leadT1ad

বিএনপির মনোনয়নে নেই ঢাকা-২০ (ধামরাই), ঝুলে রইল ৪ নেতার ভাগ্য

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় ২৩৭টি আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন। এতে ঢাকার ২০টি আসনের মধ্যে ১৩টিতে প্রার্থীর নাম থাকলেও, ঢাকা-২০ সহ সাতটি আসনে কোনো নাম ঘোষণা করা হয়নি। এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন দলটির স্থানীয় নেতারা।

স্ট্রিম সংবাদদাতা
স্ট্রিম সংবাদদাতা
সাভার, ঢাকা

ধামরাইয়ে বিএনপির আলোচিত চার নেতা। সংগৃহীত ছবি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ঘোষিত ২৩৭টি আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় নেই ঢাকা-২০ (ধামরাই) আসনের কারও নাম। এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন দলটির স্থানীয় নেতারা। দলের মহাসচিব ঘোষিত তালিকায় অনুল্লিখিত আসনগুলোতে মিত্র দলগুলোর প্রার্থী দেওয়ার সম্ভাবনাও আলোচনায় এসেছে। যদিও এখনো মনোনয়নের আশায় আছেন দলীয় প্রার্থীরা। ফলে চূড়ান্ত ঘোষণার আগ পর্যন্ত ঝুলেই থাকছে আলোচনায় থাকান দলের চার প্রার্থীর ভাগ্য।

গতকাল সোমবার (৩ নভেম্বর) দিনভর বৈঠকের পর সন্ধ্যায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ২৩৭টি আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন। পরে দলের পক্ষ থেকে তালিকাও প্রকাশ করা হয়। এতে ঢাকার ২০টি আসনের মধ্যে ১৩টিতে প্রার্থীর নাম থাকলেও, ঢাকা-২০ সহ সাতটি আসনে কোনো নাম ঘোষণা করা হয়নি।

বিগত ১২টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তথ্য বলছে, ঢাকা-২০ (ধামরাই) আসনে পাঁচবার বিএনপি, পাঁচবার আওয়ামী লীগ ও দুইবার জাতীয় পার্টি জয় পেয়েছে। সর্বশেষ ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন ধামরাই উপজেলা বিএনপির সভাপতি তমিজ উদ্দিন। তিনি এবারও দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী।

তমিজ উদ্দিন ছাড়াও মনোনয়ন প্রত্যাশীদের তালিকায় রয়েছেন জেলা যুবদলের সভাপতি ইয়াসিন ফেরদৌস মুরাদ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক নাজমুল হাসান অভি এবং মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ। গত আগস্টের পর থেকে প্রত্যেকে অনুসারীদের নিয়ে আলাদা রাজনৈতিক কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন। জনপরিসরে সবাই বলছেন, দল যাকেই প্রার্থী করবে, তার পক্ষেই কাজ করবেন।

মনোনয়ন তালিকায় নাম না থাকার বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে তমিজ উদ্দিন বলেন, ‘এটা আমি জানি না। এটা আসলে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয় জানবেন, আর কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃত্ব জানবেন। আমি জানি যে আমারটা হয়ে আছে। এখন ঘোষণার সময় শুনলাম আপাতত স্থগিত দল করি, ফলে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে কিছু ভাবা যাবে না, করাও যাবে না। দেখি অপেক্ষা করি।’ তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী ধামরাই উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শামসুল ইসলাম স্ট্রিমকে বলেন, ‘এটা দলীয় সিদ্ধান্তের বিষয়। হয়ত কোনো কারণে বাদ পড়েছে। সিদ্ধান্ত তো হবেই। আমরা আশাবাদী।’

বর্তমানে ওমরাহ পালনে সৌদি আরবে আছেন মহিলা দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও মনোনয়নপ্রত্যাশী সুলতানা আহমেদ। অনলাইন মাধ্যমে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি বর্তমানে দেশে নেই, ওমরাহ করতে এসেছি। ওখানে থাকলে হয়ত আরও ভালো বলতে পারতাম। সিদ্ধান্তটি হয়ত আরও গভীরভাবে যাবে, সেজন্যই এমনটি হয়ে থাকতে পারে। আমি মনোনয়ন আশা করি, আমি আশাবাদী।’

এদিকে দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে বিএনপির মনোনয়নের আশায় রয়েছেন তরুণ দুই নেতাও। তাঁদের মধ্যে আছেন ঢাকা জেলা যুবদলের সভাপতি ইয়াসিন ফেরদৌস মুরাদ ও ঢাকা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক নাজমুল হাসান অভি। তাঁরা বলছেন, দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।

জেলা যুবদলের সভাপতি ইয়াসিন ফেরদৌস মুরাদ বলেন, ‘দলের নিজস্ব চিন্তা, পরিকল্পনা রয়েছে। সেভাবেই সিদ্ধান্ত হবে। আমি শতভাগ আশাবাদী। দল যখন ঘোষণা করবে, সবাই জানবে। আমি দলের আদর্শ ও নেতৃত্বের প্রতি সবসময় শ্রদ্ধাশীল, সেটি ধরে রেখে রাজনীতি করেছি। ভবিষ্যতেও সেটি অব্যাহত থাকবে।’

দল তারুণ্যের পক্ষে জানিয়ে ঢাকা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক নাজমুল হাসান অভি বলেন, ‘আমি মনোনয়ন প্রত্যাশা করছি এবং ধানের শীষকে বিজয়ী করতে কাজ করছি। আশা করছি, দল আমাকেই মনোনীত করবে।’

ঢাকা-২০ (ধামরাই) আসনে তথ্য ঘেঁটে দেখা যায়, দেশে প্রথম থেকে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত ধামরাই উপজেলা ছিল ঢাকা-১৩ আসনের অন্তর্ভুক্ত। স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালের প্রথম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের তাজউদ্দীন আহমদ এখন থেকেই জয়ী হয়েছিলেন। তবে ১৯৭৯ সালের দ্বিতীয় নির্বাচনে বিএনপির দেওয়ান মোহাম্মদ ইদ্রিস জয়ী হলেও পরে ১৯৮৬ ও ১৯৮৮ সালের নির্বাচনে জয় পান জাতীয় পার্টির খান মোহাম্মদ ইসরাফিল। তবে ১৯৯১, ১৯৯৬ (দুইবার) ও ২০০১ সালের নির্বাচনে টানা তিনবার বিজয়ী হন বিএনপির ব্যারিস্টার মো. জিয়াউর রহমান খান। ২০০৮ সালে আসন পুনর্বিন্যাসের পর গঠন করা হয় ঢাকা-২০ (ধামরাই) আসন। এরপর থেকে ২০২৪ সালের গণঅভ্যুুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনে আগ পর্যন্ত আসনটি নিজেদের দখলেই রেখেছিল তারা।

Ad 300x250

সম্পর্কিত