নাজিয়া আফরিন
তখন আমার ছেলের বয়স দুই পার হয়েছে কি হয়নি। সারাক্ষণই ছুটছে, অনর্গল কথা বলছে। এক রেস্তোরাঁয় খেতে গিয়ে ছেলে আমার পড়ে গিয়ে মাথায় চোট পেয়ে রক্তারক্তি কাণ্ড। আঘাত গভীর হওয়ায় চিকিৎসক তাকে সম্পূর্ণ অচেতন করে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নিলেন। অপারেশন থিয়েটারের দরজার কাঁচ দিয়ে আমি দেখছি, বিরাট বিছানায় আমার ছোট্ট ছেলেটা অসাড় পড়ে আছে। দৃশ্যটি এখনো আমার কাছে ভয়াবহতম দুঃস্বপ্ন।
২১ জুলাই সোমবার বহু বাবা-মায়ের ভয়াবহ দুঃস্বপ্ন অনবরত প্রচারিত হয়েছে আমাদের দেশের ২৪ ঘণ্টার নিউজ চ্যানেলগুলোর পর্দায়, অনলাইন নিউজ পোর্টালের প্রতিটি শিরোনামে আর সোশ্যাল মিডিয়ার প্রতিটি কন্টেন্টে।
রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার খবর পাওয়ার পর থেকেই ঘটনাটি অনুসরণ করছিলাম। যথারীতি টিভি চ্যানেলগুলো এবং ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম সরাসরি সংবাদ প্রচার শুরু করল। প্রতিবেদকেরা প্রথমে ঘটনাটির যথাসম্ভব ‘মর্মান্তিক’ বিবরণ তুলে ধরতে আরম্ভ করলেন।
এরপর শুরু হলো বেঁচে যাওয়া ও পাগলপ্রায় স্বজনদের দুর্বলতম অবস্থার ছবি প্রদর্শন। উদ্ধার কাজের তোয়াক্কা না করে এবং হাসপাতালে ভিড় করে মানুষের তীব্র অসহায়ত্ব, বেদনা ও গভীর ট্রমা তুলে ধরার এক ভীষণ প্রচেষ্টাই সবার কাজকর্মে চোখে পড়ল। সেই সঙ্গে কোন রাজনৈতিক, সরকারি প্রতিনিধি বা ব্যক্তিত্ব কখন হাসপাতালে এসেছেন, তা নিয়েও সংবাদমাধ্যমগুলোর দেখা গেল বেশ আগ্রহ।
এদিকে মৃত ও আহতের সংখ্যার হালনাগাদ তথ্য পেতে সময় চলছে শামুক গতিতে। দুর্ঘটনা কেন, কীভাবে ঘটল, তা জানতেও গড়িয়ে গেল বেলা। পরদিন মঙ্গলবার এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে কিনা, সে সিদ্ধান্ত নিতেও রাত পেরিয়ে সকাল হয়ে গেল। এদিকে প্রতিটি সংবাদের শিরোনামেই যা দেখলাম তাকে এককথায় বিলাপ আর বেদনার বিস্তার নামে অভিহিত করলেও বোধহয় ভুল হয় না।
এ ধরনের গণ-ট্র্যাজেডি, সামষ্টিক আবেগ থেকে যা প্রতিক্রিয়ার জন্ম দেয়, তা কভার করার ক্ষেত্রে সংবাদমাধ্যমের এমন অবস্থান অবশ্য নতুন নয়। দুর্দশাকে উপজীব্য করে সস্তা সাহিত্য রচনার চল রয়েছে বহু আগে থেকেই। মাইলস্টোন ক্যাম্পাসে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় দেশের সংবাদমাধ্যমে সেই ঐতিহ্যই প্রবাহিত হয়েছে। ব্রিটিশ দৈনিক দ্য অবজার্ভারের সহকারী সম্পাদক রবার্ট ইয়েটস এ প্রবণতাকে চিহ্নিত করেছেন ‘খুব খারাপ সংবাদ থেকে যৌনসুখ ভোগ’ হিসেবে। দ্য গার্ডিয়ানের জন্য লেখা একটি ব্লগে মৃত্যুর মিডিয়া কভারেজের বিবরণকে তিনি ‘অন্যের দুর্ভাগ্যের সঙ্গে ক্ষীণ সম্পর্ক থেকে আহরিত পরিতৃপ্তি’ রূপেও দেখতে আগ্রহী। প্রিন্সেস ডায়ানার মৃত্যু-পরবর্তী সংবাদমাধ্যমের উন্মত্ততার কথা বলতে গিয়ে রবার্ট ইয়েটস এমনটি লিখেছিলেন। একই সঙ্গে লেখাটিতে তিনি এ পর্যবেক্ষণও দেন যে, জাতীয় শোক বা আন্তর্জাতিক দুর্যোগের সময় এ ধরনের তৎপরতার বাড়বাড়ন্ত লক্ষ করা যায়।
সংবাদমাধ্যমের এই প্রবণতাকে গণমাধ্যম-তাত্ত্বিকেরা ‘পর্নোগ্রাফি অব গ্রিফ’ বা ‘শোকগত পর্নোগ্রাফি’ বলে উল্লেখ করেন। কথ্য ভাষায় একে আজকাল ‘গ্রিফ পর্ন’ বা ‘ট্রমা পর্ন’ও বলা হয়। যেখানে মানুষের ট্রমা, শোক, দুর্ভোগ বা দুর্দশার চিত্র তীব্রভাবে প্রদর্শন করা হয়। এখানে সাধারণত মিডিয়া কভারেজ হয় অতিবিবরণধর্মী, অণুপ্রবেশমূলক ও ‘ভয়্যুরিস্টিক’। ভয়্যুরিস্টিক ব্যাপারটি হলো অন্যের ব্যক্তিগত বা গোপনীয় দৃশ্য দেখে ফেলার মাধ্যমে পরিতৃপ্ত হওয়া। এক্ষেত্রে সংবাদের যাঁরা ভোক্তা, তাঁরা একধরনের ‘রিক্রিয়েশনাল গ্রিফ’ বা বিনোদনমূলক শোক অনুভব করেন। অর্থাৎ প্রকৃত ঘটনা বা ব্যক্তির সঙ্গে সম্পর্কহীন একরকম বদলি শোক সংবাদ-ভোক্তাদের মধ্যে ক্যাথারসিস ঘটায়। তীব্র আবেগ প্রকাশের মাধ্যমে তাঁরা অনুভব করেন মানসিক স্বস্তি।
এ প্রসঙ্গে ব্রিটিশ দৈনিক দ্য টাইমসের অতিথি লেখক ক্যারল সার্লার ‘দিজ নিউ অ্যান্ড পিকিউলার পর্নোগ্রাফি অব গ্রিফ’ নামে একটি প্রবন্ধ লিখেছেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘শোকের এই নতুন ও অদ্ভুত পর্নোগ্রাফি’কে অনেক সময় ‘উৎসর্গ’ নামে ডাকা হয়। কিন্তু অশালীনতম সত্য হলো, এই বদলি শোকই এখনকার নতুন পর্নোগ্রাফি; সবচেয়ে খারাপের মধ্যে জঘন্যতম…।’
এদিকে সংবাদমাধ্যমের পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়া এখন সয়লাব শিশুদের আইডি কার্ড, বইখাতা, জুতো, জামা, এমনকি তাদের পুড়ে যাওয়া দেহের ছবি ও ভিডিওতে। নেটিজেনরা বেশ দায়িত্ব নিয়েই এই গণ-ট্র্যাজেডিতে নিজেদের অংশগ্রহণের প্রমাণ রাখছেন। যেন এ বিষয়ে একটি স্ট্যাটাস, একটি স্টোরি, একটি রিল না দিলেই নয়।
এই নিদারুণ প্রদর্শনকামিতার উত্থাননির্ভর এক সমাজের কথা ফরাসি তাত্ত্বিক গায় ডিবর্ড বলেছিলেন গত শতকের সত্তরের দশকেই। ১৯৬৭ সালে প্রকাশিত তাঁর বই ‘দ্য সোসাইটি অব স্পেকটেকল’-এ তিনি লিখেছিলেন, ‘যে জীবন আগে যাপন করা হতো, তা এখন উপস্থাপনে সীমাবদ্ধ। মানুষের মিথষ্ক্রিয়াকে প্রতিস্থাপন করেছে ইমেজ বা ছবি।’
ডিবর্ড আরও বলেন যে, একটি ভোগবাদী সমাজে মানুষ সামাজিক জীবন যাপন করার চেয়ে জীবনকে দেখাতে বেশি উদ্গ্রীব। এই যে আকর্ষণীয় প্রদর্শন বা ‘স্পেকটেকল’, সেটাই মানুষকে কী প্রয়োজন এবং কী অবশ্যই পেতে হবে, তা ইমেজের মধ্য দিয়ে নির্ধারণ করে দেয়। ফলে আমাদের সামাজিক জীবন ক্রমশ আরও দূরে সরতে থাকে; এবং ক্রমাগত তা ‘পাওয়া’ থেকে সরে ধাবিত হয় ‘উপস্থাপন’–এর দিকে। এই বাস্তবতায় প্রকৃত জীবনের থেকে বানিয়ে তোলা জীবনই ‘সত্যি’ হয়ে উঠতে থাকে। আর এই বানিয়ে তোলা জীবনে তাৎপর্য হারাতে থাকে সব অনুভূতির প্রকৃত বোধ।
হায়! প্রক্সি বা বদলি অনুভূতি আর আবেগের এই সময়ে অ্যালগরিদমের ঈশ্বরের সামনে আমরা কি শুধুই নতজানু হয়ে থাকব!
লেখক: শিক্ষক, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস; সাংবাদিক
তখন আমার ছেলের বয়স দুই পার হয়েছে কি হয়নি। সারাক্ষণই ছুটছে, অনর্গল কথা বলছে। এক রেস্তোরাঁয় খেতে গিয়ে ছেলে আমার পড়ে গিয়ে মাথায় চোট পেয়ে রক্তারক্তি কাণ্ড। আঘাত গভীর হওয়ায় চিকিৎসক তাকে সম্পূর্ণ অচেতন করে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নিলেন। অপারেশন থিয়েটারের দরজার কাঁচ দিয়ে আমি দেখছি, বিরাট বিছানায় আমার ছোট্ট ছেলেটা অসাড় পড়ে আছে। দৃশ্যটি এখনো আমার কাছে ভয়াবহতম দুঃস্বপ্ন।
২১ জুলাই সোমবার বহু বাবা-মায়ের ভয়াবহ দুঃস্বপ্ন অনবরত প্রচারিত হয়েছে আমাদের দেশের ২৪ ঘণ্টার নিউজ চ্যানেলগুলোর পর্দায়, অনলাইন নিউজ পোর্টালের প্রতিটি শিরোনামে আর সোশ্যাল মিডিয়ার প্রতিটি কন্টেন্টে।
রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার খবর পাওয়ার পর থেকেই ঘটনাটি অনুসরণ করছিলাম। যথারীতি টিভি চ্যানেলগুলো এবং ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম সরাসরি সংবাদ প্রচার শুরু করল। প্রতিবেদকেরা প্রথমে ঘটনাটির যথাসম্ভব ‘মর্মান্তিক’ বিবরণ তুলে ধরতে আরম্ভ করলেন।
এরপর শুরু হলো বেঁচে যাওয়া ও পাগলপ্রায় স্বজনদের দুর্বলতম অবস্থার ছবি প্রদর্শন। উদ্ধার কাজের তোয়াক্কা না করে এবং হাসপাতালে ভিড় করে মানুষের তীব্র অসহায়ত্ব, বেদনা ও গভীর ট্রমা তুলে ধরার এক ভীষণ প্রচেষ্টাই সবার কাজকর্মে চোখে পড়ল। সেই সঙ্গে কোন রাজনৈতিক, সরকারি প্রতিনিধি বা ব্যক্তিত্ব কখন হাসপাতালে এসেছেন, তা নিয়েও সংবাদমাধ্যমগুলোর দেখা গেল বেশ আগ্রহ।
এদিকে মৃত ও আহতের সংখ্যার হালনাগাদ তথ্য পেতে সময় চলছে শামুক গতিতে। দুর্ঘটনা কেন, কীভাবে ঘটল, তা জানতেও গড়িয়ে গেল বেলা। পরদিন মঙ্গলবার এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে কিনা, সে সিদ্ধান্ত নিতেও রাত পেরিয়ে সকাল হয়ে গেল। এদিকে প্রতিটি সংবাদের শিরোনামেই যা দেখলাম তাকে এককথায় বিলাপ আর বেদনার বিস্তার নামে অভিহিত করলেও বোধহয় ভুল হয় না।
এ ধরনের গণ-ট্র্যাজেডি, সামষ্টিক আবেগ থেকে যা প্রতিক্রিয়ার জন্ম দেয়, তা কভার করার ক্ষেত্রে সংবাদমাধ্যমের এমন অবস্থান অবশ্য নতুন নয়। দুর্দশাকে উপজীব্য করে সস্তা সাহিত্য রচনার চল রয়েছে বহু আগে থেকেই। মাইলস্টোন ক্যাম্পাসে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় দেশের সংবাদমাধ্যমে সেই ঐতিহ্যই প্রবাহিত হয়েছে। ব্রিটিশ দৈনিক দ্য অবজার্ভারের সহকারী সম্পাদক রবার্ট ইয়েটস এ প্রবণতাকে চিহ্নিত করেছেন ‘খুব খারাপ সংবাদ থেকে যৌনসুখ ভোগ’ হিসেবে। দ্য গার্ডিয়ানের জন্য লেখা একটি ব্লগে মৃত্যুর মিডিয়া কভারেজের বিবরণকে তিনি ‘অন্যের দুর্ভাগ্যের সঙ্গে ক্ষীণ সম্পর্ক থেকে আহরিত পরিতৃপ্তি’ রূপেও দেখতে আগ্রহী। প্রিন্সেস ডায়ানার মৃত্যু-পরবর্তী সংবাদমাধ্যমের উন্মত্ততার কথা বলতে গিয়ে রবার্ট ইয়েটস এমনটি লিখেছিলেন। একই সঙ্গে লেখাটিতে তিনি এ পর্যবেক্ষণও দেন যে, জাতীয় শোক বা আন্তর্জাতিক দুর্যোগের সময় এ ধরনের তৎপরতার বাড়বাড়ন্ত লক্ষ করা যায়।
সংবাদমাধ্যমের এই প্রবণতাকে গণমাধ্যম-তাত্ত্বিকেরা ‘পর্নোগ্রাফি অব গ্রিফ’ বা ‘শোকগত পর্নোগ্রাফি’ বলে উল্লেখ করেন। কথ্য ভাষায় একে আজকাল ‘গ্রিফ পর্ন’ বা ‘ট্রমা পর্ন’ও বলা হয়। যেখানে মানুষের ট্রমা, শোক, দুর্ভোগ বা দুর্দশার চিত্র তীব্রভাবে প্রদর্শন করা হয়। এখানে সাধারণত মিডিয়া কভারেজ হয় অতিবিবরণধর্মী, অণুপ্রবেশমূলক ও ‘ভয়্যুরিস্টিক’। ভয়্যুরিস্টিক ব্যাপারটি হলো অন্যের ব্যক্তিগত বা গোপনীয় দৃশ্য দেখে ফেলার মাধ্যমে পরিতৃপ্ত হওয়া। এক্ষেত্রে সংবাদের যাঁরা ভোক্তা, তাঁরা একধরনের ‘রিক্রিয়েশনাল গ্রিফ’ বা বিনোদনমূলক শোক অনুভব করেন। অর্থাৎ প্রকৃত ঘটনা বা ব্যক্তির সঙ্গে সম্পর্কহীন একরকম বদলি শোক সংবাদ-ভোক্তাদের মধ্যে ক্যাথারসিস ঘটায়। তীব্র আবেগ প্রকাশের মাধ্যমে তাঁরা অনুভব করেন মানসিক স্বস্তি।
এ প্রসঙ্গে ব্রিটিশ দৈনিক দ্য টাইমসের অতিথি লেখক ক্যারল সার্লার ‘দিজ নিউ অ্যান্ড পিকিউলার পর্নোগ্রাফি অব গ্রিফ’ নামে একটি প্রবন্ধ লিখেছেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘শোকের এই নতুন ও অদ্ভুত পর্নোগ্রাফি’কে অনেক সময় ‘উৎসর্গ’ নামে ডাকা হয়। কিন্তু অশালীনতম সত্য হলো, এই বদলি শোকই এখনকার নতুন পর্নোগ্রাফি; সবচেয়ে খারাপের মধ্যে জঘন্যতম…।’
এদিকে সংবাদমাধ্যমের পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়া এখন সয়লাব শিশুদের আইডি কার্ড, বইখাতা, জুতো, জামা, এমনকি তাদের পুড়ে যাওয়া দেহের ছবি ও ভিডিওতে। নেটিজেনরা বেশ দায়িত্ব নিয়েই এই গণ-ট্র্যাজেডিতে নিজেদের অংশগ্রহণের প্রমাণ রাখছেন। যেন এ বিষয়ে একটি স্ট্যাটাস, একটি স্টোরি, একটি রিল না দিলেই নয়।
এই নিদারুণ প্রদর্শনকামিতার উত্থাননির্ভর এক সমাজের কথা ফরাসি তাত্ত্বিক গায় ডিবর্ড বলেছিলেন গত শতকের সত্তরের দশকেই। ১৯৬৭ সালে প্রকাশিত তাঁর বই ‘দ্য সোসাইটি অব স্পেকটেকল’-এ তিনি লিখেছিলেন, ‘যে জীবন আগে যাপন করা হতো, তা এখন উপস্থাপনে সীমাবদ্ধ। মানুষের মিথষ্ক্রিয়াকে প্রতিস্থাপন করেছে ইমেজ বা ছবি।’
ডিবর্ড আরও বলেন যে, একটি ভোগবাদী সমাজে মানুষ সামাজিক জীবন যাপন করার চেয়ে জীবনকে দেখাতে বেশি উদ্গ্রীব। এই যে আকর্ষণীয় প্রদর্শন বা ‘স্পেকটেকল’, সেটাই মানুষকে কী প্রয়োজন এবং কী অবশ্যই পেতে হবে, তা ইমেজের মধ্য দিয়ে নির্ধারণ করে দেয়। ফলে আমাদের সামাজিক জীবন ক্রমশ আরও দূরে সরতে থাকে; এবং ক্রমাগত তা ‘পাওয়া’ থেকে সরে ধাবিত হয় ‘উপস্থাপন’–এর দিকে। এই বাস্তবতায় প্রকৃত জীবনের থেকে বানিয়ে তোলা জীবনই ‘সত্যি’ হয়ে উঠতে থাকে। আর এই বানিয়ে তোলা জীবনে তাৎপর্য হারাতে থাকে সব অনুভূতির প্রকৃত বোধ।
হায়! প্রক্সি বা বদলি অনুভূতি আর আবেগের এই সময়ে অ্যালগরিদমের ঈশ্বরের সামনে আমরা কি শুধুই নতজানু হয়ে থাকব!
লেখক: শিক্ষক, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস; সাংবাদিক
২১ জুলাই সোমবার আমাদের জীবনে দুর্যোগ নেমে এল। ঢাকার উত্তরার দিয়াবাড়ির মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান হলো বিধ্বস্ত। বেলা একটার খানিক পরে অবতরণের আগমুহূর্তে স্কুলের হায়দার আলী ভবনের সামনে বিধ্বস্ত হয় এফ-৭ ফাইটার বিমানটি।
১৭ ঘণ্টা আগেএকজন শিক্ষক হিসেবে ভাবছি, শ্লোকের মতো করে আমাদের মনে রাখতে হবে মাহরীনের অমোঘ উচ্চারণ, ‘দৌড়াও, ভয় পেও না, আমি আছি।’ পরম নির্ভরতা হয়ে এই ‘থাকা’, এই ‘আছিময়তা’ই হয়তো বড় শিক্ষকের গুণ।
১৮ ঘণ্টা আগেযিনি যত বড় নেতা, তাঁর গাড়ি তত আগে হাসপাতালের গেটে! তাঁর অনুসারী তত বেশি অ্যাম্বুলেন্স আটকে রাখে! তাঁর ফেসবুক পেজে তত দ্রুত পোস্ট!
২ দিন আগেদশকের পর দশক ধরে পশ্চিমা বিশ্ব যেভাবে বিভিন্ন দেশকে প্রথমে খলনায়ক বানায়, তারপর তাদের অধিকার কেড়ে নেয় এবং সবশেষে ‘বিশ্ব নিরাপত্তার জন্য হুমকি’ বলে ধ্বংসযজ্ঞ চালায়—এই পদ্ধতি (প্যাটার্ন) এখন আর অস্বীকার করার সুযোগ নেই।
৫ দিন আগে