বিশ্ব শিক্ষক দিবসে শোয়াইব জিবরানের সাক্ষাৎকার
বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্বদ্যিালয়ের অধ্যাপক শোয়াইব জিবরান। শিক্ষা নিয়ে কাজ করছেন দীর্ঘদিন। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র থেকে ‘বাঙালির চিন্তা প্রকল্প’-এর আওতায় ‘বাঙালির শিক্ষাচিন্তা’ সিরিজের নয়টি খণ্ড সম্পাদনা করেছেন তিনি। শিশুশিক্ষা নিয়ে কাজ করছেন অনেক দিন ধরে। আজ বিশ্ব শিক্ষক দিবসে ওই বই সম্পাদনার অভিজ্ঞতাসহ বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থার নানা অসঙ্গতি নিয়ে স্ট্রিম-এর মুখোমুখি হয়েছেন তিনি।
স্ট্রিম ডেস্ক
স্ট্রিম: শিক্ষা নিয়ে আপনি কীভাবে আগ্রহী হয়ে উঠলেন? কোনো শিক্ষকের ভূমিকা বা অনুপ্রেরণা ছিল কি?
শোয়াইব জিবরান: বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা পৃথিবীর অন্যতম বৃহত্তম শিক্ষাব্যবস্থা। এ ব্যবস্থাকে রবীন্দ্রনাথ বলেছেন বিদ্যার কল। আর এ ব্যবস্থায় যাঁরা শিক্ষিত হয়ে বের হন, তাঁদের বলেছেন কলের প্রডাক্ট। তো এ বিদ্যাকলের মাধ্যমেই আমি উৎপন্ন হয়েছি। উৎপন্ন হওয়ার পর এ কল পরিচালনার কাজেও আবার নিয়োজিত হয়েছি। এ দীর্ঘ প্রক্রিয়ায় আমরা প্রত্যেকের উৎপাদন পর্যায়ে এ কলের ভেতর দিয়ে যাওয়ার সময় নানা মাত্রার যন্ত্রণা, নিপীড়ন অনুভব করেছি। পরবর্তী সময়ে শিক্ষক হিসেবে এ কল পরিচালনা করতে গিয়ে মেশিনটি নানা ক্রুটি বুঝতে পেরেছি। তারপর শিক্ষাবিজ্ঞান নিয়ে একটা সময় পড়াশোনা শুরু করি। প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক দুইভাবেই। পেশাগত কারণেই দেশে-বিদেশে শিক্ষাবিষয়ে দেশে-বিদেশে নানা অভিজ্ঞতা লাভ হয়। এক সময় ‘শিক্ষাচিন্তা’ নামক শিক্ষাবিষয়ক লিটলম্যাগও প্রকাশ করি। তবে শিক্ষা নিয়ে লেখালেখির সূচনা মূলত রবীন্দ্রনাথের শিক্ষাচিন্তা নিয়ে কাজ করতে গিয়ে। ‘রবীন্দ্র শিক্ষাভাবনা সমগ্র’ গ্রন্থটি তার ফসল। গ্রন্থটির ভূমিকায়ও এ কথাগুলোর উল্লেখ আছে।
না। সে অর্থে কোনো শিক্ষক আমার শিক্ষাবিষয়ক লেখালেখির প্রেরণা ছিলেন না।
স্ট্রিম: আপনি শিক্ষাচিন্তা বিষয়ক কয়েক খণ্ডের একটি সংকলন সম্পাদনা করেছেন। এই সংকলন করার পেছনে কী চিন্তা কাজ করেছিল?
শোয়াইব জিবরান: হ্যাঁ। ১০ খণ্ডের ‘বাঙালির শিক্ষাচিন্তা’। এ কাজটি মূলত বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের একটি প্রকল্পের। প্রকল্পটি শুরু হয়েছিল এ শতাব্দীর শুরুর দিকে। বাঙালির চিন্তামূলক রচনা সংগ্রহ ও প্রকাশনা বা এ রকম কোনো একটা নামে। নানা বিষয়ে বাংলা ভাষায় রচিত গত দুই শ বছরের চিন্তামূলক রচনা সংগ্রহ ও প্রকাশ ছিল এর লক্ষ্য। কেননা ইতিমধ্যে এ লেখাগুলোর অনেকগুলো দুষ্প্রাপ্য হয়ে পড়েছিল। কেন্দ্র সে লেখাগুলো দুই বাংলাসহ নানা স্থান থেকে সংগ্রহ করে বিষয়ভিত্তিক প্রকাশের উদ্যোগ গ্রহণ করেছিল। বিরাট আয়োজন ছিল। দীর্ঘ অনেকগুলো বছর কাজ করার পর নানা জটিলতা পেরিয়ে অবশেষে নানা বিষয়ে ২০৮ খণ্ড সংকলনে প্রকাশিত হয়েছে। তারমধ্যে শিক্ষাচিন্তা সিরিজ ১০ খণ্ডের। নয় খণ্ড আমার সম্পাদনা। পরে আরও একটি খণ্ড এ সিরিজে যুক্ত করা হয়েছে।
ব্রিটিশ শাসকেরা যেমন ধারার শিক্ষাব্যবস্থার আয়োজন করেছিলেন, পরবর্তীকালে শাসক বদলালেও শিক্ষাবিষয়ে শাসকের দৃষ্টিভঙ্গি বদলায়নি। এখানে গরিবের জন্য এক রকম, মধ্যবিত্তের জন্য এক রকম আর ধনীর জন্য এক রকম শিক্ষাব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ফলে শিক্ষায় বৈষম্যের বিষয়টি ভয়ংকর। ফলে সমাজেও বিভেদ ও বৈষম্য তৈরি হয়েছে। শোয়াইব জিবরান, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিদ্যালয়ের অধ্যাপক
স্ট্রিম: বইটির কাঠামো নিয়ে যদি বলতেন...
শোয়াইব জিবরান: শিক্ষাচিন্তার নানা প্রসঙ্গ ও বিষয় রয়েছে। যেমন শিক্ষাদর্শন, শিক্ষার ইতিহাস, শিক্ষাস্মৃতি, নারীশিক্ষা, পরীক্ষা ও মূল্যায়ন ইত্যাদি। আমরা এভাবেই বিষয়ভিত্তিক খণ্ডগুলো সাজিয়েছি। লেখা বাছাইয়ের ক্ষেত্রে লেখাগুলোর মৌলিকত্ব গুরুত্ব পেয়েছে। কোনো কোনো লেখার ঐতিহাসিক গুরত্বও বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ধ্রুপদি লেখকদের লেখাগুলো তো অবশ্যই রাখা হয়েছে। এ তালিকায় অক্ষয়কুমার, সুনীতিকুমার এ রকম লেখকদের শিক্ষাবিষয়ক লেখাগুলো রয়েছে। খণ্ডগুলোর ভেতরের লেখাগুলো সাজানোর ক্ষেত্রে কালক্রম অনুসরণ করা হয়েছে। প্রতিটি রচনা শুরুতে লেখাটির সারসংক্ষেপ লিখে দেওয়া হয়েছে। যাতে ব্যস্ত পাঠকও লেখাটির মূল বক্তব্য কয়েক শ শব্দের ভেতরেই জেনে নিতে পারেন। প্রতিটি খণ্ডের শুরুতে সম্পাদকের বিষয়ভিত্তিক দীর্ঘ ভূমিকা রয়েছে। যাতে পাঠক সে বিষয়টির প্রাথমিক ধারণা শুরুতেই লাভ করতে পারেন। সব কিছু মিলিয়ে শিক্ষা নিয়ে চিন্তা করেন বা শিক্ষা নিয়ে কাজ করেন, এমন মানুষজনদের জন্য এটি একটি আবশ্যকীয় কাজের সংকলন করার চেষ্টা করা হয়েছে।
স্ট্রিম: শিক্ষাবিষয়ক এই সংকলনে শিক্ষকের জন্য আলাদা কোনো খণ্ড আছে কি? শিক্ষকের ভূমিকাকে কীভাবে দেখেন?
শোয়াইব জিবরান: হ্যাঁ। শিক্ষক প্রশিক্ষণ বিষয়ে একটি খণ্ড রয়েছে। যেখানে মূলত শিক্ষকদের নিয়েই লেখা রয়েছে।
স্ট্রিম: অনেকে বলেন, শিক্ষক একজন ফেসিলিটেটর মাত্র। এ বিষয়ে আপনার কী মত?
শোয়াইব জিবরান: এ প্রসঙ্গগুলো নিয়ে নানা তত্ত্ব রয়েছে। এক সময় জগ-মগ তত্ত্বে মনে করা হতো শিক্ষক জ্ঞানভর্তি একটি জগ। শিক্ষার্থীরা শুধু মগ। শিক্ষকেরা জ্ঞান দিয়ে তাদের মাথা মগের মতো পূর্ণ করেন। শিক্ষা মনোবিজ্ঞানের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে এ ধারণাগুলো পরিত্যক্ত হয়েছে। এখন মনে করা হয়, শিখন শেখানো একটি যৌথ অংশগ্রহণমূলক প্রক্রিয়া। যেখানে শিক্ষক ও শিক্ষার্থী একই সঙ্গে অংশগ্রহণের ভেতর দিয়ে জ্ঞান ও দক্ষতা লাভের পথে যাত্রা করেন। তবে শিক্ষক একজন ফেসিলিটেটর মাত্র--কথাটি পুরো প্রক্রিয়াটির খুবই সরলীকরণ ও জাজমেন্টাল চিন্তা। শিক্ষার নানা স্তর রয়েছে। প্রতিটি স্তরে শিক্ষকের পৃথক পৃথক ভূমিকা রয়েছে। প্রাথমিক স্তরের শিখন শেখানোতে শিক্ষকের যে ভূমিকা উচ্চতর শিক্ষাস্তরে তা একেবারেই পৃথক।
স্ট্রিম: বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন কী?
শোয়াইব জিবরান: বাংলাদেশের বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থার সূচনা ঔপনিবেশিক শাসনামলে ১৮১৩ সালে। তারপর ১৮৩৫ সালে লর্ড মেকলে তাঁর কুখ্যাত মিনিটসের মাধ্যমে এ শিক্ষাব্যবস্থার লক্ষ্য স্থির করেন। তা পরে লর্ড বেন্টিঙ্ক ভারতবষের্র শিক্ষাব্যবস্থা হিসেবে গ্রহণ করেন। সুতরাং এ ভিত্তিটির মধ্যেই গলদ ছিল। বর্তমান ব্যবস্থাটি সে ঔপনিবিবেশিক চিন্তার ওপরেই গড়ে উঠেছে। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় নানা বঞ্চনার ব্যবস্থা লুকিয়ে রাখা রয়েছে। ব্রিটিশ শাসকেরা যেমন ধারার শিক্ষাব্যবস্থার আয়োজন করেছিলেন, পরবর্তীকালে শাসক বদলালেও শিক্ষাবিষয়ে শাসকের দৃষ্টিভঙ্গি বদলায়নি। এখানে গরিবের জন্য এক রকম, মধ্যবিত্তের জন্য এক রকম আর ধনীর জন্য এক রকম শিক্ষাব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ফলে শিক্ষায় বৈষম্যের বিষয়টি ভয়ংকর। ফলে সমাজেও বিভেদ ও বৈষম্য তৈরি হয়েছে। ছোট একটা তথ্য উল্লেখ করলেই বিষয়টির বিপদ অনুমান করতে পারবেন। ব্যতিক্রম বাদে বাংলাদেশ রাষ্ট্রটির পরিচালনার একদম উঁচু স্তরে যাঁরা ছিলেন বা আছেন, তাঁদের সন্তানেরা এ দেশের শিক্ষা গ্রহণ করছেন না। দেশে বসেই বিদেশের শিক্ষা বা সরাসরি বিদেশে গিয়েই বিদেশের শিক্ষা লাভ করছেন। এটা থেকেই পুরো বন্দোবস্তের ভণ্ডামি অনুমান করতে পারেন। এগুলো নিয়ে আলাপ হওয়াও দরকার ছিল। আলাদা কমিশন হওয়ার দরকার ছিল। সংস্কার দরকার ছিল। কিন্তু রাষ্ট্র একে গুরুত্ব দিচ্ছে বলে মনে হচ্ছে না।
স্ট্রিম: প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা অনেক অবহেলিত। এ থেকে উত্তরণের উপায় কী?
শোয়াইব জিবরান: পুরো ব্যবস্থাটিই অবহেলিত। এ অবহেলার সবেচেয়ে করুণ শিকার প্রাথমিক শিক্ষকেরা। অন্যান্য স্তরের অবস্থাও যে খুব উন্নত এমনটি নয়। উত্তরণের উপায় হলো আমূল সংস্কার। শিক্ষায় বৈষম্য বঞ্চনাগুলোর অবলোপন। এটার প্রাথমিক পদক্ষেপ হচ্ছে ভিন্ন ভিন্ন ব্যবস্থার বিলোপ। সবার জন্য একই ধারার বাধ্যতামূলক অন্তত বুনিয়াদী শিক্ষার প্রবর্তন। মানে সবার জন্য একই ধারার প্রাথমিক অর্থাৎ প্রথম থেকে অন্তত অষ্টম শ্রেণি মানের শিক্ষা। আর ব্যবস্থাটি এমন হওয়া উচিত যে একই স্কুলে রাষ্ট্রের রাজনীতিবিদ, মন্ত্রী, উপদেষ্টা, সচিব, বাহিনী প্রধানের সন্তান যেমন পড়বে, তেমনি কৃষক, শ্রমিক, আপামর নাগরিকের সন্তানরা পড়বে। আগে চাই পৃথক পৃথক ব্যবস্থা অবসান। তাতে দ্রুতই দৃশ্য বদলাবে। শিক্ষার বরাদ্দ বাড়বে। শিক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্টি সব কিছুরই উত্তরণ ও পরিবর্তন ঘটবে। কথাগুলো আমি নতুন বলছি না। শিক্ষা নিয়ে আন্দোলন করা অনেকেও বলছেন।
ব্যবস্থাটি এমন হওয়া উচিত যে একই স্কুলে রাষ্ট্রের রাজনীতিবিদ, মন্ত্রী, উপদেষ্টা, সচিব, বাহিনী প্রধানের সন্তান যেমন পড়বে, তেমনি কৃষক, শ্রমিক, আপামর নাগরিকের সন্তানরা পড়বে। আগে চাই পৃথক পৃথক ব্যবস্থা অবসান। তাতে দ্রুতই দৃশ্য বদলাবে। শিক্ষার বরাদ্দ বাড়বে। শিক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্টি সব কিছুরই উত্তরণ ও পরিবর্তন ঘটবে। কথাগুলো আমি নতুন বলছি না। শিক্ষা নিয়ে আন্দোলন করা অনেকেও বলছেন। শোয়াইব জিবরান, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিদ্যালয়ের অধ্যাপক
স্ট্রিম: এখন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে শিক্ষা দেওয়া করা হচ্ছে। এসে গেছে এআই। বদলে যাচ্ছে ঐতিহ্যিক শিক্ষাপদ্ধতি। শিক্ষক কি থাকবেন? শিক্ষকের ভবিষ্যৎ কী?
শোয়াইব জিবরান: নতুন কোনো প্রযুক্তি এলে এমনটি সব সময়ই বলা হয়। ই-বুক আসার পর মনে করা হয়েছিল, ছাপা বই হাওয়া হয়ে যাবে। ছাপা পত্রিকা সব বন্ধ হয়ে যাবে। বাস্তবে তা ঘটেনি। প্রতিটি উপাদানের নিজস্বতা রয়েছে। যে ডিজিটাল প্লাটফর্মের কথা বলা হচ্ছে, তা ডিজাইন করছেন একজন শিক্ষা প্রযুক্তিবিদই। তার পেছনে আছেন সেই শিক্ষকই। হয়তো ভূমিকার ধরন বদলাচ্ছে। তাই বলে প্রয়োজন শেষ হয়ে যাচ্ছে না। সব কিছুর মতোই শিখন শেখানো পদ্ধতি যেটাকে আমরা পেডাগজি বলি, এটা নিত্য পরিবর্তশীল। প্রতি পাঁচ বছরের মধ্যে শিক্ষাক্রম পরিবর্তন হয় হওয়ার কথা। সঙ্গে শিখন শেখানো পদ্ধতিরও। প্রযুক্তির কারণে এখন তার আরও দ্রুত পরিবর্তন ঘটছে। শিক্ষককে এ পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে হালনাগাদ করে নিতে হবে। নতুন নতুন দক্ষতা অর্জন করতে হবে অব্যাহতভাবে। শিক্ষক থাকবেন, ক্রমাগত হালানাগাদ হতে থাকা শিক্ষকই থাকবেন। শুধু থাকবেনই নন, নতুন জ্ঞান ও দক্ষতা দ্রুত আয়ত্বক্ষম শিক্ষকেরা বরং আরও শক্তিশালীভাবেই থাকবেন। মানুষের সৃজনশীলতা এমন এক অনন্য বৈশিষ্ট্য, যার অনুকরণ যন্ত্র করতে পাবরে। তবে সৃজনশীলতায় মানুষের সমক্ষক হতে পারবে না। সৃষ্টি স্রষ্টাকে ছাড়িয়ে গেলে শিক্ষক নয়, তখন ব্রহ্মার পুরো ভাণ্ডই হুমকির মুখে পড়বে।
স্ট্রিম: শিক্ষা নিয়ে আপনি কীভাবে আগ্রহী হয়ে উঠলেন? কোনো শিক্ষকের ভূমিকা বা অনুপ্রেরণা ছিল কি?
শোয়াইব জিবরান: বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা পৃথিবীর অন্যতম বৃহত্তম শিক্ষাব্যবস্থা। এ ব্যবস্থাকে রবীন্দ্রনাথ বলেছেন বিদ্যার কল। আর এ ব্যবস্থায় যাঁরা শিক্ষিত হয়ে বের হন, তাঁদের বলেছেন কলের প্রডাক্ট। তো এ বিদ্যাকলের মাধ্যমেই আমি উৎপন্ন হয়েছি। উৎপন্ন হওয়ার পর এ কল পরিচালনার কাজেও আবার নিয়োজিত হয়েছি। এ দীর্ঘ প্রক্রিয়ায় আমরা প্রত্যেকের উৎপাদন পর্যায়ে এ কলের ভেতর দিয়ে যাওয়ার সময় নানা মাত্রার যন্ত্রণা, নিপীড়ন অনুভব করেছি। পরবর্তী সময়ে শিক্ষক হিসেবে এ কল পরিচালনা করতে গিয়ে মেশিনটি নানা ক্রুটি বুঝতে পেরেছি। তারপর শিক্ষাবিজ্ঞান নিয়ে একটা সময় পড়াশোনা শুরু করি। প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক দুইভাবেই। পেশাগত কারণেই দেশে-বিদেশে শিক্ষাবিষয়ে দেশে-বিদেশে নানা অভিজ্ঞতা লাভ হয়। এক সময় ‘শিক্ষাচিন্তা’ নামক শিক্ষাবিষয়ক লিটলম্যাগও প্রকাশ করি। তবে শিক্ষা নিয়ে লেখালেখির সূচনা মূলত রবীন্দ্রনাথের শিক্ষাচিন্তা নিয়ে কাজ করতে গিয়ে। ‘রবীন্দ্র শিক্ষাভাবনা সমগ্র’ গ্রন্থটি তার ফসল। গ্রন্থটির ভূমিকায়ও এ কথাগুলোর উল্লেখ আছে।
না। সে অর্থে কোনো শিক্ষক আমার শিক্ষাবিষয়ক লেখালেখির প্রেরণা ছিলেন না।
স্ট্রিম: আপনি শিক্ষাচিন্তা বিষয়ক কয়েক খণ্ডের একটি সংকলন সম্পাদনা করেছেন। এই সংকলন করার পেছনে কী চিন্তা কাজ করেছিল?
শোয়াইব জিবরান: হ্যাঁ। ১০ খণ্ডের ‘বাঙালির শিক্ষাচিন্তা’। এ কাজটি মূলত বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের একটি প্রকল্পের। প্রকল্পটি শুরু হয়েছিল এ শতাব্দীর শুরুর দিকে। বাঙালির চিন্তামূলক রচনা সংগ্রহ ও প্রকাশনা বা এ রকম কোনো একটা নামে। নানা বিষয়ে বাংলা ভাষায় রচিত গত দুই শ বছরের চিন্তামূলক রচনা সংগ্রহ ও প্রকাশ ছিল এর লক্ষ্য। কেননা ইতিমধ্যে এ লেখাগুলোর অনেকগুলো দুষ্প্রাপ্য হয়ে পড়েছিল। কেন্দ্র সে লেখাগুলো দুই বাংলাসহ নানা স্থান থেকে সংগ্রহ করে বিষয়ভিত্তিক প্রকাশের উদ্যোগ গ্রহণ করেছিল। বিরাট আয়োজন ছিল। দীর্ঘ অনেকগুলো বছর কাজ করার পর নানা জটিলতা পেরিয়ে অবশেষে নানা বিষয়ে ২০৮ খণ্ড সংকলনে প্রকাশিত হয়েছে। তারমধ্যে শিক্ষাচিন্তা সিরিজ ১০ খণ্ডের। নয় খণ্ড আমার সম্পাদনা। পরে আরও একটি খণ্ড এ সিরিজে যুক্ত করা হয়েছে।
ব্রিটিশ শাসকেরা যেমন ধারার শিক্ষাব্যবস্থার আয়োজন করেছিলেন, পরবর্তীকালে শাসক বদলালেও শিক্ষাবিষয়ে শাসকের দৃষ্টিভঙ্গি বদলায়নি। এখানে গরিবের জন্য এক রকম, মধ্যবিত্তের জন্য এক রকম আর ধনীর জন্য এক রকম শিক্ষাব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ফলে শিক্ষায় বৈষম্যের বিষয়টি ভয়ংকর। ফলে সমাজেও বিভেদ ও বৈষম্য তৈরি হয়েছে। শোয়াইব জিবরান, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিদ্যালয়ের অধ্যাপক
স্ট্রিম: বইটির কাঠামো নিয়ে যদি বলতেন...
শোয়াইব জিবরান: শিক্ষাচিন্তার নানা প্রসঙ্গ ও বিষয় রয়েছে। যেমন শিক্ষাদর্শন, শিক্ষার ইতিহাস, শিক্ষাস্মৃতি, নারীশিক্ষা, পরীক্ষা ও মূল্যায়ন ইত্যাদি। আমরা এভাবেই বিষয়ভিত্তিক খণ্ডগুলো সাজিয়েছি। লেখা বাছাইয়ের ক্ষেত্রে লেখাগুলোর মৌলিকত্ব গুরুত্ব পেয়েছে। কোনো কোনো লেখার ঐতিহাসিক গুরত্বও বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ধ্রুপদি লেখকদের লেখাগুলো তো অবশ্যই রাখা হয়েছে। এ তালিকায় অক্ষয়কুমার, সুনীতিকুমার এ রকম লেখকদের শিক্ষাবিষয়ক লেখাগুলো রয়েছে। খণ্ডগুলোর ভেতরের লেখাগুলো সাজানোর ক্ষেত্রে কালক্রম অনুসরণ করা হয়েছে। প্রতিটি রচনা শুরুতে লেখাটির সারসংক্ষেপ লিখে দেওয়া হয়েছে। যাতে ব্যস্ত পাঠকও লেখাটির মূল বক্তব্য কয়েক শ শব্দের ভেতরেই জেনে নিতে পারেন। প্রতিটি খণ্ডের শুরুতে সম্পাদকের বিষয়ভিত্তিক দীর্ঘ ভূমিকা রয়েছে। যাতে পাঠক সে বিষয়টির প্রাথমিক ধারণা শুরুতেই লাভ করতে পারেন। সব কিছু মিলিয়ে শিক্ষা নিয়ে চিন্তা করেন বা শিক্ষা নিয়ে কাজ করেন, এমন মানুষজনদের জন্য এটি একটি আবশ্যকীয় কাজের সংকলন করার চেষ্টা করা হয়েছে।
স্ট্রিম: শিক্ষাবিষয়ক এই সংকলনে শিক্ষকের জন্য আলাদা কোনো খণ্ড আছে কি? শিক্ষকের ভূমিকাকে কীভাবে দেখেন?
শোয়াইব জিবরান: হ্যাঁ। শিক্ষক প্রশিক্ষণ বিষয়ে একটি খণ্ড রয়েছে। যেখানে মূলত শিক্ষকদের নিয়েই লেখা রয়েছে।
স্ট্রিম: অনেকে বলেন, শিক্ষক একজন ফেসিলিটেটর মাত্র। এ বিষয়ে আপনার কী মত?
শোয়াইব জিবরান: এ প্রসঙ্গগুলো নিয়ে নানা তত্ত্ব রয়েছে। এক সময় জগ-মগ তত্ত্বে মনে করা হতো শিক্ষক জ্ঞানভর্তি একটি জগ। শিক্ষার্থীরা শুধু মগ। শিক্ষকেরা জ্ঞান দিয়ে তাদের মাথা মগের মতো পূর্ণ করেন। শিক্ষা মনোবিজ্ঞানের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে এ ধারণাগুলো পরিত্যক্ত হয়েছে। এখন মনে করা হয়, শিখন শেখানো একটি যৌথ অংশগ্রহণমূলক প্রক্রিয়া। যেখানে শিক্ষক ও শিক্ষার্থী একই সঙ্গে অংশগ্রহণের ভেতর দিয়ে জ্ঞান ও দক্ষতা লাভের পথে যাত্রা করেন। তবে শিক্ষক একজন ফেসিলিটেটর মাত্র--কথাটি পুরো প্রক্রিয়াটির খুবই সরলীকরণ ও জাজমেন্টাল চিন্তা। শিক্ষার নানা স্তর রয়েছে। প্রতিটি স্তরে শিক্ষকের পৃথক পৃথক ভূমিকা রয়েছে। প্রাথমিক স্তরের শিখন শেখানোতে শিক্ষকের যে ভূমিকা উচ্চতর শিক্ষাস্তরে তা একেবারেই পৃথক।
স্ট্রিম: বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন কী?
শোয়াইব জিবরান: বাংলাদেশের বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থার সূচনা ঔপনিবেশিক শাসনামলে ১৮১৩ সালে। তারপর ১৮৩৫ সালে লর্ড মেকলে তাঁর কুখ্যাত মিনিটসের মাধ্যমে এ শিক্ষাব্যবস্থার লক্ষ্য স্থির করেন। তা পরে লর্ড বেন্টিঙ্ক ভারতবষের্র শিক্ষাব্যবস্থা হিসেবে গ্রহণ করেন। সুতরাং এ ভিত্তিটির মধ্যেই গলদ ছিল। বর্তমান ব্যবস্থাটি সে ঔপনিবিবেশিক চিন্তার ওপরেই গড়ে উঠেছে। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় নানা বঞ্চনার ব্যবস্থা লুকিয়ে রাখা রয়েছে। ব্রিটিশ শাসকেরা যেমন ধারার শিক্ষাব্যবস্থার আয়োজন করেছিলেন, পরবর্তীকালে শাসক বদলালেও শিক্ষাবিষয়ে শাসকের দৃষ্টিভঙ্গি বদলায়নি। এখানে গরিবের জন্য এক রকম, মধ্যবিত্তের জন্য এক রকম আর ধনীর জন্য এক রকম শিক্ষাব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ফলে শিক্ষায় বৈষম্যের বিষয়টি ভয়ংকর। ফলে সমাজেও বিভেদ ও বৈষম্য তৈরি হয়েছে। ছোট একটা তথ্য উল্লেখ করলেই বিষয়টির বিপদ অনুমান করতে পারবেন। ব্যতিক্রম বাদে বাংলাদেশ রাষ্ট্রটির পরিচালনার একদম উঁচু স্তরে যাঁরা ছিলেন বা আছেন, তাঁদের সন্তানেরা এ দেশের শিক্ষা গ্রহণ করছেন না। দেশে বসেই বিদেশের শিক্ষা বা সরাসরি বিদেশে গিয়েই বিদেশের শিক্ষা লাভ করছেন। এটা থেকেই পুরো বন্দোবস্তের ভণ্ডামি অনুমান করতে পারেন। এগুলো নিয়ে আলাপ হওয়াও দরকার ছিল। আলাদা কমিশন হওয়ার দরকার ছিল। সংস্কার দরকার ছিল। কিন্তু রাষ্ট্র একে গুরুত্ব দিচ্ছে বলে মনে হচ্ছে না।
স্ট্রিম: প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা অনেক অবহেলিত। এ থেকে উত্তরণের উপায় কী?
শোয়াইব জিবরান: পুরো ব্যবস্থাটিই অবহেলিত। এ অবহেলার সবেচেয়ে করুণ শিকার প্রাথমিক শিক্ষকেরা। অন্যান্য স্তরের অবস্থাও যে খুব উন্নত এমনটি নয়। উত্তরণের উপায় হলো আমূল সংস্কার। শিক্ষায় বৈষম্য বঞ্চনাগুলোর অবলোপন। এটার প্রাথমিক পদক্ষেপ হচ্ছে ভিন্ন ভিন্ন ব্যবস্থার বিলোপ। সবার জন্য একই ধারার বাধ্যতামূলক অন্তত বুনিয়াদী শিক্ষার প্রবর্তন। মানে সবার জন্য একই ধারার প্রাথমিক অর্থাৎ প্রথম থেকে অন্তত অষ্টম শ্রেণি মানের শিক্ষা। আর ব্যবস্থাটি এমন হওয়া উচিত যে একই স্কুলে রাষ্ট্রের রাজনীতিবিদ, মন্ত্রী, উপদেষ্টা, সচিব, বাহিনী প্রধানের সন্তান যেমন পড়বে, তেমনি কৃষক, শ্রমিক, আপামর নাগরিকের সন্তানরা পড়বে। আগে চাই পৃথক পৃথক ব্যবস্থা অবসান। তাতে দ্রুতই দৃশ্য বদলাবে। শিক্ষার বরাদ্দ বাড়বে। শিক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্টি সব কিছুরই উত্তরণ ও পরিবর্তন ঘটবে। কথাগুলো আমি নতুন বলছি না। শিক্ষা নিয়ে আন্দোলন করা অনেকেও বলছেন।
ব্যবস্থাটি এমন হওয়া উচিত যে একই স্কুলে রাষ্ট্রের রাজনীতিবিদ, মন্ত্রী, উপদেষ্টা, সচিব, বাহিনী প্রধানের সন্তান যেমন পড়বে, তেমনি কৃষক, শ্রমিক, আপামর নাগরিকের সন্তানরা পড়বে। আগে চাই পৃথক পৃথক ব্যবস্থা অবসান। তাতে দ্রুতই দৃশ্য বদলাবে। শিক্ষার বরাদ্দ বাড়বে। শিক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্টি সব কিছুরই উত্তরণ ও পরিবর্তন ঘটবে। কথাগুলো আমি নতুন বলছি না। শিক্ষা নিয়ে আন্দোলন করা অনেকেও বলছেন। শোয়াইব জিবরান, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিদ্যালয়ের অধ্যাপক
স্ট্রিম: এখন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে শিক্ষা দেওয়া করা হচ্ছে। এসে গেছে এআই। বদলে যাচ্ছে ঐতিহ্যিক শিক্ষাপদ্ধতি। শিক্ষক কি থাকবেন? শিক্ষকের ভবিষ্যৎ কী?
শোয়াইব জিবরান: নতুন কোনো প্রযুক্তি এলে এমনটি সব সময়ই বলা হয়। ই-বুক আসার পর মনে করা হয়েছিল, ছাপা বই হাওয়া হয়ে যাবে। ছাপা পত্রিকা সব বন্ধ হয়ে যাবে। বাস্তবে তা ঘটেনি। প্রতিটি উপাদানের নিজস্বতা রয়েছে। যে ডিজিটাল প্লাটফর্মের কথা বলা হচ্ছে, তা ডিজাইন করছেন একজন শিক্ষা প্রযুক্তিবিদই। তার পেছনে আছেন সেই শিক্ষকই। হয়তো ভূমিকার ধরন বদলাচ্ছে। তাই বলে প্রয়োজন শেষ হয়ে যাচ্ছে না। সব কিছুর মতোই শিখন শেখানো পদ্ধতি যেটাকে আমরা পেডাগজি বলি, এটা নিত্য পরিবর্তশীল। প্রতি পাঁচ বছরের মধ্যে শিক্ষাক্রম পরিবর্তন হয় হওয়ার কথা। সঙ্গে শিখন শেখানো পদ্ধতিরও। প্রযুক্তির কারণে এখন তার আরও দ্রুত পরিবর্তন ঘটছে। শিক্ষককে এ পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে হালনাগাদ করে নিতে হবে। নতুন নতুন দক্ষতা অর্জন করতে হবে অব্যাহতভাবে। শিক্ষক থাকবেন, ক্রমাগত হালানাগাদ হতে থাকা শিক্ষকই থাকবেন। শুধু থাকবেনই নন, নতুন জ্ঞান ও দক্ষতা দ্রুত আয়ত্বক্ষম শিক্ষকেরা বরং আরও শক্তিশালীভাবেই থাকবেন। মানুষের সৃজনশীলতা এমন এক অনন্য বৈশিষ্ট্য, যার অনুকরণ যন্ত্র করতে পাবরে। তবে সৃজনশীলতায় মানুষের সমক্ষক হতে পারবে না। সৃষ্টি স্রষ্টাকে ছাড়িয়ে গেলে শিক্ষক নয়, তখন ব্রহ্মার পুরো ভাণ্ডই হুমকির মুখে পড়বে।
টোল-মক্তব থেকে হালের অনলাইন টিচিং, এই দীর্ঘ যাত্রা সমাজ রূপান্তরের ইতিহাসও বটে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সম্পর্ক, নৈতিকতার চর্চা এবং সমাজে জ্ঞানের অবস্থানও এখানে আলোচ্য। বিশ্ব শিক্ষক দিবসে ফিরে তাকানো যাক ইতিহাসের দিকে। দেখা যাবে, প্রতিটি ধাপে শিক্ষক ছিলেন পরিবর্তনের কেন্দ্রে।
২ ঘণ্টা আগেইতালির তুসকানি রাজ্যের ফ্লোরেন্সের কাছেই অবস্থিত এক অখ্যাত গ্রাম বারবিয়ানা। সেই গ্রামে এক স্কুল ছিল। সেই স্কুলের আটজন ছাত্র মিলে তাদের শিক্ষকদের লিখেছিল কিছু কথা। জীবন ঘষে পাওয়া সেই প্রতিটা শব্দ যেন ভাবায় আমাদের, জানায় অমিত সম্ভাবনার জীবনকে কীভাবে আমরা নষ্ট করে ফেলি অযোগ্য মানুষের ভুল দিকনির্দেশনায়।
৪ ঘণ্টা আগেখেতে ভালোবাসেন? ঘুরে ঘুরে কিছু কিনতেও মন্দ লাগে না? শহরের ভেতরেই যদি এমন কোনো জায়গা পাওয়া যায়, যেখানে একসঙ্গে পাওয়া যায় খাবার, আড্ডা আর কেনাকাটার আনন্দ—তবে সেটি নিঃসন্দেহে অনেকের কাছেই সেটি প্রিয় গন্তব্য।
৬ ঘণ্টা আগেশিক্ষকতা কোনো পেশা নয়, এটা একটি ব্রত—এই শিক্ষা দিয়ে গেছেন আমাদের কিংবদন্তি শিক্ষকেরা। বাংলাদেশে শিক্ষাক্ষেত্রে যেসব শিক্ষক কিংবদন্তি হয়ে আছেন, তাঁদের সংখ্যা খুব বেশি নয়। নিজেদের কাজের মধ্য দিয়ে তাঁরা যেমন জাতি গঠনে ভূমিকা রেখেছেন, তেমনি আমাদের জন্যও হয়ে উঠেছেন বাতিঘর।
৬ ঘণ্টা আগে