leadT1ad

যুক্তরাজ্যে অভিবাসন আরও কঠোর হচ্ছে, ২০ বছর অপেক্ষা করতে হবে আশ্রয়প্রার্থীদের

স্ট্রিম ডেস্ক
স্ট্রিম ডেস্ক
ঢাকা

সোমবার ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাবানা মাহমুদ আশ্রয় ব্যবস্থায় বড় ধরনের সংস্কারের ঘোষণা দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। ছবি: বিবিসি।

যুক্তরাজ্যে আশ্রয়প্রাপ্ত শরণার্থীদের স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি পেতে এখন ২০ বছর অপেক্ষা করতে হবে। দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাবানা মাহমুদ সোমবার (১৭ নভেম্বর) যে সংস্কার-প্যাকেজ ঘোষণা করবেন, তাতে এই নীতি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

এই বড় ধরনের সংস্কার সরকারের সেই প্রচেষ্টার অংশ, যার লক্ষ্য ছোট নৌকায় সমুদ্রপথে আগমন কমানো এবং মোট আশ্রয়-আবেদনের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করা।

নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী, যারা আশ্রয় পাবেন, তারা যুক্তরাজ্যে শুধুমাত্র সাময়িকভাবে থাকার অনুমতি পাবেন। তাদের শরণার্থী মর্যাদা নিয়মিত পর্যালোচনা করা হবে। পর্যালোচনায় যদি দেখা যায় তাদের নিজ দেশ নিরাপদ হয়ে গেছে, তবে তাদের দেশে ফিরে যেতে বলা হবে।

বর্তমানে শরণার্থী মর্যাদা পাঁচ বছরের জন্য দেওয়া হয় এবং তারপর স্থায়ী বসবাসের অনুমতি চাওয়া যায়।

নতুন প্রস্তাবে প্রাথমিক পাঁচ বছরের মেয়াদ কমিয়ে আড়াই বছর করা হবে। এরপর নির্দিষ্ট সময় পরপর শরণার্থী মর্যাদা পুনরায় যাচাই করা হবে।

তবে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি পাওয়ার সময়কাল পাঁচ বছর থেকে বাড়িয়ে ২০ বছর করা হবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাবানা মাহমুদ সানডে টাইমসকে বলেন, এই সংস্কারগুলো মূলত একটি বার্তা দিতেই তৈরি—‘অবৈধভাবে এই দেশে আসবেন না, নৌকায় চড়বেন না।’

তিনি আরও বলেন, অবৈধ অভিবাসন ‘আমাদের দেশকে বিভক্ত করছে’ এবং দেশের ঐক্য রক্ষা করা সরকারের দায়িত্ব। তার ভাষায়, ‘এ সমস্যার সমাধান না করলে আমাদের দেশ আরও বিভক্ত হয়ে পড়বে।’

এই নীতি ডেনমার্ক থেকে অনুকরণ করা হয়েছে। ডেনমার্কে সমাজতান্ত্রিক দল নেতৃত্বাধীন সরকার ইউরোপের অন্যতম কঠোর আশ্রয় ও অভিবাসন ব্যবস্থা পরিচালনা করছে। সেখানে শরণার্থীদের সাধারণত দুই বছরের সাময়িক বসবাসের অনুমতি দেওয়া হয় এবং মেয়াদ শেষ হলে কার্যত নতুন করে আশ্রয়ের আবেদন করতে হয়।

মাহমুদের এই উদ্যোগ লেবার পার্টির কিছু এমপি’র বিরোধিতার মুখে পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

লিবারেল ডেমোক্র্যাটদের স্বরাষ্ট্রবিষয়ক মুখপাত্র ম্যাক্স উইলকিনসন বলেছেন, কনজারভেটিভদের তৈরি ‘অবিন্যস্ত আশ্রয় ব্যবস্থা’ ঠিক করতে নতুন উপায় খোঁজা সরকারের পক্ষে সঠিক পদক্ষেপ।

তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, লেবার পার্টি যেন এই ভেবে ভুল না করে যে এমন ব্যবস্থা দ্রুত দাবি নিষ্পত্তির বিকল্প হতে পারে। কারণ যাদের থাকার অধিকার নেই, তাদের সরিয়ে দিতে হলে দ্রুত প্রক্রিয়াই মূল শর্ত।

রিফিউজি কাউন্সিলের প্রধান নির্বাহী এনভার সলোমন এ নীতিকে ‘কঠোর ও অপ্রয়োজনীয়’ বলে মন্তব্য করেছেন। তবে তিনি বলেন, কঠোর হলেও এ ধরনের ব্যবস্থা নির্যাতিত, নির্যাতনের শিকার বা যাদের পরিবার নির্মম যুদ্ধের কারণে নিহত হয়েছে, এমন মানুষদের থামাতে পারবে না।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত সাত দিনে ১ হাজার ৬৯ জন অভিবাসী যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছেন এবং এ বছর এখন পর্যন্ত ৩২ হাজার ২৯২ জন সমুদ্রপথে চ্যানেল পাড়ি দিয়েছেন।

সূত্র: বিবিসি

Ad 300x250

সম্পর্কিত