leadT1ad

চাকসু নির্বাচনে ভোটের সমীকরণ বদলে দিতে পারেন অনাবাসিক শিক্ষার্থীরা

স্ট্রিম সংবাদদাতা
স্ট্রিম সংবাদদাতা
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু)

দীর্ঘ ৩৫ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচন। নির্বাচন ঘিরে ক্যাম্পাসে জাঁকজমকভাবে চলছে প্রচারণা। তবে নির্বাচন ঘিরে এখন সবচেয়ে আলোচিত বিষয় অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের ভোট। ক্যাম্পাস থেকে দূরে থাকা শিক্ষার্থীরা সংখ্যায় বেশি—তাঁদের অংশগ্রহণই শেষ পর্যন্ত নির্ধারণ করে দিতে পারে ভোটের ফলাফল। প্রার্থীরা তাই এখন ব্যস্ত শহর ও আশপাশের এলাকায় থাকা এসব শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছাতে। কেউ যাচ্ছেন মেস ও কটেজে, কেউ আবার ভরসা রাখছেন অনলাইন প্রচারণায়।

বেশির ভাগ শিক্ষার্থীই অনাবাসিক

বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে চবিতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২৮ হাজার ৫১৫ জন। আবাসিক হলে অবস্থান করছেন প্রায় ৯ হাজার শিক্ষার্থী, বাকিরা শহর ও আশপাশের এলাকায় বাসা বা মেসে থাকেন। চাকসুর ভোটার সংখ্যা ২৩ হাজার ৫২১ জন। এর মধ্যে ৭০ শতাংশই অনাবাসিক। পুরুষ ভোটার ১৬ হাজার ৮৪ জন, নারী ভোটার ১১ হাজার ৩২৯ জন। শহর থেকে ক্যাম্পাসের দূরত্ব প্রায় ২২ কিলোমিটার হওয়ায় ভোটের দিন অনাবাসিক শিক্ষার্থীরা আসবেন কিনা, তা নিয়েই এখন প্রশ্ন উঠছে।

যাতায়াত ভোগান্তিতে ভোট নিয়ে শঙ্কা

নির্বাচনের দিন শহর থেকে আসা শিক্ষার্থীদের প্রধান মাধ্যম ট্রেন ও বাস। কিন্তু নিয়মিত শিডিউল অনুযায়ী, ভোটের দিনে সবার পক্ষে একযোগে আসা কঠিন হবে বলে আশঙ্কা করছেন প্রার্থীরা। বিশেষ করে নারী শিক্ষার্থীদের জন্য যাতায়াত একটি বড় চ্যালেঞ্জ। পরীক্ষা চলমান থাকায় অনেকেই হয়তো ভোট দিতে আসতে পারবেন না। ফলে প্রার্থীদের প্রচারণাতেও এর প্রভাব পড়ছে।

অনাবাসিক ভোটারদের ধরতে ব্যস্ত প্রার্থীরা

অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের কাছে সরাসরি পৌঁছানো কঠিন হওয়ায় প্রার্থীরা এখন ব্যস্ত কটেজ, মেস ও অনলাইন প্রচারণায়। ছাত্রদল প্যানেলের ভিপি পদপ্রার্থী সাজ্জাদ হোসেন হৃদয় বলেন, “চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও সম্পূর্ণ আবাসিক না হওয়াটা প্রশাসনের ব্যর্থতা। অনাবাসিক ভোট অবশ্যই একটি ফ্যাক্টর। আমরা কটেজগুলোতে প্রচারণা চালাচ্ছি। শঙ্কা আছে, তবে আমরা আমাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।”

ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের জিএস পদপ্রার্থী সাঈদ বিন হাবিব বলেন, “আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থী অনাবাসিক। সবার কাছে এখনও পৌঁছাতে পারিনি। তবে ক্যাম্পাসে প্রচারণার পাশাপাশি অনলাইনে ও প্রচারণা চালাচ্ছি। আমরা আশা করছি অনাবাসিক শিক্ষার্থীরা ও ভোট দিতে আসবেন। "

বিশেষ যাতায়াত ব্যবস্থার দাবিতে আবেদন

ভোটের দিন অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে প্রার্থীরা প্রশাসনের কাছে ট্রেন ও বাসের বিশেষ শিডিউলের দাবি জানিয়েছেন। চাকসু নির্বাচন কমিশনের সদস্য সচিব অধ্যাপক একেএম আরিফুল হক সিদ্দিকী বলেন, “শিক্ষার্থীরা ট্রেনের শিডিউল বৃদ্ধির জন্য আবেদন করেছে। আমরা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলব। ট্রেন ও বাস সার্ভিস বাড়ানো হবে, যাতে অনাবাসিক শিক্ষার্থীরা উৎসাহ নিয়ে ভোট দিতে আসতে পারে।”

৩৫ বছর পর চাকসু নির্বাচন

গত ২৮ আগস্ট তফসিল ঘোষণার পর আগামী ১৫ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে চাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন। ১৯৭০ সালে প্রথম নির্বাচন হয় চবিতে, এরপর ১৯৭২, ১৯৭৪, ১৯৭৯, ১৯৮১ ও ১৯৯০ সালে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ নির্বাচন হয় ১৯৯০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি।

বিষয়:

Ad 300x250

সম্পর্কিত