আজ আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস
আজ আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস। বিশ্বজুড়ে প্রতিবছর ১১ অক্টোবর পালিত হয় এ দিবস। ব্যস্ত ঢাকা শহরে কন্যাশিশুকে লালন-পালন করতে গিয়ে কী কী সমস্যার মুখোমুখি হন মায়েরা? এই লেখক কেন এক কন্যাশিশুর মা হিসেবে নিজেকে ‘অপরাধী’ ভাবছেন?
ফাতেমা আবেদীন
শিরোনাম পড়েই শাহরুখ খানের বিখ্যাত সিনেমা ‘জওয়ান’-এ দীপিকা পাডুকোনের কথা ভেবে বসবেন না। অপরাধ করলেই কেবল অপরাধী হয় না মানুষ। ‘জন্মই আমার আজন্ম পাপ’-এর মতো শিরোনাম এটি। একজন কন্যাশিশুর মা হিসেবে যে অপরাধ আমার, সেই দোষের কথাই বলছি।
অনেক বছর আগে দরিদ্র স্কুল শিক্ষক থাকাকালীন এক সুপারভাইজার শিক্ষক বলেছিলেন, ‘তোমার কাছে যে চার বছরের শিশু দিয়ে যাচ্ছেন বাবা-মা, তারা আসলে শিশু নয়। তারা এই দেশের ভবিষ্যত প্রধানমন্ত্রী, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, জজ-ব্যারিস্টার। মোট কথা ভবিষ্যত। তাই শিশু বলে কাউকে হেলা করার কোনো জো নেই।’ আজ আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস, আজ তো আরও উপায় নেই অবহেলার।
ছোট্ট শিশুদের হেলা না করেই শিক্ষক-জীবন উৎরে আসলেও যেদিন মাতৃত্ব বরণ করলাম সেদিন থেকে অপরাধী হয়ে উঠলাম সার্বিকভাবে। আরও কঠিন হলো বিষয়টা যে আমি একজন কন্যাশিশুর মা। আমি প্রতিদিন পাখি পড়ার মতো করে বিভিন্ন গণমাধ্যমে যেসব সংবাদ পড়ি, তার কয়েকটির এক-আধটা লাইন তুলে ধরছি আপনাদের জন্য:
‘২০২৫ সালের প্রথম সাত মাসে দেশে শিশু ধর্ষণের ঘটনা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৭৫ শতাংশ বেড়েছে বলে উঠে এসেছে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) তথ্যে।’ ২৫ আগস্ট, ২০২৫, ‘দ্য ডেইলি স্টার’ বাংলা।
‘বাংলাদেশে গত আট বছরে ৩ হাজার ৪৩৮টি শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এদের মধ্যে অন্তত ৫৩৯ জনের বয়স ছয় বছরের কম। আর সাত থেকে বারো বছরের মধ্যে আছে ৯৩৩ জন।’ ১১ মার্চ, ২০২৫, বিবিসি বাংলা।
প্রতিদিন পাখি পড়ার মতো করে এক কন্যাশিশুর মা হিসেবে এই সংবাদগুলো আমি পড়ি। যাতে কখনো ভুলেও আমার বেখেয়ালে আমার সন্তানের জন্য অনিরাপদ পরিবেশ তৈরি না হয়।
এর ওপর গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মতো আছে ঢাকা শহর। এমন বিষাক্ত শহরে একজন কর্মজীবী মায়ের আসলে গিলোটিনে গলা রেখেই সন্তান মানুষ করতে হয়। দুঃখিত, মানুষ করা দূরের বিষয়—সহি নিয়মে লালন-পালনই মূল।
ঢাকার মতো এই নরক শহরে বাতাসের একিউআই তথা এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সের মাত্রা প্রায়ই ২০০ থেকে ৩০০ থাকে। এখানে ঠিকঠাক পরিচ্ছন্ন পাবলিক টয়লেটের বড় অভাব। একটা শিশু তো দূরের কথা, প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ হেঁটে যাওয়ার মতো নেই একটা ফুটপাত। বাইরে বেরোলে কোনো দোকানে আপনি নিশ্চিন্ত মনে শিশুকে খাইয়ে নেবেন, এমন খাবারও নেই। তবে যা আছে তা হলো, খাবারে সীসা আর বিষ। সঙ্গে ওষুধে ভেজালের বিষয়টিও আছেই। এমন যখন দেশের বেশির ভাগ শহরের অবস্থা, তখন ওই শহরে বা দেশে সন্তান জন্ম দিয়ে আপনি হয়তো নিজেকে অপরাধীই মনে করবেন।
নাগরিক জীবনে সন্তান লালন-পালন করতে গিয়ে অনেকেই যে সংকটে পড়েন তা হলো, শিশুসন্তানকে কোথায় রেখে কাজে যাবেন। অবসরপ্রাপ্ত আত্মীয়-স্বজনদের কেউ কেউ বলবেন, ‘আমার কাছে দিয়ে যেও।’ কিন্তু তাঁদের বাসার দূরত্ব, আপনার কর্মস্থলের দূরত্ব আর আপনার ডেরার দূরত্ব--দুবার দেশের বাড়ি যাওয়ার সমানুপাতিক। তাই বাধ্য হয়ে কাজের লোক খোঁজা কিংবা ডে কেয়ারই ভরসা।
ডে কেয়ার নিয়ে অবশ্য অনেক গল্প প্রচলিত আছে। সেখানে নাকি বাচ্চা সামলাতে না পারলে তাকে কম মাত্রার কফ সিরাপ খাইয়ে দেওয়া হয়, যাতে বাচ্চা ঘুমিয়ে থাকে। এগুলো গল্পই, সত্য-মিথ্যা জানি না। তবে আপনার বাসায় থাকা কাজের লোকও কম মাত্রার কফ সিরাপ খাইয়ে বাচ্চাকে ঘুম পাড়িয়ে রাখতে পারে। শুধু আপন স্বজনেরা এ কাজ করবেন না। কিন্তু নগরজীবনে সাধ্যের চারপাশে তাঁদেরকে পাওয়া তো বড়ই কঠিন। ফলে আপনাকে হয় কাজ ছাড়তে হবে, নইলে সন্তানের বেড়ে ওঠায় ‘ঘাপলা’ রেখেই চলতে হবে। তাকে ছয় মাসে ডে কেয়ারে দিয়ে দিতে হবে, দুই বছরে প্রি- স্কুলে আর স্কুল শেষে বাকি সময়টা আপনার অফিসের কোনায় (যদি অফিস সুযোগ দেয়) রাখতে হবে।
নগরজীবন নিয়ে গ্রামের যেসব লোকজন খুব আফসোস করেন, নাগরিক সুযোগ-সুবিধার চূড়ান্তে থাকা মানুষগুলোকে দেখে ঈর্ষান্বিত থাকেন, তাঁরা এই বেলা সুখের নিশ্বাস ছাড়তে পারেন। এ দেশের কোনো নাগরিকের জীবনই আসলে সুখের না। চাইলেই ‘রেডি টু ইট’-এর মতো তৈরি খাবার ফুডপান্ডায় অর্ডার করা গেলেও সেটা গিলে ফেলা অত সহজ না জনাব। খাদ্যে ভেজালের মাত্রা কোন লেভেলে আপনি তা কি জানেন? তাই আপনার সন্তানকে মোটামুটি নির্ভেজাল খাবার খাওয়ানোর জন্য খানাখাদ্য নিজেরই তৈরি করতে হবে।
আর কর্মজীবনের ঝক্কি নিয়ে বলাই বাহুল্য। গ্রামের একজন কর্মজীবী মা চাইলেই তাঁর সঙ্গে ক্ষেতখামারে, ধানের চাতালে বা গরুর গোয়ালে শিশু সন্তানকে নিয়ে যেতে পারেন। বাচ্চাকে একটা খেলনা ও একটু খাবার দিয়ে বসিয়ে রাখা মানুষটি জানেন, তাঁর চারপাশের দৃষ্টিসীমানা পর্যন্ত সব নিরাপদ। কিন্তু আপনি যখন আপনার অফিসে সন্তান নিয়ে যাবেন, তখন প্রথম চিন্তা বিদ্যুতের প্লাগ-সকেটে যেন বাচ্চা হাত না দেয়, অফিসের বড় কর্তারা যেন চটে না যায়, সহকর্মীদের মধ্যে যেন বিরক্তির সৃষ্টি না হয়, বাচ্চার গায়ে যেন অযাচিত কেউ স্পর্শ না করে। বাচ্চা যেন গোছানো অফিসের কিছু নষ্ট না করে...। এসব ভাবতে গিয়ে আপনার অফিসের কাজ যে ব্যহত হবে, তা একরকম নিশ্চিত। তাই বাধ্য হয়ে ডে কেয়ারই ভরসা। কারণ, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই নানা-নানী বা দাদা-দাদীরা এই শহরে দুর্মূল্য বস্তু। একটা শিশু লালন করতে আসলে একটা গোটা গ্রাম লাগে। অন্যদিকে, শহরের একজন মায়ের নিজেকেই সেই গ্রাম হয়ে উঠতে হয় প্রতিনিয়ত।
এই লেখার চার শ শব্দ পেরিয়ে যাওয়ার পরেও বাবাদের কথা লিখছি না কেন, প্রশ্নটি আসতেই পারে। কন্যাশিশু দিবসে শিশুর লালন পালনে বাবার ভূমিকা নিয়েও আলাপ করা উচিত। কারণ, কন্যা তো বাবার রাজকুমারী। তবে এখানে অনেক ক্ষেত্রে বাবাদের ভূমিকা শুধু কেতাবেই থাকে বলে মনে হয় আমার। সন্তান একটি নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্ত বড় হওয়ার পর তাকে স্কুলে দেওয়ার কাজটিই বাবা করে থাকেন। কর্মজীবন শেষে কিছুটা সময় পেলে বাচ্চাকে বাইরে খেতে নিয়ে যাওয়া বা গল্প বলায় বাবারা পারদর্শী। কিন্তু সন্তানের অসুখে মাকে অফিস থেকে ছুটি নিতে হয়, কখনো চাকরি ছাড়তেও হয়, গুটিয়ে ফেলতে হয় ক্যারিয়ার। অনেক মা নিজের সমুদয় শখ-আহ্লাদ বিসর্জন দেন। এই সমাজে বাবাকে এসবের কিছুই করতে হয় না।
এত গেল শিশুর জীবনে বাবা-মায়ের ভূমিকা। এবার চলুন, শিশুকে কীভাবে লালন করবেন, সেই আলাপে যাই। একটা শিশু মোটেও শিশু নয়। হতে পারে সেই-ই দেশের ভবিষ্যত প্রধানমন্ত্রী, এটা তো আগেই বলেছি। তাই সেই প্রধানমন্ত্রীর বড় হওয়াটা হতে হবে খুবই সাবলীল—এ বিষয়ে আপনাকে একজন মা কিংবা বাবা হিসেবে কোনো কোনো সময় দাঁড়াতে হতে পারে ‘সমাজ’-এর কাঠগড়ায়। কেননা, আত্মীয়-স্বজন বাচ্চা পালন বিষয়ে উপদেশ দিতেই থাকবেন। আর একই সঙ্গে থাকবে এই আত্মীয়কূলের তাবৎ নির্দেশনা ও উপদেশ। এমনকি ধরুণ, ক্লাস এইটে পড়া কোনো আত্মীয়ও আপনাকে শিশু লালন-পালন বিষয়ে সবকের পর সবক দিতে পারবে।
আবার হালে শুরু হয়েছে ভ্লগের ঝকমারি। ‘আমার সন্তানকে আমি এটা দিই না, ওটা দিই না’; ‘আমার বাবু সেটা খায় না, ওর সঙ্গে মেশে না’—নিজেদের বাচ্চাকে দিয়ে এমনভাবে যাঁরা ভ্লগ করেন, আপনি তাঁদের ফলো করে সন্তানের লালন-পালন করতে পারেন। কিন্তু করবেন কি?
তা ছাড়া, সন্তান লালন-পালনবিষয়ক উপদেশ দেওয়াও এখন বলতে গেলে একটা পেশায় পরিণত হয়েছে। আপনি অনায়াসে এ বিষয়ে উপদেশ প্রস্তুত করে সোশ্যাল মিডিয়া মনিটাইজেশন পেতে পারেন। শুধু সন্তানকে ঘিরে শত শত ভিডিও আর ক্যামেরার আলোকচ্ছটার চাপে সন্তানের ক্লান্ত চোখটা দেখতে ভুলে যাবেন না। বড় হয়ে কোনোদিন যদি সন্তান বলে, আমাকে বিক্রি করে আয় করেছ কেন? এ প্রশ্নের উত্তর দিতে প্রস্তুতি নিয়ে রাখবেন, প্লিজ। সন্তান কোনো টুলস, ডিভাইস বা মেশিনারি নয়, তাই এই প্রশ্নটা সে কোনোদিন আপনাকে করতেই পারে।
আর ভ্লগের সুপার মাম্মিদের ফলোয়ার আপুদের প্রতি অনুরোধ, এই নগর জীবনে আপনার সন্তানকে রাত ৯টার মধ্যে ঘুম পাড়িয়ে দেবেন না । কারণ, এ শহরে একজন কর্মব্যস্ত বাবা ফেরেন রাত ১০টার পর আর বের হয়ে যান সকাল ৯টায়। ছুটির দিন ছাড়া আপনার সন্তানের সঙ্গে তাঁর বাবার দেখাটাই হয় না হয়তো। শরীরের যত্ন নিতে গিয়ে মনের বিকাশটা যেন থেমে না যায়। বাবা-মায়ের দুজনের সমান উপস্থিতিই সন্তানের জীবনে প্রয়োজন।
আমার নিজের একটি কন্যাশিশু আছে। তার বয়স আড়াই বছর। তাকে প্রথম যখন বুকে জড়িয়ে ধরি, তখন আমি মনে মনে শুধু একটা কথাই বলেছিলাম, ‘মা, তোমায় আমি সার্ভাইবাল অব দ্য ফিটেস্ট হিসেবে তৈরি করতে চাই। তেলাপোকার মতো অনেক বছর টিকে থাকতে হবে তোমাকে। ডাইনোসরের মতো লোপ পাওয়া যাবে না।’ তাই ঝুম বৃষ্টিতে তাকে নিয়ে ভিজছি ওর এক বছর থেকেই, যাতে পরিবেশ যতই দূষিত হোক না কেন, ওর ইমিউনিটি যেন গ্রো করে। আমার কন্যাশিশুকে আমি নিজে যা খাই, তাই-ই খাওয়াই। খাওয়া নিয়ে বাছবিচার করি না। ওকে পিঠে করে কাজে যাই, অফিস করি। আর ফেরার পথে দুজনে মিলে ফুচকা খাই।
একবার ওর বৃষ্টিতে ভেজার ছবি দেখে একজন খুব হা রে রে করে আমাকে বললেন, ‘ঠান্ডা লাগিয়ে বাচ্চাকে অসুস্থ করার বুদ্ধি বের করেছ?’ অন্যদিকে, এই একই ব্যক্তি আবার ইউরোপের বরফে লুটোপুটি খাওয়া বাচ্চাদের ছবি দেখে সে কী গল্প করলেন, ‘বিদেশে বাচ্চারা এমন করে বড় হয়, অমন করে পিউরি খায়। প্যাকেটে ফলের নির্যাস পাওয়া যায়… ইত্যাদি।’
অথচ আমি যখন মিষ্টিকুমড়া সেদ্ধ করে আমার মেয়ের সামনে দিলাম বা চোখের সামনে ব্লেন্ডারে ঘুরিয়ে তাকে ফলের রস খেতে দিলাম, দেখলাম, সেগুলোয় তাদের ব্যাপক আপত্তি, ‘এমনি শুধু মিষ্টিকুমড়া কেউ খেতে পারে? ভাত দিই না কেন? ফলের জুস করলে তো কিছুই থাকে না। তোলা তোলা খাওয়ানো যাবে না’—এমন কত কথা তাঁদের! আর বর্ষীয়ান মায়েদের থেকে যে কথা শোনা যায়, ‘আমরা কি মা হই নাই, তুমি একলাই মা…’। সন্তান লালন-পালন করতে গিয়ে এসব আপনি নিত্যই শুনবেন। এগুলো আমাদের সামাজিক অভ্যাস। আলাপগুলো আপনাকে পরিপূর্ণভাবে শুনে তৎক্ষনাত ভুলেও যেতে হবে। অনেকটা‘কানে দিয়েছি তুলো, পিঠে বেঁধেছি কুলো’—এই থিওরিতে সন্তানকে আমরা বড় করে তুলি একটা ‘নষ্ট ভ্রষ্ট শহরে’। হাতের জায়গায় হাত, পায়ের জায়গায় পা আর মাথাটা আপাতত ঠিক থাকলেই হবে। এরপর একদিন সে প্রধানমন্ত্রী হবেই নিশ্চয়।
আমার মতে, কন্যাশিশুকে বড় করতে হবে একদম ডাকাতি তরিকায়। নইলে সে টিকবে না। ঝরে যাবে। মুখের আগে তার চলতে হবে হাত, নিজের তাবত অধিকারের বিষয়ে তাকে অধিক সচেতন হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। শিক্ষা, নম্রতা ভদ্রতা—এসব বোধ করি নারকীয় পৃথিবী বা দেশের জন্য না।
লেখাটা শেষ করার কিছু আগে গাজার একটা ছোট্ট মেয়ের ভিডিওতে চোখ আটকে গেল। মেয়েটা বাবাকে জিজ্ঞাসা করছে, ‘আজকে তিনি খাবার আনতে যেতে পারবেন কি না?’ বাবা জানালেন, ‘পরিস্থিতি সুবিধার নয়।’ তখন ছোট্ট ওই ক্ষুধার্ত মেয়ে ‘ইটস ওকে’ বলে মাথা নাড়লো। গাজার ওই ছোট্ট মেয়েটার জন্য প্রার্থনা। ও ওর ন্যায্য পাক। আমার মেয়েটাও যেন তার প্রাপ্য বুঝে নিয়ে বড় হয় এই শহরে।
লেখক: কথাসাহিত্যিক
শিরোনাম পড়েই শাহরুখ খানের বিখ্যাত সিনেমা ‘জওয়ান’-এ দীপিকা পাডুকোনের কথা ভেবে বসবেন না। অপরাধ করলেই কেবল অপরাধী হয় না মানুষ। ‘জন্মই আমার আজন্ম পাপ’-এর মতো শিরোনাম এটি। একজন কন্যাশিশুর মা হিসেবে যে অপরাধ আমার, সেই দোষের কথাই বলছি।
অনেক বছর আগে দরিদ্র স্কুল শিক্ষক থাকাকালীন এক সুপারভাইজার শিক্ষক বলেছিলেন, ‘তোমার কাছে যে চার বছরের শিশু দিয়ে যাচ্ছেন বাবা-মা, তারা আসলে শিশু নয়। তারা এই দেশের ভবিষ্যত প্রধানমন্ত্রী, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, জজ-ব্যারিস্টার। মোট কথা ভবিষ্যত। তাই শিশু বলে কাউকে হেলা করার কোনো জো নেই।’ আজ আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস, আজ তো আরও উপায় নেই অবহেলার।
ছোট্ট শিশুদের হেলা না করেই শিক্ষক-জীবন উৎরে আসলেও যেদিন মাতৃত্ব বরণ করলাম সেদিন থেকে অপরাধী হয়ে উঠলাম সার্বিকভাবে। আরও কঠিন হলো বিষয়টা যে আমি একজন কন্যাশিশুর মা। আমি প্রতিদিন পাখি পড়ার মতো করে বিভিন্ন গণমাধ্যমে যেসব সংবাদ পড়ি, তার কয়েকটির এক-আধটা লাইন তুলে ধরছি আপনাদের জন্য:
‘২০২৫ সালের প্রথম সাত মাসে দেশে শিশু ধর্ষণের ঘটনা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৭৫ শতাংশ বেড়েছে বলে উঠে এসেছে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) তথ্যে।’ ২৫ আগস্ট, ২০২৫, ‘দ্য ডেইলি স্টার’ বাংলা।
‘বাংলাদেশে গত আট বছরে ৩ হাজার ৪৩৮টি শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এদের মধ্যে অন্তত ৫৩৯ জনের বয়স ছয় বছরের কম। আর সাত থেকে বারো বছরের মধ্যে আছে ৯৩৩ জন।’ ১১ মার্চ, ২০২৫, বিবিসি বাংলা।
প্রতিদিন পাখি পড়ার মতো করে এক কন্যাশিশুর মা হিসেবে এই সংবাদগুলো আমি পড়ি। যাতে কখনো ভুলেও আমার বেখেয়ালে আমার সন্তানের জন্য অনিরাপদ পরিবেশ তৈরি না হয়।
এর ওপর গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মতো আছে ঢাকা শহর। এমন বিষাক্ত শহরে একজন কর্মজীবী মায়ের আসলে গিলোটিনে গলা রেখেই সন্তান মানুষ করতে হয়। দুঃখিত, মানুষ করা দূরের বিষয়—সহি নিয়মে লালন-পালনই মূল।
ঢাকার মতো এই নরক শহরে বাতাসের একিউআই তথা এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সের মাত্রা প্রায়ই ২০০ থেকে ৩০০ থাকে। এখানে ঠিকঠাক পরিচ্ছন্ন পাবলিক টয়লেটের বড় অভাব। একটা শিশু তো দূরের কথা, প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ হেঁটে যাওয়ার মতো নেই একটা ফুটপাত। বাইরে বেরোলে কোনো দোকানে আপনি নিশ্চিন্ত মনে শিশুকে খাইয়ে নেবেন, এমন খাবারও নেই। তবে যা আছে তা হলো, খাবারে সীসা আর বিষ। সঙ্গে ওষুধে ভেজালের বিষয়টিও আছেই। এমন যখন দেশের বেশির ভাগ শহরের অবস্থা, তখন ওই শহরে বা দেশে সন্তান জন্ম দিয়ে আপনি হয়তো নিজেকে অপরাধীই মনে করবেন।
নাগরিক জীবনে সন্তান লালন-পালন করতে গিয়ে অনেকেই যে সংকটে পড়েন তা হলো, শিশুসন্তানকে কোথায় রেখে কাজে যাবেন। অবসরপ্রাপ্ত আত্মীয়-স্বজনদের কেউ কেউ বলবেন, ‘আমার কাছে দিয়ে যেও।’ কিন্তু তাঁদের বাসার দূরত্ব, আপনার কর্মস্থলের দূরত্ব আর আপনার ডেরার দূরত্ব--দুবার দেশের বাড়ি যাওয়ার সমানুপাতিক। তাই বাধ্য হয়ে কাজের লোক খোঁজা কিংবা ডে কেয়ারই ভরসা।
ডে কেয়ার নিয়ে অবশ্য অনেক গল্প প্রচলিত আছে। সেখানে নাকি বাচ্চা সামলাতে না পারলে তাকে কম মাত্রার কফ সিরাপ খাইয়ে দেওয়া হয়, যাতে বাচ্চা ঘুমিয়ে থাকে। এগুলো গল্পই, সত্য-মিথ্যা জানি না। তবে আপনার বাসায় থাকা কাজের লোকও কম মাত্রার কফ সিরাপ খাইয়ে বাচ্চাকে ঘুম পাড়িয়ে রাখতে পারে। শুধু আপন স্বজনেরা এ কাজ করবেন না। কিন্তু নগরজীবনে সাধ্যের চারপাশে তাঁদেরকে পাওয়া তো বড়ই কঠিন। ফলে আপনাকে হয় কাজ ছাড়তে হবে, নইলে সন্তানের বেড়ে ওঠায় ‘ঘাপলা’ রেখেই চলতে হবে। তাকে ছয় মাসে ডে কেয়ারে দিয়ে দিতে হবে, দুই বছরে প্রি- স্কুলে আর স্কুল শেষে বাকি সময়টা আপনার অফিসের কোনায় (যদি অফিস সুযোগ দেয়) রাখতে হবে।
নগরজীবন নিয়ে গ্রামের যেসব লোকজন খুব আফসোস করেন, নাগরিক সুযোগ-সুবিধার চূড়ান্তে থাকা মানুষগুলোকে দেখে ঈর্ষান্বিত থাকেন, তাঁরা এই বেলা সুখের নিশ্বাস ছাড়তে পারেন। এ দেশের কোনো নাগরিকের জীবনই আসলে সুখের না। চাইলেই ‘রেডি টু ইট’-এর মতো তৈরি খাবার ফুডপান্ডায় অর্ডার করা গেলেও সেটা গিলে ফেলা অত সহজ না জনাব। খাদ্যে ভেজালের মাত্রা কোন লেভেলে আপনি তা কি জানেন? তাই আপনার সন্তানকে মোটামুটি নির্ভেজাল খাবার খাওয়ানোর জন্য খানাখাদ্য নিজেরই তৈরি করতে হবে।
আর কর্মজীবনের ঝক্কি নিয়ে বলাই বাহুল্য। গ্রামের একজন কর্মজীবী মা চাইলেই তাঁর সঙ্গে ক্ষেতখামারে, ধানের চাতালে বা গরুর গোয়ালে শিশু সন্তানকে নিয়ে যেতে পারেন। বাচ্চাকে একটা খেলনা ও একটু খাবার দিয়ে বসিয়ে রাখা মানুষটি জানেন, তাঁর চারপাশের দৃষ্টিসীমানা পর্যন্ত সব নিরাপদ। কিন্তু আপনি যখন আপনার অফিসে সন্তান নিয়ে যাবেন, তখন প্রথম চিন্তা বিদ্যুতের প্লাগ-সকেটে যেন বাচ্চা হাত না দেয়, অফিসের বড় কর্তারা যেন চটে না যায়, সহকর্মীদের মধ্যে যেন বিরক্তির সৃষ্টি না হয়, বাচ্চার গায়ে যেন অযাচিত কেউ স্পর্শ না করে। বাচ্চা যেন গোছানো অফিসের কিছু নষ্ট না করে...। এসব ভাবতে গিয়ে আপনার অফিসের কাজ যে ব্যহত হবে, তা একরকম নিশ্চিত। তাই বাধ্য হয়ে ডে কেয়ারই ভরসা। কারণ, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই নানা-নানী বা দাদা-দাদীরা এই শহরে দুর্মূল্য বস্তু। একটা শিশু লালন করতে আসলে একটা গোটা গ্রাম লাগে। অন্যদিকে, শহরের একজন মায়ের নিজেকেই সেই গ্রাম হয়ে উঠতে হয় প্রতিনিয়ত।
এই লেখার চার শ শব্দ পেরিয়ে যাওয়ার পরেও বাবাদের কথা লিখছি না কেন, প্রশ্নটি আসতেই পারে। কন্যাশিশু দিবসে শিশুর লালন পালনে বাবার ভূমিকা নিয়েও আলাপ করা উচিত। কারণ, কন্যা তো বাবার রাজকুমারী। তবে এখানে অনেক ক্ষেত্রে বাবাদের ভূমিকা শুধু কেতাবেই থাকে বলে মনে হয় আমার। সন্তান একটি নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্ত বড় হওয়ার পর তাকে স্কুলে দেওয়ার কাজটিই বাবা করে থাকেন। কর্মজীবন শেষে কিছুটা সময় পেলে বাচ্চাকে বাইরে খেতে নিয়ে যাওয়া বা গল্প বলায় বাবারা পারদর্শী। কিন্তু সন্তানের অসুখে মাকে অফিস থেকে ছুটি নিতে হয়, কখনো চাকরি ছাড়তেও হয়, গুটিয়ে ফেলতে হয় ক্যারিয়ার। অনেক মা নিজের সমুদয় শখ-আহ্লাদ বিসর্জন দেন। এই সমাজে বাবাকে এসবের কিছুই করতে হয় না।
এত গেল শিশুর জীবনে বাবা-মায়ের ভূমিকা। এবার চলুন, শিশুকে কীভাবে লালন করবেন, সেই আলাপে যাই। একটা শিশু মোটেও শিশু নয়। হতে পারে সেই-ই দেশের ভবিষ্যত প্রধানমন্ত্রী, এটা তো আগেই বলেছি। তাই সেই প্রধানমন্ত্রীর বড় হওয়াটা হতে হবে খুবই সাবলীল—এ বিষয়ে আপনাকে একজন মা কিংবা বাবা হিসেবে কোনো কোনো সময় দাঁড়াতে হতে পারে ‘সমাজ’-এর কাঠগড়ায়। কেননা, আত্মীয়-স্বজন বাচ্চা পালন বিষয়ে উপদেশ দিতেই থাকবেন। আর একই সঙ্গে থাকবে এই আত্মীয়কূলের তাবৎ নির্দেশনা ও উপদেশ। এমনকি ধরুণ, ক্লাস এইটে পড়া কোনো আত্মীয়ও আপনাকে শিশু লালন-পালন বিষয়ে সবকের পর সবক দিতে পারবে।
আবার হালে শুরু হয়েছে ভ্লগের ঝকমারি। ‘আমার সন্তানকে আমি এটা দিই না, ওটা দিই না’; ‘আমার বাবু সেটা খায় না, ওর সঙ্গে মেশে না’—নিজেদের বাচ্চাকে দিয়ে এমনভাবে যাঁরা ভ্লগ করেন, আপনি তাঁদের ফলো করে সন্তানের লালন-পালন করতে পারেন। কিন্তু করবেন কি?
তা ছাড়া, সন্তান লালন-পালনবিষয়ক উপদেশ দেওয়াও এখন বলতে গেলে একটা পেশায় পরিণত হয়েছে। আপনি অনায়াসে এ বিষয়ে উপদেশ প্রস্তুত করে সোশ্যাল মিডিয়া মনিটাইজেশন পেতে পারেন। শুধু সন্তানকে ঘিরে শত শত ভিডিও আর ক্যামেরার আলোকচ্ছটার চাপে সন্তানের ক্লান্ত চোখটা দেখতে ভুলে যাবেন না। বড় হয়ে কোনোদিন যদি সন্তান বলে, আমাকে বিক্রি করে আয় করেছ কেন? এ প্রশ্নের উত্তর দিতে প্রস্তুতি নিয়ে রাখবেন, প্লিজ। সন্তান কোনো টুলস, ডিভাইস বা মেশিনারি নয়, তাই এই প্রশ্নটা সে কোনোদিন আপনাকে করতেই পারে।
আর ভ্লগের সুপার মাম্মিদের ফলোয়ার আপুদের প্রতি অনুরোধ, এই নগর জীবনে আপনার সন্তানকে রাত ৯টার মধ্যে ঘুম পাড়িয়ে দেবেন না । কারণ, এ শহরে একজন কর্মব্যস্ত বাবা ফেরেন রাত ১০টার পর আর বের হয়ে যান সকাল ৯টায়। ছুটির দিন ছাড়া আপনার সন্তানের সঙ্গে তাঁর বাবার দেখাটাই হয় না হয়তো। শরীরের যত্ন নিতে গিয়ে মনের বিকাশটা যেন থেমে না যায়। বাবা-মায়ের দুজনের সমান উপস্থিতিই সন্তানের জীবনে প্রয়োজন।
আমার নিজের একটি কন্যাশিশু আছে। তার বয়স আড়াই বছর। তাকে প্রথম যখন বুকে জড়িয়ে ধরি, তখন আমি মনে মনে শুধু একটা কথাই বলেছিলাম, ‘মা, তোমায় আমি সার্ভাইবাল অব দ্য ফিটেস্ট হিসেবে তৈরি করতে চাই। তেলাপোকার মতো অনেক বছর টিকে থাকতে হবে তোমাকে। ডাইনোসরের মতো লোপ পাওয়া যাবে না।’ তাই ঝুম বৃষ্টিতে তাকে নিয়ে ভিজছি ওর এক বছর থেকেই, যাতে পরিবেশ যতই দূষিত হোক না কেন, ওর ইমিউনিটি যেন গ্রো করে। আমার কন্যাশিশুকে আমি নিজে যা খাই, তাই-ই খাওয়াই। খাওয়া নিয়ে বাছবিচার করি না। ওকে পিঠে করে কাজে যাই, অফিস করি। আর ফেরার পথে দুজনে মিলে ফুচকা খাই।
একবার ওর বৃষ্টিতে ভেজার ছবি দেখে একজন খুব হা রে রে করে আমাকে বললেন, ‘ঠান্ডা লাগিয়ে বাচ্চাকে অসুস্থ করার বুদ্ধি বের করেছ?’ অন্যদিকে, এই একই ব্যক্তি আবার ইউরোপের বরফে লুটোপুটি খাওয়া বাচ্চাদের ছবি দেখে সে কী গল্প করলেন, ‘বিদেশে বাচ্চারা এমন করে বড় হয়, অমন করে পিউরি খায়। প্যাকেটে ফলের নির্যাস পাওয়া যায়… ইত্যাদি।’
অথচ আমি যখন মিষ্টিকুমড়া সেদ্ধ করে আমার মেয়ের সামনে দিলাম বা চোখের সামনে ব্লেন্ডারে ঘুরিয়ে তাকে ফলের রস খেতে দিলাম, দেখলাম, সেগুলোয় তাদের ব্যাপক আপত্তি, ‘এমনি শুধু মিষ্টিকুমড়া কেউ খেতে পারে? ভাত দিই না কেন? ফলের জুস করলে তো কিছুই থাকে না। তোলা তোলা খাওয়ানো যাবে না’—এমন কত কথা তাঁদের! আর বর্ষীয়ান মায়েদের থেকে যে কথা শোনা যায়, ‘আমরা কি মা হই নাই, তুমি একলাই মা…’। সন্তান লালন-পালন করতে গিয়ে এসব আপনি নিত্যই শুনবেন। এগুলো আমাদের সামাজিক অভ্যাস। আলাপগুলো আপনাকে পরিপূর্ণভাবে শুনে তৎক্ষনাত ভুলেও যেতে হবে। অনেকটা‘কানে দিয়েছি তুলো, পিঠে বেঁধেছি কুলো’—এই থিওরিতে সন্তানকে আমরা বড় করে তুলি একটা ‘নষ্ট ভ্রষ্ট শহরে’। হাতের জায়গায় হাত, পায়ের জায়গায় পা আর মাথাটা আপাতত ঠিক থাকলেই হবে। এরপর একদিন সে প্রধানমন্ত্রী হবেই নিশ্চয়।
আমার মতে, কন্যাশিশুকে বড় করতে হবে একদম ডাকাতি তরিকায়। নইলে সে টিকবে না। ঝরে যাবে। মুখের আগে তার চলতে হবে হাত, নিজের তাবত অধিকারের বিষয়ে তাকে অধিক সচেতন হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। শিক্ষা, নম্রতা ভদ্রতা—এসব বোধ করি নারকীয় পৃথিবী বা দেশের জন্য না।
লেখাটা শেষ করার কিছু আগে গাজার একটা ছোট্ট মেয়ের ভিডিওতে চোখ আটকে গেল। মেয়েটা বাবাকে জিজ্ঞাসা করছে, ‘আজকে তিনি খাবার আনতে যেতে পারবেন কি না?’ বাবা জানালেন, ‘পরিস্থিতি সুবিধার নয়।’ তখন ছোট্ট ওই ক্ষুধার্ত মেয়ে ‘ইটস ওকে’ বলে মাথা নাড়লো। গাজার ওই ছোট্ট মেয়েটার জন্য প্রার্থনা। ও ওর ন্যায্য পাক। আমার মেয়েটাও যেন তার প্রাপ্য বুঝে নিয়ে বড় হয় এই শহরে।
লেখক: কথাসাহিত্যিক
উনিশ শতকের শেষতম দশক। গ্রামে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এক স্কুল শিক্ষক। এ বাড়ি ও বাড়ি গিয়ে পরশপাথরের মতো খুঁজে ফিরছেন ‘অতি সামান্য’জিনিস, পরোনো পুঁথি। মনে হতে পারে, আহা মরি কিছু নয়। উচ্চবর্গের ‘উচ্চ সংস্কৃতি’র কাছে এর বিশেষ কদর থাকার কথাও নয়। কিন্তু কেউ কেউ এর মূল্য বুঝেছিলেন ভবিষ্যতের বিচারে; সেই জনাকয়েক সমঝদ
৭ ঘণ্টা আগেযা লিখলাম, যা ভাবছি, যা লিখতে চাই, তা আমার বড় নিজস্ব কথা। কারণ, সৈয়দ মনজুরুল ইসলামকে নিয়ে আমার যে শোক, তা আমার একান্তই পারিবারিক, ব্যক্তিগত।
১৯ ঘণ্টা আগেলাজলো ক্রাসনাহোরকাই ১৯৫৪ সালে হাঙ্গেরিতে জন্মগ্রহণ করেন। অন্য কোথাও যেতে না পারার সময় দিয়ে তাঁর কর্মজীবনের শুরু চিহ্নিত করা যায় (গোয়েন্দা পুলিশ তাঁর পাসপোর্ট জব্দ করেছিল); এবং তাঁর উপন্যাস, যেমন সেইটানটাঙ্গো ও দ্য মেলানকোলি অব রেজিস্ট্যান্স-এ প্রায় অসহনীয় শ্বাসরুদ্ধকর অনুভূতি খুঁজে পাওয়া যায়।
১ দিন আগেআজ চিত্রশিল্পী এস এম সুলতানের মৃত্যুদিন। বাংলার গ্রামীণ কৃষিজীবি সম্প্রদায়কে অন্যরূপে চিত্রিত করেছেন তিনি। কৃষককে এই রূপে চিত্রিত করার পেছনে কী ছিল তাঁর ভাবনা?
১ দিন আগে