প্রেক্ষাপট ও তাৎক্ষণিক কারণ আলাদা হলেও বিশ্লেষকদের মতে দক্ষিণ এশিয়ার জেন জিদের আন্দোলনগুলোর মধ্যে একটি অভিন্ন সুত্র রয়েছে। তা হলো— আর্থ-সামাজিক বৈষম্য থেকে জন্ম নেওয়া হতাশা এবং শাসকদের সঙ্গে প্রজন্মগত পার্থক্য। দক্ষিণ এশিয়ার ঘন জনসংখ্যা (১৯০ কোটিরও বেশি), তরুণদের উচ্চ সংখ্যা এবং ডিজিটাল রুপান্তর এই অঞ্চলে জেন জি বিপ্লবের উর্বর ভূমি তৈরি করছে। পাকিস্তানের তরুণদের বেকারত্ব বা ভারতের বৈষম্যও নতুন আন্দোলন উস্কে দিতে পারে।
মাহবুবুল আলম তারেক
দক্ষিণ এশিয়ায় তরুণদের নেতৃত্বে একের পর এক আন্দোলন দেখা যাচ্ছে। এসব আন্দোলন প্রতিষ্ঠিত সরকারকেও ক্ষমতাচ্যুত করেছে। ফলে প্রশ্ন উঠছে— বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল এই অঞ্চল কি জেনারেশন জেড তথা জেন জি (১৯৯৭–২০১২ সালের মধ্যে জন্ম নেওয়া প্রজন্ম) বিপ্লবের কেন্দ্র হয়ে উঠছে?
এই আন্দোলনের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো ডিজিটাল মাধ্যমে সংগঠিত হওয়া। এ ছাড়া তরুণরা অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার দাবি করছে। তারা দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি প্রত্যাখ্যান করছে। যেখানে প্রচলিত আন্দোলন ব্যর্থ হয়েছে, সেখানে তারা সফল হচ্ছে। এর সর্বশেষ উদাহরণ নেপাল। গত সপ্তাহে দেশটির প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি পদত্যাগে বাধ্য হন।
এর আগে একই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল শ্রীলঙ্কায় (২০২২) এবং বাংলাদেশে (২০২৪)। শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক সহিংসতা ও দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা বিষয়ে বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক পল স্ট্যানিল্যান্ড বলেন, এসব ঘটনা এ অঞ্চলে ‘অস্থিতিশীলতার নতুন রাজনীতি’র ইঙ্গিত দিচ্ছে।
স্ট্যানিল্যান্ডের মতে, এটি দক্ষিণ এশিয়ার জন্য এক নাটকীয় পরিবর্তন। এ অঞ্চলে আগেও বহু বড় রাজনৈতিক আন্দোলন হয়েছে, কিন্তু সরকার পতন খুব কমই ঘটেছে। আগে সাধারণত সামরিক অভ্যুত্থান বা ভিন্ন ধরনের সংকট ছিল রাজনৈতিক পরিবর্তনের কারণ।
শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ ও নেপালের আন্দোলনগুলো যার যার নিজস্ব ইতিহাস ও ঘটনার ফল। তবুও বিশ্লেষকদের মতে, এ দেশগুলোর ক্ষোভের পটভূমিতে মৌলিক কিছু মিল রয়েছে। আর প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ মানতেও রাজি নয় এ প্রজন্ম। তাছাড়া তারা একে অপরের কাছ থেকে কৌশলও শিখছে।
এ মাসের শুরুতে নেপালে অস্থিরতা শুরু হয়। সরকার টিকটক ও ইনস্টাগ্রামের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধ করে। যুক্তি দেওয়া হয়, ভুয়া খবর ও সাইবার অপরাধ ঠেকাতেই এ পদক্ষেপ। কিন্তু এতে জমে থাকা ক্ষোভ বিস্ফোরিত হয়। দেশটিতে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি ব্যাপক। সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘#NepoKid’ নামে ভাইরাল ট্রেন্ডে প্রভাবশালী পরিবারগুলোর বিলাসবহুল জীবনযাত্রা প্রকাশ পায়।
অন্যদিকে, তরুণদের বেকারত্বের হার ২০.৮ শতাংশে পৌঁছেছে। দেশটির এক-তৃতীয়াংশ অর্থনীতি রেমিট্যান্স নির্ভর। বার্ষিক গড় আয় মাত্র ১ হাজার ৪০০ ডলার। এ অবস্থায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা তরুণদের আয়ের পথ বন্ধ করে দেয়। একই সঙ্গে তাদের মতপ্রকাশ ও সংগঠিত হওয়ার প্রধান মাধ্যমও অচল হয়ে পড়ে।
৮ সেপ্টেম্বর শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ মিছিল শুরু হয়। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তা উত্তাল রূপ নেয়। হাজারো তরুণ, অনেকে স্কুল ইউনিফর্ম পরা অবস্থায়, কাঠমান্ডুর পার্লামেন্ট ভবনের দিকে হাঁটা দেয়। নিরাপত্তা বাহিনী টিয়ারগ্যাস ও গুলি ছোড়ে। প্রথম দিনেই অন্তত ১৯ জন নিহত হয়।
এতে ক্ষুব্ধ হয়ে জনতাও রাস্তায় নামে। তারা পার্লামেন্ট ভবন, সুপ্রিম কোর্ট ও রাজনৈতিক নেতাদের বাসভবন পুড়িয়ে দেয়। প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলির বাসভবনেও হামলা হয়। আন্দোলনের দ্বিতীয় দিনেই (৯ সেপ্টেম্বর) অলি পদত্যাগ করেন।
১২ সেপ্টেম্বর সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কিকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী করা হয়। জেনারেশন জেড-এর সমর্থন নিয়ে তিনি দায়িত্ব নেন। ২০২৬ সালের মার্চে নতুন নির্বাচন ঘোষিত হয়। আন্দোলনকারীরা অন্তর্বর্তী সরকারের মন্ত্রীসভায় জেনারেশন জেড-এর প্রতিনিধিত্বও নিশ্চিত করার আহ্বান জানাচ্ছে। এ নিয়ে এখন আলোচনা চলছে।
এর আগে ২০২৪ সালে বাংলাদেশে অবশ্য একটু ভিন্ন চিত্র দেখা যায়। আন্দোলনের সূচনা হয় বৈষম্যমূলক সরকারি চাকরির কোটার বিরুদ্ধে ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। পরে তা স্বৈরাচারবিরোধী ও সরকার পতনের আন্দোলনে রুপ নেয়। দেশজুড়ে লাখ লাখ বেকার তরুণের ক্ষোভ সে আন্দোলনে প্রতিফলিত হয়।
জুনে শুরু হওয়া আন্দোলন পুলিশের দমন-পীড়নের মুখে জুলাইয়ে রক্তাক্ত হয়ে ওঠে। জুলাইয়ের শেষদিকে পরিস্থিতি দ্রুত সরকারবিরোধী গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয়। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। এই অভ্যুত্থানকে আন্তর্জাতিক মহল ‘বিশ্বের প্রথম জেনারেশন জেড বা জেন জি বিপ্লব’বলে আখ্যা দেয়।
বাংলাদেশের আন্দোলনের দুই বছর আগে, শ্রীলঙ্কাতেও বিশাল বিক্ষোভ হয়। ২০২২ সালের জুনে শ্রীলঙ্কায় শুরু হয় ‘আরাগালায়া’ আন্দোলন, সিংহল ভাষায় যার অর্থ ‘সংগ্রাম’। সেখানে প্রতিবাদ ছিল অর্থনৈতিক সংকটের কারণে। দেশ দেউলিয়া হয়ে ঋণ খেলাপি হয়। ২০২২ সালের মার্চে সাধারণ জীবন-যাপনও কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। দিনে ১২ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকতো না। জ্বালানি ও রান্নার গ্যাসের জন্য দীর্ঘ লাইনে দাঁড়াতে হতো। মুদ্রাস্ফীতি ছিল ৫০ শতাংশের বেশি।
এতে তরুণরা ক্ষুব্ধ হয়ে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাক্ষের পদত্যাগ দাবি করে। টানা ১৮ বছর ক্ষমতায় থেকে দুর্নীতির অভিযোগে কলঙ্কিত রাজাপাক্ষে পরিবার অবশেষে ভেঙে পড়ে। ১৩ জুলাই ২০২২ জনতা প্রেসিডেন্টের বাসভবনে প্রবেশ করলে গোতাবায়া দেশ ছাড়তে বাধ্য হন।
প্রতিটি আন্দোলনের তাৎক্ষণিক কারণ আলাদা হলেও মূল সুত্র একই— আর্থ-সামাজিক বৈষম্য থেকে জন্ম নেওয়া হতাশা এবং শাসকদের সঙ্গে প্রজন্মগত পার্থক্য।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া অঞ্চলের ডেপুটি ডিরেক্টর মীনাক্ষি গঙ্গুলির মতে, তিন দেশে জেন জি নেতৃত্বাধীন আন্দোলনগুলোর পটভূমি একই। তা হলো— সামাজিক-অর্থনৈতিক বৈষম্য ও রাজনৈতিক অভিজাতদের দুর্নীতি। তরুণ প্রজন্মের চ্যালেঞ্জগুলো সম্পর্কেও তারা ছিল উদাসীন।
জেনারেশন জেড দুটি মন্দার মধ্যে বড় হয়েছে। ২০০৮-০৯ সালের অর্থনৈতিক মন্দা এবং ২০২০-২১ সালের কোভিড-১৯ মহামারী। মহামারীর সময় লকডাউনের কারণে বাড়িতে বসে থাকার সময় তারা ডিজিটাল প্রযুক্তি এবং অনলাইন যোগাযোগে দক্ষ হয়ে উঠে। ডিজিটাল প্রযুক্তি বিশ্বকে তাদের হাতের মুঠোয় এনে দেয়।
সবকিছুই ঘটছিল এমন সময়, যখন তরুণরা দিন দিন তাদের দাদা-দাদীর বয়সী নেতাদের শাসনে বসবাস করছে। সরকার পতনের সময় নেপালের অলির বয়স ছিলো ৭৩ বছর, বাংলাদেশের হাসিনার ৭৬ বছর এবং শ্রীলঙ্কার রাজাপাক্ষের ৭৪ বছর।
মীনাক্ষি গঙ্গুলি বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ার তরুণরা তাদের রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে কোনো সংযোগ খুঁজে পাচ্ছে না। প্রজন্মগত বৈরিতা বা অসঙ্গতিও খুব বেশি।’ তিনি আরও বলেন, তাদের জীবন এবং দেশের রাজনীতিবিদ ও তাদের সন্তানদের জীবনযাত্রার মধ্যে বিশাল ফারাকও ছিল রাগের বড় উৎস।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পটভূমিতে ইন্দোনেশিয়ায় #NepoKid হ্যাশট্যাগে শুরু হওয়া স্বজনপ্রীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ নেপালেও ছড়িয়ে পড়ে। আর তা থেকেই সরকার পতনের বিক্ষোভ শুরু হয়।
শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পল স্ট্যানিল্যান্ডের মতে, দক্ষিণ এশিয়ার তরুণদের আন্দোলনের সবচেয়ে কমন বিষয় হলো— তারা একটি উন্নত রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ভবিষ্যত কল্পনা করতে পারে এবং যা তারা আশা করে, বাস্তবতার সঙ্গে তার কতটা ফারাক রয়েছে তাও দেখতে পারে।
স্ট্যানিল্যান্ড আল জাজিরাকে বলেন, ‘তাদের শক্তি হলো এই ভবিষ্যতমুখী আকাঙ্ক্ষা ও ক্ষোভ এবং সংযোগের অনুভূতি।’
এই তিনটি দেশে জনসংখ্যার ধরনও অনুরূপ। জনসংখ্যার প্রায় ৫০ শতাংশের বয়স ২৮ বছরের নিচে। তবে মাথাপিছু আয় খুব কম। শিক্ষার হার ৭০ শতাংশের বেশি, যা সচেতনতা দেয়, কিন্তু আর্থিক সুযোগ খুব কম।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, এই আন্দোলনগুলোর সামাজিক-অর্থনৈতিক ভিত্তি এগুলোকে দেশজুড়ে ব্যাপক জনসমর্থন এনে দেয়। যা অতীতের সংঘর্ষের মতো নয়— যেমন সামরিক অভ্যুত্থান বা জাতিগত সহিংসতা। বরং এগুলো ভবিষ্যতমুখী, অন্তর্ভুক্তিমূলক সামাজিক-অর্থনৈতিক দাবি।
স্ট্যানিল্যান্ড আরও বলেন, ‘সরকারগুলো যখন এমন বিক্ষোভের মুখোমুখি হয়, তখন তাদের হাতে খুব কম উপায় থাকে। বিশেষ করে সমাজে বৈষম্য বা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি ধীর থাকলে।’
কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের মাস্টার্স প্রোগ্রামের ফ্যাকাল্টি ডিরেক্টর রুমেলা সেন এই আন্দোলনকে ‘রাজনৈতিক অন্তর্ভুক্তি এবং অর্থনৈতিক ন্যায়ের প্রতি গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষা’ থেকে উদ্ভুত বলে উল্লেখ করেন। তিনি আল জাজিরাকে বলেন, ‘এই দেশগুলোর বিক্ষোভে রাগের ছবি ছাপিয়ে দেখা যায় একটি ‘বৃহৎ গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষা। যার মূল কথা হলো— রাজনৈতিক অন্তর্ভুক্তি, অর্থনৈতিক ন্যায্যতা এবং নির্বাচিত প্রতিনিধিদের জবাবদিহি নিশ্চিত করা।’
বিশ্লেষকরা একমত, এই আন্দোলনগুলো একে অপরকে অনুপ্রাণিত করছে। নেপালের তরুণরা শ্রীলঙ্কার ‘আরাগালায়া’ এবং বাংলাদেশের জুলাই বিপ্লবকে অনুসরণ করেছে।
দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতি বিষয়ক নৃবিজ্ঞানী জীবন শর্মা বর্তমানে কাঠমান্ডুতে গবেষণার জন্য অবস্থান করছেন। তিনি বলেন, এই আন্দোলনগুলো একে অপরের কাছ থেকে শিখেছে। এছাড়া তারা ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইনসহ অন্যান্য দেশের তরুণ নেতৃত্বাধীন আন্দোলন থেকেও অনুপ্রাণিত হয়েছে।
জীবন শর্মা বলেন, ‘নেপালের তরুণরা শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশের আন্দোলনগুলো নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেছে।’ তিনি আরও যোগ করেন, জেনারেশন জেড-এর রাজনৈতিক আন্দোলন হাওয়া থেকে তৈরি হয়নি, বরং এটি দেশীয় রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রতি গভীর হতাশার ফল।
শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পল স্ট্যানিল্যান্ডও এতে একমত। তিনি বলেন, ‘নিশ্চয়ই, এই আন্দোলনগুলো একে অপরকে দেখছে, শিখছে এবং অনুপ্রাণিত হচ্ছে।’
কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রুমেলা সেনও বলেন, এসব আন্দোলনে ব্যবহৃত কৌশল— সোশ্যাল মিডিয়ায় হ্যাশট্যাগ অভিযান ও বিকেন্দ্রীকৃত সংগঠন— ডিজিটাল আন্দোলনের এক নতুন ও উদীয়মান পথ দেখাচ্ছে। এটি নেতা-শূন্য, ভাইরাল এবং দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে সহনশীল।
এখন একমাত্র প্রশ্ন হলো— এই আন্দোলন পরবর্তীতে আবার কোথায় বিস্ফোরিত হয়? বিশ্লেষকরা বলছেন, দক্ষিণ এশিয়ার ঘন জনসংখ্যা (১৯০ কোটিরও বেশি), তরুণদের উচ্চ সংখ্যা এবং ডিজিটাল রুপান্তর এই অঞ্চলে আন্দোলনের জন্য উর্বর ভূমি তৈরি করছে। পাকিস্তানের তরুণদের বেকারত্ব বা ভারতের বৈষম্যও নতুন আন্দোলন উস্কে দিতে পারে।
বিশ্লেষকদের মতে, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো তাদের অভিজাত শাসক শ্রেণির বিশ্বাসঘাতকতায় ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। তাই দেশগুলোর তরুণরা বিদ্রোহ করছে। ডিজিটাল প্রযুক্তি ও একই আকাঙ্ক্ষার মাধ্যমে যুক্ত এই তরুণরা শুধু প্রতিবাদ করছে না; তারা নতুন রাজনৈতিক যুগের রূপরেখা তৈরি করছে।
এক নেপালি জেন জি আন্দোলনকারী যেমনটি ঘোষণা করেছেন, ‘এটি আমাদের বিপ্লব। এবার আমাদের পালা।’
এ আন্দোলন স্থায়ী পরিবর্তন বয়ে আনবে নাকি অস্থিরতায় মিলিয়ে যাবে, তা নির্ভর করছে পরবর্তী পদক্ষেপের ওপর। তবে তরুণদের উল্লাসিত প্রতিবাদের ঢেউ ইতিহাসের যে কোনও সময়ের চেয়ে অনেক বেশি জোরালো।
দক্ষিণ এশিয়ায় তরুণদের নেতৃত্বে একের পর এক আন্দোলন দেখা যাচ্ছে। এসব আন্দোলন প্রতিষ্ঠিত সরকারকেও ক্ষমতাচ্যুত করেছে। ফলে প্রশ্ন উঠছে— বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল এই অঞ্চল কি জেনারেশন জেড তথা জেন জি (১৯৯৭–২০১২ সালের মধ্যে জন্ম নেওয়া প্রজন্ম) বিপ্লবের কেন্দ্র হয়ে উঠছে?
এই আন্দোলনের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো ডিজিটাল মাধ্যমে সংগঠিত হওয়া। এ ছাড়া তরুণরা অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার দাবি করছে। তারা দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি প্রত্যাখ্যান করছে। যেখানে প্রচলিত আন্দোলন ব্যর্থ হয়েছে, সেখানে তারা সফল হচ্ছে। এর সর্বশেষ উদাহরণ নেপাল। গত সপ্তাহে দেশটির প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি পদত্যাগে বাধ্য হন।
এর আগে একই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল শ্রীলঙ্কায় (২০২২) এবং বাংলাদেশে (২০২৪)। শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক সহিংসতা ও দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা বিষয়ে বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক পল স্ট্যানিল্যান্ড বলেন, এসব ঘটনা এ অঞ্চলে ‘অস্থিতিশীলতার নতুন রাজনীতি’র ইঙ্গিত দিচ্ছে।
স্ট্যানিল্যান্ডের মতে, এটি দক্ষিণ এশিয়ার জন্য এক নাটকীয় পরিবর্তন। এ অঞ্চলে আগেও বহু বড় রাজনৈতিক আন্দোলন হয়েছে, কিন্তু সরকার পতন খুব কমই ঘটেছে। আগে সাধারণত সামরিক অভ্যুত্থান বা ভিন্ন ধরনের সংকট ছিল রাজনৈতিক পরিবর্তনের কারণ।
শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ ও নেপালের আন্দোলনগুলো যার যার নিজস্ব ইতিহাস ও ঘটনার ফল। তবুও বিশ্লেষকদের মতে, এ দেশগুলোর ক্ষোভের পটভূমিতে মৌলিক কিছু মিল রয়েছে। আর প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ মানতেও রাজি নয় এ প্রজন্ম। তাছাড়া তারা একে অপরের কাছ থেকে কৌশলও শিখছে।
এ মাসের শুরুতে নেপালে অস্থিরতা শুরু হয়। সরকার টিকটক ও ইনস্টাগ্রামের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধ করে। যুক্তি দেওয়া হয়, ভুয়া খবর ও সাইবার অপরাধ ঠেকাতেই এ পদক্ষেপ। কিন্তু এতে জমে থাকা ক্ষোভ বিস্ফোরিত হয়। দেশটিতে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি ব্যাপক। সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘#NepoKid’ নামে ভাইরাল ট্রেন্ডে প্রভাবশালী পরিবারগুলোর বিলাসবহুল জীবনযাত্রা প্রকাশ পায়।
অন্যদিকে, তরুণদের বেকারত্বের হার ২০.৮ শতাংশে পৌঁছেছে। দেশটির এক-তৃতীয়াংশ অর্থনীতি রেমিট্যান্স নির্ভর। বার্ষিক গড় আয় মাত্র ১ হাজার ৪০০ ডলার। এ অবস্থায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা তরুণদের আয়ের পথ বন্ধ করে দেয়। একই সঙ্গে তাদের মতপ্রকাশ ও সংগঠিত হওয়ার প্রধান মাধ্যমও অচল হয়ে পড়ে।
৮ সেপ্টেম্বর শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ মিছিল শুরু হয়। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তা উত্তাল রূপ নেয়। হাজারো তরুণ, অনেকে স্কুল ইউনিফর্ম পরা অবস্থায়, কাঠমান্ডুর পার্লামেন্ট ভবনের দিকে হাঁটা দেয়। নিরাপত্তা বাহিনী টিয়ারগ্যাস ও গুলি ছোড়ে। প্রথম দিনেই অন্তত ১৯ জন নিহত হয়।
এতে ক্ষুব্ধ হয়ে জনতাও রাস্তায় নামে। তারা পার্লামেন্ট ভবন, সুপ্রিম কোর্ট ও রাজনৈতিক নেতাদের বাসভবন পুড়িয়ে দেয়। প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলির বাসভবনেও হামলা হয়। আন্দোলনের দ্বিতীয় দিনেই (৯ সেপ্টেম্বর) অলি পদত্যাগ করেন।
১২ সেপ্টেম্বর সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কিকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী করা হয়। জেনারেশন জেড-এর সমর্থন নিয়ে তিনি দায়িত্ব নেন। ২০২৬ সালের মার্চে নতুন নির্বাচন ঘোষিত হয়। আন্দোলনকারীরা অন্তর্বর্তী সরকারের মন্ত্রীসভায় জেনারেশন জেড-এর প্রতিনিধিত্বও নিশ্চিত করার আহ্বান জানাচ্ছে। এ নিয়ে এখন আলোচনা চলছে।
এর আগে ২০২৪ সালে বাংলাদেশে অবশ্য একটু ভিন্ন চিত্র দেখা যায়। আন্দোলনের সূচনা হয় বৈষম্যমূলক সরকারি চাকরির কোটার বিরুদ্ধে ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। পরে তা স্বৈরাচারবিরোধী ও সরকার পতনের আন্দোলনে রুপ নেয়। দেশজুড়ে লাখ লাখ বেকার তরুণের ক্ষোভ সে আন্দোলনে প্রতিফলিত হয়।
জুনে শুরু হওয়া আন্দোলন পুলিশের দমন-পীড়নের মুখে জুলাইয়ে রক্তাক্ত হয়ে ওঠে। জুলাইয়ের শেষদিকে পরিস্থিতি দ্রুত সরকারবিরোধী গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয়। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। এই অভ্যুত্থানকে আন্তর্জাতিক মহল ‘বিশ্বের প্রথম জেনারেশন জেড বা জেন জি বিপ্লব’বলে আখ্যা দেয়।
বাংলাদেশের আন্দোলনের দুই বছর আগে, শ্রীলঙ্কাতেও বিশাল বিক্ষোভ হয়। ২০২২ সালের জুনে শ্রীলঙ্কায় শুরু হয় ‘আরাগালায়া’ আন্দোলন, সিংহল ভাষায় যার অর্থ ‘সংগ্রাম’। সেখানে প্রতিবাদ ছিল অর্থনৈতিক সংকটের কারণে। দেশ দেউলিয়া হয়ে ঋণ খেলাপি হয়। ২০২২ সালের মার্চে সাধারণ জীবন-যাপনও কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। দিনে ১২ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকতো না। জ্বালানি ও রান্নার গ্যাসের জন্য দীর্ঘ লাইনে দাঁড়াতে হতো। মুদ্রাস্ফীতি ছিল ৫০ শতাংশের বেশি।
এতে তরুণরা ক্ষুব্ধ হয়ে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাক্ষের পদত্যাগ দাবি করে। টানা ১৮ বছর ক্ষমতায় থেকে দুর্নীতির অভিযোগে কলঙ্কিত রাজাপাক্ষে পরিবার অবশেষে ভেঙে পড়ে। ১৩ জুলাই ২০২২ জনতা প্রেসিডেন্টের বাসভবনে প্রবেশ করলে গোতাবায়া দেশ ছাড়তে বাধ্য হন।
প্রতিটি আন্দোলনের তাৎক্ষণিক কারণ আলাদা হলেও মূল সুত্র একই— আর্থ-সামাজিক বৈষম্য থেকে জন্ম নেওয়া হতাশা এবং শাসকদের সঙ্গে প্রজন্মগত পার্থক্য।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া অঞ্চলের ডেপুটি ডিরেক্টর মীনাক্ষি গঙ্গুলির মতে, তিন দেশে জেন জি নেতৃত্বাধীন আন্দোলনগুলোর পটভূমি একই। তা হলো— সামাজিক-অর্থনৈতিক বৈষম্য ও রাজনৈতিক অভিজাতদের দুর্নীতি। তরুণ প্রজন্মের চ্যালেঞ্জগুলো সম্পর্কেও তারা ছিল উদাসীন।
জেনারেশন জেড দুটি মন্দার মধ্যে বড় হয়েছে। ২০০৮-০৯ সালের অর্থনৈতিক মন্দা এবং ২০২০-২১ সালের কোভিড-১৯ মহামারী। মহামারীর সময় লকডাউনের কারণে বাড়িতে বসে থাকার সময় তারা ডিজিটাল প্রযুক্তি এবং অনলাইন যোগাযোগে দক্ষ হয়ে উঠে। ডিজিটাল প্রযুক্তি বিশ্বকে তাদের হাতের মুঠোয় এনে দেয়।
সবকিছুই ঘটছিল এমন সময়, যখন তরুণরা দিন দিন তাদের দাদা-দাদীর বয়সী নেতাদের শাসনে বসবাস করছে। সরকার পতনের সময় নেপালের অলির বয়স ছিলো ৭৩ বছর, বাংলাদেশের হাসিনার ৭৬ বছর এবং শ্রীলঙ্কার রাজাপাক্ষের ৭৪ বছর।
মীনাক্ষি গঙ্গুলি বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ার তরুণরা তাদের রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে কোনো সংযোগ খুঁজে পাচ্ছে না। প্রজন্মগত বৈরিতা বা অসঙ্গতিও খুব বেশি।’ তিনি আরও বলেন, তাদের জীবন এবং দেশের রাজনীতিবিদ ও তাদের সন্তানদের জীবনযাত্রার মধ্যে বিশাল ফারাকও ছিল রাগের বড় উৎস।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পটভূমিতে ইন্দোনেশিয়ায় #NepoKid হ্যাশট্যাগে শুরু হওয়া স্বজনপ্রীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ নেপালেও ছড়িয়ে পড়ে। আর তা থেকেই সরকার পতনের বিক্ষোভ শুরু হয়।
শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পল স্ট্যানিল্যান্ডের মতে, দক্ষিণ এশিয়ার তরুণদের আন্দোলনের সবচেয়ে কমন বিষয় হলো— তারা একটি উন্নত রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ভবিষ্যত কল্পনা করতে পারে এবং যা তারা আশা করে, বাস্তবতার সঙ্গে তার কতটা ফারাক রয়েছে তাও দেখতে পারে।
স্ট্যানিল্যান্ড আল জাজিরাকে বলেন, ‘তাদের শক্তি হলো এই ভবিষ্যতমুখী আকাঙ্ক্ষা ও ক্ষোভ এবং সংযোগের অনুভূতি।’
এই তিনটি দেশে জনসংখ্যার ধরনও অনুরূপ। জনসংখ্যার প্রায় ৫০ শতাংশের বয়স ২৮ বছরের নিচে। তবে মাথাপিছু আয় খুব কম। শিক্ষার হার ৭০ শতাংশের বেশি, যা সচেতনতা দেয়, কিন্তু আর্থিক সুযোগ খুব কম।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, এই আন্দোলনগুলোর সামাজিক-অর্থনৈতিক ভিত্তি এগুলোকে দেশজুড়ে ব্যাপক জনসমর্থন এনে দেয়। যা অতীতের সংঘর্ষের মতো নয়— যেমন সামরিক অভ্যুত্থান বা জাতিগত সহিংসতা। বরং এগুলো ভবিষ্যতমুখী, অন্তর্ভুক্তিমূলক সামাজিক-অর্থনৈতিক দাবি।
স্ট্যানিল্যান্ড আরও বলেন, ‘সরকারগুলো যখন এমন বিক্ষোভের মুখোমুখি হয়, তখন তাদের হাতে খুব কম উপায় থাকে। বিশেষ করে সমাজে বৈষম্য বা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি ধীর থাকলে।’
কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের মাস্টার্স প্রোগ্রামের ফ্যাকাল্টি ডিরেক্টর রুমেলা সেন এই আন্দোলনকে ‘রাজনৈতিক অন্তর্ভুক্তি এবং অর্থনৈতিক ন্যায়ের প্রতি গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষা’ থেকে উদ্ভুত বলে উল্লেখ করেন। তিনি আল জাজিরাকে বলেন, ‘এই দেশগুলোর বিক্ষোভে রাগের ছবি ছাপিয়ে দেখা যায় একটি ‘বৃহৎ গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষা। যার মূল কথা হলো— রাজনৈতিক অন্তর্ভুক্তি, অর্থনৈতিক ন্যায্যতা এবং নির্বাচিত প্রতিনিধিদের জবাবদিহি নিশ্চিত করা।’
বিশ্লেষকরা একমত, এই আন্দোলনগুলো একে অপরকে অনুপ্রাণিত করছে। নেপালের তরুণরা শ্রীলঙ্কার ‘আরাগালায়া’ এবং বাংলাদেশের জুলাই বিপ্লবকে অনুসরণ করেছে।
দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতি বিষয়ক নৃবিজ্ঞানী জীবন শর্মা বর্তমানে কাঠমান্ডুতে গবেষণার জন্য অবস্থান করছেন। তিনি বলেন, এই আন্দোলনগুলো একে অপরের কাছ থেকে শিখেছে। এছাড়া তারা ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইনসহ অন্যান্য দেশের তরুণ নেতৃত্বাধীন আন্দোলন থেকেও অনুপ্রাণিত হয়েছে।
জীবন শর্মা বলেন, ‘নেপালের তরুণরা শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশের আন্দোলনগুলো নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেছে।’ তিনি আরও যোগ করেন, জেনারেশন জেড-এর রাজনৈতিক আন্দোলন হাওয়া থেকে তৈরি হয়নি, বরং এটি দেশীয় রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রতি গভীর হতাশার ফল।
শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পল স্ট্যানিল্যান্ডও এতে একমত। তিনি বলেন, ‘নিশ্চয়ই, এই আন্দোলনগুলো একে অপরকে দেখছে, শিখছে এবং অনুপ্রাণিত হচ্ছে।’
কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রুমেলা সেনও বলেন, এসব আন্দোলনে ব্যবহৃত কৌশল— সোশ্যাল মিডিয়ায় হ্যাশট্যাগ অভিযান ও বিকেন্দ্রীকৃত সংগঠন— ডিজিটাল আন্দোলনের এক নতুন ও উদীয়মান পথ দেখাচ্ছে। এটি নেতা-শূন্য, ভাইরাল এবং দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে সহনশীল।
এখন একমাত্র প্রশ্ন হলো— এই আন্দোলন পরবর্তীতে আবার কোথায় বিস্ফোরিত হয়? বিশ্লেষকরা বলছেন, দক্ষিণ এশিয়ার ঘন জনসংখ্যা (১৯০ কোটিরও বেশি), তরুণদের উচ্চ সংখ্যা এবং ডিজিটাল রুপান্তর এই অঞ্চলে আন্দোলনের জন্য উর্বর ভূমি তৈরি করছে। পাকিস্তানের তরুণদের বেকারত্ব বা ভারতের বৈষম্যও নতুন আন্দোলন উস্কে দিতে পারে।
বিশ্লেষকদের মতে, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো তাদের অভিজাত শাসক শ্রেণির বিশ্বাসঘাতকতায় ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। তাই দেশগুলোর তরুণরা বিদ্রোহ করছে। ডিজিটাল প্রযুক্তি ও একই আকাঙ্ক্ষার মাধ্যমে যুক্ত এই তরুণরা শুধু প্রতিবাদ করছে না; তারা নতুন রাজনৈতিক যুগের রূপরেখা তৈরি করছে।
এক নেপালি জেন জি আন্দোলনকারী যেমনটি ঘোষণা করেছেন, ‘এটি আমাদের বিপ্লব। এবার আমাদের পালা।’
এ আন্দোলন স্থায়ী পরিবর্তন বয়ে আনবে নাকি অস্থিরতায় মিলিয়ে যাবে, তা নির্ভর করছে পরবর্তী পদক্ষেপের ওপর। তবে তরুণদের উল্লাসিত প্রতিবাদের ঢেউ ইতিহাসের যে কোনও সময়ের চেয়ে অনেক বেশি জোরালো।
ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিতর্কের পর সুপ্রিম কোর্টের সাবেক প্রধান বিচারপাতি সুশিলা কার্কি-কে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। বিতর্কের সময় বিক্ষোভের নেতাদের কঠিন কঠিন প্রশ্ন করা হয় এবং সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী প্রার্থীদের সঙ্গে রিয়েল টাইমে যোগাযোগও করা হয়।
১ দিন আগেভোটে প্রস্তাবের পক্ষে ১৪২টি দেশ সমর্থন দেয়। ১০টি দেশ বিরোধিতা করে। ১২টি দেশ ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকে। প্রস্তাবে বলা হয়, হামাসমুক্ত একটি স্বাধীন ও কার্যকর ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন করতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে হামাসের নিরস্ত্রীকরণ, ক্ষমতা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের হাতে হস্তান্তর এবং ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের
১ দিন আগেপ্রতিদিনই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিক্ষোভের ডাক ছড়িয়ে পড়ছে। শিক্ষার্থীরা শুরু থেকেই জনসাধারণের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য ব্যবহার করছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিভিন্ন গ্রুপ। সেখান থেকেই মানুষকে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন তাঁরা। বাংলাদেশের আন্দোলনেও আমরা দেখেছি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ভূমিকা।
২ দিন আগেদক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের বলকান উপদ্বীপের উত্তর-পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত একটি রাষ্ট্র আলবেনিয়ার। দেশটির প্রধানমন্ত্রী এদি রামা সম্প্রতি তাঁর মন্ত্রিসভায় মন্ত্রী হিসেবে যুক্ত করেছেন ‘ডায়েলা’ নামে একজনকে। স্বাভাবিকভাবে এই নাম ঘোষণা খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার কথা নয়। তবে বিষয়টি খুব সহজভাবে নেওয়ারও উপায় নেই,
২ দিন আগে