আজকের বৈঠকে যদি রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য না হয়, তবে নির্বাচন নিয়ে গভীর অনিশ্চয়তা তৈরির সম্ভাবনা রয়েছে।
স্ট্রিম ডেস্ক
বাংলাদেশের রাজনীতি বর্তমানে এক সংকটময় পরিস্থিতিতে এসে দাঁড়িয়েছে। জুলাই জাতীয় সনদের বাস্তবায়নসহ বেশ কিছু সংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে তীব্র মতবিরোধ এবং সাম্প্রতিক সহিংস ঘটনা পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে। এই পটভূমিতে আজ রোববার (৩১ আগস্ট ২০২৫) অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে আলাদা আলাদা বৈঠকে বসছেন। যমুনায় অনুষ্ঠিতব্য এ বৈঠকগুলো দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, বিভিন্ন সংস্কার ও জুলাই সনদের ভবিষ্যৎ এবং আগামী জাতীয় নির্বাচনের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। আজকের বৈঠক এবং বৈঠকের ফল দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যতকে কীভাবে প্রভাবিত করতে পারে? কেন বৈঠকগুলো এত গুরুত্বপূর্ণ, চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির সঙ্গে মিলিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা এখন সেই হিসাব মিলাতে ব্যস্ত।
গত বছরের ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশে রাজনৈতিক দলগুলো প্রাথমিকভাবে একটি ঐকমত্যের দিকে এগিয়েছিল। কিন্তু এক বছর পর, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মতবিরোধ এবং সংঘাতময় পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। মৌলিক কিছু সংস্কারসহ জুলাই জাতীয় সনদের বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির মধ্যে গভীর মতপার্থক্য দেখা দিয়েছে। বিশেষত, বিএনপি সংস্কারগুলো আগামী সংসদের মাধ্যমে বাস্তবায়নের পক্ষে। অন্যদিকে জামায়াত ও এনসিপি নির্বাচনের আগেই এই সংস্কার কার্যকর করার দাবি জানাচ্ছে।
এই মতবিরোধের মধ্যে সাম্প্রতিক সহিংসতা—যেমন ২৯ আগস্ট শুক্রবার রাতে জাতীয় পার্টি ও গণঅধিকার পরিষদের কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ এবং নুরুল হক নুরের ওপর হামলা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। এই ঘটনায় সেনাবাহিনী ও পুলিশের ভূমিকা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন, যা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সামনে নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।
একাধিক সূত্রের বরাতে জানা গেছে, মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে যমুনায় অনুষ্ঠিতব্য আজকের বৈঠকগুলোতে জরুরিভাবে কিছু বিষয় প্রাধান্য পেতে পারে। সূত্র আরও জানিয়েছে, এর মধ্যে কিছু বিষয় লিখিতভাবে আলোচ্যসূচিতে অন্তর্ভূক্ত থাকবে। এর বাইরে অলিখিত আরও কিছু বিষয়েও আলোচনা হতে পারে।
১. রাজনৈতিক সংকট নিরসন: সাম্প্রতিক সহিংসতা এবং সংস্কার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতবিরোধ কমিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল করা।
২. জুলাই সনদ নিয়ে ঐকমত্য গঠন: জুলাই জাতীয় সনদের বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য গঠনের চেষ্টা, আগামী নির্বাচনের জন্য যা অপরিহার্য।
৩. নির্বাচনের সময়সূচি নির্ধারণ: জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হবে—অন্তর্বর্তী সরকারের এই ঘোষণার পর আজ নির্বাচনের প্রস্তুতি এবং সময়সূচি নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
৪. জাতীয় পার্টির বিষয়ে সিদ্ধান্ত: জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে একটি দলের পক্ষ থেকে দাবি উঠেছে। বিশেষত, বিগত সরকারের আমলে দলটির ভূমিকা এবং সাম্প্রতিক সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে তাদের নিষিদ্ধ করার দাবি উঠেছে। এসব বৈঠকে কথা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানা গেছে, বৈঠকগুলো নিম্নলিখিত সময়ে অনুষ্ঠিত হবে:
বিএনপি: সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায়
জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ: বিকেল সাড়ে ৪টায়
এনসিপি: সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায়
এই বৈঠকগুলো আলাদাভাবে অনুষ্ঠিত হবে, যাতে করে প্রতিটি দলের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা সম্ভব হয়।
১. রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা: সাম্প্রতিক সহিংসতা, বিশেষ করে নুরুল হক নুরের ওপর হামলা এবং জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার ঘটনা দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির ইঙ্গিত দেয়। এই ঘটনাগুলো সরাসরি সংস্কার প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত না হলেও এতে করে অন্তর্বর্তী সরকার সংকটময় এক পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে এই সংকট উত্তরণের জন্য বৈঠকটি খুব গুরুত্বপূর্ণ।
২. সংস্কার ও জুলাই সনদের ভবিষ্যত: জুলাই জাতীয় সনদ গণ-অভ্যুত্থানের স্বীকৃতি এবং রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক সংস্কারের একটি দলিল। কিন্তু এটি বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির মধ্যে তীব্র মতবিরোধ রয়েছে। অন্যদিকে, বিএনপির অবস্থান যেখানে বিভিন্ন সংস্কার নির্বাচনের পর সংসদের মাধ্যমে বাস্তবায়নের পক্ষে, যেখানে জামায়াত আর এনসিপি নির্বাচনের আগেই সংস্কার কার্যকরের দাবি জানাচ্ছে। দল দুটি এসব বিষয়ে কঠোর অবস্থানে রয়েছে। শুধু তা-ই নয়, সংস্কার ছাড়া তারা নির্বাচনে অংশ নেবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে। অপরপক্ষে বিএনপিও তাদের অবস্থানে অনড়। এই বাস্তবতায় পরস্পরের মধ্যে কথাবার্তা ও আদান-প্রদানের মধ্য দিয়ে দলগুলোর মধ্যে ঐকমতে পৌঁছার ক্ষেত্রে এ বৈঠক খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে অনেকে মনে করছেন।
৩. নির্বাচনের সময়সূচি নির্ধারণ: অন্তর্বর্তী সরকারের ঘোষণা অনুয়ায়ী, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। তবে এনসিপি ও জামায়াতের নির্বাচন বর্জনের হুমকি, বিপরীতে এ বিষয়ে বিএনপির কঠোর অবস্থান নির্বাচনের সময়সূচিকে অনিশ্চয়তার মুখে ফেলেছে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের অভিযোগ, একটি গোষ্ঠী নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে। আজকের বৈঠক এই সংকট মোকাবিলা এবং নির্বাচনের জন্য দলগুলোর সমর্থন আদায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
৪. জাতীয় পার্টি নিয়ে আলোচনা: সম্প্রতি জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করার দাবি উঠেছে। বিশেষ করে তাদের অতীত ভূমিকা এবং সাম্প্রতিক সহিংসতায় দলটির জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে এ দাবি করা হয়েছে। গণঅধিকার পরিষদ ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দলটিকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছে। আবার অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, জাতীয় পার্টি ১৯৮২ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত জনগণের সঙ্গে বেইমানি করেছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগকে সহযোগিতা করেছে। তবে কোনো কোনো রাজনৈতিক বিশ্লেষকের কথা হলো, জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করা হবে ভুল সিদ্ধান্ত। একটি ভুল সিদ্ধান্ত হতে পারে। কারণ দলটি এর মধ্যেই রাজনৈতিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে। জরিপ অনুযায়ী, তাদের সমর্থন কমে গেছে। আজকের বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হতে পারে, যা রাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপর প্রভাব ফেলবে বলেই অনেকের ধারণা।
৫. ঐকমত্য কমিশনের ভূমিকা: জাতীয় ঐকমত্য কমিশন জুলাই সনদ নিয়ে দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য গঠনের জন্য অনানুষ্ঠানিক আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু দলগুলোর মধ্যে বড় আকারের মতপার্থক্যের কারণে আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা শুরু করা সম্ভব হয়নি। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন জানিয়েছে, অনানুষ্ঠানিক আলোচনা অব্যাহত থাকবে এবং মতপার্থক্য কমিয়ে আনুষ্ঠানিক আলোচনার মাধ্যমে সনদ চূড়ান্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে আনুষ্ঠানিক আলোচনার তারিখ এখনো চূড়ান্ত করা যায়নি। আজকের বৈঠক এই প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে পারে, যা সংস্কার এবং নির্বাচনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডির)-র উপদেষ্টা ও জ্যেষ্ঠ গবেষক মির্জা এম হাসান বলেন, ‘আজকের বৈঠকে সমঝোতার সম্ভাবনা আধাআধি। কারণ, বিএনপি কঠোর অবস্থান ধরে রাখতে পারে। সংস্কারের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা সীমিত হওয়ার বিষয়ে তারা উদ্বিগ্ন। অন্যদিকে এনসিপি ও জামায়াতে ইসলামী তাদের প্রত্যাশিত সংস্কার না হলে নির্বাচন বর্জনের হুমকি দিয়েছে।’ এই পরিপ্রেক্ষিতে এ গবেষকের মত হলো, আজকের বৈঠকে যদি রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য না হয়, তবে নির্বাচন নিয়ে গভীর অনিশ্চয়তা তৈরির সম্ভাবনা রয়েছে।
সবার চোখ এখন যমুনায়। কেননা, সেখানে আজ বিএনপি, জামায়াত ইসলামী ও এনসিপির সঙ্গে প্রধান উপদ্বেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের যে বৈঠকগুলো হবে, তা দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণে একটি টার্নিং পয়েন্ট হতে পারে, এমনই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।
বাংলাদেশের রাজনীতি বর্তমানে এক সংকটময় পরিস্থিতিতে এসে দাঁড়িয়েছে। জুলাই জাতীয় সনদের বাস্তবায়নসহ বেশ কিছু সংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে তীব্র মতবিরোধ এবং সাম্প্রতিক সহিংস ঘটনা পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে। এই পটভূমিতে আজ রোববার (৩১ আগস্ট ২০২৫) অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে আলাদা আলাদা বৈঠকে বসছেন। যমুনায় অনুষ্ঠিতব্য এ বৈঠকগুলো দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, বিভিন্ন সংস্কার ও জুলাই সনদের ভবিষ্যৎ এবং আগামী জাতীয় নির্বাচনের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। আজকের বৈঠক এবং বৈঠকের ফল দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যতকে কীভাবে প্রভাবিত করতে পারে? কেন বৈঠকগুলো এত গুরুত্বপূর্ণ, চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির সঙ্গে মিলিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা এখন সেই হিসাব মিলাতে ব্যস্ত।
গত বছরের ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশে রাজনৈতিক দলগুলো প্রাথমিকভাবে একটি ঐকমত্যের দিকে এগিয়েছিল। কিন্তু এক বছর পর, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মতবিরোধ এবং সংঘাতময় পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। মৌলিক কিছু সংস্কারসহ জুলাই জাতীয় সনদের বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির মধ্যে গভীর মতপার্থক্য দেখা দিয়েছে। বিশেষত, বিএনপি সংস্কারগুলো আগামী সংসদের মাধ্যমে বাস্তবায়নের পক্ষে। অন্যদিকে জামায়াত ও এনসিপি নির্বাচনের আগেই এই সংস্কার কার্যকর করার দাবি জানাচ্ছে।
এই মতবিরোধের মধ্যে সাম্প্রতিক সহিংসতা—যেমন ২৯ আগস্ট শুক্রবার রাতে জাতীয় পার্টি ও গণঅধিকার পরিষদের কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ এবং নুরুল হক নুরের ওপর হামলা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। এই ঘটনায় সেনাবাহিনী ও পুলিশের ভূমিকা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন, যা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সামনে নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।
একাধিক সূত্রের বরাতে জানা গেছে, মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে যমুনায় অনুষ্ঠিতব্য আজকের বৈঠকগুলোতে জরুরিভাবে কিছু বিষয় প্রাধান্য পেতে পারে। সূত্র আরও জানিয়েছে, এর মধ্যে কিছু বিষয় লিখিতভাবে আলোচ্যসূচিতে অন্তর্ভূক্ত থাকবে। এর বাইরে অলিখিত আরও কিছু বিষয়েও আলোচনা হতে পারে।
১. রাজনৈতিক সংকট নিরসন: সাম্প্রতিক সহিংসতা এবং সংস্কার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতবিরোধ কমিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল করা।
২. জুলাই সনদ নিয়ে ঐকমত্য গঠন: জুলাই জাতীয় সনদের বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য গঠনের চেষ্টা, আগামী নির্বাচনের জন্য যা অপরিহার্য।
৩. নির্বাচনের সময়সূচি নির্ধারণ: জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হবে—অন্তর্বর্তী সরকারের এই ঘোষণার পর আজ নির্বাচনের প্রস্তুতি এবং সময়সূচি নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
৪. জাতীয় পার্টির বিষয়ে সিদ্ধান্ত: জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে একটি দলের পক্ষ থেকে দাবি উঠেছে। বিশেষত, বিগত সরকারের আমলে দলটির ভূমিকা এবং সাম্প্রতিক সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে তাদের নিষিদ্ধ করার দাবি উঠেছে। এসব বৈঠকে কথা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানা গেছে, বৈঠকগুলো নিম্নলিখিত সময়ে অনুষ্ঠিত হবে:
বিএনপি: সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায়
জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ: বিকেল সাড়ে ৪টায়
এনসিপি: সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায়
এই বৈঠকগুলো আলাদাভাবে অনুষ্ঠিত হবে, যাতে করে প্রতিটি দলের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা সম্ভব হয়।
১. রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা: সাম্প্রতিক সহিংসতা, বিশেষ করে নুরুল হক নুরের ওপর হামলা এবং জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার ঘটনা দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির ইঙ্গিত দেয়। এই ঘটনাগুলো সরাসরি সংস্কার প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত না হলেও এতে করে অন্তর্বর্তী সরকার সংকটময় এক পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে এই সংকট উত্তরণের জন্য বৈঠকটি খুব গুরুত্বপূর্ণ।
২. সংস্কার ও জুলাই সনদের ভবিষ্যত: জুলাই জাতীয় সনদ গণ-অভ্যুত্থানের স্বীকৃতি এবং রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক সংস্কারের একটি দলিল। কিন্তু এটি বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির মধ্যে তীব্র মতবিরোধ রয়েছে। অন্যদিকে, বিএনপির অবস্থান যেখানে বিভিন্ন সংস্কার নির্বাচনের পর সংসদের মাধ্যমে বাস্তবায়নের পক্ষে, যেখানে জামায়াত আর এনসিপি নির্বাচনের আগেই সংস্কার কার্যকরের দাবি জানাচ্ছে। দল দুটি এসব বিষয়ে কঠোর অবস্থানে রয়েছে। শুধু তা-ই নয়, সংস্কার ছাড়া তারা নির্বাচনে অংশ নেবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে। অপরপক্ষে বিএনপিও তাদের অবস্থানে অনড়। এই বাস্তবতায় পরস্পরের মধ্যে কথাবার্তা ও আদান-প্রদানের মধ্য দিয়ে দলগুলোর মধ্যে ঐকমতে পৌঁছার ক্ষেত্রে এ বৈঠক খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে অনেকে মনে করছেন।
৩. নির্বাচনের সময়সূচি নির্ধারণ: অন্তর্বর্তী সরকারের ঘোষণা অনুয়ায়ী, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। তবে এনসিপি ও জামায়াতের নির্বাচন বর্জনের হুমকি, বিপরীতে এ বিষয়ে বিএনপির কঠোর অবস্থান নির্বাচনের সময়সূচিকে অনিশ্চয়তার মুখে ফেলেছে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের অভিযোগ, একটি গোষ্ঠী নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে। আজকের বৈঠক এই সংকট মোকাবিলা এবং নির্বাচনের জন্য দলগুলোর সমর্থন আদায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
৪. জাতীয় পার্টি নিয়ে আলোচনা: সম্প্রতি জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করার দাবি উঠেছে। বিশেষ করে তাদের অতীত ভূমিকা এবং সাম্প্রতিক সহিংসতায় দলটির জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে এ দাবি করা হয়েছে। গণঅধিকার পরিষদ ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দলটিকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছে। আবার অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, জাতীয় পার্টি ১৯৮২ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত জনগণের সঙ্গে বেইমানি করেছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগকে সহযোগিতা করেছে। তবে কোনো কোনো রাজনৈতিক বিশ্লেষকের কথা হলো, জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করা হবে ভুল সিদ্ধান্ত। একটি ভুল সিদ্ধান্ত হতে পারে। কারণ দলটি এর মধ্যেই রাজনৈতিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে। জরিপ অনুযায়ী, তাদের সমর্থন কমে গেছে। আজকের বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হতে পারে, যা রাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপর প্রভাব ফেলবে বলেই অনেকের ধারণা।
৫. ঐকমত্য কমিশনের ভূমিকা: জাতীয় ঐকমত্য কমিশন জুলাই সনদ নিয়ে দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য গঠনের জন্য অনানুষ্ঠানিক আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু দলগুলোর মধ্যে বড় আকারের মতপার্থক্যের কারণে আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা শুরু করা সম্ভব হয়নি। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন জানিয়েছে, অনানুষ্ঠানিক আলোচনা অব্যাহত থাকবে এবং মতপার্থক্য কমিয়ে আনুষ্ঠানিক আলোচনার মাধ্যমে সনদ চূড়ান্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে আনুষ্ঠানিক আলোচনার তারিখ এখনো চূড়ান্ত করা যায়নি। আজকের বৈঠক এই প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে পারে, যা সংস্কার এবং নির্বাচনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডির)-র উপদেষ্টা ও জ্যেষ্ঠ গবেষক মির্জা এম হাসান বলেন, ‘আজকের বৈঠকে সমঝোতার সম্ভাবনা আধাআধি। কারণ, বিএনপি কঠোর অবস্থান ধরে রাখতে পারে। সংস্কারের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা সীমিত হওয়ার বিষয়ে তারা উদ্বিগ্ন। অন্যদিকে এনসিপি ও জামায়াতে ইসলামী তাদের প্রত্যাশিত সংস্কার না হলে নির্বাচন বর্জনের হুমকি দিয়েছে।’ এই পরিপ্রেক্ষিতে এ গবেষকের মত হলো, আজকের বৈঠকে যদি রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য না হয়, তবে নির্বাচন নিয়ে গভীর অনিশ্চয়তা তৈরির সম্ভাবনা রয়েছে।
সবার চোখ এখন যমুনায়। কেননা, সেখানে আজ বিএনপি, জামায়াত ইসলামী ও এনসিপির সঙ্গে প্রধান উপদ্বেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের যে বৈঠকগুলো হবে, তা দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণে একটি টার্নিং পয়েন্ট হতে পারে, এমনই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।
কেফিয়ায় মুখ ঢেকে গণমাধ্যমে আসেন তিনি। তাঁকে নিয়ে রচিত হয়েছে বহু গান। যার একটি, ‘হে আবু উবায়দা, তোমার ইচ্ছাশক্তি দৃঢ়, তোমার কথাই বুলেটের গুলি’। তিনি আবু উবায়দা। বহু ফিলিস্তিনি বীরের মতো তিনিও শহীদ হয়েছেন। তাঁকে নিয়ে লিখেছেন সালেহ ফুয়াদ।
৩ ঘণ্টা আগেদেশের তিনটি প্রতিনিধিত্বশীল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে অন্তবর্তী সরকার প্রধানের এ সংলাপ গণতন্ত্রের জন্য অবশ্যই একটি আশার বার্তা দিচ্ছে। অন্তত এটি দেখাতে পারছে যে সব পক্ষ মিলে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার ইচ্ছা তাদের রয়েছে।
৬ ঘণ্টা আগেগত ২৩ আগস্ট পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার ঢাকায় সফর করেন। বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্কের সাম্প্রতিক এই গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তকে ইসলামাবাদ ‘ঐতিহাসিক’ ও ‘একটি তাৎপর্যপূর্ণ মাইলফলক’ হিসেবে বর্ণনা করে। ২০১২ সালের পর এটাই ছিল দুই দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ের আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ।
১ দিন আগেনির্বাচন কমিশন (ইসি) ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে। ইসি বলছে, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।
৩ দিন আগে