চব্বিশের কোটা আন্দোলনে অনেকের মতো যোগ দিয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু মুজাহিদ আকাশ। ৫ আগস্ট যখন হাসিনা পতনের এক দফা দাবিতে উত্তাল দেশবাসী ঢাকায় জমায়েত করছিলেন, সেদিন সকালবেলায় সবার মতো বেরিয়েছিলেন আকাশ। কিন্তু তাঁকে মাঝরাস্তায় মারধর করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তাঁকে।
ফিরে দেখা ১৯ জুলাই
গত বছরের ১৯ জুলাইয়ের রিকশাচালক মফিজ উদ্দিনের স্মৃতি এখনো দগদগে, ‘ধানমন্ডি থেকে সেদিন দুইজন গুলি খাওয়া ছাত্রকে হাসপাতালে পৌঁছে দিছিলাম। তাদের মুখের দিকে তাকানো যাইতেছিল না… কেমন যে একটা দিন ছিল!’ চার বছর ধরে ধানমন্ডি-মোহম্মদপুর এলাকায় রিকশা চালানো ৩৯ বছর বয়সী মফিজ উদ্দিন এর বেশি আর কিছুই বললেন না।
পথে মোস্তফাপুর এলাকায় পুলিশ প্রথমে তাদের বহর থামিয়ে বলে, ‘সভাস্থলে সমস্যা রয়েছে, ক্লিয়ারেন্স পাচ্ছি না।’ এনসিপি নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ পুলিশকে জবাব দেন, ‘এখন না গেলে বার্তা যাবে, আমরা ভয় পেয়েছি। যা হবে রাস্তায় দেখা যাবে।’
১৪ জুলাই, শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলন
ওদিকে শাহবাগ মোড়ে তখন একদল পুলিশ সতর্ক পাহারায়। কাউকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। এমনকি শিক্ষার্থীদেরও না। কেন যেতে দেওয়া হচ্ছে না, জিজ্ঞেস করতেই এক পুলিশসদস্য বললেন, ‘যায়েন না তো ভাই, ভিতরে গ্যাঞ্জাম।’
শহুরে সংস্কৃতিতে জেন-জি পরিচয়টি জনপ্রিয় হয়ে উঠলেও তা সামান্যই তুলে ধরে মূলধারার বাইরে থাকা অজস্র তরুণের প্রতিদিনের বাস্তবতা।
২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থান প্রমাণ করেছে: বাংলাদেশের মানুষ সাময়িকভাবে দমন-পীড়ন সহ্য করতে পারলেও, তাদের মর্যাদা ও ভবিষ্যতের উপর আঘাত এলে তারা ঐক্যবদ্ধ হতে জানে। চাকরির কোটা বাতিলের দাবিতে শুরু হওয়া একটি আন্দোলন একটি জাতির মুক্তির সংগ্রামে যেভাবে পরিণত হয়েছিল।
আজ ৫ জুলাই। গত বছর এ সময় কোটা সংস্কার আন্দোলন ধীরে ধীরে তীব্র হচ্ছিল। ৪ জুলাই কোটা নিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের শুনানি হয়।
কোটাপ্রথার বিরুদ্ধে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে জুলাই অভ্যুত্থানের শুরু হয়। সারাদেশে অনেক নিরীহ আন্দোলনকারীদের নির্বিচারে হত্যা করে এই আন্দোলন দমনের চেষ্টা চালানো হয়। দেশের সাধারণ মানুষ মৃত্যুভয় উপেক্ষা করে রাজপথে আন্দোলনে সরকারের পতন হয়।
এই পৃথিবীর বিদ্রোহের বিরানভূমিতে জুলাই যেন অভ্যুত্থানের অনন্ত রূপক। রোমান সাম্রাজ্যে স্পার্টাকাসের দাস বিদ্রোহ থেকে শুরু করে ঝাড়খণ্ডের সাঁওতাল বিদ্রোহ এবং এর মধ্যবর্তী সময়ে দুনিয়ায় দুঃশাসনের বিরুদ্ধে যেসব স্ফুলিঙ্গ নিজেরাই ছড়িয়ে দিয়েছিল দাবানল, তার সবগুলোই একেকটা অনিবার্য জুলাই।
জুলাই আন্দোলনে শেখ হাসিনার কার্টুন এঁকে আলোচিত হয়েছিলেন যিনি। জুলাই আন্দোলনে শেখ হাসিনার কার্টুন এঁকে আলোচিত হয়েছিলেন জাহিদ জামিল। 'এই জানোয়ারকে হটাইতে হবে' শিরোনামে এই কার্টুনটি কেন ও কীভাবে আঁকা হল, ঢাকা স্ট্রিমে কার্টুনিস্ট এর মুখেই শুনুন সেই গল্প।
২০২৪ সালের ৫ জুন এক রায় দেন হাইকোর্ট। সেই রায়ে ২০১৮ সালে সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের সিদ্ধান্তকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়। সেইসাথে, পূর্বের মুক্তিযোদ্ধা কোটা ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দেওয়া হয়।
এনসিপির মাসব্যাপী পদযাত্রা
নাহিদ ইসলাম বলেন, যারা জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হামলা করেছিল, সেই ফ্যাসিস্টরা এখনও ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। গত ১৬ বছর শেখ হাসিনাসহ তার দোসররা দেশের মানুষের ওপর অন্যায়-অত্যাচার করেছে, তাদের বিচার আমরা অবশ্যই নিশ্চিত করব।