালের পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার এক অসাধারণ পরীক্ষামূলক সাফল্যের স্বীকৃতি। এটি দেখিয়েছে, কোয়ান্টাম জগতের অদ্ভুত আচরণ এখন বাস্তব পরিসরেও ধরা যায়। ক্লার্ক, ডেভোরে ও মার্টিনিস শুধু এক জটিল পদার্থবিজ্ঞানের ধাঁধা সমাধান করেননি; তাঁরা এমন এক প্রযুক্তিগত যুগের দ্বার খুলেছেন, যা একুশ শতকের কম্পিউটিং ও সেন্সর প্রযুক্তিকে নতুন রূপ দেবে। তাদের কাজ আমাদের মনে করিয়ে দেয়—কোয়ান্টাম ও বাস্তব জগতের সীমানা এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি ঘনিষ্ঠ।
তথ্যসূত্র: আল-জাজিরা, সিএনএন, নোবেল প্রাইজ ডট ওআরজি
এ বছর পদার্থবিজ্ঞানে যৌথভাবে নোবেল পেয়েছেন তিন আমেরিকান বিজ্ঞানী— জন ক্লার্ক, মিশেল ডেভরে ও জন এম মার্টিনিস। তারা বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার গবেষক। আজ (৭ অক্টোবর, মঙ্গলবার) বিকাল পৌনে ৪টার দিকে সুইডেনের রয়্যাল একাডেমি অব সায়েন্সেস পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কারের ঘোষণা দেয়।
তাঁরা বৃহদাকারে কোয়ান্টাম মেকানিক্যাল টানেলিং ও বৈদ্যুতিক সার্কিটে শক্তির কুয়ান্টাইজেশন বা ধাপভিত্তিক বিন্যাস আবিষ্কারের জন্য এই সম্মান ও পুরস্কার অর্জন করেন। তাদের এই গবেষণা ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কোয়ান্টাম প্রক্রিয়া ও বৃহত্তর বাস্তব জগতের ঘটনার মধ্যে সংযোগ স্থাপন করেছে। এর ফলে কোয়ান্টাম কম্পিউটিং, তথ্য এনক্রিপশন ও সেন্সর প্রযুক্তিতে নতুন অগ্রগতি সম্ভব হয়েছে।
পুরস্কারের অর্থমূল্য ১ কোটি ১০ লাখ সুইডিশ ক্রোনা (প্রায় ১০ লাখ মার্কিন ডলার), যা তিনজন বিজয়ীর মধ্যে সমানভাবে ভাগ করা হবে। আনুষ্ঠানিকভাবে পুরস্কার প্রদান করা হবে ২০২৫ সালের ১০ ডিসেম্বর স্টকহোমে।
কোয়ান্টাম মেকানিক্যাল টানেলিং কী
কোয়ান্টাম টানেলিং একটি আশ্চর্যজনক ঘটনা, যেখানে ইলেকট্রনের মতো কণাগুলো এমন শক্তিবাধা অতিক্রম করতে পারে, যা ক্লাসিক্যাল পদার্থবিজ্ঞানে অসম্ভব। যেন একটি বল দেয়াল ফুঁড়ে বেরিয়ে যায়।
কোয়ান্টাম স্তরে কণাগুলোর তরঙ্গধর্মী আচরণ থাকে, যার ফলে শক্তিবাধা পেরিয়ে যাওয়ার একটি সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়। এই প্রভাব ট্রানজিস্টর বা স্ক্যানিং টানেলিং মাইক্রোস্কোপের মতো আধুনিক প্রযুক্তিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
আগে ধারণা করা হতো, এ ধরনের ঘটনা কেবল পারমাণবিক স্তরে ঘটে, যেখানে কোয়ান্টাম প্রভাব প্রধান। কিন্তু পদার্থবিদদের দীর্ঘদিনের একটি প্রশ্ন ছিল—এগুলো কি বৃহদাকারে ঘটতে পারে?
২০২৫ সালের নোবেলজয়ীরা এই প্রশ্নের উত্তর দেন। তাঁরা প্রমাণ করেন যে শূন্য কেলভিনের কাছাকাছি তাপমাত্রায় ঠান্ডা করা সুপারকন্ডাক্টিং বৈদ্যুতিক সার্কিটেও টানেলিং ও শক্তির ধাপভিত্তিক পরিবর্তন দেখা যায়।
তাঁদের পরীক্ষায় ব্যবহৃত হয় জোসেফসন জাংশন—দুটি সুপারকন্ডাক্টরের মাঝে পাতলা ইনসুলেটর স্তর। এই যন্ত্রের মাধ্যমে তাঁরা বৃহদাকারে কোয়ান্টাম প্রভাব সরাসরি পর্যবেক্ষণ করেন, যা হাতে ধরে দেখার মতো বাস্তব পরিসরে সম্ভব হয়।
এই গবেষণা তাত্ত্বিক পদার্থবিদ অ্যান্থনি লেজেটের (২০০৩ সালের নোবেলজয়ী) কাজ থেকে অনুপ্রাণিত। এটি কোয়ান্টাম পদার্থবিজ্ঞানের এক নতুন অধ্যায় উন্মোচন করেছে।
নোবেল বিজয়ীরা ও তাদের অবদান
এই পুরস্কার ১৯৮০ ও ১৯৯০-র দশকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণার যৌথ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে দেওয়া হয়েছে।
জন ক্লার্ক: তিনি সুপারকন্ডাক্টিং কোয়ান্টাম ইন্টারফেরেন্স ডিভাইস (স্কুইড) নিয়ে পথিকৃৎ গবেষণা করেন। ১৯৮০-র দশকে তাঁর দল বৃহদাকারে বৈদ্যুতিক সার্কিটে শক্তির ধাপভিত্তিক বিন্যাস বা কুয়ান্টাইজেশন প্রমাণ করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা কখনও ভাবিনি যে এই কাজ নোবেল পুরস্কারের এনে দিতে পারে।’
জন ক্লার্ক ১৯৪২ সালে যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৬৮ সালে যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করেন এবং বর্তমানে অধ্যাপনা করছেন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে।
মিশেল এইচ. ডেভোরে: তিনি কোয়ান্টাম সার্কিটকে ‘কৃত্রিম পরমাণু’ হিসেবে উপস্থাপন করেন এবং প্রমাণ করেন যে এসব সার্কিট কোয়ান্টাম অবস্থা পরিবর্তন করতে পারে। তাঁর গবেষণা দেখায়, বৃহদাকারে গঠিত সিস্টেমও ক্ষুদ্র কণার মতো কোয়ান্টাম আচরণ করতে পারে। এতে কোয়ান্টাম অবস্থার নিখুঁত নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হয়।
মিশেল ডেভোরে ১৯৫৩ সালে ফ্রান্সের প্যারিসে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি পিএইচডি করেছেন ১৯৮২ সালে ফ্রান্সের প্যারিস-সুড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। বর্তমানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয় ও ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক।
জন এম. মার্টিনিস: তিনি বৈদ্যুতিক সার্কিটে সুসংহত কোয়ান্টাম টানেলিং পর্যবেক্ষণ করেন, যা পরবর্তীতে বৃহৎ পরিসরের কোয়ান্টাম কম্পিউটার তৈরির ভিত্তি স্থাপন করে। গুগলসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তাঁর যৌথ কাজ আধুনিক কোয়ান্টাম কম্পিউটিংয়ের উন্নয়নে সরাসরি প্রভাব ফেলেছে।
জন এম মার্টিনিসের জন্ম ১৯৫৮ সালে। তিনি ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৭ সালে পিএইচডি সম্পন্ন করেছেন এবং সেখানেই অধ্যাপক হিসেবে রয়েছেন।
তিনজনের সম্মিলিত অবদান বৈদ্যুতিক সার্কিটকে নিয়ন্ত্রিত কোয়ান্টাম সিস্টেমে রূপান্তর করেছে। তাঁরা প্রমাণ করেছেন, কোয়ান্টাম মেকানিক্সের প্রভাব কেবল ক্ষুদ্র জগতে সীমাবদ্ধ নয়—তা বৃহৎ পরিসরেও কার্যকর হতে পারে।
প্রভাব ও গুরুত্ব
এই আবিষ্কার কোয়ান্টাম প্রযুক্তির ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী অগ্রগতি। এর ফলে এখন কোয়ান্টাম প্রভাবকে বৃহদাকারে ও নিয়ন্ত্রিতভাবে ব্যবহার করা সম্ভব হয়েছে।
কোয়ান্টাম কম্পিউটার: এই গবেষণার ভিত্তিতে তৈরি সুপারকন্ডাক্টিং কিউবিট এখন আইবিএম ও গুগল-এর মতো প্রতিষ্ঠানের কোয়ান্টাম গবেষণার মূলভিত্তি।
কোয়ান্টাম ক্রিপ্টোগ্রাফি ও সেন্সর: নিরাপদ তথ্যপ্রেরণ ও অতিসংবেদনশীল চিকিৎসা বা মহাকর্ষীয় তরঙ্গ শনাক্তকারী যন্ত্র তৈরিতে সহায়ক।
ডিজিটাল প্রযুক্তির ভিত্তি: নোবেল কমিটির চেয়ার ওলে এরিকসন বলেন, ‘এটি শুধু গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং অত্যন্ত কার্যকরও, কারণ কোয়ান্টাম মেকানিক্সই সব ডিজিটাল প্রযুক্তির মূলভিত্তি।’
গত বছরের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক পদার্থবিজ্ঞানের নোবেলের ধারাবাহিকতায় এই পুরস্কার দেখায়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিপ্লবের কেন্দ্রে পদার্থবিজ্ঞান এখনও অপরিহার্য। যদিও কোয়ান্টাম সিস্টেমকে স্থিতিশীল রাখা (ডিকোহেরেন্স কমানো) এখনো চ্যালেঞ্জ, তবুও এই তিন বিজ্ঞানীর কাজ ত্রুটিমুক্ত ও কার্যকর কোয়ান্টাম মেশিনের দিকে অগ্রযাত্রা ত্বরান্বিত করেছে।
২০২৫ সালের পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার এক অসাধারণ পরীক্ষামূলক সাফল্যের স্বীকৃতি। এটি দেখিয়েছে, কোয়ান্টাম জগতের অদ্ভুত আচরণ এখন বাস্তব পরিসরেও ধরা যায়। ক্লার্ক, ডেভোরে ও মার্টিনিস শুধু এক জটিল পদার্থবিজ্ঞানের ধাঁধা সমাধান করেননি; তাঁরা এমন এক প্রযুক্তিগত যুগের দ্বার খুলেছেন, যা একুশ শতকের কম্পিউটিং ও সেন্সর প্রযুক্তিকে নতুন রূপ দেবে। তাদের কাজ আমাদের মনে করিয়ে দেয়—কোয়ান্টাম ও বাস্তব জগতের সীমানা এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি ঘনিষ্ঠ।
তথ্যসূত্র: আল-জাজিরা, সিএনএন, নোবেল প্রাইজ ডট ওআরজি
ইসরায়েলি অবোরধ ভাঙতে গাজা অভিমুখী ‘কনশানস’ জাহাজটি আগামীকাল বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) ভোর নাগাদ ‘রেড জোন’ তথা বিপজ্জনক এলাকায় পৌঁছাতে পারে। আলোকচিত্রী শহীদুল আলম আজ মঙ্গলবার তার ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এ কথা জানিয়েছেন। শহীদুল আলম নিজেও কনশানস জাহাজে আছেন।
৫ ঘণ্টা আগেঅবিলম্বে গাজা যুদ্ধ বন্ধে মিসরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ দফা পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা চলছে। ট্রাম্পের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে চুক্তি করতে ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে ইসরায়েল পরোক্ষভাবে এই আলোচনা করছে।
১১ ঘণ্টা আগেফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের হামলা থামছেই না। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ দফা শান্তি প্রস্তাবনা নিয়ে যখন হামাস আলোচনা করছে, ঠিক তখনো গাজায় হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। গাজায় ইসরায়েলের চালানো এ ধ্বংসযজ্ঞ ও হত্যাযজ্ঞ বিশ্ব থেকে দেশটিকে প্রায় বিচ্ছিন্ন করে তুলছে।
১৩ ঘণ্টা আগেচলতি বছরের আগস্টের শেষ দিকে জাতিসংঘ আনুষ্ঠানিকভাবে গাজায় দুর্ভিক্ষ ঘোষণা করে। এই ঘোষণার মাধ্যমে কয়েক মাস ধরে মানবাধিকার সংস্থা ও বিশেষজ্ঞদের করা দাবিকে স্বীকার করে নেয় জাতিসংঘ।
১৪ ঘণ্টা আগে