leadT1ad

নেপালের নতুন প্রধানমন্ত্রীকে নিয়োগ পদ্ধতি কি ‘গণতন্ত্রের ভবিষ্যত’

নেপালে হয়ে গেল ডিজিটাল গণতন্ত্রের এক অভূতপূর্ব পরীক্ষা। দেশটির তরুণরা তাদের অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করেছে এমন এক পদ্ধতিতে যা বিশ্বের কোনো নির্বাচনী গণতন্ত্রে আগে দেখা যায়নি। কাজটি করা হয় ডিসকর্ড-এর মাধ্যমে। ডিসকর্ড যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি ফ্রি মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম যা মূলত অনলাইন গেমাররা ব্যবহার করে। বিশ্লেষকদের মতে, এই পদ্ধতি রাজনীতিবিদদের কার্যক্রমের তুলনায় বেশি স্বচ্ছ। তবে এর কিছু ঝুঁকি রয়েছে।

স্ট্রিম ডেস্ক
ঢাকা
নেপালে ডিজিটাল গণতন্ত্রের এক অভূতপূর্ব পরীক্ষা। স্ট্রিম গ্রাফিক

তরুণ প্রজন্মের তীব্র বিক্ষোভে মাত্র দুদিনের মধ্যে নেপালের দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারের পতন ঘটেছিল গত সপ্তাহের মঙ্গলবার। এরপর বৃহস্পতিবার লাখ লাখ নেপালি তরুণ অনলাইনে উত্তপ্ত বিতর্কে জড়ো হয় দেশের পরবর্তী নেতা নির্বাচনে। তারা সর্বসম্মতিক্রমে এমন একজন নেতাকে নির্বাচিত করতে চেয়েছিল, যিনি দেশকে অশান্তি থেকে বের করে আনবেন এবং দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি দূর করার পদক্ষেপ নেবেন। কিন্তু তারা সেটি করতে চায় সাধারণ নির্বাচনের মতো ভোটাভুটি করে নয়।

ফলে, তারা নেপালের পরবর্তী নেতা নির্বাচন করলো এমন এক পদ্ধতিতে যা কোনো নির্বাচনী গণতন্ত্রে আগে দেখা যায়নি। কাজটি করা হয় ডিসকর্ড-এর মাধ্যমে। ডিসকর্ড যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি ফ্রি মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম যা মূলত অনলাইন গেমাররা ব্যবহার করেন। অনলাইন এই সভার আয়োজন করেছিল হামি নেপাল নামে জেন জিদের একটি গ্রুপ, যার সদস্য সংখ্যা ১ লাখ ৬০ হাজারের বেশি।

ডিসকর্ডে হামি নেপালের ‘ইয়ুথ এগেইনস্ট করাপশন’ নামে একটি চ্যানেল আছে। সেখানেই দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে ওই তীব্র বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়। এতে ১০ হাজারের বেশি মানুষ অংশগ্রহণ করে, তাদের মধ্যে অনেক নেপালি প্রবাসীও ছিল। আরও অনেক মানুষ লগইন করতে চেয়েও ব্যর্থ হলে, এর একটি মিরর লাইভস্ট্রিম ইউটিউবেও প্রচারিত হয়। এতে আরও প্রায় ৬ হাজার মানুষ বিতর্কটি দেখতে পায়।

ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিতর্কের পর সুপ্রিম কোর্টের সাবেক প্রধান বিচারপাতি সুশিলা কার্কি-কে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। বিতর্কের সময় বিক্ষোভের নেতাদের কঠিন কঠিন প্রশ্ন করা হয় এবং সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী প্রার্থীদের সঙ্গে রিয়েল টাইমে যোগাযোগও করা হয়। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, নেপালের পরিবর্তনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে মাত্র। প্রতিবাদকারীরা যে পদ্ধতিতে দেশের পরবর্তী নেতাকে নির্বাচিত করেছেন, তা দেখায় যে গণতন্ত্রে একটি নতুন ও বিশৃঙ্খল পরীক্ষামূলক প্রক্রিয়া চলমান, যেখানে সুযোগের পাশাপাশি ঝুঁকিও রয়েছে।

গত ৯ সেপ্টেম্বর নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে বিক্ষোভকারীদের পুড়িয়ে দেওয়া একটি সরকারি ভবন। ছবি: সংগৃহীত
গত ৯ সেপ্টেম্বর নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে বিক্ষোভকারীদের পুড়িয়ে দেওয়া একটি সরকারি ভবন। ছবি: সংগৃহীত

‘সবাই মিলে সমাধান খোঁজার চেষ্টা’

ডিসকর্ডে হওয়া এই বিতর্ক ছিল পুরোনো রাজনীতির গোপনে নেতা নির্বাচনের প্রথার বিপরীতে এক বিপ্লবী পদক্ষেপ। সমর্থকদের মতে, এটি অনেক বেশি স্বচ্ছতা দেখিয়েছে।

ডিসকর্ড এমন একটি প্ল্যাটফর্ম যেখানে ব্যবহারকারীরা টেক্সট, ভয়েস কল, ভিডিও কল এবং বিভিন্ন মিডিয়া শেয়ারিংয়ের মাধ্যমে যুক্ত হতে পারেন। সরাসরি বার্তার মাধ্যমে বা সার্ভার নামে পরিচিত কমিউনিটি স্পেসেও যোগাযোগ করা যায়। চলতি মাসের শুরুতে সরকার এই প্ল্যাটফর্মটিকে নিষিদ্ধ করে। একইসঙ্গে ইনস্টাগ্রাম, টুইটার ও ইউটিউবসহ আরও দুই ডজন জনপ্রিয় অ্যাপও নিষিদ্ধ হয়।

বিক্ষোভকারীদের ভাষ্য অনুযায়ী, এই নিষেধাজ্ঞাই ছিল শেষ ধাক্কা। এর ফলে প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি সরকারের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী আন্দোলন শুরু হয়। বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেন, সরকার তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধিত্ব করছে না। এর সঙ্গে রয়েছে ব্যাপক দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি।

গত সোম ও মঙ্গলবার লক্ষাধিক তরুণ রাস্তায় নেমে আসে। তারা সংসদ ভবন ও শীর্ষ রাজনীতিকদের বাসভবনসহ সরকারি স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ করে। এর ফলে অলি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। শুক্রবার রাষ্ট্রপতি রামচন্দ্র পৌডেল সংসদ ভেঙে দেন। আগামি মার্চ মাসে দেশটিতে নতুন নির্বাচন হবে।

ইতিমধ্যে নেপালের নতুন প্রজন্ম ডিসকর্ডে সিদ্ধান্ত নেয় কে দেশকে মার্চ আগামী মাস পর্যন্ত নেতৃত্ব দেবেন। মোবাইল স্ক্রিনে ভার্চুয়াল ভোটাভুটি অংশগ্রহণকারীদের অন্তর্বর্তীকালীন নেতাকে মনোনীত করতে সরাসরি মত দেওয়ার সুযোগ করে দেয়। এটি ছিল ডিজিটাল গণতন্ত্রের এক অভূতপূর্ব পরীক্ষা।

২৫ বছর বয়সী আইনের স্নাতক এবং প্রতিবাদে অংশ নেওয়া রেজিনা বাসনেত বলেন, ‘মানুষ শিখছিল চলার পথে। আমাদের অনেকেই জানতাম না সংসদ ভেঙে দেওয়া বা অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের মানে কী। কিন্তু আমরা প্রশ্ন করছিলাম, বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে উত্তরও পাচ্ছিলাম, আর একসাথে বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করছিলাম।’

নেপালের অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন নিয়ে ডিসকর্ড বিতর্কের স্ক্রিনশট। ছবি: আল জাজিরা
নেপালের অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন নিয়ে ডিসকর্ড বিতর্কের স্ক্রিনশট। ছবি: আল জাজিরা

আলোচনায় নানা বিষয় উঠে আসে— চাকরি, পুলিশ সংস্কার, বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কার, সরকারি স্বাস্থ্যসেবার অবস্থা ইত্যাদি। তবে মডারেটররা সবাইকে মনে করিয়ে দেন মূল প্রশ্নের কথা—পরবর্তী নেতা কে হবেন।

চূড়ান্ত ভোটের জন্য পাঁচজনের নাম তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল। তারা হলেন— ধরন শহরের মেয়র ও সামাজিক কর্মী হার্কা সাম্পাং, ন্যাশনাল ইনোভেশন সেন্টার পরিচালনাকারী জনপ্রিয় সামাজিক কর্মী মহাবীর পুন, ২০২২ সালে শক্তিশালী নেপালি কংগ্রেস নেতা শের বাহাদুর দেউবার বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা স্বতন্ত্র রাজনীতিক সাগর ঢকাল, ইউটিউব চ্যানেলে র‌্যান্ডম নেপালি নামে পরিচিত আইনজীবী ও জেন জি আন্দোলনকারীদের উপদেষ্টা রাষ্ট্র বিমোচন তিমালসিনা এবং সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশিলা কার্কি।

ভোটে জয়ী হন কার্কি। ২০১৬ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত স্বল্প মেয়াদে প্রধান বিচারপতি হিসেবে তিনি স্বাধীন বিচারব্যবস্থার পক্ষে প্রচারণা চালিয়েছিলেন। ২০১২ সালে তিনি সুপ্রিম কোর্টের আরেকজন বিচারপতির সঙ্গে মিলে ক্ষমতাসীন এক মন্ত্রীকে দুর্নীতির দায়ে কারাদণ্ড দেন। ২০১৭ সালে সরকারের মনোনীত পুলিশ প্রধানকে প্রত্যাখ্যান করায় তাকে অভিশংসনের চেষ্টা করা হলেও তা ব্যর্থ হয়। তার এই ইতিহাস ডিসকর্ড ভোটারদের কাছে তার যোগ্যতাকে আরও দৃঢ় করে।

ডিসকর্ড বিতর্কে অংশ নেওয়া অনেকেই অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কাঠমান্ডুর জনপ্রিয় র‍্যাপার-থেকে-মেয়র বালেন শাহ-এর নামও প্রস্তাব করেছিলেন। তবে হামি নেপাল এর মডারেটররা জানান, শাহের সঙ্গে তারা যোগাযোগ করতে পারেননি। পরে শাহ সামাজিক মাধ্যমে কার্কির প্রতি সমর্থন জানান।

নেপালের অনেকেই মনে করছেন, আগামী ৫ মার্চের নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী পদে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হতে পারেন বালেন শাহ।

৯ সেপ্টেম্বর কাঠমান্ডুতে বিক্ষোভকারীরা পুড়িয়ে দেওয়ার পর সুপ্রিম কোর্ট ভবন। ছবি: সংগৃহীত
৯ সেপ্টেম্বর কাঠমান্ডুতে বিক্ষোভকারীরা পুড়িয়ে দেওয়ার পর সুপ্রিম কোর্ট ভবন। ছবি: সংগৃহীত

‘অধিকতর সমতাভিত্তিক’

ডিসকর্ড আলোচনায় অংশ নেওয়া আয়ুষ বাশ্যাল আল জাজিরাকে বলেন, তিনি সেখানে ‘বোঝাপড়ার ভিন্নতা দেখেছেন। আর সবই ছিল চেষ্টা আর ভুল থেকে শেখার প্রক্রিয়া।’

তিনি বলেন, ‘কিছু মানুষ এসে অন্যদের ধারণাকে তুচ্ছ করছিল, এতে আলোচনা স্থবির হয়ে যেত। তবে এটি ছিল সময়ের দাবি। যত বেশি কণ্ঠস্বরকে একত্রে আনা সম্ভব, সেটিই তখন জরুরি হয়ে উঠেছিল।’

বাশ্যাল জানান, ডিসকর্ড ফোরামে কেউ কেউ নেপালে রাজতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিও তুলেছিল। কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয়ের জন প্রশাসন বিভাগের ২৭ বছর বয়সী এই শিক্ষার্থী বলেন, ‘রাজতন্ত্রপন্থীদের একটি আলাদা ডিসকর্ড গ্রুপও চলছিল। মাঝে মাঝে তাদের চ্যাটের স্ক্রিনশট শেয়ার করা হতো।’ তিনি এ ধরনের গোষ্ঠীকে ‘অনুপ্রবেশকারী’ বলে অভিহিত করেন।

একই ফোরামে জেন জি অংশগ্রহণকারীদের কেউ কেউ বিক্ষোভের নেতাদের বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন তোলে। এক অংশগ্রহণকারী বলেন, ‘আপনারা এজেন্ডা বানিয়েছেন, কিন্তু আমরা আপনাদের চিনি না। কীভাবে আপনাদের বিশ্বাস করবো, সেটিও একটি প্রশ্ন।’

আলোচনায় আরও যেসব বিষয় উঠে আসে, তার মধ্যে ছিল বিক্ষোভকারীদের হত্যাকাণ্ডের তদন্ত এবং দুর্নীতি দমনের পদক্ষেপ।

‘এটাই ভবিষ্যৎ’

জনপ্রিয় ‘কালাম উইকলি’ নিউজলেটারের লেখক ও সাংবাদিক প্রণয় রানা বলেন, জেন জি নেতৃত্বাধীন আন্দোলনের জন্য ডিসকর্ড ব্যবহার যথার্থ সিদ্ধান্ত। তবে এর সঙ্গে কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে।

তিনি আল জাজিরাকে বলেন, ‘এটি বাস্তব ফোরামের তুলনায় অনেক বেশি সমতাভিত্তিক। কারণ বাস্তবে অনেকেই ফোরামে প্রবেশাধিকার পেতেন না। যেহেতু এটি ভার্চুয়াল ও বেনামী, তাই মানুষ প্রতিশোধের ভয়ে না থেকেই স্বাধীনভাবে মতামত জানাতে পারে। তবে চ্যালেঞ্জও আছে। কেউ সহজেই ভুয়া পরিচয়ে প্রবেশ করে একাধিক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করতে পারে। এতে মতামত ও ভোট প্রভাবিত হতে পারে।’

ভুয়া তথ্য, গুজব ও ভ্রান্ত সংবাদ আন্দোলনকে ব্যাহত করতে পারে। এটা উপলব্ধি করে জেন জি নেতারা তাদের ডিসকর্ড আলোচনায় ‘ফ্যাক্ট চেকস’ নামে একটি আলাদা সাব-রুম খোলেন। সেখানে তারা বিভিন্ন ভুয়া তথ্য খণ্ডন করেন।

যেমন, একটি ছবি প্রচারিত হয় যেখানে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের প্রধান আলোচক ও বিক্ষোভের নেতা সুধন গুরুংকে বহিষ্কৃত পররাষ্ট্রমন্ত্রী অরজু রানা দেউবার সঙ্গে দেখা যায়। দাবি করা হয়, ছবিটি তোলা হয়েছে এক সপ্তাহ আগে। কিন্তু আসলে ছবিটি ছয় মাস আগের একটি অনুষ্ঠানের। ওই বৈঠকে গুরুং এক নেপালি ছাত্রের আত্মহত্যার ঘটনায় ন্যায়বিচারের দাবি জানিয়েছিলেন। অভিযোগ ছিল, ছাত্রটি ভারতের উড়িষ্যা রাজ্যের একটি প্রকৌশল কলেজে হয়রানির শিকার হয়েছিলেন।

আরেকটি গুজব ছড়ায় যে গুরুং নেপালি নাগরিক নন, বরং ভারতের দার্জিলিংয়ের বাসিন্দা। পরে ডিসকর্ড ফোরামে এবং সামাজিক মাধ্যমে তার নেপালি নাগরিকত্বের কপি প্রকাশ করা হয়।

সাবেক রাজা জ্ঞানেন্দ্র আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন— এমন দাবিও খণ্ডন করা হয়। আসলে তার পুরনো একটি ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল, যেখানে দেখা যায় তিনি তরুণদের সঙ্গে আলাপ করছিলেন।

কাঠমান্ডুতে আগুনে পুড়ে যাওয়া একটি সরকারি ভবন থেকে ধোঁয়া উঠছে। ছবি: সংগৃহীত
কাঠমান্ডুতে আগুনে পুড়ে যাওয়া একটি সরকারি ভবন থেকে ধোঁয়া উঠছে। ছবি: সংগৃহীত

এছাড়া দেখা যায়, একাধিক সামাজিক মাধ্যম অ্যাকাউন্ট ও প্রোফাইল নিজেদেরকে আন্দোলনের ‘অফিসিয়াল’ গ্রুপ বলে দাবি করছে। এর ফলে মাঠপর্যায়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়। বৃহস্পতিবার রাতে এমনকি এক জেন জি নেতাকে এক সেনা কর্মকর্তাকে ফোন করে সম্ভাব্য রাজতান্ত্রিক হস্তক্ষেপের বিষয়ে সতর্ক করতেও দেখা যায়।

সাংবাদিক প্রণয় রানা বলেন, আন্দোলনের নেতারা প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহার করেছেন। এটি জেন জির দক্ষতার অন্যতম ক্ষেত্র।

তিনি আল জাজিরাকে বলেন, ‘এটাই ভবিষ্যৎ। আমরা চাইলে আগের মতো মঞ্চে মাইকে বক্তৃতা দিতে পারি, আবার চাইলে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে স্বাধীনভাবে কথা বলতেও অভ্যস্ত হতে পারি।’

রানার মতে, বয়স কম হওয়ায় জেন জিদের হয়তো অভিজ্ঞতা কম। তবে তারা শেখার আগ্রহ দেখিয়েছে। সেটিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল নেপালের সাবেক সভাপতি ও দুর্নীতিবিরোধী কর্মী পদ্মিনী প্রধানাং জেন জি নেতাদের প্রতি একটি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আগের সরকারগুলো সততা, জবাবদিহি, স্বচ্ছতা ও সুশাসনে ব্যর্থ হয়েছে। তরুণ প্রজন্মকে এই ঘাটতি পূরণ করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ‘ওরা শুধু দুর্নীতিগ্রস্ত শাসনব্যবস্থা দেখেছে। প্রকৃত গণতন্ত্র বা সুশাসনের অভিজ্ঞতা কখনও তাদের হয়নি।’

তবে আইন বিষয়ে স্নাতক বাসনেত ভিন্নভাবে ভাবেন। তিনি বলেন, ‘প্রথমে আন্দোলন শান্তিপূর্ণ ছিল। পরিবেশ ছিল উৎসবমুখর। কিন্তু পরবর্তী সময়ে সরকারের নির্দেশে যে হত্যাযজ্ঞ হলো, তা ছিল ভয়াবহ। ব্যক্তিগত ও সরকারি সম্পত্তি পুড়িয়ে দেওয়া আতঙ্ক ছড়িয়েছে। এরপর সামাজিক মাধ্যমে সরকার গঠনের আলোচনা শুরু হওয়ায় বিভ্রান্তি আরও বেড়েছে।’

তিনি যোগ করেন, ‘এই সমস্ত ঘটনা আমাকে উদ্বিগ্ন করেছে।’

সূত্র: আল-জাজিরা

Ad 300x250

সম্পর্কিত