.png)
কোক স্টুডিও বাংলার তৃতীয় মৌসুমের শেষ গান হিসেবে এসেছে জনপ্রিয় সুফিগান ‘মাস্ত কালান্দার’। বছরের পর বছর ধরে ‘মাস্ত কালান্দার’-এর অজস্র সংস্করণ তৈরি হয়েছে। এখানে প্রশ্ন আসতে পারে, কে লিখেছিলেন? কেন লিখেছিলেন? লাল শাহবাজ কালান্দর কে? কীভাবে উপমহাদেশে জনপ্রিয় হয়ে উঠল?

গৌতম কে শুভ

কোক স্টুডিও বাংলার তৃতীয় মৌসুমের শেষ গান হিসেবে এসেছে জনপ্রিয় সুফিগান ‘মাস্ত কালান্দার’। গানটি গেয়েছেন উপমহাদেশের কিংবদন্তি শিল্পী রুনা লায়লা। তাঁর কণ্ঠে এই গান বহু বছর ধরেই ভীষণ জনপ্রিয়। কোক স্টুডিওর এই নতুন সংস্করণে কাওয়ালির আধ্যাত্মিক সুরের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বাংলার লোকজ ভাব ও আধুনিক সংগীতের মিশ্রণ। গানের শুরুতে রাখা হয়েছে মরমি সাধক হাসন রাজার গানের অংশবিশেষ।
বছরের পর বছর ধরে ‘মাস্ত কালান্দার’ গানের অজস্র সংস্করণ তৈরি হয়েছে। কয়েক শতাব্দী ধরে আলাদা আলাদা লিরিকে ও ভঙ্গিতে মানুষ এটি গেয়ে আসছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ছড়িয়েও পড়েছে, আর পুরো উপমহাদেশে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কাওয়ালি থেকে শুরু করে সিনেমার গান, শত শত শিল্পী নিজেদের মতো করে এই গান পরিবেশন করেছেন।
'দমাদম মাস্ত কালান্দার'-এর মূল অংশ ও ভাবের রচয়িতা বলা হয় ফার্সি ও উর্দু ভাষার বিখ্যাত কবি, গায়ক ও সুফি সাধক আমির খসরুকে। তিনি নিজামুদ্দিন আউলিয়ার ঘনিষ্ঠ শিষ্য ছিলেন। তাঁকে কাওয়ালীর জনক বলা হয় অর্থাৎ কাওয়ালি ঘরানা শুরু হয়েছে তাঁর হাত ধরে।

এরপর আমির খসরুর লেখায় পাঞ্জাবের বিখ্যাত সুফি কবি ও দার্শনিক বুল্লেহ শাহ কিছু লাইন যুক্ত করেন। তিনি মূলত পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের সেহওয়ানের বিখ্যাত সুফি সাধক লাল শাহবাজ কালান্দরকে নিয়ে স্তুতিমূলক কথা মূল গানের সঙ্গে যুক্ত করেছিলেন। এসব সংযোজনের ফলে গানটি পুরোপুরি কাওয়ালি হয়ে ওঠে।
অনেক দিন ধরে লাল শাহবাজ কালান্দরের মাজারে আধ্যাত্মিক ‘ধামাল’ নাচের সময় এটি গাওয়া হয়। ধামাল নাচের তালে গাওয়া হওয়ায় স্থানীয়ভাবে অনেকে গানটিকে ‘ধামালের গান’ও বলেন। তবে ধামালের সুর-তাল আসলে কাওয়ালির প্রচলিত ধারা থেকে বেশ আলাদা।
কাওয়ালী হিসেবে বছরের পর বছর ধরে এই গান গাওয়া হলেও নুর জাহান, আশা ভোসলে, রুনা লায়লায় মতো উপমহাদেশের বিখ্যাত শিল্পীরা এটিকে তাঁদের মত করে স্টেজে গেয়েছেন। তবে সবার সংস্করণে কথার কিছু পার্থক্য আছে, রুনা লায়লার ভার্সন, নুসরাতের ভার্সন বা আবিদা পারভীনের ভার্সনে লাইনগুলো সব এক নয়। তবে সবখানেই মূলভাব একই, লাল শাহবাজ কালান্দরের স্তুতি।
গানটি শতাব্দী ধরে বহু পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যেতে যেতে খসরুর অংশ কতটা বর্তমান আছে, তা একেবারে নিশ্চিত নয়। তবে আমরা যে রূপে গানটিকে চিনি, তা আসলে বহু মরমির প্রতি শ্রদ্ধা, লোকসংস্কৃতি আর কাওয়ালি ঐতিহ্যের এক মিলিত প্রকাশ। আর এই গানে ‘ধামাল’ অংশ, সুর আর তার সঙ্গে বসানো কথাগুলো এক নয়, সেটা বোঝা জরুরি।
এটার আবেদন এত বিস্তৃত যে মূল বক্তব্যের বাইরেও সামাজিক-রাজনৈতিকভাবে দূরবর্তী অর্থেও ‘দমাদম মস্ত কালান্দার’ ব্যবহার হয়েছে। যেমন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলি ভুট্টো ১৯৭৩ সালে ‘দমাদম মস্ত কালান্দার’ রাজনৈতিক অস্থিরতা বোঝাতে ব্যবহার করেছিলেন।
লাল শাহবাজ কালান্দরের আসল নাম উসমান মারওয়ান্দি। তিনি ছিলেন ১৩শ শতকের আজকের পাকিস্তানের সেহওয়ান (সিন্ধু প্রদেশ) অঞ্চলের সুফি সাধক। তিনি নিজেকে প্রেম, সহনশীলতা ও মানবতার বার্তা প্রচারে আত্মনিয়োগ করেছিলেন। সেহওয়ানে তাঁর দরগাহ আজও ভক্তদের তীর্থস্থান, যেখানে ধামাল ও কালান্দরি নাচের মাধ্যমে ভক্তি প্রকাশ করা হয়। হাজারো লোক ও ভক্ত তাঁর স্মরণে মিলিত হন, কাওয়ালি ও ধামাল নাচের মাধ্যমে সেখানে মেতে থাকেন।

লাল শাহবাজ কালান্দরের জীবন ও প্রভাব দক্ষিণ এশিয়ার সুফি সংস্কৃতিতে অম্লান, যা বিভিন্ন ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মধ্যে সংহতি ও সহমর্মিতা গড়ে তুলেছে। গবেষকরা মনে করেন এই কাওয়ালীতে ‘ঝুলেলাল’ শব্দটি সুফি প্রেক্ষাপটে লাল শাহবাজ কালান্দরের জন্য ব্যবহৃত হয়েছে।
আবার অনেকে বলেন, এই গানের ‘ঝুলেলাল’ হলো সিন্ধুর উদেরো লাল। তাঁদের মতে, এই গান এক ধরনের সমন্বয়ধর্মীতার প্রতীক। যেখানে উদেরো লাল ও শাহবাজ কালান্দর মিলেমিশে একত্ব হয়ে গেছেন। যদিও দুজনই আলাদা কিন্তু সেখানের লোকবিশ্বাস, গান ও সংস্কৃতিতে তাঁদের পরিচয় প্রায় এক হয়ে গেছে। সিন্ধুর হিন্দু-মুসলিম যৌথ সংস্কৃতি এই মিলনের পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে বলে তাঁরা মনে করেন।
এর কারণ হচ্ছে, ঝুলেলাল হলেন সিন্ধু অঞ্চলের লোকদেবতা এবং নদী–সংরক্ষকের প্রতীক। মূলত তিনি সিন্ধি হিন্দুদের পূজ্য দেবতা, বিশেষত যারা সিন্ধু নদীর তীরে বসবাস করতেন। লোককথা অনুযায়ী, শিশু অবস্থাতেও তিনি অলৌকিক ক্ষমতা দেখাতেন এবং তাঁর দোলনা বা ঝুলা থেকেই অলৌকিক ঘটনা ঘটত। লোকসংস্কৃতিতে ঝুলেলালকে সুরক্ষা, আধ্যাত্মিক শক্তি এবং ধর্মীয় মিলনের প্রতীক হিসেবে মানা হয়।
‘লাল মেরি পাত’ শিরোনামে এই গানের প্রথম রেকর্ড পাওয়া যায় ১৯৫৬ সালের উর্দু সিনেমা ‘জাহরু’-তে। জানা যায় এখানে আমির খসরু-বুল্লেহ শাহের লিরিকের সঙ্গে কয়েকটি লাইন যোগ করেছিলেন সাগর সিদ্দিকী। এরপর আশিক হুসাইনের কম্পোজিশনে গানটি গেয়েছিলেন ইনায়াত হুসাইন, ফজল হুসাইন ও এআর বিসমিল।
একসময় পাকিস্তানের শীর্ষস্থানীয় সুরকার ছিলেন এই আশিক হুসাইন। ডন পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, হুসাইন লাহোরের পুরোনো ভাট্টিগেট এলাকায় হাকিমানের বস্তিতে থাকতেন। তাঁর ঘরে বিদ্যুৎ ছিল না, ঠিকমত খেতেও পেতেন না। ২০১৪ সালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়।

এরপর থেকে এই গানের যত ভার্সন হয়েছে, প্রায় সবখানেই আশিকের কম্পোজিশনের প্যাটার্ন ও ভাবনা ব্যবহার করা হয়েছে, এমনটাই দেখা গেছে। গানের কথায় ভিন্নতা থাকলেও মূল সুর প্রায় একই। মূলত ১৯৬৯ সালে উর্দু সিনেমা ‘ডিলান দে সৌদে’-তে নুর জাহানের গলায় গানটি প্রকাশের পর থেকেই মূলত সবখানে ছড়িয়ে পড়ে। বলা যায় সেটিই এই গানের প্রথম জনপ্রিয় সংস্করণ। এরপর এটি গেয়েছিলেন রুনা লায়লা।
তবে রুনা লায়লার গলায় গানটি একাধিকবার রেকর্ড হয়েছে। প্রথমবার রেকর্ড হয় ১৯৮৩ সালে পাকিস্তান থেকে, অ্যালবামের নাম ‘নন-স্টপ ধামাল-রুনা সিংস শাহবাজ কালান্দার’। প্রকাশিত সেই সিঙ্গেলের কাভারে দেখা যায়, মূল লিরিকের সঙ্গে সেখানেও কিছু লাইন যুক্ত করে লিরিক পরিমার্জন করেছিলেন পুরণম।
এরপর ১৯৮৪ সালে ভারতের কনকর্ড রেকর্ড থেকে বের হয় রুনা লায়লার এলপি ‘দ্য লাভস অফ রুনা লায়লা’। এখানেও গানটি ছিল মূলত আগের বছরের ভার্সনের সঙ্গে মিল রেখে। পরে ভারতের ও পাকিস্তানের আরও কয়েকটি রেকর্ড লেবেল থেকে রুনা লায়লার গলায় এই গান প্রকাশ পায়।

কোক স্টুডিও বাংলার তৃতীয় মৌসুমের শেষ গান হিসেবে এসেছে জনপ্রিয় সুফিগান ‘মাস্ত কালান্দার’। গানটি গেয়েছেন উপমহাদেশের কিংবদন্তি শিল্পী রুনা লায়লা। তাঁর কণ্ঠে এই গান বহু বছর ধরেই ভীষণ জনপ্রিয়। কোক স্টুডিওর এই নতুন সংস্করণে কাওয়ালির আধ্যাত্মিক সুরের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বাংলার লোকজ ভাব ও আধুনিক সংগীতের মিশ্রণ। গানের শুরুতে রাখা হয়েছে মরমি সাধক হাসন রাজার গানের অংশবিশেষ।
বছরের পর বছর ধরে ‘মাস্ত কালান্দার’ গানের অজস্র সংস্করণ তৈরি হয়েছে। কয়েক শতাব্দী ধরে আলাদা আলাদা লিরিকে ও ভঙ্গিতে মানুষ এটি গেয়ে আসছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ছড়িয়েও পড়েছে, আর পুরো উপমহাদেশে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কাওয়ালি থেকে শুরু করে সিনেমার গান, শত শত শিল্পী নিজেদের মতো করে এই গান পরিবেশন করেছেন।
'দমাদম মাস্ত কালান্দার'-এর মূল অংশ ও ভাবের রচয়িতা বলা হয় ফার্সি ও উর্দু ভাষার বিখ্যাত কবি, গায়ক ও সুফি সাধক আমির খসরুকে। তিনি নিজামুদ্দিন আউলিয়ার ঘনিষ্ঠ শিষ্য ছিলেন। তাঁকে কাওয়ালীর জনক বলা হয় অর্থাৎ কাওয়ালি ঘরানা শুরু হয়েছে তাঁর হাত ধরে।

এরপর আমির খসরুর লেখায় পাঞ্জাবের বিখ্যাত সুফি কবি ও দার্শনিক বুল্লেহ শাহ কিছু লাইন যুক্ত করেন। তিনি মূলত পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের সেহওয়ানের বিখ্যাত সুফি সাধক লাল শাহবাজ কালান্দরকে নিয়ে স্তুতিমূলক কথা মূল গানের সঙ্গে যুক্ত করেছিলেন। এসব সংযোজনের ফলে গানটি পুরোপুরি কাওয়ালি হয়ে ওঠে।
অনেক দিন ধরে লাল শাহবাজ কালান্দরের মাজারে আধ্যাত্মিক ‘ধামাল’ নাচের সময় এটি গাওয়া হয়। ধামাল নাচের তালে গাওয়া হওয়ায় স্থানীয়ভাবে অনেকে গানটিকে ‘ধামালের গান’ও বলেন। তবে ধামালের সুর-তাল আসলে কাওয়ালির প্রচলিত ধারা থেকে বেশ আলাদা।
কাওয়ালী হিসেবে বছরের পর বছর ধরে এই গান গাওয়া হলেও নুর জাহান, আশা ভোসলে, রুনা লায়লায় মতো উপমহাদেশের বিখ্যাত শিল্পীরা এটিকে তাঁদের মত করে স্টেজে গেয়েছেন। তবে সবার সংস্করণে কথার কিছু পার্থক্য আছে, রুনা লায়লার ভার্সন, নুসরাতের ভার্সন বা আবিদা পারভীনের ভার্সনে লাইনগুলো সব এক নয়। তবে সবখানেই মূলভাব একই, লাল শাহবাজ কালান্দরের স্তুতি।
গানটি শতাব্দী ধরে বহু পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যেতে যেতে খসরুর অংশ কতটা বর্তমান আছে, তা একেবারে নিশ্চিত নয়। তবে আমরা যে রূপে গানটিকে চিনি, তা আসলে বহু মরমির প্রতি শ্রদ্ধা, লোকসংস্কৃতি আর কাওয়ালি ঐতিহ্যের এক মিলিত প্রকাশ। আর এই গানে ‘ধামাল’ অংশ, সুর আর তার সঙ্গে বসানো কথাগুলো এক নয়, সেটা বোঝা জরুরি।
এটার আবেদন এত বিস্তৃত যে মূল বক্তব্যের বাইরেও সামাজিক-রাজনৈতিকভাবে দূরবর্তী অর্থেও ‘দমাদম মস্ত কালান্দার’ ব্যবহার হয়েছে। যেমন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলি ভুট্টো ১৯৭৩ সালে ‘দমাদম মস্ত কালান্দার’ রাজনৈতিক অস্থিরতা বোঝাতে ব্যবহার করেছিলেন।
লাল শাহবাজ কালান্দরের আসল নাম উসমান মারওয়ান্দি। তিনি ছিলেন ১৩শ শতকের আজকের পাকিস্তানের সেহওয়ান (সিন্ধু প্রদেশ) অঞ্চলের সুফি সাধক। তিনি নিজেকে প্রেম, সহনশীলতা ও মানবতার বার্তা প্রচারে আত্মনিয়োগ করেছিলেন। সেহওয়ানে তাঁর দরগাহ আজও ভক্তদের তীর্থস্থান, যেখানে ধামাল ও কালান্দরি নাচের মাধ্যমে ভক্তি প্রকাশ করা হয়। হাজারো লোক ও ভক্ত তাঁর স্মরণে মিলিত হন, কাওয়ালি ও ধামাল নাচের মাধ্যমে সেখানে মেতে থাকেন।

লাল শাহবাজ কালান্দরের জীবন ও প্রভাব দক্ষিণ এশিয়ার সুফি সংস্কৃতিতে অম্লান, যা বিভিন্ন ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মধ্যে সংহতি ও সহমর্মিতা গড়ে তুলেছে। গবেষকরা মনে করেন এই কাওয়ালীতে ‘ঝুলেলাল’ শব্দটি সুফি প্রেক্ষাপটে লাল শাহবাজ কালান্দরের জন্য ব্যবহৃত হয়েছে।
আবার অনেকে বলেন, এই গানের ‘ঝুলেলাল’ হলো সিন্ধুর উদেরো লাল। তাঁদের মতে, এই গান এক ধরনের সমন্বয়ধর্মীতার প্রতীক। যেখানে উদেরো লাল ও শাহবাজ কালান্দর মিলেমিশে একত্ব হয়ে গেছেন। যদিও দুজনই আলাদা কিন্তু সেখানের লোকবিশ্বাস, গান ও সংস্কৃতিতে তাঁদের পরিচয় প্রায় এক হয়ে গেছে। সিন্ধুর হিন্দু-মুসলিম যৌথ সংস্কৃতি এই মিলনের পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে বলে তাঁরা মনে করেন।
এর কারণ হচ্ছে, ঝুলেলাল হলেন সিন্ধু অঞ্চলের লোকদেবতা এবং নদী–সংরক্ষকের প্রতীক। মূলত তিনি সিন্ধি হিন্দুদের পূজ্য দেবতা, বিশেষত যারা সিন্ধু নদীর তীরে বসবাস করতেন। লোককথা অনুযায়ী, শিশু অবস্থাতেও তিনি অলৌকিক ক্ষমতা দেখাতেন এবং তাঁর দোলনা বা ঝুলা থেকেই অলৌকিক ঘটনা ঘটত। লোকসংস্কৃতিতে ঝুলেলালকে সুরক্ষা, আধ্যাত্মিক শক্তি এবং ধর্মীয় মিলনের প্রতীক হিসেবে মানা হয়।
‘লাল মেরি পাত’ শিরোনামে এই গানের প্রথম রেকর্ড পাওয়া যায় ১৯৫৬ সালের উর্দু সিনেমা ‘জাহরু’-তে। জানা যায় এখানে আমির খসরু-বুল্লেহ শাহের লিরিকের সঙ্গে কয়েকটি লাইন যোগ করেছিলেন সাগর সিদ্দিকী। এরপর আশিক হুসাইনের কম্পোজিশনে গানটি গেয়েছিলেন ইনায়াত হুসাইন, ফজল হুসাইন ও এআর বিসমিল।
একসময় পাকিস্তানের শীর্ষস্থানীয় সুরকার ছিলেন এই আশিক হুসাইন। ডন পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, হুসাইন লাহোরের পুরোনো ভাট্টিগেট এলাকায় হাকিমানের বস্তিতে থাকতেন। তাঁর ঘরে বিদ্যুৎ ছিল না, ঠিকমত খেতেও পেতেন না। ২০১৪ সালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়।

এরপর থেকে এই গানের যত ভার্সন হয়েছে, প্রায় সবখানেই আশিকের কম্পোজিশনের প্যাটার্ন ও ভাবনা ব্যবহার করা হয়েছে, এমনটাই দেখা গেছে। গানের কথায় ভিন্নতা থাকলেও মূল সুর প্রায় একই। মূলত ১৯৬৯ সালে উর্দু সিনেমা ‘ডিলান দে সৌদে’-তে নুর জাহানের গলায় গানটি প্রকাশের পর থেকেই মূলত সবখানে ছড়িয়ে পড়ে। বলা যায় সেটিই এই গানের প্রথম জনপ্রিয় সংস্করণ। এরপর এটি গেয়েছিলেন রুনা লায়লা।
তবে রুনা লায়লার গলায় গানটি একাধিকবার রেকর্ড হয়েছে। প্রথমবার রেকর্ড হয় ১৯৮৩ সালে পাকিস্তান থেকে, অ্যালবামের নাম ‘নন-স্টপ ধামাল-রুনা সিংস শাহবাজ কালান্দার’। প্রকাশিত সেই সিঙ্গেলের কাভারে দেখা যায়, মূল লিরিকের সঙ্গে সেখানেও কিছু লাইন যুক্ত করে লিরিক পরিমার্জন করেছিলেন পুরণম।
এরপর ১৯৮৪ সালে ভারতের কনকর্ড রেকর্ড থেকে বের হয় রুনা লায়লার এলপি ‘দ্য লাভস অফ রুনা লায়লা’। এখানেও গানটি ছিল মূলত আগের বছরের ভার্সনের সঙ্গে মিল রেখে। পরে ভারতের ও পাকিস্তানের আরও কয়েকটি রেকর্ড লেবেল থেকে রুনা লায়লার গলায় এই গান প্রকাশ পায়।
.png)

আজ বিশ্ব টয়লেট দিবস। কিন্তু আজও পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষ এই মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। জাতিসংঘ বলছে, ভবিষ্যতের পৃথিবীতে স্যানিটেশন ব্যবস্থাকে ‘ফিউচার-রেডি’ হতে হবে
৫ ঘণ্টা আগে
জাপানে ‘রেন্ট-এ-গার্লফ্রেন্ড’ নামে বিচিত্র এক সংস্কৃতির উদ্ভব ঘটেছে। এটি জাপানে এতটাই জনপ্রিয় হয়েছে যে ২০১৭ সাল থেকে এই বিষয়বস্তু নিয়ে জনপ্রিয় মাঙ্গা সিরিজও তৈরি হয়েছে। সিরিজগুলো প্রকাশের পর ‘রেন্ট-এ-গার্লফ্রেন্ড’ সংস্কৃতি বিশ্বব্যাপী ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছে।
৭ ঘণ্টা আগে
ক্যালেন্ডারের পাতায় গতকাল ছিল ১৭ নভেম্বর। এক বিশেষ গোষ্ঠীর কাছে এই দিনটি ‘আনফ্রেন্ড ডে’। আপনি কতজনকে আনফ্রেন্ড বা মোস্তফা জব্বারের ভাষায় ‘অবন্ধু’ করলেন?
১ দিন আগে
মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ছিলেন বাংলাদেশের রাজনীতির এক কিংবদন্তিতুল্য পুরুষ। তাঁর সংগ্রামী ও আপোষহীন নেতৃত্ব অগণিত মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছিল। ‘মজলুম জননেতা’ হিসেবে পরিচিত এই নেতার রাজনৈতিক দর্শন ও আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে অনেকেই রাজনীতিতে এসেছিলেন।
২ দিন আগে