leadT1ad

রাউজানে ফের বিএনপি নেতাকে গুলি করে হত্যা

চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলায় প্রকাশ্যে গুলি করে স্থানীয় বিএনপির এক নেতাকে হত্যা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলার মদুনাঘাট সেতু সংলগ্ন হাটহাজারী সড়কে দুর্বৃত্তদের গুলিতে তিনি গুরুতর আহত হন।

স্ট্রিম সংবাদদাতা
স্ট্রিম সংবাদদাতা
চট্টগ্রাম
প্রকাশ : ০৭ অক্টোবর ২০২৫, ২২: ৫৪
রাউজানে প্রকাশ্যে গুলি করে স্থানীয় বিএনপির এক নেতাকে হত্যা করা হয়েছে। স্ট্রিম গ্রাফিক

চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলায় প্রকাশ্যে গুলি করে স্থানীয় বিএনপির এক নেতাকে হত্যা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলার মদুনাঘাট সেতু সংলগ্ন হাটহাজারী সড়কে দুর্বৃত্তদের গুলিতে তিনি গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাঁকে চট্টগ্রাম নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সন্ধ্যা ৬টার দিকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত মোহাম্মদ আবদুল হাকিম (৬৫) উপজেলার বাগোয়ান ইউনিয়নের পাচখাইন গ্রামের বাসিন্দা। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। স্থানীয়রা জানান, তিনি চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপি নেতা গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ অনুসারী হিসেবে এলাকায় পরিচিত।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার বিকেলে আবদুল হাকিম নিজ গাড়িতে করে একই এলাকায় তাঁর গরুর খামার থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। মদুনাঘাট সেতুর কাছে পৌঁছালে মোটরসাইকেলে আসা দুই দুর্বৃত্ত তাঁর গাড়ির সামনে এসে গুলি ছুড়ে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়। তবে এর আগে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে হাকিমের মৃত্যু হয়।

রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, গুলির খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। নিহতের ব্যবহৃত গাড়িটি উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, খুব কাছ থেকে তাঁকে গুলি করা হয়। কারা জড়িত এবং কী কারণে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে তা তদন্তের পর বলা যাবে।

তিনি জানান, ঘটনাস্থলের আশপাশে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহের চেষ্টা চলছে। এ ছাড়া নিহতের রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক পরিচিতদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

রাউজান বিএনপিতে দ্বন্দ্ব থামছেই না

রাউজান উপজেলা বিএনপির রাজনীতি দীর্ঘদিন ধরেই অভ্যন্তরীণ কোন্দলে জর্জরিত। গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী অনুসারী এবং কেন্দ্রীয় বিএনপির আরেক শীর্ষ নেতা গোলাম আকবর খন্দকারের অনুসারীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব এখানে প্রায়শ সহিংসতায় রূপ নেয়। গত এক বছরে রাউজান, সীতাকুণ্ড ও মিরসরাই মিলিয়ে বিএনপির অন্তত ১৩ কর্মী হত্যার ঘটনায় জড়িত ছিল এই দুপক্ষের লোকজন।

স্থানীয়দের দাবি, দলীয় কোন্দলের কারণে আবদুল হাকিমও সম্প্রতি একাধিকবার হুমকি পেয়েছিলেন। তবে আরেকপক্ষ জানিয়েছে, গরুর খামার ঘিরে কিছু ব্যবসায়িক বিরোধ ছিল হাকিমের। সবমিলিয়ে পুলিশ এখনো নিশ্চিত নয়, রাজনৈতিক নাকি ব্যক্তিগত কারণে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে।

এদিকে নিহত হাকিমের স্বজন জসিম উদ্দিন বলেন, ‘হাকিম রাজনীতিতে সক্রিয় থাকলেও কারো সঙ্গে শত্রুতা ছিল না। তবে গত কয়েক দিন ধরে কিছু অচেনা মানুষ খামারের আশেপাশে ঘোরাফেরা করছিল। আমরা এখন ভয়ে আছি।’

এ বিষয়ে বিএনপির রাউজান উপজেলা কমিটির এক নেতা বলেন, আবদুল হাকিম ভাই দীর্ঘদিন ধরে গিয়াস কাদের চৌধুরীর অনুসারী ছিলেন। তিনি দলকে সংগঠিত করতে নিরলস কাজ করতেন। এই হত্যাকাণ্ড রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই হয়েছে বলে মনে করি।

চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের একটি সূত্র স্ট্রিমকে জানিয়েছে, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড হতে পারে। প্রাথমিক তথ্য বিশ্লেষণে হামলাকারীরা পেশাদার বলে মনে হয়েছে। মৃত্যু নিশ্চিত করতে খুব কাছে এসে গুলি চালানো হয়েছে।

Ad 300x250

সম্পর্কিত