রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় আরও এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। তাঁর নাম তাসনিয়া হক (১৫)।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনারা রোগীর শরীরে হাত দেওয়ার আগেই আপনাদের উপস্থিতি জাতিকে সান্ত্বনা দিয়েছিল। আমরা ভীষণ খুশি যে ঠিক সময়ে আপনারা আসতে পেরেছেন, আর সমগ্র জাতির পক্ষ থেকে আমি কৃতজ্ঞতা জানাই।’
স্মারকলিপি দেওয়া নিয়ে উত্তেজনা
নিহত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের প্রত্যেকের পরিবারকে মোট ৭ কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন অভিভাবকরা। এর মধ্যে সরকারের কাছে ৫ কোটি ও স্কুল কর্তৃপক্ষকে ২ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি তুলেছেন তারা। অন্যদিকে আহত শিক্ষার্থীদের পরিবার প্রত্যেকে মোট ২ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৯টায় মাইলস্টোন স্কুলে ৮ দফা দাবী নিয়ে মানববন্ধন শুরু করেন অভিভাবকেরা। কিন্তু কর্তৃপক্ষের সাথে কথা কাটাকাটির প্রেক্ষিতে যোগ হয় আরও একটি দফা। মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ স্থানান্তর, দুর্ঘটনার দিনের স্কুলের সিসিটিভি ফুটেজ দেখতে দেওয়াসহ মোট ৯ দফা দাবি জানিয়েছেন অভিভাবকেরা।
মাইলস্টোনের অভিভাবক
এখনো কোনো ক্লাস কিংবা পরীক্ষা চালু হয়নি। শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বস্তি ও ধীরে ধীরে স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনার প্রস্তুতি হিসেবেই কলেজ সীমিত পরিসরে খোলার এই সিদ্ধান্ত।
শুরুর দিকে সব ক্লাস না হলেও এক বা দুটি ক্লাস নেওয়া হতে পারে। শিক্ষকদের নেতৃত্বে ইতোমধ্যে কাউন্সেলিং কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি
রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গার শিক্ষার্থী রাইসা মনির (১১) পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে বিমান বাহিনী প্রধানের একটি প্রতিনিধি দল।
২০১৩ সালে রানা প্লাজার ধ্বংসস্তূপের নিচে সরকারি উদ্ধার বাহিনী পৌঁছানোর আগেই হাজার হাজার সাধারণ মানুষ খালি হাতে কংক্রিট সরাচ্ছিল। চব্বিশের জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের সময় আহতদের জন্য রক্তদান বা তাঁদের হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়ার কাজগুলো সাধারণ ছাত্র-জনতাই করেছে।
এর আগে রোববার (২৭ জুলাই) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, সংশোধিত তালিকা অনুযায়ী মাইলস্টোনে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ৩৩ জন।
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান দুর্ঘটনায় আহত রোগীদের চিকিৎসার খোঁজ নিতে জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে গিয়েছিলেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
প্রতক্ষ্যদর্শী মায়ের ভাষ্য
আমাদের ছেলে সূর্য সময় বিশ্বাস। মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ইংরেজি ভার্সনে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। আর একই বিদ্যায়তনের কলেজ শাখায় শিক্ষকতা করি আমি। প্রতিদিন ছেলেকে আমিই স্কুলে নিয়ে আসি। তবে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনার আগের দিন (২০ জুলাই) সূর্য স্কুলে যায়নি।
বিআইপি সংবাদ সম্মেলন
রাজধানীর উত্তরা দিয়াবাড়িতে অবস্থিত মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ঘিরে নতুন করে দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেছেন দেশের নগর পরিকল্পনাবিদেরা। যেখানে বলা হয়েছে, স্কুলটি বিমান চলাচলের অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ ‘এপ্রোচ লাইন’-এর মধ্যেই অবস্থিত।
বিমান দুর্ঘটনায় নিভে গেল ১৩ বছরের জীবন
পরিবারের ছোট সন্তান মাকিনকে নিয়ে বাবা-মায়ের ছিল একরাশ স্বপ্ন। বাবা তাঁকে প্রতিদিন সকালে স্কুলে নামিয়ে দিয়ে কাজে যেতেন। বিকেলে আবার নিয়ে আসতেন। এ সময় কিশোর মাকিন ভাবত, আজ ঘরে ফিরে রংপেনসিলের আঁচড়ে কোন পাখিটাকে জীবন্ত করে তুলবে সে।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) এক বিবৃতিতে আমুর অঞ্চলের গভর্নর ভাসিলি অরলভ বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি এই ঘটনাকে ‘ভয়াবহ ট্র্যাজেডি’ আখ্যা দিয়ে পুরো অঞ্চলে তিন দিনের শোক ঘোষণা করেছেন।
আতঙ্কে আর স্কুলে যেতে চায় না রাইসার বড় বোন
ছোট বোন রাইসার মৃত্যুর পর এখন স্কুলের যেতে ভয় পায় সিনথিয়া। আবার কখন বিমান ভেঙে পড়বে স্কুলে সেই আতঙ্ক সব সময় তাড়া করে ফিরছে তাকে।