leadT1ad

যে কারণে ভিপি প্রার্থী অমর্ত্যর প্রার্থিতা বাতিল করল জাকসু নির্বাচন কমিশন

স্ট্রিম সংবাদদাতাজাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশ : ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২০: ২৭
আপডেট : ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২১: ০৫
ভিপি প্রার্থী অমর্ত্য রায়ের নাম প্রত্যাহার করেছে জাকসু নির্বাচন কমিশন। সংগৃহীত ছবি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচনে সম্প্রীতির ঐক্য প্যানেলের সহ-সভাপতি (ভিপি) প্রার্থী অমর্ত্য রায় জনের নাম প্রত্যাহার করেছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ভোটার ও প্রার্থিতায় অযোগ্য বিবেচিত হওয়ায় ভোটার ও প্রার্থী তালিকা থেকে তাঁর নাম প্রত্যাহার হয়।

আজ শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে জাকসু নির্বাচন কমিশন কর্তৃক প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের যথাযথ কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭-২০১৮ শিক্ষাবর্ষে আ ফ ম কামালউদ্দিন হলের আওতায় প্রত্নতত্ত্ব বিভাগে ভতি হওয়া অমর্ত্য রায় জন জাকসুর গঠনতন্ত্রের ৪ ও ৮ ধারা মোতাবেক ভোটার ও প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য বিবেচিত হয়েছেন। তাই তাঁর নাম ভোটার ও প্রার্থী তালিকা থেকে প্রত্যাহার করা হলো।

গঠনতন্ত্রের ৪ ধারায় কী বলা আছে?

৪ ধারায় বলা আছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল নিয়মিত ও বৈধ শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী-সংসদের সদস্য বলে গণ্য হবেন। কেবল তারাই ভোটার বলে বিবেচিত হবেন এবং শিক্ষার্থী সংসদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।

তবে এক্ষেত্রে কিছু শর্তও আরোপ করা আছে। সেগুলো হলো—জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের যে সকল শিক্ষার্থী স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ৬ (৪+২) বছর এবং/অথবা স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে ২ (১+১) বছর ধরে অধ্যয় করছেন, কেবল সে সকল শিক্ষার্থীর নাম জাকসু ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে এবং তাঁরা ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন। তবে ফার্মেসি বিভাগের স্নাতক (সম্মান) কোর্সের মেয়াদ ৫ বছর হওয়ায় শিক্ষার্থীদের স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে (৫+২) ৭ বছর যাবৎ অধ্যয়ন করার অনুমতি রয়েছে। এবং চারুকলা বিভাগে স্নাতকোত্তর শ্রেণির মেয়াদ ১.৫ বছর হওয়ায় তাদের (২+১) ৩ বছর যাবৎ অধ্যয়ন করার অনুমতি রয়েছে। সে কারণে ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থীগণ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ৭ বছর এবং চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে ৩ বছর মেয়াদ পাবে। পরবর্তী সময়ে অন্য কোনো বিভাগ ও ইনস্টিটিউটে স্নাতক/স্নাতকোত্তর পর্যায়ে শিক্ষাবর্ষের কাল বৃদ্ধি ঘটলে সে ক্ষেত্রেও অনুরূপ সুযোগ প্রযোজ্য হবে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত এমফিল, পিএইচডি, উইকেন্ড ও ইভিনিং প্রোগ্রামের শিক্ষার্থী এবং বিভিন্ন ব্যাচের অনিয়মিত শিক্ষার্থীদের নাম জাকসুর ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে না। ইনস্টিটিউট অব রিমোট সেনসিং এন্ড জিআইএস-এর শিক্ষার্থীগণ বিশেষায়িত মাস্টার্সে অধ্যয়ন করায় তারা ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হবেন না। এছাড়া যে সকল শিক্ষার্থী আইবিএ-জেইউতে নিয়মিত কোর্সে স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে অধ্যয়ন না করেও মাস্টার্সে (স্নাতকোত্তর) শ্রেণিতে অধ্যয়ন করছে তারা জাকসু নির্বাচনে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন না।

বিধিমালার ৮ ধারায় বলা হয়েছে—

ক. প্রার্থিতা: বিশ্ববিদ্যালয় ও হলের যাবতীয় পাওনা পরিশোধ করা সাপেক্ষে সংসদে ও যেকেনো নিয়মিত সদস্য নির্বাচনে অংশগ্রহণ ও ভোট প্রদান করতে পারবে। সহ-সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (নারী), যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (পুরুষ), শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক, পরিবেশ ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক, সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক, সাংস্কৃতিক সম্পাদক, সহ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক, নাট্য সম্পাদক, ক্রীড়া সম্পাদক, সহ-ক্রীড়া সম্পাদক (নারী), সহ-ক্রীড়া সম্পাদক (পুরুষ), তথ্য-প্রযুক্তি ও গ্রন্থাগার সম্পাদক, সমাজসেবা ও মানবসম্পদ উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক, সহ-সমাজসেবা ও মানবসম্পদ উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক (নারী), সহ-সমাজসেবা ও মানবসম্পদ উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক (পুরুষ), স্বাস্থ্য ও খাদ্যনিরাপত্তা বিষয়ক সম্পাদক, পরিবহন ও যোগাযোগ সম্পাদক এবং কার্যকরী পরিষদের ৬টি (ছয়টি) সদস্য পদে (৩ জন পুরুষ ও ৩জন নারী) নির্বাচনের জন্যে অংশ গ্রহণের যোগ্য। কোনো প্রার্থীই একাধিক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না।

সার্বিক বিষয়ে অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার বলেন, ‘এই বিষয়টিতে আসলে সেভাবে বলার কিছু নেই। আমরা একজন প্রার্থীর বিরুদ্ধে তার অনিয়মিত ছাত্র হওয়ার অভিযোগ পেয়েছি। এরপর জাকসুর গঠনতন্ত্র আমাদের যা বলে, সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়েছি।’

এ বিষয়ে অমর্ত্য রায় জন স্ট্রিমকে বলেন, ‘আমরা ফুল প্যানেলে এখন এটা নিয়ে আলোচনা করবো। দেশের যে আইন আছে, সেই আইন অনুযায়ীই আমরা আগাবো এবং ব্যাপারটা সুরাহা করার চেষ্টা করবো।’

প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে নির্বাচন কমিশন একজন সদস্যের স্বাক্ষর নেই

গত ২৯ আগস্ট জাকসু নির্বাচনের চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হওয়ার পর এই প্রথম জাকসু নির্বাচন কমিশন কোনো প্রার্থীর নাম প্রত্যাহার করেছে। এই নাম প্রত্যাহারের বিষয়ে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে জাকসু নির্বাচন কমিশনের ৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির মধ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মো. মনিরুজ্জামান, সদস্য সচিব এ কে এম রাশিদুল আলম, সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ মাফরুহী সাত্তার, সদস্য অধ্যাপক ড. খো: লুৎফুল এলাহীর স্বাক্ষর রয়েছে। তবে বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর নেই কমিশনের সদস্য ড. রেজওয়ানা করিম স্নিগ্ধার। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও বেগম সুফিয়া কামাল হলের প্রভোস্ট।

স্বাক্ষর না থাকার ব্যাপারে ড. রেজওয়ানা করিম স্নিগ্ধার সঙ্গে যোগাযোগ করতে তাঁর মুঠোফোন নম্বরে বেশ কয়েকবার কল করা হয়। তবে রিসিভ না হওয়ায় কথা বলা যায়নি।

এ ব্যাপারে জাকসু নির্বাচন কমিশনের সদস্য সচিব অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, ‘স্নিগ্ধা ম্যাডাম অসুস্থতার কারণে আজ উপস্থিত থাকতে পারেননি। সে কারণে বিজ্ঞপ্তিতে তার স্বাক্ষর নেই।’

Ad 300x250

সম্পর্কিত