.png)
সবুজ ফোলানো ব্যাঙের পোশাক পরে যুক্তরাষ্ট্রের রাস্তায় নেমেছেন হাজারো মানুষ। গত সপ্তাহের পর থেকেই টিকটক, ইন্সটাগ্রাম, ব্লুস্কাইসহ যুক্তরাষ্ট্রের নানা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভরে গেছে ফোলানো ব্যাঙের ছবি ও ভিডিওতে। কিন্তু কেন?

হুমায়ূন শফিক

ওয়ালডো হলো একটি কাল্পনিক চরিত্র। লাল-সাদা ডোরাকাটা টি-শার্ট, নীল প্যান্ট, গোল চশমা আর লাল টুপি পরে থাকে সে। প্রায় সবসময়ই কোথাও না কোথাও ঘুরে বেড়ায়—সমুদ্র সৈকত, জঙ্গল, শহর, মেলা এমনকি ইতিহাসের নানা যুগেও। বইয়ে ভিড়ের মধ্যে এই ওয়ালডোকে খুঁজে বের করতে হয়। তেমনভাবেই যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে ট্রাম্পবিরোধী প্রতিবাদে ভিড়ের মধ্যে ফোলানো ব্যাঙের পোশাক পরা মানুষদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে। যেন তাঁরা নতুন ওয়ালডো।
১৮ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে প্রায় ৭০ লাখ মানুষ ‘নো কিংস’ শিরোনামের প্রতিবাদে অংশ নেয়। তাঁদের অনেকেই হাজির হয়েছিলেন ফোলানো ব্যাঙের পোশাক পরে। এই চরিত্রগুলোকে ভিড়ের মধ্যে খুব সহজেই চেনা যাচ্ছিল। তাঁদের অনুপ্রেরণার উৎসও পরিষ্কার।
ওরেগনের পোর্টল্যান্ডে অভিবাসন ও শুল্ক বিভাগের (আইসিই) কার্যালয়ের বাইরে কিছু প্রতিবাদকারীর হাতে ‘ফ্রগস টুগেদার স্ট্রং’ লেখা পোস্টার দেখা গিয়েছিল। সেই ছবিটি ভাইরাল হয়। আর মিমটি ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
গত সপ্তাহের পর থেকেই টিকটক, ইন্সটাগ্রাম, ব্লুস্কাইসহ নানা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভরে গেছে ফোলানো ব্যাঙের ছবি ও ভিডিওতে। বিভিন্ন দোকানেও দেদারসে বিক্রি হচ্ছে ‘পোর্টল্যান্ড ফ্রগ প্রটেস্ট’ স্টিকার। সেগুলোর ওপরে লেখা ‘রেসিস্ট’।
আজকাল বেশিরভাগ মানুষই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয়। তাঁরা ভালো লাগা, মন্দ লাগা সবই পোস্ট করেন। ফলে প্রতিবাদ বা রাজনৈতিক নাট্যরূপ ভাইরাল হওয়াও অপ্রত্যাশিত কিছু নয়। এমনকি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও শনিবারের ঘটনার জবাবে একটি এআই-নির্মিত ভিডিও শেয়ার করেছেন। যেখানে দেখা যায়, তিনি বিমানে বসে মার্কিন প্রতিবাদকারীদের ওপর ‘মল’ ফেলে দিচ্ছেন। কিন্তু ব্যাঙদের ঘটনাটি কিছুটা ভিন্ন। এর ভেতরে আছে নানা স্তরের অর্থ ও কার্যকারিতা। ‘পেপে’ থেকে শুরু করে ‘পিপার স্প্রে’ পর্যন্ত।
এসব ব্যাপারের প্রথমেই যেটি আসে, তা হচ্ছে নজরদারির প্রশ্ন। এখন ক্রমেই আরও বেশি সচেতন হচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকেরা। তাঁরা যখন প্রতিবাদে নামেন, তখন সরকার ও কর্তৃপক্ষ তাঁদের প্রায় সবাইকে নজরদারির ভেতরে রাখতে চান। তাই কেউ ব্যাঙ বা অন্য কোনো প্রাণীর সাজে থাকলে মুখ চেনা কঠিন হয়ে যায় কর্তৃপক্ষের জন্য। যত বেশি মানুষ ওই সবুজ ফোলানো পোশাক পরে নামছে, তত বেশি অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে তাঁদের ব্যক্তিগত পরিচয়।

দ্বিতীয় দিকটা হলো, অযৌক্তিকতার মাত্রা। ট্রাম্পের মতে, কালো পোশাকে সজ্জিতরা হলেন ‘হিংস্র অরাজকবাদী’। এর সম্পূর্ণ বিপরীতে এক হাস্যরসাত্মক চিত্র তৈরি করছে ব্যাঙের পোশাক পরা প্রতিবাদকারীরা।
গত সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে, ট্রাম্প যখন ওরেগনের পোর্টল্যান্ডে আইসিই কার্যালয়ের সামনে চলমান আন্দোলন ঠেকাতে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করতে চেয়েছিলেন, তখন বলেছিলেন, ‘ওখানে পুরোপুরি অরাজকতা চলছে’। একজন বিচারক পরে সেই মোতায়েন স্থগিত করেন।
২০২০ সালে ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলনের সময়ও ট্রাম্প ফেডারেল বাহিনি পাঠিয়েছিলেন। তখন সেই শহর দেখে মনে হচ্ছিল যেন এক যুদ্ধক্ষেত্র। যদিও বিভিন্ন গণমাধ্যম তখন লিখেছিল, ‘টুইটারে যা দেখা যাচ্ছে, বাস্তবে তা নয়’।
এই মাসের শুরুর দিকে ব্যাঙের পোশাকের প্রথম উদ্ভাবক সেথ টড ‘নিউইউর্ক টাইমস’কে বলেন, ‘আমাদের হিংস্র ও উগ্রবাদী হিসেবে দেখানোর বিপরীত প্রতিচ্ছবি হিসেবেই এই পোশাকের সৃষ্টি।’
ইউটিউব ব্রুকস বলেন ‘কারও ওপর যদি পেপার স্প্রে মারা হয়, তাহলে কেউ বলতে পারবে না যে ওই ব্যাঙটাই মেরেছে।’ তিনি ‘অপারেশন ইনফ্লেশন’ নামের একটি উদ্যোগের সহ-প্রতিষ্ঠাতা। প্রতিষ্ঠানটি শহরের প্রতিবাদকারীদের বিনা মূল্যে ফোলানো পোশাক সরবরাহ করছে।
ব্রাউন এই আইডিয়ার কৃতিত্ব দেন টডকে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, টডের সঙ্গে অন্যরাও নানা প্রাণীর পোশাক পরে যোগ দিতে শুরু করলেন, তিনি ও আরেকজন মিলে ‘অপারেশন ইনফ্লেশন’ শুরু করেন। যাতে অর্থ জোগাড় করে আরও পোশাক সরবরাহ করা যায়। এই উদ্যোগে কত টাকা উঠেছে তা জানাননি তিনি। তবে বলেছেন এখন পর্যন্ত প্রায় ৩০০টি পোশাক সরবরাহ করা হয়েছে। এর মধ্যে ২০০টি ছিল গত সপ্তাহের ‘নো কিংস’ প্রতিবাদে।
এই পোশাকের সরবরাহ পাওয়া কঠিন হয়ে যাচ্ছে, আর দামও বাড়ছে। ব্রাউন বলেন, ‘এর পুঁজিবাদী দিকটা সত্যিই মজার। শুরুতে আমরা শুরু অ্যামাজনে যা পাওয়া যেত তাই কিনতাম। এখন মূল সরবরাহকারীদের সঙ্গে যোগাযোগে আছি। কিন্তু সংগত কারণেই তাদের নাম বলব না।’
আজ থেকে প্রায় এক দশক আগে এমন সবুজ ব্যাঙ কিন্তু অন্য অর্থ বহন করত। ২০১৬ সালে ‘পেপে দ্য ফ্রগ’ ছিল ঘৃণার প্রতীক। মূলত এই ব্যঙ্গাত্মক চরিত্রটি তৈরি করেছিলেন কমিক শিল্পী ম্যাট কুরি। কিন্তু তখন তা ডানপন্থী শক্তিগুলোর হাতে পড়ে যায়। তারা ‘হিটলার পেপে’, ‘কু ক্লাক্স ক্যান পেপে’-এর মত মিম তৈরি করতে থাকে। চরিত্রটি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করেছিলেন ফুরি। কিন্তু তা প্রায় হারিয়েই গিয়েছিল তখন। এর কাহিনি আপনারা দেখতে পাবেন, ডকুমেন্টারি ‘ফিলস গুড ম্যান’-এ।
কিন্তু আসলেই কি সম্পূর্ণ হারিয়ে গিয়েছিল? দেখা যায়, পরে ২০১৯ সালে হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনে ‘পেপে দ্য ফ্রগ’ হয়ে ওঠে সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের প্রতীক। আমেরিকানদের কাছে বিষয়টি বিভ্রান্তিকর লাগলেও, হংকংয়ের আন্দোলনকারীদের কাছে পেপে কোনো ঘৃণার প্রতীক ছিল না।
এরপর থেকে পেপে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হারিয়ে যায়, যদিও ফোরামগুলোতে রয়ে গিয়েছিল। আর যখন পোর্টল্যান্ডের প্রতিবাদ আবার শিরোনামে এলো, তখন ব্যাঙেরাই যেন এক নতুন অর্থ হিসেবে হাজির হলো আমাদের সামনে। গত সপ্তাহে ব্লুস্কাইতে ছড়িয়ে পড়ে এক ছবি। যেখানে ফোলানো ব্যাঙ পেপের মুখে ঘুষি মারছে।
তখন ব্যাঙের পোশাক আরও ছড়িয়ে পড়ে। লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে শুরু করে নর্থ ক্যারোলিনার শার্লট পর্যন্ত। ওয়াশিংটন পোস্ট এবং ইউএসএ টুডেসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম বিশ্লেষণমূলক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। কেন এত মানুষ শুধু প্ল্যাকার্ড নয়, পোশাক নিয়েও রাস্তায় নেমেছে। তাঁদের মতে, তাঁরা কেউ আর ভয় পাচ্ছে না।
গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের নবম সার্কিট আপিল আদালত পোর্টল্যান্ড ট্রাম্পের ন্যাশনাল গার্ড পাঠানোর ওপর থাকা নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়। ভোট হয় ২-১ অনুপাতে। বিরোধী বিচারক সুসান গ্রাবার রায় দেন ব্যাঙদের পক্ষে। তিনি লিখেছেন, ‘যেহেতু পোর্টল্যান্ডের প্রতিবাদকারীদের মুরগির পোশাক, ফোলানো ব্যাঙের সাজ কিংবা কোনো পোশাক না পরে প্রতিবাদ করার প্রবণতা সুপরিচিত, তাই সরকার যখন শহরটিকে যুদ্ধক্ষেত্র বলে অ্যাখ্যা দেয়, সেই ব্যাখ্যা গ্রহণ করা হাস্যকর ছাড়া কিছুই নয়।’
তবে পোর্টল্যান্ড ও ওরেগন রাজ্য এখন সেই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছে।
তথ্যসূত্র: দ্য উইয়ার্ড, সিবিসি

ওয়ালডো হলো একটি কাল্পনিক চরিত্র। লাল-সাদা ডোরাকাটা টি-শার্ট, নীল প্যান্ট, গোল চশমা আর লাল টুপি পরে থাকে সে। প্রায় সবসময়ই কোথাও না কোথাও ঘুরে বেড়ায়—সমুদ্র সৈকত, জঙ্গল, শহর, মেলা এমনকি ইতিহাসের নানা যুগেও। বইয়ে ভিড়ের মধ্যে এই ওয়ালডোকে খুঁজে বের করতে হয়। তেমনভাবেই যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে ট্রাম্পবিরোধী প্রতিবাদে ভিড়ের মধ্যে ফোলানো ব্যাঙের পোশাক পরা মানুষদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে। যেন তাঁরা নতুন ওয়ালডো।
১৮ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে প্রায় ৭০ লাখ মানুষ ‘নো কিংস’ শিরোনামের প্রতিবাদে অংশ নেয়। তাঁদের অনেকেই হাজির হয়েছিলেন ফোলানো ব্যাঙের পোশাক পরে। এই চরিত্রগুলোকে ভিড়ের মধ্যে খুব সহজেই চেনা যাচ্ছিল। তাঁদের অনুপ্রেরণার উৎসও পরিষ্কার।
ওরেগনের পোর্টল্যান্ডে অভিবাসন ও শুল্ক বিভাগের (আইসিই) কার্যালয়ের বাইরে কিছু প্রতিবাদকারীর হাতে ‘ফ্রগস টুগেদার স্ট্রং’ লেখা পোস্টার দেখা গিয়েছিল। সেই ছবিটি ভাইরাল হয়। আর মিমটি ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
গত সপ্তাহের পর থেকেই টিকটক, ইন্সটাগ্রাম, ব্লুস্কাইসহ নানা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভরে গেছে ফোলানো ব্যাঙের ছবি ও ভিডিওতে। বিভিন্ন দোকানেও দেদারসে বিক্রি হচ্ছে ‘পোর্টল্যান্ড ফ্রগ প্রটেস্ট’ স্টিকার। সেগুলোর ওপরে লেখা ‘রেসিস্ট’।
আজকাল বেশিরভাগ মানুষই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয়। তাঁরা ভালো লাগা, মন্দ লাগা সবই পোস্ট করেন। ফলে প্রতিবাদ বা রাজনৈতিক নাট্যরূপ ভাইরাল হওয়াও অপ্রত্যাশিত কিছু নয়। এমনকি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও শনিবারের ঘটনার জবাবে একটি এআই-নির্মিত ভিডিও শেয়ার করেছেন। যেখানে দেখা যায়, তিনি বিমানে বসে মার্কিন প্রতিবাদকারীদের ওপর ‘মল’ ফেলে দিচ্ছেন। কিন্তু ব্যাঙদের ঘটনাটি কিছুটা ভিন্ন। এর ভেতরে আছে নানা স্তরের অর্থ ও কার্যকারিতা। ‘পেপে’ থেকে শুরু করে ‘পিপার স্প্রে’ পর্যন্ত।
এসব ব্যাপারের প্রথমেই যেটি আসে, তা হচ্ছে নজরদারির প্রশ্ন। এখন ক্রমেই আরও বেশি সচেতন হচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকেরা। তাঁরা যখন প্রতিবাদে নামেন, তখন সরকার ও কর্তৃপক্ষ তাঁদের প্রায় সবাইকে নজরদারির ভেতরে রাখতে চান। তাই কেউ ব্যাঙ বা অন্য কোনো প্রাণীর সাজে থাকলে মুখ চেনা কঠিন হয়ে যায় কর্তৃপক্ষের জন্য। যত বেশি মানুষ ওই সবুজ ফোলানো পোশাক পরে নামছে, তত বেশি অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে তাঁদের ব্যক্তিগত পরিচয়।

দ্বিতীয় দিকটা হলো, অযৌক্তিকতার মাত্রা। ট্রাম্পের মতে, কালো পোশাকে সজ্জিতরা হলেন ‘হিংস্র অরাজকবাদী’। এর সম্পূর্ণ বিপরীতে এক হাস্যরসাত্মক চিত্র তৈরি করছে ব্যাঙের পোশাক পরা প্রতিবাদকারীরা।
গত সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে, ট্রাম্প যখন ওরেগনের পোর্টল্যান্ডে আইসিই কার্যালয়ের সামনে চলমান আন্দোলন ঠেকাতে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করতে চেয়েছিলেন, তখন বলেছিলেন, ‘ওখানে পুরোপুরি অরাজকতা চলছে’। একজন বিচারক পরে সেই মোতায়েন স্থগিত করেন।
২০২০ সালে ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলনের সময়ও ট্রাম্প ফেডারেল বাহিনি পাঠিয়েছিলেন। তখন সেই শহর দেখে মনে হচ্ছিল যেন এক যুদ্ধক্ষেত্র। যদিও বিভিন্ন গণমাধ্যম তখন লিখেছিল, ‘টুইটারে যা দেখা যাচ্ছে, বাস্তবে তা নয়’।
এই মাসের শুরুর দিকে ব্যাঙের পোশাকের প্রথম উদ্ভাবক সেথ টড ‘নিউইউর্ক টাইমস’কে বলেন, ‘আমাদের হিংস্র ও উগ্রবাদী হিসেবে দেখানোর বিপরীত প্রতিচ্ছবি হিসেবেই এই পোশাকের সৃষ্টি।’
ইউটিউব ব্রুকস বলেন ‘কারও ওপর যদি পেপার স্প্রে মারা হয়, তাহলে কেউ বলতে পারবে না যে ওই ব্যাঙটাই মেরেছে।’ তিনি ‘অপারেশন ইনফ্লেশন’ নামের একটি উদ্যোগের সহ-প্রতিষ্ঠাতা। প্রতিষ্ঠানটি শহরের প্রতিবাদকারীদের বিনা মূল্যে ফোলানো পোশাক সরবরাহ করছে।
ব্রাউন এই আইডিয়ার কৃতিত্ব দেন টডকে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, টডের সঙ্গে অন্যরাও নানা প্রাণীর পোশাক পরে যোগ দিতে শুরু করলেন, তিনি ও আরেকজন মিলে ‘অপারেশন ইনফ্লেশন’ শুরু করেন। যাতে অর্থ জোগাড় করে আরও পোশাক সরবরাহ করা যায়। এই উদ্যোগে কত টাকা উঠেছে তা জানাননি তিনি। তবে বলেছেন এখন পর্যন্ত প্রায় ৩০০টি পোশাক সরবরাহ করা হয়েছে। এর মধ্যে ২০০টি ছিল গত সপ্তাহের ‘নো কিংস’ প্রতিবাদে।
এই পোশাকের সরবরাহ পাওয়া কঠিন হয়ে যাচ্ছে, আর দামও বাড়ছে। ব্রাউন বলেন, ‘এর পুঁজিবাদী দিকটা সত্যিই মজার। শুরুতে আমরা শুরু অ্যামাজনে যা পাওয়া যেত তাই কিনতাম। এখন মূল সরবরাহকারীদের সঙ্গে যোগাযোগে আছি। কিন্তু সংগত কারণেই তাদের নাম বলব না।’
আজ থেকে প্রায় এক দশক আগে এমন সবুজ ব্যাঙ কিন্তু অন্য অর্থ বহন করত। ২০১৬ সালে ‘পেপে দ্য ফ্রগ’ ছিল ঘৃণার প্রতীক। মূলত এই ব্যঙ্গাত্মক চরিত্রটি তৈরি করেছিলেন কমিক শিল্পী ম্যাট কুরি। কিন্তু তখন তা ডানপন্থী শক্তিগুলোর হাতে পড়ে যায়। তারা ‘হিটলার পেপে’, ‘কু ক্লাক্স ক্যান পেপে’-এর মত মিম তৈরি করতে থাকে। চরিত্রটি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করেছিলেন ফুরি। কিন্তু তা প্রায় হারিয়েই গিয়েছিল তখন। এর কাহিনি আপনারা দেখতে পাবেন, ডকুমেন্টারি ‘ফিলস গুড ম্যান’-এ।
কিন্তু আসলেই কি সম্পূর্ণ হারিয়ে গিয়েছিল? দেখা যায়, পরে ২০১৯ সালে হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনে ‘পেপে দ্য ফ্রগ’ হয়ে ওঠে সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের প্রতীক। আমেরিকানদের কাছে বিষয়টি বিভ্রান্তিকর লাগলেও, হংকংয়ের আন্দোলনকারীদের কাছে পেপে কোনো ঘৃণার প্রতীক ছিল না।
এরপর থেকে পেপে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হারিয়ে যায়, যদিও ফোরামগুলোতে রয়ে গিয়েছিল। আর যখন পোর্টল্যান্ডের প্রতিবাদ আবার শিরোনামে এলো, তখন ব্যাঙেরাই যেন এক নতুন অর্থ হিসেবে হাজির হলো আমাদের সামনে। গত সপ্তাহে ব্লুস্কাইতে ছড়িয়ে পড়ে এক ছবি। যেখানে ফোলানো ব্যাঙ পেপের মুখে ঘুষি মারছে।
তখন ব্যাঙের পোশাক আরও ছড়িয়ে পড়ে। লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে শুরু করে নর্থ ক্যারোলিনার শার্লট পর্যন্ত। ওয়াশিংটন পোস্ট এবং ইউএসএ টুডেসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম বিশ্লেষণমূলক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। কেন এত মানুষ শুধু প্ল্যাকার্ড নয়, পোশাক নিয়েও রাস্তায় নেমেছে। তাঁদের মতে, তাঁরা কেউ আর ভয় পাচ্ছে না।
গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের নবম সার্কিট আপিল আদালত পোর্টল্যান্ড ট্রাম্পের ন্যাশনাল গার্ড পাঠানোর ওপর থাকা নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়। ভোট হয় ২-১ অনুপাতে। বিরোধী বিচারক সুসান গ্রাবার রায় দেন ব্যাঙদের পক্ষে। তিনি লিখেছেন, ‘যেহেতু পোর্টল্যান্ডের প্রতিবাদকারীদের মুরগির পোশাক, ফোলানো ব্যাঙের সাজ কিংবা কোনো পোশাক না পরে প্রতিবাদ করার প্রবণতা সুপরিচিত, তাই সরকার যখন শহরটিকে যুদ্ধক্ষেত্র বলে অ্যাখ্যা দেয়, সেই ব্যাখ্যা গ্রহণ করা হাস্যকর ছাড়া কিছুই নয়।’
তবে পোর্টল্যান্ড ও ওরেগন রাজ্য এখন সেই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছে।
তথ্যসূত্র: দ্য উইয়ার্ড, সিবিসি
.png)

গতকাল (২৪ অক্টোবর) মুক্তি পেয়েছে কোক স্টুডিও বাংলার তৃতীয় সিজনের সপ্তম গান ‘ক্যাফে’। মহীনের ঘোড়াগুলির সম্পাদিত অ্যালবামের জনপ্রিয় গান ‘আমার প্রিয়া ক্যাফে’-কে এবার নতুনভাবে হাজির করা হয়েছে।
১৮ ঘণ্টা আগে
ছোটবেলা থেকেই শুনে এসেছি, পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ। যদিও কথাটি পরিচ্ছন্নতার সঙ্গে ইসলামের সম্পর্কের গুরুত্ব হিসেবেই শেখানো হয়েছিল। তবে এমন ভাবনা এ অঞ্চলের অন্যান্য ধর্মগুলোর সঙ্গেও সঙ্গতিপূর্ণ। ফলে আমরা সবাই মোটামুটি পরিচ্ছন্নতা নিয়ে ঐতিহাসিকভাবেই সচেতন একটি অঞ্চল হিসেবে পরিচিত।
২ দিন আগে
ভয় পেতে কারও কি ভালো লাগে? কিন্তু হরর সিনেমার ক্ষেত্রে যেন সব হিসাব পাল্টে যায়। ভয় পাই, চমকে উঠি, তবু দেখতেই থাকি। আর সিনেমা শেষ না করে উঠতে পারি না। প্রশ্ন জাগে, ভয় পেলেও কেন আমরা হরর সিনেমা দেখি? কেন হরর সিনেমা আমাদের এত টানে?
৩ দিন আগে
গতকাল মঙ্গলবার চ্যাটজিপিটি অ্যাটলাস নামে নতুন ব্রাউজার উন্মুক্ত করেছে এআই নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওপেনএআই।
৪ দিন আগে