স্ট্রিম সংবাদদাতা
নীলফামারীর উত্তরা এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোনে (ইপিজেড) শ্রমিক নিহতের ঘটনায় বুধবার দিনভর অচলাবস্থা বিরাজ করেছে। এ দিন সব কারখানা বন্ধ রাখা হয় এবং পুরো এলাকায় নেওয়া হয় কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা। ফলে নিত্যদিনের জনসমাগমে ভরপুর এলাকা পরিণত হয় জনশূন্য নগরীতে।
গত মঙ্গলবার (২সেপ্টেম্বর) সকালে এভারগ্রিন নামের একটি কারখানার শ্রমিক ছাঁটাই ও অনির্দিষ্টকালের জন্য হঠাৎ বন্ধের নোটিশ ঘিরে উত্তেজনার সূত্রপাত হয়। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা ইপিজেডের সামনের নীলফামারী–সৈয়দপুর সড়ক অবরোধ করলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন ইকু ইন্টারন্যাশনাল নিটিং কারখানার শ্রমিক মো. হাবিব ইসলাম (২১)। তিনি সদর উপজেলার সংগলশী ইউনিয়নের মাছিরচাক গ্রামের কৃষক দুলাল হোসেনের ছেলে।
শ্রমিকদের সহকর্মী মিলন ইসলাম জানান, রাতের শিফট শেষে কারখানা থেকে বের হওয়ার সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন হাবিব।
ওই দিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া চলতে থাকে। প্রায় সাড়ে ছয় ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এতে নিহত ছাড়াও ২১ জন আহত হন, তাঁদের মধ্যে শ্রমিক, পুলিশ, আনসার, সেনা ও বেপজার সদস্য রয়েছেন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ইপিজেড এলাকায় মোতায়েন করা হয় সেনা, পুলিশ ও বিজিবির যৌথ বাহিনী। বুধবার বিকেল পর্যন্ত তাদের দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে।
এ ঘটনায় বেপজার পক্ষ থেকে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো মামলা দায়ের হয়নি, শুধু একটি সাধারণ ডায়েরি করেছে পুলিশ। নীলফামারী সদর থানার ওসি এম আর সাঈদ বলেন, ‘মামলা করার প্রস্তুতি চলছে। সংঘর্ষে আমাদের সাতজন সদস্য আহত হয়েছেন।’
বুধবার ( ৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ইপিজেড ভেতরে জেলা প্রশাসন, বেপজা, কারখানা মালিক, শ্রমিক প্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতাদের সমন্বয়ে বৈঠক শুরু হয়। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান বলেন, শ্রমিকদের ২৩ দফা দাবি পর্যালোচনা করা হয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, বৃহস্পতিবার থেকে কারখানাগুলো চালু হতে পারে।
এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন কয়েকজন শ্রমিক। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন দেশবন্ধু পোশাক কারখানার শ্রমিক শাহীন আলম (২৬) ও ম্যাজেন বিডি ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেডের কর্মী শামীম হোসেন।
শাহীন নীলফামারীর চংড়া কিসামতডাঙ্গী তেলিপাড়া গ্রামের দিনমজুর রজব আলীর ছেলে। প্রতিদিনের মতো মঙ্গলবার সকালে কাজে যোগ দিতে গিয়ে তিনি গুলিবিদ্ধ হন। হাসপাতালে শয্যাশায়ী অবস্থায় তিনি বলেন, ‘অফিস টাইমে গেটে যাওয়ামাত্রই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। একসময় সেনাবাহিনী গুলি চালালে আমার উরুতে লাগে। এখনও গুলি শরীরে আটকে আছে, প্রচণ্ড ব্যথা।’
শামীম হোসেনের ভাই ইমরান জানান, শামীমও কাজে যেতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন। অস্ত্রোপচারে তাঁর পায়ের মাংসপেশি ছিদ্র হয়ে গুলি বের করা হয়েছে।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার মাহাবুব হোসেন মানিক জানান, এই ঘটনায় তিনজন শ্রমিক এসেছিলেন। তাঁদের একজন নুরনবী রাতেই চলে গেছেন। শাহীন ও শামীমের অস্ত্রোপচার হয়েছে, দুজনই ৬ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন।
বাংলাদেশ লেবার স্টাডিজের (বিলস) নির্বাহী পরিচালক ও শ্রম সংস্কার কমিশন–২০২৪-এর প্রধান সুলতান উদ্দিন আহম্মদ এক বিবৃতিতে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান। তিনি আহত শ্রমিকদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা, নিহত শ্রমিকের পরিবারের ক্ষতিপূরণ দেওয়া এবং ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত করে দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের দাবি জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শ্রমিক ছাঁটাই বা কারখানা বন্ধ কোনোভাবেই শ্রম আইন পরিপন্থীভাবে হতে পারে না। এটি অবশ্যই শিল্পসম্পর্কিত আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে করতে হবে। অথচ ন্যায্য দাবি-দাওয়া উত্থাপনকারী শ্রমিকদের ওপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গুলি চালিয়েছে—যা মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল।’
সুলতান উদ্দিন আহম্মদ বলেন,‘লক্ষ্য করা যাচ্ছে, প্রায়ই শ্রমিক আন্দোলনকে বলপ্রয়োগের মাধ্যমে দমন করা হচ্ছে। অন্যদিকে, শ্রমিকদের দাবি-দাওয়ার প্রতিকার না করে অনেক সময় কর্তৃপক্ষ হঠাৎ করে কারখানা বন্ধ ঘোষণা করছে। এতে শ্রমিকদের জীবিকা হুমকির মুখে পড়ছে এবং সংঘাতের ঝুঁকি বাড়ছে। আমরা জোর দাবি জানাই, শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি দ্রুত নিষ্পত্তি করতে হবে, আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে এবং এ ধরনের সংঘর্ষ আর যেন না ঘটে তা দেখতে হবে।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, শ্রমিকদের ওপর গুলি চালানো কেবল মানবাধিকার লঙ্ঘন নয়, এটি অগ্রহণযোগ্য ও শ্রমবান্ধব অর্থনীতির পরিপন্থী। বিলস দ্রুত এ ঘটনার তদন্ত এবং শ্রম ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়েছে।
নীলফামারীর উত্তরা এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোনে (ইপিজেড) শ্রমিক নিহতের ঘটনায় বুধবার দিনভর অচলাবস্থা বিরাজ করেছে। এ দিন সব কারখানা বন্ধ রাখা হয় এবং পুরো এলাকায় নেওয়া হয় কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা। ফলে নিত্যদিনের জনসমাগমে ভরপুর এলাকা পরিণত হয় জনশূন্য নগরীতে।
গত মঙ্গলবার (২সেপ্টেম্বর) সকালে এভারগ্রিন নামের একটি কারখানার শ্রমিক ছাঁটাই ও অনির্দিষ্টকালের জন্য হঠাৎ বন্ধের নোটিশ ঘিরে উত্তেজনার সূত্রপাত হয়। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা ইপিজেডের সামনের নীলফামারী–সৈয়দপুর সড়ক অবরোধ করলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন ইকু ইন্টারন্যাশনাল নিটিং কারখানার শ্রমিক মো. হাবিব ইসলাম (২১)। তিনি সদর উপজেলার সংগলশী ইউনিয়নের মাছিরচাক গ্রামের কৃষক দুলাল হোসেনের ছেলে।
শ্রমিকদের সহকর্মী মিলন ইসলাম জানান, রাতের শিফট শেষে কারখানা থেকে বের হওয়ার সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন হাবিব।
ওই দিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া চলতে থাকে। প্রায় সাড়ে ছয় ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এতে নিহত ছাড়াও ২১ জন আহত হন, তাঁদের মধ্যে শ্রমিক, পুলিশ, আনসার, সেনা ও বেপজার সদস্য রয়েছেন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ইপিজেড এলাকায় মোতায়েন করা হয় সেনা, পুলিশ ও বিজিবির যৌথ বাহিনী। বুধবার বিকেল পর্যন্ত তাদের দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে।
এ ঘটনায় বেপজার পক্ষ থেকে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো মামলা দায়ের হয়নি, শুধু একটি সাধারণ ডায়েরি করেছে পুলিশ। নীলফামারী সদর থানার ওসি এম আর সাঈদ বলেন, ‘মামলা করার প্রস্তুতি চলছে। সংঘর্ষে আমাদের সাতজন সদস্য আহত হয়েছেন।’
বুধবার ( ৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ইপিজেড ভেতরে জেলা প্রশাসন, বেপজা, কারখানা মালিক, শ্রমিক প্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতাদের সমন্বয়ে বৈঠক শুরু হয়। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান বলেন, শ্রমিকদের ২৩ দফা দাবি পর্যালোচনা করা হয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, বৃহস্পতিবার থেকে কারখানাগুলো চালু হতে পারে।
এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন কয়েকজন শ্রমিক। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন দেশবন্ধু পোশাক কারখানার শ্রমিক শাহীন আলম (২৬) ও ম্যাজেন বিডি ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেডের কর্মী শামীম হোসেন।
শাহীন নীলফামারীর চংড়া কিসামতডাঙ্গী তেলিপাড়া গ্রামের দিনমজুর রজব আলীর ছেলে। প্রতিদিনের মতো মঙ্গলবার সকালে কাজে যোগ দিতে গিয়ে তিনি গুলিবিদ্ধ হন। হাসপাতালে শয্যাশায়ী অবস্থায় তিনি বলেন, ‘অফিস টাইমে গেটে যাওয়ামাত্রই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। একসময় সেনাবাহিনী গুলি চালালে আমার উরুতে লাগে। এখনও গুলি শরীরে আটকে আছে, প্রচণ্ড ব্যথা।’
শামীম হোসেনের ভাই ইমরান জানান, শামীমও কাজে যেতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন। অস্ত্রোপচারে তাঁর পায়ের মাংসপেশি ছিদ্র হয়ে গুলি বের করা হয়েছে।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার মাহাবুব হোসেন মানিক জানান, এই ঘটনায় তিনজন শ্রমিক এসেছিলেন। তাঁদের একজন নুরনবী রাতেই চলে গেছেন। শাহীন ও শামীমের অস্ত্রোপচার হয়েছে, দুজনই ৬ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন।
বাংলাদেশ লেবার স্টাডিজের (বিলস) নির্বাহী পরিচালক ও শ্রম সংস্কার কমিশন–২০২৪-এর প্রধান সুলতান উদ্দিন আহম্মদ এক বিবৃতিতে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান। তিনি আহত শ্রমিকদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা, নিহত শ্রমিকের পরিবারের ক্ষতিপূরণ দেওয়া এবং ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত করে দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের দাবি জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শ্রমিক ছাঁটাই বা কারখানা বন্ধ কোনোভাবেই শ্রম আইন পরিপন্থীভাবে হতে পারে না। এটি অবশ্যই শিল্পসম্পর্কিত আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে করতে হবে। অথচ ন্যায্য দাবি-দাওয়া উত্থাপনকারী শ্রমিকদের ওপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গুলি চালিয়েছে—যা মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল।’
সুলতান উদ্দিন আহম্মদ বলেন,‘লক্ষ্য করা যাচ্ছে, প্রায়ই শ্রমিক আন্দোলনকে বলপ্রয়োগের মাধ্যমে দমন করা হচ্ছে। অন্যদিকে, শ্রমিকদের দাবি-দাওয়ার প্রতিকার না করে অনেক সময় কর্তৃপক্ষ হঠাৎ করে কারখানা বন্ধ ঘোষণা করছে। এতে শ্রমিকদের জীবিকা হুমকির মুখে পড়ছে এবং সংঘাতের ঝুঁকি বাড়ছে। আমরা জোর দাবি জানাই, শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি দ্রুত নিষ্পত্তি করতে হবে, আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে এবং এ ধরনের সংঘর্ষ আর যেন না ঘটে তা দেখতে হবে।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, শ্রমিকদের ওপর গুলি চালানো কেবল মানবাধিকার লঙ্ঘন নয়, এটি অগ্রহণযোগ্য ও শ্রমবান্ধব অর্থনীতির পরিপন্থী। বিলস দ্রুত এ ঘটনার তদন্ত এবং শ্রম ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়েছে।
গাজীপুরের টঙ্গীতে ম্যানহোলে পড়ে ফারিয়া তাছনিম জ্যোতি (৩২) নামে এক নারীর মৃত্যুর ঘটনা ৯০ দিনের মধ্যে তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। স্থানীয় সরকার সচিব, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক, গাজীপুর সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ, সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলীকে এই প্রতিবেদন দাখিল করতে
২ ঘণ্টা আগেজুলাই অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দিন দেশের বিভিন্ন থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র ব্যবহার করে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নাশকতা হওয়ার আশঙ্কা করছে সরকার। গত ৬ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় এই আশঙ্কার কথা জানানো হয়েছে। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ করাসহ
২ ঘণ্টা আগে