স্ট্রিম ডেস্ক

দুই দিনের ব্যবধানে বাংলাদেশে চারবার ভূমিকম্প হয়েছে। এতে ১০ জনের প্রাণহানির সঙ্গে অসংখ্য মানুষ আহত হয়েছেন। বহু ভবন ও সড়কে ফাটল দেখা দিয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে সামনে আসছে ভূকম্পন সহনীয় ভবন নির্মাণ।
সাধারণভাবে মনে করা হয়, একটি বাড়ির ভিত যত বেশি অনড়, ততই তা শক্তিশালী হবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো– কঠিন ভিতই ভূমিকম্পে ভবন ধসের সবচেয়ে বড় কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কারণ শক্তির প্রবাহ থেকে বাঁচার কোনো উপায় নেই।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ ভূমিকম্প হলো ভূপৃষ্ঠের গভীরে সঞ্চিত শক্তির হঠাৎ মুক্তি পাওয়ার ফল। এই শক্তি ভূপৃষ্ঠে তরঙ্গের মতো ছড়িয়ে পড়লে মাটি কাঁপতে থাকে এবং ভবনের ভিতও নড়বড়ে হয়ে ধসে পড়ে। তবে এই সমস্যা সমাধানে আধুনিক ভবন নির্মাণ প্রকৌশলে যুক্ত হয়েছে ‘বেস আইসোলেশন’ প্রযুক্তি। এটি ভবনকে ভূমিকম্পের সরাসরি কম্পন থেকে আলাদা করে দেয়। বিশ্বের ভূমিকম্পপ্রবণ দেশে এটি এখন জীবনরক্ষাকারী নির্মাণ পদ্ধতি হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
নমনীয় ইস্পাত, রাবার ও সিসার মতো উপাদান ব্যবহারের মাধ্যমে ভবনের নিচে মাটিতে একটি ফ্লেক্সিবল ফাউন্ডেশন করা হয়, যা বেস আইসোলেশন নামে পরিচিত। এ পদ্ধতির মাধ্যমে একটি ভবনের আসল ভিতকে মাটির ওপরে উঠিয়ে দেওয়া হয়। ভূমিকম্পের সময় মাটির ভেতরে থাকা ফ্লেক্সিবল ফাউন্ডেশন নড়াচড়া করলেও ভবনের মূল কাঠামো স্থির থাকে। ফ্লেক্সিবল ফাউন্ডেশনের উদ্দেশ্য ভূমিকম্পের শক্তিকে কাজে লাগানো। অর্থাৎ ভূমিকম্পের সময় ভবনের নিচে থাকা ফ্লেক্সিবল ফাউন্ডেশন কাঁপবে ভূমিকম্পের বল ব্যবহার করে। ফলে মূল ভবনে কোনো প্রভাব ফেলতে পারবে না ভূকম্পন।
সিসা রাবার বেয়ারিং : সিসা কোরের সঙ্গে একসঙ্গে বন্ড করা স্টিল প্লেট ও রাবারের স্তর দিয়ে তৈরি। সিসা শক্তি না হারিয়ে বেয়ারিংকে ধীরে ধীরে ইল্ড করতে দেয়।
ফ্রিকশন পেন্ডুলাম সিস্টেম : বিল্ডিং বেস এবং মাটির মধ্যে একটি স্পষ্ট স্লাইডার দিয়ে গঠিত। স্লাইডার নড়াচড়া করার মাধ্যমে ভূমিকম্পের এনার্জি শোষণ করে।
ইলাস্টোমেরিক আইসোলেটর : পর্যায়ক্রমে রাবার এবং ইস্পাতের শক্তভাবে বন্ড করা স্তর দিয়ে গঠিত। রাবারের স্তরগুলো ফ্লেক্স এবং ভাইব্রেশন ড্যাম্পেন ঠেকাতে সাহায্য করে।
হাই-ড্যাম্পিং রাবার আইসোলেটর : এগুলো নরম রাবার ব্যবহার করে কার্যকরভাবে সিসমিক এনার্জি শোষণ করে।
বেস আইসোলেশনে ভবনের মূল কাঠামোকে ভূমি থেকে খানিকটা বিচ্ছিন্ন করা হয়। মাটি ও কাঠামোর মধ্যে থাকে নমনীয় স্তর। এটি ভূমিকম্পের সময় ভবনকে একটি স্লাইডিং প্ল্যাটফর্মের মতো আচরণ করতে সাহায্য করে।
মাটির নিচে থাকা আইসোলেটর ব্লক প্রথমে এই ঝাঁকুনি গ্রহণ করে। রবার, ইস্পাত ও সিসার সংমিশ্রণ ভূমিকম্পের বলকে ‘বাঁকিয়ে’, ‘খেয়ে’ এবং ‘অপচয়’ করে। ফলে শক্তির একটি বড় অংশ ভবনের ওপর উঠতে পারে না। মাটির কম্পন নিচে শোষিত হলেও উপরের কাঠামোতে তা খুব সামান্য পৌঁছায়। কারণ বেশি ক্ষতি হয় যখন কঠিন কাঠামো জোরে দুলতে থাকে। বেস আইসোলেশন সেই দুলুনি প্রতিরোধ করে।
ভবনে কম্পন কম হলে ধ্বংসও কম হয়। ভূমিকম্পপ্রবণ দেশে হাজার হাজার প্রাণহানি এভাবে রোধ করা সম্ভব হচ্ছে। দেয়াল, পিলার, কলাম, বিম– সব কিছুর ওপর চাপ কম পড়ে। ফলে ভবনের ক্ষতিও কম হয়। এই পদ্ধতিতে চিকিৎসাকেন্দ্র, স্কুল, সরকারি ভবন– সবচেয়ে বেশি সুরক্ষা পায়। অনেক দেশে বেস আইসোলেশন ছাড়া হাসপাতাল তৈরি করাই নিষিদ্ধ।
শুরুতে কিছুটা ব্যয়বহুল হলেও ভবিষ্যতে বড় ধরনের মেরামত বা পুনর্নির্মাণের খরচ বাঁচিয়ে দেয়। ফ্লেক্সিবল ভিত্তি ভূমিকম্পের বল ব্যবহার করে নিজেই নড়ে। ফলে স্থাপত্য ভেঙে পড়ে না। এটি প্রকৌশলের এক অনন্য বুদ্ধিমত্তা।
বেস আইসোলেশন সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হচ্ছে জাপানে। নিউজিল্যান্ডের পার্লামেন্ট ভবন, ইতালি ও যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় বিদ্যালয় এবং হাসপাতাল নির্মাণে এটি বাধ্যতামূলক।
বাংলাদেশ সক্রিয় ফল্ট লাইনের কাছাকাছি অবস্থান করছে। ফলে ভবিষ্যতে বড় ভূমিকম্পের ঝুঁকি রয়েছে।
উচ্চ ভবনের সংখ্যা যেভাবে বাড়ছে, তাতে বেস আইসোলেশন এখনই বাধ্যতামূলক করলে নগর জীবন অনেক বেশি নিরাপদ হবে। বিশেষ করে বহুতল ভবন, হাসপাতাল, স্কুল-কলেজ, গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ও বাণিজ্যিক ভবনে এ প্রযুক্তির ব্যবহার জরুরি।

দুই দিনের ব্যবধানে বাংলাদেশে চারবার ভূমিকম্প হয়েছে। এতে ১০ জনের প্রাণহানির সঙ্গে অসংখ্য মানুষ আহত হয়েছেন। বহু ভবন ও সড়কে ফাটল দেখা দিয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে সামনে আসছে ভূকম্পন সহনীয় ভবন নির্মাণ।
সাধারণভাবে মনে করা হয়, একটি বাড়ির ভিত যত বেশি অনড়, ততই তা শক্তিশালী হবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো– কঠিন ভিতই ভূমিকম্পে ভবন ধসের সবচেয়ে বড় কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কারণ শক্তির প্রবাহ থেকে বাঁচার কোনো উপায় নেই।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ ভূমিকম্প হলো ভূপৃষ্ঠের গভীরে সঞ্চিত শক্তির হঠাৎ মুক্তি পাওয়ার ফল। এই শক্তি ভূপৃষ্ঠে তরঙ্গের মতো ছড়িয়ে পড়লে মাটি কাঁপতে থাকে এবং ভবনের ভিতও নড়বড়ে হয়ে ধসে পড়ে। তবে এই সমস্যা সমাধানে আধুনিক ভবন নির্মাণ প্রকৌশলে যুক্ত হয়েছে ‘বেস আইসোলেশন’ প্রযুক্তি। এটি ভবনকে ভূমিকম্পের সরাসরি কম্পন থেকে আলাদা করে দেয়। বিশ্বের ভূমিকম্পপ্রবণ দেশে এটি এখন জীবনরক্ষাকারী নির্মাণ পদ্ধতি হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
নমনীয় ইস্পাত, রাবার ও সিসার মতো উপাদান ব্যবহারের মাধ্যমে ভবনের নিচে মাটিতে একটি ফ্লেক্সিবল ফাউন্ডেশন করা হয়, যা বেস আইসোলেশন নামে পরিচিত। এ পদ্ধতির মাধ্যমে একটি ভবনের আসল ভিতকে মাটির ওপরে উঠিয়ে দেওয়া হয়। ভূমিকম্পের সময় মাটির ভেতরে থাকা ফ্লেক্সিবল ফাউন্ডেশন নড়াচড়া করলেও ভবনের মূল কাঠামো স্থির থাকে। ফ্লেক্সিবল ফাউন্ডেশনের উদ্দেশ্য ভূমিকম্পের শক্তিকে কাজে লাগানো। অর্থাৎ ভূমিকম্পের সময় ভবনের নিচে থাকা ফ্লেক্সিবল ফাউন্ডেশন কাঁপবে ভূমিকম্পের বল ব্যবহার করে। ফলে মূল ভবনে কোনো প্রভাব ফেলতে পারবে না ভূকম্পন।
সিসা রাবার বেয়ারিং : সিসা কোরের সঙ্গে একসঙ্গে বন্ড করা স্টিল প্লেট ও রাবারের স্তর দিয়ে তৈরি। সিসা শক্তি না হারিয়ে বেয়ারিংকে ধীরে ধীরে ইল্ড করতে দেয়।
ফ্রিকশন পেন্ডুলাম সিস্টেম : বিল্ডিং বেস এবং মাটির মধ্যে একটি স্পষ্ট স্লাইডার দিয়ে গঠিত। স্লাইডার নড়াচড়া করার মাধ্যমে ভূমিকম্পের এনার্জি শোষণ করে।
ইলাস্টোমেরিক আইসোলেটর : পর্যায়ক্রমে রাবার এবং ইস্পাতের শক্তভাবে বন্ড করা স্তর দিয়ে গঠিত। রাবারের স্তরগুলো ফ্লেক্স এবং ভাইব্রেশন ড্যাম্পেন ঠেকাতে সাহায্য করে।
হাই-ড্যাম্পিং রাবার আইসোলেটর : এগুলো নরম রাবার ব্যবহার করে কার্যকরভাবে সিসমিক এনার্জি শোষণ করে।
বেস আইসোলেশনে ভবনের মূল কাঠামোকে ভূমি থেকে খানিকটা বিচ্ছিন্ন করা হয়। মাটি ও কাঠামোর মধ্যে থাকে নমনীয় স্তর। এটি ভূমিকম্পের সময় ভবনকে একটি স্লাইডিং প্ল্যাটফর্মের মতো আচরণ করতে সাহায্য করে।
মাটির নিচে থাকা আইসোলেটর ব্লক প্রথমে এই ঝাঁকুনি গ্রহণ করে। রবার, ইস্পাত ও সিসার সংমিশ্রণ ভূমিকম্পের বলকে ‘বাঁকিয়ে’, ‘খেয়ে’ এবং ‘অপচয়’ করে। ফলে শক্তির একটি বড় অংশ ভবনের ওপর উঠতে পারে না। মাটির কম্পন নিচে শোষিত হলেও উপরের কাঠামোতে তা খুব সামান্য পৌঁছায়। কারণ বেশি ক্ষতি হয় যখন কঠিন কাঠামো জোরে দুলতে থাকে। বেস আইসোলেশন সেই দুলুনি প্রতিরোধ করে।
ভবনে কম্পন কম হলে ধ্বংসও কম হয়। ভূমিকম্পপ্রবণ দেশে হাজার হাজার প্রাণহানি এভাবে রোধ করা সম্ভব হচ্ছে। দেয়াল, পিলার, কলাম, বিম– সব কিছুর ওপর চাপ কম পড়ে। ফলে ভবনের ক্ষতিও কম হয়। এই পদ্ধতিতে চিকিৎসাকেন্দ্র, স্কুল, সরকারি ভবন– সবচেয়ে বেশি সুরক্ষা পায়। অনেক দেশে বেস আইসোলেশন ছাড়া হাসপাতাল তৈরি করাই নিষিদ্ধ।
শুরুতে কিছুটা ব্যয়বহুল হলেও ভবিষ্যতে বড় ধরনের মেরামত বা পুনর্নির্মাণের খরচ বাঁচিয়ে দেয়। ফ্লেক্সিবল ভিত্তি ভূমিকম্পের বল ব্যবহার করে নিজেই নড়ে। ফলে স্থাপত্য ভেঙে পড়ে না। এটি প্রকৌশলের এক অনন্য বুদ্ধিমত্তা।
বেস আইসোলেশন সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হচ্ছে জাপানে। নিউজিল্যান্ডের পার্লামেন্ট ভবন, ইতালি ও যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় বিদ্যালয় এবং হাসপাতাল নির্মাণে এটি বাধ্যতামূলক।
বাংলাদেশ সক্রিয় ফল্ট লাইনের কাছাকাছি অবস্থান করছে। ফলে ভবিষ্যতে বড় ভূমিকম্পের ঝুঁকি রয়েছে।
উচ্চ ভবনের সংখ্যা যেভাবে বাড়ছে, তাতে বেস আইসোলেশন এখনই বাধ্যতামূলক করলে নগর জীবন অনেক বেশি নিরাপদ হবে। বিশেষ করে বহুতল ভবন, হাসপাতাল, স্কুল-কলেজ, গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ও বাণিজ্যিক ভবনে এ প্রযুক্তির ব্যবহার জরুরি।

রাজধানী ঢাকায় গত ৩২ ঘণ্টায় চারটি ভূমিকম্প নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে। নরসিংদীর মাধবদীতে মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্পের পর আরও তিনটি কম্পন—সবকটির উৎপত্তি দেশের ভেতরেই। এতে মানুষের মৃত্যু, হতাহত ও আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি আবার আলোচনায় এসেছে।
১ few সেকেন্ড আগে
রাজধানীতে দুই দিনের মধ্যে চারবার ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার পর ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কর্তৃপক্ষ। আগামীকাল রোববার (২৩ নভেম্বর) সব ধরনের শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ রাখার তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের উপ-পরিচালক ফররুখ মাহমুদ।
২০ মিনিট আগে
মেয়ে মারজিয়া সুলতানার জন্য হয়রান বাবা মোহাম্মদ সুলতান। হাসপাতাল থেকে হাসপাতাল ঘুরে পাননি জীবিত কিংবা মৃত। বাবার মন মানে না। তাই নিজেই সন্ধানে যান পুড়ে যাওয়া পোশাক কারখানায়।
২ ঘণ্টা আগে
ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলের পর এবার রিখটার স্কেলে মাত্রার তথ্যে ভুল করেছে আবহাওয়া অফিস। এ নিয়ে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে দুইবার ভুল তথ্য দিল সরকারি প্রতিষ্ঠানটি।
২ ঘণ্টা আগে