.png)
সারা দুনিয়ায় এমন অনেক সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার আছেন যারা প্রথমে জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন, কিন্তু পরে প্রতারণা ও জালিয়াতির কারণে তাঁদের খ্যাতি ক্ষুণ্ণ হয়েছে। পৃথিবীর এমন কয়েকজন সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার এবং তাঁদের প্রতারণার কাহিনি তুলে ধরা হয়েছে এই লেখায়।

অনন্ত রায়হান

সোশ্যাল মিডিয়া এখন আমাদের জীবনের বড় অংশ। অনলাইনে আমরা অনেক ইনফ্লুয়েন্সারদের অনুসরণ করি। তাঁদের পোস্ট, ছবি, ভিডিও আর ব্যক্তিগত গল্প অনেককে অনুপ্রাণিত করে। সফল মনে করে আমরা বিশ্বাস করি তাঁদের প্রচারণায়।
কিন্তু সবকিছু সব সময় সত্য হয় না। মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েও কেউ কেউ প্রতারণা চালায়। যেমন গতকাল সোমবার বাংলাদেশের ‘মেকআপ ইনফ্লুয়েন্সার’ শিমার গার্ল বলেছেন, ‘প্যারাসিটামল গুঁড়া করে ব্রণে লাগালে ব্রণ একদিনে শুকিয়ে যাবে।’
এর আগে ২০২৪ সালে ইনফ্লুয়েন্সার ও ফুড ভ্লগার ইফতেখার রাফসানের (রাফসান দ্য ছোট ভাই) মালিকানাধীন ড্রিংকস ‘ব্লু’ ৭ দিনের মধ্যে বাজার থেকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছিল বিশুদ্ধ খাদ্য আদালত। রাফসানের এই প্রতিষ্ঠান ছিল অনুমোদনহীন। বাংলাদেশে এমন ঘটনার আরও নজির পাওয়া যাবে।
এদিকে সারা দুনিয়ায় এমন অনেক সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার আছেন যারা প্রথমে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন, পরে প্রতারণা ও জালিয়াতির কারণে তাঁদের খ্যাতি ক্ষুণ্ণ হয়েছে। এমন ঘটনা পুরো সোশ্যাল মিডিয়ার ওপর মানুষের বিশ্বাসকেও প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
জেবারা ইগবারা সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘জে মাজারিনি’ নামে পরিচিত। একসময় ইনস্টাগ্রামে তাঁর প্রায় এক মিলিয়ন ফলোয়ার ছিল। সেখানে তিনি ছিলেন তুমুল জনপ্রিয়। ফলোয়ারেরা তাঁকে একজন ‘দয়ালু’ ব্যক্তি হিসেবে দেখতেন। বিশেষ করে, মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন করে পোস্ট দিতেন।

ইগবারার সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্টগুলোতে দেখা যেত দারিদ্র্য নিরসন, ক্ষুধার্তদের সাহায্য আর দুর্বল জনগোষ্ঠীর কল্যাণে অর্থ দান করার প্রতিশ্রুতি। ফলোয়ারেরাও তাঁকে বিশ্বাস করতেন, অনুপ্রাণিত হয়ে অর্থ দান করতেন। আর তাঁর চ্যারিটি কাজের প্রচারণা ভাইরাল হয়ে যেত। এভাবে তিনি সামাজিক দায়বদ্ধতার ইমেজ তৈরি করেছিলেন।
কিন্তু এই ইমেজ এক সময় ভেঙে পড়ে। পরে জানা যায়, জেবারা তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইল এবং মানুষের আস্থা ব্যবহার করে বড় ধরনের জালিয়াতি করেছিলেন। তিনি ক্রিপ্টোকারেন্সি স্ক্যাম ও অপহরণের মতো প্রতারণার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে প্রায় ৮০ কোটি ডলার হাতিয়ে নিয়েছিলেন।
২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেপ্তার হওয়ার পর তাকে ৮৪ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আর ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১০০ কোটি ডলার পরিশোধের নির্দেশ দেওয়া হয়।
বেল গিবসন অস্ট্রেলিয়ায় সোশ্যাল মিডিয়া ও ব্লগের মাধ্যমে পরিচিতি পান। তিনি ‘হেলথ ও লাইফস্টাইল’ ইনফ্লুয়েন্সার হিসেবে বেশ জনপ্রিয় ছিলেন। তিনি দেখাতেন কীভাবে জীবনের কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করা যায়, বিশেষ করে ক্যানসারের মতো মারাত্মক অসুখ।

বেল নিজেকে ক্যানসার আক্রান্ত হিসেবে পরিচয় দিতেন। আর তিনি বিকল্প চিকিৎসা ও লাইফস্টাইল অনুসরণ করে কীভাবে সুস্থ আছেন তা ফলোয়ারদের দেখাতেন। ব্লগ পোস্ট, ইনস্টাগ্রাম ছবি, ভিডিও এমনকি বই লিখেও তিনি তাঁর এই রোগের গল্প প্রচার করতেন।
বেলের গল্প অনেককে অনুপ্রাণিত করেছিল। বিশেষ করে যারা দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছিল। সোশ্যাল মিডিয়ায় দ্রুতই তাঁর প্রভাব বেড়ে যায়।
এরপর জানা যায়, বেল কখনো ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন না। তাঁর সব পোস্ট ও বই ছিল মিথ্যা। যা কিছু তিনি দেখাতেন, তার সবই ছিল প্রতারণার অংশ। মিথ্যা প্রচারণার মাধ্যমে বেল প্রচুর অর্থ উপার্জন করেছিলেন। পরবর্তী সময়ে এই প্রতারণার বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। অস্ট্রেলিয়ার আদালত তাঁকে দণ্ডিত করে।
ইতালির কিয়ারা ফেরাগনি আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত একজন ফ্যাশন ব্লগার, ডিজাইনার এবং সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার। তিনি ইনস্টাগ্রাম ও ব্লগের মাধ্যমে জনপ্রিয় হন। কিয়ারা তাঁর ফলোয়ারদের সঙ্গে ফ্যাশন, লাইফস্টাইল, বিলাসবহুল জীবনযাপন ও ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা শেয়ার করতেন।

কিয়ারা তাঁর জনপ্রিয়তা ব্যবহার করে বিভিন্ন চ্যারিটি প্রকল্পের প্রচারণা চালাতেন। একবার তিনি ‘প্যান্ডোরো’ কেক বিক্রির প্রচারণা চালান। তিনি দাবি করেছিলেন, কেক বিক্রি থেকে আয় চ্যারিটি প্রকল্পে দান করা হবে। তখন প্রচুর মানুষ অর্থ ডোনেট করেছিলেন।
কিন্তু পরে জানা যায়, প্রকৃতপক্ষে কোনো অর্থ চ্যারিটিতে যায়নি। কিয়ারা ও তাঁর ব্যবসায়িক সঙ্গীরা সব টাকা লোপাট করেছেন। অর্থ্যাৎ চ্যারিটি বা সামাজিক দায়বদ্ধতার ইমেজ ছিল প্রোপাগান্ডা।
এই প্রতারণার কারণে এরই মধ্যে কিয়ারা ফেরাগনি ও তার প্রতিষ্ঠান ৩৪ লাখ ইউরো ক্ষতিপূরণ দিয়েছেন। তবে এতেও সুরাহা হয়নি। এই মামলায় তাঁকে আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর আদালতে হাজিরা দিতে হবে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো বলছে, দোষী সাব্যস্ত হলে কিয়ারার ১ থেকে ৫ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।
রেমন ওলোরুনওয়া আব্বাস সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘হাশপাপ্পি’ নামে পরিচিত। তিনি নাইজেরিয়ায় জন্ম নেওয়া হাশপাপ্পি দুবাইয়ে বসবাস করতেন। দুবাইভিত্তিক এই ইনফ্লুয়েন্সার ইনস্টাগ্রামে একসময় বেশ জনপ্রিয়তা পান। ফলোয়ারেরা তাঁকে ধনী, সফল আর বিলাসবহুল জীবনযাপনকারী হিসেবে দেখতেন। তিনি প্রায়ই বিলাসবহুল গাড়ি, ব্র্যান্ডেড পোশাক, বিশ্ব ভ্রমণ ও দামী হোটেলের ছবি পোস্ট করতেন।

এই ছবিগুলো ফলোয়ারদের মধ্যে প্রভাব বিস্তার করত। অনেকেই তাঁকে একজন উচ্চপদস্থ ও প্রভাবশালী ব্যক্তি হিসেবে মনে করতেন। কিন্তু বাস্তবে তিনি এবং তাঁর সহযোগীরা বড় ধরনের অর্থপাচার ও প্রতারণার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি ফলোয়ারদের এবং অনলাইন নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে ‘ব্যবসায়িক ইমেইল প্রতারণা’ ও ‘মানি লন্ডারিং’-এর মাধ্যমে কোটি কোটি ডলার হাতিয়ে নিতেন। আর আড়ালে থেকে অর্থপাচারের জন্য ব্যবহার করতেন স্যোশাল মিডিয়ায় নিজের জনপ্রিয়তা।
২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল কর্তৃপক্ষ তাঁর কার্যকলাপ উদঘাটন করে তাঁকে গ্রেপ্তার করে। আদালত প্রমাণ হয়, তিনি আন্তর্জাতিক অর্থপাচার ও প্রতারণার মাধ্যমে অসংখ্য মানুষের আস্থা ভঙ্গ করেছেন। আর তাই ১১ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয় তাঁকে। হাশপাপ্পির কাহিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় বিলাসবহুল জীবন প্রদর্শনের আড়ালে বড় প্রতারণার উদাহরণ হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে আলোচিত।
সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার স্যামান্থা কুকস টিকটক ও অন্যান্য ভিডিও প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে জনপ্রিয় হয়েছিলেন। তাঁর কনটেন্টে প্রায়ই ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ও প্রতিদিনের জীবনযাপন উঠে আসত। কিন্তু সবচেয়ে আলোচিত বিষয় ছিল, হান্টিংটন ডিজিজের মতো ‘রেয়ার’ ও অনিরাময়যোগ্য রোগে আক্রান্ত হওয়ার খবর।

স্যামান্থা এই রোগে আক্রান্তের কাহিনি শেয়ার করে ফলোয়ারদের সহানুভূতি, সমর্থন আর বিশ্বাস অর্জন করেছিলেন। তাঁর ভিডিও ও পোস্টগুলো ভাইরাল হয়ে যেত। মানুষ তাঁকে সাহায্য করার জন্য টাকা-পয়সা দান করতেন। ফলোয়ারেরা তাঁকে দেখতেন একজন সংগ্রামী চরিত্র হিসেবে, যিনি ভয়ংকর রোগের মোকাবিলা করছেন।
কিন্তু ধীরে ধীরে প্রকাশিত হলো, স্যামান্থা কখনো এই রোগে আক্রান্ত ছিলেন না। তাঁর পুরো কাহিনি মিথ্যা এবং প্রতারণার উদ্দেশ্যে তৈরি করা। প্রতারণার কারণে তাঁর সোশ্যাল মিডিয়ার বিশ্বাসযোগ্যতা পুরোপুরি ধ্বংস হয়। অনেক ফলোয়ার তাঁর প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলেন। তিনি আইনি তদন্তের মুখোমুখি হন।
তথ্যসূত্র: বিবিসি, রয়টার্স, ইউরো নিউজ ও এপি

সোশ্যাল মিডিয়া এখন আমাদের জীবনের বড় অংশ। অনলাইনে আমরা অনেক ইনফ্লুয়েন্সারদের অনুসরণ করি। তাঁদের পোস্ট, ছবি, ভিডিও আর ব্যক্তিগত গল্প অনেককে অনুপ্রাণিত করে। সফল মনে করে আমরা বিশ্বাস করি তাঁদের প্রচারণায়।
কিন্তু সবকিছু সব সময় সত্য হয় না। মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েও কেউ কেউ প্রতারণা চালায়। যেমন গতকাল সোমবার বাংলাদেশের ‘মেকআপ ইনফ্লুয়েন্সার’ শিমার গার্ল বলেছেন, ‘প্যারাসিটামল গুঁড়া করে ব্রণে লাগালে ব্রণ একদিনে শুকিয়ে যাবে।’
এর আগে ২০২৪ সালে ইনফ্লুয়েন্সার ও ফুড ভ্লগার ইফতেখার রাফসানের (রাফসান দ্য ছোট ভাই) মালিকানাধীন ড্রিংকস ‘ব্লু’ ৭ দিনের মধ্যে বাজার থেকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছিল বিশুদ্ধ খাদ্য আদালত। রাফসানের এই প্রতিষ্ঠান ছিল অনুমোদনহীন। বাংলাদেশে এমন ঘটনার আরও নজির পাওয়া যাবে।
এদিকে সারা দুনিয়ায় এমন অনেক সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার আছেন যারা প্রথমে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন, পরে প্রতারণা ও জালিয়াতির কারণে তাঁদের খ্যাতি ক্ষুণ্ণ হয়েছে। এমন ঘটনা পুরো সোশ্যাল মিডিয়ার ওপর মানুষের বিশ্বাসকেও প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
জেবারা ইগবারা সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘জে মাজারিনি’ নামে পরিচিত। একসময় ইনস্টাগ্রামে তাঁর প্রায় এক মিলিয়ন ফলোয়ার ছিল। সেখানে তিনি ছিলেন তুমুল জনপ্রিয়। ফলোয়ারেরা তাঁকে একজন ‘দয়ালু’ ব্যক্তি হিসেবে দেখতেন। বিশেষ করে, মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন করে পোস্ট দিতেন।

ইগবারার সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্টগুলোতে দেখা যেত দারিদ্র্য নিরসন, ক্ষুধার্তদের সাহায্য আর দুর্বল জনগোষ্ঠীর কল্যাণে অর্থ দান করার প্রতিশ্রুতি। ফলোয়ারেরাও তাঁকে বিশ্বাস করতেন, অনুপ্রাণিত হয়ে অর্থ দান করতেন। আর তাঁর চ্যারিটি কাজের প্রচারণা ভাইরাল হয়ে যেত। এভাবে তিনি সামাজিক দায়বদ্ধতার ইমেজ তৈরি করেছিলেন।
কিন্তু এই ইমেজ এক সময় ভেঙে পড়ে। পরে জানা যায়, জেবারা তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইল এবং মানুষের আস্থা ব্যবহার করে বড় ধরনের জালিয়াতি করেছিলেন। তিনি ক্রিপ্টোকারেন্সি স্ক্যাম ও অপহরণের মতো প্রতারণার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে প্রায় ৮০ কোটি ডলার হাতিয়ে নিয়েছিলেন।
২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেপ্তার হওয়ার পর তাকে ৮৪ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আর ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১০০ কোটি ডলার পরিশোধের নির্দেশ দেওয়া হয়।
বেল গিবসন অস্ট্রেলিয়ায় সোশ্যাল মিডিয়া ও ব্লগের মাধ্যমে পরিচিতি পান। তিনি ‘হেলথ ও লাইফস্টাইল’ ইনফ্লুয়েন্সার হিসেবে বেশ জনপ্রিয় ছিলেন। তিনি দেখাতেন কীভাবে জীবনের কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করা যায়, বিশেষ করে ক্যানসারের মতো মারাত্মক অসুখ।

বেল নিজেকে ক্যানসার আক্রান্ত হিসেবে পরিচয় দিতেন। আর তিনি বিকল্প চিকিৎসা ও লাইফস্টাইল অনুসরণ করে কীভাবে সুস্থ আছেন তা ফলোয়ারদের দেখাতেন। ব্লগ পোস্ট, ইনস্টাগ্রাম ছবি, ভিডিও এমনকি বই লিখেও তিনি তাঁর এই রোগের গল্প প্রচার করতেন।
বেলের গল্প অনেককে অনুপ্রাণিত করেছিল। বিশেষ করে যারা দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছিল। সোশ্যাল মিডিয়ায় দ্রুতই তাঁর প্রভাব বেড়ে যায়।
এরপর জানা যায়, বেল কখনো ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন না। তাঁর সব পোস্ট ও বই ছিল মিথ্যা। যা কিছু তিনি দেখাতেন, তার সবই ছিল প্রতারণার অংশ। মিথ্যা প্রচারণার মাধ্যমে বেল প্রচুর অর্থ উপার্জন করেছিলেন। পরবর্তী সময়ে এই প্রতারণার বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। অস্ট্রেলিয়ার আদালত তাঁকে দণ্ডিত করে।
ইতালির কিয়ারা ফেরাগনি আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত একজন ফ্যাশন ব্লগার, ডিজাইনার এবং সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার। তিনি ইনস্টাগ্রাম ও ব্লগের মাধ্যমে জনপ্রিয় হন। কিয়ারা তাঁর ফলোয়ারদের সঙ্গে ফ্যাশন, লাইফস্টাইল, বিলাসবহুল জীবনযাপন ও ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা শেয়ার করতেন।

কিয়ারা তাঁর জনপ্রিয়তা ব্যবহার করে বিভিন্ন চ্যারিটি প্রকল্পের প্রচারণা চালাতেন। একবার তিনি ‘প্যান্ডোরো’ কেক বিক্রির প্রচারণা চালান। তিনি দাবি করেছিলেন, কেক বিক্রি থেকে আয় চ্যারিটি প্রকল্পে দান করা হবে। তখন প্রচুর মানুষ অর্থ ডোনেট করেছিলেন।
কিন্তু পরে জানা যায়, প্রকৃতপক্ষে কোনো অর্থ চ্যারিটিতে যায়নি। কিয়ারা ও তাঁর ব্যবসায়িক সঙ্গীরা সব টাকা লোপাট করেছেন। অর্থ্যাৎ চ্যারিটি বা সামাজিক দায়বদ্ধতার ইমেজ ছিল প্রোপাগান্ডা।
এই প্রতারণার কারণে এরই মধ্যে কিয়ারা ফেরাগনি ও তার প্রতিষ্ঠান ৩৪ লাখ ইউরো ক্ষতিপূরণ দিয়েছেন। তবে এতেও সুরাহা হয়নি। এই মামলায় তাঁকে আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর আদালতে হাজিরা দিতে হবে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো বলছে, দোষী সাব্যস্ত হলে কিয়ারার ১ থেকে ৫ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।
রেমন ওলোরুনওয়া আব্বাস সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘হাশপাপ্পি’ নামে পরিচিত। তিনি নাইজেরিয়ায় জন্ম নেওয়া হাশপাপ্পি দুবাইয়ে বসবাস করতেন। দুবাইভিত্তিক এই ইনফ্লুয়েন্সার ইনস্টাগ্রামে একসময় বেশ জনপ্রিয়তা পান। ফলোয়ারেরা তাঁকে ধনী, সফল আর বিলাসবহুল জীবনযাপনকারী হিসেবে দেখতেন। তিনি প্রায়ই বিলাসবহুল গাড়ি, ব্র্যান্ডেড পোশাক, বিশ্ব ভ্রমণ ও দামী হোটেলের ছবি পোস্ট করতেন।

এই ছবিগুলো ফলোয়ারদের মধ্যে প্রভাব বিস্তার করত। অনেকেই তাঁকে একজন উচ্চপদস্থ ও প্রভাবশালী ব্যক্তি হিসেবে মনে করতেন। কিন্তু বাস্তবে তিনি এবং তাঁর সহযোগীরা বড় ধরনের অর্থপাচার ও প্রতারণার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি ফলোয়ারদের এবং অনলাইন নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে ‘ব্যবসায়িক ইমেইল প্রতারণা’ ও ‘মানি লন্ডারিং’-এর মাধ্যমে কোটি কোটি ডলার হাতিয়ে নিতেন। আর আড়ালে থেকে অর্থপাচারের জন্য ব্যবহার করতেন স্যোশাল মিডিয়ায় নিজের জনপ্রিয়তা।
২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল কর্তৃপক্ষ তাঁর কার্যকলাপ উদঘাটন করে তাঁকে গ্রেপ্তার করে। আদালত প্রমাণ হয়, তিনি আন্তর্জাতিক অর্থপাচার ও প্রতারণার মাধ্যমে অসংখ্য মানুষের আস্থা ভঙ্গ করেছেন। আর তাই ১১ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয় তাঁকে। হাশপাপ্পির কাহিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় বিলাসবহুল জীবন প্রদর্শনের আড়ালে বড় প্রতারণার উদাহরণ হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে আলোচিত।
সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার স্যামান্থা কুকস টিকটক ও অন্যান্য ভিডিও প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে জনপ্রিয় হয়েছিলেন। তাঁর কনটেন্টে প্রায়ই ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ও প্রতিদিনের জীবনযাপন উঠে আসত। কিন্তু সবচেয়ে আলোচিত বিষয় ছিল, হান্টিংটন ডিজিজের মতো ‘রেয়ার’ ও অনিরাময়যোগ্য রোগে আক্রান্ত হওয়ার খবর।

স্যামান্থা এই রোগে আক্রান্তের কাহিনি শেয়ার করে ফলোয়ারদের সহানুভূতি, সমর্থন আর বিশ্বাস অর্জন করেছিলেন। তাঁর ভিডিও ও পোস্টগুলো ভাইরাল হয়ে যেত। মানুষ তাঁকে সাহায্য করার জন্য টাকা-পয়সা দান করতেন। ফলোয়ারেরা তাঁকে দেখতেন একজন সংগ্রামী চরিত্র হিসেবে, যিনি ভয়ংকর রোগের মোকাবিলা করছেন।
কিন্তু ধীরে ধীরে প্রকাশিত হলো, স্যামান্থা কখনো এই রোগে আক্রান্ত ছিলেন না। তাঁর পুরো কাহিনি মিথ্যা এবং প্রতারণার উদ্দেশ্যে তৈরি করা। প্রতারণার কারণে তাঁর সোশ্যাল মিডিয়ার বিশ্বাসযোগ্যতা পুরোপুরি ধ্বংস হয়। অনেক ফলোয়ার তাঁর প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলেন। তিনি আইনি তদন্তের মুখোমুখি হন।
তথ্যসূত্র: বিবিসি, রয়টার্স, ইউরো নিউজ ও এপি

ছোটবেলা থেকেই শুনে এসেছি, পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ। যদিও কথাটি পরিচ্ছন্নতার সঙ্গে ইসলামের সম্পর্কের গুরুত্ব হিসেবেই শেখানো হয়েছিল। তবে এমন ভাবনা এ অঞ্চলের অন্যান্য ধর্মগুলোর সঙ্গেও সঙ্গতিপূর্ণ। ফলে আমরা সবাই মোটামুটি পরিচ্ছন্নতা নিয়ে ঐতিহাসিকভাবেই সচেতন একটি অঞ্চল হিসেবে পরিচিত।
১৬ ঘণ্টা আগে
ভয় পেতে কারও কি ভালো লাগে? কিন্তু হরর সিনেমার ক্ষেত্রে যেন সব হিসাব পাল্টে যায়। ভয় পাই, চমকে উঠি, তবু দেখতেই থাকি। আর সিনেমা শেষ না করে উঠতে পারি না। প্রশ্ন জাগে, ভয় পেলেও কেন আমরা হরর সিনেমা দেখি? কেন হরর সিনেমা আমাদের এত টানে?
২ দিন আগে
গতকাল মঙ্গলবার চ্যাটজিপিটি অ্যাটলাস নামে নতুন ব্রাউজার উন্মুক্ত করেছে এআই নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওপেনএআই।
২ দিন আগে
সমুদ্রের নিচে লুকিয়ে আছে অসংখ্য রহস্য, অসংখ্য বিস্ময়। আর সেই বিস্ময়ের ভেতরেও এমন প্রাণী আছে, যারা প্রকৃতির নিয়মকানুনই উল্টে দিয়েছে।
৩ দিন আগে